উনিশ শতকের শেষ দশক থেকে শুরু হয় আধুনিক অর্থে বাংলা গোয়েন্দা গল্প লেখা। এই গল্পগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সেকালের নানা খ্যাত অখ্যাত পত্র-পত্রিকার পাতায়। সম্ভবত এই প্রথম সেগুলি সংগ্রহ করে পুনর্মুদ্রিত হল এই সংকলনে। লেখকে লেখকে স্রেফ রেষারেষির কারণে কীভাবে বাংলা সাহিত্যে দেখা দিল শখের গোয়েন্দা আর শার্লক হোমস-ই বা কীভাবে সেকালের গোয়েন্দা গল্পের লেখক ও প্রকাশকদের নতুন পথ দেখাল সেসব মজাদার কাহিনিও এই সংকলনে পাওয়া যাবে। গোয়েন্দা গল্প পড়তে যাঁরা আগ্রহী তাঁরা যেমন পাবেন নতুন খোরাক আবার যাঁরা গোয়েন্দা সাহিত্যের ইতিহাসকে অনুসরণ করতে চান তাঁদের জন্য রইল নানা জরুরি সূত্র। সর্বোপরি বাংলায় শার্লক হোমস চর্চার এত বিচিত্র তথ্য এই প্রথম সামনে উঠে এল।সেকালের গোয়েন্দা গল্প-কাহিনি যে শুধুমাত্র বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল তাই নয় বঙ্গসমাজে তার পরোক্ষ প্রভাবও কিছু কম নয়। এই কাহিনিগুলিতে ভূরি ভূরি চা-সিগারেটের উদাহরণ মেলে। আসলে যে দুটি ছিল সেই সময়ের বিশ্বজোড়া ভোগ্যপণ্যের ফর্দে একেবারে উপরের সারির। হাজার হাজার টাকার বিজ্ঞাপন দিয়ে যে পণ্যগুলিকে বাজারজাত করার চেষ্টা চলছিল নিঃশব্দে সেই কাজটাই সম্পন্ন করল গোয়েন্দা সাহিত্য। চা আর সিগারেটকে এমন ভাবে হাজির করল যেন সেগুলি এক একটি সামাজিক আবিষ্কার। শহুরে জীবন যাপন আর একটি বিশেষ শ্রেণির পরিচিতি হয়ে উঠল সেই পণ্যগুলি। গোয়েন্দা কাহিনি পড়ার পাশাপাশি তার এই বহুধা প্রভাবও উপেক্ষা করা যায় না ।
সম্পাদক অরিন্দম দাশগুপ্তের শিক্ষা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটা থেকে ইতিহাসের পাঠ। ইংরেজি থেকে বাংলায় ভাষান্তর করে সম্পাদনা করেছেন মিয়াজান দারোগার একরারনামা। এছাড়াও অনেক দুর্লভ গ্রন্থের সম্পাদক ও অনুবাদক।