সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম ২১ জানুয়ারি ১৯৬১, হুগলির উত্তরপাড়ায়। পিতৃপুরুষ বিহারে প্রবাসী। মাতৃবংশ বাংলাদেশের দিনাজপুরে। স্কুল-কলেজের পাঠ উত্তরপাড়ায়। ফটোগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। একটি ফটোপ্রিন্টিং সংস্থার কারিগরি বিভাগের প্রধান। ছাত্রজীবনে লেখালিখির শুরু। দেশ পত্রিকায় প্রথম গল্প প্রকাশিত হওয়ার পর বৃহত্তর পাঠক মহলে সমাদর লাভ।শ্রেষ্ঠ উপন্যাস রচনার জন্য ১৯৯৯ ও ২০০২ আনন্দ-স্নোসেম শারদ অর্ঘ্য, শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ও শ্রেষ্ঠ ছোটগল্প রচনার জন্য ২০০৩ সালে আনন্দ-ন্যাশানল ইনসিয়োরেন্স শারদ অর্ঘ্য এবং শ্রেষ্ঠ ছোটগল্প রচনার জন্য ২০০৬ সালে ডেটল-আনন্দবাজার শারদ অর্ঘ্য পেয়েছেন। এ ছাড়া ১৯৯৭-এ পেয়েছেন গল্পমেলা পুরস্কার, ২০০১-এ সাহিত্যসেতু পুরস্কার, ২০০৫-এ বাংলা আকাদেমি থেকে সুতপা রায়চৌধুরী স্মারক পুরস্কার, ২০০৭-এ শৈলজানন্দ জন্মশতবর্ষ স্মারক পুরস্কার, ২০১৩-এ তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় সাহিত্য সম্মান, ২০১৪ সালে গজেন্দ্রকুমার মিত্র ও সুমথনাথ ঘোষ স্মৃতি পুরস্কার।
আনন্দমেলা-র পাতায় আর নানা জায়গায় পড়া পঁচিশটি হাল্কা-পল্কা কিশোরপাঠ্য গল্প স্থান পেয়েছে এই বইয়ে। তারা হল~ ১. ছায়ামুখ ২. বড়ো সাংঘাতিক জিনিস ৩. ফাঁদ ৪. মেয়েটা অন্যরকম ৫. গুপ্তকথা ৬. এই জীবনটা মন্দ নয় ৭. টেনথ অক্টোবর ৮. কানাগড়ের ফুটো মস্তান ৯. এতদিন বলিনি ১০. শাস্তি ১১. টমটমপুরের বুড়ি ১২. চিত্রকর ১৩. অদৃশ্যের মন্ত্রণা ১৪. কলহগড়ের নিস্তব্ধতা ১৫. ভূত বড়োই জটিল বিষয় ১৬. মুকুট উধাও রহস্য ১৭. ফিরে আসা ১৮. আর একটু হলে ১৯. নাটকের দল ২০. তদন্তে তারাচরণ ২১. আড়াই প্যাঁচ ২২. তিনি যখন বাইরে ২৩. আঁধারগ্রামের আলো ২৪. ডাকাতিটা অন্যরকম ২৫. দাগ গল্পগুলোর মধ্যে কোনোরকম জ্ঞানদা প্রবণতা নেই। বরং অত্যন্ত সহজ ভাষায়, খুব-খুবই চেনাজানা চরিত্রদের নিয়ে এক-একটা নিটোল গল্প বলাই এখানে লেখকের লক্ষ্য থেকেছে। হ্যাঁ, যেকোনো ধ্রুপদী গল্পকারের মতো তাঁর ওপরেও মঁপাসা থেকে ও হেনরি— এমন রচয়িতাদের স্পষ্ট প্রভাব দেখা যায়। তবে তাতে গল্পগুলোর স্বচ্ছন্দ বাঙালিয়ানায় কোনো মিশেল ঘটে না। বরং শুদ্ধ ভাষা ও পরিমিত বর্ণনায় তাদের পরিণতি অনুমান করেও শেষ অবধি ছুটে যেতে হয়। দেবাশীষ দেবের অনন্য প্রচ্ছদ এবং অলংকরণ বইটিকে একেবারে অন্য মাত্রা দিয়েছে। লকডাউনে বিমর্ষ ছোটোদিকে দেওয়ার পক্ষে চমৎকার জিনিস এই বইটি। তাকেও দিন। নিজেও পড়ে ফেলুন এক ফাঁকে।