ম্যারিয়ট ম্যানশন... প্রাসাদের মত বিশাল এক পরিত্যক্ত প্রাচীন বাড়ি। একটা খেলার আয়োজন করা হয়েছে সেখানে, গোয়েন্দাগিরির খেলা। এক রাতের জন্য ভেতরে আটকা পড়বে কয়েকজন মানুষ, তাদের ভেতর থেকে ‘খুন’ হবে একজন, বাকিরা বুদ্ধি খাটিয়ে খুনিকে খুঁজে বের করবে। অনেকের মত অয়ন, জিমি আর রিয়াও চলল খেলায় অংশ নিতে। কিন্তু ওরা জানত না, বাড়িটা অভিশপ্ত। প্রতিশোধের নেশায় অতৃপ্ত আত্মারা ঘুরে বেড়াচ্ছে বাড়ির আনাচে-কানাচে। বাড়িতে ঢুকতেই সত্যি সত্যি উধাও হয়ে গেল একজন। শুরু হয়ে গেল রোমহর্ষক কান্ড-কারখানা। খেলা আর খেলা রইল না, হয়ে উঠল প্রাণ বাঁচানোর লড়াই।
নির্জন দ্বীপের প্রাচীন এক দূর্গে এক রাতের জন্য 'বন্দী' কয়েকজন অতিথি। নেই ইলেক্ট্রিসিটি বা মোবাইল ফোন। বাইরের দুনিয়ার সাথে যোগাযোগের সমস্ত মাধ্যম মোটামুটি বিচ্ছিন্ন। এই পরিস্থিতিতে গায়েব হয়ে গেল একজন অতিথি। আর বাকিদের মাঝে শুরু হয়ে গেল পরস্পরের প্রতি সন্দেহ আর অবিশ্বাসের খেলা। এর মাঝেই চললো দুই বন্ধু অয়ন-জিমি আর তাদের বান্ধবী রিয়ার রহস্য সমাধানের চেস্টা। গল্পের শুরুর দিকে বেশ একটা আগাথা ক্রিস্টির 'এন্ড দেন দেয়ার ওয়্যার নান' টাইপ ভাইব পাওয়া যাচ্ছিল। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই সেটা পরিনত হয় ক্ল্যাসিক জুভেনাইল মিস্ট্রিতে। গল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উপভোগ্য ছিল। তবে সেই পুরনো কথাই, বয়সটা যদি অর্ধেকটা কম হত, উপভোগের মাত্রাটা দ্বিগুন হতো। অয়ন-জিমি সিরিজের যে কোন বই পড়তে গেলেই অবধারিত ভাবেই তিন গোয়েন্দা সিরিজের স্বর্ণযুগের কথা মনে পরে যায়। আর অজান্তেই দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। কি হয়েছে, আর কি হতে পারতো! ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৪.৫
রহস্য, আতঙ্ক, খুনসুটি আর তারই মোড়কে একটা ইনডোর এডভেঞ্চার। বেশ ভাল লাগল এই আয়োজন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বইটা গতিশীল। মূল বদমাশ কে সেটা আগে থেকে অনুমান করতে পেরেছি, কিন্তু তাতে আনন্দ কিছুমাত্র মাটি হয়নি। তবে মোটিভ ধরার কোনো ক্লু ছিল না গল্পের একবারে শেষ ভাগে না পৌঁছানো পর্যন্ত। সুতরাং, বলা যায় ওটা অয়ন আর আমি প্রায় একই সঙ্গে ধরে ফেলেছি।
সবথেকে পছন্দের ডায়লগটি এসেছে জিমির মুখ থেকে- 'আমরা মানে আমি আর কী,' বিরস গলায় বলল জিমি। 'এসব কাজ সাধারণত আমার ঘাড়েই চাপে।'
সিরিজের অন্যতম নিয়মিত সংঘটন নিয়ে এই ধরণের প্রাকটিক্যাল জোক সত্যিই হাসিয়েছে খুব।
পরবর্তী বই হাতেই আছে, তবে হয়তো জমিয়ে রাখবো আরো কিছুদিন। কিছু শৈশব বাঁচিয়ে রাখতে হয় সযত্নে।