Jump to ratings and reviews
Rate this book

দুরধ্যয়

Rate this book
সারাদিন খাদ্যান্বেষণের পর দু’টো ডানায় একরাশ ক্লান্তি নিয়ে অপরাহ্নে যে পাখিগুলো নীড়ে ফিরে আসে, অথবা সুশৃঙ্খল সারিবদ্ধভাবে খাবার খুঁজে বেড়ানো পিঁপড়া— তাদেরও কি “তুমি পুরুষ নাকি মহিলা?” প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়? এদের ভাষা কেউ বোঝে না বলে হয়তো কারো তা জানা নেই। কিন্তু দু’পাবিশিষ্ট মানুষদের হরহামেশা এ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। তনিমকে হতে হয়। হোক বাবা, মা, ভাই, বোনের মতো পরম পরিচিত কেউ অথবা অদ্ভুত অপরিচিত, এই দ্বিধান্বিত প্রশ্নবাণের তীর সবার হাতেই থাকে।

এই সমাজ যেনো সবাইকে বন্দি করতে ব্যস্ত। কাউকে কর্মে বন্দি করছে, তো কাউকে ধর্মে বন্দি করছে। কাউকে বন্দি করা হয় দালান ঘরে, কাউকে বা বিরান চরে। আবার কাউকে বন্দি করা হয় লিঙ্গের জালে। তনিমকেও বন্দি করা হয়েছে, হচ্ছে। প্রতিনিয়ত...। তনিম নিজেকে কিভাবে প্রকাশ করবে— এর ইখতিয়ার তনিমের হাতে নেই; আছে সমাজের হাতে, সমাজের মানুষের হাতে।

লড়াইয়ে পূর্ণ এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার লড়াই প্রায় সবাইকেই করতে হয়। কিন্তু তনিমদের লড়াইটা একটু বেশি। কেননা তা অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। কী হয় তনিমদের জীবন কাহিনী? বেঁচে থাকার লড়াইয়ে কিভাবে নিজেকে টিকিয়ে রাখে তারা? বইয়ের শেষে হয়তো উত্তর পাওয়া যাবে।

88 pages, Hardcover

Published June 21, 2021

3 people are currently reading
84 people want to read

About the author

Tanveer Anoy

5 books95 followers
তানভির অনয় একজন একাডেমিক, আর্কাইভিস্ট, অ্যাক্টিভিস্ট এবং লেখক। ১১ই ফেব্রুয়ারি, ঢাকায় জন্ম তাঁর। ঢাকার ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফেইটভিল স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজি ভাষা ও অনুবাদ নিয়ে অধ্যয়ন করেছেন। তিনি স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল)-এ সম্পাদকীয় সহকারী হিসেবে দেড় বছর কর্মরত ছিলেন। তানভির অনয় ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে উইমেন, জেন্ডার, অ্যান্ড সেক্সুয়ালিটি স্টাডিস বিষয়ে মাস্টার্স সম্পূর্ণ করেছেন এবং বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ মিনেসোটায় ফেমিনিস্ট স্টাডিসে পিএচডি করছেন। লৈঙ্গিক বৈষম্যসহ আর্থ-সামাজিক সমস্যা ও সমাধান নিয়ে তিনি লেখালেখি এবং কাজ করেন। ইতোমধ্যে তিনি একাধিক প্রকাশনার সম্পাদনা করেছেন। কথাসাহিত্যের জগতে তাঁর আগ্রহ প্রবল, লিখেছেন বেশ কিছু ছোট গল্প।

প্রকাশিত বইসমূহ: পুণ্যাহ, দুরধ্যয়, কেতাদুরস্ত, মর্ত্যলোকচক্র, প্রণয়নামা।

Tanveer Anoy is an academic, archivist, activist, and writer, born in Dhaka on February 11. They hold an Honours degree in English Literature from East West University, Dhaka, and studied English Language and Translation at Fayetteville State University, USA.

They worked for one and a half years as an Editorial Assistant at the renowned publishing house University Press Limited (UPL). Tanveer Anoy later completed their Master’s in Women, Gender, and Sexuality Studies from Oregon State University and are currently pursuing a PhD in Feminist Studies at the University of Minnesota, USA.

Their work and writing focus on socio-economic issues and gender inequality, combining academic research with activism and storytelling. They have edited several publications and maintain a deep passion for fiction, having authored multiple short stories.

Published books: Punyah, Durdhyay, Ketadurasta, Martyalokchakra, and Pranayanama.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
39 (43%)
4 stars
34 (38%)
3 stars
14 (15%)
2 stars
1 (1%)
1 star
1 (1%)
Displaying 1 - 29 of 47 reviews
Profile Image for Nishat Monsur.
191 reviews18 followers
July 11, 2021
একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আমি ভাবতাম, দ্রুত পড়ে শেষ করা যায় যে বই, তাই-ই "ইজি-রিড"। সাম্প্রতিক সময়ে কিছু নাতিদীর্ঘ পরিসরের বই পড়ে সেই ভুল ভাংছে। দুরধ্যয় সেই তালিকার নতুন সংযোজন হলো। বইটার কলেবর ছোটো, তাই প্লট নিয়ে কিছু বলতে গেলে স্পয়লার হয়ে যাবার ঝুঁকি থাকে। আমি বরং একটু অন্য দিক নিয়ে বলি।

বাংলা লেখালেখির জগতে প্রায় ছোঁয়াই হয়নি ক্যুইয়ার স্টোরিস জনরাটি। এখানে এই বিষয় নিয়ে লেখালেখি করা শুধু সাহসের বিষয়ই নয়, বরং খানিকটা ঝুঁকিও থেকে যায়। ফোবিকদের কথা যদি বাদও দিই, তবুও তাদের ভয়ে আড়ালে থেকে যাওয়া মানুষগুলোকে খুঁজে বের করা একপ্রকার অসম্ভব। তাদের যুদ্ধগুলোর কথা জানা দুঃসাধ্য। তাদেরকে বোঝার চেষ্টায় ভুল থেকে যাওয়াও অকল্পনীয় নয় একেবারেই। অনেকগুলো জটিল ধাপের সমন্বয় ঘটিয়ে তবে এই বিষয়ে লেখা যায়, অন্তত বাংলাদেশি সমাজে। একজন নবীন লেখক হিসেবেও এই অভাবনীয় রকমের কঠিন কাজটি তানভির অনয় করে দেখিয়েছেন, তাঁর জন্য টুপিখোলা অভিনন্দন।

এবার আসি লেখার কাজটা তিনি কেমন করেছেন সেই বিষয়ে। তানভির অনয়ের লেখা পড়তে কষ্ট হয় না। তবে যে কঠিন কঠিন বিষয় নিয়ে এই বইটি লেখা হয়েছে, সেগুলো পড়তে গেলে ব্যক্তিগত ট্রমা ট্রিগার্ড হতেই পারে। এমনকি এক্স্যাক্ট এই ট্রমাগুলো না থাকলেও নিজস্ব ট্রমার কথা মনে পড়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে অবশ্য লেখকের ভূমিকায় লেখা কথাগুলো আগে পড়ে নেয়া ভালো হবে। অচল বাধা ভাংতে হলে অস্বস্তির আঘাতগুলো মেনে নিতে হবেই।

লেখকের প্রথম বই পুণ্যাহ পড়ার সৌভাগ্য হয়েছিলো বন্ধু জোয়ার উপহারের কল্যাণে। দ্বিতীয় বই দুরধ্যয় পড়লাম ছোটোভাই মাসরুরের "পুস্তক" এর সৌজন্যে। দু'টি বইয়েরই প্রচ্ছদ চমৎকার। তবে যে কারণে এক তারা কেটে রাখা সেই বিষয়টি বলে এই লম্বা প্রতিক্রিয়া লেখা শেষ করি।

পুণ্যাহ আর দুরধ্যয়, দুই বইয়েই আমার মনে হয়েছে লেখক অনেক কিছু লিখতে চেয়েছেন অল্প কথার মধ্যে। যদিও যে কথা এক শব্দে বলা যায় তার জন্য পুরো একটা বাক্য বরাদ্দ করার পক্ষপাতী নই, তবুও মনে হয়েছে এই বইগুলোর পরিসর আরেকটু বড়ো হলে গল্পটা সুন্দরভাবে মেলতে পারতো। লেখক নিজেই ভূমিকায় লিখেছেন তিনি একটি ছকে ঝিম মেরে থাকতে অপছন্দ করেন। কাজেই, যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু বিস্তৃত পরিসরের গল্প লিখে পরবর্তী বইয়ের পাঠপ্রতিক্রিয়ায় কেটে রাখা এই তারাটি বসানোর সুযোগ করে দেবেন লেখক, এইটুকু মনে রেখে কীবোর্ড আর বই দুই-ই মুড়ে রাখলাম।
Profile Image for Harun Ahmed.
1,662 reviews421 followers
November 18, 2022
বিষয়বস্তু জানতে পেরে কৌতূহলী হয়ে বইটা পড়েছি এবং ভয়াবহ রকমের হতাশ হয়েছি।অসাধারণ উপন্যাস হওয়ার সমস্ত সম্ভাবনা ছিলো শুরুতে। কিন্তু এতো এতো মেলোড্রামা! এতো এতো মেলোড্রামা!!!
Profile Image for Zaima Hamid Zoa .
64 reviews61 followers
August 5, 2021
বন্ধু নিশাতের সাথে আমি একটা বিষয়ে একমত- বই কলেবরে ছোট হলেই তাকে সহজপাঠ্য কিংবা easy-read বলা যায় না। উচিত-ও না। দুরধ্যয় আমাকে লেখক নিজেই উপহার হিসেবে পাঠিয়েছিলেন প্রকাশিত হবার পর। কিন্ত তাও আমি বেশ সময় নিয়েই বইটা শুরু করেছি। কারণ একে তো লেখকের লেখার বিষয়বস্তু খুব একটা সহজ না, এর সাথে যোগ হয়েছে পার্সোনাল ট্রমা আর ট্রিগারের একটা ব্যাপার। কিন্ত লেখকের প্রথম বই পড়বার পর এতটুকু বিশ্বাস আমার ছিল যে বইটা আমার ভালো লাগবেই। আর হয়েছেও তাই।

দুরধ্যয় কে অথবা দুরধ্যয় কী নিয়ে সেটা আপনারা নিজেরাই পড়ে বার করবেন। তবে লেখক যেভাবে লিঙ্গ বৈষম্য, পারবারিক নির্যাতন, বুলিইং, বডি শেমিং, ধর্ষণকে বইয়ে তুলে এনেছেন, তা সত্যি-ই প্রশংসনীয়। বাংলা সাহিত্যে এসব নিয়ে কাজ খুব একটা আমার চোখে পড়েনি; কুইয়্যার কমিউনিটি কে নিয়ে লেখা তো হাতে গোণা যাবে। আর যে হারে আমাদের আশেপাশে ফোবিক মানুষেরা ঘুরে বেড়ায়, সেখানে এমন বিষয় নিয়ে কাজ করতে খুব সাহসের প্রয়োজন হয়। লেখক এইযে সাহসটুকু দেখিয়েছেন, তার জন্যে তাঁর খুব বড় ধরনের একটা ধন্যবাদ প্রাপ্য।

লেখক খুব অল্প কথার মাঝে অনেক বড় বড় এজাহার করে ফেলেন। তাই একদিক দিয়ে যদিও মনে হয় যা লিখেছেন এই যথেষ্ট, আবার পরক্ষনেই মনে হয় যে বইটার কলেবর আরেকটু বড় হলেও কোন আক্ষেপ থাকত না। দুরধ্যয়ের গল্প আরও একটুক্ষণ শুনতে ভালো লাগত নিশ্চয়ই।

বইটা শেষ করার পর লেখকের সাথে যখন কথা হচ্ছিল, তখন আমাকে ঠাট্টার ছলে জিজ্ঞেস করেছিলেন, "পুণ্যাহ ভালো না এইটে?" আমি উত্তর দিয়েছিলাম যে দু'তো বই তো দু'টো ভিন্ন গল্প বলেছে, আমি কীভাবে এদের মধ্যে তুলনা করব? এবং আদতেও তাই। আগের বইটা যেমন খুব সহজ, সাধারণ কথার আড়ালে প্রশ্নের পর প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে আমাদের প্রতি, দুরধ্যয় সেখানে প্রথম থেকেই সোজা-সাপ্টা প্রশ্ন রেখে গেছে। আর এই প্রশ্নগুলোই কি আমরা প্রতিনিয়ত নিজের কাছে, সমাজের কাছে করে যাচ্ছি না? আমাদের পরিচয়গুলোকে বাক্সবন্দী করে ফেলার এই যে সমাজের একটা বিশ্রী প্রচেষ্টা, আমরা সবাই কি এর থেকে বের হয়ে আশার চেষ্টা করছি না? আর কত সহ্য করলে একটু শান্তিতে শ্বাস নিতে পারব? কেউ কি বলতে পারে আদৌ?

দুরধ্যয় বুকের মাঝে কী যেন একটা নাড়িয়ে দিয়ে গেল। যেমন পুণ্যাহ দিয়েছিল। আর বইয়ের প্রচ্ছদ কিংবা প্রোডাকশন নিয়ে বলবার কিছু নেই। খুব চমৎকার। তানভীরের প্রতি আমার অনেক অনেক অনেক শুভকামনা আর ভালবাসা।
Profile Image for Heisenberg.
151 reviews8 followers
June 19, 2022
এরকম বাংলা বই আছে আমার ধারনা ও ছিলো না...অনেক সুন্দর বই...অনেক সাহসি একটা পদক্ষেপ...সাধুবাদ লেখক কে...
Profile Image for Present.
2 reviews2 followers
July 9, 2021
Duradhyay wasn't a easy read. It however, was honest. It didn't shy away from the struggles and definitely didn't try to sugarcoat anything.

This story does stem from reality. The reality of the neglected, of the voices unheard. Duradhyay represents their wounds, wounds that are often purposefully ignored by the society, by family. Sometimes cause that would make the society reflect on it's wrongdoings, sometimes cause it would bring shame to the family and sometimes cause they were simply not considered wounds in the first place.

I had to stop reading the book halfway once. It triggered traumas. Things that happened with me felt like a watered down version of the contents of the book. Even after I was done reading, it took me quite a while to process everything.

Maybe that's why the silver lining mattered so much to me. The hope that no matter what, it's going to be okay, that was much needed.

I thank the author for creating this story. And I hope this book reaches a larger audience. Audiences that find solace seeing they are finally being represented.
Profile Image for musarboijatra  .
283 reviews357 followers
March 28, 2022
৮৮ পেইজের ছোট্ট বইটা পড়ার আগে লেখকের সর্বশেষ উপন্যাস 'কেতাদুরস্ত' পড়ে (এবং পছন্দ করে) এসেছি। এই বইটা পড়ার পর গুডরিডসের বাকি রিভিউগুলোও পড়ে দেখলাম।

সব রিভিউতে একটা বক্তব্য ঘুরেফিরে এসেছে,
- 'দুরধ্যয়' বই অথবা চরিত্র হিসেবে যে বিষয়গুলো তুলে এনেছে অথবা কথা বলেছে তা সামনে আনা খুব সাহসের কাজ ছিল
- বুলিং, হ্যারেসমেন্ট, এবিউজ, রেইপ, জেন্ডার বাইনারি সোশাল স্ট্রাকচার, এই ধরণের বিষয়গুলোর ভুক্তভুগী আমাদের সমাজের মানুষরা হয়ে আসছেন, কিন্তু এই বিষয়গুলো এত কম উচ্চারিত হয় যেন সমস্যাগুলো বিদ্যমান না,
- আর এই ব্যাপারগুলোকে 'দুরধ্যয়' উল্লেখ করেছে সরাসরি, যেটা পাঠককে নগ্ন সত্য উপলব্ধি করতে বাধ্য করতে পারে।

পাঠকের মূল্যায়নে যা বলার আছে :
দুরধ্যয়ের পরে লেখকের লেখার হাত আরো উন্নতি করেছে, এবং এই বইটার লেখনী অবশ্যই সেরা না। কিন্তু যে বক্তব্য উঠে এসেছে দুরধ্যয়ের পুরো গল্পটার মাঝ দিয়ে, সেটা পাঠকের হৃদয়কে দুমড়ে মুচড়ে দিতে পারে যদি পাঠক কখনো রিলেট করতে পারেন। এবং লেখকের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা (ফার্স্ট হ্যান্ড এক্সপিরিয়েন্স) কিছুটা ছায়া ফেলেছে বইয়ে।
Profile Image for A Tiny Reader | Sharfin Islam.
253 reviews27 followers
July 1, 2021
This book was as different as it could be from Punnyaho, the author's debut. A book that comes from a very close place in the author's heart, it's about a non binary teenager just discovering themself and it hits hard from the very first page. It can be VERY triggering, to the point where I had to put down the book and breathe. And for exactly that reason, I was continuously reminded of A Little Life.

But where that torturous journey in A Little Life felt unnecessarily prolonged, unfortunately, I had no trouble imagining something like this happening to Tanim, our main character, in Bangladesh. I had already shed a few tears by page 25, and was triggered beyond control by the last few chapters.

If I were to pick one flaw, I'd say that the ending was a bit rushed, but after watching the authors mini booklaunch on their profile, I do understand why. I'm genuinely scared of how the majority of the people in this country would receive the book, but I am sure my audience would enjoy it.
Profile Image for Irtiza Dip.
4 reviews1 follower
July 1, 2021
'দুরধ্যয়' উপন্যাসটি সেই সকল মানুষের জীবনালেখ্য যারা সমাজের এক বিশাল অংশ হয়েও লুকায়িত। যাদের কথা পাশের বাসায় জানলে লজ্জায় মাথা ঠেকানো যাবে না, যারা বয়েজ স্কুলগুলোতে প্রতিনিয়ত প্রতিটা ক্লাসে ছিঃ ছিঃ শুনে দশবছর পাড় করে দেয়, যাদের মনের কথা কখনো শুনে না কেউই, যারা শুধু অভিশাপ হিসেবেই সমাজে টিকে থাকে সারাজীবন। জেন্ডার ফ্লুইডিটি, ননবাইনারি-এইসব কুইয়ার শব্দের সঙ্গে যারা পরিচিত না-তাদের মনে হীরকের আচড় কেটে দেয়ার মত বই এই 'দুরধ্যয়'। সহজ,সাবলীল গল্প। একজন ননবাইনারি মানুষের বেড়ে উঠার পথে ঘাত-প্রতিঘাতের গল্প। শব্দচয়ন সহজ। বাক্যবিন্যাস সুন্দর। অলংকরণে লেডি গাগার গান, টনিমরিসনের বই, হুমায়ূন আহমেদের উক্তি খুব সুন্দর একটা টাইমফ্রেম বেঁধেছে বলে আমার মনে হয়েছে।সুন্দর হলদে বইয়ের পাতার সঙ্গে অসাধারণ এক প্রচ্ছদ। আমি যে কোন বই কিনতে গেলেই প্রচ্ছদ দেখি-এটাতেও দেখেছি, এক দেখায় লুফে নিয়েছি। আমার কাছে গল্পটা পড়ে খুবই 'প্রারম্ভিক' কিছু একটা মনে হয়েছে। এই অর্থে যে-কুইয়ার লিটারেচার আমাদের দেশে যেহেতু কমন না,তাই হয়তো লেখক ওদের সাথে একদম প্রতিনিয়ত কিছু ঘটনা চোখের সামনে দেখিয়ে বুঝিয়েছেন-এরা হল কুইয়ার লিটারেচারের এলিমেন্টস। প্রারম্ভিক মনে হওয়ার আরেক কারণ হল-খুবই প্রেডিক্টিভ প্রত্যেকটা ঘটনা,কোথাও ঘটনা বাঁক নেয়নি। সবার শেষ দৃশ্যের ট্রাজেডিও প্রেডিক্টিভ কিন্তু চোখে পানি আনতে বাধ্য- যাতে আমার মনে হয়েছে একটা সার্থক ট্রাজেডিও। সবমিলে সহজ,সাবলীল,সুন্দর এক সাহিত্য। লেখক তানভীর অনয়কে সাধুবাদ জানাই এই জনরায় কলম ধরার জন্যে।
Profile Image for Md Riju.
29 reviews1 follower
June 24, 2021
দুরধ্যয় এর আভিধানিক অর্থ পাঠ করা দুঃসাধ্য এমন, দুষ্পাঠ্য। দুরধ্যয় উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র তনিম ও ঠিক দুরধ্যয় নামটির মতনই। যাকে সমাজ পাঠ করতে পারেনি।

বইটির শুরু হয় তনিমের আত্মহত্যা করতে গিয়ে ব্যার্থ চেষ্টার কাহিনি দিয়ে। তনিমের আত্মহত্যার কারণ তার জেন্ডার আইডেন্টিটির ক্রাইসিস। পুরো উপন্যাসটি গড়ে উঠেছে তনিমের আত্মকাহিনী নিয়ে। তনিম একজন নন বাইনারি পারসন। তনিম থেকে তনিমায়ও সে সাজিয়েছিলো নিজেকে। কিন্তু কোনটাতেই খাপ খাওয়াতে পারেনি নিজ শরীরকে। তার এই স্বাভাবিক আচরণ ই সমাজ ‘অস্বাভাবিক’ আখ্যা দিয়ে তার উপর চলেছে হিংস্র সব নির্যাতন। প্রথমে পরিবার থেকে শুরু করে তারপর সহপাঠী। এছাড়াও চলেছে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারিরীক অত্যাচারও। তার শরীরের উপর ঝাপিয়ে পড়া যেনো ফরজ কাজ হয়ে দাড়িয়েছিলো সবার। পিতা মাতা সন্তানের প্রজেক্ট নয় কিন্তু তনিমকে প্রজেক্ট বানিয়ে তাকে ব্যবহার করেছে সকলে। তনিমের এই অস্তিত্বের লড়াইয়ের এর সম্বন্ধে জানার জন্য পড়া উচিৎ বইটি।

দরধ্যয় প্রকাশের সময় লেখকের সাথে সাথে আমিও খুব বেশি আহ্লাদিত ছিলাম বলা যায়। আমি বেশ খুশি এবং অবাক হয়েছিলাম লেখক এর এই ভিন্নধর্মী কুইয়ার উপন্যাসটি পড়ে। উপন্যাস টি নন বাইনারি ক্যারেকটর এবং তার আইডেন্টিকাল ক্রাইসিস নিয়ে লেখা। কাহিনি বিশ্লেষণ খুবই চমৎকার এবং গল্পের চরিত্রের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার বর্ণনাগুলো খুবই হৃদয়স্পর্শী।

সেক্স এবং জেন্ডার দুটো শব্দ সম্পুর্ন আলাদা দুটি জিনিস। এবং মজার ব্যপার হচ্ছে বাংলা ভাষায় সেক্স এবং জেন্ডার দুটোর আলাদা কোন আভিধানিক অর্থ নেই দুটোকেই ‘লিঙ্গ’ দিয়ে প্রকাশ করা হয়। তাই হয়ত বলা যেতেই পারে এই ভাষার মানুষদের এই দু’টি শব্দের পার্থক্য বোঝাতে অনেকেরই বেগ পেতে হয়। এছাড়াও বাংলা সাহিত্যেও ক্ষুদ্র যৌনবৈচিত্রময়দের নিয়ে লেখা নেই বললেই চলে। আর হাতেগোনা যেগুলো আছে সেগুলো আমার কাছে মনে হয়েছে স্রেফ লাভ ফ্যান্টাসি রিলেটেড। আসলে এই ক্ষুদ্র যৌনগোষ্ঠীরা এই প্রতিক্রিয়াশিল সমাজে কীভাবে যুদ্ধ করে টিকে আছে তার বর্ণনা কেউ দিতে চাননা। কেনো চান না এটা একটা বড় প্রশ্ন। ধর্মের ভয়ে, সমাজের প্রচলিত সংস্কারের ভয়ে? হতে পারে। ঐ ব্যাপারে না যাই। যা বলছিলাম। ‘দুরধ্যয়’ উপন্যাস লেখার মতন যথেষ্ট সাহস থাকা দরকার তাই এখানে লেখকের সাহসের তারিফ না করে পারা যায়না। । বাংলা সাহিত্যে বিশেষ করে পূর্ব বঙ্গের সাহিত্যের মান খুবই ভঙ্গুর তা সচেতন পাঠক মাত্রই জানেন। এখানের লেখকগুলো বেশ উদাসীন। কাহিনি নির্বাচনে এদের নতুনত্ব পাওয়া যায়না। প্রেমকে নানা রঙে সাজানোতে এরা ব্যস্ত। যাদের লেখা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা হয়না তাদের লেখা সাহিত্যের পথযাত্রায় বেশিদিন টিকে থাকতে পারেনা। লেখায় প্রতিবাদ, অন্ধকার বাস্তবতা না থাকলে সেই লেখা সময়ের সাথে সাথে হারিয়ে যায়।

'দুরধ্যয়' উপন্যাসটি কুইয়ার সাহিত্য নিয়ে লেখার এক নতুন দিক উন্মোচন করেছে বলা যেতে পারে। "তুমি পুরুষ নাকি মহিলা?" এই দুই ধারার ভেতর যে প্রচুর সীমাবদ্ধতা রয়েছে তাও ভাবাবে এই লেখাটি।

এই বইটি সকলের অবশ্যই পড়া উচিত। এই বইটি সকলকে ভাবাতে বাধ্য করবে। সকলের জানা উচিৎ নারী এবং পুরুষ এর মিথটা কতটা ভঙ্গুর। জানা উচিত ক্ষুদ্র যৌনবৈচিত্র্যময় মানুষদের অস্তিত্বের লড়াই সম্বন্ধে। জানা উচিৎ জেন্ডার এবং সেক্স ব্যাপারটা নিয়ে।

দুরধ্যয় পড়ুন, ভাবুন এবং প্রশ্ন করুন।
2 reviews2 followers
July 7, 2021

I was planning on writing a review on Duradhyay for the last few days, but could not manage to gather both courage and words that would do justice to this book. The reason for me being hesitant is that this is not some ordinary book that you can leave unattended after reading, nor is this a book on which you can write a generic review. This book needs special attention, especially in a country like Bangladesh, where people are only keen to mentally torture the queer community with their unsolicited and hurtful comments. The people of this country are not eager to listen to their complicated stories; they are not ready to recognize their plights and complications of living in a homophobic country. It takes great bravery to put forward a book of this kind in front of a population that is accustomed to remaining silent and indifferent towards anything out of the ordinary.
This book follows the story of a teenage boy named Tonim, who continuously broods over his identity and his existence. “Who am I?” and “why am I like this?” are two frequent questions that recur to him almost every day. Does he eventually find his answer? Well, to know that you’ll have to read the book. For me, reading this book has been an emotional roller coaster and I cannot fathom what the writer must have felt while writing this. I thought I knew my friend all too well until the day I read this book, because the incidents that he provided are way too personal and kudos to him for sharing those unapologetically with the readers. I recommend this book to every sane and rational human being, not with a hope that they’ll change their outlook altogether, but with an expectation that maybe, maybe they’ll start acknowledging the mere existence of people like Tonim.
Profile Image for Ismat Sumaiya.
29 reviews32 followers
July 8, 2021
বই : দুরধ্যয়
লেখক : তানভির অনয়
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৮৮
পার্সোনাল রেটিং : ৪/৫
.
'Don't judge a book by its cover' প্রচলিত উক্তিটি কর্ণপাত না করেই অসম্ভব সুন্দর প্রচ্ছদ��ি দেখে বইটি প্রিঅর্ডার করেছিলাম। যা ভেবেছিলাম তাই-ই। প্রচ্ছদ এবং উপন্যাস যেন একে অপরের পরিপূরক। বইয়ের প্লটটা খুব সুন্দর। আমাদের মনের গহীনে লুকিয়ে থাকা কথাগুলো লেখক অকপটে বলে গেছে উপন্যাসটিতে।
.
গল্পটা শুরু হয় তনীম নামের এক ছেলের আত্মহত্যায় বিফল হয়ে বেঁচে ফিরে আসার মাধ্যমে।ছেলে বলব না ঠিক, মেয়েও বলা যায় না।আচ্ছা কেমন হয় যদি ছেলে কি মেয়ে এই ক্লাসিফিকেশনটা করা না হলে?
গল্পটাতে ধরা দিয়েছে সেসব মানুষের গল্প যারা শারীরিক লজ্জায় ঘর থেকে বেরোতে পারে না,প্রতি পদে পদে যাদের সহ্য করতে হয় এক অসহনীয় শারীরিক কিংবা মানসিক অত্যাচার। ঐসব মানুষের জন্মদাতা- জন্মদাত্রীদেরও সহ্য করতে হয় মেনটাল টর্চার এমন সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য যে সন্তান কিনা নিজের অস্তিত্ব টের পাই না,ছেলে হয়ে মেয়ের সাজসজ্জায় উৎসুক! যে ছেলেকে হাফ লেডিস কিংবা হিজড়া অথবা গে বলে বুলি করা হয় সে তো আমাদের মতোই মানুষ, রক্তমাংসে গড়া! আচ্ছা সমাজের এত কিসের দায় যে আমাকে আমার চালচলন, আমার পোশাক-আশাকের উপর আঙুল তুলবে? লেখক খুব সুন্দর করে বর্ণনা করেছে।
.
আচ্ছা গল্পটা তনীমের না হয়ে তো আমাদেরও হতে পারতো তাই না! আমাদের পোশাক,আমাদের চালচলনে তো প্রতিনিয়ত সমাজ আঙুল তুলছে,ট্রমা ক্রিয়েট করছে। কেন? এই জিনিসগুলো কি একান্তই আমাদের হতে পারতো না?
.
বইটি এক বসাতে শেষ করার মতোই। কিন্তু আমি দুই বসাতে শেষ করেছিলাম। আস্তে আস্তে আগাচ্ছিলাম।ভালো লাগছিল খুব। মাঝে মাঝে মনোযোগ সটকে যাচ্ছিলো বানান ভুলের জন্যই। আর মনে হয়েছে একটু তাড়াহুড়ো করে বইটি শেষ করা হয়েছে তাই ১ তারা কমিয়ে দিয়েছি।
বইটি খুব ভালো লাগবে। হাইলি রিকমেন্ডেড।
1 review7 followers
June 27, 2021
পড়া শেষে কিছুটা সময় একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম।
পড়তে কষ্ট হচ্ছিলো। বার বার ট্রমায় আঘাত হানছিলো।নিজের অস্তিত্ব নিজ সত্ত্বা চিৎকার করে সকলকে জানাবার ইচ্ছা করছিলো.... আরো অনেক কিছুই ইচ্ছা হচ্ছিলো।

বইটি তনিম নামক একজনের তার নিজ সত্ত্বাকে আবিষ্কার করা সংক্রান্ত ঘটনা। সবাইকে পড়ার অনুরোধ করবো। এই বইটি মেইন্সট্রিম মানুষের পড়া দরকার। খুব বেশি দরকার! সমাজের এমন বই পড়ে রিয়েলাইজেশন আসা দরকার।

লেখকের প্রতি অনেক অনেক অভিনন্দন এবং পাঠকদের বইটি পড়ার আহবান রইলো।
1 review
August 29, 2021
"শাড়ি পরে ঘুরাফেরা করা আমার মানা, কিন্তু পাঞ্জাবিতে যা ইচ্ছা তাই করার অনুমতি আছে। জামাকাপড়ের রাজনীতি হলো সাংঘাতিক নোংরা- না আছে ভিত্তি, না আছে কোনো প্রকারের লজিক।"...

Tanveer Anoy এর দ্বিতীয় উপন্যাস- "দুরধ্যয়"।

জেন্ডার আইডেন্টিটি ক্রাইসিসের মধ্যে থাকা সতের বছর বয়সী তনিমের ব্যার্থ আত্মহত্যা চেষ্টার কাহিনী দিয়ে গল্পের শুরু। এরপর একে একে উঠে আসে একজন নন বাইনারি পারসনকে "অস্বাভাবিক" ট্যাগ লাগিয়ে দিয়ে প্রগতিশীল সমাজের পাশবিক নির্যাতনের চিত্র। একজন ছেলেও যে রেইপ এর শিকার হতে পারে আজও আমাদের সমাজের দুর্বল মস্তিষ্কে তা বোধগম্য হয়ে ওঠেনি৷ নিজের সত্ত্বাকে চেনার বয়সে পরিবারের সদস্যদের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের অভাব, বন্ধু বা সহপাঠীদের বুলি... এসবকিছু তনিমের মতো উঠতি বয়সী কুইয়্যার মানুষদের জীবনকে কীভাবে বিষিয়ে তোলে তা হৃদয়স্পর্শী বর্ণনায় তুলে ধরেছেন লেখক। নিজেকে কেবল তনিমা রূপে সাজিয়েও তৃপ্ত হয়নি তনিম। কারণ "কখনোই সে সুবোধ্য ছিল না কারোর কাছেই। দুর্বোধ্যতাই তার পরিচয়।
সে দুরধ্যয়।"
"পুরুষ" এবং "মহিলা"- এই দুই বক্সের ভেতরকার সীমাবদ্ধতা নিয়েও ভাবাবে লেখাটি৷ ❤️
1 review
February 6, 2022
The very first Bangladeshi book I have read is written based on a non-binary identity and, their struggles. It will take you on the journey 'how it exactly feels to be a non-binary person in Bangladesh'. The struggles are so real. Worth reading. Thanks to the writer for writing this book. Long way to go.
Profile Image for Chandreyee Momo.
219 reviews30 followers
February 20, 2024
বইটায় এমন বিষয় নিয়ে লেখক কথা বলেছেন, এমন একটা প্রশ্ন তুলেছেন সমাজের কাছে যে এর উত্তর দিতে হাজারবার ভাবতে হবে৷ এমন একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন যা নিয়ে হয়তো খুব কম কাজ হয়েছে। লিঙ্গ বৈষম্য, বডি শেমিং, রেপিং, মানসিক অত্যাচার, মানুষের প্রতি ইনসেন্সিটিভ আচরণ ইত্যাদি বিষয় উঠে এসেছে ছোট এই বইয়ে।
Profile Image for Muntasir Rahman.
2 reviews4 followers
August 16, 2021
দুরধ্যয় উপন্যাসে লেখক সমাজের সেই নিষিদ্ধ গল্প আলোচনাতে এনেছেন যাদের কষ্ট-ক্ষতগুলি আজো অনুচ্চারিত এই পুরুষতান্ত্রিক হেটেরোম্যাটিভ বাইনারি সাহিত্য সমাজে। মূল চরিত্র তার নিজের অস্তিত্ব নিয়ে সংশয়ে। কখনো সে তনিম, কখনো সে তনিমা, কিন্তু আসলে কে সে? গল্পের শুরুটাই হয় স্কুল পড়ুয়া মূল চরিত্রের আত্মহত্যা চেষ্টার পরের অভিজ্ঞতা নিয়ে। জ্ঞান আসবার পরে সে বেচে আছে নাকি মারা গেছে! আধো জাগরণে সেই ধাঁধা মেলানোর গায়ে কাটা দেয়া চিন্তার এক বর্ণনা। জীবনে একটা সময় আমি নিজেও সুইসাইডাল ছিলাম। তাই গল্পে উঠে আসা আত্মহত্যার আগের সেই চেপে ধরা হাঁসফাঁস করা কষ্টের অনুভূতি গুলি নিজের সেই অনুভূতির সৃতি সাথে মিলাতে পারছিলাম। আত্মহত্যার চিন্তা যখন মাথায় চেপে বসে তখন একজন মানুষ নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে সেই গল্প বলবার মাঝেও এক জায়গায় লেখক হাসিয়েছেন আমাকে এত বিমর্ষতার মাঝে। আত্মহত্যা চেষ্টার পরবর্তী কাহিনী রহস্য দিয়ে শুরু করলেও অধ্যায়ের শেষে এসে সেটার সমাধান হয়।

আপনাদের কারো কি মনে আছে যে কিশোর বয়সে দামি জিনিষপত্র হারালে বাবা মা কি বলবে সেই ভয় কিংবা বাবা মার মাঝে ঝগড়া শুনবার কষ্টকর অভিজ্ঞতা ? দ্বিতীয় অধ্যায়ে একজন স্কুল পড়ুয়া কিশোর তার জিনিষপত্র হারালে কি হতে পারে সেটাও বাবা মায়ের ভয়ংকর নিষ্ঠুর কথাকাটির মাধ্যমে তুলে আনেন। খুব অল্প কথোপকথনে লেখক সুনিপুণ ভাবে বাবা মায়ের মাঝে সম্পর্কের টানাপড়েন, তাদের চরিত্রের দোষত্রুটি নিয়ে নোংরা আক্রমণ, পরিবারের অর্থনীতিক অবস্থানসহ কিছু সুক্ষ বিষয় তুলে আনেন,যা বিশেষভাবে লক্ষণীয়। দ্বিতীয় অধ্যায়টা একি সাথে উত্তেজনাকর এবং দুরূহ একটা অধ্যায়। পরিবারে বাবা, মা, বড় সহোদরের শেমিং, এবিউজ কেমন হইতে পারে সেই অনুভূতিগুলির মধ্যে দিয়ে আবার গিয়েছি পড়বার সময়। এবং তনিমের মাঝে নিজের লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে যে সংকট, নিজের আলাদা সত্ত্বা তনিমাকে নিয়ে যেভাবে পরিবারে যে ভীতিকর কাহিনী ঘটে যায় তা খুব সাবলীল ভাবে তুলে এনেছেন লেখক।

এরপরের অধ্যায়ে তনিমের ব্যাডাগিরির নামে বাসায় ভাংচুর করা দেখায়, মজার বিষয় তখন তার পরিবার চুপ থাকে। সামাজিকভাবে আইডেন্টীফাই করা একজন পুরুষকে ভাংচুর করা নিয়ে পরিবারের সমস্যা নেই, কারণ ছেলেরা তো এটা করবেই, কিন্তু তনিম যদি তনিমা হিসাবে প্রকাশ করতে চায় নিজেকে তাহলে পরিবার তাকে জেঁকে ধরে এবিউজ করবে। এরপরে ড্রয়িংরুমে আত্মীয়দের তনিমের আত্মহত্যা নিয়ে নিয়ে শেমিং টোনে কথা বলা, তনিম কেন খেলাধুলা করে না এসব নিয়ে কুৎসিত শেমিং আর বাচ্চাদের নিয়ে আত্মীয়দের ড্রয়িং রুমে অসুস্থ প্রতিযোগিতার অসস্তিকর উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনা তুলে আনেন। এটা তনিমকে কিভাবে আহত করে সেটা বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিশু কিশোররা অনুভব করতে পারবেন, কারণ আমাদের বেশিরভাগ পরিবারের বাবা মা এমন বিষাক্ত ভাবে বাচ্চাদের ট্রিট করে। তনিমকে নিজের লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে যে সংকট সেখানে একটা ভাল বই কেমন রোল প্লে করতে পারে তা আনবার চেষ্টা করেছেন লেখক, তবে এটা আরও শক্ত ভাবে দেখালে ভাল হত, কারণ বইটা পড়বার পরের প্রভাবটা সেভাবে জোরালো ভাবে গল্পে আনেন নি।

চতুর্থ অধ্যায়টা গ্রাউন্ডব্রেকিং একটা অধ্যায় যেখানে আমাদের সমাজে ছেলেদের স্কুলের নস্টালজিয়া আর গর্বের আড়ালে কি পরিমাণ এবিউজের শিকার হয় একজন ছেলে তা উঠে এসেছে। তনিমকে কিভাবে তার শিক্ষক পড়ানর সময় গায়ে হাত দিয়ে যৌন হয়রানি করে ,বয়েজ স্কুলে কিভাবে একটু নরম মেয়েলি ছেলেদের শেমিং করে ,সেটা কি রকম ট্রমাটিক তা উঠে এসেছে। বয়েজ স্কুলে পড়বার সময় নিজের লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে একজন কিশোর কিভাবে গাইডেন্সের ওভাবে কতটা অসহায় ভাবে নিজের চিন্তায় ছটফট করে তা হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।তবে লিখার মধ্যে বোমটা ফেটেছে যখন কিশোর তনিমের যৌন বৈচিত্রময়তার যে আকাঙ্ক্ষা সেটা জানবার পরে কিভাবে তার কাছের বন্ধু শেইম করে। এবং একটা কিশোর ছেলে ধর্ষণের শিকার হলে স্কুল কর্তৃপক্ষ কিভাবে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করে এবং আমাদের সমাজে যে এখনো মনে করে একটা ছেলে যে আরেকটা ছেলেকে ধর্ষণ করতে পারে না সেটা এক মানসিক পীড়াদায়ক ঘটনার বর্ণনার মাধ্যমে তুলে এনেছে লেখক,সেটা বর্তমান পরিস্থিতিতে খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই কম বেশি টক্সিক বয়েজ স্কুল কালচারের শিকার, কিন্তু এটা এত দিন পর্যন্ত সাহিত্যে একদমই আলোচনা করেনি লেখকরা অথচ আমাদের বেশির ভাগ সাহিত্যিক পুরুষ।

এরপরের অধ্যায় গুলিতে আরো অনেক বেশি ভয়ংকর অবস্থার মধ্যে দিয়ে যায়। নিজের তনিমা সত্ত্বাকে প্রকাশ নিয়ে পারিবারিক নির্যাতন, একজন কিশোরের বাড়ি ছাড়া হওয়া মত বিষয়গুলি এসেছে,যেটার মধ্যে দিয়ে আমাদের লিঙ্গ বৈচিত্র্যময় সকল মানুষের জীবনের ট্রাজেডির প্রতিফলন তুলে এনেছেন। বাসা ছাড়বার পরে একজন লিঙ্গ ও যৌন বৈচিত্র্যময় কিশোরের সাথে রাস্তায় হিজড়া যৌনকর্মীদের পরিচয় এবং যে অনিরাপদ কষ্টের জীবন একজন হিজড়া যৌনকর্মী কিভাবে শক্তভাবে সামলিয়ে বেচে থাকা তনিম/ তনিমার চোখে উঠে এসেছে। তবে এখানে হিজড়াদের উল্টী ভাষার ব্যবহারটা দেখাতে পারতেন লেখক। এরপরে মানসিক হাসপাতালের অভিজ্ঞতা, প্রিডেটর রেপিস্টের হাতে পড়বার অভিজ্ঞতা গুলির মত নিষিদ্ধ জীবন কাহিনী গুলি তুলে এনেছেন। এবং একজন লিঙ্গ ও যৌন বৈচিত্র্যময় কিশোর কিভাবে এই শ্বাপদ সঙ্কুল পরিবার ,সমাজ আর প্রতিষ্ঠান গুলির ভিতরে টিকে থাকার সংগ্রাম করে সেই চাপা পড়া লুকিয়ে রাখা সমাজের কুৎসিত চরিত্রকে বের হয়ে এসেছে, যেটা তাদের দায়িত্ব নিয়ে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য করবে, মানুষকে সেন্সেটাইজ করতে ভূমিকা রাখবে। এই সমাজে যে শিশু কিশোররা তাদের আপনজনদের হাতে নিরাপদ নয়, সাহায্য করবার নাম করে এসেও যে একজন মানুষ হ্যারাস করতে পারে সেটার এক বেদনাদায়ক চিত্র দুরধ্যয়। আমাদের অনেকেই জীবনের এই কথা গুলি কেউ বলতে সাহস পায় না, নিজের ভিতরে পুষে রেখে কুঁড়ে কুঁড়ে মরে প্রতিদিন। ভিক্টীমরা একটু হলেও এই গল্পের মাধ্যমে নিজেদের সেই না বলা কথার মুক্তি খুঁজে পাবে।
1 review1 follower
September 22, 2021
কখনো কি সমাজের কোনো অসঙ্গতির মধ্য দিয়ে গিয়েছেন?আমাদের এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা,যা কিনা আমাদের লিঙ্গ পরিচয়কে কেবল নারী-পুরুষের ছঁকে বেঁধেছে,আমরা কি কখনো পেরেছি এই দ্বি-সত্তার বাইরে চিন্তা করতে?কখনো কি কোনো পুরুষ পেরেছে;নারীর মত করে নারীর মধ্যকার যৌন বাসনা অনুভব করতে?কিংবা কোনো নারী কি পারবে কোনো পুরুষের যৌন আকাঙ্ক্ষার প্রকৃত প্রকৃতি বুঝতে?এইসব প্রশ্নের উত্তর হয়ত খুব সহজ।কেবল নিজেকে এসব প্রশ্নের সামনে রাখলেই হয়ত কারোর উত্তর পেয়ে যাবার কথা।

তবে এবার বলুন তো,এমন মানুষ কখনো দেখেছেন কিনা,যারা দেহে পুরুষ কিন্তু আচরণে,চিন্তায় কিংবা ভালো লাগায়,মন্দ লাগায় নারীসুলভ সবকিছুই প্রকাশ পায়। তাদের জায়গায় নিজেকে রেখে কি কখনো চিন্তা করতে পারবেন?কিংবা এর উল্টোটায়?রূঢ় বাস্তবতা হল,হয়ত কখনোই পারবেন না।আমাদের সমাজে এসব মানুষের উপস্থিতি নারী-পুরুষের মত অজস্র না হলেও,চোখে পড়ার মত।সমাজের মানুষ জন এইসব নারীসুলভ পুরুষ কিংবা পুরুষসুলভ নারীদের শৈশব থেকেই,তাদের এইসব আচরণের জন্য,ভালো লাগা-মন্দ লাগার জন্য নানান রকম অপমানজনক শব্দ "হাফ-লেডিস","হিজরা", "মাগী" ইত্যাদি বলে বুলিংও করেন।অর্থাৎ সমাজের মানুষজন এটি বুঝতে পারেন যে,তাদের মধ্যে সমাজের চরিত নারী-পুরুষের বাইরে কিছু অসঙ্গতি আছে,কিছু বৈচিত্র‍্য আছে।কিন্তু এই বৈচিত্র‍্যময় মানুষ গুলো যখন বড় হয়ে নিজেকে মেনে নিতে শিখে যায়,যখন নিজের যৌন আকাঙ্ক্ষাকে নীরবে নিভৃতে প্রকাশ করেন,তখনই এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় নানান বিধিনিষেধের পশরা সাজিয়ে।সমাজ ও সত্তার এই দ্বন্দ্ব,অসঙ্গতির যাতাকলে পিষ্ট হতে থাকে এইসব বৈচিত্র‍্যময় লিঙ্গ ও যৌন পরিচয়ের মানুষগুলো।

"দুরধ্যয়" এমনি একটি উপন্যাস,যেখানে সমাজের এইসব উপেক্ষিত মানুষদের কথা একটি "তনিম" চরিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।সুতরাং বুঝতেই পারছেন,উপন্যাসটির বিষয়-বস্তু খুব একটা সহজ নয়।এই সমাজের অন্তরালে বসবাস করা একটি মানুষের বেঁচে থাকার লড়াইয়ের কাহিনী এতে বর্ণনা করা হয়েছে।তাদের জীবনেও যে প্রেম আসে।তারাও যে সমাজের মানুষ দ্বারা নিগৃহীত,নির্যাতিত,ধর্ষিত পর্যন্ত হন কিংবা তাদেরও যে ভালো লাগা,মন্দ লাগার নানান বিষয়াদি আছে,আমরা সমাজের মানুষেরা সেসব শুনতে চাইনা,গুরুত্ব দিতে চাইনা বলেই তাদের সেসব গল্প সমাজের অন্তরালেই থেকে যায়।সুতরাং সমাজের মূলস্রতের বাইরে গিয়ে এমন একটি উপন্যাস রচনা ও প্রকাশের ক্ষেত্রে লেখক তানভির অনয় যে সাহস ও শ্রম দেখিয়েছেন,সেটি বাহবা পাওয়ারই যোগ্য।

২০২১ সালের বই মেলায় তানভির অনয়ের রচিত প্রথম উপন্যাস "পুণ্যাহ" পড়ার সুবাদেই বুঝেছিলাম,তিনি পাঠক সচেতন এবং লেখার ক্ষেত্রে যেকোনো ঝুট-ঝামেলা এড়িয়ে চলেন।খুব সহজ ভাষায় কোনো জটিল বিষয়ও তিনি গড়গড় করে বলে যান।"দুরধ্যয়" উপন্যাসটি পড়েও এর ব্যতিক্রম চোখে পড়েনি।আরেকটি বিষয় না বললেই নয়,অনয়ের প্রথম উপন্যাসটির ক্ষেত্রেও লক্ষ্য করেছি,তিনি হয়ত তার উপন্যাসকে কলেবরে ছোট রাখাতেই সাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।কিন্তু একটি উপন্যাসের সার্থকতাই নির্ভর করে,তার মধ্যকার চরিত্রগুলোর পূর্ণতার উপর।তাই একটি গল্পে যত কম চরিত্র আনা যায়,ততোই ভালো হয়।এদিক থেকে দুরধ্যয় সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও,চরিত্রগুলোর পূর্ণতার জন্য হলেও উপন্যাসটিকে কলেবরে আরো বাড়ানো যেত।তাই খুব ছোট এই উপন্যাসটি পড়ে শেষ করে ফেলতে কারোর খুব বেশি সময় লাগার কথা নয়।

বইটির প্রচ্ছদ সুন্দর।একটি উপন্যাসের ক্ষেত্রে এর প্রচ্ছদ আয়না মত কাজ করে।যা দেখে একজন পাঠক,গল্পটি সম্বন্ধে একটি স্থুল ধারণা পেয়ে থাকেন।অনেক ক্ষেত্রে কেবল প্রচ্ছদই একজন পাঠকে বইটি পড়তে আকৃষ্ট করে।তবে "দুরধ্যয়" এর প্রচ্ছদটি দেখে চিত্রশিল্পীর রুচিবোধ ও নান্দনিকতার প্রসংশা করতেই হবে।
���ব কিছু মিলিয়ে,দুরধ্যয় উপন্যাসটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে; সুখপাঠ্য বলেই মনে হয়েছে।আশা রাখছি তানভির অনয়ের রচিত "দুরধ্যয়" উপন্যাসটি ব্যাপক পাঠক জনপ্রিয়তা কুড়াবে।
2 reviews2 followers
July 27, 2021
word দুরধ্যয় means something which is hard to read or understand or comprehend. I somehow felt the same while reading this book but, in a different way. No! It was not difficult to understand but it was tough for me to read what I was just reading. In Bengali literature, “Queer” is not a subject anyone has ever brought proper light on it. I have watched and read many other international works on this specific topic but I have never read anything from the context of my own country. The author of this book Tanveer Anoy took a risk to talk about something many feels dreaded of.

The story is about a teenager, and his journey to explore who he is, if he falls under either of the spectrum our society considers as “Ideal”. I would not say much on it as it can bring spoiler.

I think if I have read this book just 2-3 years back, I would have had a better explanation of what is happening in the story. However, I have become so sensitive that it was difficult for me to fathom the gravity of what I was reading. It is so out of my reality that it shakes my heart what people with different choice must go through in this country. The most beautiful part of this book is how it naturally unveils the ugly face of mockery done by Bangladeshi males, their toxic ego and narcissistic nature.

The only thing that I think the writer can improve is his diction. Often his diction comes across as hard and difficult which hinders emotional quotient of the book.

Considering the recent event surrounding some BUET students, it came out as shock to many how young males can possibly talk about females in private. If you read this novel, you’ll get to know the uglier side of them. I highly recommend everyone to read this book. Maybe, you will feel the story of the other side. 🙂
Profile Image for Saffat.
93 reviews67 followers
October 2, 2022
ক্ল্যাস টেনে পড়ুয়া একজন মানুষ আত্নহত্যা করতে যায় কোন দুঃখে? নিশ্চয় প্রেম জনিত ব্যাপার স্যাপার। উহু, ব্যাপারটা আইডেনটিটি ক্রাইসিসে ভোগা নিয়ে।
দুরধ্যয় এর মানে যারে কেউ পড়তে পারে না। তনিমের ক্ষেত্রেও হইছে তাই, তার ভেতর বাস করে আরেক সত্তা, তনিমা তার নাম। জন্মগতভাবে সে ছেলে হলেও তার মধ্যে যে মেয়েলী স্বভাব এবং এইটা নিয়ে যে স্ট্রাগল সেইটা ঘিরেই আবর্তিত দুরধ্যয়।

তনিম যে মেয়ে হতে চায়, লিঙ্গ পরিবর্তন করতে চায় ব্যাপারটা এমনও না। ওর যখন ভালো লাগে মেয়েদের ড্রেস পড়ে, এইতো। তবে সমাজের চোখে এইটা দৃষ্টিকটু, সমাজ তোমারে বিভিন্ন লেবেল বা তকমা লাগায়ে দিবে। চুল লম্বা রাখলে, মাথায় ব্যান্ড পড়লে, কানের পাশে ফুল গুজলে, নখে নেইলপলিশ দিলে তোমারে হাফ লেডিস, হিজড়া বলবে। আর সমাজের কথা বাদ ই দিলাম পরিবার ই স্বাভাবিক ভাবে নেয় না। আমরা আসলে বিভিন্ন লেবেলে অভ্যস্ত, তার বাইরে ব্যতিক্রম ঘটলেই ব্যাপারটা অস্বাভাবিক ধরে নেই।

একটা সাধারণ উদাহরণ নেই, ধরেন আপনি ছেলে মানুষ বাট আপনার আবেগ বেশি এইটা নিয়ে আপনার কথা শোনাই লাগবে, মাস্ট। মানুষজন বলবে মেয়েমানুষের মতো আবেগ কেন তোর/তোমার? আবার, ধরেন আপনার মানুষজনের সাথে মিশতে ভালো লাগে না ততো, নিজের মত গুটায়ে থাকতে ভালো লাগে, এইটা নিয়েও কথা শুনতে হবে মেয়েমানুষের মতো সারাদিন ঘরে বসে কি করিস/করো?

তনিম নিজেরে কোন তকমায় আটকাতে বিশ্বাসী না, তার ভেতর যেই সত্ত্বায় থাকুক না ক্যানো , এন দ্যাটস দা স্পিরিট!

দুরধ্যয় নামটা খুব দুর্বোধ্য। বইটার দৈঘ্য তেমন বেশি না, আশি পৃষ্ঠার মতো হবে। চাইল্ডহুড ট্রমা, আইডেনটিটি ক্রাইসিস, রেপ এইজাতীয় ভারিক্কি কিছু বিষয়, সমাজে যেগুলো এখনো ট্যাবু যা নিয়ে সচরাচর কথা হয় না তাই বলা হইছে। সত্যি বলতে বইটা আমার প্রত্যাশা তেমন পূরণ করতে পারেনি। লেখকের তৃতীয় বই হিসেবে আরো গভীরতা আর পরিপক্কতা আশা করেছিলাম।

বত্ত্ব, টনি মরিসনের বুল্য়েস্ট আইজ বহুদিন ধরে টিবিআর এ পড়ে আছে। মনে করায়ে দেয়ার জন্য লেখকরে ধন্যবাদ জানায়।

আচ্ছা, দুরধ্যয় এ মাত্রা নেই ক্যানো? লেখক বোধহয় এইসব লেবেল টেবেল, মাত্রা টাত্রার ধার ধারেন না একদম ই।
আমার মনে হইছে তানভির অণয় এর মোস্ট ইন্টারপার্সোনাল ওয়ার্ক বইটা। দুরধ্যয় বাংলা সাহিত্যে কাল্ট ক্ল্যাসিকের মর্যাদা পেলে খুব একটা অবাক হবো না‌।

লরেন্স এনিওয়েজ নামে ডোনাল এর একটা সিনেমা আছে, দুধর্যয় যাদের ভালো লাগবে দেখতে পারেন সিনেমাটা।
June 28, 2021
দুরধ্যয়
লেখক - তানভির অনয়
প্রচ্ছদ - অংকুর সিনহা, স্বাধীন
প্রকাশক - আনন্দম
মুদ্রিত মূল্য - 200/-
ISBN 987-984-8048-55-9


বেশ ভালো লিখেছেন লেখক। অন্তত প্লট খুবই ভালো। আমি তপু পড়ার সময়কার অনুভূতি হচ্ছিল। তনিমের কষ্টগুলো হৃদয় ছুঁয়ে যাচ্ছিল।

বেশকিছু মুদ্রণপ্রমাদ আছে। কোন বানানরীতি অনুসৃত হয়েছে তাও বোধগম্য নয়। কিছু কিছু জায়গায় শব্দচয়ন একুরেট লাগেনি। যেমন - দরাজ শব্দটি। অন্তত দু'বার এসেছে ভিন্নভিন্ন পরিস্থিতিতে। রাগতস্বর বা বিস্ময়কর দুটি ভাবই এই শব্দটি দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। পুরো লেখনি খুবই সরলরৈখিক। সেক্ষেত্রে আমি হয়ত উপন্যাস না বলে একটি বড় গল্প বলতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করব। অবশ্য অনেকে পথের পাঁচালিকেও সার্থক উপন্যাস বলতে চায় না, তাতে অবশ্য কিছুই যায় আসে না। সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়া এবং নিউইয়র্ক পৌঁছানোর মাঝখানটা ভ্যাকেন্ট, ঠিক কিভাবে ডায়েরি উদ্ধার করলো তাও অস্পষ্ট। এই অপূর্ণতাটুকু এখনো খচখচ করছে। আর হ্যাঁ! উল্টি ভাষা কি আসলেই এমন?

বিভিন্ন বর্ণনা যেমন স্লিপিং পিল গেলার, বা দেয়ালের রঙের বেশ জীবন্ত। দ্য ব্লুয়েস্ট আই পড়বার জন্য মুখিয়ে আছি। প্রচ্ছদ লা জওয়াব! মৃত্যু কবিতার ম্যানুস্ক্রিপ্ট সংযোজন ও বেশ নান্দনিক, বলতেই হবে।

ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়েছে এই মানুষদের গল্প আরো বৃহৎ ক্যানভাসে হবার দাবি রাখে। সেক্ষেত্রে আটাশি পৃষ্ঠা বেশ ছোটোই৷ অবশ্য অনেক বড় ঘটনাকে অল্প কয়টা পৃষ্ঠায় বেঁধে ফেলাও কিন্তু কম কৃতিত্বের নয়। হুমায়ূন আহমেদও '১৯৭১’ মাত্র সত্তর পৃষ্ঠায় আটকে দিয়েছিলেন। আর লেখক যে ট্যাবু নিয়ে লিখেছেন, তা অদম্য সাহসিকতার পরিচয়।

আগামী দিনের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।
This entire review has been hidden because of spoilers.
1 review
August 16, 2021
This is an unconventional book to say the least. Frankly, I didn’t expect what I was about to experience here at all when I first saw its release. There are quite a number of trigger points that should be addressed which are very much going to affect people who have gone through similar traumas in life such as the main character Tonoy. But that is the best part, the book doesn’t sugarcoat anything, it lays out everything the way it is. The hardships of a non-binary person in a very much forced binary society is unimaginable for the common person. The grounded nature of the story makes you uncomfortable in a way that you’re bound to get exasperated. The layers of torture and bullying are documented perfectly. The pacing is admirable too. I will say thia again, this is an incredibly uncomfortable read but every bit is worth it. I do not want to recount incidents from the book because it already is quite short and I'll let you experience it wholly. The writing of Tanveer Anoy is impeccable and I am eagerly waiting for more of his work.
The one star that is missing is for not having trigger warnings.
Profile Image for Faria Tabassum.
41 reviews15 followers
August 19, 2021
সমাজের তো আমাদের রক্ষা করার কথা তাই না? কিন্তু এই কাজটি বাদে অন্যান্য সব কাজেই কেবল সমাজের আগ্রহ। এটা করবে না, ওটা বলবেনা, এভাবে চলবে না, তুমি এসব করতে পারবে, ওসব করতে পারবেনা... আরও কত কি! সমাজ আমার জন্য সব ঠিক বেঠিক নির্ধারণ করে দিচ্ছে আমার মতামত, সুবিধা, অসুবিধা, ইচ্ছা, অনিচ্ছা না জানতে চেয়েই। অযৌক্তিক না?!

একজন মানুষকে আগেই আমরা একটা বাক্সে বন্দি করে ফেলতে চাই। কেবল মানুষ পরিচয়ে আমাদের চলেনা। আমরা সেই সুপরিচিত ছকের ভেতর কেউ না পড়লেই তাকে হেয় করি, তার উপর নির্যাতন চালাই.. যা ইচ্ছে করি। সেই মানুষটার ভিতরে কি চলছে তা ভাবার সময়ই নেই কারো, না পরিবারের না সমাজের। দূরধ্যয় তেমনই এক মানুষের সমাজের তৈরি সে বাক্সে বন্দি না হতে চাওয়ার কথা। যে চাওয়ার জন্য তাকে অনেক দাম দিতে হয়।

আমাদের দেশে এই বইটি লেখা সত্যিই সাহসের কাজ। এখানে তিক্ত কিছু সত্য তিক্ত করেই বলা হয়েছে। ভণিতা করে বা মিষ্টি করে নয়। বইটি পড়তে গেলে ট্রমাটিক মনে হতে পারে। রেইপ, হ্যারাসমেন্টের মত আরও বেশকিছু ট্রিগারিং বিষয় উঠে এসেছে এখানে। তবে নির্মম বাস্তবতা তো নির্মমই লাগার কথা! :)
দুরধ্যয় সমাজকে প্রশ্ন করতে করতে আপনাকে সুন্দর সাহসের কথা বলবে!এর বেশি কিছু বলতে গেলে দুরধ্যয় নিয়ে প্রায় সবই বলে ফেলা হবে। সেটা নাহয় পড়ে জানার চেষ্টা করবেন!!
Profile Image for Asef.
26 reviews3 followers
April 23, 2024
বই :দুরধ্যয়
লেখক : তানভীর অনয়

দুরধ্যয় শব্দের অর্থ হচ্ছে যা অধ্যয়ন করা কষ্টকর।
এই বইটি শুধু নামে না বরং বিষয়ের দিক দিয়েও দুরধ্যয়। এটা কোন নেতিবাচক অর্থে বলিনি বরং বলতে হয় যে সম্পূর্ণ উপন্যাসটি অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং।

দুরধ্যয় উপন্যাসটি সেই সকল মানুষের জীবন কথা যার সমাজের এক বিশাল অংশ হয়েও লুকায়িত। একজন নন বাইনারি মানুষের বেড়ে ওঠার পথে যে সব ঘাত প্রতিঘাত সহ্য করতে হয় সে সবকিছু মিলিয়ে এই দুরধ্যয়। যারা জেন্ডার ফ্লুইডি���ি কিংবা ননভাইনারি টার্মের সঙ্গে পরিচিত না তাদের মনে খুব সহজে দাগ কেটে দেওয়ার মত একটা বই এটি।

এই বইয়ের কেন্দ্রীয় চরিত্র তনিম। দুরধ্যয় শব্দটি তার ভালো লাগে, কারণ তার মনে হয় তাকে পড়তে পারাটাও কষ্টকর। ষোল কিংবা সতের বছরের তনিম ওর বয়সী অন্য ছেলেদের চাইতে অন্যরকম। নিজেকে সে সুযোগ পেলে খুঁজে নেয় নিজের অপরা সত্ত্বা তনিমা'র মাঝে। বড় বোনের স্কার্ট টপস বা শাড়ি পরে লুকিয়ে নিজেকে সাজায় সে, ডায়েরি লেখে তনিমা নামে। তনিম বা তনিমা দুটোই সে। তবে এই দুইয়ের কোনো পরিচয়কেই সে হারাতে বা মুছে ফেলতে চায় না। নারী-পুরুষের লেবেলের বাইরে তনিম এবং তনিমা একই সাথে সে এই দুইয়ের বৈশিষ্ট্য নিয়ে একক এক মানুষ। আমাদের সমাজে যে সকল শিশুরা জন্মগ্রহণ করে, তারা তাদের জন্মগত লিঙ্গের উপর নির্ভর করে হয় পুরুষ কিংবা নারী যে কোন একটির মধ্যে থাকতে হবে এরকম একটি সামাজিক চুক্তির মধ্যে আবদ্ধ হয়। এইবার কেন্দ্রীয় চরিত্র তনিম সেই চুতিকেই ভেঙে নিজের মনের কথা শুনে বেরিয়ে আসে ।
বাংলা ভাষায় নন বাইনারি কাউকে নিয়ে লেখা এরকম উপন্যাস বোধহয় প্রথম। বাংলা সাহিত্য ঐরকম কোন চরিত্র এর আগে কোথাও উঠে এসেছে বলে আমার মনে হয় না।

সর্বোপরি এটি একটি সুখপাঠ্য বই। এই বই পড়ে অবশ্যই আমাদের সমাজে বৈচিত্র্যময় মানুষদের প্রতি আমাদের সহনশীলতা বাড়বে বলে আমার বিশ্বাস।
Profile Image for Famil Faiza.
12 reviews26 followers
October 10, 2021
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে gender identity ভিত্তিক topic নিয়ে লেখা কোনো বই আছে কিনা আমি জানিনা। যদি না থেকে থাকে, তাহলে "দুরধ্যয়" অবশ্যই এই sensitive issue তে লেখা প্রথম, মোটামুটি mature একটা বই। মোটামুটি বললাম কারণ বইয়ের protagonist একজন teenager, confused একজন মানুষ। তার মনের অনেক প্রশ্নের আদলে লুকিয়ে থাকা সামাজিক কিছু অন্ধকার বাস্তবতার ধারণা পাওয়া যায়, কিন্তু ঠিক ঠিক solution পাওয়া যায় না।
হ্যাঁ, হয়তো লেখকের উদ্দেশ্য solution দেওয়া না, তাই বইটা আমার মতে মোটামুটি mature একটা বই।
বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত protagonist কে বাজে রকমের struggle করতে দেখা যায় নিজের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করার জন্যে। Typical brown parents এর মত protagonist এর সব সমস্যাই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায়। You'll relate to Tonim in so many level in this case.
যাই হোক, শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। বইটা পড়ে শেষ পর্যন্ত একটু সস্তি পাওয়া যায় যে তনিম শেষ পর্যন্ত মানুষ হিসেবে নিজের পরিচয় পেয়েছে। পাঠক হিসেবে, আমি আসলে, তনিমের জীবনে আর কি কি হলো জানতে আগ্রহী।
Profile Image for Faria Rahman.
8 reviews1 follower
March 1, 2024
Kudos to the author for working on such a sensitive topic. The beginning of the novel really moved me. And the ending too had a strong message of not to give up on life. However, it would be great if there was more focus on the identity crisis. Although I got to know about the struggles of the protagonist, I didn’t get much information about Tonima apart from the facts that they liked a guy and loved wearing saree/kameez (In fact, when Tonim’s stream of consciousness was thinking about Tonima, it almost felt like they had dissociative identity disorder). Also the reference with “The Bluest Eyes” should have been clearer as many readers may not even understand the nod towards Morrison. Lastly, the character Niara was a breath of fresh air who dissolved too quickly. I really hope the author will do better with time. Sending him good wishes.
This entire review has been hidden because of spoilers.
1 review
August 16, 2021
অনয় এর বই নিয়ে আমার বরাবরই উত্তেজনা কাজ করে।যদিও প্রথম বইটার গল্প খুব বেশি নাড়া না দিলেও,২য়টি বেশ নাড়া দিল,পড়ার সময় বেশে নড়েচড়ে বসলাম,কি লিখা!!ভাবা যায়??
ব্যাক্তি জীবনে আমি খুব টুইস্ট গল্প পড়তে বা জীবনীগ্রন্থ পড়তে বেশ আগ্রহ।জীবনের তাই প্রথম বই পড়ি তসলিমা নাসরিনের, এর পর আরজ আলী,অভিজিৎ, হুমায়ুন আজাদ আরও নানা লেখকের।তাদের বই পড়ে যেটা শিখেছি,সেটা হলো সত্যি বলা,দুনিয়া উলটাই গেলেও নিজের মতামত কে সম্মান করা বা নিজের মতো করে করা।তোমার লিখায় সেটা পেয়েছি।অনেক দিন পর কোন বই একবসায় পড়া হলো আমার। তোমাকে অভিবাদন 💗

গল্পের যার চরিত্র নিয়ে লিখেছ,এইসব নিয়ে কেউ ভাবে না, তুমিই প্রথম ভেবেছ মেবি।সমাজ,ধর্ম,রাজনীতি সবই আসলে কর্তাকে প্রধান্য দিয়ে এগানো,সবই নিজের জন্য নিয়ে ভাবে।সবশেষে এইটাই বলতে চাই।ধন্যবাদ এমন চরিত্র নিয়ে ভাবার জন্য। এগিয়ে যাও।শুভকামনা রইল💗ভালবাসা নিও অনয়
Profile Image for Rainpop.
1 review
July 3, 2021
This book was the perfect way to bring queer literature in Bangladesh. There was no sugarcoating of the truth, the struggles were not romanticised - it was perfectly concise and enough- just like a splash of cold water in the face to wake people up and make them acknowledge the cruel reality of our binary culture. The author did a brilliant job - for me it felt like weaving through the compartments of a mind with so much trauma but still blooming love/respect/yearning for one's true self - now that was just beautiful and inspiring. Massive trigger warnings, but honestly I would not expect anything different when reading about current queer community's stories in Bangladesh
This entire review has been hidden because of spoilers.
1 review
September 4, 2021
আমরা জেনে বা না জেনে, বুঝে বা না বুঝে আমাদের আশেপাশের ভিন্নধর্মী মানুষদেরকে কষ্ট দিয়ে থাকি, তাদের অস্তিত্বে আঘাত হেনে থাকি।অনেক সময় আমরা সেটা বুঝতে পারলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেটা উপলব্ধি করতে পারিনা । ফলে আমাদের অনুশোচনা হয় না। দুরধ্যয় গল্পের প্রধান চরিত্র তনিমের জীবনের ঘটনা গুলো আমাদেরকে বুঝতে ও উপলব্ধি করতে শেখায় যে আমাদের সংকীর্ণ ও অসচেতন চিন্তাভাবনা তাদের জীবনে কতটা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এমনকি আমাদের নিরাবতাও একজনের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। আমি আশা করি গল্পের লেখক তার এ ধরনের ব্যতিক্রমী লেখা অব্যাহত রাখবেন। এবং আমি সবাইকে অনুরোধ করব গল্পটি পড়তে এবং পরিচিত মানুষদের সাথে শেয়ার করতে।
ধন্যবাদ
1 review1 follower
August 8, 2021
There are very few books in Bengali literature which touch the topics that Anoy has addressed in their book.
What does it mean to live in a binary world as a non-binary person? An important warning, this book is very dark, so brace yourself when reading. I had to close the book at certain points just to catch my breath, and even though it's small (88 pages) I couldn’t finish it in one go. Anoy pulls back no punches, and delivers a very raw story which stems from their personal experience. Would highly recommend it!
Displaying 1 - 29 of 47 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.