Jump to ratings and reviews
Rate this book

বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন: দ্য হিউম্যান কাইমেরা

Rate this book
একটি পুরনো কোদাল
একটি প্রাচীন কয়েন
একটি কালো পাথর
কী সম্পর্ক এদের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক খান মুহাম্মদ ফারাবির?
মহাবীর আলেকজান্ডার, মুহাম্মদ বিন কাশিম, ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি--ইতিহাসপ্রসিদ্ধ বড় বড় নাম৷ এসব প্রসিদ্ধ বিজেতাদের দেশজয়ের পেছনের কারণ কি শুধুই তাদের শৌর্যবীর্য? নাকি তাদের পেছনে ছিল কোনো প্রাকৃতিক শক্তি?
একটি কালো পাথরের পেছনে উঠেপড়ে লেগেছে কেন আমেরিকাফেরত বিদুষী যুবতী লিয়া?
উদ্ভট সব হ্যালুসিনেশন হচ্ছে কেন খান মোহাম্মদ ফারাবির? কেনই বা তিনি যা দেখছেন, তা-ই হয়ে উঠছে ভবিতব্য?
এসব প্রশ্নের উত্তর কি লুকিয়ে আছে কোনো প্রাচীন ইতিহাসের পাতায়? উত্তর জানার নেশায় শেষতক না জানটাই খুইয়ে বসতে হয় ফারাবিকে!

238 pages, Hardcover

Published December 1, 2020

5 people are currently reading
261 people want to read

About the author

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
24 (12%)
4 stars
100 (50%)
3 stars
59 (29%)
2 stars
10 (5%)
1 star
4 (2%)
Displaying 1 - 30 of 56 reviews
Profile Image for Shadin Pranto.
1,470 reviews560 followers
December 25, 2020
লেখালিখির জন্য পড়াশোনার গুরুত্ব কতখানি তা মুহাম্মদ আলমগীর তৈমূরের যে কোনো লেখা পড়লে বোঝা যায়। ভদ্রলোক ইংরেজির অধ্যাপক। অথচ ইতিহাস নিয়ে এমন পাণ্ডিত্য ইতিহাসের অনেক গুণী-জ্ঞানীদেরও নেই। তাঁর সকল লেখাই আমাকে মুগ্ধ করে।

হয়তো কখনো লম্বা সময় নিয়ে বইটির চওড়া একটি পাঠপ্রতিক্রিয়া লিখব। এখন শুধু এটুকুই বলব, একটি অলৌকিক পাথর যার সাথে জড়িয়ে আছে কাবা শরিফ, ডেলফির মন্দির, আমন রা'র ওরাকল, মুহাম্মদ বিন কাশিম, বখতিয়ার খলজি, আদিনা মসজিদ এবং রাজা গণেশের পুত্র জালালউদ্দিনের একলাখি সমাধিসৌধ। সেই পাথরের খোঁজে বেরিয়েছেন ঢাবির প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ফারাবি এবং যুক্তরাষ্ট্রের বসবাসকারী বাঙালি বংশোদ্ভুত এক অসামান্য রূপসী।

একটানা পড়তে গিয়ে হঠাৎ দেখি বই শেষ। দুরন্ত গতি। কিন্তু শেষটা কেমন যেন যুতসই হলো না।

'বংশালের বনলতা'র সাথে তুলনা দিলে এই বই একটু নিষ্প্রভ। কিন্তু অন্য যে কোনো লেখকের বিবেচনায় মুহাম্মদ আলমগীর তৈমূর অনবদ্য ও অতুলনীয়।
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews237 followers
July 30, 2021
‌বইয়ের শুরুতে থ্রিলের মাঝে ইতিহাসের কচকচানি পছন্দ করে না এমন মানুষদের এই বই থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। আমার আবার ঘটনা উলটা। থ্রিলের মাঝে ইতিহাস পড়তে পারলে সেই লেভেলের আনন্দ লাগে। সো.. মিস্টার ফারাবির সাথে জার্নিটা শুরু করেই দিলাম।

ঘটনা বর্তমানের হলেও এর শুরু বহু বহু কাল আগে থেকে। ইতিহাসের এমন কোন বিখ্যাত চরিত্র নেই যাকে এই বই ছুঁয়ে যায়নি। হজরত ইসহাক (আ), হজরত ইয়াকুব (আ) থেকে শুরু করে, হাজ্জাজ বিন ইউসুফ, মহাবীর আলেকজান্ডার, মুহাম্মদ বিন কাশিম, ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজি হয়ে হালের খান মোহাম্মদ ফারাবি। সঙ্গে আছে ঢাকা মিউজিয়ামের কিউরেটর আর তার সুন্দরী,বিদুষী বোন লিয়া। বইয়ের পুরো যাত্রাটাই ছিল এক রহস্যময় কালো পাথরের খোঁজ। পুরোটাই ঠিকঠাক কিন্তু... কিন্তু বইয়ের নামকরণ আর ঘটনার চক্কর বোধহয় প্যাঁচ খেয়ে গেছে। (আমার চোখে একটু খাপছাড়া মনে হয়েছে, অন্য কোনভাবে, শুধুই পাথর খোঁজা.. নো থ্রিল ফিল জাস্ট এডভেঞ্চার এইরকম আর কি, দেখালেও হইতো ব্যাপারটা) যাই হোক.. নট ব্যাড। আর হ্যা! বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন নামক হালকা বড় গল্পটা আগে পড়া ছিল, তাই মন্ত্রপূত কোদাল, মি. বজ্রযোগী এই ব্যাপারগুলো নিয়ে প্যারা খেতে হয়নি। কেউ যদি শুরুতেই এই বইটা পড়ে, সেক্ষেত্রে দুই একটা ছোটখাটো প্রশ্ন পেটের মাঝে বিজবিজ করতেই পারে.. এই ছোটখাটো জিনিসগুলো বাদ দিলে বেশ লাগলো। আসলে কিছু একটা লিখতে চাইলে যে পড়ার কোন বিকল্প নাই.. হাড়ে হাড়ে প্রমাণ।
Profile Image for সালমান হক.
Author 66 books1,957 followers
March 13, 2021
তৈমূর স্যারের ছোটগল্পেই ইতিহাস এবং কল্পনার যেরকম দুর্দান্ত মিশেল দেখতে পাওয়া যায়, ভেবেছিলাম পূর্ণাঙ্গ উপন্যাসে সেরকম কিছুই দেখতে পাওয়া যাবে আরো বড় কলবরে। ঠিকই ভেবেছিলাম ^_^
Profile Image for NaYeeM.
229 reviews65 followers
June 16, 2021
১। লেখক ভূমিকায় বলে দিয়েছেন "যারা ইতিহাস পড়তে পছন্দ করেন না, তাদের কাছে সবিনয় নিবেদন, দয়া করে এই বইটা কিনবেন না। কারণ, এ লেখা ঐতিহাসিক বর্ণনায় ঠাসা"
অর্থাৎ লেখক নিজেই বলে দিয়েছেন যা বলার :3
যদি ইতিহাস তিক্ত-বিরক্ত, জগণ্য লাগে তবে বইটি না পড়াই ভাল। তবে যাদের আগ্রহ আছে তাদের বেশ ভালো লাগতে পারে এবং অনেককিছু জানতে পারবেন আপনি।
কারণ, আমার মতো কালেভদ্রে ইতিহাস বিষয়ক কোনো ফিকশন পড়ার সময় টানা ৩০-পৃষ্টা পর্যন্ত ইতিহাসের বর্ণনা পড়তে মনোযোগ ধরে রাখা কষ্টকর হচ্ছিল। কারণ মনোযোগ একটু নষ্ট হলেই পরের কথাগুলোতে সমস্যা হতে পারে, কারণ এক প্যারাতে কিছু মিস করছেন মানে পরের প্যারাতে ঐ বিষয়ে কথা থাকবেই এবং আপনার রানিং প্যারাতেও বুঝতে পারবেন না ( ইতিহাস বিষয়ে বই তো তেমন পড়ি না। তাই যেমনটা ফিল করলাম তা নিয়ে একটু বকর-বকর করলাম আরকি)

২। এটার ending ভালো লাগেনি।
কেমন যেন হুটহাট করে শেষ করে দিছে!! মনে হলো যে আমাকে এতক্ষণ উদ্দীপ্ত করে আকাশে তুলে হঠাৎ মাটিতে আছাড় মেরে ফেলা হলো

৩। অনেক বেশি অস্বাভাবিক ঘটনা! এতো বেশি অস্বাভাবিক ঘটনা ভালোই খাপছাড়া লাগছিলো😑
এমন অস্বাভাবিক ঘটনাকে লেখক "এই মহিলা আমাকে সাবধানে থাকতে বললো, কারণ কিছুদিনে অনেক অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটতে পারে" এমন টাইপ excuse দিয়ে ধামাচাপা দিতে চেয়েছেন যদিও :3

৪। তবে অনেককিছু জানলাম। বিরক্ত হয়নি, মোটামুটি থ্রিল ছিল। তবে ঐ আরকি, অনেক অনেককিছুর কমতি থেকে গিয়েছে
Profile Image for Ishraque Aornob.
Author 29 books403 followers
January 5, 2021
আজকাল হিস্ট্রিক্যাল থ্রিলার খুব একটা টানে না। তবে হিউম্যান কাইমেরা ভালো লেগেছে। একটা রহস্যময় কালো পাথরের ইতিহাসের বিচরণ নিয়েই লেখা বইটা। প্রাচীন মিশর, হজরত ইয়াকুব (আ), সম্রাট আলেকজান্ডার থেকে শুরু করে বখতিয়ার খিলজি পর্যন্ত ইতিহাস সুন্দরভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। কোথাও মনে হয়নি ইতিহাসের কচকচানি অতিরিক্ত হয়ে গিয়েছে। এজন্যই বইটা উপভোগ্য লাগল। সময় নিয়েই পড়েছি। হিন্দু মিথলজির কিছু দিকও সামান্য হলেও লেখক তুলে ধরেছেন। একটা ব্যাপার ভালো লেগেছে সেটা হল, হিউমারের প্রয়োগ। কয়েকটা জায়গায় শব্দচয়ন ও বাক্য ব্যবহারে রীতিমত হেসে উঠেছি। ফলে বইটা আরও উপভোগ্য হয়েছে। শেষের দিককার টুইস্টগুলাও ভালো ছিল।
সবমিলিয়ে দারুণ একটা বই দিয়েই বছর শুরু হল। আশা করছি বই পড়ার দিক দিয়ে দারুণ যাবে ২০২১
Profile Image for Shuk Pakhi.
512 reviews305 followers
July 1, 2021
কলসি সাইজের একটা কালো পাথর নিয়ে ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে পাঠককে নিয়ে ঘুরেছেন লেখক।
বর্তমান সময়ের ঘটনা কমই আছে বইতে। পুরো বই ইতিহাস দিয়ে ঠাসা।
আমার মতন যারা ইতিহাস পছন্দ করেন তাদের ভালো লাগবে।
ইতিহাসের নাানান ঘটনা আনতে গিয়ে এক একটা চরিত্র এত লম্বা বর্ণনায় লেগে পরেছে যে ....
মাঝেমাঝে মনে হতে পারে এইটা কি আসলেও থ্রিলার!
চরিত্রের চেহারার বর্ণনা আর খাবারের বর্ণনাগুলোয় শব্দ খরচে কোন কার্পণ্য করা হয়নি। :)

হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহাসিক চরিত্র, ঐতিহাসিক চেনাজানা ঘটনা, মন্ত্রতন্ত্র, রহস্য, পুরাকীর্তি সব কিছুকে একটি কালো পাথরের সূতো দিয়ে প্যাচানো হয়েছে।
শেষ কথা বইটা পড়ে মজা পেয়েছি।
Profile Image for শুভাগত দীপ.
274 reviews47 followers
January 6, 2021
|| রিভিউ ||

বইঃ দ্য হিউম্যান কাইমেরা: বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন
লেখকঃ মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর
প্রকাশকঃ বিবলিওফাইল
প্রকাশকালঃ অক্টোবর, ২০২০
ঘরানাঃ হিস্টোরিক্যাল থ্রিলার/সুপারন্যাচারাল
প্রচ্ছদঃ সজল চৌধুরী
পৃষ্ঠাঃ ২৩৮
মুদ্রিত মূল্যঃ ৩০০ টাকা
ফরম্যাটঃ হার্ডকভার

কাহিনি সংক্ষেপঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক খান মুহাম্মদ ফারাবি ইদানীং অদ্ভুত কিছু স্বপ্ন দেখছেন, যেগুলো তিনি আগে কখনো দেখতেন না। স্বপ্ন দেখাটা আসলে সমস্যা না, সমস্যা হলো ফারাবি সাহেবের স্বপ্নগুলো একদম বাস্তবের মতো আর বাস্তবেও ঘটছে তা-ই। হ্যালুসিনেশন আর স্বপ্ন মিলিয়ে আজব এক ঝামেলার মধ্যে পড়ে আছেন ভদ্রলোক। কারণ, রহস্যময় ব্যাপারটা আর যাই হোক না কেন, মোটেও সুখকর কিছু না।

প্রাচীন এক কয়েন নিয়ে গবেষণা করছে ফারাবি সাহেবের দুই ছাত্র বিমল আর দোলন। ক্রমশই ওদের আচরণ কেমন যেন রহস্যময় বলে মনে হতে লাগলো তাঁর কাছে। এই দু'জন একই রকমের শার্ট পরে ঘুরছে। সমস্যাটা এখানেও না। সমস্যটা হলো, বিমল আর দোলনের একই রকম শার্ট পরে ঘোরাটা তাঁর সেউ বীভৎস স্বপ্নগুলোতেও হানা দিচ্ছে। এসবেরই বা মানে কি?

এরই মাঝে জাতীয় জাদুঘরের ডেপুটি কিউরেটর খাজা নিজাম উদ্দিনের ছোট বোন লিয়া আমেরিকা থেকে উড়ে এলো জাদুকরী ক্ষমতাসম্পন্ন এক কালো পাথরের রহস্যকে সাথে নিয়ে। বর্তুলাকার এক প্রাচীন পাথর, যেটার ভেতরে রয়েছে অলৌকিক কিছু ব্যাপারস্যাপার। আর এই পাথর হাজার হাজার বছর ধরে ঘুরে চলেছে মহাবীর আলেকজান্ডার, স্বেচ্ছাচারী রোমান সম্রাট হিলিওগেবালাস, মুসলিম স্কলার জাবাল, মুহাম্মদ বিন কাশিম ও ইখতিয়ারউদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি সহ অনেক দিগ্বিজয়ী বীরের হাতে৷ এই কালো পাথর কখনো এনে দিয়েছে পরম সৌভাগ্য, আবার কখনো যন্ত্রণাময় মৃত্যু। আর বিদুষী তরুণী লিয়া মরিয়া হয়ে উঠেছে সেই প্রাচীন জাদুকরী পাথরের খোঁজ পাওয়ার জন্য। আর সেজন্যই সে সাহায্য চাইলো অধ্যাপক ফারাবির কাছে। যে পাথরের অস্তিত্ব আদৌ আছে কি-না, জানা নেই তাঁর নিজেরও।

প্রাচীন সেই কালো পাথরের সুলুকসন্ধানে নেমেই ফারাবি সাহেব জানতে পারলেন অজানা ও অকল্পনীয় ইতিহাসের এক বিরাট অংশ। এদিকে বহুকাল আগে ইতিহাসের গলি-ঘুপচিতে হারিয়ে যাওয়া এক ঠগী সর্দারের মন্ত্রপূত এক কোদাল এসে পড়লো তাঁর হাতে৷ প্রাচীন সেই মুদ্রা, মন্ত্রপূর এক কোদাল আর সেই কালো পাথরের মধ্যে কি আসলেই কোন সম্পর্ক আছে? নাকি সমস্ত খোঁজাখুঁজিই গিয়ে শেষ হবে কোন এক অন্ধগলিতে?

আমরা ইতিহাস বইয়ে যা পড়ি, তার বাইরে কি কিছু নেই? কিছুই থাকতে নেই? বাঘা বাঘা সব দিগ্বিজয়ী নৃপতিরা কি শুধুমাত্র পেশিশক্তি আর সূক্ষ্ম যুদ্ধ পরিকল্পনার জোরেই টিকে ছিলেন, নাকি এর পেছনে সত্যিই ছিলো কোন অলৌকিক মহাশক্তির হাত? আর এসবের সাথে খাজা নিজাম উদ্দিন আর তার বোন লিয়ার সম্পর্কটাই বা কোথায়? পুরোনো ও নতুন কিছু প্রশ্নকে সঙ্গী করে অধ্যাপক খান মুহাম্মদ ফারাবি শুরু করলেন প্রকৃত সত্যের খোঁজ। এমন এক সত্য, যা নিজেও হয়তো নিজেকে প্রকাশ করতে চায়নি সবসময়।

পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ বংশালের বনলতা ও হাকিনী-এর মতো গল্প দিয়ে পাঠকের মনে অনেক আগেই একটা বিশেষ জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন সুলেখক মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর। নিঃসন্দেহে তিনি বাংলাদেশের আন্ডাররেটেড লেখকদের একজন। মুহম্মদ আলমগীর তৈমূরের গল্প বলার ধরণের সাথে যাঁরা পরিচিত, তাঁরা জানেন কতোখানি মুগ্ধতার আবেশ ছড়িয়ে পড়ে তাঁর লেখা পড়তে গিয়ে। হিউমার আর 'বেশিরভাগই কাল্পনিক' ইতিহাসে পরিপূর্ণ ছিলো তাঁর উপন্যাস 'দ্য হিউম্যান কাইমেরা: বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন'। ব্যাপারটা লেখক নিজেই বলে নিয়েছেন তাঁর ভূমিকা অংশে। সেই সাথে পুরো উপন্যাসজুড়ে অবধারিতভাবেই ছিলো প্রচুর সাসপেন্স ও থ্রিল। একটা রহস্যময় কালো পাথরকে নিজ কল্পনার জালে বন্দি করে ইতিহাসের অলিতে-গলিতে পাঠককে নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি তাঁর এই উপন্যাসে।

'দ্য হিউম্যান কাইমেরা: বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন'-এর কাহিনির শুরুটাই এমনভাবে হয়েছে যে একটানা পড়ে যেতে পেরেছি বইটা অনেকক্ষণ। এরপর গতোকাল রাতে যখন আবারো পড়া শুরু করলাম, কিভাবে ভোর হয়ে গেলো টেরই পাইনি। খুবই উপভোগ করেছি ঐতিহাসিক বর্ণনাগুলো। সেই সাথে পুরোনো কোদাল, প্রাচীন কয়েন আর কালো পাথরের মধ্যেকার কম্বিনেশন আবিস্কার করার একটা নেশাও পেয়ে বসেছিলো আমাকে। রহস্য যতোই ঘনীভূত হচ্ছিলো, ততোই বাড়ছিলো ভালো লাগা। পারফেক্ট একটা থ্রিলার পড়লাম। আর পড়া শেষে তৃপ্ত হলাম, এটা নিঃসঙ্কোচে বলতে পারি। তবে 'দ্য হিউম্যান কাইমেরা: বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন'-এর শেষটা আমাকে সামান্য শকড করেছে। এই অনুভূতিটা অবশ্য পাঠকভেদে ভিন্ন হতে পারে।

বেশ কিছু টাইপিং মিসটেক চোখে পড়েছে। কিছু ভুলও খেয়াল করেছি। যেমন, ১৭১ পেজে লেখা পঞ্চবটী হোটেল ১৮২ পেজে হয়ে গেছে বৃন্দাবন হোটেল। ১৮৩ পেজে কোদাল হয়ে গেছে খন্তা। অবশ্য কোদালের বদলে খন্তা কথাটা এরপর আরো বেশ কয়েকবার এসেছে। আর খাজা নিজাম উদ্দিন ২০১ পেজে হয়ে গেছেন খাজা নাজিমুদ্দিন।

'দ্য হিউম্যান কাইমেরা: বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন' বইটার কাগজের মান চমৎকার ছিলো। পেপারটেক ১০০ গ্রাম কাগজ ব্যবহার করার কারণে ২৩৮ পেজের এই বই হয়ে উঠেছে বেশ ওজনদার। অবশ্য পড়তে গিয়ে কোন সমস্যার সম্মুখীন হইনি। এই যেমন পেশীতে টান ধরে যাওয়া বা হাত 'লেগে' যাওয়া। বইটার বাঁধাইও ভালো হয়েছে।

সজল চৌধুরীর করা প্রচ্ছদটা যতোটা ভালো লেগেছে, তার চেয়ে বেশি ভালো লেগেছে বইটার নামলিপি। ইউনিক ছিলো।

মুহম্মদ আলমগীর তৈমূরের কাছ থেকে নিয়মিত বই চাই। তাঁর একজন গুণমুগ্ধ পাঠক হিসেবে এই দাবীটা বোধহয় আমি করতেই পারি।

পার্সোনালি রিকমেন্ড করছি 'দ্য হিউম্যান কাইমেরা: বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন' পড়ার জন্য। যাঁরা পড়েননি, পড়ে ফেলতে পারেন।

ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৩.৭৫/৫
গুডরিডস রেটিংঃ ৪.২০/৫

#Review_of_2021_2

~ শুভাগত দীপ ~

(৬ জানুয়ারি, ২০২১; নাটোর)
Profile Image for Dystopian.
434 reviews228 followers
May 15, 2023
কি দারুন গল্পের গতি! আর তার সাথে চমৎকার এক্সকিউশন!
আলমগীর তৈমূর স্যারের লেখনি আমাকে যতটা শান্তি দেয় তার রিসার্চ দেখে ততটা চমকপ্রদ হই!
Profile Image for Riju Ganguly.
Author 37 books1,864 followers
April 17, 2022
আপাতদৃষ্টিতে এ এক পিশাচ, লোভ, ক্রোধ এবং জনৈক সাধকের কাহিনি। কিন্তু তৈমূর স্যারের একান্ত নিজস্ব লেখনী এই বইকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তাতে মিশে গেছে বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস, এক বিস্মৃত ধারা,
আর ভয়!
সানডে সাসপেন্স-এর উপজীব্য হওয়ার মতো নয় এই লেখা। বরং এটি আপনাকে ভাবাবে।
যদি ভয়াল রসের অনুরাগী হওয়ার পাশাপাশি মহাজনের পরামর্শ মেনে ভাবা প্র‍্যাকটিস করতে চান, তাহলে এই বইটি দয়া করে পড়ুন।
অলমিতি।
Profile Image for Shaon Arafat.
131 reviews31 followers
April 12, 2021
শুরুতেই লেখক বইখানা কিনতে চাওয়া নিয়ে সতর্ক বাণী দিয়েছেন। সতর্ক বাণী অমূলক না।

ইতিহাস পছন্দ করা পাঠকদের জন্য বইটি বেশ ভালো। তবে শুধুমাত্র থ্রিলড হতে চাইলে, চিন্তার বিষয় আছে!
Profile Image for Zahidul.
450 reviews93 followers
January 20, 2021
"There's a divinity that shapes our ends, Rough hew them how we will." - William Shakespeare
-
বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন: দ্য হিউম্যান কাইমেরা
-
খান মুহম্মদ ফারাবি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক। ইতিহাসের এক বিশেষ সময়কাল নিয়ে তার পড়াশুনা। হঠাৎই তাকে ঢাকা মিউজিয়ামের ডেপুটি ডিরেক্টর খাজা নিজাম উদ্দিন তার অফিসে ডেকে নিয়ে আসে এক অদ্ভুত অভিযানের আবদার নিয়ে। লিয়া, আমেরিকা প্রবাসী একজন প্রত্নতাত্ত্বিক এবং খাজা নিজাম উদ্দিনের বোন। তিনিও যুক্ত হোন তাদের এই অভিযানে।

পৃথিবীর ইতিহাসে নানা স্থানে শোনা যায় এক কালো পাথরের অস্তিত্ব। যার সাথে জড়িয়ে রয়েছে ইসলামের খেলাফতের আমল থেকে শুরু করে মহাবীর আলেকজান্ডার, মুহাম্মদ বিন কাশিম, ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজি সহ নানা ধরনের ঐতিহাসিক চরিত্রের নাম।

এখন এই কালো পাথ���ের অস্তিত্ব কি আসলেই রয়েছে নাকি এটি শুধুই একটি মিথ? তার সাথে ফারাবিদের অভিযানের কি সম্পর্ক? তা জানতে হলে পড়তে হবে লেখক মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর এর হিস্টোরিক্যাল থ্রিলার ঘরানার উপন্যাস "বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন: দ্য হিউম্যান কাইমেরা।"
-
"বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন: দ্য হিউম্যান কাইমেরা" লেখক মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর এর লেখা প্রথম উপন্যাস। লেখকের এর আগে প্রকাশিত প্রায় সব ছোটগল্পই আমার পড়া ছিল, তাই বইটি প্রত্যাশার পারদ ছিল উঁচুতে। সে কারণে বইটি হাতে পাওয়ার সাথে সাথেই পড়া শুরু করে দেই এবং বেশ ফাস্ট পেসড কাহিনী হওয়ার কারণে শেষ করতেও বেশি সময় লাগেনি।

"বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন: দ্য হিউম্যান কাইমেরা" বইটির পটভূমি লেখকেরই লেখা "বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন" নামক এক বড় গল্পের কিছুদিন পর। আগের বড় গল্পটি পড়া থাকায় গল্পের ভিতরে কানেক্ট হতে পেরেছি তাড়াতাড়ি। প্রায় স্ট্যান্ড এলোন কাহিনী হওয়ায় যদি কারো আগের গল্পটি আগে থেকে না পড়া থাকে তাহলেও কাহিনী বুঝতে তেমন অসুবিধা হবার কথা নয়, কিন্তু গল্পটি পড়া থাকলে বইটি আরো উপভোগ করতে পারা যাবে। তবে ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি "বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন" নামে লেখকের একটা গল্প আগেই থাকায় এই বইতেও সেম নামের ক্যাপশন না দিয়ে শুধু দ্য হিউম্যান কাইমেরা বা অন্য কোন নাম দিলে একটু কনফিউশন কম হতো যে দুটো কি একই গল্প নাকি এটি সম্পূর্ণ আলাদা কাহিনী এ ব্যাপারে।

"বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন: দ্য হিউম্যান কাইমেরা" বইয়ের কাহিনী প্রথম থেকেই বেশ ভালো লাগছিলো পড়তে। লেখকের প্রায় সব লেখার মতো এই লেখাতেও হিস্টোরিক্যাল ঘটনা এবং বর্তমান ঘটনার মেলবন্ধনে এগিয়েছে বইয়ের মূল ঘটনা। বইয়ের কাহিনীর মাঝে মাঝে নানা ধরনের রসাত্মক লাইন এবং এস্টার এগের বর্ণনা ভালো লেগেছে । তবে অসাধারণ সূচনা এবং মধ্যভাগের পরে শেষদিকে এসে কাহিনীতে কিছুটা তাড়াহুড়োর ছাপ পড়েছে বলে মনে হয়েছে, যা আরেকটু বিস্তৃতভাবে লেখা যেতে পারতো।

"বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন: দ্য হিউম্যান কাইমেরা" বইয়ের চরিত্রগুলোর দিক থেকে দেখলে খান মুহম্মদ ফারাবি চরিত্রটি স্ট্যান্ড আউট চরিত্র এই বইয়ের। খাজা নিজাম উদ্দিন এবং লিয়াও পাশ্ববর্তী চরিত্র হিসেবে ভালোই। বইয়ের দুর্দান্ত মূল প্লটের সাথে একটা ছোট সাবপ্লটও চলছিল যা কিছুটা অপ্রয়োজনীয় মনে হলো আমার কাছে। তবে বইতে সবচেয়ে উপভোগ করেছি ঐতিহাসিক সময়কালগুলো বর্ণনা, লেখনী একেবারেই আনপুটডাউনেবল ছিল বইয়ের সেই সকল অধ্যায়ে।

"বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন: দ্য হিউম্যান কাইমেরা" বইটিকে টেকনিক্যাল দিক থেকে দেখলে বইয়ের বাঁধাই, কাগজের মান ভালো ছিল। বইয়ের প্রচ্ছদ, বিশেষ করে নামলিপি খুবই ভালো লাগলো। কাহিনীর সাথে মানানসই লেগেছে সম্পূর্ণ প্রচ্ছদটি। ভিতরে কিছু আর্টওয়ার্ক থাকলে আরো ভালো লাগতো। তবে বইয়ের পেইজ সেটাপ একদমই ভালো লাগেনি, বইয়ের দুই পাশের মার্জিনের পরিমাণ খুবই বেশি হয়ে গেছে যা বইয়ের পৃষ্ঠার প্রায় অর্ধেক জায়গা দখল করে রেখেছিল। পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে তাড়াহুড়ো করে কোনরকমভাবে প্রিন্ট করা বই পড়ছি, যা পড়ার সময়ে বেশ বিরক্তির জন্ম দিয়েছে। এরকম কাহিনীর বইতে আরো সম্পাদনার দরকার ছিলো বলে মনে হয়েছে। বইয়ের বিশেষ করে শেষ অর্ধেকে বেশকিছু বানান ভুল আর প্রিন্টিং মিসটেক চোখে পড়লো। বেশিরভাগ ইগনোর করে গেলেও একই ব্যক্তির নাম একবার "নিজাম উদ্দিন" আরেকবার "নাজিম উদ্দিন", একই হিস্টোরিক্যাল ফিগারের নাম একবার "খিলজি" আরেকবার "খলজি" বেশ চোখে লাগে। আশা করি বইটির পরবর্তী সংস্করণ বের হলে ব্যাপারগুলো ঠিক করা হবে।

ওভারঅল, ছোটখাট প্রিন্টিং মিসটেক আর কিছু প্লটপয়েন্ট বাদ দিলে "বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন: দ্য হিউম্যান কাইমেরা" বইয়ের মূল ড্রাইভিং ফোর্স যে ঘটনাটি ছিল তা বেশ উপভোগ করেছি। বইটি আমার পড়া লেখক মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর এর সেরা লেখা না হলেও গতানুগতিক বাংলা হিস্টোরিক্যাল থ্রিলার/হররের চেয়ে বেশ ভালো মানের। যাদের লেখকের আগের ছোটগল্পগুলো পড়ে ভালো লেগেছে কিংবা যারা দেশীয় পটভূমিতে হিস্টোরিক্যাল থ্রিলার/হরর পড়তে ইচ্ছুক তাদের কাছে বইটি রিকমেন্ড থাকলো।
Profile Image for Isfar Nafis.
1 review1 follower
February 4, 2021
বইয়ের রিভিউ আমি কখনও লিখিনা ২টা কারনে
১. ভয়ে থাকি স্পয়লার দিয়ে দিলাম নাতো।
২. আমি গুছিয়ে লিখতে পারিনা।
আজকেও রিভিউ লিখবো না কিন্তু কিছু কথা না লিখলেই নয়।
আমার মতো যারা গেমার তারা হয়তো Assassin's creed এর ফ্যান। আমিও খুব বড় ধরনের ফ্যান। যারা আমার মতো AC ফ্যান তারা হয়তো জানেন যে Assassin's Creed এর প্লাটফর্ম হচ্ছে বিভিন্ন হিস্টরিকাল ক্যারেক্টার, প্লেস কে নিয়ে হয়, কোনো এক সভ্যতাকে নিয়ে। যেখানে একটা অল্টারনেট হিস্টরিকাল টাইমলাইন দেখানো হয়। ইতিহাস আর কল্পনার মিশ্রনে Assassin's Creed এর প্লট করা হয়। ঠিক তেমনটি স্যার মুহাম্মদ আলমগীর তৈমুর তার এই বই হিউম্যান কাইমেরাতে তুলে ধরেছেন একটা অল্টারনেট হিস্টরিকাল প্লট। ব্যাংকের এটিএম থেকে চকচকা নোট বের করে যখন ওই টাকার হাত বদল নিয়ে একটা জেনারেশনের পর জেনারেশন ভ্রমণ করা যাবে তেমনি একটি কালো পাথর এর হাত বদল নিয়েই এই বইয়ের ভ্রমণ। এর মাঝে সাক্ষাৎ হবে ইতিহাসের বিখ্যাত কিছু চরিত্রের সাথে। ভ্রমন হবে ততকালীন ক্ষমতাশীল সভ্যতার সাথে।
এটা রিভিউ এর মধ্যে পরে কিনা আমার জানা নেই। তবে এই বই পড়ে ইতিহাসের পাতায় ভ্রমণ করার অনুভূতি পাওয়া যাবে Marvel এর what if এর মতো।
Profile Image for Sarvnaz Hussain.
12 reviews20 followers
December 25, 2020
এত দারুন একটা বই! যেমন দুর্দান্ত প্লট, তেমন প্রাঞ্জল তার বর্ণনা। কিন্তু সমাপ্তিটা একদম ভালো লাগেনি, কেমন যেন তাড়াহুড়োর ছাপ।
Profile Image for Tahsina Syeda.
207 reviews63 followers
November 14, 2016
মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর-এর উপন্যাসিকা 'বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন' এর প্রতি শব্দে শব্দে আছে শিরহণ। কল্পনার অতীত দৃশ্য ও ঘটনা বাস্তব করে তোলা হয়েছে দক্ষ বর্ণনায়। কল্পনা, কিংবদন্তী ও ইতিহাসের সমন্বয়ে মন্ত্রমুগ্ধকর একটি রচনা। আশা রাখি, ভবিষ্যতে আরও বিস্তারিত পরিবর্ধিত কলেবরে 'বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন' বই হিসেবে প্রকাশ হবে।
Profile Image for Khandaker Sanidulla Sanid.
47 reviews22 followers
April 5, 2022
There's a divinity that shapes our ends,
Rough-hew them how we will--
একটি পুরোনো কোদাল...
একটি প্রাচীন কয়েন...
একটি কালো পাথর...
এই তিনটা জিনিসের পিছনে ছুটছে কয়েকজন মানুষ। যার মধ্যে একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক খান মুহাম্মদ ফারাবি। আছেন দূর আমেরিকা হতে এসব জিনিসের উপর বিদুষী যুবতী লিয়া। সেও সেই কালো পাথরের পেছনে পেছনে ঘুরে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশে চলে এসেছে। কিন্তু এই প্রাচীন জিনিসগুলোর সাথে জড়িয়ে আছে ইতিহাসের অনেক বড় বড় বিজয়ীদের নাম। আছে তাদের বিভিন্ন দেশজয়ের কিছু সুনির্দিষ্ট কারণ। আছে প্রাচীণ বিভিন্ন স্থাপত্যশিল্পের নানান উদাহরণ।
এদিকে অধ্যাপক ফারাবিকেও মুখোমুখি হতে হচ্ছে বিভিন্ন হ্যালুসিনেশনের যার অধিকাংশই সত্যে রুপান্তরিত হচ্ছে এর কারণ কি শুধুই এসব প্রাচীণ জিনিসের সংস্পর্শে আসা নাকি এর গভীরে লুকিয়ে আছে কিছু সত্য?
এটা আমার পড়া লেখকের দ্বিতীয় বই। লেখক এসব প্রাচীণ জিনিস,মিথ, ইতিহাস এসবে যথেষ্ট জ্ঞান রাখেন তাই জানা ছিলো তার বইতে টান টান উত্তেজনা পাওয়া যাবেনা বরং ইতিহাসের বিভিন্ন গলি ঘুপচি জানতে জানতে হয়ত কাহিনী সামনের দিকে অগ্রসর হবে। লেখক অবশ্য এ ব্যাপারে বইয়ের ভূমিকাতেই সতর্ক করে দিয়েছেন। তবে আমার কাছে এ ধরনের বইয়ের মূল আকর্ষণ হলো লেখকের এই ইতিহাস, বিভিন্ন মিথ বলার ভঙ্গি। এদিকটায় যে যত পারদর্শী তার বই ততই উপভোগ্য লাগে তাই সেদিক দিয়ে বলতে গেলে লেখক সার্থক। কেননা বেশ আগ্রহ নিয়েই পড়েছি দ্য হিউম্যান কাইমেরা।বইতে থাকা তথ্যগুলো পড়ার সময়ে মনযোগ ধরে রাখতে পেরেছি।
তবে ঐযে শুরুতে যেটা বললাম টান টান উত্তেজনা এখানে প্রতি পাতায় পাওয়া যাবেনা এখানেও ব্যতিক্রম নয়। প্রথম দিক থেকেই লেখক অতীতের কিছু সমইয়ে ভ্রমণ করিয়ে আনবেন পাঠককে। জানতে পারবেন আলেকজান্ডার, মুহাম্মদ বিন কাশিম, বখতিয়ার খিলজি সহ অনেকের সফলতার কারণ। এ বইয়ের মজাটা এখানেই। তবে সমস্যা হয়েছিলো শেষদিকে এসে। শুরু থেকে যেই আগ্রহ নিয়ে পড়েছি শেষদিকে সেটা কেমন যেন ভজকট বেধে গিয়েছিলো। ভেবেছিলাম মাঝ দিক থেকেই এই প্রাচীন জিনিসিগুলোর পেছনে ছোটা শুরু হবে আর তার ফাঁকে এসবের ইতিহাস বলবেন লেখক। কিন্তু এখানে এগুলোর পেছনে দৌড়ানো শুরু হয়েছে ১৬০ পৃষ্ঠার পরে। যার জন্য শেষদিকে এসে কাহিনী গতি একটু কম লেগেছে।
তবে শেষের এই ব্যাপারটা বাদেও যেটা একটু মাত্রাতিরিক্ত লেগেছে তা হলো লিয়া কি ধরনের জামা পরেছে প্রতিবার সেটার বিবরন। হতে পারে সেটা হয়ত অনেকের কাছে তেমন সমস্যা না তবে আমার কাছে ওটা একটু বেশিই লেগেছে। আরেকটা ব্যাপার যেটা সেটা হলো 'ভিসা' কে প্রতিবারই 'ভিজা' লেখা হয়েছে। আমি জানিনা 'ভিজা' সঠিক বানান কিনা কিন্তু ভিসা তে অভ্যস্ত বলে 'ভিজা' পড়ায় একটু বেখাপ্পা ঠেকেছে।
এই ব্যাপারগুলো বাদ দিলে বইটা বেশ ভালোই বলা চলে। যাদের এধরনের বই পড়ায় আগ্রহ তারা পড়লে হয়ত ভালো লাগবে। তবে যেসব পাঠক পাতায় পাতায় টুইস্ট আর রোলার কোস্টার রাইড টাইপ বই চান তারা এটা এড়িয়ে যাওয়াই উত্তম।
বইঃ দ্য হিউম্যান কাইমেরা
লেখকঃ মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর
প্রকাশনীঃ বিবলিওফাইল
মূল্যঃ ৩০০ টাকা
Profile Image for তান জীম.
Author 4 books279 followers
November 27, 2021
এত দারুণ করে টেনে নেয়া একটা বইয়ের শেষটা এরকম লেজেগোবরে? নাহ হতাশ হলাম। বইটা ২৩৮ পৃষ্ঠার। বলা যেতে পারে ২৩৬ পৃষ্ঠা পর্যন্ত বেশ ভালো লেগেছে, শেষের দুটো পৃষ্ঠায় একদম কেচে গেছে। সোনার হরিণ পাওয়া তো হলোই না, ওটা নিয়ে কোন সুরাহাও হলো না। ওদিকে কাইমেরার পরিণতিও দুম করে হয়ে গেল, কোন কারণ ছাড়াই। নাহ, এত দারুণ বইটার এইরকম ভাবে শেষ হওয়াটা মানতে পারছি না কোন ভাবেই।
Profile Image for Ishraque Aornob.
Author 29 books403 followers
April 16, 2022
গল্পটা ভালো। যদিও একই নামের উপন্যাসটা আগে পড়েছি, তবুও খারাপ লাগেনি।
Profile Image for Junaed Alam Niloy.
86 reviews11 followers
July 6, 2021
অতিলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন এক কালো পাথরের সন্ধানে এবং সেই পাথরের ইতিহাস নিয়েই এই গল্প। সেই কালো পাথর খ্রিস্টের জন্মেরও হাজার হাজার বছর আগে থেকে বিভিন্ন ঐতিহাসিক মানুষদের হাতে ঘুরেছে...অনেকটা কহিনূর এর মতই। আশ্চর্য ক্ষমতা এই পাথরের, যার কাছে থাকে সে অনেক দিক থেকে উপকার পায় তবুও এই পাথরকে অভিশপ্ত বলে ধরা হয়। কেন?

২৪০ পৃষ্ঠার এই হিস্টোরিক্যাল ফিকশনটা ৪০০ পৃষ্ঠার সমান মনে হয়েছে অনেক-অনেক-অনেক ইতিহাসের গল্প রয়েছে বলে, তবুও পড়তে খারাপ লাগেনি তৈমুর স্যারের অসাধারন লেখনীর জন্যে। কিন্তু কয়েকটা ব্যাপার তবুও ভাল লাগেনি, সব কিছু খুব সহযেই মিলে যাচ্ছিল আর ফিনিশিং টা কিছুটা অপ্রত্যাশিত হলেও মনমতো হয়নি।
বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন নামে ছোট গল্পটা পড়ে নিলে প্রেক্ষাপট বুঝতে সুবিধে হবে, আর শেষে মনে হলো এই প্রেক্ষাপটে লেখকের আরো বই লেখার ইচ্ছে আছে।
ওভারঅল ভালই ছিল।
Profile Image for শাহরিয়ার বিশাল.
28 reviews2 followers
April 8, 2021
ইতিহাসের সাথে থ্রিলের সমন্বয়ে চমৎকার এক বই শেষ করলাম। ইতিহাসের বিষয়গুলো গোগ্রাসে গিলেছি। চমৎকার লেখনীতে ইতিহাসের বিষয়গুলো উপভোগ্য হয়ে ধরা দিয়েছে। লেখকের দুপাতা সতর্কবার্তা পেরিয়ে দু বসায় বইটা শেষ করে ফেলেছি। খুব সম্ভবত এর পরেও এই সূত্রে আরো বই আসবে। বইটা স্ট্যান্ড এলোন হলেও আমার কাছে মনে হয়েছে এই সূত্রে আরো পড়তে পারলে ভাল্ললাগবে।
Profile Image for Peal R.  Partha.
211 reviews13 followers
January 21, 2022
⚈ স্পয়লার-ফ্রি রিভিউ⚊ ❛দ্য হিউম্যান কাইমেরা❜

❝আর্টিলারি। ক্যাটাপুল্টের গোলার আঘাতে গুঁড়িয়ে দাও পুরো মক্কা নগরী। রণাঙ্গন কাকে বলে এইবার বুঝুক মক্কার লোক। সাধ মিটুক সিরিয়ার খলিফা আব্দুল মালিকের বিরুদ্ধে যাওয়ার।❞

কী বিধ্বংসী আদেশ বাক্য! সমাপ্তি অবশ্য এখানেও নয়। আরও আছে। মনে হবে..., আচ্ছা আমার কী হয়েছে আগে সেইটে বলি।

বই পড়ছিলাম। পৃষ্ঠা উলটে গল্প মহলের অন্দরে প্রবেশের কিছুদূর যেতে না যেতেই মনে হচ্ছিল, ক্যাটাপুল্টের গোলা ঠিক আমারই দিকে ধেয়ে আসছে পূর্ণ গতিতে। লেখক হেব্বি ছুড়েছেন। মনে মনে ভাবলাম, আজ আর রক্ষে নেই। ভাবার আগেই কুপোকাত। আমার এই কোমল পাঠক হৃদয় একেবারেই গুঁড়িয়ে দেওয়া আর মাথা চূর্ণবিচূর্ণ হওয়ার পূর্বে একটা কথা আপনাদের বলে যেতে চাই। কঙ্করে ঢাকা রাস্তায় খালি পায়ে হেঁটে চলা, মধ্যরাতে হিমে আচ্ছাদিত পুষ্করিণীতে ডুবে থাকা, কাঠফাটা রোদে মাঠের মাঝে দাঁড়িয়ে কাকতাড়ুয়া সাজা যদি আপনার অভ্যেস হয়; তবে বিনা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ❛দ্য হিউম্যান কাইমেরা❜ পড়তে বসে যেতে পারেন। যখন পড়বেন সাবধান! তখন কিন্তু তোলা যাবে না মুখ, ঘুরানো যাবে না ধর—ভবিষ্যদ্‌বাণীর কালো পাথরের অভিশাপে হয়তো বুক করবে ধড়ফড়! একটু বেশিই বলে ফেললাম মনে হয়। মুচকি হাসির ইমো।

যাহোক কিছু উপন্যাস থাকে না; যা বারবার পড়তে ইচ্ছে করে? এখন প্রশ্ন করতে পারেন—কেন, মগজে গেঁথে যায়নি বলে? উঁহুঁ। সে-কথা নয়। লেখকের জাদুকরী শব্দ মালা মুক্ত না—মুগ্ধতা ছড়িয়ে বাক্য হয়ে ঝরঝর করে ঝরে বলে। ধরবেন-পড়বেন-ছেড়ে চলে যাবেন তেমন না। গল্প এখানে ইতিহাসের আপেল বিক্রেতা আর আপনি গাছে বসা বাঁদর। কৌতূহল আপনার হবে না তো কার হবে? সরি বাঁদর বলে সম্বোধন করার জন্য; উপমা ঢালার চেষ্টা করলাম। উক্ত উপন্যাস পড়ার সময় আমি যে ঠিকই পাঠক-রূপী বাঁদর ছিলেম তা ওপরের লেখালিখি দেখে কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পারছেন বইকি?

বইয়ের কথায় আসি এ-বার। ❛দ্য হিউম্যান কাইমেরা❜ হলো ইতিহাসের মোড়কে মোড়ানো পিলে চমকে দেওয়া একখানা উপাখ্যান। পিলে চমকানোর কথা বললেও চমকের অপেক্ষায় পাড়ি দিতে হবে বহু লম্বা ঐতিহাসিক প্লট! ওহ, সরি পথ। ধৈর্য আছে? এখন আমি বলতে পারি, ওপরে লেখা আমার বিশৃঙ্খলায় জর্জরিত হওয়া দুই প্যারা রহস্যের কথা। ঘরনায় এই উপন্যাস ঐতিহাসিক-হরর হলেও এখানে যে রহস্য একেবারে গায়েব তা-ও না। আপনি মশাই টক-ঝাল-মিষ্টি তিনটেই পছন্দ করেন বলেই হয়তো লেখক ব্রজযোগীর এই প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন। স্বপ্নে এই নিয়ে বৃন্দাবন ঘটকের সাথে বার কয়েক তর্কও লড়েছেন বোধহয়। তবে সাবধানের মার নেই। তাই তো লেখক ভূমিকায় পইপই করে বলে দিয়েছেন,

❝দশ পাতা সতর্কবাণী পড়ার পরও যাঁরা বইটি কিনে পড়বেন তাঁরা যদি আনন্দ পান, তাহলেই বুঝব সহায় হয়েছেন ওপর‌অলা, সার্থক হয়েছে পরিশ্রম।❞

হেহে! সরি, বেয়াদবের মতো একটু হাসলাম। কারণ লেখক দশ পাতার কিছু লেখননি। লিখেছে হাতে গোনা তিন পাতা। লেখা কম ওজন অনেক। দামে কম মানে ভালো টাইপ আরকি। যেখানে সোজা কথায় আপনাকে সতর্ক করেছেন। কারণ থ্রিলার এই বইয়ে ডট বল আর হিস্ট্রি বাউন্ডারি পার করা চার-ছয়। ডিসিশন আপনার। মাথা চুলকে ভাবনেন না কিনে ডুবে মরবেন!

এই বই আমার আবার ঝাক্কাস লেগেছে। বাঘা বাঘা সব চরিত্রের সাথে মরণ মরণ খেলার তুখোড় কারসাজি। যারা কি-না আবার ভাগ্যের করাল গ্রাসে—ডুবে মরে ভাসে। আহা... ‘চুকচুক শব্দ’। কাহিনি সাজানোও একেবারে পাকা । ধর তক্তা মার পেরেক না হলেও; শেষে এসে এ-ভাবে সমাপ্তি না দিলে—কার্পণ্য করেননি বলে আলাদা কয়েকটা শব্দ লাগিয়ে দিতেম। যা-ই হোক, সব সুখ এক কপালে একই সময়ে এমনিতে বসবাস করে না। সুখ বড্ড অহংকারী! বড্ড নাজুক।

✱ আখ্যানপত্র—
|
◆ গুডরিডস অথবা কমেন্ট বক্সের প্রথম কমেন্ট চেক করুন।
|
✱ পাঠ প্রতিক্রিয়া ও পর্যালোচনা—

❛দ্য হিউম্যান কাইমেরা❜ শেষের দু’পৃষ্ঠার আগ পর্যন্ত দারুণ উপভোগ্য ও আরামদায়ক এক ভ্রমণ বলা চলে। লেখকের লেখার সিগনেচার স্টাইলের কারণে শুরু থেকে কাহিনির আবহে মিশে যেতে সময় মোটেই লাগেনি। বই খুলে লেখকের ভূমিকা অংশ পড়ে ডিরেক্ট গল্পের পটভূমিতে নিজেকে আবিষ্কার করি। এ-যেন হুট করে ডুব দিয়ে টুপ করে উঠে যাওয়া।

দুটো টাইমলাইনে কাহিনি অবতারণা করা হলেও সংলাপের মাধ্যমে আদ্যিকালের যত আখ্যান তা বর্ণনা করা হয়েছে। আলাদা করে লেখকের কোনো পর্ব যুক্ত করতে হয়নি। শুধুমাত্র সূচনা অংশ বাদ দিয়ে—বাকি পর্বগুলো উত্তম পুরুষে লেখা। গল্পের মূল হোতা ফারাবি সাহেব। বিস্ময়কর একজন অধ্যাপক। অদ্ভুত তার স্বপ্ন—ভবিতব্য হয়ে ঘটে সত্য।

টাইমলাইন নিয়ে বললাম। এখন ঘটনার আদ্যোপান্ত না বলে, ‘হালকার ওপর ঝাপসা’ মেরে প্লট নিয়ে কিছুক্ষণ বকবক করাই যায়। একটি পুরোনো কোদাল, একটি প্রাচীন কয়েন ও একটি কালো পাথরকে ঘিরে পুরো গল্পের ইতিহাস আবর্তিত হয়েছে। কী সম্পর্ক কোদাল-কয়েনের তার থেকে জরুরি ওই কালো পাথরের। বেশ গভীর আলোচনায় যেতে হবে এ-জন্য। লেখক ইতোমধ্যে সে-কার্য বইতে যথেষ্ট পোক্ত আঙ্গিকে সম্পাদন করেছেন; নতুন করে আমি কিছু সংযোজন করতে চাইনে। তা-ও আপনার কৌতূহল মেটানোর বিচিত্র উদ্দেশের কথা ভেবে যদি বলি, এই গল্প খ্রিষ্টেরও জন্মের বহু বহু বছর আগ থেকে পরিচালিত। কয়েন-কোদাল বর্তমান সময়ের সম্পদ হলে কালো পাথর কিন্তু সেই সময়কালের।

তখন ৬৯২ সালের অক্টোবার মাসের ৩ তারিখ। হাজ্জাজ বিন ইউসুপ যখন মক্কায় আক্রমণ করে কাবা ঘরে লুকিয়ে রাখা কালো পাথর আত্মসাৎ করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে। খলিফা আল জুবায়ের (রা:) কীভাবে এই অঘটন থেকে মক্কা নগরী বাঁচিয়ে রাখবেন এ-যেন এক বিরাট প্রশ্ন। না সংশয়? তবে এত সময় লইয়া যাহা নিয়ে বাচালতার থালা সাজাইলাম, ইহা সোজা কথায়—গল্পের মধ্যভাগ। শুরুর ঘটনা তো এখনও জানলেই না।

ঘটনা এর পরে চলে আসে ঢাকা শহরে। যুক্ত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক খান মুহাম্মদ ফারাবির সাথে। গল্পের নায়ক; আমাদের প্রোটাগনিস্ট। আশা-ভরসার আলো, স্বপ্ন-শক্তি খুব ভালো। তারপর একে একে আসতে থাকে নয়া নয়া চরিত্র, কোদালের রহস্য এবং কয়েনের ঐতিহ্য। কোদাল আর কয়েন বর্তমান সময়ের মূল চরিত্রগুলোর বাহন আর কালো পাথর প্রাচীন সময়ের সাতকাহন। ঘুরপাক—হাত ঘুরঘুর করে গ্রিক-রোমান-মিশর-লিবিয়া-ভারতবর্ষ। বিশাল ইতিহাস বটে। লেখকেরও কী ধৈর্য বাবাঃ! বাংলার উইলবার স্মিথ বটে। উঁহুঁ। উনি নিজেই ব্রান্ড। আগে সাপ তারপর কেঁচো। ধরতে পারলে তো বেচো। সাপ-কেঁচো বেচা না; একেবারে শব্দ বেচা। লেখক সার্থক।

একটা ডায়লগ দিতে ইচ্ছে হলো, দিই? পিকচার আভি বাকি হে মেরে পাঠক। মধ্যপাত! সরি, সরি। মধ্যভাগের কথা বললাম এখন বলব...

● সূত্রপাত—

রেডি স্টেডি স্টার্ট। গল্পের সূত্রপাত ওই মধ্যভাগের ৬৩২ সাল থেকেই। এর পরে যা যা বলেছি সব একই। হুদাই আপনার কয়েক সেকেন্ড সময় নষ্ট করলাম। পিত্তি জ্বালানো হাসির ইমো।

এ-রকম রিভিউ লেখার পেছনে আমার মতো অনেক পাঠকের সময়ের জলাঞ্জলি দিতে হয়। দরকার আছে কোনো? দু-এক কথায় ভালো-মন্দ তো শেষ কথা। তা-ও লিখি, বই নিয়ে বকবক করি। লেখকের মতো আমারও দশ পাতা লিখতে ইচ্ছে করে। যদিও তিন পাতাও লেখি না। তারপরেও কিছু অহংকারী আর আত্মগর্বে ভোগা পাঠক দূরে ঠেলতে থাকে। অহংকারে নয়তো হিংসায়। আরে ব্যাটা এত কপচাকপচি করি কাদের জন্য? একটা ভালো বইয়ের সন্ধান আর আলোচনায় তো করছি। আমদের তো দরকার একে-অপরকে সঙ্গ দেওয়া; কিন্তু করি কী? কামড়াকামড়ি। পুরাই হিউম্যান কাইমেরা টাইপ! এক দেহে যেন দু-তিন ভার্সনের চালচলন।

পাঠক যেখানে হামবড়া ভাব নিয়ে থাকে, কমিউনিটি গঠন করে এর পেছন—ও মারে। সেখানেও বা লেখকের দোষ কী?

উঁহুঁ। যত দোষ আবার নন্দের না। কিছু লেখকও আছে একটু আঁতেল টাইপের। এই মনে করেন, হামবড়া ভাব ম্যাক্স প্রো। অনেক লেখক তো আলোচনা করা পাঠকদের ওনাদের লিস্টে রাখতেই চায় না। কারণ তারা একটা কিছু। বললাম না বেশি কিছু।

যাহোক, আঁতে ঘা লাগলে দুঃখিত। দুঃখিত স্যার, যদি আপনি এই রিভিউটি পড়ে থাকেন। বিশেষ করে এই অংশ। সবকিছু গোড়ায় গন্ডগোল। তাই সূত্রপাত অংশে করলাম না-হয় একটু আলাপন। আমরা সবাই তো আবার হিউম্যান কাইমেরা তাই না?

বইয়ের সূত্রপাত দারুণ। এক নিমিষে গল্পে নিজেকে মিশিয়ে নেওয়ার মতোই। এই লাইনটি শুধু বলতে চেয়েছিলেম।

● গল্প বুনট » লিখনপদ্ধতি » বর্ণনা শৈলী—

বইয়ের আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে কিছু বলা যাক। প্রথমে আসি গল্প বুনন কেমন ছিল। এক কথায়—টপ ক্লাস। অজস্র ঐতিহাসিক ঘটনার সাথে বর্তমান সময়ের মিশ্রণ ছিল নজরকাড়া। পুরো সময়টা গল্পের প্রেক্ষাপটে বুঁদ হয়ে ছিলাম। এত এত সাহিত্যিক মান-সম্পন্ন শব্দের ছড়াছড়ি যা লেখে শেষ করা যাবে না। স্যারের কিছু চিরাচরিত শব্দ যেমন—এন্তার, কবন্ধ, বর্তুলকার, কালান্তক এইটে, সেইটে টাইপ শব্দের আধিক্য বেশ ভালো পরিমাণে ছিল।

সংলাপ নিয়ে বললে, চরিত্র ভেদে পার্থক্য করা একদম-ই গেল না। আমেরিকা থেকে ছ’ মাস বাংলা শিখে আসা মেয়ের সংলাপের ভাষাও যা, দেশিয় সব চরিত্রের ভাষাও তা। ব্যতিক্রম শুধু এক জায়গায়। কলকাতার ভাষা ও সংলাপের টোন কয়েক পৃষ্ঠায় এসে উপস্থিতি জানান দিয়েছিল। একেবারে পাকা তারানাথ তান্ত্রিকের গল্প বলার স্টাইল। খানিক বাদে সেটাও উধাও। উত্তম পুরুষে বর্তমান কাহিনি পরিচালনা আর বিদুষী নারীর প্রাঞ্জল অ-পরিবর্তনীয় ভাষায় পুরো ঐতিহাসিক কাহিনির কল্পনা-ঝল্পনা দিয়ে ভেজানো হলো গলা।

তবে খারাপ লাগেনি কিছুই। হাজার হোক লেখকের ভাষা বলে কথা। রংঢং যাহোক, পোক্ত লেখনশৈলীর জোর ছিল ঠিকই। কমতি নেই বইয়ে বলা আর্জিওলিক্যাল যত সাইট আর মন্দির-মসজিদের বিশদ বিবরণে। একেবারে অস্থির পর্যায়ে। তখন এ-কারণে ‘মাথা চূর্ণবিচূর্ণ’ হওয়ার কথা জানালাম। মরুভূমিতে ওঠা বালিয়াড়ি, হারিয়ে যাওয়া জাতিস্মরের কুণ্ডলী, খুঁজে পাওয়া কোনো আশ্চর্য নগরী; বাদ দেয়নি কোনো কিছু। সবই জীবন্ত লাগে—নেত্রপাতের পার্থিব জগতের ঘোরে।

এ-ছাড়া ���পমাও আছে বেশকিছু; যা গল্পের পটভূমির সাথে খাপ খেয়ে গেছে মিহিভাবে। খাবারের বর্ণনা নিয়ে কিছু বলতে গেলে আরও কয়েক লাইন তৈরি করতে হবে। তাই সে-সব আপনাদের জন্য না-হয় রেখে দিলাম। ইয়াম্মি পুরো।

● চরিত্রায়ন—

অভিযোগ আছে। তবে হালকা। ফারাবি সাহেবের পাশাপাশি বাকি দুই-চার সাপোর্টিং চরিত্র থাকলেও; লিয়া, খাজা নিজাম উদ্দিন ছাড়া দোলন-বিমল ঠিক সে-ভাবে ডানা মেলতে সক্ষম হয়নি। শেষ পরিণতি নিয়ে আর নাই-বা বলি।

এ-ছাড়া হযরত ইয়াকুব (রা:), মহাবীর আলেকজান্ডার, পারস্য রাজা ক্যাম্বাইসিস, বিতর্কিত হিলিওগেবালাস, মুহম্মদ বিন কাশেম, ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি, সোলায়মান, সিকান্দার শাহ, জালালউদ্দিন যদু শাহ-এর মতো দাপিয়ে বেড়ানো ইতিহাস যোদ্ধা ও বোদ্ধাদের আগমনে পুরো বইয়ের পাতা হয়েছে ভারী। আসলেই ভারী। প্রকাশনা থেকে সম্ভবত সে-জন্য ১০০ গ্রামের পাতা ব্যবহারও করতে হয়েছে।

উক্ত চরিত্রদের ক্রিয়াকলাপের সাথে লেখকের কালো পাথর মিথের যোগসাধন প্রক্রিয়া দেখার মতো। পাঠক হিসেবে আমি ভীষণ উপভোগ করেছি। আবারও বলছি যারা শুধু থ্রিলের কমতি আছে বলে বইটি পড়বেন না বলে ঠিক করেছেন অথবা ইতিহাস নিয়ে অগাধ আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও বইটি এখনও পড়েননি—তাঁদের জন্য আপাতত সমবেদনা জানাতে হচ্ছে।

আমি নিজের একটি টাস্ক পূরণের জন্য বইটি গত বছর কিনে ফেলে রেখেছি। সময় এসেছে তাই পড়ে শেষ করে সেই টাস্ক সম্পূর্ণ করেছি।

● অবসান—

কত লম্বা আলোচনা। হাঁপিয়ে গেলেন বোধহয়। আমিও।

এত বিশাল ঐতিহাসিক বর্ণনা আর বর্তমানে চরিত্রদের কাজের আনাগোনা দেখতে দেখতে হাঁপানো স্বাভাবিক। তবে শুরুটা ঠিক যে-ভাবে হয়েছিল; শেষটা মনঃপূত হয়নি। লেখক চাইলে আরও ২০-৩০ পৃষ্ঠা বাড়িয়ে গল্পকে আরেকটু ঘুরিয়ে সুন্দর সমাপ্তি দিতে পারতেন। শেষ দুই পৃষ্ঠা নিয়ে আক্ষেপ বরাবর-ই থেকে যাবে।

অতিপ্রাকৃত নিয়ে নাড়াচাড়া এ-জন্য রিস্কি। এ-বই আরও হিস্ট্রি-হরর জনরার। গোঁজামিল না লাগলেও; অতিপ্রাকৃত ঠিক প্রকৃত মনে হয়নি। কয়েকটা জায়গা ব্যতীত।

কাইমেরা নিয়ে যে ব্যাখা লেখক দিয়েছেন সেটাও ঠিকঠাক লেগেছে। কারণ ভ্যাম্পায়ার সিনড্রোম রয়েছে এ-রকম একটা রোগের কথাও নেটে পড়েছি। তাদের রক্ত খাওয়ার বাতিক আছে। এক শরীরে দু-রকম সত্তার বসবাস। এখানে কিন্তু ভ্যাম্পায়ার সিনড্রোম নয়; আছে অন্য কিছু। কাইমেরা সিনড্রোম। আসল সিনড্রোমের নাম লুকানোর জন্য বললাম।

তবে এই কাইমেরা নিয়ে গল্পের ব্যাপ্তি সীমিত। কারণ আবার পরিমিত। যাহোক শেষটা-সহ বললে বইটি উপভোগ্য।

◆ খুচরা আলাপ—

লেখকের হাইপোথিসিস নিয়ে প্রশংসা না করে পারা যায় না। গল্পচ্ছলে এমন কিছু বিষয় নিয়ে এত সুন্দর সব কথা বলেছেন যা ভাবিয়েছে অনেক। এই যেমন, ভিক্ষাবৃত্তি নিয়ে বলেছেন—

❝এই দেশে যত জন কাজ করে খায়, ভিক্ষে করে ঠিক তত জনই। ভিক্ষে করাও একটা পেশা। এখানে যত ভিখিরি আছে দুনিয়ার অর্ধেক দেশে তত জনসংখ্যাই নেই। এই দেশের নাম বাংলাদেশ না হয়ে বেগিংদেশ হওয়া দরকার।❞

যথার্থ বলেছেন। তবে পরিষ্কার জামা-প্যান্ট পরা রিটায়ার্ড প্রাইমারি স্কুলমাস্টার ভিখিরি কখনও স্বভাবের বশে ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নিবেন না। অভাবে স্বভাব নষ্ট হয়—এই প্রবাদ আমাদের সকলের জানা। তেমনই কেন ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে হয়—সেটাও।

ঐতিহাসিক কাহিনির কারণে অনেক বর্বরতা, দুর্বলদের ওপর অত্যাচার, নারীদের ভোগ্য বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করা যেন সৃষ্টির শুরু থেকে প্রচলিত। এমন কিছু বর্ণনা রয়েছে বইতে; যা পড়তে গিয়ে থমকে যেতে হয়। কী সে-সব; তা নাহয় বই পড়ে জেনে নিলেন। আজ এতটুকুই।


◆ লেখক নিয়ে কিছু কথা—

লেখকের সাথে পরিচয় ‘তিন পয়সা’ অথবা ‘প্রাচীন মুদ্রা’র নভেলার মাধ্যমে। এক গল্প পড়ে ভক্ত বনে যাওয়া আমার মতো পাঠকের জন্য একটু কষ্টসাধ্য হলেও—সেইটেই হয়েছে। এর পরে ‘জাদুকর জমরুদ’ গল্প সংকলন পড়ে আগ্রহের পারদ তুঙ্গে চড়েছে। তখনই ❛দ্য হিউম্যান কাইমেরা❜ বইটি সংগ্রহ করে ফেলা। এক্সপেকটেশন অনুযায়ী যতটুকু চেয়েছি—পেয়েছি। আগামীতে ওনার যে-কোনো গল্প অথবা উপন্যাস সংগ্রহের ওপরের সারিতে থাকবে। ‘বেতাল’ নিয়ে খুবই আশাবাদী; দেখি দ্রুত সংগ্রহ করতে হবে।

লেখকের জন্য শুভকামনা। এ-রকম ইতিহাসের পাতায় আরও অনেক বার ঘুরে আসতে চাই, আপনার কল্পনায় ভর করে। আরও বেশি বেশি উপন্যাস-গল্প লিখতে থাকুন স্যার।

● সম্পাদনা ও বানান—

সম্পাদনার ত্রুটি বেশি না দেখা গেলেও, নাম বিভ্রাট কয়েক জায়গায় চোখে পড়েছে। বেশ কিছু বানান ভুল আছে, লেখকের সিগনেচার বানান ছাড়াও। এ-ছাড়া আর তেমন কোনো সমস্যার মুখোমুখি হয়নি। গল্পে বিভোর ছিলাম বলে।

● প্রচ্ছদ » নামলিপি—

সজল ভাইয়ের সেরা কয়েকটা প্রচ্ছদের ভেতর এই বইয়ের নামলিপি ও প্রচ্ছদ দুটোই সেরা হয়ে থাকবে। বইটির কনটেন্টের সাথে পরিপূর্ণ জাস্টিস করেছেন। এত দুর্দান্ত নামলিপি আর প্রচ্ছদের কালার কম্বিনেশন। যা বারবার চেয়ে থাকতে ইচ্ছা করে। সদ্য প্রকাশিত ‘বেতাল’ উপন্যাসের প্রচ্ছদও অস্থির হয়েছে। এই দুটো প্রচ্ছদ সজল ভাইয়ের সেরা কাজগুলোর উদাহরণ হয়ে থাকবে। গ্রেট জব ব্রো। রিয়েলি গ্রেট।

● মলাট » বাঁধাই » পৃষ্ঠা—

শক্তপোক্ত মলাট, আর ১০০ গ্রাম ওজনের পৃষ্ঠা। বাঁধাইও বেশ ভালো, দু’দিকে খুলে পড়ার মতো। প্রোডাকশন কোয়ালিটি উন্নত। ভেতরের পৃষ্ঠাগুলো দু’দিক থেকে চাপা মার্জিনের কারণে অনেকটা চিঠির মতো দেখাচ্ছিল। ইচ্ছাকৃত ভাবে রাখা সম্ভবত। ২৩৮ পৃষ্ঠা হলেও; গতানুগতিক কাস্টমাইজড করলে পৃষ্ঠা সম্ভবত ১৮০+ এ-রকমই হতো। দাম অনুযায়ী ঠিকঠাক।

≣∣≣ বই : দ্য হিউম্যান কাইমেরা - বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন
≣∣≣ লেখক : মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর
≣∣≣ জনরা : হিস্টোরিক্যাল-হরর থ্রিলার
≣∣≣ প্রথম প্রকাশ : অক্টোবর ২০২০
≣∣≣ নামলিপি • প্রচ্ছদ : সজল চৌধুরী
≣∣≣ প্রকাশনা : বিবলিওফাইল প্রকাশনী
≣∣≣ মুদ্রিত মূল্য : ৩২০ টাকা মাত্র
≣∣≣ পৃষ্ঠা : ২৩৮
Profile Image for musarboijatra  .
283 reviews351 followers
February 9, 2021
প্রারম্ভিকায়ই পুরোদস্তুর চমকে গেছিলাম, যখন প্রেক্ষাপট পবিত্র মক্কা নগরী, আর ঘটনা- ক্বাবার কালো পাথর চুরি!

প্লট :
খান মোহাম্মদ ফারাবী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস পড়ান, আর ব্যক্তিগতভাবে আগ্রহ রাখেন প্রত্নতত্ত্বে। নবাব বংশের খাজা নাজিমের অনুরোধে তাঁর প্রত্নতত্ত্ববিদ বোনের সাথে যখন অতীতের এক প্রত্নসম্পদের খোঁজে তাকে নামতে হয় ইতিহাসের পথে, ব্যক্তিগত জীবনের চেপে রাখা কিছু টানাপড়েনের সাথে পাঠক পরিচয় পায় তার রহস্যময় ক্ষমতার- অথবা আপদের! হাজার বছর ধরে পৃথিবীর একেক প্রান্তে হাতবদল হওয়া এক শক্তিশালী আরটিফ্যাক্টের সন্ধানে ভারতবর্ষের ইতিহাস পালটে দেবার উপক্রম হতে শুরু করলো যখন, একে একে মানুষের অপমৃত্যু হানা দিতে লাগলো ফারাবীর দুঃস্বপ্নেও। কি সেই আর্টিফ্যাক্ট, যার পেছনে ছুটেছিলেন সব সম্রাট, দিগ্বিজয়ী, এমনকি পয়গম্বরেরাও? ঠগীর হাত ফস্কানো এক কোদাল আর প্রাচীন সভ্যতার কয়েন নিয়ে শুরু হলো অনুসন্ধান।

পাঠকের মূল্যায়ন :
ঐতিহাসিক উপন্যাস বলতেই ড্যান ব্রাউনের তুলনা না টেনে, 'বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন : দ্য হিউমেন কাইমেরা'র সাথে বরং এসাসিন্স ক্রিড গেইম সিরিজের তুলনা করা যেতে পারে। সুদূর অতীত থেকে একটা আরটিফ্যাক্ট-কে ট্র্যাক করে বর্তমানে তাকে খুঁজে পাওয়া, এবং আরটিফ্যাক্টের প্রভাবে ইতিহাসের নানান পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে একটা অল্টারনেট হিস্টরি রচনা করা, এমনটাই খুঁজে পাবেন বইটাতে।
ভূমিকায় লেখক বিনীতভাবে বলে দিয়েছেন, যারা ইতিহাস পড়তে পছন্দ করেন না, তাদের জন্য এই বইটা না। 'অল্টারনেট হিস্টরি' জনরায় যারা লিখেন, তাঁদের ইতিহাসের পাতায় অগাধ বিচরণ করতে হয়, আর তারপর চোখের সামনে থাকা বর্তমানের মাঝে কেমন করে তারা নিজেদের থিওরিকে প্রতিষ্ঠা করেন, সেটাই আসলে দেখার এবং আনন্দ পাবার বিষয়। অল্টারনেট হিস্টরির সব লেখকই যে ড্যান ব্রাউন বা জেমস রোলিন্সের মতো থ্রিল দিতে পারবেন না, এটা শুরুতেই মেনে নিতে পারলে হয়তো বইটা পড়ে পাঠক আনন্দই পাবেন।
ক্বাবা’র কালো পাথর বলতে স্বাভাবিকভাবেই 'হাজরে আসওয়াদ'-এর কথা মাথায় আসলেও, আদতে এই বইয়ে বলা কালো পাথরটা লেখকের নিজের তৈরী একটা এলিমেন্ট। লেখক তার সাথে যোগ করেছেন সলোমনের 'আর্চ অব কোভ্যানেন্ট', সিওয়ার আমন মন্দিরের ভবিষ্যদবাণীর মতো ভীষণ আগ্রহোদ্দীপক সব উপাদানকে... আর অল্টারনেট হিস্টরী যেহেতু, তাতে বিখ্যাত মানুষদের সংযোগ তো থাকতেই হবে। একে একে কালো পাথরের ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন হযরত ইয়াকুব (আঃ), পারস্য-রাজ ক্যাম্বাইসিস, আলেকজান্ডার, বিতর্কিত সম্রাট হিলিওগেবালাসের মতো চরিত্ররা, একে একে যোগ দিয়েছেন হাজ্জাজ বিন ইউসুফ, মুহম্মদ বিন কাশিম, বখতিয়ার খলজি, সিকান্দার শাহ, জালালউদ্দিন যদু শাহ প্রমুখ চরিত্ররাও যাদের আমরা খুঁজে পাই ভারতবর্ষের ইতিহাসের পাতায়।

উপাদান এবং ম্যাপ :
লেখক আলমগীর তৈমুর আমাদের চেনা ইতিহাসের চেনা উপাদান, চরিত্র, স্থাপত্যকেই কেবল নিজের দক্ষতায় ব্যবহার করেননি, পাঠকের সুবিধার্থে এই অল্টারনেট হিস্টরির যাত্রাপথকে চিহ্নিত করেছেন পৃথিবীর মানচিত্রে, বইয়ের শুরুতেই। কল্পনা করতে অনেক সাহায্যই করেছিল সেটা।
‘দ্য হিউম্যান কাইমেরা’ উপাদানটা নেহায়েত অপ্রয়োজনীয় এবং অযৌক্তিক মনে হয়েছে। অতিপ্রাকৃত উপাদান/ঘটনা/ব্যাখ্যা মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু অতিপ্রাকৃত চরিত্রকে মেডিকেল সায়েন্স দিয়ে ব্যাখ্যা করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা খুবই হতাশাজন। তদুপরি, এই ব্যাপারটা বইয়ে না আনলেও গল্পের মূল গতিধারার কিছু এসে যেত না।

চরিত্রায়ণ :
চরিত্রায়নে দুর্বলতা বিদ্যমান, এবং সেটা হলো- পুরো বইজুড়ে বিরাজ করেছেন একজনই, লেখক স্বয়ং। সব চরিত্রের মুখ দিয়ে নিজের ন্যারেটিভে ইতিহাস বর্ণনা করার কারণে আলাদা করে তাঁদের চিহ্নিত করা যায়নি, সবাইকে একজনই মনে হয়েছে। চরিত্র নির্মাণে দক্ষতাসম্পন্ন লেখকদের একেকটা চরিত্রের সংলাপ পড়লে বা আচরণ/সিদ্ধান্ত লক্ষ্য করলেই একজনকে আরেকজন থেকে আলাদা করা যায়। তবে এই ক্ষেত্রটায় এই বইয়ের লেখক দুর্বল রয়ে গিয়েছেন।

ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট :
এবং বইয়ের একেবারে শেষ দৃশ্য অব্দি প্রটাগনিস্টের ক্যারেক্টারের ডেভেলপমেন্ট ভালোলাগার মতোই। তার ক্ষমতার নজির পেয়েছি অল্পস্বল্প, তার মানসিক দ্বন্দ্ব লক্ষণীয়। একটা সাদামাটা সাধারণ চেনা লোক থেকে তাকে উঠিয়ে আনা হয়েছে, এবং এই জায়গাটায়, লেখক যেটা মিস করে গেছেন সেটা হলো, অতীতের মাঝে এই চরিত্রটার গুরুত্বপূর্ণ কিছু লুকিয়ে আছে, এবং সেটা কি, তার কোনো আন্দাজই লেখক দিতে পারেননি পুরো বইটাতে। এই যেমন রহস্যময় কোদালটা কিভাবে তার হাতে এসে পৌঁছুল, তাও লেখক এক কথায় বলে দিয়েছেন নিতান্ত হেলাফেলায়। বৃন্দাবন ঘটক কে, তাই জানা হয়নি, যদিও একাধিকবার তার উল্লেখ এসেছে।
এর বাইরে অন্যান্য পার্শ্বচরিত্র যেমন লিয়া, খাজা নিজাম- তাদের বিশেষ ডেভেলপমেন্ট দেখা যায়নি। দোলন, বিমল চরিত্রগুলো আরো ভূমিকা রাখতে পারতো, কিন্তু তাদের উপস্থিতি প্রায় নেই-ই।

বর্ণনাভঙ্গী :
• ইতিহাসের অংশে লা-জওয়াব! কিন্তু বর্তমানে খানিক খটকা তো পাঠকের লাগবেই। বিশেষ করে যখন স্বপ্নে দেখা রাস্তাকেও মিরপুর অতো নাম্বারের অমুক গলি বলে স্বপ্নের মাঝেই চিহ্নিত করা যায়। প্রটাগনিস্টের স্বপ্নদৃশ্যগুলোতে লেখক যখনই অধিক বর্ণনার আশ্রয় নিয়েছেন, তখনই ব্যাপারটা তখনই খাপছাড়া লেগেছে।
• শুরুতেই বিমল-দোলনের দৃশ্যটায় কিছু আরোপিত হিউমার লক্ষ্য করা গেছে। লেখক কি ধরে নিয়েছিলেন যে পাঠকের জন্য বইয়ের মেজাজ হালকা করতে হিউমার আনা আবশ্যিক? লেখকেরা যখন রসবোধ চাপিয়ে দিতে চান, সেটা পাঠক হিসেবে বরং আরো বিরক্তিকর মনে হয়।
• লেখকের 'প্রাচীন মুদ্রা' আমার পড়া তাঁর প্রথম লেখা, আর সেখানেও ইতিহাসের বাইরে বর্তমানের টাইমলাইনটার নাজুকতা চোখে পড়েছিল। বর্তমানে দাঁড়িয়ে অতীতের বর্ণনা করা হচ্ছে, কিন্তু বর্তমানে ঘটছে কমই। দ্য হিউমেন কাইমেরা-তে অবশ্য ‘প্রাচীন মুদ্রা’র চেয়ে প্রেজেন্ট ডে টাইমলাইনের গুরুত্ব তুলনামূলক বেশিই, তবে জনরার জন্য এই নিয়ে অভিযোগ অন্তত রাখব না।
শুরুতে এসাসিন'স ক্রিডের উদাহরণ টেনেছিলাম। যাদের এই জনরা ভালো লাগে, অর্থাৎ, চেনা চরিত্র, জানা ঘটনা, দেখা স্থাপত্যের ভেতর থেকে একটা থিওরিটিকাল অজানা ইতিহাস যখন বের করা হয় এবং বাস্তব উপাদানগুলো ব্যবহার করেই ভাবতে বাধ্য করা হয়, যে, এমন অল্টারনেট হিস্টরিও ঘটা সম্ভব, হতেই পারে, তাঁদের জন্য এই বইটা পারফেক্ট। এবং নিজের জনরায় মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর স্যার সবার ওপরে, সেটা তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন। 'বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন: দ্য হিউম্যান কাইমেরা' ছিল তাঁর প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস। আশা করি পাঠক তাঁর কাছ থেকে এমন বড় কলেবরে আরো কাজ প্রত্যাশা করবেনই। এবং মনে হয়েছে ‘বজ্রযোগী’ সামনে আরো কাহিনীতে আত্নপ্রকাশ করতে পারেন, হয়তো সেখানে ‘ঠগী’র মতো উপমহাদেশীয় ঐতিহাসিক উপাদানগুলো সবিস্তারে ব্যবহৃত হবে।

বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন: দ্য হিউম্যান কাইমেরা
লেখক : মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর
প্রকাশক : বিবলিওফাইল
প্রকাশকাল : অক্টোবর ২০২০
মুদ্রিত মূল্য : ৩০০টাকা
প্রচ্ছদ : সজল চৌধুরী
জনরা : ঐতিহাসিক উপন্যাস, অল্টারনেট হিস্টরি
Profile Image for Sazal Chowdhury.
Author 19 books179 followers
April 26, 2022
❝একামেনিড সৈন্যদের আবার সাঙ্ঘাতিক উদ্ভাবনী ক্ষমতা! যুদ্ধবন্দিদের ধরে এনে বড় এক কাঠের বারকোষে আধশোয়া করে রাখতো তারা। পানি ঢেলে ভরে ফেলতো বারকোষ। বন্দির মুখটাই শুধু উপরে ভেসে আছে। ভালো করে গুড়-মধু লেপে দেয়া হতো মুখে। রাজ্যের মৌমাছি, পিঁপড়ে, বোল্লার দল এসে মুখের ওপর হামলে পড়তো মিষ্টি খেতে। ওদিকে বন্দিকে আবার ঘন ঘন ভালো-মন্দ খাবার দেয়া হতো। দেদারসে জল-খাবার খেয়ে বন্দির পেশাবপায়খানাও হতো যখন-তখন। সে ভাসতো নিজের মল-মূত্রের ভেতর। এভাবে পড়ে থাকার কারণে শরীরে দেখা দিত বড় বড় ঘা। ঐ জঘন্য পরিবেশে জন্মাত রাজ্যের পোকা-মাকড়। খেতে শুরু করতো ঘাঅলা শরীর। আক্ষরিক অর্থেই জীবন্ত পচে মরতো যুদ্ধবন্দি। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে সময় লাগতো সতের দিন! নারকীয় শাস্তি আর বলে কাকে!❞

এরকম সব ইতিহাসের ঘটনার বর্ণনায় সিক্ত মুহম্মদ আলমগীর স্যারের প্রথম উপন্যাস "দ্য হিউম্যান কাইমেরা : বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন"।

ওনার বইয়ের প্রচ্ছদ করতে গিয়ে বরাবরের মতোই বিস্মিত হয়েছিলাম। মোটামুটি যা যা ইতিহাস উনি তুলে ধরেছেন, তা প্রায়ই সবই বাস্তবসত্য। প্রচ্ছদের জন্য যখন এলিমেন্ট খুঁজছিলাম, প্রায় সবই পেয়ে গেছি।

এর আগে উনি যা লিখেছেন তা সবই গল্প, কিংবা উপন্যাসিকা। কিন্তু এবার লিখলেন একেবারে উপন্যাস। তবে উপন্যাস লিখলেও উপন্যাসিকার ছাঁচটা অক্ষুণ্ন রেখেছেন এবং পাঠশেষে প্রায় সব পাঠকই বলবেন যে আরো কেন লিখলেন না।

ইতিহাসের পাশাপাশি উপভোগ ���রেছি খাবারের বর্ণনাগুলো। খাবারগুলো অনেক দামি দামি। নইলে কখনো চেখে দেখতাম। 😅

যারা তৈমূর স্যারের লেখার ভক্ত তারা তো এমনিতেই পড়বেন, তবে যারা ঐতিহাসিক তথ্য সমৃদ্ধ লেখা পড়তে খুব পছন্দ করেন, আর তথ্যের ভারে ভারাক্রান্ত হন না, তাদের জন্য এটা দারুণ এক বই হবে। ঐতিহাসিক তথ্যগুলো জেনে আমি অনেক অবাক হয়েছে, কত কিছুই জানি না।

২৪০ পৃষ্ঠার এই বইটির মুদ্রিত মূল্য ৩০০ টাকা। প্রকাশিত হয়েছে Bibliophile Publications ::: বিবলিওফাইল প্রকাশনী থেকে। ১০০ জিএসএম কাগজ, শিক বাইন্ডিং, ইউভি স্পট, এম্বুশ— সব মিলিয়ে দারুণ প্রোডাকশন হয়েছে। যা কারো কারো পড়ার মজা বাড়িয়ে দেবে বলে আমার বিশ্বাস।
Profile Image for A. Rahman Bishal.
267 reviews12 followers
October 29, 2021
তৈমুর স্যারের লেখার সাথে আমার পরিচয় ছোটদের রূপকথার বই 'জাদুকর জমরুদ' দিয়ে। আর এই এক বই দিয়েই তার লেখার স্বাদ জিভে লেগে গেছে। সেই থেকে স্যারের সব লেখা পড়ে ফেলার তাগিদ, আর তা থেকেই তার প্রথম উপন্যাস, দ্য হিউম্যান কাইমেরা তুলে নেয়া।
গল্পের শুরু ছোটগল্প 'বজ্রযোগীর প্রত্যাবর্তন' এর ঠিক পরপর। ওটা পড়া থাকলে ভালো, পড়া না থাকলেও উপন্যাসের কাহিনী বুঝতে সমস্যা নেই কোন। সত্যি বলতে কী, গল্পের ব্যপ্তির তুলনায় বইয়ের কলেবর বড়ই। ছুটাছুটি আর রহস্য যা কিছু আছে, তা শেষাংশে। তাহলে বাকি অংশে কী? যথারীতি-ইতিহাস আর পুরাতত্ত্ব। আমার মতো অধৈর্য পাঠকের পক্ষে এত ইতিহাস পড়া ভীষণ মুশকিল হবার কথা। তবে দু-তিন দিনের মাঝেই বই খতম। সব যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তা নিঃসন্দেহে চমৎকার। সব তুলে এনেছেন চরিত্রদের কথোপকথনের মাধ্যমে। পড়ে মন হয় আসলেই সামনে বসে ইতিহাসের গল্প শোনাচ্ছে কেউ। আর উপাদানওগুলোও! মিশর-লিবিয়ার মরুভূমি থেকে মুসলিম খেলাফত, সেখান থেকে ভারতবর্ষের ইতিহাস! মুহাম্মদ বিন কাশিম, আলেক্সান্ডার, বখতিয়ার খিলজি, নানা ফারাওয়ের কেচ্ছা, কী নেই!
তবে বইটা তুলে নেবার আগে ভূমিকায় লেখা স্যারের সতর্কবাণী মনে করিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। ইতিহাসে আগ্রহ না থাকলে এ বই শ্রেফ পাঁচটনী ট্রাক হিসেবে বুকে চেপে বসবে। দ্রুতগতির থ্রিলার চাইলে এদিকে না ভেরাই উত্তম।
বইয়ের প্রোডাকশন চমৎকার। এই সাইজের বই হয়েই হাতে নিলে মনে হয় ইট তুলে ধরেছি। এর কারণ সম্ভবত সাধারণের চাইতে মোটা কাগজ। সেই সাথে আছে সজল ভাইয়ের চমৎকার প্রচ্ছদ। সব মিলিয়ে দারুণ জিনিস।
Profile Image for Ezaz Ahmed.
5 reviews16 followers
March 27, 2021
বইটা শেষ করে খুব দোটানায় পড়ে গেছি রেটিং দিতে গিয়ে। না পারছি ৩ দিতে, না পারছি ৪ এ রাখতে। লেখকের অন্য সকল লেখা ই আমাকে টেনেছে এই বইটা হাতে তুলে নিতে। মূলত অন্যরকম প্রত্যাশায় বইটা নিয়ে বসায় ব্যাক্তিগত রুচির জন্যেই এই বিভ্রাট।

অবশ্য পাঠক ভেদে এমন একটা অভিজ্ঞতার প্রতিক্রিয়া হবে আঁচ করেই ভূমিকাতে লেখক সাহেব এক সতর্কবাণী দিয়ে রেখেছেন, " যারা ইতিহাস পড়তে পছন্দ করেন না, তাঁদের কাছে সবিনয় নিবেদন, দয়া করে এই বইটা কিনবেন না। কারণ, এ লেখা ঐতিহাসিক বর্ণনায় ঠাসা। যদিও বেশির ভাগই কাল্পনিক!
এখানে ইতিহাসের বর্ণনা কিলোমিটারের পর কিলোমিটার লম্বা। ধর তক্তা মার পেরেক ধরনের কাহিনি তো অবশ্যই না। যাঁরা ননস্টপ অ্যাকশন খুঁজছেন, তাঁদের এই বই কেনা হবে বিরাট ভুল সিদ্ধান্ত। গাঁটের পয়সা দিয়ে কিনে, মোবাইলের এই যুগে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে পড়ে, পাঠক যদি নিজেকে প্রতারিত মনে করেন, তবে সেটা হবে দারুণ দুঃসংবাদ। সুতরাং, সতর্ক হোন কেনার আগেই। তাহলে, আপনিও ভালো থাকলেন, আমিও বাঁচলাম। "

তবে বলতে হয় শেষমেশ, মূল চরিত্র-পার্শ্ব চরিত্রদের নিয়ে সাজানো প্লটের চেয়ে ঐতিহাসিক বর্ণনাগুলো ই বেশি উপভোগ করে ফেলেছি।
সবমিলিয়ে যদি বলতে হয়, আমি বলব, আমি প্রতারিত হইনি।🙂

ব্যাক্তিগত রেটিংঃ ৩.৫/৫
Profile Image for Zubair Shoaib.
52 reviews3 followers
January 11, 2022
বইটা অভারঅল ভালোই লেগেছে।
ভালো লাগার সাথে তবে খারাপ লাগাগুলো যোগ করলে রেটিং রেটিং ৩ না ৪ দিব কনফিউশনে পরে যাই।
ইতিহাসের বর্ণনা পুরোটা সময়ই ভালো লেগেছে।
তবে বর্তমান টাইমলাইনের লিয়ার রুপের বর্ণনা ছাড়া আর কিছুই আমার কেনো যেনো ভালো লাগেনি।
তার ওপর দুম শেষ করে হওয়াটা আমার অন্তত পোষালো না।
সব মিলিয়ে বইটা আরও ভালো হতে পারতো, তবে যা হয়েছে মন্দ নয়।
আমার পয়সা উসুল।

রেটিং ৩.৫০
Profile Image for Mahfuza Akter.
7 reviews2 followers
February 8, 2022
প্রিয় লেখকের বই। উনার লেখার ধরণই এমন যে পড়তে বসলে শেষ না করে সহজে উঠার উপায় থাকে না। লেখকের অন্যসকল বইয়ের মতোই ইতিহাসের সাথে বর্তমানকে মিশিয়ে চমৎকার বুননের বইটি। ইতিহাস বিষয়ে আগ্রহীদের অবশ্যপাঠ্য।
Profile Image for Soumyabrata Sarkar.
238 reviews40 followers
January 15, 2022
তিন মহাদেশ জুড়ে, সহস্রাধিক সালের ধূসরিত ইতিহাসের ধুলো মুড়ে আছে এক রহস্যেঘেরা কৃষ্ণশিলাখণ্ড - ইয়াকুব(আঃ), ফেরাউন শিশ্যাক, আলেকজান্ডার, কারাকেলা, হেলিওগেবেলাস, মাআজ বিন জাবাল(রাঃ), হাজ্জাজ বিন ইউসুফ, মুহম্মদ বিন কাসিম, বখতিয়ার খিলজি, ইলিয়াস শাহ, শিকন্দর শাহ, রাজা গনেশ, শাহ জালালুদ্দিন, এবং আরো হাজারো ঐতিহাসিক স্থান-কাল-পাত্রের গর্ভে হঠাৎই হারিয়ে যায় তা কালগর্ভে।

বর্তমান সময়ে ঢাকা প্রত্নশালার সহকারি পরিচালক - নিজামউদ্দিন, তার বোন লিয়া, ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক - মুহম্মদ ফারাবি ঘটনাচক্রে এরই অন্বেষণে খুঁজে বেড়ান স্বপ্ন, কল্পনা ও বাস্তব জগৎ।

ইতিহাসের ঘনঘটা (কারো কাছে কচকচি হয়তবা) পুরোমাত্রায় বিদ্যমান আছে রচনায়, কিন্তু এত তরল গদ্যে লেখক তা রূপ দিয়েছেন, পড়তে বেশি সময় লাগে নি, এবং বেশ উপভোগ করেছি। জায়গা বিশেষে বর্ণনা চিত্রময়, (সিওয়া মরূদ্যানের বিশালকায় ডানাওলা স্ফিংসের পাদদেশে বা হাওড়ার জানবাড়িতে - লুপ্ত সরস্বতী নদিগর্ভে) রোমহর্ষ ও অনাবিল ভাবে চাক্ষুষমান।

তবে কাইমেরার প্রেক্ষিতে - যে চরিত্রটিকে ডঃ জেকিল/মিঃ হাইড করা হয়েছে, তার দ্বিতীয় সত্তাটির চরিত্রায়নে সহজ কৃষ্ণবৈষম্যতা এনেছেন লেখক, বলে মনে হয়েছে
এই শতাব্দিতেও ত্বকের রং ও পুর্বপুরুষদের উপর আরোপিত বর্ণ-বিদ্বেষ দিয়ে যদি এরকম সরলিকরন করি আমরা, তাহলে সেটা আমাদেরই লজ্জা। এর জন্য তাই এক তারা কাটলাম। হয়ত আরো একটা তারা কাটতে হত।
Profile Image for Somen Sarkar.
60 reviews2 followers
October 26, 2021
ইতিহাস আছে, রহস্য আছে, ভয় আছে, তন্ত্র আছে কিন্তু তাও যেন জমেনি, কোথাও যেন একটা ফাঁক রয়ে গেছে। বারবার মনে হয়েছে আরও যেন শব্দের দরকার। আরও কিছু বাক্যের দরকার। আরও সাবলীল হওয়া দরকার। পরিপূর্ণতার অভাব রয়ে গেছে। পড়ে শান্তি পেলাম না।
Profile Image for M. Zaman.
24 reviews5 followers
December 31, 2021
দুর্দান্ত! দুর্দান্ত!!!!! 😍
Profile Image for অমর্ত্য দাশ.
16 reviews6 followers
August 5, 2021
গল্পের চেয়ে 'কালো পাথর'-কে ঘিরে বর্ণনা করা কিংবদন্তি আর ইতিহাসগুলোই বেশি ভালো লেগে গেছে (যদিও প্রথম দিকে তথ্য-উপাত্তের আধিক্যে কিঞ্চিৎ হিমশিম খেতে হয়েছিল, কিন্তু সেগুলোই ধীরে ধীরে কাহিনীর প্রাণ হয়ে উঠেছে); প্রায় আড়াইশো পৃষ্ঠার এক বইয়েই পৃথিবীর ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ের জানা-অজানা ও গুরুত্বপূর্ণ অনেক অনেক চরিত্রকে চোখের সামনে জীবন্ত করে তোলা হয়েছে।
ইতিহাসের উপর তৈমূর সাহেবের দখল রীতিমত শ্রদ্ধাজাগানিয়া। লেখায়ও সেই পাণ্ডিত্যপূর্ণ ভাবটা উঠে এসেছে অবধারিতভাবে। তবে ইতিহাসের ঘটনা বর্ণনার ধাঁচ অনুযায়ী ভাষার ব্যবহার ও শব্দচয়নে আরেকটু মনোযোগ দিলে লেখাটা আরো সুখপাঠ্য হতো বলে মনে হয়েছে।

শেষদিকের টুইস্টটা দারুণ ছিল। প্লট হিসেবে বেশ ভাল। ধীরগতিতে শুরু হয়ে শেষদিকে দারুণ গতির সঞ্চার হলেও, সমাপ্তিটুকু অনেকটাই অনুমেয় আর হতাশাজনক লেগেছে।
Displaying 1 - 30 of 56 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.