Jump to ratings and reviews
Rate this book

লোলার জগৎ

Rate this book
সর্বমোট মৃতের সংখ্যা প্রায় এক কোটি তিন লক্ষ একুশ হাজার।

ভবিষ্যত প্রজন্মের এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতিতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন উপস্থিত বিজ্ঞানীরা। সম্বিৎ ফিরে পেয়ে প্রফেসর আকিরা নাকামুরা খুব সন্তর্পণে সামনে রাখা ভার্চুয়াল ফাইলটি গুটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে ছোট ছোট পদক্ষেপে দরজার দিকে এগিয়ে যান।

হতবাক প্রেসিডেন্ট মৃদুস্বরে বলেন, “মিস্টার নাকামুরা, চলে যাচ্ছেন?”

দাঁড়িয়ে পেছনে না তাকিয়েই প্রফেসর নাকামুরা বলেন, “আমি সুস্মিতা ব্যানার্জির থিওরি মেনে নিয়েছি। মানুষ তার জ্ঞানের প্রান্তিক সীমায় পৌঁছে গেছে। এর চেয়ে বেশি জ্ঞান অর্জন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়; আর জ্ঞানের প্রান্তিক সীমার কাছাকাছি পৌঁছে মানুষ আত্ম-ধ্বংসে মত্ত হয়ে উঠে। প্রজেক্ট ব্যর্থ হয়েছে।”

এতটুকু বলে কিছুক্ষণ দম নেন। তারপর স্পষ্ট করে প্রতিটি শব্দ আলাদা আলাদা করে উচ্চারণ করে বলেন, “মানুষ প্রকৃতি-বিরোধী সৃষ্টি। তার ধ্বংসই প্রকৃতির স্বস্তির একমাত্র পথ।”

305 pages, Hardcover

Published March 31, 2021

3 people are currently reading
139 people want to read

About the author

মোহাম্মদ সাইফূল ইসলাম এর জন্ম ১৯৮১ সালে নরসিংদী জেলায়। বাবার চাকরির সুবাদে শৈশব ও কৈশোর কেটেছে দেশে-বিদেশে। একজন সফল উদ্যোক্তা ও স্বপ্রতিষ্ঠিত কোম্পানির সিইও হিসেবে বর্তমানে প্রবাসজীবন যাপন করছেন লিবিয়াতে। শিক্ষাজীবনে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) থেকে ২০০৩ সালে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে স্নাতক।
লিখছেন দীর্ঘদিন থেকে। 'শান্তির দেবদূত' ছদ্মনামে সামহোয়ারইনব্লগে সায়েন্স ফিকশন লিখে যথেষ্ট জনপ্রিয়। অনলাইন জগতে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় দুই ডজন বিপুল পঠিত ও আলোচিত সায়েন্স ফিকশন গল্প-উপন্যাস ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তার। লেখকের প্রথম সায়েন্স ফিকশন উপন্যাস প্রজেক্ট প্রজেক্টাইল যথেষ্ঠ পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। ‘ও-টু’ লেখকের দ্বিতীয় সায়েন্স ফিকশন উপন্যাস।
বিজ্ঞান, মানবতা, প্রেম আর প্রখর রসবোধের মিশেলে অনবদ্য লেখনিবৈশিষ্ট্য লেখককে বিশিষ্টতা দিয়েছে। তার লেখাগুলো সুখপাঠ্য ও চুম্বকধর্মী। লেখকের সায়েন্স ফিকশনগুলো বিজ্ঞানের নীরস কচকচানি নয়, বরং জীবনের প্রেম-কাম ও হাসি-কান্নার রসে সিক্ত।
-- By Tasruzaman Babu

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
34 (54%)
4 stars
16 (25%)
3 stars
10 (16%)
2 stars
2 (3%)
1 star
0 (0%)
Displaying 1 - 28 of 28 reviews
Profile Image for ORKO.
196 reviews197 followers
October 1, 2022
সায়েন্স ফিকশন বলতে অনেককেই বলতে শুনি, একটুখানি সায়েন্স আর অনেকখানি ফিকশনের এক সংমিশ্রণের কথা। অক্ষরে অক্ষরে বিজ্ঞান গেঁথে ফেলার থেকে বিজ্ঞানকে সামলে চমকপ্রদ গল্পের যে সামঞ্জস্যপূর্ণতা থাকা দরকার সেই ব্যালেন্সটার উপস্থিতি বঙ্গদেশের সাই-ফাইয়ে খুব কম দেখা যায়। বেশ অবহেলিত এই জনরায় লেখালেখির সংখ্যা এইখানে আদতে কম, আর যাই বা থাকে তার অধিকাংশই ওই যে "একটুখানি সায়েন্স আর অনেকখানি ফিকশন"...
কড়া বিজ্ঞানের ইলিউশন সাথে মৌলিক ভিশনারি স্টোরি এই দুইয়ের কম্বিনেশন অনেকটা সেঞ্চুরী প্ল্যান্টের ফুলের মতো। আধখানা মহাকাশযান,কয়েক ছটাক টাইম ট্র্যাভেল, সিকি-ভাগ পাগলাটে বিজ্ঞানী,ফালি করে কাঁটা আঁশটে গন্ধযুক্ত শুঁড়, মাথায় লাইট বাল্ব নিয়ে ঘুরে বেড়ানো হাতির কানযুক্ত এলিয়েন নিয়ে কাঁহাতক গল্প ফাঁদা যায়।
আর বিষয়বস্তুর ভার্সেটিলিটি বজায় রাখতে গিয়ে কড়া বিজ্ঞান নিংড়ানো জুসের টেম্পারেচার,থিকনেস, টেস্ট ডায়ালেটরের অভাব দেখা যায় স্টোরিটেলিংয়ে। তবে আশার কথা এই যে, এই ছবিটা বোধহয় বদলাচ্ছে একটু একটু করে। দীপেন ভট্টাচার্য,শিবব্রত বর্মনের মতো অনেক ভার্সেটাইল স্টোরিটেলারের দেখা পাচ্ছি।
সেই ধারায় হার্ডকোর সায়েন্স ফিকশনের হাতেগোণা সুবিস্তৃত কাজের মাঝে 'লোলার জগৎ' উল্লেখযোগ্য সংযোজন।


ঘটনাপ্রবাহের শুরু বর্তমানের থেকে কয়েক শতাব্দী সামনের পৃথিবীতে। শুরুতেই লেখক পাঠকের মনে বেঁধে দেন একটা টাইম বোম্ব। হঠাৎই পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা জানতে পারেন, তাদের হাতে পৃথিবীকে বাঁচানোর জন্য আছে আর মাত্র ২৬ বছর। অনেকটা সেক্রেড গেমসের ওই ডায়ালগটার মতো, " পাঁচচিশ দিন হ্যায়,বাঁচা লেনা আপনে শেহের কো".... আর মাত্র ২৬ বছর পর পৃথিবী প্রবেশ করবে এক ডার্ক নেবুলা তথা মহাজাগতিক ধুলোর মেঘে। সেই নীহারিকার বদৌলতে পৃথিবীতে ঢুকবে আলো আর পৃথিবী প্রবেশ করবে এক দীর্ঘ দশ হাজার বছরের বরফযুগে। টাইমার সেট হয়ে গেছে। মানুষের মনে ছড়িয়ে পড়েছে সর্বনাশের নীল হিমশীতল আতঙ্ক। পৃথিবীকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন সেসময়ের অবিভক্ত পৃথিবীর প্রেসিডেন্ট। আসতে থাকে একের পর এক প্রজেক্টের প্রস্তাব। যার মাঝে অন্যতম প্রজেক্ট লোলা,প্রজেক্ট হেতেব। মঙ্গলগ্রহের উপগ্রহ লোলায় কৃত্রিম উপায়ে মানব বসতি স্থাপন করা হয়। সেখানে সময় চলে পৃথিবীর থেকে একশ গুণ দ্রুত। উদ্দেশ্য — দীর্ঘ সময়কে কাজে লাগিয়ে পৃথিবীর অন্তিম পরিণতিকে ঠেকানো। আর প্রজেক্ট হেতেব কাজ করতে থাকে এই ক্রান্তিলগ্নে উচ্চ বুদ্ধিমত্তার এক্সট্রাটেরেস্ট্রায়াল লাইফের কাছে সাহায্যের খোঁজে। এই ২৬ বছরের অন্তিমে কি শেষরক্ষা হয়? নাকি মানুষ নামের প্রকৃতি-বিরোধী সৃষ্টির ধ্বংসে লেখা হয় প্রকৃতির স্বস্তির একমাত্র পথ?

সুবিস্তৃত এই কল্পকাহিনীর প্লট আর সাবপ্লটের ভিড়ে হারিয়ে যাবার ভয় হচ্ছিলো বারবার। মনে হচ্ছিলো শেষ পর্যন্ত এই জিগস পাজল মিলবে তো? নাকি থমকে যাবো কোনো কানাগলিতে? বিজ্ঞান-রাজনীতি-দর্শন-ধর্ম সবকিছুর সমন্বয়ে যে অতিকায় ছবিটা শেষ পর্যন্ত দাঁড়ায় সেটার প্রতিটা আঁচড় কাটা হয়েছে বেশ যত্নের সাথে। কাহিনীর খেই হারানোর সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়ে ধীর না হয়ে বরং বেশ দ্রুত গতিতেই এগিয়েছে প্রবাহধারা। যার ফলে "লোলার জগৎ" হয়ে উঠেছে প্লট ড্রিভেন একটা সাই-ফাই,ক্যারেকটার ড্রিভেন না। খুব কম চরিত্রই পেয়েছে বিস্তৃত ডানা মেলার সুযোগ,পাঠকও খুব কম সময়ই পাবেন প্রধান চরিত্রগুলোর মনস্তত্ত্বে উঁকিঝুঁকি মারার। নন-লিনিয়ার ন্যারেটিভে মাঝে মাঝে পৃথিবীর, মাঝে মাঝে লোলার জগৎকে পর্যবেক্ষণ করতে করতে বুক কাঁপবে শঙ্কায়,অনাকাঙ্ক্ষিত মোচড়ে কখনও দোল খাবে মাথা।

সায়েন্স ফিকশন পড়তে গেলে টেকনিক্যাল জারগন আর তার বঙ্গদেশি সংস্করণের ঘেরাটোপে আটকা পড়ে অনেক পাঠকের স্বাভাবিকভাবেই নাভিশ্বাস উঠে। ভারী ভারী টার্ম আর সেগুলোকে মাথায় অনুবাদ করে করে এগিয়ে যেতে বেশ বেগ পেতে হয়। কিন্তু লোলার জগৎ সেই দোষে দুষ্ট নয়। খুব সহজ এলিমেন্টারি জারগনগুলোকেও লেখক একেকটা চরিত্রের বোধগম্যের সীমানার বাইরের দেখিয়ে ইন্টেনশনালি সহজ করে ব্যাখ্যা করেছেন পাঠকদের জন্য। যেমন: কার্বন বেসড লাইফ,সিলিকন বেসড লাইফ ---এইসব এলিমেন্টারি বায়োকেমিক্যাল টার্মকে খুব সহজে কাহিনীর গতিপ্রকৃতিকে বাঁধা না দিয়ে তুলে ধরেছেন পাঠকের সামনে। সেজন্য এক্সট্রা প্রশংসা করতেই হয়।

সবথেকে অবাক করেছে "লোলার জগৎ" এর ডিটেলিং। প্রধান চরিত্র তো বটেই ছোট ছোট চরিত্রগুলোর কথা বলার ভঙ্গি,ভ্রু কুঁচকানো, প্রতিক্রিয়া,মনের ভেতর ঘটে চলা দ্বন্দ্ব-সংঘাত সবকিছুই যেন বাস্তবের প্রতিবিম্ব। বিজ্ঞান-দর্শন-রাজনীতি তো বটেই,ষড়যন্ত্রকেও এতো ঘোরালো করে রাখবার জন্য একদম শুরু থেকে প্রতিটা ধাপ মেপে মেপে ফেলাটা জরুরি ছিল। এটা সম্ভব হয়েছে আর হয়েছে বেশ সফলভাবেই।

লেখকের 'ও টু' পড়বার অভিজ্ঞতা বেশ স্মরণীয় ছিল। 'লোলার জগৎ' সেই প্রত্যাশার পারদকে চড়িয়েছে বেশ উপরে। 'আর্কোইরিচ কসমস', 'পার্পেচুয়াল আতঙ্ক' পড়বার আগ্রহটা বেড়ে গেল অনেকাংশেই।
Profile Image for Harun Ahmed.
1,652 reviews419 followers
October 1, 2022
এ বইতে "ফাউন্ডেশন" সিরিজের মতো আলাদা এক জগৎ সৃষ্টি করা হয়েছে শুনে পড়তে আকৃষ্ট হয়েছিলাম।"দিতার ঘড়ি" ব্যতীত এতো বিস্তৃত পরিসরে বাংলা ভাষায় আর কোনো বিজ্ঞান কল্পকাহিনি লেখা হয়েছে কি? আমার জানা নেই।বইটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দারুণ উপভোগ্য ও দার্শনিক অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ। কল্পবিজ্ঞানের লেখকদের যে vision থাকে তা লেখকের পূর্ণমাত্রায় রয়েছে।
অনেক বই পড়ে কাহিনি রবারের মতো টেনে লম্বা করা হয়েছে বলে আমরা বিরক্তি প্রকাশ করি।"লোলার জগৎ" এর ক্ষেত্রে ঘটনা সম্পূর্ণ বিপরীত। কাহিনি এগিয়েছে বুলেট ট্রেনের গতিতে। কোনো থামাথামি নেই। আমার বরং মনে হয়েছে এই গল্প নিয়ে দিব্যি একটা ট্রিলজি লিখে ফেলা যেতো।
আমাদের দেশে কোনো বিষয় নিয়ে না জেনে লেখার একটা প্রবণতা আছে,"লোলার জগৎ" তা থেকে মুক্ত। পাঠক পড়লেই বুঝবেন,লেখক প্রচুর পড়াশোনা ও পরিশ্রম করেছেন লিখতে যেয়ে।

ব্যক্তিগতভাবে ২৭৩ পাতায় গল্প শেষ হলে বেশি আনন্দ পেতাম। কিন্তু যা পেয়েছি সেটাও অল্প না।আমি কল্পবিজ্ঞান পাঠকদের বইটি পড়ার পরামর্শ দেবো। ভালো খারাপ যাই লাগুক,বইটি নিয়ে আলোচনা করতে বলবো।"লোলার জগৎ" অনেক বেশি আলোচনা ও ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্যতা রাখে।

(১৬ নভেম্বর, ২০২১)
Profile Image for Aishu Rehman.
1,093 reviews1,079 followers
January 31, 2023
সত্যি বলতে কল্পবিজ্ঞানের হাতেখড়ি জাফর ইকবাল স্যার আর সত্যজিৎ রায়কে দিয়েই। সত্যজিৎ রায়ের তোফা গল্পগুলো বন্ধ হয়ে গেলেও জাফর স্যার এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন ধীর মন্থর গতিতে। কিন্তু তার লেখায় আর তেমন কোন জৌলুস নেই। তাছাড়া নিজেরাও এখন প্রাপ্তমনস্ক । কিছুটা ভিন্ন কিছু মস্তিষ্কের জন্য খুব প্রয়োজনও বটে। এই ভিন্ন কিছুই আমাদের বর্তমান সময়ের বেশ কিছু লেখক উপহার দিচ্ছেন সমান তালে। গত দু তিন বছরে বেশ কটি কল্পবিজ্ঞান পড়া হলো। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিশোর পাশা ইমনের 'ভিসটোপিয়া', তানজিরুল ইসলামের 'রুদ্ধতায়', তানজীমের 'মহাশুন্যতায়' ইত্যাদি । তবে সবগুলোকে ছাপিয়ে 'লোলার জগৎ' এক উজ্জ্বল নক��ষত্র।

গল্পের প্রথমেই আপনি পরিচিত হবেন পৃথিবীর জন্য ভয়াবহ এক হুমকির সাথে। বিজ্ঞানীরা সদ্য জানতে পেরেছেন, পৃথিবীকে বাঁচাতে হাতে আছে আর মাত্র ২৬ বছর। কারণ, ২৬ বছর পর পৃথিবী প্রবেশ করবে এক মহাজাগতিক ধুলার মেঘের অভ্যন্তরে যা ডার্ক নেবুলা নামে পরিচিত। এবং এই ডার্ক নেবুলা পেরোতে সময়ের প্রয়োজন ১০ হাজার বছর। অর্থাৎ এই দশ হাজার বছর পৃথিবীতে কোনরকম সূর্যের আলো প্রবেশ করার অবকাশ থাকবে না । ফলশ্রুতিতে এই দশ হাজার বছর পৃথিবী ধরতে গেলে বরফ যুগে প্রবেশ করবে । যেখানে মানুষের টিকে থাকার সম্ভাবনা প্রায় শুন্য।

সমস্যা সমাধানের জন্য হাল ধরেন অখন্ড পৃথিবীর প্রেসিডেন্ট নিকোলাস। বৈজ্ঞানিক কাউন্সিলে জমা পড়তে থাকে দুনিয়ার উদ্ভট সব পাগলাটে প্রজেক্ট। যখন সকল আশা নিভু নিভু ঠিক তখন দূত হয়ে আসেন প্রফেসর আকিরা নাকামুরা। সাথে নিয়ে আসেন "প্রজেক্ট লোলা" নামক এক প্রস্তাব। লোলা হচ্ছে মঙল গ্রহের একটা উপগ্রহ যা আবিষ্কার করেছেন এক বাঙালি জ্যোতির্বিদ হৃদয় হক। এবং এখানে কৃত্রিম মানববসতি স্থাপনসহ টাইম ডাইলুসনের মাধ্যমে সময়কে একশো গুন বৃদ্ধি করা হবে। ফলে পৃথিবীর ২৬ বছরে এখানে অতিক্রান্ত হবে ২৬০০ বছর। এই ২৬০০ বছরে হয়তো কোন প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হবে এই সংকট উৎরানোর জন্য। অপরদিকে চালু করা হয় বাংলাদেশী বিজ্ঞানী আলতাফের 'প্রজেক্ট হেতেব', যার প্রধান কাজ এই মহাবিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার সাথে ইন্টারকানেক্ট করা।

এসব কিছুর শেষাংশে পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা কি পারবে লোলা ও হেতেব প্রজেক্টের মাধ্যমে পৃথিবীকে রক্ষা করতে? নাকি মানুষের চিরাচরিত যা স্বভাব, নিজেরাই নিজেদেরকে ধ্বংস করে ফেলবে? জানতে হলে অবশ্যই ঝটপট সংগ্রহ করে ফেলুন বইটি।

অসাধারণ প্লটের সুদীর্ঘ এই উপন্যাস পড়তে গিয়ে কখনো তাল হারায়নি। পড়ার মাঝে মধ্যে ভাবছি ৩০০ পৃষ্ঠা এসব গল্পের জন্য ঠিক মানানসই না। আরো ৩০০-৪০০ পৃষ্ঠা অনায়াসেই যোগ করা যেত। গল্পের লেখনশৈলী নিয়ে কোন অভিযোগ তো নেই ই বরং আশ্চর্য হয়েছি এই লেখককে আবিষ্কার করতে পেরে (আমার কাছে আবিষ্কার ই বটে)। বিজ্ঞান - রাজনীতি - দর্শন - ধর্ম, কি নেই এই বইতে! পছন্দের চরিত্রগুলোকে যেন ফুটিয়ে তুলেছেন কোন শিল্পীর তুলির (লেখকের কলম) নিখুঁত আচড়ে। বিজ্ঞানের থিওরিগুলো এতো সুন্দর করে উপস্থাপন করাটাও বোধ করি শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন তিনি। গল্পের ডিটেলিং ও চোখে পড়ার মতো।

সামান্য আলোচনা : বইটিতে কোন চরিত্রকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। গুরুত্ব শুধুমাত্র দুটো প্রজেক্টকে ঘিরেই। তাই বেশ কিছু চরিত্র ডানা মেলে ঠিকমতো উড়তে পারেনি। ইপসিলন সভ্যতা সম্পর্কে পরবর্তীতে আরো কিছু জানার আগ্রহ ছিল। আক্ষেপ থাকলো এজন্য । গল্পের টাইমলাইনটা আরেকটু গোছানোর প্রয়োজন খানিকটা ছিল। যদিও এগুলোর কোনটাই মুখ্য সমস্যা নাই। গল্পের জন্য কোন এফেক্টই পড়বে না। তবে বানান ভুল ছিল চোখে পড়ার মতো। বেশ কিছু জায়গায় 'বুঝতে' শব্দটা 'বোঝতে' হয়ে গেছে। অস্বস্তি হচ্ছিল।

প্রচ্ছদ আর প্রোডাকশন নিয়ে বলার কিছু নাই। বাতিঘর বর্তমানে প্রোডাকশনে দারুণ কাজ দেখাচ্ছে।

সহজ কথায়, এটা মোটাদাগে মাথানষ্ট একটা সাইন্স ফিকশন। আপনাদের সবাইকেই আমন্ত্রণ রইলো 'লোলার জগৎ ' এ। ভালো থাকবেন। । আই লাভ ইউ ঠু ।
Profile Image for Riju Ganguly.
Author 37 books1,865 followers
June 1, 2024
মাত্র ছাব্বিশ বছরের কিছু বেশি সময় আছে পৃথিবীর হাতে। তারপরেই তাকে নিয়ে গোটা সৌরজগৎ প্রবেশ করতে চলেছে ডার্ক নেবুলা নামক মহাজাগতিক ধূলিতে পূর্ণ একটি স্থানে। সূর্যের আলো এসে পৌঁছোবে না আর। দশ হাজার বছর ব্যাপী এক তুষারযুগ নেমে আসবে। মানবসভ্যতার সেই ক্ষমতা নেই যা দিয়ে এর মোকাবিলা করা সম্ভব হয়।
তাহলে উপায়?
মানুষের সাধ, সাধ্য, কল্পনা, আর বাঁচার আকুলতার এক চরম পরীক্ষা শুরু হল এই সময় থেকেই। তার কোনোটিতে মহাবিশ্বের নানা কোণে ছড়িয়ে থাকা অন্য প্রাণ তথা বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হল। কোনোটিতে চেষ্টা হল ভূগর্ভস্থ নগর গড়ে তাতে মানবসভ্যতার শেষ কয়েকজন প্রতিনিধিকে আশ্রয় দেওয়ার— যাতে তাদের মাধ্যমে টিকে থাকার একটা চেষ্টা করা যায়। তবে সবচেয়ে বেশি জোর দিয়ে নেওয়া উদ্যোগটিতে মঙ্গলের এক ছোট্ট উপগ্রহ লোলাকে স্থাপন করা হল এক বিশেষ ক্ষেত্রে— যেখানে সময়ের গতি একশো গুণ বেশি। আশা করা হল যে মাঝের এই প্রায় দু'হাজার বছরে সেখানে নিশ্চয় এমন কিছু আবিষ্কার করা হবে, যার সাহায্যে মানবজাতি তথা পৃথিবী রক্ষা পাবে বিপর্যয়ের হাত থেকে।
তারপর? ঠিক কী ঘটল লোলা-তে? অন্য কোনো প্রাণের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টাই বা কোন পরিণামের জন্ম দিল?
শেষ পর্যন্ত বাঁচল কি পৃথিবী?
এই ধরনের মহাকাব্যিক ভিশন ও থিম নিয়ে ইংরেজিতে অনেক বই লেখা হয়েছে। কিন্তু বাংলায়, হার্ড সায়েন্স ও কল্পনার নিপুণ মিশেলে, ওয়ার্ল্ড-বিল্ডিং ও চরিত্রচিত্রণের অনন্য সমন্বয়ে এমন শ্বাসরোধী মৌলিক উপন্যাস, আমার জ্ঞানত, আর একটিও লেখা হয়নি।
একেবারে অকপটে লিখি, এই অ...সা...ধা...র...ণ বইয়ের লেখকের জন্য কোনো প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। এতে তিনি দেখিয়েছেন, কীভাবে দ্রুত উন্নতির আশায় সর্বনাশের পথে চলি আমরা। আবার এ-ও তিনি স্পষ্টভাবে দেখিয়েছেন যে এই সর্বনাশা প্রবণতা আত্মহনন নয়; বরং তা আমাদের দেহতাত্ত্বিক সীমাবদ্ধতারই ফসল— যার জন্য স্রষ্টার বিরুদ্ধে, প্রায় ফ্র্যাংকেনস্টাইনের দানবের মতো করেই, চলেছে আমাদের অনন্ত সংগ্রাম।
কাহিনির শেষটা খানিক 'ডিউস এক্স মাখিনা' ভঙ্গিতে ইচ্ছাপূরণের মতো করে মেলানো হয়েছে বলে আক্ষেপ থেকে গেল। ততক্ষণ অবধি নন-লিনিয়ার ফর্ম্যাটে যে জটিল অথচ বিশ্বাসযোগ্য গল্পটা বলা হয়েছিল, সেটা শেষে কেমন যেন ঘেঁটে দেওয়া হল। হয়তো এর পরেও লেখকের আরও কিছু বলার আছে বলেই তিনি গল্পটা স্বাভাবিক সঞ্চারপথ অনুযায়ী বিন্দুতে লীন না করে দিয়ে উন্মুক্ত রেখে দিলেন।
হয়তো মানবজাতির প্রতিনিধি হয়েই তিনি এই গল্পের শেষে বলতে চাইলেন,
"আমার সকল দুখের প্রদীপ জ্বেলে দিবস গেলে করব নিবেদন—
আমার ব্যথার পূজা হয়নি সমাপন।।"
আমরাও অপেক্ষায় রইলাম সেই মুহূর্তটির জন্য, যখন পূজার হোমানলে উঠবে জ্বলে একে-একে তারা, আকাশ-পানে তারা ছুটবে বাঁধন-হারা, অস্তরবির ছবির সাথে মিলবে আয়োজন, আর সেই ক্ষণেই তাঁর ও মানবের ব্যথার পূজা হবে সমাপন। ততদিন অবধি, ভরসা থাকুক।
বইটির মুদ্রণ-সৌকর্য অসামান্য। বেশ কিছু টাইপো থাকলেও গল্পের গতি ও বুনট তাদের অন্তরায় হতে দেয়নি। এমন একটি জটিল ও বহুমাত্রিক কাহিনি রচনায় যাঁদের সাহায্য পেয়েছেন লেখক, তাঁদের নাম সসম্মানে উল্লিখিত হয়েছে দেখে ভালো লাগল। তারই সঙ্গে লেখক যদি এই বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা পড়তে আগ্রহী পাঠকদের ক'টি নন-ফিকশন বইয়েরও সন্ধান দিতেন, বড়ো ভালো হত।
শেষে বলি, এই উপন্যাস শুধু গল্প নয়; এ যেন মানবেরই মহাযাত্রার এক প্রতীক— যা চলে, জ্বলে, কিন্তু শেষ হতে চায় না কোনোমতেই। তাই, বাংলা মৌলিক কল্পবিজ্ঞানের অনুরাগী হলে এই বইটি আপনাকে পড়তেই হবে।
Profile Image for Samiur Rashid Abir.
218 reviews44 followers
September 30, 2022
দুর্দান্ত একখানা বই।
বাংলায় এত ভাল মৌলিক সায়েন্স ফিকশন আছে তা জানতাম না দেখেই আফসোস লাগতেছে। অর্ক ভাই আর হারুন ভাইয়ের বদৌলতেই বইটার খোঁজ পাইলাম।

তথাকথিত বাংলা সায়েন্স ফিকশন যারা পড়েন তাদের সবার হাতেখড়ি জাফর ইকবালের মাধ্যমে।
আমারও এর ব্যতিক্রম ঘটে নাই। কিন্তু কাহিনীগুলোর ধাচ আর ঘরানা একই ছিল প্রতিবার। পরে ক্লাস এইটের জেএসসি পরীক্ষার বন্ধে হুমায়ুন আহমেদের সায়েন্স ফিকশন সমগ্র টা কিনে ফিলি। হুমায়ূন আহমেদ বাংলা সায়েন্স ফিকশনে বেশ ভাল কাজ করছেন। এছাড়া দীপেন ভট্টাচার্য এর ও বেশ ভাল লেখা আছে। কিন্তু উনার সাথে পরিচয় একদম সাম্প্রতিককালে। এনাদের কাজ ছাড়া ভাল সায়েন্স ফিকশন আছে কিনা আমি সিউর ছিলাম না। পরেই খোঁজ পেলাম এই বইটার।

লোলার জগৎ বইটা আমি আগে দেখলেও এড়ায়ে গেছি জাস্ট নামটা পছন্দ হয় নাই দেখে। তবে নাম টা আমার পছন্দ ন�� হলেও কাহিনীর ন্যারেশন বেশ পছন্দ হইছে। স্লো মনে হয় নাই কোথাও। বেশি ভাল লেগেছে সায়েন্টিফিক ডিটেইলিং গুলা। লেখক যে বেশ পড়াশোনা আর চিন্তাভাবনা করে যত্নের সাথে লিখেছেন তা নিয়ে সন্দেহ নাই। কাহিনীর সংযোগ গুলো বেশ ভাল ছিল। যার শুরুতেই অন্তিম পরিণতি হতে পারত সেই পুরো কাহিনীর শেষ টেনে এনেছে।

শেষে বলতে চাই কনসেপ্ট টা নিয়ে। আমার কাছে কনসেপ্ট আর প্লটের কারণেই বইটা দুর্দান্ত লেগেছে। বইয়ের সাথে গত বছরের অন্যতম সেরা সায়েন্স ফিকশন "প্রজেক্ট হেইল ম্যারি" এর কিঞ্চিৎ মিল আছে। তবে দুইটা ভিন্ন ঘরানার লেখা। ভিন্ন আঙ্গিকে সুন্দর লেখা। রেকমেন্ডেড।
Profile Image for মোহতাসিম সিফাত.
180 reviews50 followers
November 7, 2024
সেরা একটা রোলার কোস্টার রাইড। দীপেন ভট্টাচার্য এক সিরিয়ালে পড়ার পর মনে হয়েছে যে আর কোনো বাংলা কল্পবিজ্ঞানের বই মনঃপুত হবে না। কিন্তু এটা পড়ে ভুল ভাঙলো। বড়ো কলেবরের বই হলেও বেশ গোছানো আর চমকপ্রদ।
বিজ্ঞানের কিছু অনাবিষ্কৃত থিওরির সুচিন্তিত প্রয়োগ। আজ থেকে কিছু শতাব্দী পরের পৃথিবী। সেখানে সারা বিশ্বে একজন মাত্র রাষ্ট্রপতি। মানুষ বড্ড সুশৃঙ্খল। যন্ত্রের সুষম ব্যবহার, প্রকৃতির ছোঁয়া অনেক বেশি। মোটামুটি ইউটোপিয়া বলা যায়। এই সময়ে হঠাৎ এক মহাজাগতিক নেবুলা ধেয়ে আসে সৌরজগতের দিকে। হাতে সময় মাত্র ছাব্বিশ বছর, এরই মাঝে কোনো উন্নত প্রযুক্তি না বের করা গেলে, পৃথিবী নিমজ্জিত হবে দশ হাজার বছরের বরফ যুগে, নিশ্চিহ্ন হবে মানুষ সহ সকল প্রাণী।
তো পৃথিবীর সকল বিজ্ঞানী মিলে একযোগে কাজ শুরু করেন এর থেকে পরিত্রাণের উপায় খুঁজতে। মানুষ কি শেষমেষ সক্ষম হবে নিজেদের বাঁচাতে?

মোটাদাগে এই যদি হয় কাহিনীর skeleton, তবে শুধু এটুকুই বইয়ের ভালো লাগার কারণ নয়। বইতে বোঝানো হয়েছে, মানুষ কেনো মানুষ। যতই সভ্যতার উন্নতি অগ্রগতি হোক, মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি তাকে বারবার রিপুর কাছে পর্যুদস্ত করে। আর এই ব্যাপারটা লেখক খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।

হারুন ভাইয়ের কথার সাথে আমিও একমত। ২৭৩ পাতায় বই শেষ হলে সুন্দর হতো। কি আছে এই পাতায়?

"মানুষ তার জ্ঞানের প্রান্তিক সীমায় পৌঁছে গেছে। এর চেয়ে বেশি জ্ঞান অর্জন করা তার পক্ষে সম্ভব নয়, আর জ্ঞানের প্রান্তিক সীমার কাছাকাছি পৌঁছে মানুষ আত্মধ্বংসে মত্ত হয়ে উঠে। প্রজেক্ট লোলা ব্যর্থ হয়েছে।"
"মানুষ প্রকৃতিবিরোধী সৃষ্টি। তার ধ্বংসই প্রকৃতির স্বস্তির একমাত্র পথ"

মানুষ কি কখনো এই অবস্থান থেকে মুক্তি পাবে?
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews237 followers
August 17, 2024
পৃথিবী আছে মহাবিপদের মাঝে। সময় বাকি মাত্র পঁচিশ বছর। এরপর সৌরজগৎ প্রবেশ করবে ডার্ক নেবুলা নামক এক ধূলিঝড়ের ভিতর। যার প্রভাবে সূর্যের আলো থেকে বঞ্চিত হয়ে পৃথিবী প্রবেশ করবে বরফ যুগে। জ্ঞান বিজ্ঞানে উন্নত মনুষ্য জগতের কী তাহলে এই পরিণতি? শীতে, ঠান্ডায় ধুঁকে ধুঁকে মরে যাওয়া? মানুষ চিরকাল আশাবাদী। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লড়াই করে যাওয়া তার স্বভাব। আবার, মানুষের আত্মবিধ্বংসী স্বভাবটাকেও তো অস্বীকার করা যায় না। টিক টিক করে সময় যখন পঁচিশ বছরের সেই ডেডলাইনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখন বিশ্বজুড়ে বড় একটা প্রশ্ন বেশ জোরেসোরে উত্থাপিত হতে থাকে, এখন কী করবে মানুষ?


খুব চমৎকার একটা বই বলাইবাহূল্য। গতি ছিল বুলেট ট্রেনের চেয়েও তীব্র। কারণ দুইটা (নাকি তিনটা?) টাইম লাইন ধরতে হয়েছে। যার কারণে চরিত্রগুলো ডালপালা মেলার আগেই দেখা গেছে আরেক প্রেক্ষাপটে হাজির হয়ে গেছি। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়, বইটার দুইটা পার্ট কিংবা ট্রিলজি টাইপ কিছু হলে বেশি ভালো হতো। সাবপ্লটগুলোও এত ইন্টারেস্টিং ছিলো, এই টপিকটা নিয়েই অনেকখানি অংশ লিখে ফেলা যায়। ওহ! আরেকটা ব্যাপার। অসঙ্গতি বলা ভালো হবে কী না বুঝতেসি না... কিছু কিছু ঘটনা আগে পরে হয়ে গেছে। কন্টিনিউয়িটি ছিলো না। এইটা একটু কেমন কেমন লেগেছে। এন্ডিংটা সুন্দর, কিন্তু ২৭৩ পেজে শেষ হয়ে গেলে মনে হয় আরও বেশি ভালো লাগতো। যাই হোক, মোহাম্মদ জাফর ইকবাল কিংবা হুমায়ুন আহমেদের সাই-ফাই এর পর সাই-ফাই পড়ায় বিশাল একটা বিরতি ছিলো। লেখকের 'ও টু' পড়লাম, বেশ ভাল্লাগসে। লোলার জগতের অনেক প্রশংসা শুনে পড়লাম, আশাহত হই নাই, ভাল্লাগসে। লেখকের অন্য বই পড়ার আগ্রহ রইল আর লেখকের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ❤️
Profile Image for Rana Khan.
106 reviews
April 24, 2021
হঠাৎ করে কোথা থেকে উঠে আসলেন এই মহামান্য লেখক?

কত বছর ধরে অপেক্ষায় ছিলাম এমন এক বাংলা ভাষার মৌলিক সায়েন্স ফিকশনের জন্য....... আর এতো সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা কিভাবে সম্ভব তা প্রায় দুর্বোধ্য লাগে আমার কাছে.... এমন করে হঠাৎ একজন সাইফাই লেখক পেয়ে যাব তা কখনোই ভাবিনি...... আমি এতোটাই অভিভূত হয়ে গেছিলাম উপন্যাসটা পড়ে মনে মনে ভেবে রেখেছিলাম নাহ্ এই বই সম্পর্কে গুডরিডস্ এ কিছু লেখা আমার দ্বারা সম্ভব না...... অনেকই মনে করবেন বানিয়ে বানিয়ে বলছি... তবে বলে রাখি, নাহ্ আমি ওই ভাড়া করা মিষ্টি মিষ্টি কথা লিখে রিভিউদাতাদের ভিতরের কেউ না......

এই রাইটার এর যদি রাইটার্স ব্লক না হয় আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি বাংলা সাহিত্য অচিরেই নতুন কিছু পাচ্ছে...... অনেক ধন্যবাদ এতো মেধা খাটিয়ে এতো পরিশ্রম করে এমন একটা কিছু আমাকে পড়তে দেওয়ার জন্য মহামান্য লেখক.....
"লেখকের জন্য অসীম শুভকামনা" 🖤❤
Profile Image for Zabir Rafy.
312 reviews10 followers
February 12, 2025
বইঃ লোলার জগৎ
লেখকঃ মোহাম্মদ সাইফূল ইসলাম

দুর্দান্ত একটি বই পড়ালাম।

বইটা একই সাথে সায়েন্স ফিকশন এবং কোনো থ্রিলারের থেকে কম যায় না।

ক্রাইম,সাসপেন্স, থ্রিল, ভালোভাসা, রাজনীতি কোনো কিছুর কমতি নেই। আর সায়েন্স তো আছেই। সবমিলিয়ে একটা পারফেক্ট কম্বো।

এই বইটা পড়ার আগে থেকেই সাইফূল ভাইয়ের লেখার সাথে পরিচিত আমি। কল্পবিশ্বের অনলাইন ভার্সনে পড়েছি তার একাধিক নভেলা। সেই হিসেবে জানতাম দারুণ একটি বই হতে চলেছে লোলার জগৎ।

মঙ্গলের একটা উপগ্রহ লোলা। টাইম ডিলুশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে পৃথিবীর থেকে একশ গুণ দ্রুতগতিতে চলা এক মানব সভ্যতার গোড়াপত্তন হয়েছে সেখানে। উদ্দেশ্য আসন্ন মহাবিপর্যয় থেকে পৃথিবীকে বাঁচানো। প্রজেক্ট লোলা সফল হলে বেঁচে যাবে পৃথিবীর মানবসভ্যতা।

পৃথিবীর ধ্বংস হবে কেন? সেই প্রশ্নের উত্তর বেশ ভালোভাবেই দিয়েছেন লেখক।

জম্বি এপোক্যালিপ্স, কোনো বৃহৎ উল্কার সাথে সংঘর্ষ, পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারীর প্রতাপ, পারমাণবিক যুদ্ধ ইত্যাদি এড়িয়ে সাইফূল ভাই পৃথিবী ধবংসের চমৎকার একটি কারণ দেখিয়েছেন। সেই কারণটি জানার জন্য পড়তে হবে বইটি।

ফিজিক্স, কোয়ান্টাম ফিজিক্স, ক্ষেতবিশেষে জেনেটিক্স আর সমাজবিজ্ঞানের তত্ত্বের বেশ ভালো ব্লেন্ড করেছেন লেখক। বেশ ঝরঝরে উপস্থাপনা করেছেন। বিজ্ঞানের বাইরের যে-কেউও বুঝতে পারবেন থিওরি গুলো।

লেখনি বেশ পরিষ্কার। একটানা পড়ে যাওয়া যায়। কোথাও ঝুলে পড়েনি লেখা। একরকম সুষম গতিতেই এগিয়েছে গল্প।

খুব বেশি সায়েন্স ফিকশন না পড়ায় এর চেয়ে বেশি বিশ্লেষণ যেতে চাই না।
বইটি পড়ার রেকমেন্ডশন থাকলো।
Profile Image for Wasim Mahmud.
357 reviews29 followers
October 1, 2022
পৃথিবীর শেষ সময় ঘনিয়ে আসছে। মহাজাগতিক ধূলো নেবুলা-‌‌এক্স ছুটে আসছে ভূ পানে। হাতে সময় মাত্র ছাব্বিশ বছর। এই সমস্যা সমাধানে প্রেসিডেন্ট‌ নিকোলাস আইখ তাঁর উচ্চ মেধা সম্পন্ন বিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী, সামরিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে তৈরি করেন একটি পরিকল্পনা।

সৌরজগতের তুলনামূলক নতুন আবিষ্কৃত উপগ্রহ লোলা। এক ঝাঁক সবচেয়ে মেধাবী মানবসন্তানকে লোলার জগতে পাঠিয়ে দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। সময়ের শ্রেষ্ঠ পদার্থবিদ আকিরা নাকামুরার উদ্ভাবনী বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে কি শেষ রক্ষা হবে নীল গ্রহের?

মোহাম্মদ সাইফূল ইসলাম এমন এক বৈজ্ঞানিক কল্প‌উপন্যাস লিখেছেন যেখানে 'গল্পের গরু গাছে উঠেনি'। লেখকের পরিমিতিবোধ, মিনিমালিস্ট এপ্রোচ এবং সর্বোপরি দ্রুত গতির অতীব সুন্দর গল্পকথনে মুগ্ধ হয়েছি। নভেলে সাবপ্লট অনেক। তবে উপন্যাস শেষে সবগুলো মূল প্লটের সাথে সমান্তরালে গিয়ে ন্যায়বিচার করেছে। যদিও স্টোরি প্লট ড্রিভেন, তারপর‌ও প্রতিটি চরিত্রের সংক্ষেপে যে চিত্রায়ন করেছেন লেখক তা উচ্চ প্রশংসার যোগ্য।

সায়েন্স ফিকশনে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার উপর বাড়াবাড়ি ফোকাস না রেখে শক্তিশালী লেখনীর মাধ্যমে সাইফূল ইতিহাসজুড়ে মানব চরিত্রের যে সামাজিক এবং মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা তা নিদারুন ভাবে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। প্রাঞ্জল ভাষায় মানুষের রাজনৈতিক অভিলাষ, ব্যক্তিগত স্ববিরোধীতা এবং ঐতিহাসিক পুনরাবৃত্তির সার্থক প্রয়োগ ঘটিয়েছেন লেখক স্টোরিটেলিং এর মাধ্যমে।

বিগত কয়েক বছরে আমার পড়া সেরা সায়েন্স ফিকশন মনে হয় এটি। বিভিন্ন কঠিন বৈজ্ঞানিক টার্মের কাটখোট্টা বর্ণনায় না গিয়ে সহজ ভাষায় মানবজীবনের গল্প লিখেছেন মোহাম্মদ সাইফূল ইসলাম। সেই গল্প যত ভবিষ্যতের হোক না কেন। মুদ্রণপ্রমাদ বা প্রচ্ছদ নিয়ে মাথা না ঘামানো আমি অবশ্য ব‌ইটির বানানের অবস্থা এবং প্রচ্ছদে খানিকটা ডিস্টার্ভড হয়েছি। তবে আমার মতে কম আলোচিত এই গ্রন্থটি মনে হয় একসময় রূপান্তরিত হবে ক্লাসিকে।

পৃথিবী কি ঢেকে যাবে অন্ধকার, বরফ এবং হৃদস্পন্দন হীন অবয়বে? লোলার জগৎ কি নিজেদের মধ্যকার সকল নৈরাজ্যের অবসান ঘটিয়ে পৃথিবীকে রক্ষা করতে পারবে?

প্রতিটি মানুষ‌ই অনন্য। এক একজন মানুষ যেন এক একটি মহাবিশ্ব। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল মহাবিশ্ব অথবা মাল্টিভার্সের মত মানুষের মনে‌ ধরে রাখা আশাও অসীম।

পাঠ প্রতিক্রিয়া

লোলার জগৎ

লেখক : মোহাম্মদ সাইফূল ইসলাম

প্রথম প্রকাশ : এপ্রিল ২০২১

প্রকাশনা : বাতিঘর প্রকাশনী

প্রচ্ছদ : কৌশিক জামান

জনরা : সায়েন্স ফিকশন, সামাজিক উপন্যাস।

রিভিউয়ার : ওয়াসিম হাসান মাহমুদ
Profile Image for Mohaiminul Bappy.
Author 11 books124 followers
April 12, 2021
বাংলার ফাউন্ডেশন বলা চলে। এত সুবৃহৎ পরিসরে কম সাইফাই-ই লেখা হয়েছে, সম্ভবত হয়নি, গল্পের ব্যপ্তি ও কাহিনী বিচারে। প্লট দারুণ, এক্সিকিউশান দারুণ। বর্ণনায় আরেকটু প্রাঞ্জলতা আসবে সন্দেহ নেই। মোটের উপর দুর্দান্ত একটা বই।
Profile Image for পটের দুধের কমরেড.
209 reviews25 followers
July 28, 2023
প্রসংশনীয় প্লট৷ দূর্বার গতি৷ আর কিছুই বিশেষ ভালো লাগে নি। এক। সংলাপ সুবিধের না, মনে হলো বিদেশী বইয়ের বাংলা অনুবাদ আওড়াচ্ছি৷ দুই। ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্টের জায়গা একবারে ফাঁকা (প্লটের ইম্প্যাক্ট বোধহয়!)৷
Profile Image for Al Hamza Mridha.
5 reviews
February 25, 2022
অসাধারণ একটা বই ছিল। লেখক এতগুলো গল্পকে যে কত সুন্দরভাবে একটা সুতোয় গেথেছেন তার উদাহরণ এই গল্প।
গল্পটা হলো মানুষকে শেষ পর্যন্ত টিকিয়ে রাখার যুদ্ধ। একটা বিপর্যয় থেকে মানব সভ্যতাকে বাঁচাতে মানুষ কত দূর যেতে পারে সেটা লেখক দারুন ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন এই গল্পে।
Profile Image for Zahidul.
450 reviews95 followers
September 19, 2021
“Well, there are times when one would like to hang the whole human race and finish the farce.”― Mark Twain
-
লোলার জগৎ
-
নিকোলাস আইখ, পৃথিবীর বর্তমান সময়কালের কয়েকশো বছর পরের এক প্রেসিডেন্ট। এই সময়কালে পুরো পৃথিবীই একটি প্রেসিডেন্টের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। সেই সময়ে হঠাৎ পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করে আগামী ২৬ বছর পরে পৃথিবী এক ভয়াবহ নেবুলা তথা মহাজাগতিক মেঘের ধুলোর ভেতরে প্রবেশ করবে। আর সেই মহাজাগতিক মেঘের ধুলোয় প্রবেশ করার পরের দশ হাজার বছর পৃথিবী আবারো বরফ যুগে ফিরে যাবে এবং তার পরিণতি হবে ভয়াবহ।
-
পৃথিবীর এই পরিণতি রুখতে সে সময়ের সরকার নানা ধরণের পদক্ষেপ নেয়া শুরু করে। এর ভেতরে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে প্রজেক্ট লোলা আর প্রজেক্ট হেতেব। এখন প্রজেক্ট লোলা আর প্রজেক্ট হেতেব আসলে কী ধরনের প্রজেক্ট? "লোলার জগৎ" বলতে কোন ধরনের জগৎ বোঝানো হচ্ছে? এ সকল প্রজেক্টের মাধ্যমে পৃথিবীর মানুষকে কী রক্ষা করা যাবে শেষ পর্যন্ত? তা জানার জন্য পড়তে হবে লেখক মোহাম্মদ সাইফূল ইসলামের সায়েন্স ফিকশন ঘরানার উপন্যাস "লোলার জগৎ"।
-
"লোলার জগৎ" মূলত বেশ বড় কলেবরের একটি সায়েন্স ফিকশন উপন্যাস। বিশাল পটভূমির গল্প হবার কারণে প্রথম থেকেই এতগুলো প্লটকে লেখক কীভাবে কাহিনির সাথে এক সুতোয় গাঁথেন এই ব্যাপারে আগ্রহ নিয়ে পড়ছিলাম। বইটি শেষ করার পরে অবশ্য প্রতিটি প্লট এবং সাবপ্লটেরই গুরুত্ব বোঝা গিয়েছে। সায়েন্স ফিকশনের প্রায় সব ধরনের কমন ট্রোপ ব্যবহার করায় সায়েন্স ফিকশন পড়ুয়ারা বইয়ের গদ্যশৈলীর সাথে বেশি ভালোভাবে কানেক্ট করতে পারবেন বলে মনে হয়েছে।
-
"লোলার জগৎ" বইতে চরিত্রগুলোর থেকে প্লটটি মূল ফোকাসে থাকায় এখানে ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্টের স্থান ছিলো খুবই কম। তবে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস আইখ এবং সমাজ বিজ্ঞানী পিপারো কোস্ট্রা চরিত্র দুইটি বেশ ইন্টারেস্টিং ছিলো পুরো বই জুড়ে। সায়েন্স ফিকশন ধর্মী বই হওয়ায় কিছু ফিউচারিস্টিক তত্ত্ব এবং যন্ত্রপাতির বর্ণনা ছিলো যা পড়ার সময় বুঝতে আমার তেমন সমস্যা হয়নি, যারা এ ধরনের গল্প পড়তে অভ্যস্ত নয় তাদের অবশ্য সেই অধ্যায়গুলোয় কিছুটা সমস্যা হতে পারে। পুরো বইতে আমার প্রিয় এক সাই ফাই সিরিজ 'ফাউন্ডেশন" এর কিছু জায়গায় প্যারালাল এবং কিছু জায়গায় সরাসরি ভাইব পেলাম, এই ব্যপারটাও বেশ ভালোই লাগলো। পুরো বইতে সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে নানা ধরনের দর্শনতত্ত্বের প্রয়োগের ব্যপারটাও মোটামুটি বিশ্বাসযোগ্য লাগলো।
-
"লোলার জগৎ" বইয়ের প্রোডাকশনের দিকে তাকালে মুদ্রিত মূল্য অনুসারে কাগজ, বাঁধাই এইগুলো বেশ ভালোভাবেই করা হয়েছে। দুঃখজনকভাবে প্রচ্ছদ কাহিনির সাথে তেমন খাপ খায়নি বলে মনে হলো। বইতে বেশ ভালো পরিমাণেই প্রিন্টিং মিস্টেক আর টাইপো ছিল, এমনও এক প্যারা দেখলাম যেখানে একই চরিত্রকে তিনবার তিন ভাবে লেখা হয়েছে। পরবর্তী সংস্করণে এসকল প্রিন্টিং মিস্টেক শুধরে নিয়ে বইটি আরো ভালোভাবে সম্পাদিত হবে এই আশা করছি।
-
এক কথায়, "লোলার জগৎ" বইটি পড়ে অনেকদিন পরে বাংলা ভাষায় একটি পরিপূর্ণ সায়েন্স ফিকশন উপন্যাস পড়লাম বলে মনে হলো। তাই যাদের বিশাল পটভূমির সায়েন্স ফিকশন উপন্যাস পড়তে পছন্দ তাদের জন্য বইটা সাজেস্ট করা থাকলো, বিশেষ করে ফাউন্ডেশন টাইপ সিরিজ যাদের প্রিয় তাদের জন্য হাইলি রিকমেন্ডেড। লেখকের ���রবর্তী বইয়ের জন্য শুভকামনা রইলো।
Profile Image for Didarul Islam.
137 reviews1 follower
December 4, 2021
পৃথিবীর জন-জীবন সামগ্রিকভাবে থমকে গেল, যখন অনাগত ভবিষ্যতের ধ্বংসাত্মক মুহূর্তের খবর ছড়িয়ে পড়ল চারিদিক। মাত্র ২৬ বছর পরে সৌরজগৎ প্রবেশ করতে চলেছে মহাজাগতিক মেঘের রাজ্যে। তখ��� সমগ্র সৌরজগৎ কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকবে, সূর্য থেকে পৌঁছাবে না কোনো আলো। ফলে প্রারম্ভ ঘটবে প্রায় দশ হাজার বছর চলমান থাকা বরফ যুগের। প্রথম তিন বছরের নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে ৯৯ ভাগ মানুষ!
আগত সমস্যার সমাধান নিয়ে বিশ্বের প্রধান ব্যক্তিত্বরা চরম।উদ্বিগ্ন। বর্তমান প্রযুক্তি দিয়ে এই সমস্যার সমাধান বের করা অসম্ভব। সবার ভেঙ্গে পড়ার মুহূর্তে প্রফেসর আকিরা সিদ্ধান্ত নিলেন–মঙ্গলের উপগ্রহ লোলায় স্থাপন করা হবে বসতি, সেখানে বাড়ানো হবে সময়ের গতি। ফলে লোলার জগতে সময় চলবে পৃথিবীর থেকে একশগুণ দ্রুত। লোলার বাসিন্দারা কি পারবে এই সময়ে মানব প্রজাতির অনিবার্য ধ্বংস ঠেকাতে?
শেষ করলাম মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের 'লোলার জগৎ'। একটা অসাধারণ যাত্রা ছিল বটে। গল্পের প্লট শুরু থেকেই বেশ আগ্রহ জাগানিয়া ছিল। কোনো বর্ণনা বাহুল্য ছিল না। মেদহীন থাকায় উত্তেজনার পারদ বইয়ের কোনো অংশে কম ছিল না। অনেক জটিল ব্যাপার-স্যাপার থাকায় অনেক প্লটহোল তৈরির সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু লেখক দক্ষতার সাথে সব সামলে নিয়েছেন। শুরু থেকে শেষ অবধি বৈজ্ঞানিক তথ্য এবং কাল্পনিক প্রযুক্তি-জ্ঞানের মিশেলে গল্পকে মোটেও অযৌক্তিক লাগেনি, বরং প্রতিটা সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান প্রচুর চিন্তার খোরাক জুগিয়েছিল।
গল্পের বড় প্রভাব ছিল মঙ্গলের উপগ্রহ লোলাকে নিয়ে। সেখানে বৈজ্ঞানিকরা সৌরজগতের আগত সমস্যার সমাধান নিয়ে কাজ করছিল। হুট করে পৃথিবী হতে লোলায় মানুষের বসতি স্থাপন, ফলে সৃষ্ট সমস্যা এবং লোলার পরিণতি একদম বাস্তবসম্মত ছিল–বাস্তব ইতিহাস ও দর্শনের প্রতিবিম্ব যেন। লোলায় সিক্রেট গ্রুপের কার্যকালাপ একটা 'ফাউন্ডেশন' টাইপ ভাইব আনছিল, যা বেশ উপভোগ করেছি। এক মলাটে এত বিস্তৃত পরিসরের প্লট পাব তা আশা করিনি। আর গল্পের প্রাণশক্তি হচ্ছে এণ্ডিংটা, যা এক কথায় ‘পার্ফেক্ট’ ছিল। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত উৎসাহী হয়ে পড়ে গেছি, লেখকের পরিশ্রম ফুটে উঠছিল প্রতিটা পাতায়। এ বছরে পড়া সেরা মৌলিকগুলোর মাঝে 'লোলার জগৎ'–কে রাখব, অনেক দিন বাদে অসাধারণ একটা সাই-ফাই শেষ করলাম।

****কিছু ব্যাপার যা আমার মনে প্রশ্ন জাগাল*****
****_স্পয়লার এলার্ট_****
( নিচের অংশ যারা বইটি পড়েছেন তারাই কেবল পড়বেন)

১) যেহেতু লোলার সময় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশ দ্রুতগতিতে ছুটছিল, তার মানে লোলা নিজ অক্ষকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গতিতে ছুটছিল। এখন, এতে মঙ্গল গ্রহ বা অন্য উপগ্রহগুলোর মাঝে কোনো প্রভাব সৃষ্টি হতো কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন জেগেছিল মনে। আবার লোলা নিজ অক্ষে দ্রুত ঘুরলেও মঙ্গল গ্রহকে স্বাভাবিক গতিতে প্রদক্ষিণ করছিল। এতে লোলায় এক বছর পূর্ণ হতে অনেক সময় লাগার কথা, ফলে ঋতু পরিবর্তন বা জলবায়ুর ব্যাপারটা বললে পরিপূর্ণ লাগত। (ব্যক্তিগত মতামত। অবশ্য এটা নিয়ে না বললেও কাহিনীতে প্রভাব ফেলেনি)
২) সিগমা সভ্যতার দুটি গোলকসদৃশ স্পেসশিপ যখন পৃথিবীর দিকে আসে, তখন পৃথিবী থেকে সিলিকন বেজড ওমিক্রন সভ্যতাকে সেরা বলায় একটি স্পেসশিপ তাদের দিকে ধাবিত হতে থাকে। পরে কী পরিণতি হয় তা লেখক আর বলেননি, বললে বোধহয় ভালো হতো। তাছাড়া ওমিক্রন সভ্যতা অবশ্যই শত্রু থেকে জানতে পারত–পৃথিবীই তাদেরকে আক্রমন করার পথ দেখিয়েছে। তাই পৃথিবীর প্রতি ওমিক্রন সভ্যতারও ধ্বংসাত্মক হয়ে যুদ্ধ ঘোষণার কথা।
Profile Image for Jheelam Nodie.
314 reviews12 followers
March 9, 2022
অসাধারণ। তবে কিছু কিছু জায়গায় বাক্য, বানান আর সভ্যতার নামে ভুল ছিলো। নাইলে অসাধারণ। অনেক দিন পরে ১০০% সাইন্স ফিকশন পড়লাম, যেখানে সাইন্স এবং ফিকশন দুটোই ঠিকঠাক পরিমানে আছে।
Profile Image for Minhaz  Joester .
280 reviews13 followers
May 17, 2021
“মানুষ প্রকৃতি-বিরোধী সৃষ্টি। তার ধ্বংস‌ই প্রকৃতির স্বস্তির একমাত্র পথ” 




কাহিনী সংক্ষেপ : 


আর মাত্র ২৬ বছর পর সৌরজগৎ প্রবেশ করতে যাচ্ছে নেবুলা-এক্স নামের এক মহাজাগতিক ধূলোর মেঘে । বিজ্ঞান কাউন্সিল থেকে এই খবর আসে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস আইখের কাছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন এই মেঘের স্থায়িত্বকাল ১০ হাজার বছর এবং প্রথম ৩ বছরেই ৯৯ শতাংশ মানবসভ্যতা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এই অবস্থা থেকে রেহাই পেতে বিজ্ঞানীরা “প্রজেক্ট লোলা” নামের একটি প্রকল্প হাতে নেন। মঙ্গলের চাঁদ লোলায় পাঁচ হাজার জনকে পাঠানো হয় তাদের সকলেই মেধাবী বিজ্ঞানী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার,দার্শনিক এবং সাহিত্যিক। এভাবেই শুরু করা হয় এক নতুন মানবসভ্যতা তাদের দেয়া হয় সকল উন্নত প্রযুক্তি। তাদের সময় পৃথিবীর সময়ের তুলনায় ১০০ বেশি দ্রুত করে দেয়া হয় । যাতে এই ২,৬০০ বছরে বিজ্ঞানকে উন্নত উন্নত করে পৃথিবীবাসিকে আসন্ন প্রলয় থেকে বাঁচাতে পারে। শেষ পর্যন্ত কি সত্যিই সফল হয়েছিল প্রজেক্ট লোলা? জানতে হলে পড়তে হবে “লোলার জগৎ”।



ব্যক্তিগত মতামত :


 প্রথমে লেখক বর্ণনাভঙ্গির প্রশংসা করতে হয় দারুণ ভাবে পরিস্থিতি বর্ণনা করেছেন, রোলার কোস্টার গতির না হলেও কাহিনী কোথাও ঝুলে যায়নি। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এক মূহুর্তের জন্য‌ও বোর হয়নি । বিস্তৃত প্লট এবং কঠিন কঠিন বিষয় গুলো সাবলীল ভাবে ব্যাখা করেছেন। লেখকের গভীর দর্শন ব‌ইটা ভালো লাগার অন্যতম কারণ। পড়ার সময় বার বার হলিউড সিনেমার মতো ফিল পাচ্ছিলাম। ব‌ইটা আরো ভালোভাবে সম্পাদনা করা উচিত ছিল প্রচুর বানান ভুল আর টাইপিং মিস্টেক ছিল। সাইন্স ফিকশন লাভারদের জন্য রেকমেন্ডেড। 


ব‌ই: লোলার জগৎ

লেখক: মোমাম্মদ সাইফূল ইসলাম

মূল্য: ৩৫০৳

পৃষ্ঠা: ৩০৪

রেটিং: ৪.৫/৫
Profile Image for Asif.
40 reviews34 followers
March 20, 2022
মহাজাগতিক ঘূর্ণনের পথে পৃথিবীর এক মহাবিপর্যয়ে মানুষের পৃথিবীকে বাঁচানোর পক্ষান্তরে মানবজাতিকে বাঁচানোর এক গল্প। দর্শন, বিজ্ঞান, যুদ্ধ, মানবিকটা, বিশ্বাসঘাতকটা সবকিছু মিলে এক মানবজাতিকে টিকিয়ে রাখার উপাখ্যান। বেশ কিছু জায়গায় বাক্য, বানান আর সভ্যতার নামে ভুল ছিলো আর লোলা আর পৃথিবীর বিভিন্ন টাইমলাইনের অধ্যায়গুলো আরেকটু সাজান থাকলে ভাল হত। হার্ড সাইন্স ফিকশন হিসেবে বইটা ৪ তারা পাওয়ার যোগ্য আমার তরফ থেকে।
Profile Image for Avirup Chanda.
7 reviews2 followers
July 11, 2024
লক্ষ বছরের মানব সভ্যতার ইতিহাসকে প্রত্যক্ষ করতে হয়েছে বহুবিধ বাধা বিপত্তি। কখনো তা দেখা দিয়েছে মারণ ব্যাধি রূপে, কখনো এসেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, আবার কখনো বিপদ এসেছে বাইরে থেকে, অর্থাৎ মহাজাগতিক দুর্বিপাক... উল্কা, ধূমকেতুর আক্রমণ ইত্যাদি। এতদ বাধা সত্ত্বেও প্রাণের প্রদীপ কিন্তু এই ধরাধাম থেকে মুছে যায়নি...উপরন্তু, যোগ্যতমরা বিবর্তনকে সাথে করে পৌঁছে যাবার চেষ্টা করেছে পরম ব্রহ্মের কাছে।
আচ্ছা, ধরা যাক, সকল কাঁটা ধন্য করে সৃষ্টির বরপুত্ররা পৌঁছে গেল সেই পরম সত্যে.... তারপর??

লোলার জগৎ পড়ে শেষ করার পর আমার মনে সেই প্রশ্নই বার বার হানা দিচ্ছে। সম্ভাব্য কিছু সিচুয়েশন লেখক তার লেখায় তুলে ধরেছেন ঠিকই, কিন্তু এর বাইরেও লোলার জগৎ কিন্তু আরও অনেক কিছু ভাবায়। অনে�� অস্বস্তিজনক সম্ভাবনার ঝলক দেখিয়ে দিয়ে যায়। লেখক ও তার সৃষ্টির সার্থকতা এখানেই...

যদিও, কাহিনী পুরোদমে এক গতিশীল ভবিষ্যৎ সময়ের রাজনৈতিক আখ্যান (অন্তত আমার তাই মনে হয়)... কিন্তু, এর ঘটনা প্রবাহ কিন্তু আঙ্গুল তোলে মানব সভ্যতার চিরাচরিত আচরণ, নৈতিকতা, মূল্যবোধের দিকেই... বিশেষ করে যখন সে অতিক্রান্ত হয় কোনো অস্তিত্বের সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে...

যদিও, কাহিনীর অনেক লজিক, অনেক সিনারিও আমার মানতে অসুবিধা হয়েছে, বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চরিত্রদের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া আমার মনঃপুত হয়নি। কিন্তু, ভাবা প্র্যাকটিস করতে বাধ্য করেছে...অনেক আলোচনা, চর্চা ও চিন্তার অবকাশ রেখে গেছে লোলার জগৎ।
Profile Image for Shamim Ehsan.
77 reviews3 followers
June 30, 2021
হুমায়ূন আহমেদ ও জাফর স্যারের বাইরে এটা আমার পড়া প্রথম বাংলা পূর্ণাঙ্গ সায়েন্স ফিকশন। লেখকও হালকা তাঁদের লেখা থেকে ইন্সপায়ারড মনে হল, তবে বেশ উপভোগ্য উপন্যাস লিখছেন। "অমুক বছর পর মহাবিপর্যয়তে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে, আর মানুষ তার সমস্ত শক্তি আর মেধা কাজে লাগিয়ে বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করবে" - ক্লাসিক সাইন্স ফিকশন প্লটকেই লেখক খুব সুন্দরকরে উপস্থাপন করেছেন। গল্পে দেখা যায় ২৬ বছর পর এক মহাজগতিক ঘটনায় পৃথিবীর ৯৯ ভাগ মানুষ মারা যাবে, আর এটা এড়ানোর উপায় বর্তমান প্রযুক্তি দিয়ে ২৫ বছরে বের করা সম্ভব নয় কোনোভাবেই। মহাবিজ্ঞানী আকিরার প্রস্তাবমত মঙ্গলের নতুন চাঁদ লোলায় ৫০০০ জন বিজ্ঞানী পাঠিয়ে দেওয়া হয়, আর টাইম ডাইলুশনের মাধ্যমে লোলার সময় পৃথিবী থেকে ১০০ গুন দ্রুত করে দেওয়া হয় যাতে পৃথিবীতে বিপর্যয় আসতে আসতে লোলায় ২৫০০ বছর অতিক্রান্ত হবে এবং ততদিনে লোলার সভ্যতা কোনো না কোনো এক উপায় আবিষ্কার করবে মানবসভ্যতা বাঁচানোর। এভাবে লোলা আর পৃথিবীবাসীর বর্ণনায় দ্রুতগতিতে আগাতে থাকে কাহিনী। সাথে আরও কিছু সাব প্লটও আছে। শেষ করার পর মনে হল আরেক্টু পড়া গেলে মন্দ হত না!
তবে কিছু জিনিষ আরেকটু ভালো হতে পারত। বর্তমান বিজ্ঞানমতে অবাস্তব জিনিসের ব্যাখ্যা লেখক অনেক বেশি সময় নিয়ে করেছেন যেটা খুব সহজেই হয়ত অল্প কথায় সাড়া যেত। আর অধ্যায়গুলোর শুরুতে স্থান ও সময় উল্লেখ করলে ভাল হত,এক অধ্যায় বর্তমান পৃথিবী, আবার সেখান থেকে ভবিষ্যৎ লোলা, আবার পূর্বের পৃথিবী - এভাবে শেষের দিকের কিছু চ্যাপ্টারে টাইমলাইনে একটু গড়বর মনে হল। তবে লেখক ইচ্ছা করেও পাঠকদের বিভ্রান্ত করার জন্য করতে পারেন হয়ত এই কাজ, কে জানে!
Profile Image for Bornik C.
108 reviews
June 14, 2025
মানবসভ্যতার সর্বাত্মক ধংসের মুখোমুখি দাঁড়ালে তার থেকে বাঁচার জন্য কি কি করতে পারে তার বিভিন্ন সম্ভাবনা নিয়ে এই দারুন কল্পবিজ্ঞান উপন্যাসটি। এখানে অত্যশ্চার্য কিছু আবিস্কার দেখানো হয়নি। কিন্তু তবুও এতে আধুনিক বিজ্ঞানের যথেষ্ট উপদান মজুত রয়েছে। গল্পের গতি কোথাও রুদ্ধ হয়নি। বরং আমার মনে হচ্ছিল এত ছোট বইতে এর সমাধান কি করে হবে। যাইহোক কল্পবিজ্ঞান ভালোবাসলে এই বইটি অবশ্যই পড়ে নেওয়া উচিৎ।
Profile Image for Rwik.
56 reviews5 followers
May 29, 2024
মঙ্গল গ্রহ নিয়ে মাতামাতি বোধহয় কল্পবিজ্ঞান লেখার শুরুর সময় থেকেই । এই রিভিউ লেখার সময় পর্যন্ত মঙ্গলে মানুষ পা না রাখলেও এত বিস্তারিত কল্পনা প্রসূত প্রাকৃতিক বর্ণনা আর কোন গ্রহকে নিয়ে লেখা হয়নি। মঙ্গল গ্রহ নিয়ে সৃষ্ট কথা সাহিত্য যুগে যুগে থিম বদলেছে । কখনো যুদ্ধের প্রাধান্য, কখনো প্রাগৈতিহাসিক সভ্যতার হিংস্রতা , কখনো অতী উন্নত সভ্যতার সমস্যার কাহিনী আর কখনো বা একটি মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রাম । এই সব কিছুর মাঝে মঙ্গলে উপনিবেশ গড়ে তোলার ধারণাটা সব যুগেই বিদ্যমান ।

তবে সাইফুল সাহেবের এই লেখা মঙ্গল নিয়ে নয়, মঙ্গলের এক উপগ্রহ লোলাকে নিয়ে । হার্ড সাইফাই ভেবে আর কাহিনীর শুরুতেই পঞ্চম ডায়মেনশনের উল্লেখ দেখে ছিটকে যাবেন না। প্রায় 300 পাতার এই উপন্যাসে সবার জন্যই কিছু না কিছু রয়েছে। এক লাইনে বলতে গেলে পৃথিবী ধ্বংস হতে চলেছিল আর কিছু বিজ্ঞানী অন্য গ্রহে কৃত্তিমভাবে মানব বসতি বসিয়ে পৃথিবীকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন এই লেখায় । লোলার চারপাশে আটটা টাইম ডায়ালুশন যন্ত্র বসিয়ে পৃথিবীর সাথে কৃত্রিমভাবে সময় বিভেদ সৃষ্টি করা হয় । ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচার জন্য পৃথিবীর হাতে হয়তো 25 বছর কিন্তু লোলার কাছে তা আড়াই হাজার বছরের সমান । পৃথিবীর মানুষের আশা বিজ্ঞানে প্রভূত উন্নতি করে লোলায় থাকা পৃথিবীর মানুষেরা তাদের মাতৃভূমি রক্ষা করবেন । কিন্তু একবার বিদেশে পাড়ি দিলে এক জেনারেশন পর কেউ কি আর বাপ ঠাকুরদার বাড়ি আগলাতে চায়? এই সকল সমস্যা এবং তার সম্ভাব্য সমাধানগুলি নিয়ে লেখক বিস্তারিতভাবে ভেবেছেন ।মানুষের এই মন বদল আটকানোর জন্য গুপ্ত সমিতিও তৈরি ছিল লোলাতে । কঠিন বিজ্ঞান দিয়ে শুরু করে একসময় মনে হচ্ছিল কোন পলিটিকাল থ্রিলারে ঢুকে গেছি , সেই টান টান উত্তেজনার মধ্যেই আবার ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষের প্রিয়জনকে সুখী দেখার অদম্য ইচ্ছে লেখাটিকে সামান্য ধীর লয়ে নিয়ে যায় । কয়েকটি জায়গায় গভীর দার্শনিক কথোপকথন বেশ মনে ধরেছে। এত দূর পড়ে যদি ভাবেন সবই বলে দিলাম তাহলে ভুল ভাবছেন । এখনো তো আপনি আকিরা লিমিট কি সেটাই জানেন না , লোলাতে কাকে ট্রাইপড বলে সেটাও আন্দাজ করতে পারবেন না । আর বিশ্বাসঘাতকতাই বা কে ?

ভূমিকা ও কৃতজ্ঞতা স্বীকারে অঙ্কিতার নামের উল্লেখ দেখে এই বইটির পেছনে ওনার অবদান সহজেই অনুমান করতে পারছি । প্রমিত বাবু আর AI কে ধন্যবাদ সুন্দর প্রচ্ছদের জন্য । এই নিয়ে সাইফুল বাবুর দুটি লেখা পড়লাম । ফ্যান হয়ে গেছি ।
1 review
March 11, 2025
জাস্ট অস্থির একটা বই!!!!! স্কাই ফাই এর সাথে গ্রহ রাজনীতি, ছাত্র রাজনীতির মিশ্রণ, সাথে দুর্দান্ত একশন, স্পাই , অ্যান্টি স্পাই....খুব ফাটাফাটি লেগেছে। আমি সাধারণত এলিয়েন কনসেপ্ট টা পছন্দ করি না। কিন্তু এখানে এদের পোর্ট্রেয়াল টা খুব ই মজা লেগেছে। আবার তারা যে একটা এলিয়েন থেকে বাঁচতে আরেকটা এলিয়েন এর ঠিকানা দিয়ে দেয় এই ব্যাপার টাও ইনজয় করেছি। তার উপর লোলার জগৎ এর বিল্ডিং টাও ভালো লেগেছে। এটি প্লট ড্রিভেন স্টোরি হলেও হিউম্যান নেচার জিনিসটাকে খুব ভালোভাবে পোর্ট্রায় করা হয়েছে।

অবশেষে একটা কথাই বলবো, স্কাই ফাই এর ফ্যান যারা একটু নতুন কোনো কনসেপ্ট এর সন্ধানে আছেন, এই বইটি তাদের জন্য মাস্ট রেকমেন্ডেড।
Profile Image for Pranta Biswas.
122 reviews4 followers
April 6, 2024
কিছু কিছু অধ্যায় এলোমেলো মনে হয়ছে। তাছাড়া পুরো বই পড়েও তেমন একটা মজা পাইনি, মোটামুটি টাইপ লেগেছে। অবশ্য মজা না পাওয়ার ব্যাপারটা পুরোটাই ব্যক্তিগত। সাইন্স ফিকশন জনরা পছন্দের শীর্ষে না থাকা এটার পেছনের একটা কারন হতে পারে।
2 reviews
May 26, 2021
He is known for his "Hard Sci fi'- speciality ❤️

Will have the printed version soon from Rokomari.com

Profile Image for Sreejit.
53 reviews4 followers
September 29, 2025
one of the finest sci fi novels in history of bengali literature.
Profile Image for Elin Ranjan Das.
88 reviews5 followers
August 29, 2024
"সময়ের কাঁটা টিকটিক করে এগোচ্ছে আর প্রতিমুহূর্তে ধেয়ে আসছে মহাপ্রলয়ের শেষ ঘণ্টা। কী অবলম্বন করে এই নরকসম শীতল অন্ধকার মহাবিপর্যয়ের সঙ্গে পাল্লা দেবে হামাগুড়ি ছাড়িয়ে কেবল হাঁটতে-শেখা মানবসভ্যতা? যেখানে সময় নিজেই হচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বী, সেখানে সময়কে অতিক্রম করে কীভাবে শেষরক্ষা হবে মানুষের? তবে কি আড়াই যুগের ভেতর নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে মহাবিশ্বের বিস্ময়; দুর্লভ এই সৃষ্টি? আড়াই যুগ! নাকি এরও আগে নিজেরাই নিজেদের ধ্বংস করে দেবে মানুষ? তারা পারবে কি স্বার্থপরতা, লোভ, ঘৃণার চক্রব্যূহ থেকে বের হয়ে; রাজনীতির ঘোরপ্যাঁচ উপেক্ষা করে সর্ব-একক হিসাবে কার্যসিদ্ধি করতে? এমনি এক টানটান উত্তেজনা আর শ্বাসরুদ্ধকর রোমাঞ্চ নিয়ে এই কল্পবিজ্ঞান কাহিনি ‘লোলার জগৎ’।"
এটা হলো ওপার বাংলার এডিশনের ফ্ল্যাপের লেখা। এপার বাংলার এডিশনে এটা নেই, শুধু বইয়ের একটা প্যারাগ্রাফ তুলে দেয়া, ফলে যদি কখনো বইয়ের দোকানে গিয়ে নেড়েচেড়ে দেখতে চান বইটা, আপনার মনে বইয়ের বিষয়-জন্রা-প্লট নিয়ে কোনোরকম জ্ঞানই সৃষ্টি হবে না। জানি না কেন বাতিঘর এই কাজ করলো। তবে অন্ধকারে থেকে বইটা পড়া শুরু করাও খারাপ না।
মাত্র ৩০ বছর সময় যখন মানুষের হাতে, তখন সে ঠিক করলো, সময় দীর্ঘায়নের মাধ্যমে দূরবর্তী এক চাঁদে সভ্যতা গড়ে তুলবে, যাদের হাতে সময় থাকবে ৩০০০ বছর। এটাই লোলার জগৎ। এর পাশাপাশি পৃথিবীতে বিপর্যয় থেকে মুক্তি পাবার জন্যে আরো কিছু প্রজেক্টও নেয়া হয়। পাশাপাশি চলা এসব প্রজেক্ট আর পৃথিবীর পরিস্থিত নিয়ে এগিয়ে যায় গল্প। এতটুকু বর্ণনা পড়লে স্বাভাবিকভাবেই অন্য আরেকটা সাইফাইয়ের প্লট মাথায় চলে আসছে- আইজ্যাক আজিমভের কিংবদন্তী সিরিজ "ফাউন্ডেশন"। এই বইয়ের লেখকের দূরদর্শীতা থাকলে "লোলার জগৎ" হতে পারতো সাহিত্যের ইতিহাসে দ্বিতীয় ফাউন্ডেশন। হ্যাঁ, এতটাই ক্যালিবার ছিলো এই বইয়ের। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে সেই পটেনশিয়াল মাঠে মারা গেছে। লোলার তিন হাজার বছরের ইতিহাস আনতে গিয়ে অনেকগুলো সাবপ্লট এসেছে, কিন্তু পৃথিবীর ত্রিশ বছরের বর্ণনার সাথে মেলাতে গিয়ে তার বেশিরভাগকেই অঙ্কুরে ছেঁটে দেয়া হয়েছে। এতে পাঠকের মনে প্রচুর প্রশ্ন অমীমাংসিতই রয়ে যাবে। এছাড়া বইয়ের এন্ডিংটা হয়েছে অনেকটা জাফ্রিকবাল স্টাইল।
অথচ এই বইয়ে যেভাবে রাজনীতি, কূটনীতি, হার্ড সায়েন্স নিয়ে আসা হয়েছিলো, সেটা ঠিকমত লালন করলে এই বই একটা মাস্টারপিস হতে পারতো। ত্রিশ বছরের গল্পকথনের সাথে তিন হাজার বছরের ঘটনাসূত্রকে ঠিক করে মিলাতে পারলে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সাইফাই সিরিজদের কাতারে যেতে পারতো। আফসোস, লেখক হয়ত অধৈর্য্য হয়েই একটা বইয়েই শেষ করে দিয়েছেন পুরো গল্প। কাজেই ৫ তারকা পাবার মত একটা প্লটের বইকে ৩ তারকা রেটিং দিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে আমাকে।
Displaying 1 - 28 of 28 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.