আজকাল ব্যবসা করতে পণ্যের চাইতেও মার্কেটিং বেশি জরুরি। অবাক হবার কিছু নেই। ই-ভ্যালির কথাই ধরুন। পন্য ডেলিভারির অনেক আগেই পকেটে ঢুকিয়ে নিচ্ছে গ্রাহকের টাকা। কীসের জোরে সম্ভব হচ্ছে এটা? মার্কেটিং।
ই-ভ্যালির কথা বাদ। করোনার কারণে এখন অনেকেই ব্যবসার দিকে ঝুঁকছেন। আপনাকে যদি বলি, আপনার বিজনেস নিয়ে দশটা মার্কেটিং আইডিয়া বলুন। নিশ্চয়ই হিমশিম খাবেন।
নন্দন প্রকাশনী থেকে আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ নাগাদ আমরা মার্কেটিং নিয়ে একটা বইয়ের অনুবাদ প্রকাশ করছি। লেখক ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্টমিনিস্টার-এর মার্কেটিং এর প্রফেসর। মার্কেটিং নিয়ে এতো মজার বই বাংলায় আর নেই বোধহয়। লেখক এখানে ১০০ (আই রিপিট ১০০!) মার্কেটিং আইডিয়ার কথা বলেছেন।
এবং সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এগুলো লেখকের বানানো নয়। প্রতিটা আইডিয়াই বিশ্বের বাঘা বাঘা কোম্পানির কোনো ঘটনা বা স্ট্রাটেজি থেকে নিয়েছেন। প্রথমে আইডিয়ার ব্যাপারে নিজের ভাষায় ধারণা দিয়েছেন। এরপর কোন প্রতিষ্ঠানের কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে আইডিয়াটা নিয়েছেন সে গল্প বলেছেন।
সবশেষে আইডিয়াটা আপনার নিজের বিজনেসে কীভাবে প্রয়োগ করবেন, কী কী মাথায় রাখতে হবে এসব বুলেট পয়েন্ট আকারে দিয়েছেন। এতো সহজ ও মজা করে লিখেছেন যে একজন মুদি দোকানদারও আইডিয়াগুলো এপ্লাই করতে পারবে। এমনকি যাদের বিজনেসের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই তারাও মজা পাবেন বইয়ের গল্পগুলো পড়ে।
১০০টি বিজনেস আইডিয়া নিয়ে জিম ব্লিথ এর বিখ্যাত বইয়ের অনুবাদ এটি। মার্কেটিং আইডিয়াগুলো লেখকের বানানো নয় বরং বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনুসরণ করা। লেখক আগে সরল ভাষায় আইডিয়া উল্লেখ করেছেন, নিজের কিছু মতামত দিয়েছেন সেই সাথে প্রতিটি আইডিয়া প্রয়োগকারী কেস স্টাডি উল্লেখ করেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই আইডিয়াগুলো সব বিদেশী এবং উদাহরনগুলোও। সবগুলো আমাদের দেশের সাথে রিলেট করতে না পারলেও অনেক আইডিয়াই মার্কেটিয়ারদের কাজে লাগবে।
সহজ কিন্তু গোছানো ভাষায় লেখা বইটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। কেস স্টাডিগুলো গল্পের মত করেই লেখা, পড়ে মজা পেয়েছি।
বইটা পড়ে বিভিন্ন কোম্পানির পরীক্ষিত মার্কেটিং টেকনিক সম্পর্কে সংক্ষেপে জানতে পেরেছি। পড়াশোনা জানা, পেশাদার মার্কেটারদের এই বই কতটুকু কাজে আসবে তা বলতে পারছি না। কিন্তু আমার মতো নন-মার্কেটারদের কাছে এই বইটি রত্নের মতো। সবমিলিয়ে বইটি খুব উপভোগ করেছি। অনুবাদও চমৎকার, পড়ে আরাম পেয়েছি।