আহমেদ করিমের কাছে স্বামী সায়েম চৌধুরির মানসিক সমস্যা নিয়ে হাজির হলো তানিয়া চৌধুরি। সায়েম চৌধুরি নানাধরনের হেলুসিনেশনে ভুগছে।এছাড়া অফিসেও নানা রকম ঝামেলা চলছে। তাই সবধরনের কাজ থেকে কিছুদিনের ছুটি নিয়ে তারা চলে যাচ্ছে সায়েমের পৈত্রিক বাড়িতে। আহমেদ করিম আর তার সহকারি সোহেলকেও আমন্ত্রণ জানানো হলো সেই বাড়িতে। আহমেদ করিম সোহেলকে সাথে নিয়ে রওনা দিলেন, সাথে যোগ হলো এক অদ্ভুত চরিত্র রকেট। সায়েমের পৈত্রিক বাড়ি নিয়ে নানা রকম মিথ, গল্পকথা ছড়িয়ে আছে। সায়েম কিংবা তানিয়া কেউই ঠিক স্বাভাবিক নয়। এমনকি স্বাভাবিক নয় এখানকার কেয়ারটেকারও। এখানে এসে একের পর এক অদ্ভুত সব ঘটনার সম্মুখীন হতে থাকলেন আহমেদ করিম। ঘটনার জালে জড়িয়ে এই প্রথমবারের মতো নিজেকে আবিষ্কার করলেন কিংকর্তব্যবিমুঢ় অবস্থায়।
Shariful Hasan hails from Mymensingh, Bangladesh. He has spent his childhood by the banks of Brahmaputra river. He completed his Masters in Sociology from University of Dhaka and is currently working in a renowned private organization.
Shariful's first novel was published on 2012 titled Sambhala. With two other books, this captivating fantasy trilogy has received widespread acclimation both within and beyond the borders of Bangladesh. The Sambhala Trilogy was translated in English and published from India.
Although his inception consisted of fantasy and thriller, he has later worked on a variety of other genres. These works have been received fondly by the Bangladeshi reader community. Lot of his works have also been published from different publications in West Bengal.
Award- Kali O Kalam Puroshkar 2016 for 'অদ্ভুতুড়ে বইঘর'
২.৫/৫ সিরিজের প্রথম বইটি পাঠক হিসেবে আমার মধ্যে যে আশার সঞ্চার করেছিলো,এই বই সেটা পূরণ করতে পারেনি।প্রথম বইয়ের সাথে প্লট, অপরাধের কারণ,ধরন,ভৌতিক পরিবেশের বর্ণনা সবদিকেই মিল রয়েছে। কিছুক্ষেত্রে মনে হবে একই বই পড়ছি।সোহেল চরিত্রটি বিশেষভাবে বিরক্তিকর।শেষ বিশ পাতায় লেখক খুব তাড়াহুড়ো করে সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন।অনেক জটিল ঘটনার অতি সরলীকৃত ব্যাখ্যা ভালো লাগেনি।
আহমেদ করিমের ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে কিছুটা ধারণা এসেছে এবার। সোহেল আরও পরিণত। সাথে যোগ হয়েছে রকেট নামের অদ্ভুত এক নতুন চরিত্র। তিনে মিলে খেলা আরও জমবে সামনে, সন্দেহ নেই!
কিংকর্তব্যবিমূঢ়-এ ভয়ঙ্করভাবে গা শিউরে ওঠা কিছু অংশ ছিল, রীতিমতো দু:স্বপ্ন দেখানোর মতো। বিস্তারিত লিখব সামনে।
"There are more things in heaven and earth, Horatio, than are dreamt of in your philosophy" ----------------------------Hamlet____William Shakespeare
আর নয় ঝাড়ফুঁক, তুকতাক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক,বিখ্যাত সাইকোলজিস্ট ড. আহমেদ করিম এবার আপনার যাবতীয় সমস্যার সমাধান করবে।মানসিক,আধিভৌতিক,ভৌতিক সমস্যা নিয়ে চলে আসুন।সমাধান নিশ্চিত। বিফলে মূল্য ফেরত। ________________________________দৈনিক ঈশান কোণ
সাইকোলজিস্ট আহমেদ করিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়ের নামকরা শিক্ষক ছিলেন। থাকেন পুরানা পল্টন এলাকায়। একতলা বাড়িতে। ভদ্রলোক একাই থাকেন। যতসব কাজকারবার, অদ্ভুত কেস নিয়ে। তো এবার আহমেদ করিমের কাছে স্বামী সায়েম চৌধুরীর মানসিক সমস্যা নিয়ে হাজির হলো তানিয়া চৌধুরী। সায়েম চৌধুরী নানাধরনের হ্যালুসিনেশনে ভুগছে।এছাড়া অফিসেও নানা রকম ঝামেলা চলছে। তাই সবধরনের কাজ থেকে কিছুদিনের ছুটি নিয়ে তারা চলে যাচ্ছে সায়েমের পৈত্রিক বাড়িতে। আহমেদ করিম আর তার সহকারি সোহেলকেও আমন্ত্রণ জানানো হলো সেই বাড়িতে। আহমেদ করিম সোহেলকে সাথে নিয়ে রওনা দিলেন, সাথে যোগ হলো এক অদ্ভুত চরিত্র রকেট। সায়েমের পৈত্রিক বাড়ি নিয়ে নানা রকম মিথ, গল্পকথা ছড়িয়ে আছে। সায়েম কিংবা তানিয়া কেউই ঠিক স্বাভাবিক নয়। এমনকি স্বাভাবিক নয় এখানকার কেয়ারটেকারও। এখানে এসে একের পর এক অদ্ভুত সব ঘটনার সম্মুখীন হতে থাকলেন আহমেদ করিম। ঘটনার জালে জড়িয়ে এই প্রথমবারের মতো নিজেকে আবিষ্কার করলেন কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায়।
#পাঠ_প্রতিক্রিয়া_কিংবা_অনুভূতির_বয়ান:
বইটা নিয়ে আমার অনুভূতি মিশ্র, অর্থাৎ মোটামুটি লেগেছে আরকি। এর জন্য খানিকটা দোষ অবশ্য আমার নিজেরও । সিরিজের প্রথম বইটা পড়ার পর আমার মনে হয়েছিল দারুণ একটা প্যারাসাইকোলজিক্যাল থ্রিলার সিরিজ পেতে যাচ্ছি। কিন্তু না, সে গুঁড়ে বালি। মিথলজি,আরবান লেজেন্ড, প্যারাসাইকোলজি, সাইকোলজি নিয়ে বিপুল আগ্রহ আর পড়াশোনা করার দরুণ স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যাশার পারদ কিছুটা উঁচুতেই ছুঁয়েছিল। প্রত্যাশাটা এমন না যে, আমি গোল্ডলিফ লেডি,ফক্স সিসটার্সের মতো দুনিয়া কাঁপানো কোনো ঘটনা বা রাশিয়ান স্লিপিং এক্সপেরিমেন্টের মতো কিছু খুঁজছিলাম। অন্তত টেলিপ্যাথি,ক্ল্যায়ারভয়েন্স,সাইকোকাইনেসিস,রিইনকার্নেশন নেয়ার ডেথ এক্সপিরিয়েন্সের মতো অনেক কিছুই সাহিত্যের এ শাখায় ইতোমধ্যেই চর্চিত হয়েছে। কিন্তু সেখানে জাস্ট হ্যালুসিনেশন,হিপনোটিজম নিয়ে প্যারাসাইকোলজিক্যাল থ্রিলার বর্তমান প্রেক্ষাপটে আনাটা আমার মতে, ওল্ড স্কুল। কাহিনীর প্লটটাও খুব কমন টিপিক্যাল। ভৌতিক বাড়ি, পায়ের আওয়াজ,চারদিকে ছায়াদের ঘোরাফেরা এগুলোও খুবই কমন ভৌতিক কাহিনীর আবহ সৃষ্টির ঘটনা। সিরিজের প্রথম বইয়ের আবহ সৃষ্টি আমার বেশি ভালো লেগেছিল।
দ্বিতীয়ত, স্টোরিটেলিং আর ন্যারেটিভ আমার যথেষ্ট অগোছালো, একঘেয়ে মনে হয়েছে। সাম্ভালা,রূপকুমারী ও স্বপ্নকুহক কিংবা ছায়াসময়, ইভেন যেখানে রোদেরা ঘুমায় বইতেও গল্প বলায় যথেষ্ট মুন্সিয়ানা ছিল। প্রথম ৫০ পৃষ্ঠায় মানছি যে, রহস্যের ঘনঘটা, সাসপেন্স,ওয়েদার ক্রিয়েটিং অর্থাৎ আবহ সৃষ্টির দরকার ছিল... তবে তা খুব বেশি মনে চাপ ফেলতে সক্ষম হয় নি। পরবর্তীতেও আবহ সৃষ্টির যথেষ্ট উপকরণ, লেখকের যথেষ্ট প্রচেষ্টা থাকলেও কেন যেন সেটা তাল কেটে গেছে,মনের টেস্টবাডে কোনো স্বাদ অনুভূতির উৎস হয়ে ওঠে নি।
আমার মনে হয়, হরর বা প্যারাসাইকোলিজক্যাল লেখায় ভয়ের উৎসের থেকে ভয়টা, ভয়ের অনন্য আবহ সৃষ্টিটা জরুরি। বাট এখানে অনেকটাই চেনাপরিচিতভাবে ভয়ের অনুভূতি সৃষ্টি করা হয়েছে, যা ভোঁতা একটা রেশ রাখে। কিংবা এমনও করা যেতে পারতো, চেনাপরিচিত অনুভূতিকেই একটা নতুন মাত্রা দেয়া যেতে পারতো,একটু অন্যভাবে প্রেজেন্ট করা যেতে পারতো।
আমার কাছে মোস্ট ইন্টারেস্টিং পার্ট লেগেছে আহমেদ করিমের সেশনগুলো। মূল চরিত্র চৌধুরী দম্পতির রেকর্ডগুলো আর সেশনের ধরন। বিশেষত বেটি এরিকসনের হিপনোটিজম সিস্টেমটা ভাবনার খোরাক জাগিয়েছে মনে।সোহেলের অহেতুক ঘুরতে গিয়ে হওয়া অলৌকিক অভিজ্ঞতার দৃশ্যায়নটা ভালো ছিল।
নতুন ক্যারেকটার ডেভেলপমেন্টে লেখক যে যথেষ্ট পটু সেটা ভালোমতো বোঝা গেছে। বইয়ের প্লাস পয়েন্টের মাঝে এটা অবশ্যই পড়বে যে,নতুন ক্যারেকটারগুলোকে ডেভেলপ করা হয়েছে বেশ যত্ন নিয়ে। তবে সিরিজের কমন ক্যারেকটার সোহেল আর নতুন ক্যারেকটার রকেটকে নিয়ে খানিকটা আপত্তি আছে।
আরেকটা প্লাস পয়েন্ট হলো, ডিটেইলিং। ১৮০ পেজের বই হলেও লেখক খুব ভালোভাবেই অক্ষরে সাজিয়ে দৃশ্যায়ন করতে পেরেছেন। এটাও আমাকে বেশ টেনেছে। ময়মনসিংহের কৃষ্টি, গ্রামাঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সায়েমদের পৈত্রিক বাড়ি সম্পর্কে জীবন্ত ছবির দেখা পেয়েছি।
যে কোনো কাহিনীর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক আমার মতে, কাহিনীর লেখনরীতি আর সমাপ্তি। লেখনরীতির কথা তো বললামই কিন্তু কিংকর্তব্যবিমূঢ়ের সমাপ্তিতে থেকে গেছে একটা বড়সড় প্লটহোল। আর সমাপ্তিটাও হতাশাজনক।
#কাটাছেঁড়া
★স্পয়লার অ্যালার্ট★
এক. বইয়ের ঘরানা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার বা কারো কারো মতে প্যারাসাইকোলজিক্যাল থ্রিলার। কিন্তু শেষে গিয়ে পাজলের শেষ টুকরোটা মিলে সুপারন্যাচারালি। কোনো ধরনের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ, লজিক্যাল রিজনিং থাকে না। আর আহমেদ করিমের যুক্তির ছোরা যেন ধার হারিয়ে খেলো প্লাস্টিকের ছোরা হয়ে যায়।
দুই.
বইটা যারা সিরিজ হিসেবে পড়ছেন তারা খেয়াল করবেন যে,আহমেদ করিমের সহকারী সোহেলের ক্যারেকটারটা অনেক ফিকে,দুর্বল। অথচ দুটো বইয়েরই মেজর ক্যারেকটার সে। রকেটকে কে পথ দেখায়, শেষে পরিস্থিতি যখন আগুন হয় তখন আহমেদ করিমদের উদ্ধার কে করে,সে বিষয়ে অনেক ধোঁয়াশায় রেখে দিয়েছেন লেখক। সোহেলের বিরক্তির পৌনঃপুনিকতা, অহেতুক ঘোরাঘুরি, একঘেয়েমি এগুলোর কারণ খুব ভালোমতো বোঝা যায় নি।
তিন. আহমেদ করিমের সেশন,ইনভেস্টিগেশন সায়েম চৌধুরীকে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটাও পরিষ্কার হয় না যে প্রশ্নগুলো তোলা হয়েছে তার সবই কি অমূলক?
চার. ঢাকায় যে সায়েম-তানিয়ার অডিটরি হ্যালুসিনেশন হচ্ছিলো সেটার কারণ কী? তহুরার দ্ব��রা স্লো পয়জনিং? তাহলে আগে কেন ঘটে নি? ষড়যন্ত্র যখন এতোই তাহলে তো আগে থেকে মানে তহুরা সায়েমদের বাসায় আসবার পর থেকেই শুরু হতো সব। কেন এতো পরে শুরু হলো? হামজা মিয়ার অঙ্গুলি হেলনে? তার কোনো ব্যাখ্যা স্পষ্ট করে দেন নি লেখক।
পাঁচ. সায়েম-তানিয়ার লাভ লাইফের কাবাব মে হাড্ডি বন্ধু আরমানের প্রসঙ্গ, মৃত্যু বারবার আসলেও শেষ পর্যন্ত এটা মিসিং লিঙ্ক হয়ে থাকে। কাইন্ডা ধোঁয়াশার কানাগলি। এদিকটা পছন্দ হয়নি আমার।
ছয়. রহস্যের মূলে একটা বড়সড় কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে হ্যালুসিনেশনকে। অথচ হ্যালুসিনেশনের উৎস আর ধরনটা অনেক খেলো, ক্লিশে। যতগুলো ক্যারেকটারের হ্যালুসিনেশন হলো সেটা এতো ছকে বাঁধা নিয়মে ঘটলো কী করে? হ্যালুসিনেশন,স্বপ্ন এসব কি এতোই ব্যাকরণ মেনে হয়? এটা কি এ প্লাস বি অল স্কয়ারের সূত্র? এগুলোর কোনো ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের ধার ধারেন নি আহমেদ করিম কিংবা লেখক।
★স্পয়লার শেষ★
#প্রোডাকশন_নিয়ে_কিছু_কথা:
বইয়েে প্রচ্ছদ আর নামলিপি বেশ দারুণ। কাহিনীর সাথে মানানসই প্রচ্ছদ করেছেন গুণী প্রচ্ছদ শিল্পী সজল চৌধুরী। প্রুফ রিডিংও বেশ ভালোমতোই করা হয়েছে। তেমন মুদ্রণ প্রমাদ চোখে পড়ে নি। শুধু হ্যালুসিনেশনকে বারবার কেন "হেলুসিনেশন" লেখা হয়েছে বুঝলাম না।
আশা করছি সিরিজের পরবর্তী বইগুলো একে অপরকে দিনদিন ছাড়িয়ে যাবে।
আহমেদ করিম এবং তাঁর ছাত্র তথা সহকারী সোহেলের এটি দ্বিতীয় আখ্যান। নানা ধরনের বিভ্রমের শিকার সায়েম চৌধুরির স্ত্রী তানিয়া করিমের সাহায্যপ্রার্থী হন। সমস্যাটির সমাধান করার উদ্দেশ্যে করিম, সোহেল এবং করিমের এক অদ্ভুত স্বেচ্ছাসঙ্গী যুবক সায়েমের পৈতৃক বাড়িতে আসেন। রহস্যময় সেই বাড়ির অতীত এবং বর্তমান ক্রমেই একাকার হয়ে যেতে থাকে। ঘন হয়ে ওঠে বিপদ। আর তারপর... রীতিমতো গথিক এবং গা-ছমছমে এই উপন্যাস একবারে পড়ে ফেলতেই হল। এটি এই সিরিজের প্রথম লেখার মতো জটিল নয়; বরং এই রহস্যের মূল কারণটি বুঝতে খুব একটা সমস্যা হয়নি। তবে এতে গল্পটা বলা হয়েছে আরও ভালোভাবে। সুযোগ পেলেই পড়ে ফেলুন!
নিজের বিভিন্ন ব্যস্ততায় প্রায় একমাস লাগিয়ে দিলাম এটা শেষ করতে। খুশি হতাম যদি ভালোভাবে শেষ হতো। যদিও এই এক মাস লাগানোর পেছনে বইটার মাঝের দিকে গতি ছন্দপতন হওয়াও একটা কারণ।
যাইহোক সিরিজের প্রথম বইটা মোটামুটি ভালো লাগলেও এটা খুব যে একটা ভালো লেগেছে তা বলা যাবেনা। বই শেষ করে মনে হলো সিরিজের প্রথম বইয়ের কাহিনীকেই একটু এদিক সেদিক করে ডালপালা মেলে দ্বিতীয় বইটা লেখা হয়েছে। হুট করেই রকেট চরিত্রের আগমণ হয়ত অনেকের কাছে আমার মত ভালো লাগতে পারে তবে খুব বেশি ডিটেইলস তার সম্পর্কে জানা যায়না। আশা করি সিরিজের পরবর্তী বইগুলোতে হয়ত এগুলো খোলাসা করা হবে।
"আর নয় ঝাড়ফুঁক, তুকতাক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক, বিখ্যাত সাইকোলোজিস্ট ড.আহমেদ করিম এবার আপনার যাবতীয় সমস্যার সমাধান করবেন। মানসিক/আধিভৌতিক/ভৌতিক সমস্যা নিয়ে চলে আসুন। সমাধান নিশ্চিত। বিফলে মূল্য ফেরত।"- শরীফুল হাসান, "রূপকুমারী ও স্বপ্নকুহক" - কিংকর্তব্যবিমূঢ় - আপাতদৃষ্টিতে সুখী দম্পতি বলতে যা বোঝায়, সায়েম এবং তানিয়া দম্পতি ঠিক সেরকমই। কিন্তু সায়েম চৌধুরি হঠাৎ অস্বাভাবিক কিছু দেখা শুরু করলে সংসারে শুরু হয় নানা ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা। উপায়ান্তর না দেখে তানিয়া চৌধুরি শরণাপন্ন হন ড.আহমেদ করিম এর কাছে, যে কিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরা শিক্ষক ছিলেন একসময়। কিন্তু বর্তমানে তিনি পুরোনো পল্টন এলাকায় থাকেন এবং মানুষের বিভিন্ন ধরনের সাইকোলজিক্যাল সমস্যার সমাধান নিয়েই ব্যস্ততা তার।
কেসের গতিবিধি দেখে এবং তানিয়া চৌধুরির অনুরোধে ড. আহমেদ করিম ঠিক করেন তিনি সায়েম চৌধুরির পৈতৃক ভিটায় যাবেন। এ যাত্রায় তার সঙ্গী হন সহকারী সোহেল আর রকেট। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি পড়ে যান এক কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায়। এখন সায়েম চৌধুরির এই অদ্ভুত সমস্যার আসল কারণ কি আর এ সমস্যা কিভাবে আহমেদ করিমকে কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় ফেলে দেয় তা জানতে হলে পড়তে হবে জনপ্রিয় লেখক শরীফুল হাসানের ড.আহমেদ করিম সিরিজের সাইকোলজিক্যাল হরর ঘরানার গল্প "কিংকর্তব্যবিমূঢ়"। - "কিংকর্তব্যবিমূঢ়" বইটি ড.আহমেদ করিম সিরিজের ২য় বই। সিরিজের আগের বই "রূপকুমারী ও স্বপ্নকুহক" বেশ ভালো লাগায় এই বইটি নিয়ে উচ্চাশা ছিলো আমার। "কিংকর্তব্যবিমূঢ়" বইয়ের শুরুটা বেশ রহস্যজনক এবং সাসপেন্সে ভরা। আস্তে আস্তে বইয়ের কাহিনীর রহস্য ঘনীভূত হতে থাকে। এ ধরণের প্লটে যে ধরণের বর্ণনাভঙ্গি প্রয়োজন ঠিক সে ধরনের সহজ এবং সাবলীল বর্ণনাভঙ্গিই ছিল গল্পতে। তবে বই শেষ করার পরেও কয়েকটি সাব প্লট বেশ ধোঁয়াশা লাগলো। সিরিজ হিসেবে যেহেতু চলবে, তাই পরবর্তী পর্বগুলোতে আশা করি ব্যাপারগুলো পরিস্কার হবে। বইয়ের কাহিনি যেভাবে এগিয়েছে সে হিসেবে কাহিনির শেষভাগ কিছুটা তাড়াহুড়ো করে করা এবং বেশ সাদামাটা লাগলো।
"কিংকর্তব্যবিমূঢ়" বইয়ের চরিত্রগুলোর ভিতরে এবারেও ড. আহমেদ করিম স্ট্যান্ড আউট চরিত্র। বিভিন্ন ব্যক্তিদের সাথে তার করা সাইকোলজিক্যাল সেশনগুলো এই বইয়ের সবথেকে দুর্দান্ত বিষয়গুলোর ভিতরে একটি। নতুন চরিত্রগুলোর ভিতরে রকেটকে বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছে, সেই হিসেবে সোহেল চরিত্রটি বেশ নিষ্প্রভ লাগলো। পুরো বইতে ভয়ের আবহ খুবই ভালোভাবে ফুঁটে উঠেছে। তবে বইয়ের একটা ডিটেলিং বেশ খুঁচিয়েছে পুরো বই জুড়ে, তা হচ্ছে সায়েম চৌধুরি এর পৈত্রিক বাড়ি এবং তার আশপাশের এলাকার মোবাইল নেটওয়ার্ক। পুরো বই জুড়ে কখনো মনে হয়েছে সোহেল চৌধুরির পৈত্রিক বাড়িতে নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না, আবার কখনো মনে হয়েছে আশপাশের এলাকাতেও নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না, আবার কখনো মনে হয়েছে সায়েম চৌধুরির বাড়িতেও নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় মাঝে মাঝে- ব্যাপারটা বইতে আরো ভালোভাবে ক্লিয়ার করা হলে ভালো লাগতো।
"কিংকর্তব্যবিমূঢ়" বইটির সম্পাদনা খুবই ভালো হয়েছে, পুরো বইতে বানান ভুল বা টাইপো বলতে গেলে তেমন একটা দেখিনি। বাইন্ডিং এবং কাগজের মান ভালো হলেও অবসরের বাকি বইগুলোর মতো দামটা একটু বেশিই। প্রচ্ছদ এবং নামলিপি বেশ মানানসই গল্পের কাহিনির সাথ���।
এক কথায়, ২য় পর্ব হিসেবে "কিংকর্তব্যবিমূঢ়" বইটি সিরিজের রহস্যময়তা ধরে রাখতে পেরেছে। যদিও আমার কাছে সিরিজের ১ম বই "রূপকুমারী ও স্বপ্নকুহক" এগিয়ে থাকবে, তারপরেও সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার/হরর ফ্যানদের "কিংকর্তব্যবিমূঢ়" বইটি ভালো লাগার সম্ভাবনা অনেক, তারা বইটি পড়ে দেখতে পারেন।
২.৫ আহ। শেষ কবে যে একটা মাথা নষ্ট মৌলিক থ্রিলার পড়ছি! এই বইটা নিয়া আশা ছিল অনেক, বাট সেই বেশি আশা থাকার কারনেই বেশি খারাপ লাগলো। গল্পের টুইস্ট, এন্ডিং সবই প্রেডিক্টেবল ছিল। মনে হচ্ছিল আগের পড়া কয়েকটা বই থেকে টুকরো টুকরো কিছু জিনিস নিয়ে এই গল্পটা তৈরি হয়েছে। কোন বইগুলো থেকে তা বলবো না। হতাশ।
The most rewarding thing from this book ( or the series) is to see Writer Shariful Hasan create an atmosphere with brilliant craftsmanship. The writer masterfully creates the perfect creepy-lurid atmosphere each and every time. The act of people waking up is used as a smart Motif to bring out the chilling and petrifying sequences, and it excels almost every time. The story was well thought out, the Narratives were quite well written. The characters are more compelling and very interesting this time, we get to know and admire Ahmed Karim more, loved the new addition to the team, Rocket. Hope to see him more from now on, and really wish to see Sohel become more important to the story.
KingkortobboBimurh is definitely a great improvement from the first book. This 165-page psychological thriller/mystery is written with much care from start to end, definitely a very enjoyable read for a fan of this genre.
2.5 লেখায় যেমন রস থাকবে ভাবসিলাম তেমন কিছুই ছিলনা, এছাড়া আগে থেকেই ধারণা করা গেসে পরবর্তীতে কি হবে। এছাড়া যদি সে মিসির আলীর মত লিখতে চাইসিলো, তবে কানিকুনাও হয়নাই। দুঃখিত, আশা ভঙ্গ হলো।
সিরিজের প্রথম বই রূপকুমারী ও স্বপ্নকুহক পড়ে অত্যন্ত উত্তেজিত হয়ে দ্বিতীয় বইটাও ধরে ফেললাম। সায়েম সাহেব একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তার স্ত্রী তানিয়া চৌধুরীকে নিয়ে বেশ আরামেই দিন কেটে যাচ্ছিল। একটাই দুঃখ, তাদের কোন সন্তান নেই। প্রায় সবকিছু ঠিক থাকা এই সংসারে হঠাৎ করেই কালো ছায়া ধেয়ে আসে। সায়েমের স্লিপ ওয়াকিং, দুঃস্বপ্ন দেখা আর হেলুসিনেশন শুরু হয়। হঠাৎ করে ভয় পেয়ে যাওয়ারও প্রবণতা আসতে থাকে। এসব সমস্যা নিয়েই তানিয়া শরণাপন্ন হয় আহমেদ করিমের। কথা থাকে সায়েমের পরিবার তার গ্রামের বাড়ী ময়মনসিংহ যাবে, আর সেখানেই আহমেদ করিম যাবে এবং সায়েমের সমস্যার কথা শুনবে। এরই মধ্যে আহমেদ করিমের জীবনে রকেট নামে এক রহস্যময় চরিত্রের আবির্ভাব হয়। রকেট নাকি ভূত অনুভব করতে পারে। পরে রকেট আর সোহেলকে নিয়েই আহমেদ করিম গিয়ে উপস্থিত হয় সায়েমের গ্রামের বাড়ীতে। সেখানে কেয়ারটেকার হামজা মিয়া আর সায়েম ফ্যামিলির আথিতেয়তায় আহমেদ করিমের দিন শুরু হয়। কিন্তু পরিস্থিতি অন্যরকম হতে থাকে। ভয়ংকর সব ঘটনা ঘটতে থাকে যার কোনই লৌকিক ব্যাখা পাওয়া যায় না। তার উপরে আশেপাশের মানুষজনের কাছ থেকেও আজব ও ভীতিকর সব গল্প শুনতে থাকে আহমেদ করিম এন্ড গং। সায়েম আর তানিয়ার কি তাইলে ভাগ্য পরিবর্তন হবে না? আহমেদ করিম কি পারবে রহস্যের জাল ছিড়তে?
সিরিজের প্রথম গল্প আর দ্বিতীয় গল্পের মধ্যে অনেক মিল। এমনকি পরিস্থিতির বর্ণনাও অনেক ক্ষেত্রে বহুলাংশে পরিচিত। আর সোহেল তোহ আছাড় খাইতে খাইতেই দিন পার করে ফেলল। রকেটের চরিত্র পুরা ফুটে উঠে নাই, কিন্তু ভবিষ্যতে কাজ করার প্রচুর সু্যোগ আছে। সবশেষে বলি প্লট নিয়ে। খুবই অনুমেয় একটা গল্প নিয়ে লেখক কাজ করেছেন। বুঝতে পারছিলাম কি হবে। আর সিরিজের প্রথম গল্পের আদলে এইটাও লিখা হয়েছে। তাই লেখার অন্যান্য জায়গায়ও একইরকম লাগছিল। কিন্তু যেহেতু আমার আগের বইটা ভাল লেগেছে, এটাও ভাল লাগল। এসব না হয় এখন মেনে নিলাম, কিন্তু ভবিষ্যতে বৈচিত্র্য না আনলে সম্ভাবনাময় চরিত্রটি আগায় যেতে পারবে না।
এই বইটায় আমার একটা ছোট্ট অংশগ্রহণ আছে। বইটার নামলিপি টা করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। যাহোক, প্রোডাকশনে নাম আছে তাই বলে বইয়ের পক্ষপাতিত্ব করবোনা। সঠিক পাঠপ্রতিক্রিয়াই দিচ্ছি। আহমেদ করিমের সাথে পরিচয় আছে? ভদ্রলোকের সাথে আমার পরিচয় গতবছরের 'রূপকূমারী ও স্বপ্নকুহক' বইতে। প্যারাসাইকোলজি নিয়ে লিখতে গেলেই নক্ষত্রের মত মিসির আলীর সাথে একটা তুলনা চলে আসে। এই ব্যাপারটা নিয়ে লেখক শরীফুল হাসানও যে বিপাকে আছেন, ভূমিকায় সেটার একটা ছোট ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। আমি আগের বইটার রিভিউতেও বলেছিলাম, আহমেদ করিম একেবারেই ভিন্ন একজন সত্ত্বা। ভিন্নভাবে কাজ করেন। এক জনরার গল্প, তাই তুলনা চলবেই। তো, এই বইটিতে কাহিনি সায়েম-তানিয়া দম্পতিকে ঘিরে। তাদের কিছু প্যারাসাইকোলজিকাল ব্যাপারস্যাপার এর রহস্য উদঘাটন করতে মাঠে নামেন সাইকিয়াট্রিস্ট আহমেদ করিম, সহকারী সোহেল এবং রকেট নামের এক আজব চরিত্র! মাঝে অনেক ঘটনা দূর্ঘটনার ছেঁড়া সুতো রহস্য জমিয়ে তুলেছে। আর বেশি ঘটনার ব্যাখ্যায় যাবোনা। আমি বইটা বিঞ্জ রিড দিয়েছি। খুব বেশি সময় লাগেনি। লেখকের লেখা এত টেনে ধরে রাখতে পারে, ছোটা মুশকিল। তারমধ্যে ময়মনসিংহ আমার গ্রামেরবাড়ি, সেখানে কাহিনী হওয়ায় ঘটনাটা পুরোপুরি আমি চোখের সামনে কল্পনা করতে পারছিলাম। সাদামাটা ভাবে বর্ণনা করে কোনোপ্রকার হিংস্রতা ছাড়াই উনি যেভাবে ভয়ের সিনগুলো তৈরি করেছেন, এক কথায় দারুণ!! মেইন ক্যারেক্টার গুলোও এখন অনেক স্ট্রং আগের চাইতে। তবে এসিস্ট্যান্ট সোহেল ক্যারেক্টারটাকে আরও কাজে লাগানো দরকার আমার মনে হয়।
আমার দুটো খারাপ লাগার দিক আছে বইতে। এই অংশটায় হালকা স্পয়লার এলার্ট! আমি থার্ড ব্র্যাকেটে রাখছি এটুক!
[প্রথমটা হচ্ছে, কাহিনীটা আমার কাছে অসমাপ্ত লেগেছে আসলে। বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর চাচ্ছিলাম আরও। আমার মনে হলো উনি বোধহয় আর বড় করতে চাননি বইটা। আর দ্বিতীয় হলো, যেই ফিনিশিং টা রূপকুমারীতে ছিলো, অনেকটা কাছাকাছি একটা ফিনিশিং হয়ে গেলোনা?]
যাহোক, দিনশেষে আমার শরীফুল হাসান ভাইয়ের কাছে একটাই চাওয়া। প্রতিবছর বইমেলায় অন্তত একবার হলেও আহমেদ করিমকে চাই। এটা খুব জমছে!! আমার ধারণা যারা আহমেদ করিমকে চিনেছেন, প্রতিবছরই তারা বসে থাকবেন আহমেদ করিমের জন্য! শুভকামনা।
৩.৭৫, আসলে। লিটারেরি মানের দিক থেকে চিন্তা করতে গেলে, আহমেদ করিম সিরিজের প্রথম বই 'রুপকুমারী...'র চেয়ে অনেক বেটার।
বোঝা যাচ্ছে লেখক প্রথম ১৫৬ পৃষ্ঠা লিখতে যথেষ্ট সময় এবং শ্রম দিয়েছেন। ভালো লেগেছে। শেষ ২০ পৃষ্ঠা মনে হয় কিছুটা তাড়াহুড়ো করে লেখা হয়েছে। ফিনিশিংটা হয়তো আরেকটু 'সময়' ডিজার্ভ করতো!
সিরিজের প্রথম বইতে সোহেল চরিত্রের ডেভেলপমেন্ট দূর্বল ছিলো, এবারও তাই আছে; অথচ উনি সিরিজের বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা চরিত্র।
প্লটটা ইন্টারেস্টিং। বর্ণনাভঙ্গি রীতিমতো কমপেলিং। পড়ার সময় মনে হচ্ছিলো আহমেদ করিম সাহেবের সহযোগী দু'জন না, তিন জন।
হতাশাব্যাঞ্জক। রূপকুমারী ও স্বপ্নকুহক পড়ার সময় মিসির আলির সাথে বেশ অনেক টা রিলেট করতে পেরেছিলাম। তাই এই বই টা পড়ার আগেই ভেবে নেই; কোনোভাবেই মিসির আলির সাথে মেলানোর চেষ্টা করবো না। দূর্ভাগ্যবশত, বইটা পড়ার পুরো সময় জুড়েই মনে হয়েছে আমি মিসির আলি পড়ছি। সে ব্যাপার বাদ দেই। বই এর প্রসঙ্গে আসি। বেশ ভালো বিল্ড আপ। ডিটেইল্ড লেখা। বাট, লাস্টের দিকে এসে আমার কাছে জাস্ট তাড়াহুড়া মনে হলো। অনেক কিছু নিয়েই আরো ডিটেইলড লেখা; আরো কিছু ব্যাপার ক্লিয়ার হলে হয়তো ভালো লাগতো পড়তে। বেশ ভালো বিল্ড আপের বই লাস্টে এসে মুখ থুবড়ে পড়লো। রেটিং হয়তো আরো বেশি আসতো, যদিনা পুরো সময় জুড়েই আহমেদ করিম কে মিসির আলির প্রতিচ্ছবি মনে না হতো। এটা সম্পূর্ণই আমার মতামত। অন্য কাছে হয়তো না লাগতে পারে, আমার লেগেছে।
সিরিজের দ্বিতীয় বই, যদিও স্ট্যান্ড অ্যালোন ধরেই পড়া যাবে, তাই এখনই জাজমেন্টে যাওয়াটা বোধয় ঠিক হবে না। প্রথম বই পড়ে মনে হয়েছিল ভালো কিছুই পেতে যাচ্ছি। দ্বিতীয় বইও সেই ধারা অনেকটাই বজায় রেখেছে। যদিও রকেট নামের অতিপ্রাকৃত চরিত্রটা এবার সংযোজন হয়েছে, সামনে আরো বিশদ কিছু পাবো এর ব্যাপারে এবং আহমেদ করিমের ব্যাপারেও, ওহ, হ্যাঁ, সোহেলে কেনো বাদ যাবে। যাই হোক, একটা ব্যাপার চোখে লেগেছে, এবারেও প্লটের ধরণ প্রায় এক এবং কিছুক্ষেত্র মনে হবে যেন একই ঘটনা আগেও কোথাও পড়া হয়েছে। সে যাক গে, বইয়ের ভাষা প্রাঞ্জল আর সাবলীল, এক বসায় পড়া হয়ে যাবে।
আমার ধারনা প্রকাশকের তাড়াহুরার কারনে শেষে জট টা একটানেই খুলে দিতে হলো কিনা কে জানে...অনেক্ষন ঝড়ের পর হুট করে থেমে শান্ত হয়ে যাওয়ার মত হয়ে গেলো...আগের বইয়ের সাথে মিল থাকাটা এতটা চোখে পড়ার মত না...চোখে যেটা পড়বে সেটা হলো আহমেদ করিম কে আর মিসির আলী মনে হয় নি..একবার ও না...আশা করি পরের বই এর তাড়াহুরা না করে ধীরে সুস্থেই শেষ হবে...আর "রকেট".. রকেট কে নিয়ে পাতার পর পাতা লিখতে ইচ্ছা হচ্ছে..কিন্তু সেটাও লেখক শরীফুল হাসান করতে দিলেন না কারন রকেট কে নিজেও আড়ালে রেখেছেন... একটা ইচ্ছার কথা বলি..রকেট কে নিয়ে আলাদা একটা বই কি সম্ভব? লেখক কে আবারও ধন্যবাদ...
শরীফুল হাসান আমার সবচেয়ে প্রিয় লেখক। সবার লেখা পড়ে আরাম পাওয়া যায় না। তাঁর লেখা পড়ে আরাম পাওয়া যায়। এই বইটা পড়েও আরাম পেয়েছি, কিন্তু শেষে এসে তৃপ্তি পাইনি ঠিক, কেমন একটা অতৃপ্তি রয়ে গেছে।
বইটার বিল্ডআপ দারুণ, আবহ চমৎকার। গত পরশু রাতে যখন পড়া শুরু করি, তার একটু পরেই শুরু হলো ঝড়। দারুণ আবহাওয়া এরকম গল্প পড়ার জন্য। একের পর এক দুঃস্বপ্নের মতো ভয়ংকর ঘটনা ঘটছে, বই পড়া থামিয়ে এদিক-ওদিক তাকিয়েওছি মাঝেমধ্যে। পুরনো দিনের জমিদার বাড়ির কথা পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল, ফিরে গেছি কোনো বিচিত্র গ্রামে।
আহমেদ করিমের চরিত্রটা আরও ভালোভাবে ফুটে উঠেছে বইতে। রকেট যোগ করেছে নতুন মাত্রা। কিন্তু... সোহেল চরিত্রটার ডেভেলপমেন্ট হয়নি বলতে গেলে। তার কোনো কাজই ছিল না। বারবার মানুষজন হোঁচট খেয়ে পড়ছে একইভাবে, রিপিটেটিভ মনে হচ্ছিল। আর, শেষে এসে অতৃপ্তির সাথে মনে হলো, গল্পটা আরেকটু এক্সপ্লোর করা প্রয়োজন ছিল।
সব মিলিয়ে, সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারের চেয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় শেষে এসে অনেকটাই অলৌকিক গল্পে পরিণত হয়েছে, সেজন্যই রয়ে গেছে এই অতৃপ্তি। তুলনায় রূপকুমারী ও স্বপ্নকুহককেই আমি এগিয়ে রাখব এই বইটির চেয়ে। বলাই বাহুল্য, এই যে অতৃপ্তি, এটার পেছনে আমার এক্সপ���ক্টেশনের দায়-ই বেশি।
বইটা পড়ে যে আরাম পেয়েছি, যেভাবে আবহ তৈরি করা হয়েছে, আসলেই চমৎকার। রাত-দুপুরে কেউ যদি এই গল্প নিয়ে বসেন, তাহলে যুক্ত হবে খানিকটা অন্য মাত্রা। এক কথায়, উপভোগ্য।
আহমেদ করিমের পরবর্তী কেইসের অপেক্ষায় থাকব। সাথে যদি রকেটের দেখা পাওয়া যায়, সেটা বোনাস।
'আর নয় ঝাড়ফুঁক, তুকতাক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক,বিখ্যাত সাইকোলজিস্ট ড. আহমেদ করিম এবার আপনার যাবতীয় সমস্যার সমাধান করবে।মানসিক,আধিভৌতিক,ভৌতিক সমস্যা নিয়ে চলে আসুন।সমাধান নিশ্চিত। বিফলে মূল্য ফেরত।' -------------- দৈনিক ঈশান কোণ
এরকম একটা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই সূচনা হয়েছিল আহমেদ করিম সিরিজের প্রথম বই 'রূপকুমারী ও স্বপ্নকুহক' এর । সাইকোলজিস্ট আহমেদ করিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়ের নামকরা শিক্ষক ছিলেন। থাকেন পুরানা পল্টন এলাকায়। একতলা বাড়িটাতে ভদ্রলোক একাই থাকেন। তার যতসব কাজকারবার, অদ্ভুত কেস নিয়ে। সিরিজের প্রথম বই 'রূপকুমারী ও স্বপ্নকুহক'র সফলতার পর এই সিরিজের দ্বিতীয় বই 'কিংকর্তব্যবিমূঢ়' প্রকাশিত হয়েছে এই বছর । আজকের আলোচনা 'কিংকর্তব্যবিমূঢ়'কে নিয়েই ।
কাহিনী সংক্ষেপ :
আহমেদ করিমের কাছে স্বামী সায়েম চৌধুরির মানসিক সমস্যা নিয়ে হাজির হলো তানিয়া চৌধুরি। সায়েম চৌধুরি নানাধরনের হেলুসিনেশনে ভুগছে।এছাড়া অফিসেও নানা রকম ঝামেলা চলছে। তাই সবধরনের কাজ থেকে কিছুদিনের ছুটি নিয়ে তারা চলে যাচ্ছে সায়েমের পৈত্রিক বাড়িতে। আহমেদ করিম আর তার সহকারি সোহেলকেও আমন্ত্রণ জানানো হলো সেই বাড়িতে। আহমেদ করিম সোহেলকে সাথে নিয়ে রওনা দিলেন, সাথে যোগ হলো এক অদ্ভুত চরিত্র রকেট। সায়েমের পৈত্রিক বাড়ি নিয়ে নানা রকম মিথ, গল্পকথা ছড়িয়ে আছে। সায়েম কিংবা তানিয়া কেউই ঠিক স্বাভাবিক নয়। এমনকি স্বাভাবিক নয় এখানকার কেয়ারটেকারও। এখানে এসে একের পর এক অদ্ভুত সব ঘটনার সম্মুখীন হতে থাকলেন আহমেদ করিম। ঘটনার জালে জড়িয়ে এই প্রথমবারের মতো নিজেকে আবিষ্কার করলেন কিংকর্তব্যবিমুঢ় অবস্থায়।
পাঠ প্রতিক্রিয়া
বইটি নিয়ে আমার মিশ্র অনুভূতি । প্রথমে বইটির ভালো লাগা দিক নিয়ে আলাপ করা যাক ।
বরাবরের মত উপস্থাপনায় দক্ষতা দেখিয়েছেন লেখক । পাশাপাশি ভাষাশৈলী ও সংলাপের ব্যবহার আমার ভালো লেগেছে । এছাড়া স্টোরিটেলিং ও গল্পের আবহ তৈরিতে লেখক যথেষ্ট মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন ।
মন্দ লাগা দিকের সংখ্যাও নেহাত কম নয় । প্রথমেই প্লটটা বেশ ক্লিশে লেগেছে আমার কাছে । একদম কমন প্লট । চরিত্রায়নের দিকটা মোটামুটি লেগেছে আমার কাছে । বিশেষত রকেট চরিত্রটিকে রহস্যময় করে তুলতে গিয়ে অতিরঞ্জিত করে ফেলা হয়েছে বলে মনে হল । এছাড়া আহমেদ করিম চরিত্রটিও কেমন যেন খেই হারিয়ে ফেলা বলে মনে হল । আর সবথেকে খারাপ লাগার দিকটা হল গল্পের এন্ডিং । একদমই টিপিক্যাল, কমন পরিণতি পেয়েছে গল্পটা । আহমেদ করিমের ক্ষুরধার বুদ্ধিও যেন অনেকাংশেই অনুপস্থিত বলে মনে হল । এছাড়া গল্পও খানিকটা মেদযুক্ত । কিছু কিছু ঘটনা হুট করে এসে, বিনা পরিণতিতেই হুট করে মিলিয়ে যায় । সব মিলিয়ে 'কিংকর্তব্যবিমূঢ়' ওয়ার্থ টু শরীফুল হাসান বলে মনে হয়নি আমার কাছে । 'সাম্ভালা', 'ছায়াসময়' এর মতো বইয়ের লেখকের কাছে হয়তো এক্সপেক্টেশন আরও বেশি রাখি বলেই বইটা আমার ভালো লাগেনি ।
বইটা প্রকাশ করেছে অবসর প্রকাশনী । প্রচ্ছদ করেছেন সজল চৌধুরি । খুবই চমৎকার কালার কম্বিনেশনের সাথে যথার্থ এলিমেন্টের ব্যবহার বইটার প্রচ্ছদে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে । সজল চৌধুরিকে অসংখ্য ধন্যবাদ । এছাড়া বিশেষ ধন্যবাদ সম্পাদনা টিমকে । বইতে বানান বা ব্যাকরণজনিত ভুল একদমই নেই বললে চলে । পৃষ্ঠা কোয়ালিটি, বাঁধাইয়ের মান চমৎকার ।
এক নজরে, বই : কিংকর্তব্যবিমূঢ় লেখক : শরীফুল হাসান প্রকাশনী : অবসর মুদ্রিত মূল্য : ৩৫০ টাকা
আর নয় ঝাড়ফুঁক, তুকতাক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক, বিখ্যাত সাইকোলোজিস্ট ড.আহমেদ করিম এবার আপনার যাবতীয় সমস্যার সমাধান করবেন। মানসিক/আধিভৌতিক/ভৌতিক সমস্যা নিয়ে চলে আসুন। সমাধান নিশ্চিত। বিফলে মূল্য ফেরত।
উপরের লেখাটুকু একটি পত্রিকার বিজ্ঞাপন থেকে নেওয়া।বিজ্ঞাপনদাতার সঙ্গে আমরা রুপকুমারী ও স্বপ্নকুহক বইতেই পরিচিত হয়েছি।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও সাইকোলোজিস্ট ড.আহমেদ করিম। পুরানা পল্টন এলাকায় একতলা একটা বাড়িতে একা থাকেন। অদ্ভুত সব কেস নিয়ে তার কাজকারবার।পূর্বে, আহমেদ করিমকে আমরা সহকারী সোহেলের সাথে নেত্রকোণায় রহস্যময়ী রূপকুমারীর কেস নিয়ে কাজ করতে দেখেছি।সিরিজের দ্বিতীয় বইতে পাঠকের জন্য শরীফুল হাসান আহমদে করিম ও তার সহকারীদের ময়মনসিংহয়ের অদ্ভুতুড়ে বাড়িতে কিংকর্তব্যবিমুঢ় অবস্থায় ফেলেছেন। সিরিজের প্রথম বই রুপকুমারী ও স্বপ্নকুহক আমার বেশ ভালো লেগেছিল (আগ্রহীরা চাইলে রিভিউটি পড়ে আসতে পারেনঃ https://www.facebook.com/.../TPA.BD/p...) প্রথম বইতে লেখক আহমেদ করিম চরিত্রটাকে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং তার আলাদা একটা ছাপ রেখে যেতে ভালোমতো সফল হয়েছিলেন। বই পড়ার সময়ে মিসির আলির কথা মনে পড়লেও নেগেটিভ কোন দিক ছিল না সেটা। তাই ঢাবির এই সাবেক প্রফেসর নিয়ে সিরিজ হবে শুনার পর থেকেই অপেক্ষায় ছিলাম দ্বিতীয় বইয়ের এবং মিসির আলির পর এই ঘরানায় আরেকটি মৌলিক সিরিজ পেতে যাচ্ছি , এই ব্যাপারটাও এক্সাইটমেন্ট আরও বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছিল।তাই, একটু দেরি করে হলেও পড়ে ফেললাম কিংকর্তব্যবিমুঢ়। সিরিজের প্রথম বই ভালো লাগায় এবং শরীফুল হাসান ও আহমেদ করিমের উপর ভরসা থাকায় কাহিনী সংক্ষেপ আকৃষ্ট না করতে পারলেও, এক্সপেক্টেশনটা স্বাভাবিকভাবেই একটু বেশি ছিল। কিন্তু বিস্তারিত পাঠ –প্রতিক্রিয়ায় যাওয়ার আগে এক কথায় বলবো কিংকর্তব্যবিমুঢ় পড়ে বেশ হতাশই হয়েছি।
প্রথমেই কাহিনী সংক্ষেপ নিয়ে বলি। সত্যি বলতে একদমই আকর্ষণীয় কিছু মনে হয়নি ব্যাক কভারের লেখাটুকু পড়ে এবং প্লটটাও কাহিনী সংক্ষেপর প্রতি সুবিচার করতে পেরেছে। আহামরি বা আউট অফ দ্য বক্স কোন প্লট তো না-ই, হতে হবে এমন কথাও নাই। তবে, ওভারঅল প্লটটা বেশ জেনেরিক আর খানিকটা দুর্বলই বলবো। পুরানো ভূতুড়ে জমিদার বাড়ী ,রহস্যময়ী বাসিন্দা ও তাদের ঘিরে অতিপ্রাকৃতিক ও ব্যখ্যাতীত সব কাহিনী। এগুলো শুনতেই একঘেয়ে লাগে আসলে। তবে তাও এক্সিকিউশনে যদি কোন নতুনত্ব থাকতো বা প্যারাসাইকোলজিকাল এঙ্গেলটা যদি হাইলাইট করে একটু অন্যভাবে উপস্থাপন করা হতো তাহলে আসলে এই প্লটই উতরে যেত। কাহিনী এগোতে থাকলে রহস্য আরও ঘনীভূত হতে থাকলেও ঘটনা প্রবাহে ধারাবাহিকতা কম ছিল। এই কাহিনী গ্রিপিং মনে হচ্ছে তো এই আবার একঘেয়ে লাগছ।
সিরিজের আগের বই নিয়ে আমার একটা অভিযোগ ছিল যে প্যারাসাইকোলজিকাল এঙ্গেল্টা আরও এক্সপ্লোর করার সুযোগ থাকতেও লেখক করেননি। আর কিংকর্তব্যবিমুঢ়ে তো লেখক দুই একটা জেনেরিক প্যারাসাইকোলজিকাল টার্ম কাহিনীতে আনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলেন। যেখানে আমার মনে হয়েছে এই দিকটায় আরও জোর দিয়ে বইয়ের প্লটটাকে আরও শক্ত করা যেতো। বইটাকে স্ট্রংলি প্যারাসাইকোলজিকাল থ্রিলারই হতে হবে তা বলছি না। তবে লেখক নিজেই আহমেদ করিম সিরিজকে হরর-সাইকোলজিকাল (যেটাই আদতে প্যারাসাইকোলজিকাল) থ্রিলার বলেছেন। শুধু হরর থ্রিলার ধরে নিলেও আমার কাছে প্লট, এক্সিকিউশন ভালো লাগেনি। বিলো এভারেজ লেগেছে। ভৌতিক , গা ছমছমে চমৎকার একটা আবহ ছিল সিরিজের প্রথম বইতে। এই বইতেও সেই রকম আবহের দেখা মিললেও তা ছিল ক্ষণিকের জন্য। লেখক বই জুড়ে ঠিকঠাক আবহ ধরে রাখতে পারেননি বলে মনে হয়েছে।
কিংকর্তব্যবিমুঢ়ে আহমেদ করিম ও সহকারী সোহেলের সাথে অদ্ভুত এক চরিত্র রকেটের দেখা মিলে। আহমেদ করিমকে লেখক গত বইয়ে যেভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন সেটা ধরে রেখেই এগিয়েছেন এবং মূল তদন্তে তার উপরই সব ফোকাস ছিল। আহমেদ করিমের সেশনগুলো এবং বাকিদের সাথে তার ডাইন্যামিক বেশ ভালো লেগেছে। কিন্তু সমাপ্তিতে গিয়ে আহমেদ করিম নিজের চরিত্রের প্রতি সুবিচার ক���তে পারেননি। আর সোহেলকে নিয়ে আমি রীতিমতো বিরক্ত। প্রথম বইতে তার অবদান ও ইম্প্যাক্ট ছিল না বললেই চলে। তবে সিরিজের প্রথম বই হিসেবে সেটা মেনে নেওয়ার মতো। কিন্তু এবারও কাহিনীতে, তদন্তে সোহেলের অবদান ও ইম্প্যাক্ট শূন্য। উলটো তার উপস্থিতি এবং কাজকারবারের বইতে খাপছাড়া ছিল। রকেট চরিত্রটা যেমনটা লেখক দেখাতে চেয়েছিলেন তেমনটাই পেরেছেন বলবো এবং তাকে বইতে আনায় একটা আলাদা মাত্রা যোগ হয়েছে।
বইয়ের সমাপ্তিটা বইয়ের অন্যতম দুর্বল দিক।শেষ ৫০ পেইজে কাহিনী জমছিলো ঠিকই কিন্তু সমাপ্তিতে গিয়ে পুরাই গোজামিল।
শরীফুল হাসানের প্রাঞ্জল ও মসৃণ লেখনীর কারণে একটানে পড়ে ফেলা যায় বইটা। কাহিনী মাঝে ভালো কিছুর আভাসও দিয়েছিল যেটার কারণে শেষ পর্যন্ত যাওয়ার আগ্রহও থাকে। আর যেমনটা বললাম শেষ ৫০ পৃষ্ঠায় কাহিনী জমছিলোও। সমাপ্তিতে দারুণ কিছুর আশা না করলেও আরও ভালো আশা করেছিলাম। তবে , প্লট, এক্সিকিউশন, ক্যারেক্টার ডেভেলাপমেন্ট ও সমাপ্তি, কমবেশি সবকিছুই হতাশ করেছে। তবে শরীফুল হাসানের প্রতি ভরসা আছে আমার এবং সিরিজের নেক্সট বই প্র.জে.থা যা ইতোমধ্যে প্রকাশিত । প্র.জে.থা রুপকুমারীর লেভেলের না হলেও ভালো কামব্যাকের দেখা পাবো, এই আশায় আছি।
ব্যক্তিগত র্যাটিং- ২.৫/৫ (আমি বই পড়ার পর আমার ওভারঅল অভিজ্ঞতা কেমন ছিল, বইয়ের সাথে আমার জার্নিটা কেমন ছিল সেইটার বেসিসেই রেটিংটা দেই। রিভিউতেও আসলে সেই জার্নিটাই তুলে ধরার চেষ্টা করি। ২ দিবো ভেবেও লেখনী আর কিছু অংশের কারণে ২.৫ দিতে হলো)
বাংলা ভাষায় সবথেকে কঠিন শব্দ কোনটা জানেন? আমি বলছি। বাংলা ভাষায় সবচেয়ে কঠিন শব্দ কোনটা এটা বলা মুশকিল। "লশুনপলাণ্ডগুঞ্জনকুম্ভীশ্রাপথন্নসুতকান্নাভোজ্যান্যমধুমাংসমূত্ররেতোহমেধ্যাভক্ষভক্ষণেগায়ত্র্যাষ্টসহ।" আশা করি, আদিমধ্যযুগীয় এই শব্দকে অভিধানে খুঁজতে গিয়ে বোকামো করবেন না। তবে অভিধানে সবচেয়ে বড় শব্দ হলো- "দক্ষিণায়নান্তবৃত্তসম্বন্ধীয়" (১২ অক্ষর)। এখানে অক্ষর বলতে Syllable গণনা করা হয়েছে। তবে এর চাইতে কম আরও কিছু বড় শব্দ আছে। যেমন, ১. অঘটনঘটনপটীয়ান; যার স্ত্রী লিঙ্গ অঘটনঘটনপটীয়সী। আবার অঘটনঘটনকুশল-ও একই অর্থের। ২. উষ্ট্রকণ্টকভোজনন্যায়। ৩.নাতিশীতোষ্ণমন্ডলানুরূপ। আরও অনেক আছে। তবে ছোটবেলায় বাংলার শিক্ষকেরা যে শব্দের বানান করতে বলে আমাদেরকে সেই শব্দের অর্থের অবস্থায় ফেলে দিতেন সেটা হলো "কিংকর্তব্যবিমূঢ়।" এখন আসি লেখক শরীফুল হাসানের লেখা বই "কিংকর্তব্যবিমূঢ়" নিয়ে একটু লেখাপড়া করি। "আহমেদ করিম" সিরিজের দ্বিতীয় বই এটি। প্রথম বই "রূপকুমারী ও স্বপ্নকুহক" এর মতো এবারো করিম সাহেব সম্মুখীন হয়েছেন এক নতুন রহস্যের। সাথে আছে সহকারী সোহেল আর একজন নতুন চরিত্র। যার নাম রকেট। তানিয়া এবং সায়েম দম্পতি পড়েছেন এক ঝামেলায়। সায়েম বিভিন্ন ধরনের হ্যালুসিনেশন করছে, সাথে কর্মজীবনের কিছু সমস্যাও তাকে অস্থির করে রেখেছে। কিছু অ-ব্যাখ্যেয় সমস্যায় ভুগছেন সায়েম পত্নী তানিয়াও। কোলাহলে ভর্তি জনজীবন থেকে একটু মুক্তির আশায় তানিয়া এবং সায়েম দম্পতি পাড়ি জমিয়েছেন সায়েমের পৈত্রিক বাড়ি শম্ভুগঞ্জে। এর আগেই তানিয়া ছুটে গেছিলেন "আর নয় ঝাড়ফুঁক, তুকতাক" বিজ্ঞাপন দেয়া আহমেদ করিমের কাছে। তার স্বামীর সমস্যার সমাধানের আশায়। সায়েমের সমস্যা করিম সাহেবের কাছে বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হল। তাই তিনি আর সোহেল রওনা হলেন সায়েমের পৈত্রিক বাড়ির উদ্দেশ্যে। আর সাথে এসে পড়লেন সেই "আমার নাম ধরেন 'রকেট'।" সায়েমের পৈত্রিক বাড়িকে ঘিরে প্রচলিত আছে নানা ধরনের মিথ। কিন্তু করিম সাহেব বা সোহেল কেউই এইসব প্রচলিত গল্পে বিশ্বাস করেন না। তারা খুঁজে বেড়ান যুক্তি। সেই যুক্তি খুঁজতে গিয়েই তারা সম্মুখীন হন নানা অভিজ্ঞতার, নানা রহস্যের। আর সে রহস্যের অন্তর্ধান করতে গিয়ে করিম সাহেব জীবনে প্রথমবারের মতো পড়ে যান কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায়। সাথে ছিলেন অদ্ভুত "রকেট"। তার কথাবার্তা, আচার-ব্যবহার সবকিছুই কেমন জানি। করিম সাহেবের পিছু যেন সে ছাড়েনা। সায়েম, তার স্ত্রী, বাড়ির কেয়ারটেকার সবাই মিলে বাড়ির পরিবেশের সেই অদ্ভুত রহস্য কি বের করতে পেরেছিলেন করিম সাহেব? না-কি সামনে এসে গিয়েছিল কোন কঠিন, রূঢ় সত্য? জানতে হলে অবশ্যই আপনাকে যাত্রা করতে হবে করিম সাহেবের সাথে আর যাত্রা শেষে হয়ে যাবেন "কিংকর্তব্যবিমূঢ়।" #ব্যক্তিগত_প্রতিক্রিয়া: 'রূপকুমারী ও স্বপ্নকুহক"-এর পরপরই পড়ে ফেলেছি "কিংকর্তব্যবিমূঢ়"। তাই দুইটা গল্প রিলেট করতে পেরেছি সহজেই। দুইটাই নিজস্ব রহস্যে ভরপুর। তবে এই বইতে কিছু বিষয় আরেকটু বিস্তারিত হলে পড়ার শেষে প্রাপ্তির সাথে তৃপ্তির পরিমাণটা আরেকটু বেশী হতো। মনে হয়েছিল শেষ হয়ে গেল! আরেকটু বেশি পড়তে পারলাম না! সোহেল চরিত্রটাকে আমার ভালোই লাগে। লেখকের লেখা পড়ে বুঝছি সামনে এই চরিত্রকে আরো উন্নত করা হবে। আহমেদ করিম এর যাত্রা সামনে আরো রহস্য রোমাঞ্চকর হোক আর সেই যাত্রা যেন খুব তারাতারি উপভোগ করতে পারি লেখকের কাছে এই আবেদন থাকবে। মনে ধরা কিছু উক্তি: ১) দুঃস্বপ্নগুলো বাস্তবের খুব কাছাকাছি হয়। ২) মন খুব জটিল জিনিস, সে এমন এমন খেলা খেলে তাতে কোনটা সত্যি কোনটা মিথ্যা তা বের করা খুব কঠিন হয়ে যায়। ৩) কোনো মানুষকেই পুরোপুরি চেনা যায়না। সময় আর পরিস্থিতিতে মানুষ পাল্টায়। ৪) মানুষ বলে মেয়েমানুষের মন বোঝা খুব কঠিন। কিন্তু মাঝে মাঝে মনে হয় পুরুষ মানুষও যথেষ্ট রহস্যময়। এদের মন পাওয়া, মন বোঝা খুব কঠিন। এরা যা ভাবে তা বলে না, যা বলে তা ভাবে না।
কিংকর্তব্যবিমূঢ় লেখকঃ শরীফুল হাসান প্রচ্ছদঃ সজল চৌধুরী মূদ্রিত মূল্যঃ ৩৫০ টাকা। অবসর প্রকাশনা সংস্থা . . কাহিনী সংক্ষেপঃ
আহমেদ করিমের কাছে স্বামী সায়েম চৌধুরির মানসিক সমস্যা নিয়ে হাজির হলো তানিয়া চৌধুরি। সায়েম চৌধুরি নানাধরনের হেলুসিনেশনে ভুগছে।এছাড়া অফিসেও নানা রকম ঝামেলা চলছে। তাই সবধরনের কাজ থেকে কিছুদিনের ছুটি নিয়ে তারা চলে যাচ্ছে সায়েমের পৈত্রিক বাড়িতে। আহমেদ করিম আর তার সহকারি সোহেলকেও আমন্ত্রণ জানানো হলো সেই বাড়িতে। আহমেদ করিম সোহেলকে সাথে নিয়ে রওনা দিলেন, সাথে যোগ হলো এক অদ্ভুত চরিত্র রকেট। সায়েমের পৈত্রিক বাড়ি নিয়ে নানা রকম মিথ, গল্পকথা ছড়িয়ে আছে। সায়েম কিংবা তানিয়া কেউই ঠিক স্বাভাবিক নয়। এমনকি স্বাভাবিক নয় এখানকার কেয়ারটেকারও। এখানে এসে একের পর এক অদ্ভুত সব ঘটনার সম্মুখীন হতে থাকলেন আহমেদ করিম। ঘটনার জালে জড়িয়ে এই প্রথমবারের মতো নিজেকে আবিষ্কার করলেন কিংকর্তব্যবিমুঢ় অবস্থায়। . ………………………………………………………………………………………………………… . রুপকূমারী ও স্বপ্নকুহক ( ২০২০) এর পর আহমেদ করিম সিরিজের দ্বিতীয় বই কিংকর্তব্যবিমূঢ় । অবে সিরিজ বলতে কিন্তু একই কাহিনীর ধারাবাহিকতা না, বরং মূলত মূল চরিত্র প্রতিটা বইয়ে একই বলে এটা সিরিজ হিসেবে আখ্যায়িত। তাই প্রতিটা বই আলাদা করেও পড়া যাবে। যাই হোক, কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর শুরুতেও আগের বইয়ের মতো আহমেদ করিম ও তার সহযোগী সোহেল এক প্রাচীন জমিদার বাড়িতে বিচিত্র অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হোন। একটা আধিভৌতিক আবহে গল্প শুরু হয়, যেটা প্রথমে সাদামাটাই মনে হতে পারে। কিন্তু পুরোটাই যে ভ্রম! যতোই সামনে আগানো হয়, বাড়ে জটিলতা। গোলকধাঁধায় অন্ধের হাত দেখার মতো অসহায় অবস্থায় বিপর্যস্ত মনে হয় আহমেদ করিম সাহেবকে। কিন্তু কেন? বেশ কিছু জোরালো প্রশ্ন এবং সেই সাথে মনস্তাত্বিক কিছু রহস্যের উপস্থিতিতে অবস্থা আরও জটিল হতে থাকে। এসব থেকে বেঁচে ফেরার উপায় কী? সহকারী সোহেল যথারীতি বোকাটে, খামখেয়ালী এক চরিত্র। গল্পের ক্ষেত্রে তা খারাপ লাগে না কখনোই। সাথে যুক্ত হয়েছে ‘রকেট’ নামের এক আজব চরিত্র। চরিত্র গঠন এবং পরিবেশ-আবহ উপস্থাপনে মুন্সিয়ানা ষোলআনা। সিরিজের আগের বইয়ের থেকে এই বইতে ভৌতিক বা অতিপ্রাকৃত ব্যাপারগুলর বিবরণ আরও ভয়াবহ ছিল, বেশ গা শিউড়ে ওঠার মতো। অদ্ভুত ভুতুড়ে বাড়ির কেয়ারটেকার হামজা মিয়ার অদ্ভুত চলাফেরা এবং বাড়ির পুরনো ইতিহাস, তানিয়ার স্বামীর অদ্ভুত ভয়ানক দুঃস্বপ্ন, তানিয়ার অদ্ভুত আচরণ… সেইসাথে আহমেদ করিম সাহেবের বুদ্ধির জোরদার খেলটাও শেষদিকে দারুনভাবে সফল। তবে হিন্দু জমিদারের অতীত ইতিহাস পড়তে খারাপ লাগছিল না। আরেকটু বিস্তারিত পড়তে মন চায় যুক্তি-অযুক্তির খেলায় শেষে কে জয়ী হবে? আহমেদ করিম সাহেবের ‘কিংকর্তব্যবিমূঢ়’ অবস্থা থেকে মুক্তির উপায় কী? সবমিলিয়ে বেশ উপভোগ্য এক বই। আধিভৌতিক এবং একই সাথে মনস্তাত্বিক আখ্যানের এক সফল উদাহারণ বলা যায় ‘কিংকর্তব্যবিমূঢ়’ বইটিকে। পরের বইয়ের জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষায় রইলাম। হ্যাটস অফ প্রিয় শরীফুল হাসান ভাই <3
নামঃ কিংকর্তব্যবিমুঢ় লেখকঃ শরীফুল হাসান প্রকাশনীঃ অবসর প্রকাশনী "তাহলে শুরু করুন", আহমেদ করিম তার পুরনো রেকর্ডারের বাটনে চাপ দিলেন। সোহেলের দিকে ঈশারা করলেন যেন একদম চুপ থাকে।তানিয়া চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে হাসলেন,অভয় দিলেন কথা শুরু করার জন্য। তানিয়া বলতে শুরু করল।
সায়েম চৌধুরীর মানসিক সমস্যা নিয়ে আহমেদ করিমের কাছে হাজির হলেন তানিয়া চৌধুরী। ভদ্রলোক নানা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। কখনো কখনো নানাধরণের হ্যালুসিনেশন হচ্ছে, আবার কখনোবা অবাস্তব কিছুর অস্তিত্ব অনুভব করছেন আবার কখনো ঘুমের ঘোরে রুম থেকে বের হয়ে নানা জায়গায় হেটে যাচ্ছেন। সারক্ষণ যেন ঘোরগ্রস্ত হয়ে থাকে সায়েম। এদিকে তার অফিসে চলছে বড়রকমের ঝামেলা যেটা তার মনে একরকম চাপ তৈরি করেছে। একদিকে মানসিক সমস্যা অন্যদিকে অফিসের ঝামেলার চাপ সব মিলিয়ে হাপিয়ে উঠেছে সায়েম, সেই সাথে তার স্ত্রী তানিয়াও। অন্যদিকে তাদের বাসায় কাজের মেয়ে তহুরা একদিন ভীতিকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলেন।দুর্বিষহ জীবন থেকেই বাচতে, একটুখানি শান্তির জন্য সায়েম আর তানিয়া চলে গেল সায়েমের পৈত্রিক বাড়িতে, শম্ভুগঞ্জে! আহমেদ করিমকেও আমন্ত্রণ জানানো হলো সেই খানে। সোহেলকে সাথে নিয়ে রওনা দিলেন সাইকোলজিস্ট আহমেদ করিম, সাথে যোগ এক অদ্ভুত রহস্যময় চরিত্র রকেট। নানারকমের গল্প, মিথ বা ভয়াবহ অতীত লুকিয়ে আছে সায়েমের পৈত্রিক বাড়িতে!! বাড়ির পরিবেশটাও কেমন যেন রহস্যময়, ভয়ার্ত,অদ্ভুত। সায়েম কিংবা তানিয়ার কেউই আহমেদ করিমের কাছে স্বাভাবিক মনে হলো না,এমনকি বাড়ির কেয়ারটেকার হামজা মিয়াও যেন অদ্ভুত একটা চরিত্র। একের পর অদ্ভুত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে লাগল আহমেদ করিম।সাথে তানিয়া সায়েমের চারপাশের ভয় যেন আরো ঘনীভূত হলো! সাইকোলজিস্ট আহমেদ করিম অলৌকিকে বিশ্বাস করেন না আবার করেনও!! কিন্তু এখানে এসে ঘটনার ঘনঘটায় তিনি নিজেও হতবাক, কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলেন পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ আহমেদ করিম সিরিজের দ্বিতীয় বই এটি। প্যারাসাইকোলজিক্যাল থ্রিলার জনরার পুরো বইটি জুড়ে রহস্যের আবহ সৃষ্টি করেছেন লেখক। সেই সাথে নানারকমের ভৌতিক অভিজ্ঞতা মিলে সম্পূর্ণ গল্পটি জমে উঠেছে। গা ছমছম করা ভয়ের অনূভুতি ছিল বইটা জুড়ে। লেখকের সবচেয়ে ভালো দিকটা হলো তার বর্ণণাশৈলী, চরিত্রায়ন। বইটির সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং চরিত্র রকেট এর ভূমিকাটা আমার নিজের খুব ভালো লেগেছে। তবে সোহেলকে কেন যেন আমার কাছে অনেকটা কম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের মনে হয়েছে। আহমেদ করিম সিরিজের পরবর্তী কিস্তি আসবে কিনা জানি না তবে রকেট চরিত্র যদি পরবর্তী কিস্তিতে থাকে তাইলে মন্দ হবে না!!