কালকুক্ষি অয়ন-জিমির প্রথম কাহিনী। ছুটি কাটাবার উদ্দেশ্যে টেক্সাসের ছোট্ট শহর গ্রিনহিলের মাটিতে পা দিতেই কিডন্যাপ হয়ে গেল ওরা। ব্যাপার কী? ওদের কাছে কী চায় দুই ভয়ানক দাগী আসামী? তদন্ত করতে গিয়ে আটকা পড়ল ওরা কালকুক্ষি, অর্থাৎ, মৃত্যুগুহাতে!
সাবাস অয়ন! সাবাস জিমি!! কঠিন সাতটা রহস্য রয়েছে অয়ন-জিমির সামনে। হারানো একটা বাঘ, ভৌতিক কণ্ঠস্বর, বহুদিন আগে মরে যাওয়া এক ডাক্তারের প্রেতাত্মা, ঝগড়াটে মেয়ের চ্যালেঞ্জ... আরও কত কী! চলো না, দেখেই আসি, এসব রহস্য কীভাবে সমাধান করে ওরা।
কালো মেঘ ডকের ধারে বহুদিন ধরেই বাস করত এক বুড়ো পাইলট। বেঁচে থাকতে কেউ চোখ ফিরিয়ে তাকায়নি তার দিকে, অথচ মরার পর শুরু হলো তুলকালাম। রহস্যময় লোকজনে ভরে গেল স্যান পেদ্রো ম্যারিনা। বিপাকে পড়ে গেল বাপ-ছেলের দরিদ্র জেলে পরিবার। ঠিক এই সময়, রহস্য সমাধান করতে, যেন মাটি ফুঁড়েই উদয় হলো অয়ন, জিমি আর রিয়া।
“The most beautiful experience we can have is the mysterious. It is the fundamental emotion that stands at the cradle of true art and true science.” ― Albert Einstein, The World As I See It
আচ্ছা,রহস্য কেন আমার এতো ভাল্লাগে?-এই প্রশ্নটা যে আমি এতোবার নিজেকে করেছি,কিন্তু সঠিক জবাব পাইনি।মানুষ হয়তো তাদের দুঃখ ভারাক্রান্ত মনকে উপশম করতে মজার কোন কাহিনী বা হাসিখুশি কিছু পড়ে মনটা হাল্কা করে ফেলে,আবার কেউ দুঃখময় গান বা উক্তিকে সঙ্গী করে সেই দুঃখকে অনুভব করে।অথবা কেউ নিজেদের একান্ত প্রিয় ফ্যান্টাসির ডেলিউশনাল জগতে নতুন মাত্রা আনতে রোমান্টিকতায় হারিয়ে যান। এদিকে আমার অবস্থা এমন যে,কদাচিৎ মা-বাবার সাথে সিরিয়াস-বেসিরিয়াস তর্কযুদ্ধ করে বা গুরুতর কারণে মন খারাপ হলে কোন কিছুতেই কাজ হয় না।কিন্তু...কিন্তু আমি যখনই রহস্য থ্রিলার নিয়ে বসি বা শার্লক হোমস সাহেবের ডিটেকটিভ বইয়ের পাতায় মজে যাই,তক্ষুনি সেই আলো-আধারি ঝাপসা হয়ে আসা রহস্যের তীরে নাবিক হয়ে সেই যে ব্রেনস্টোর্মিংয়ে নেমে পড়ি আর সেই সাথে অ্যাডভেঞ্চারের মাতাল নেশা আমার মাথায় ভর করে বসে-ব্যস!আমার সেই মন খারাপি একনিমেষেই গায়েব!আর সে অনুভুতি,,,আহা!বলার মতো নাহ। বিজ্ঞানের মরমি সাধক আইনস্টাইনের উপরোক্ত কথার সাথে একমত না হয়ে পারিই নাহ যে!আসলে রহস্যের মতন এত সুন্দর আর মুভিং আবেগ দ্বিতীয়টি নেই।
সেই রেশ ধরে আমি আবার আমার জিইয়ে পড়া মাতাল টিন স্প্রিরিট দুর্দান্তভাবে জাগিয়ে তুললাম।আর সেটা হচ্ছে নো আদার দেন অয়ন-জিমির দুষ্টু-মিষ্টি যুগলবন্দীর সঙ্গী হয়ে।
অয়ন-জিমির সাথে আমার প্রথম পরিচয় কিশোর আলোর হাত ধরে।গল্পটা ছিল সম্ভবত "কনডরের ডানা"। এরপর " বরফ বিভীষিকা","অচিন পাখি" পড়া হয়েছিল টুকটাক।তবে তখন একটু বুদ্ধিশুদ্ধি কম থাকায় আর তেমনভাবে মনে গেঁথে নেই।তবে আরেকটা সংখ্যায় ওদের ৩০ বছরপূর্তি উপলক্ষে জানতে পারি যে,ওদের একটা জুতসই সিরিজাকার উপন্যাস আছে,তাও আবার সেবা প্রকাশনীর!সেই থেকে এই সিরিজের বইগুলোর কেনা ও পড়ার তুমুল আগ্রহ চলে এলো,আর শেষমেশ থামল আমার ১৭তম জন্মদিনের উপহার হিসেবে ওদের পাওয়ায়।
প্রথমেই ওদের দেখে মনে হলো,ওরা দুইজনা যেন শার্লক-ওয়াটসনের হাইস্কুল স্টুডেন্ট টিনেজার সংস্করণ!বিদ্যে-বুদ্ধি-সাহসে বিস্তর দূরত্ব থাকলেও কি দারুন রসায়ন!আর মাথার চেপে থাকা বাঁদরামি আর ফিচেল বুদ্ধিকে এমন কার্যকরভাবে কাজে লাগানো,তাও আবার "গোয়েন্দাগিরিতে" -আসলেই সেরা!
সেই ৯০ দশকে ক্লাস ৮ পড়ুয়া দস্যি ছেলের কাঁচা হাতে ধরা কলম থেকে তাদের জন্ম,কিন্তু একটুও তাড়াহুড়ো,অপরিপক্কতা লেশ নেই,বরং সহজ সরল সরস লেখনী,কিশোরবান্ধব ট্রিকি ধাঁধাঁর সমাহার,হাতছানি দিয়ে ডাকা বিদেশ বিভুঁই,আর মশলাদার রহস্য অ্যাডভেঞ্চার-"তিন গোয়েন্দা"ফ্লেভার্ড এই সিরিজ যেন বেশ মৌলিকতা ধারণ করেই আলো ছড়িয়েছে।
ইচ্ছে ছিল এই সিরিজের প্রথম বইটা পড়ার-তবে এক ঢিলে তিন পাখি মেরে এক ভল্যুমে প্রথম তিনটা বইই আস্বাদন করতে পারলাম!
ইসমাইল আরমান আঙ্কেল যেন অয়ন-জিমিকে আরও উজ্জীবিত করে তুলুক-এই আমার আকুল অভিলাষ।
[তবে রিয়াকে কি আইরিন নর্টন বা অ্যাডলার বলা যায় কি?কি বলুন আপনারা!]
I have read all three books separately. It's a gem for kids. Adventure, and mystery, just perfect for younger age. And I liked it even being an adult myself. So, highly appreciating the good work.
কালকুক্ষি মোটামুটি মানের ছিলো। আর সাবাস অয়ন সাবাস জিমি আগেই পড়া ছিলো, বেশ ভালোই লেগেছিলো। কালো মেঘ পড়তে গিয়ে অনেকদিন পর মনে হলো তিন গোয়েন্দার স্বাদ খুঁজে পেলাম আবার। ভালো হয়েছে।