জন্মের দুশো বছর পরেও, বিদ্যাসাগরকে ঘিরে ‘ভদ্রলোক’ শ্রেণির চিরাচরিত চর্বিতচর্বণ চলতে থাকুক। লুঠেরা উপনিবেশের প্রতি অকুণ্ঠ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন অব্যাহত থাকুক তাঁদের। শুধু অগণন অন্ত্যজ হিন্দু ও দরিদ্র মুসলমান এবং আর্ত ও অসহায় নারী, সেই দাসত্বের দোসর হবেন না। সুকৌশলে তাঁদের চিরদিন অপাংক্তেয়, প্রান্তিক, বঞ্চিত করে রাখার দিন শেষ। তাই, তাঁরা তাঁদের দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করবেন বিদ্যাসাগরকে। তাতে যদি তিলে তিলে গড়ে তোলা সযত্ন ‘নির্মাণ’ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে, তবুও তাঁদের প্রতিস্পর্ধী দৃপ্ত উচ্চারণ থমকে যাবে না এক মুহুর্তের জন্যেও। কারণ তাঁদের কথা কেউ বলেনি এতদিন, পরেও বলবে না। তাঁরা যে ‘ছোটলোক’! তাঁদের হয়ে কলম ধরলেন দেবোত্তম চক্রবর্তী।
বই - বিদ্যাসাগর নির্মাণ বিনির্মাণ পুনর্নির্মাণ লেখক - দেবোত্তম চক্রবর্তী
বিদ্যাসাগরকে নিয়ে মূল্যবান বই লেখকের এই বইটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশংসনীয় কাজ।
বিদ্যাসাগর নিয়ে যে রেনেসাস নামে যে মিথ তৈরী হয়েছে এবং যে দিক গুলির জন্য খ্যাতি প্রচলিত আছে সেই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বইতে। নবজাগরণের তৎকালীন বহু 'মহান' ব্যক্তির রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগরসহ ও কর্মকাণ্ডকে আলোচনা করেছেন। এ-ই বইতে ব্রিটিশ শাসনাধীন অবিতবর্ষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস বিশদভাবে উল্লিখিত হয়েছে উল্লিখিত হয়েছে সে সময়ের নানান দিক-বদল ও বিবিধ ঘাত-প্রতিঘাত ঘটনা। ‘চেনা’ কিংবা ‘জানা’ ইতিহাসও হয়ে উঠেছে অচেনা।
বৃটিশরা মূলত ইংরেজ শিক্ষার প্রজেক্ট তৈরি করেছে এই শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তিরা যে ব্রিটিশ রাজশক্তির দালাল ছাড়া অন্য কিছু হবে না, প্রমাণিত হয়েছে । এই বই উপনিবেশ বিরোধী চর্চার পক্ষীয়। লুঠেরা উপনিবেশের প্রতি অকুণ্ঠ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন অব্যাহত থাকুক।