Acharya Sir Jagadish Chandra Bose, (Bengali: আচার্য স্যর জগদীশ চন্দ্র বসু )was a Bengali polymath, physicist, biologist, botanist, archaeologist, as well as an early writer of science fiction.He pioneered the investigation of radio and microwave optics, made very significant contributions to plant science, and laid the foundations of experimental science in the Indian subcontinent. IEEE named him one of the fathers of radio science.He is also considered the father of Bengali science fiction. He also invented the crescograph. A crater on the moon has been named in his honor.
Literary Works: Abyakta (Bengali), 1922
Awards: Companion of the Order of the Indian Empire (CIE) (1903) Companion of the Order of the Star of India (CSI) (1911) Knight Bachelor (1917)
বিজ্ঞান বিষয়ে বাংলার সর্বপ্রথম অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও জনপ্রিয় গ্রন্থ 'অব্যক্ত'। দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ একজন বায়োলজিস্ট জগদীশচন্দ্র বসু আমাদের জন্য তার অব্যক্ত কথাগুলো রেখে গেছে তার একমাত্র বাংলায় লেখা এই বইতে।
জগদীশচন্দ্র বসু বইটির 'বিজ্ঞানসাহিত্য' নামক প্রবন্ধটিতে বলেছেন—
'বৈজ্ঞানিক ও কবি উভয়েরই অনুভূতি অনির্বচনীয় একের সন্ধানে বাহির হইয়াছে। প্রভেদ এই— কবি পথের কথা ভাবেন না, বৈজ্ঞানিক পথটাকে উপেক্ষা করতে পারেন না।'
বার্নার্ড শ' জগদীশচন্দ্রকে তার লেখা বইগুলো উপহার দিয়ে লিখেছিলেন— 'Least to the greatest biologist'।
জগদীশচন্দ্র বসু ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্তরঙ্গ বন্ধু। 'অব্যক্ত' বইটি জগদীশচন্দ্রের কাছ থেকে উপহার পেয়ে রবীন্দ্রনাথ প্রত্যুত্তরে লিখেছিলেন—
"যদিও বিজ্ঞানরানীকেই তুমি তোমার সুয়োরানী করিয়াছ তবু সাহিত্যসরস্বতী সে পদের দাবি করিতে পারিত— কেবল তোমার অনবধানেই সে অনাদৃত হইয়া আছে"।
এটি আত্মজৈবনিক ঘরানার অন্তর্ভুক্ত করা হলেও এতে মূলত লেখকের উদ্ভিদবিষয়ক চিন্তাধারাই বেশি ফুটে উঠেছে। অন্যান্য বিজ্ঞানবিষয়ক আলোচনাও আছে, আর এসবের ফাঁকে ফাঁকে নানা ঘটনার আড়ালে ফুটে উঠেছে তাঁর জীবনদর্শন, যা আজও আমাদের জন্য অনুকরণীয়। এমন কিছু বিষয়ই আমি তুলে ধরার চেষ্টা করব। গাছ কি কথা বলে? সেসময় স্বীকৃত না হলেও আজ আমরা জানি, গাছেরও কিছু কথা আছে। অবশ্য আমাদের কাছে অব্যক্ত হলেও সেসব লেখক বুঝতে পারেন। কীভাবে? তার ব্যাখ্যা তিনি দিয়েছেন – “ভালোবাসিয়া দেখিলেই অনেক গুণ দেখিতে পাওয়া যায়, অনেক গুণ শুনিতে পাওয়া যায়” এখানে হয়তো মনে হবে, এটা কীভাবে একজন বিজ্ঞানীর কথা হয়? এ তো বড়জোর দার্শনিকের কথা; বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হতে হলে তো যান্ত্রিক প্রমাণ দরকার। আমিও একথা মানি, আর স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু তা দিয়েও গেছেন, কিন্তু এ কাজে তাঁর যে একাগ্রতা ও পরম ইচ্ছাশক্তির প্রয়োজন ছিল, তা এসেছিল এই ভালোবাসা থেকে। কাজের প্রতি ভালবাসা না থাকলে একাগ্রতা আসে না, একথা তাঁর জীবনে প্রতিফলিত। তিনি বলেছেন- “আগে যখন একা মাঠে কিংবা পাহাড়ে বেড়াইতে যাইতাম, তখন সব খালি খালি লাগিত। তারপর গাছ, পাখি, কীট পতঙ্গদিগকে ভালোবাসতে শিখিয়াছি, তখন হইতে তাদের কথা বুঝিতে পারি আগে যাহা পারিতাম না।” উদ্ভিদজগতকে তিনি কতোটা ভালোবাসতেন, তার স্বাক্ষর ছড়িয়ে রয়েছে বইটির পাতায় পাতায়। আচ্ছা, গাছে অংকুর দেখে কি কখনো মনে হয়েছে, একটি শিশু কৌতূহলভরে নতুন দেশ দেখছে? পত্ররন্ধ্রের রক্ষীকোষকে কি কখনো গাছের ঠোঁট ভাবতে পেরেছি? তিনি পেরেছিলেন, শুধু চোখের দেখা নয়, উদ্ভিদজগতকে তিনি অনুভব করেছিলেন হৃদয় দিয়ে। উদ্ভিদ বিষয়ক পরীক্ষণ থেকে আর একটি বিষয় তুলে ধরা দরকার বলে মনে করি। তিনি একবার লজ্জাবতী গাছ নিয়ে পরীক্ষা করেছিলেন, দেখেছিলেন যে গাছ হতে ছিন্ন পাতাকে পুষ্টিকর খাদ্য দেওয়া সত্ত্বেও বাঁচিয়ে রাখা যায় না। অন্যদিকে আঘাতপ্রাপ্ত গাছটি ধীরে ধীরে সেরে ওঠে। এর ব্যাখ্যা কী? আমাদের কাছে ব্যাখ্যা যাই হোক না কেন, তাঁর ব্যাখার গুঢ় আহ্বানটা ধরতে পারলে কিন্তু চমৎকৃত হতে হয়। “কি কারণে ডাল কাটিয়া লইলে বৃক্ষ আহত ও মুমূর্ষু হইয়াও কিছুদিন পর বাঁচিয়া ওঠে, আর ছেঁড়া পাতা বহু যত্ন সত্ত্বেও মৃত্যুমুখে পতিত হয়? ইহার কারণ এই যে, বৃক্ষের মূল একটা নির্দিষ্ট ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত, যে স্থানের রস দ্বারা তাহার জীবন সংগঠিত হইতেছে। সেই ভূমিই তাহার স্বদেশ ও তাহার পরিপোষক।.......ধৈর্যে ও দৃঢ়তায় সে তাহার স্বস্থান দৃঢ়রূপে আলিঙ্গন করিয়া থাকে, অনুভূতিতে ভিতর ও বাহিরের সামঞ্জস্য করিয়া লয়, স্মৃতিতে বহু জীবনের সঞ্চিত শক্তি আপন করিয়া লয়। আর যে হতভাগ্য আপনাকে স্বস্থান ও স্বদেশ হইতে বিচ্যুত করে, যে পর-অন্নে পালিত হয়, যে জাতীয় স্মৃতি ভুলিয়া যায়, সে হতভাগ্য কি শক্তি লইয়া বাঁচিয়া থাকিবে? বিনাশ তাহার সম্মুখে, ধ্বংসই তাহার পরিণাম।” লেখাটা পড়ার পরেই হঠাৎ চমকে উঠতে হয়। তাহলে এ কি শুধু বৃক্ষের না, জগদীশচন্দ্রেরও অন্তরের সেই অমোঘ বাণী, যা তাঁকে দিয়েছিল বিদেশের নানা প্রলোভন সত্ত্বেও স্বদেশ ভূমিকে আঁকড়ে ধরে বিজ্ঞান সাধনা চালিয়ে যাবার মানসিক বল? হ্যা, এ সেই! আর আজ একেই আমাদের প্রয়োজন। আমাদের সম্বল যতই ক্ষুদ্র হোক, সেটুকুই আমাদের সবচেয়ে আপন। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রবালকীটেরাও তো নিজেদের শরীর দিয়ে বোনে বিশাল দ্বীপের বুনিয়াদ, তবে আমরা কেন পারব না?
গহীন বনে হঠাত শব্দ উঠে। নড়ে উঠে সমস্ত বনানী। যেন এক দীর্ঘশ্বাস ঘুরপাক খেতে খেতে মিলিয়ে গেল দূরে। গাছেরাও ব্যাথা পায়। সে ব্যাথা তাৎক্ষণিক ভাবে দৃশ্যমান হয় না। এই গোপন কান্না একদিন এমনি করে বাইরে বেরিয়ে আসে। কি নিদারুণ কথা!! গাছের জীবন আছে। গাছ জীব। এমনি বইয়ের পাতায় লেখা পড়ে বেড়েছি। কিছু মনে হয়নি। অথচ, আচার্য বললেন দেখো, আর চারপাশে তাকিয়ে দেখি কত বিচিত্র মায়ের বাগানের সব গাছ গুলো!! এক একটা জীবন। ব্যাথা পায়!! সন্তানের জন্যে ব্যকুল হয়!! এবছরের শুরুতে পড়তে বসি "অব্যক্ত"। প্রথম শ্রেণি আর দ্বিতীয় শ্রেণির শিশুদের নিয়ে জানবো গাছের কথা। গতবছর এক অঙ্কুরের শিশু, তার চারা গাছটিকে কিছুতেই উৎসবের প্রদর্শনীর জন্যে দেবে না। কেন গো? "তোমরা কি ওকে খেতে দিবে? এ কদিন ওর যত্ন নেবে কে?" তাই তো। আমরা শুধু বুঝিনা। বন উজাড় হয়ে যায়। আর গাছেদের দীর্ঘশ্বাসে ভারী হয় ... এই বইটার কিছু অংশ যদি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ানো হতো বেশ ভালো হতো।
আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুকে শুধু বৈজ্ঞানিক হিসেবে চিনতাম। তার মধ্যে যে সাহিত্যমনা একটি ব্যক্তি লুকায়িত আছে তা জানতাম না। একজন বিজ্ঞানী কিভাবে তার গবেষণার বিষয়গুলো এত সুন্দর করে গুছিয়ে লেখতে পারেন এবং আবিষ্কারের পেছনে সত্যিকার দর্শনগুলো কিভাবে অনুভব করতে পারেন তা বইটি না পড়ে বোঝা যায় না। বইটিতে জগদীশ চন্দ্র বসু তার আবিষ্কারের সংক্ষিপ্ত বিবরণের সাথে যুক্ত করেছেন স্বজাতি,স্বদেশ,স্বভাষা প্রতি তার অনুরাগ, কিছুটা আক্ষেপ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি কিছু উপদেশ। সর্বোপরি বইটি বাংলাভাষী সকলের জন্যই অনুপ্রেরণাদায়ক বলে মনে করি।
জগদীশচন্দ্র বসু যে একজন অসামান্য বিজ্ঞানী সে ধারনা বাল্যকাল থেকেই ছিল। অব্যক্ত বইটির মাধ্যমে সাহিত্যিক জগদীশচন্দ্রকে চিনলাম। বিজ্ঞান ও সাহিত্যের এক অপূর্ব সংমিশ্রণ বইটি। আমাদের দুর্ভাগ্য, ওনার প্রকাশিত বই এই একটিই।
খুব কম ভাষা আছে যাতে বিজ্ঞানের জ্ঞানের সীমানায় দাড়িয়ে কেউ বিশ্ব-প্রকৃতিকে জরিপ করেছে, অবাক বিস্ময়ের চোখে দেখেছে| বাংলা ভাষিদের পরম সৌভাগ্য যে আমাদের ভাষাতে এমন কীর্তি রেখে গেছেন জগদীশ বসু|
লেখকের লেখার শৈলি রবীন্দ্রনাথের প্রবন্ধ শৈলির সাথে সাদৃশ্য রাখে| আগা গোড়া যুক্তিনিষ্ঠ আলোচনা, কিন্তু বয়ানের স্বর শুকনো চাঁচা-ছোলা নয়| বিস্বয়, আনন্দ আর মোহ দেখাতে কোনো কুন্ঠাবোধ করেনি লেখক, কিন্তু যুক্তি আর বৈজ্ঞানিক দৃষ্টি একটুও পরিহার না করে|
লেখকের প্রকৃতির প্রতি মায়া-মমতা বিভূতিভূষণের মতই| প্রকৃতির প্রত্যেক অঙ্গনে খালি বিস্ময় আর কুহেলির সন্ধান পায়| কিন্তু এই কুহেলি শুধুমাত্র নান্দনিক-রূপে বা সৌন্দর্য্যের বেশে তার চোখে ধরা পরছে না| অন্তরীক্ষ, জীব-কোষ, উদ্ভিদ, আলোক-তরঙ্গ -- প্রকৃতির এই প্রত্যেকটা মুখের অন্তরালে যেই বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে, লেখকের বিস্ময় সেইখান থেকেই জেগে উঠছে| বারে-বারে এমনই একটা ব্যাপ্ত আয়োজনের সন্ধান দিচ্ছে, যেখান অনড়-অমোঘ বৈজ্ঞানিক নানান নিয়ম সম্মিলিত ভাবে জীবনকে সম্ভব করে রাখছে, আর সদা সচল রাখছে|
লেখার সর্ব্বাঙ্গে একটা নম্রতা আত্ম-সমর্পণের মনোভাব আছে| প্রতি-পদে মানুষের অজানার জগত কতো অগাধ সেটাই পুনরায় আবিস্কার হয়েছে| খাটি বিজ্ঞানের লেখায় বিধাতা আর ঈশ্বরকে মাঝেমাঝেই প্রণতি জানিয়েছে| তাতে বিজ্ঞান-ভাষ্যের এতটুকু ছন্দপতনও হয়নি| লেখকের ঈশ্বর-চিন্তা রবীন্দ্রনাথের ঈশ্বর-চিন্তার মতনই| বিজ্ঞান আর নির্দেশ্যবাদের সাথে সেই চিন্তার কোনো বিরোধ নেই| সবই বিধাতার হাতে -- এই বলে বৈজ্ঞানিক অন্বেষণ বা কৌতুহলও কখনো মিটিয়ে দেয়নি|
বিজ্ঞানী আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু তাঁর মৌলিক আবিষ্কারের মাধ্যমে ভারতবর্ষের সম্মান বাড়িয়েছেন। তাঁর বিজ্ঞানচর্চা এক অর্থে পরাধীন দেশের এক নাগরিকের সচেতন স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস। এর সাথে তাঁর সাহিত্যের প্রতি অবদানও যথেষ্ট প্রশংসনীয়। সাহিত্যচর্চা করে তিনি 'কুন্তলীন' পুরষ্কারে সম্মানিত হয়েছিলেন। বাংলার বিজ্ঞানপিপাসু মানুষের কাছে এই অব্যক্ত বইটি যথেষ্ট সমাদৃত।
At the start of the book, the author creatively questioned the Western approach to science, which relies heavily on observation, using the example of a Buddha statue and two women. Through a series of essays, he demonstrated that intuition and empathy can lead to a much deeper and richer understanding of any subject. He intertwined science with perception, ethics, and philosophy through his poetic writing style. This book offers science enthusiasts a fresh perspective, expanding science beyond mere analysis, experimentation, and observation to include synthesis, understanding, empathy, and intuition.