Jump to ratings and reviews
Rate this book

জিন

Rate this book
স্ত্রী তারিন এবং মেয়ে মাহাকে নিয়ে এমপি সাজেদের পরিবার। বেইলি রোডে বসবাসরত এই পরিবারটির দিন সুখেই কাটছিল। কিন্তু হঠাৎ করে তারিন অদ্ভুত সব আচরণ শুরু করল। পরিস্থিতি ক্রমে খারাপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রাণভ্রমর স্ত্রীকে বাঁচাতে সাজেদ মরিয়া। তারিনের এমন অবস্থার কারণ কি? অসুখ না ষড়যন্ত্র?

মুয়াজ্জিন হাফেজ মিয়ার জীবন বেশ নির্বিঘ্নেই কাটছিল। তবে, নিতান্তই সহজ সরল এই মানুষটির জীবন পাল্টে যেতে আরম্ভ করে, যখন তার সাথে এক সৌম্যদর্শন হুজুরের সাক্ষাত হয়। তিনি বুঝতে পারেন জগত সম্পর্কে তিনি কতটা অজ্ঞ, কত রহস্যই তার অজানা। কিন্তু, এই অজানাকে জানার আকাঙ্খা যেন আবার তাঁর কাল না হয়ে দাঁড়ায়।

ভার্সিটি পড়ুয়া আসলান কস্মিনকালেও ধারণা করেনি এমন ঘটনার মুখোমুখি হতে হবে। তিলে তিলে গড়ে তোলা বিশ্বাসের ভিত্তিটা দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সে এর শেষ দেখেই ছাড়বে। তবে, নতুন জীবনের এই যাত্রার শেষটা যে কতটা অবিশ্বাস্য ও ভয়ংকর তা খোদ আসলানও জানেনা।

তিনজন ভিন্ন শ্রেণির মানুষ, ভিন্ন ভিন্ন তাদের জীবনধারা। কিন্তু তারা যেন একই সূত্রে গাঁথা। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দ্বন্দ্ব নিয়ে তিনজন জীবন শংকা পার করে কি পারবে তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে? নাকি তারাও হবে অন্ধকারের অধিপতির শিকার? ভালো মন্দের দ্বন্দ্ব জগতের আদিম নিয়ম। আরো একবার হচ্ছে ভালো ও মন্দের লড়াই। শেষমেষ কে বিজয়ী হবে? নাকি এর কোনো শেষই নেই?

জানতে হলে অবশ্যই আপনাকে পড়তে হবে কুরআন-হাদীস ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে সমৃদ্ধ হরর আর অকাল্ট থ্রিলার 'জিন'। সুতরাং পাঠক, প্রস্তুতি নিন জিন, কালো জাদু, অকাল্টিসিজমের অদ্ভুত দুনিয়ার সাক্ষী হতে।

348 pages, Hardcover

First published January 15, 2022

28 people are currently reading
399 people want to read

About the author

M.J. Babu

9 books339 followers
M.J. Babu is an acclaimed author born and raised in Dhaka. M.J. made a remarkable entry into the literary world with his debut book, Dimentiya, published in 2020. This gripping novel quickly became a best-seller in the Bengali language, establishing him as a prominent figure in contemporary Bengali literature.

Following the success of his debut, M.J. continued to captivate readers with his unique storytelling and thought-provoking themes. His book Pinball, published in 2022 from Kolkata, India, received critical acclaim and further solidified his reputation as a versatile and talented writer.

M.J. has authored seven books in Bengali, including the renowned Anarchist Series with titles Dimentiya, Absentiya, and Insentiya. Other notable works include Nirjon Shakkhor, Vrom, and Jinn. His literary works span various genres, showcasing his ability to weave intricate narratives that resonate deeply with readers.

Currently, M.J.'s books are being published from both Dhaka and Kolkata, broadening his reach and influence in the literary world.






Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
182 (41%)
4 stars
147 (33%)
3 stars
64 (14%)
2 stars
31 (7%)
1 star
17 (3%)
Displaying 1 - 30 of 127 reviews
Profile Image for Taznina Zaman.
251 reviews63 followers
May 22, 2023
প্রথমেই বলে রাখি, আমি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকেই আমার প্রতিক্রিয়া জানাবো। সুতরাং আমার পাঠ প্রতিক্রিয়াকে আস্তিকতা/ নাস্তিকতা হিসাবে গণ্য না করাই ভালো।

জিন বইয়ের অনেক পজিটিভ রিভিউ দেখেই বই কেনা। কিন্তু বইটা ঠিক কতটুকু সন্তুষ্ট করেছে আমাকে? এটাই বলবো এখন।

ভালো দিকঃ

১. বইয়ের গতি ভালো। লেখকের গল্প বলার স্টাইল ভালো লেগেছে। ৩৩৩ পৃষ্ঠার বই আড়াই দিনে শেষ করেছি। সুতরাং বুঝতেই পারছেন বইটা কতটুকু হুকড করে রাখতে পারে।

২. রেফারেন্স রয়েছে প্রচুর। যারা রেফারেন্স পড়তে পছন্দ করেন তাদের ভালো লাগবে।

এবার আসবো যা যা ভালো লাগেনি সেই দিকে।

১. এই উপন্যাসের লেখক প্রচন্ড ধার্মিক মানুষ। এবং নিজের এই ধার্মিকতাকে তিনি উপন্যাসের যেখানে পেরেছেন, ব্যবহার করেছেন। দরকারে অদরকারে কুরআন মজিদের রেফারেন্স টেনেছেন। যেখানে পেরেছেন ঠেসেঠুসে রেফারেন্স দিয়েছেন, দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন। যা একপর্যায়ে অসহনীয় লেগেছে। আমার মতে একজন লেখকের তার ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনা নিজের লেখায় প্রভাব বিস্তার করতে দেয়া উচিত না। যদি তাই হয় তাহলে সেটা ডায়েরি হয়ে যায়। যেমনঃ ডঃ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল দাঁড়ি টুপিওয়ালা মানুষ সহ্য করতে পারেন না, সেহেতু তার উপন্যাসের মন্দ চরিত্রেরা সবসময় দাঁড়িটুপিই পরে। ঠিক তেমনি এম জে বাবুর চরিত্রেরা সবাই নামাজ পড়ে, সাচ্চা মুসলিম হবার ট্রাই করে কারন লেখক এটাই চান। ব্যাপারটা বিরক্তিকর।

২. মহান আল্লাহকে আমরা সাধারণত আল্লাহ বা আল্লাহপাক বা আল্লাহ তায়ালা নামেই ডেকে থাকি। কিন্তু এই উপন্যাসে প্রায় প্রতিবার বলা হয়েছে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা। ১৩২-১৩৩ পৃষ্ঠায় এই শব্দ বলা হয়েছে টোটাল নয় বার। এমন তো না যে কেবলমাত্র 'আল্লাহ' শব্দটা লিখলে আল্লাহতায়ালার অসম্মান হতো। মনে হলো যেন জুমার নামাজের খুতবা বা ওয়াজ শুনছি। একজন পাঠকের জন্য এত বড় একটা শব্দ স্পিডব্রেকারের মতো। লেখকের বোঝা উচিত কোনটা বই আর কোনটা ওয়াজ।

এই দুইটা ভুলই একটা বইয়ের বারোটা বাজানোর জন্য যথেষ্ট।


৩. তারিনকে কোন হাসপাতালে রুকইয়া করা হলো যেখানে আকাশ বাতাস উড়ে গেলো অথচ ডাক্তার নার্স তো দূরের কথা একটা স্টাফও আসলো না!

৪. শেষের ট্যুইস্টটা রীতিমতো অখাদ্য।

Verdict: প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ এবং জিন দুইটাতেই ধর্মকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে বিজ্ঞানকে একহাত দেখে নেয়া হয়েছে। আমি জানিনা বইটা কার কাছে কেমন লেগেছে, কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে এটা আমার টাইপ বই না।

দুই তারা দিলাম, কিন্তু আমার ৩৯০ টাকার শোক অনেকদিন তাড়া করে ফিরবে।
Profile Image for Ridima Ridhi.
5 reviews
January 18, 2022
'ভরসা'

ভরসা খুব কম লেখককেই করা যায়। এই লেখক কম সময়ে ভরসার জায়গাটা দখল করে নিয়েছে। চোখ বন্ধ করে উনার বই পড়া যায়। 'জিন' একটা মাস্টারপিস। পাঁচ বছর কেন লেগেছে অনায়াসে কেউ বুঝতে পারবে। আচ্ছা, চলুন একটু জিন নিয়ে আলোচনা করি।

ব্লার্ব-

ঢাকার অন্যতম পাওয়ারফুল পরিবার সাজেদের। নিজে এমপি আবার শ্বশুর প্রতিমন্ত্রী। ক্ষমতার প্রতিযোগিতায় সে বরাবর এগিয়ে। জোরজবরদস্তি করে অনেক কিছুই করছে। কিন্তু তার পুরো জীবনে একটা কষ্ট, আক্ষেপ যে তার কোনো সন্তান নেই। সন্তান হওয়ার ক্ষমতাও নেই তার। কিন্তু হঠাৎ করেই তার স্ত্রী সিদ্ধান্ত নিলো বাচ্চা দত্তক নিবে। হাটহাজারীর একটা প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে বাচ্চা দত্তক ও নিলো। ব্যাস তারপর শুরু হলো যত বিপত্তি। তারিন অস্বাভাবিক ব্যবহার করতে লাগলো, অসুস্থ হয়ে মৃত্যূর কোলে ঢলে পড়লো। পুরো পরিবার মুখোমুখি হতে লাগলো অস্বাভাবিক ঘটনার। ঘটনাগুলো কেবল স্বাভাবিক না, একদম অতিপ্রাকৃত আর নিষ্ঠুর। সাজেদের মেয়েকে পড়াতে আসা আসলান নামে এক বিপ্লবী পরিবার ও যেন ফেসে গেলো তাদের সাথে। ঠিক তখনি তাদের সাথে দেখা হয় জাফর নামের এক ডাক্তারের।

অপরদিকে এক অজপাড়াগাঁ এর মুয়াজ্জিন হাফেজ মিয়া। পুরো বুক জোরে তার কেবল একটাই দীর্ঘশ্বাস। গ্রামের মানুষদের ধর্মকর্ম এর দিকে কোনো টান নেই। একটা ভাঙা মসজিদে তিনি কেবল একাই নামাজ পড়ে। একদিন ফজরের সময় এক অদ্ভুত ঘটনার সাথে হাজির এক সুপুরুষ হুজুর। হুজুরকে দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে হাফেজ নিয়া রেখে দেয় মসজিদের জন্য আর হুজুর ও এসেছে এজন্য। কিন্তু হুজুরকে রাখতে গিয়ে হাফেজ মিয়া এক অদ্ভুত ষড়যন্ত্রের কবলে পড়ে যায় অজান্তেই।

দুটো পরিবার, ভিন্ন কাহিনি। কিন্তু একই সুত্র গাথা। তাদের পরিণতি কী জানতে হলে পড়তে হবে জিন সিরিজের প্রথম বই জিন।

পাঠ্যানুভূতি-

প্রথমে বলি, এত বড় বই একটানে পড়ার অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হলো আমার। প্রথমে কয়েক পেইজ বেশ কাব্যিক ভাবে লেখা। অবশ্য যারা অ্যাবসেন্টিয়া পড়েছেন তারা হয়ত জানেন লেখক শুরুটা এভাবেই করে। লেখনশৈলীতে আরেকটা সমস্যা হচ্ছে মাঝখানে এক পেইজ গদ্যের মতো বর্ণনা করেছে লেখক। তাছাড়া আর সমস্যা নেই। হাফেজ মিয়ার কাহিনি চুম্বকের মতো টেনেছে আর হরর সিনগুলো। বাপরে বাপ 🤧

কাহিনি এক কথায় অসাধারণ৷ পজেশন থ্রিলার হিসেবে এর থেকে ভালো কাহিনি হয় না। চরিত্র বুনট ছিলো পার্ফেক্ট। আমি নিজেই তারিনের সাথে কানেক্টেড হয়ে যায়। তার আবেগে কাঁদি আবার হাসিও। বাকী চরিত্রগুলো সমানভাবে বড় করা হয়েছে। তবে মাহাকে আরেকটু ফোকাস করলে ভালো হতো।

আসি মূল বিষয়ে। তথ্য! মানে এত অদ্ভুত আর গা হিম করা তথ্যগুলো যে আপনার চিন্তাভাবনাকে আমূল পরিবর্তন করে দিতে পারে সেটা না বললেই নই। বই পড়ে আমি শিউর আপনার ও বিশ্বাসের ভিত্তি নড়ে যাবে। আপনিও ভাববেন যে আমরা আসলেই একা না!

শেষ কথা, প্রচ্ছদটা এবস্ট্রাক্ট হলে মানাতো বেশি। সিরিজের শুরু যেহেতু তাই অনেক কিছুই প্রেডিক্ট করা মুশকিল। বাট একটা কথায় বলবো, এটা মাস্ট রিড! মাস্ট রিড! মাস্ট রিড। ধন্যবাদ লেখককে এত সুন্দর আর শক্তিশালী বই দেয়ার জন্য।
Profile Image for RODELA NUR.
2 reviews
January 21, 2022
বইটা শেষ করে এতটাই ভয় পেয়েছি যে যতবার ভয় পাই বা বইয়ের কোনো দৃশ্যের কথা মনে পড়ে, তখন আয়াতুল কুরসি পড়ে নেই। যাহোক, খুব ভালো একটা বই, আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে কেবল সাইমুম সিরিজ পড়েছি। এই লেখক সেরকম কিছু করবে হয়ত। মুখিয়ে আছি আমি পরবর্তী বইগুলোর জন্য।
Profile Image for Farhan.
725 reviews12 followers
September 1, 2023
দুর্দান্ত একটা হরর হবার সব উপকরণ ছিল। টপিকে নতুনত্ব, লেখকের গবেষণা ও ব্যাখ্যা, ভয়াল পরিবেশ-- সবকিছুতে পানি ঢেলে দিয়েছে একই দৃশ্য ও সংলাপের পুনরাবৃত্তি, এলোমেলো গল্প বলা, ধারাবাহিকতার অভাব, আর ক্ষমার অযোগ্য কাঁচা হাতের লেখনী। চূড়ান্ত পরিমাণে বিরক্ত করার জন্য ১ দিলাম।
Profile Image for Afifa Mahbub shorna.
17 reviews7 followers
January 19, 2022
হাইপ দেখে বইটা নেয়া।
বলতেই হচ্ছে ষোলকলা পূর্ণ হয়েছে। হ্যাঁ বইটাতে এমন কিছু বিষয় আছে যেটাতে বায়াসড না হয়ে উপায় নেই। নিউট্রাল হয়ে ��িচার করলেই ভালো হবে। বেশ ভিন্ন টাইপের একটা বই। বই পড়ে আনন্দ নেওয়ার সাথে অনেক কিছু শেখা হলো।
Profile Image for Ratika Khandoker.
300 reviews33 followers
January 27, 2022
আমি অতিপ্রাকৃত,ভৌতিক-আধিভৌতিক,সাসপেন্স,থ্রিলার পড়তে খুব ভালবাসি,এই ধরনের বইগুলাকে আমি বলি আমার চিপ থ্রিল/স্ট্রেস বাস্টার।এই ঘরানার বহু ভাল ভাল বই পড়া হয়ে গেছে।কিন্তু বাংলা সাহিত্যে সত্যি কথা বলতে,এই অতিপ্রাকৃত লেখাগুলো কম-ই আছে,বিশেষ করে আমাদের দেশে।শেষ যে দুখানা পড়েছিলাম তা ছিল অক্টারিন আর পাপপিঞ্জর।ভালই লেগেছিল।
লেখক এম.জে.বাবু র লেখা পিনবল বইটি নিয়ে কয়েকমাস আগে বেশ হৈ চৈ শুনে ভেবেছিলাম কিনবো,এরমধ্যেই দেখি 'জিন' চলে আসি আসি করছে। ওইদিকে এই জিন-এক্সরসিজম-ব্ল্যাক ম্যাজিক ঘরানার ডাব্বে-সিকচিন ইত্যাদি ইত্যাদি টার্কিশ সিনেমা দেখে ফেলা আর এ জাতীয় বহু বই পড়ে ফেলা আমার মস্তিষ্ক জানান দিলো-এই বই কিনতেই হবে।তাই পিনবলের আগে জিন ই হাতে তুলে নিয়েছি,জিন পরে বের হলেও এটি-ই লেখকের প্রথম লেখা।
পিনবল শুনেছি দারুণ উত্তেজনা আর চমকে পূর্ণ,যাকে বলে পেইজ টার্নার। জিন বইখানা এত fast paced নয়।প্রথম দেড়শো পৃষ্ঠা story buildup এবং চরিত্রগুলোর সাথে হওয়া বিভিন্ন প্যারানরমাল ঘটনা দিয়েই কেটে যায়।একটু ধৈর্য ধরে পড়তে হবে।ঘটনা প্রবাহ দুই দিক থেকে চলতে থাকে মুক্তারপুরের এক মুয়াজ্জিন এবং ঢাকার এক এমপির পারিবারিক জীবন থেকে।এই দুই ঘটনা প্রবাহ-ই পরে এক জাদুবলে(!)এক হয়ে যায়।আর এরপর-ই খুলতে থাকে নানা জট।সব জট কিন্তু শেষ অব্দি খুলেনা,সেগুলো লেখক বলেছেন,তাঁর জিন সিরিজের পরবর্তী বইয়ে খুলবেন। (যেমন জাফর খুলেছিল ঐ কাপড়ের গিঁটগুলো 😛)
ঠিক আছে,অপেক্ষা করবো পরবর্তী বইয়ের জন্যে,লেখকের কাছে অনুরোধ,শুধু ৪-৫ বছর লাগাবেন না লিখতে এই বইটির মত।এই সাসপেন্স আর অতৃপ্তি নিয়ে এত বছর অপেক্ষা কোনভাবেই করতে পারবো না। 🙏
এখন আসেন এক তারা কাটলাম কেন - (SPOILER)
১.আমার মনে হয়েছে,বইখানা ছোট হতে পারতো আরেকটু,অনেক এক্সপ্রেশন অনেক সংলাপ রিপিটেড লেগেছে।যেমন,অলমোস্ট সব চরিত্র-ই দেখলাম মুচকি হাসি দেয়।
২.সাজেদ এর বাসায় কোনো ধরনের হেল্পিং হ্যান্ড বা হাউজ হেল্প নাই,এইটা মানতে খুব কষ্ট হয়েছে।আমাদের ছোট বাসায় কাজের খালার হেল্প নিয়েও আমরা হিমশিম খাই,তারিন কিভাবে এত বড় বাসা,বাগান,রান্নাবান্না,বাচ্চা একাই মেইন্টেইন করে আমি ভেবেই কুল পাইনাই।ফুল বাসা একবেলা ঝাড়ু দিতেও মনে হয় আধাদিন চলে যাবে 😓।এত বড় এমপির এত বড় বাসায় এই কয়জন প্রানী থাকে,এ আমার বোধগম্য হয়নাই।
৩.যে ক্লিনিকে তারিন এর এক্সরসিজম হলো,সেইখানে আর কোনো রোগী মানুষ ডাক্তার ছিল না?এত ভয়াবহ চিৎকার-চেঁচামেচির পরেও কি কেউ টের পায় নাই?
৪.এটা লেখা বিষয়ক নয়,প্রচ্ছদ নিয়ে।আমার ব্যক্তিগত ভাবে সাদামাটা প্রচ্ছদ ভাল লাগে।আর এমন একটা টেরিফিক বইয়ের প্রচ্ছদটা মনে হয় বেশি একটা ঝাকানাকা না করলেই ভাল হত।বিশেষ করে পিছের প্রচ্ছদটি,কংকালমুন্ডু-শিং এইসব দিয়ে ব্যাপারটা কেমন যেন চটকদার হয়ে গেছে।

যাই হোক,অল ইন অল,আমার ভাল লেগেছে,ভয় বেশি একটা পাইনাই কিন্তু পড়ার অভিজ্ঞতা ভাল-ই ছিল। লেখক কলকাঠি ভালই নাড়িয়েছেন,জাদু আসলেও কাটেনি। তাঁকে ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা।
Profile Image for Aishu Rehman.
1,093 reviews1,079 followers
November 23, 2022
বর্তমানে হরর, অকাল্ট থ্রিলার পড়েই সময় বেশি কাটছে। অন্যান্য বই হাতে নেওয়ার ফুরসত ই পাচ্ছি না। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হতাশ হচ্ছি। সেই হিসেবে এই বইটি নিয়ে প্রাপ্তি একটু কম রেখেই শুরু করেছিলাম । কেননা আমার পড়া লেখকের প্রথম বই এটা । কিন্তু সত্যি বলতে, এটা দারুণ ছিল। প্রথমে মনে হচ্ছিল, লেখক কাহিনীটাকে খামোখায় টেনে টেনে লম্বা করছেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভাবনাটা বদলে গেল। যেহেতু লেখক মশাই সিরিজ করবেন সেহেতু ক্যারেক্টারগুলোকে ডেভলপ করার দরকার ছিল।

এখন শুধু পরবর্তী বইয়ের জন্য অপেক্ষা। অনেক প্রশ্ন মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।
Profile Image for Orni.
1 review
January 21, 2022

বইতো পড়েন, কিন্তু এমন বই হয়ত আগে পড়েননি। কালো জাদু, বদনজর, রুকইয়া নিয়ে বেশ ভালো একটা বই।

হরর গল্প সাধারণত আমি এড়িয়ে চলি। এড়িয়ে চলার কারণ হিসেবে মোটা দাগে যা বলতে হয় তা হলো বর্ণনার ধরণ, বিশেষ করে এ দেশের হরর বইগুলোর বর্ণনার কারণে বিরক্ত লাগে। ক্লিশে লাগে অনেক। তবে ক্লাসিকগুলো ভিন্ন।

জিন জামাইয়ের উপহার হিসেবে পাওয়া। ভেবেছিলাম সংসারের ঝামেলা নিয়ে বই পড়বো না। তাও হরর। কিন্তু জামাই ইনসিস্ট করলো বইটা পড়তে। গতকাল লাঞ্চের পর কয়েক পৃষ্ঠায় চোখ বুলালাম। বর্ণনাশৈলি বেশ আকর্ষণীয় লাগলো। সোফায় শুয়ে সেই যে পড়া শুরু করলাম,  শেষ করলাম জামাই অফিস ফেরার কয়েক ঘণ্টা পর।

বিকেল তিনটা থেকে রাত ৮ টা। টানা পাঁচ ঘন্টা পড়ে বইটা শেষ করেছি৷ মাঝেমধ্যে নামাজ ছাড়া আর কিছু করা হয়নি। পুরো বইয়ের ভালো দিক হলো লেখকের লেখনশৈলী।  খারাপ প্লটকে লেখনশৈলী সুপাঠ্য করে তুলে। অতিরিক্ত লাইন নেই, তবে গল্পের সবাই মুচকি হাসে। মুদ্রাদোষ বলতে এটাই পেয়েছি। তাছাড়া যথেষ্ট মুখরোচক বর্ণনা ছিলো।

এই বইয়ের প্লট বেশ স্ট্রং। প্লটের ডাইমেনশন ও বেশ বড়। দুইটা ভ্যারিয়েশন আছে প্লটের। আন্দাজ করার মতো ছিলো দুইটা শেষে এসে কিভাবে মিটবে। তবে ২য় প্লটটা আরেকটু বড় করলে ভালো হতো। কিন্তু বইয়ের শেষে লেখক একটা সুন্দর এক্সপ্ল্যানেইশন দিয়েছে। যেটা পড়ে মনে হয়েছে,  না ঠিকই আছে।

সবচেয়ে শক্তিশালি দিক মনে হয় তথ্যগুলো।  যথেষ্ট সাবলীলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তথ্যগুলো। এমন হয়েছে ভয় পেয়ে না যতটুকু চমকে গেছি, তার থেকে বেশি চমকে গেছি লেখকের তথ্যগুলো পড়তে গিয়ে। ভালো ছিল প্রচেষ্টাটা। বইটা শেষ করে কেবল মনে হয়েছে,  'এমন ও বুঝি হয়?'

সম্পাদনা, প্রোডাকশন, সব ছিল বেশ ভালো। এগুলোতে অভিযোগ রাখার কোনো সুযোগ নেই। বেশ ভালো ব্যাপার আমাদের জন্য যে কন্টেন্টের পাশাপাশি প্রকাশনীরা প্রোডাকশন আর প্রেজেন্টেশন এর দিকেও এখন নজর দিচ্ছে। বইটা ওভার অল বেশ ভালো এবং হরর থ্রিলারের ক্ষেত্রে একটা ভিন্নধর্মী এপ্রোচ। শুভ কামনা লেখকের জন্য।

রেটিং -৪.৫ (.৫ কাটলাম মুচকি হাসির জন্য কারণ বিরক্ত করেছে)

(ছবি সংগ্রহিত ও পরিমার্জিত)

হ্যাঁ , লেখক ভাই আপনি যদি এটা দেখেন তাহলে প্লিজ পাঁচ বছর অপেক্ষা করাইয়েন না আমাদের। সাসপেন্স পুরোটা ঝুলিয়ে আমাদের আটকে রাখা মোটেও উচিত হবে না।

সার সংক্ষেপ -
স্ত্রী তারিন এবং মেয়ে মাহাকে নিয়ে এমপি সাজেদের পরিবার। বেইলি রোডে বসবাসরত এই পরিবারটির দিন সুখেই কাটছিল। কিন্তু হঠাৎ করে তারিন অদ্ভুত সব আচরণ শুরু করল। পরিস্থিতি ক্রমে খারাপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রাণভ্রমর স্ত্রীকে বাঁচাতে সাজেদ মরিয়া। তারিনের এমন অবস্থার কারণ কি? অসুখ না ষড়যন্ত্র?

মুয়াজ্জিন হাফেজ মিয়ার জীবন বেশ নির্বিঘ্নেই কাটছিল। তবে, নিতান্তই সহজ সরল এই মানুষটির জীবন পাল্টে যেতে আরম্ভ করে, যখন তার সাথে এক সৌম্যদর্শন হুজুরের সাক্ষাত হয়। তিনি বুঝতে পারেন জগত সম্পর্কে তিনি কতটা অজ্ঞ, কত রহস্যই তার অজানা। কিন্তু, এই অজানাকে জানার আকাঙ্খা যেন আবার তাঁর কাল না হয়ে দাঁড়ায়।

ভার্সিটি পড়ুয়া আসলান কস্মিনকালেও ধারণা করেনি এমন ঘটনার মুখোমুখি হতে হবে। তিলে তিলে গড়ে তোলা বিশ্বাসের ভিত্তিটা দুর্বল হয���ে যাচ্ছে। কিন্তু সে এর শেষ দেখেই ছাড়বে। তবে, নতুন জীবনের এই যাত্রার শেষটা যে কতটা অবিশ্বাস্য ও ভয়ংকর তা খোদ আসলানও জানেনা।

তিনজন ভিন্ন শ্রেণির মানুষ, ভিন্ন ভিন্ন তাদের জীবনধারা। কিন্তু তারা যেন একই সূত্রে গাঁথা। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দ্বন্দ্ব নিয়ে তিনজন জীবন শংকা পার করে কি পারবে তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে? নাকি তারাও হবে অন্ধকারের অধিপতির শিকার? ভালো মন্দের দ্বন্দ্ব জগতের আদিম ন��য়ম। আরো একবার হচ্ছে ভালো ও মন্দের লড়াই। শেষমেষ কে বিজয়ী হবে? নাকি এর কোনো শেষই নেই?

জানতে হলে অবশ্যই আপনাকে পড়তে হবে কুরআন-হাদীস ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে সমৃদ্ধ হরর আর অকাল্ট থ্রিলার 'জিন'। সুতরাং পাঠক, প্রস্তুতি নিন জিন, কালো জাদু, অকাল্টিসিজমের অদ্ভুত দুনিয়ার সাক্ষী হতে।
Profile Image for Imad Wasim.
1 review
January 18, 2022
১০ টার দিকে কুরিয়ার থেকে বই এনে পড়তে বসি। একটু আগে শেষ দিলাম। মাঝখানে কেবল খাওয়াদাওয়া আর গোসল। কী লেখল সেটাই ভাবছি!

এটা কেবল হরর? না এটা হরর থেকেও বেশি কিছু। এত ঝরঝরে বর্ণনা পুরো বইকে মিষ্টির মতো রসালো করে দিয়েছে। Jinn one of the best book that I've ever read in my whole life. Solid five star for this peculiar, terrific and intriguing book
Profile Image for Imdadul  Swadin .
49 reviews2 followers
February 1, 2022
আপনি হয়তো এখন পযন্ত অনেক হরর বই পড়েছেন তাহলে জিন বইটি কেন পড়বেন?
অন্যান্য হরর বই থেকে এর পার্থক্য কি ?
কি এমন আছে বইটিতে ?

বইটি প্রকাশ পাবার পর থেকে এখন পযন্ত বেশ ভালো রিভিউ হয়েছে। পাঠকরা বিভিন্নভাবে তাদের মতামত প্রকাশ করেছে। মোটামুটি ভাবে বলতে গেলে ভালো-খারাপ দিকগুলো ইতিমধ্যে পাঠকরা রিভিউর মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে।

পাঠক হিসেবে আমার মতামতটা লিখে ফেললাম।
জিন যে আছে তা তো বিশ্বাস করেন? যদি না করেন তাহলে এখন থেকে বিশ্বাস করা শুরু করুন, না করলেও তেমন সমস্যা নাই কারন বইটি পড়া শেষে এমনি এমনিই বিশ্বাস করবেন।

জিন আছে, তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কুরআনুল কারীম অনুসারে জিন জাতি মানুষের ন্যায় আল্লাহ তা’য়ালার সৃষ্ট একটি জাতি। পৃথিবীতে মানুষ আগমনের পূর্বে থেকেই তাদের অস্তিত্ব বিদ্যমান। এমনকি এখনও তাদের অস্তিত্ব রয়েছে। আমরা হয়তো তাদের দেখতে পাইনা কিন্তু তারা আমাদের ঠিকই দেখতে পায়। আমাদের মত তাদের মধ্যেও রয়েছে ভালো খারাপ, মুসলিম বা কাফের।

বইটিতে যে গল্প রয়েছে তাকে ফিকশন বলা যাবে না , গল্পটি মুলত ফিকশন ও নন-ফিকশনের সংমিশ্রন। গল্পের ছলে কোরআন ও হাদিসের আলোকে পাঠককে একটি তথ্যমূলক বই উপহার দেয়ার জন্য লেখককে বাহবা দিতেই হয় ।

গল্পটি দুইটি প্লট ধরে আগানো। একটি হচ্ছে ঢাকার বেইলী রোডের এক প্রতাবশালী পরিবার আর অন্যটি হচ্ছে মুন্সিগঞ্জ গ্রামের ছোট্ট মসজিদের এক হুজুর ও মুয়াজ্জিনে। দুইটি প্লটেই পাবেন হরর,ভয়, ইমোশন, সাসপেন্স আর টেনশনের স্বাদ ।

গল্পের বিল্ডআপ স্লোল হলেও মাঝামাঝি থেকে বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়তে হয়েছে আর শেষটা ছিল বরাবরের মতই শকিং টুইস্ট।

শুরুতেই বলেছিলাম বইটি জিন নিয়ে কুরআন ও হাদীসের আলোকে লেখা তার পরিপ্রেক্ষিতে পুরো বই জুড়ে ছিল জিন জাতির তথ্য দিয়ে ভরপুর। জিন কারা? তাদের ইতিহাস। কালো জাদু কি ? তার প্রভাব, চিকিৎসা এবং জিন ও মানুষের মধ্যে সম্পর্ক।

সাবলীলভাবে উপস্থাপন, ঝরঝরে লেখনশৈলী, চাপ্টার ভিত্তিক চরিত্রায়ন ,ফিকশন, নন-ফিকশনের সংমিশ্রন, দারুন সব রেফারেন্সও শকিং টুইস্ট। সবকিছু মিলিয়ে বেশ ভালোই ছিল ।

গ্রন্থরাজ্য প্রকাশনীকে ধন্যবাদ দিতেই হবে। তাদের প্রডাকশন ছিল আপার লেভেলের, হার্ড বাইন্ডিং আর অস্থির মলাট।


এবার আসি নেগেটিভ দিকগুলোতে-

লেখক অধিকাংশ সময়ই ছোট ছোট বিষয়গুলোকে খুবই ডিটেইলসে লিখেছে তা অনেকাংশে অপ্রয়োজনীয় ছিল।
গল্পের একটা প্লট হলো ঢাকার - ঢাকার মত একটি শহরে ডুপ্লেক্স বাড়ি কিন্তু অধিকাংশ সময়ই সেই বাডিতে বিদুৎ থাকেনা , থাকে কি ঘুটঘুটে অন্ধকার। গল্পের খাতিরে মেনে নিতে হল।

যেই ব্যাক্তি নিজে এম.পি, ঢাকার বেইলী রোডে তার নিজের ডুপ্লেক্স বাড়ি , যার শুশুর মন্ত্রী কিন্তু তার নিজের কোন গাড়ি নেই। প্রয়োজনে শুশুরের কাছ থেকে চেয়ে ঐ গাড়ি ব্যবহার করেন। লেখক লিখেছে তাই মেনে নিলাম।

কিছু ক্রটি:
৬০ নাম্বার পৃষ্ঠার ৩ প্যারায় যতেই না হয়ে যেতেই হবে ।

১৪১ নাম্বার পৃষ্ঠার শেষের ২য় প্যারায় আসলান ও আব্দুর রহমানের কথা হচ্ছিল । কথা প্রাসঙ্গিকতায় আসলানের কথায় আব্দুর রহমান মুচকি খাসলেন কিন্তু লাস্ট প্যারায় লেখা সাজেদের নাম।এখানে আসলানের নাম হবার কথা।

১৪৪ নাম্বার পৃষ্ঠায় ২য় প্যারায় লেখা- সাজিদ নির্বাক হয়ে থাকিয়ে।

১৬২ নাম্বার পৃষ্ঠায় ৬ষ্ঠ প্যারায় ৩য় লাইনে আল্লাহ লেখাটা দুইবার এসেছে।

২২৮ নাম্বার পৃষ্ঠার লাস্ট লাইনে রুদকইয়া না হয়ে রুকইয়া হবে।

২৩৮ নাম্বার পৃষ্ঠায় ৪র্থ প্যারায় লাস্ট লাইনে সম্ভবত জাফরের জায়গায় আসলানের নাম হবে।

শেষ কথা:
যতদুর জানি লেখক বইটিকে শুধু টাকা বা নাম কামানোর উদ্দেশ্যে লেখেননি, উনার অন্যরকম একটা উদ্দেশ্য ছিল, উদ্দেশ্যটা মহৎ ।
আমার বিশ্বাস তিনি সেই উদ্দেশে সফল ।

লেখকের প্রকাশিত অন্যান্য বইগুলি:
ভ্রম, দিমেন্তিয়া, অ্যাবসেন্টিয়া , পিনবল
Profile Image for Wasim Mahmud.
357 reviews29 followers
June 25, 2022
তারিন।‌ স্বামী এবং সন্তান নিয়ে মোটামোটি সুখে-শান্তিতে জীবনযাপন করা একজন নারী। তাঁর আচার-আচরণ আকস্মিকভাবে একদম অন্যরকম হয়ে যায়। ক্ষণে ক্ষণে তাঁর এরকম অদ্ভুত এবং ভয়ানক আচরণ কি মানসিক কোন সমস্যা নাকি আর কিছু?

সাজেদ। অত্যন্ত ধূর্ত এবং নিষ্ঠুর একজন এমপি। স্ত্রী তারিন এবং মেয়ে মাহাকে নিয়ে এই ক্ষমতাবান মানুষটি পড়ে যান এক অসহায় অবস্থায়। অল্পবয়সী এই সংসদ সদস্যের ঘরটি পরিণত হয়েছে এক নরকে। এই নারকীয় পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পেতে মরিয়া সাজেদ বৈজ্ঞানিক পন্থা ফলো করে ব্যর্থ হন।

হাফেজ মিয়া। একজন সাধাসিধে মুয়াজ্জিন। আচমকা মসজিদে হাজির হন এক রহস্যময় সৌম্যদর্শন পুরুষ। ইমামতি করবেন তিনি। পুরো গ্রামে জনু মিয়ার কথিত কালো জাদুর দাপটে নামাজি মাত্র এই দু'জন‌ই।

আসলান। ইউনিভার্সিটির ছাত্র ইউনিয়নের সাহসী নেতা। টিউশনি পড়ান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দলের এমপি সাহেবের মেয়েকে। সংশয়বাদী এই যুবক জড়িয়ে পড়েন এমন ঝামেলায় যা বিজ্ঞান এবং যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না।

রফিক। সাজেদের বিস্বস্ত পিএস। রাজনৈতিকভাবে ধূর্ত এবং বদ স্বভাবের এই মানুষটি আবার এমপি সাহেবের যেকোন বিপদে জান বাজি দিয়ে ঝাপিয়ে পড়েন।

তবে বিপদ এবার এত ভয়ংকর যে উল্লেখিত সকল চরিত্রদের একত্রিত হতে হবে এক ভয়াবহ প্রতিপক্ষের মোকাবেলা করতে। এমন এক এন্টিটি যাকে হয়তো তারা সবাই মিলে দমন করতে পারবে না। কারণ তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হল জিন।

ঘটনাচক্রে কিছু অন্ধকার রহস্যের উপর আলো পড়ে। জিনের চেয়ে অনেকসময় মানুষ আরো বেশি ভয়ানক। সবার সাহায্যার্থে এগিয়ে আসেন একজন রহস্যময় পুরুষ। পেশায় ডাক্তার তিনি। তবে জিনের ব্যাপারে অগাধ জ্ঞান তার। কিন্তু এবারের চ্যালেঞ্জ এত‌ই বড় যে তিনিও যথেষ্ঠ কিনা জিন সামলাতে তা বলা বেশ কঠিন।

এই আখ্যানে লেখক বিতর্ক এবং অনাকাঙ্খিত ঝামেলা এড়াতে সরাসরি কোর‌আন এবং হাদিস থেকে রেফারেন্স টেনে এনেছেন। জিনকে দেখা হয়েছে ইসলামে বিশ্বাসী দৃষ্টিকোন থেকে। এই বিষয়ে নন ফিকশন লিখতে পারতেন তিনি। তবে ফিকশনের মোড়কে জিন সম্পর্কিত গল্পে মানুষ বেশি আগ্রহী হবে।

এম.জে.বাবুর লিখা প্রথম কোন ব‌ই পড়া হলো। লেখক ইসলামিক দৃষ্টিকোন থেকে জিন সম্পর্কিত ‌এমন কিছু তথ্য-উপাত্ত দিয়েছেন যা অনেক পাঠকের‌ই অজা��া। সেই হিসেবে তাকে ক্রেডিট দেয়া যায়। লেখকের লিখা প্রথম ব‌ই এটি। দীর্ঘ ৪-৫ বছর ধরে লিখে শেষ করেছেন এই আখ্যানটি। এই কারণে তাকে বেনেফিট অফ ডাউট দেয়া যায়। কারণ তাঁর লেখনী অত্যন্ত অসঙ্গতিপূর্ণ।

আমি জানি এম.জে.বাবুর বিপুল ফ্যান ফলোয়ার আছেন। আমি দুঃখিত। আমাকে আপনারা ক্ষমা করবেন। তবে ক্রিটিক না করে পারছিনা। লেখক Noun এর ব্যবহার এত করেছেন, এত করেছেন যে Pronoun এর যে কোন আদৌ দরকার আছে তা বোধহয় হয় মনে আনেন নি। এক এক প্যাড়ায় লাইনে লাইনে "সাজেদ এই করছে। সাজেদ সেই করছে।" এরকম লিখে তিনি পুরো বাক্যবিন্যাস করে ফেলেছেন বিরক্তিকর। তাছাড়া গল্পকথক হিসেবে যেরকম ভিজুয়ালাইজেশন তিনি আনতে পারতেন তার খুব অল্প প্রয়োগ দেখেছি। শেষের দিকে তিনি কিছু টুইস্ট এবং অল্প ইন্টেন্সিটি আনতে পেরেছেন। এই ধরণের হরর গল্পে তিনি স্টোরিটেলিং এর "শো, ডোন্ট টেল" এর প্রয়োগ করে দারুন এক আখ্যান লিখতে পারতেন।

এই গল্প স্বাধীনতা পরবর্তী মিড সেভেন্টিজের একটু পরের মনে হয়। সেই সময়কার চিত্র তিনি কিছুটা তুলে ধরেছেন। তবে বিরোধী পক্ষের সাথে ঝামেলায় থাকা একজন চতুর এমপির বাসায় সিকিউরিটি না থাকাটা কেমন যেন বেখাপ্পা লেগেছে। এছাড়া লেখক বারবার "ঢক ঢক" "ধপ ধপ" "টপ টপ" এই সকল শব্দের পুনরুক্তি করে গেছেন। ঐ যে "শো, ডোন্ট টেল" করতে না পারার ফলাফল। এক পানি ভর্তি জগের উপরের পিরিচ খুলে গ্লাসে পানি ঢালা হলে "টপ টপ" আওয়াজ কিভাবে হয়? গল্পে অযথা ফিলার সেনটেন্স এবং ফিলার ওয়ার্ড এনে আখ্যানটি লম্বা করা হয়েছে। একটি ভালো এবং নতুনত্ব সম্পন্ন প্লটের বারোটা বাজলো।

লেখকের "দিমেন্তিয়া" এবং "অ্যাবসেন্টিয়া" আমার সংগ্রহে আছে। আশা করছি তার পরবর্তিতে লিখা তবে আগে প্রকাশিত হ‌ওয়া উল্লেখিত ব‌ইগুলো পড়ে আমার এত হতাশ হতে হবে না। লেখক বরঞ্চ কিছু সাবলীল লেখনীর প্রয়োগ দেখিয়েছেন যখন কোর‌আন এবং হাদিসের সূত্র ধরে কোন চরিত্র জিন সম্পর্কে বিভিন্ন ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। ঐ ডোমেইন ছাড়া বাকি ক্ষেত্রে ডিজেপয়েন্টেড হলাম। ভালো প্লটের এক্সিকিউশন বা সঠিক প্রয়োগ না হলে মনটা খারাপ‌ই হয়।

বহুল জনপ্রিয় বা বেস্টসেলার মানেই মানসম্পন্ন ব‌ই যে নয় বরঞ্চ অনেক ক্ষেত্রে ঠিক উল্টোটা সেটি এম.জে.বাবুর "জিন" পড়ে আবার উপলব্ধি হলো।

বুক রিভিউ

জিন

লেখক : এম.জে.বাবু

সম্পাদনা : উম্মে কুলসুম সাদিয়া মুকাম্মিল, মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ

প্রকাশকাল : জানুয়ারি ২০২২

২য় মুদ্রন : ফেব্রুয়ারি ২০২২

৩য় মুদ্রন : জুন ২০২২

প্রকাশনা : গ্রন্থরাজ্য

প্রচ্ছদ : সজল চৌধুরী

জনরা : হরর এন্ড অকাল্ট থ্রিলার

রিভিউয়ার : ওয়াসিম হাসান মাহমুদ
Profile Image for রায়হান রিফাত.
255 reviews8 followers
January 18, 2022
❛জিন❜
👉🏾এম.জে.বাবু

❝যারা ঈমান আনেন এবং তাদের মহান রবের উপর তাওয়াককুল (ভরসা) করেন, তাদের উপর সে (শয়তান) আধিপত্য বিস্তার করতে পারেনা |❞ - সূরা নহল - ৯৯

"জিন" বিশ্বের প্রতিটি মুসলমান মনে প্রাণে বিশ্বাস করে পৃথিবীতে জ্বীন আছে|| তারা হয়ত আমাদের মত মাটির তৈরী না তবে মহান আল্লাহ তায়ালার অসংখ্য সৃষ্টির মধ্যে একটি|| মানব জাতি আর জ্বীন কে তৈরী করা হয়েছে আল্লাহর ইবাদাত করার জন্য কিন্তু কিছু পথভ্রষ্ট জ্বীন ও মানুষ তা না করে শয়তানের উপসনায় ব্যতিব্যস্ত থাকে|| এমন শয়তান দের কর্মকাণ্ডের জন্য ভুগতে হয় সাধারণ পরিবার কে|| এমন ই সাধারণ দুটি পরিবারের গল নিয়ে এগিয়েছে বই টি||

'জিন' বই এর মূল বিষয়বস্তু হল- কালোজাদু,শয়তান,জিনের দ্বারা মানুষের ক্ষতিসাধন ইত্যাদি||

⚫️আখ্যান ও সূত্রপাত ---
"নোয়াখালী-২ আসনের এমপি সাজেদ বিবাহিত হলেও অনেকদিন ধরে সন্তানহীন|| তার স্ত্রী তারিন|| বিভিন্ন চিকিৎসার পর ও যখন সন্তান হয়নি ; তখন তারা এতিমখানায় এসেছেন বাচ্চা দত্তক নিতে||
তারা কতিপয় বাচ্চার মাঝে একজন বোবা মেয়ে বাচ্চা পছন্দ করে,সাথে নিয়ে আসেন||
তবে তাদের যদি অদৃশ্য সৃষ্টি দেখার শক্তি থাকতো তবে দেখতে পেত- ছোট্ট বাচ্চা কে গাড়িতে চড়িয়ে রওনা দেওয়ার সাথে সাথে তারা একটি কালো ছায়া ও নিয়ে গেলো সাথে করে|| যার পরিণতি তাদের ভোগাবে বহুদিন||
তারপর আগমন ঘটে রফিক,আসলান,শহীদ,জাফর,হাফেজ মিয়া,জনু কবিরাজ এবং হুজুর ইমরানের||
মাহার জন্মদিনের অনুষ্ঠানের পর ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পরে তারিন||কিন্তু নিজের অসুস্থতার কথা সে জানেনা||
ধীরে ধীরে তার অসুস্থতা মানসিক ভারসাম্যহীনতা হিসেবে ধরা দেই সবার চোখে|| ধীরে ধীরে সমস্যা প্রকট হতে থাকে আর স্ত্রীর চোখের বিষ হতে থাকে সাজেদ|| রফিক বাড়ি থেকে একজন পির বাবার কাছে গিয়ে সমস্যার কথা বলে নিয়ে আসে একজন হুজুর কে||
হুজুরের আগমনের পর পাল্টে যায় চিত্র|| সামনে চলে আসে জ্বীনের অস্তিত্ব|| আর ঘটতে থাকে ভয়াবহ সব ঘটনা||

ঘটনা জানতে হলে পড়তে হবে বইটি 😉

⚫️পাঠ প্রতিক্রিয়া ও পর্যালোচনা—

❛ জিন ❜ কালোজাদু আর শয়তান জ্বীন দের নিয়ে এই গল্প||
এই গল্প সাজেদ আর তার অসুস্থ স্ত্রী তারিনের|| তারিন অসুস্থ হওয়ার পর থেকে সাজেদের ঘরে ঘটতে থাকে অদ্ভুত সব ঘটনা|| ঘটনা চক্রে এর সাথে জড়িয়ে তাদের গৃহ শিক্ষক আসলান||
এই গল্প একজন নাস্তিকের আস্তিক হওয়ার ও গল্প||
এই গল্প বিশ্বাসীদের সাবধান করার ও গল্প||
এই গল্প অদৃশ্য বাসীদের বিভিন্ন আখ্যানের গল্প||

বেশ অনুভব করেছি বই টি পড়তে গিয়ে,যেহেতু আমি বিশ্বাসী মানুষ তাই অনুভব করাটাই স্বাভাবিক || ছোট খাট ভুল থেকে কত বড় বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে তা আমাদের অজানা|| ভালর বিপরীতে খারাপ যতই শক্তিশালী হোক না কেন ভাল'র উপর আল্লাহ তায়ালার রহমত সবসময় বর্ষিত হয়||

হরর থ্রিলার বই হিসেবে বেশ রোলার কোস্টার একটা রাইড ছিল||
বেস উপভোগ করেছি||রেকমন্ডেড সবার জন্য||
তবে বেশ কয়েক জায়গায় এক ই আয়াত ঘুরে ফিরে বারবার এসেছে যেটা একটু অলস করে দিয়েছিলো|| আর হুজুরের বিষয় টা আরেকটু লুকায়িত থাকলে ভাল হত|| যে কেও হুজুরের বিষয় টা শুরুতেই নজরর দিবে||

কয়েকটা বিষয় বাদ দিলে বেশ ভাল লেগেছে 🖤



⚫️চরিত্রায়ন—

খুব বেশি চরিত্র না থাকায় আমার জন্য সুবিধা হয়েছে,মনোযোগ ধরে রাখতে পারছিলাম||
তবে হাফেজ মিয়ার চরিত্রে আরেকটু গুরুত্ব দেওয়ার দরকার ছিল||
রফিক আর সাজেদের চরিত্রের টুইস্ট টা অসাধারণ ছিল||
সবশেষে যে টুইস্ট আসে চরিত্র নিয়ে তা ও ভাল ছিল||
একটা জিনিস না বললেই নয় - মাহা যদি বোবা না হত তাহলে হয়ত গল্প এত জমতোনা||


⚫️খুচরা আলাপ—

বেশ সাবলীল আর প্রাঞ্জল ছিল বইটির লেখনী||
পড়ে উপভোগ করছিলাম আর কিছু জিনিস যা জানিনা তা মনে রাখছিলাম মিলিয়ে নেওয়ার জন্য||

রুকাইয়্যাহ গুলো স্পষ্ট ভাবে আলাদা করে , উল্লেখ করে দিলে বোধয় ভাল হত|| আর বই এ যেহেতু সূরা আছে তাই বই এর প্রথম পৃষ্ঠায় একটু সতর্কীকরণ দিয়ে দিলে ভাল হত যাতে হেলে ফেলে না রাখি বই টি||

ব্যক্তিগত মতামত রবে সূরা গুলো পরবর্তী সংস্করণে সরিয়ে ফেলার জন্য|| কারণ কোনো না কোনো ভাবে বই উপরে নিচে থাকতেই পারে||

রেটিং: 8.5/10
Profile Image for Mijan Rashid.
55 reviews20 followers
April 20, 2024
একজন প্রকৃত মুসলমান মাত্রই জিনের অস্তিত্বের উপর বিশ্বাস রাখবেন কারণ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সূরা জিন সহ বিভিন্ন সূরা এ জিন এর অস্তিত্ব সম্পর্কে বলেছেন বিশেষত সূরা আয্-যারিয়াত এর ৫৬ আয়াতে আল্লাহ বলেন ��আমি জ্বীন ও মানুষকে কেবলমাত্র আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি”। 

অতি প্রাকৃতিক ক্ষমতার লোভে প্রাক ইসলামী যুগ থেকেই জিন নিয়ন্ত্রণ কিংবা অধিকার বা বশে কিছু মানুষ নিয়োজিত ছিল; অনেক সাধু/ সন্ন্যাসী /দরবেশ/ পীর / কবিরাজ সফল হয়েছেন। সাধারণ মানুষ এসকল পীর দরবেশের কাছে যায় ১. স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে ২. ভালোবাসার মানুষটিকে পেতে অথবা ৩. শত্রুর ক্ষতি করতে।

সাজেদ, তনিমা ও দত্তক নেয়া মেয়ে মাহা এবং মুয়াজ্জিন হাফেজ মিয়া জীবনে ঘটতে থাকা অস্বাভাবিক এবং ভয়ংকর ঘটনাগুলোর ব্যাখ্যা কি! কিভাবে এরা পরিত্রাণ পেতে পারে দুর্বিষহ জীবন থেকে?

খারাপ জিনের কর্মকাণ্ড, ব্যবহার বা খারাপ কাজে এদের প্রয়োগ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা আছে বইটিতে। বইটির একটাই দূর্বলতা- হরর বই আবহ সৃষ্টি করতে লেখক আরেকটু যত্ন নিতে পারতেন।
Profile Image for Nafisa Nawar.
74 reviews16 followers
February 4, 2022
ছোটবেলায়, এই ধরুন ৯৭ কি ৯৮ সালের দিকে, দেখতাম যে রাস্তায় ফেরিওয়ালার মত তাবিজ বিক্রি হচ্ছে! বাড়ির গৃহকর্মীরা কিনতে যেতো। বাবা এত মানা করতো, কিন্তু আর কেউ কিছু বলতো না দেখে কিনে আনতো। ভাগ্যিস বাবা আমাকে তখনই শিখিয়েছিলেন, তাবিজে বিশ্বাস করা শিরক!
কষ্টকর ব্যাপার কি, এই কালো জাদুকরেরা অনেকেই হুজুরের লেবাসে থাকে, তাই অনেকেই তাদের বিশ্বাস করে। এই ক'মাস আগেও একজন আমাকে তাবিজ এনে দিয়েছিলো! অবাক হয়েছিলাম। এমন একজন দিয়েছিলেন, ভেবেছিলাম এটুকু জানেন। প্রশ্ন করাতে উত্তর এলো, "হুজুর দিয়েছেন!"

তো এমন ভ্রান্ত, ভয়ংকর বিশ্বাস ভাঙানোর লেখকের প্রচেষ্টাকে আমি প্রশংসা করি। আলহামদুলিল্লাহ বেশ সমাদৃত হচ্ছে। সিরিজের পরবর্তী বইয়ের অপেক্ষায় রইলাম অধীর আগ্রহে।

হ্যা, সেই মুচকি হাসি দেখে আমারও একটু অস্বস্তি লেগেছে বৈকি! কিন্তু এটুকু অগ্রাহ্য করাই যায়। লেখকের ৫ বছরের সাধনা সফল হয়েছে। আচ্ছা, প্রাককাহিনী পড়ে কেউ কি আমার মত কেঁদেছেন?
Profile Image for Arfaz Uddin.
91 reviews8 followers
February 2, 2022
আর আমি সৃষ্টি করেছি জিন এবং মানুষকে এজন্যেই যে, তারা কেবল আমার ইবাদাত করবে। (সূরা আয যারিয়াত - আয়াত ৫৬)

জীন জাতির প্রতি মানুষের আগ্রহের অন্ত নেই। এক অদৃশ্য জাতি যা আমাদের আশেপাশে অনবরত ঘুরে বেড়াচ্ছে৷ কিন্তু কে এই জীন? কী তাদের উদ্যেশ্য? তারাও আমাদের মত এক আল্লাহর বান্দা৷ তাদের ও আল্লাহর প্রতি ইবাদত করার দ্বায়িত্ব অর্পিত রয়েছে।

কিন্তু তবুও তারা মানুষের জীবনে বারংবার নানাভাবে আঘাত হানে। মানুষের জীবনকে প্রতিহত করে, এমন কি এতটা খারাপ পর্যায়ে পৌছে যা যে মানুষের জীবন পর্যন্ত বিপন্ন হয়ে যেতে বাধ্য। তাই মানুষের জীনের প্রতি আগ্রহের অন্ত নেই।

আমি কোনো জীন গবেষক নই, তবে আমাদের এম জে বাবু একজন জীন গবেষক তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তিনি রিসার্চ করেছেন, যে পরিমান, রেফারেন্সের ব্যাবহার করেছেন তা নিতান্তই প্রশংসনীয়৷ কিন্তু তাহার কিছু মুদ্রাদোষ রয়েছে তাও সকলে জেনে গিয়েছে৷ নতুন আমার বলার মত তেমন কিছুই নেই৷ যথেষ্ট খুচরা আলাপ হলো, এবার বইয়ের কথার দিকে বাড়াই।

কাহিনী সুত্রঃ

জীন বইয়ের মধ্যে দুইটি দিক বা দুইটি জীবন নিয়ে আলোচোনা করা হয়, সাজেদ তারিন দম্পতির পরিবার আর অজপাড়া গ্রামের হাফেজ মিয়ার জীবন। যে দুই জীবন বদলে যেতে থাকে দুটি মানুষের আগমনে।
মাহা আর ইমরান হুজুর।

মাহা নিসন্তান সাজেদ-তারিন দম্পতির জীবনে একটা আলো হয়ে আসে, যা তাদের জীবনের সকল অন্ধকার ধীরে ধীরে দূর করে দিতে থাকে। তাদের জীবনে খুশির বন্যা বয়ে যায়, যা তারা হারিয়েছিলো কিছুদিন আগেই। কিন্তু তাদের জীবনেও এক অদৃশ্য কালো ছায়া ঘনিয়ে আসতে থাকে৷ যা বলা কঠিন, কারন অদৃশ্য ছায়াটা এমন ভাবে ক্ষতিসাধন করা শুরু করলো যার হদিস, কোনো স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে পাওয়া সম্ভব নয়। এই আধারী তো কোনো সাধারন আধার নয়। আপনারা হয়ত অনুমান করতে পারছেন। তবুও আমি বলবোনা।

হাফেজ মিয়া বড়ই চিন্তিত। একটি গ্রামে দশ বারোজন নামাযিও পাওয়া যায় নাহ৷ ফজরের সময়ে একা একা আজান সেরে মসজিদে নামায সারেন। এ কেমন কথা, পুরো গ্রামে একটা গজব নেমেছে যেনো। আল্লাহ যেনো গ্রামের মানুষের কাছ থেকে নিয়ামত ছিনিয়ে নিয়েছেন নামায পড়ার। এইরকম সংশয় সংকোচনের মধ্যে তার পরিচয় হয় ইমরান হুজুরের সাথে। তিনি আগের হুজুরের শিষ্য। হাফেজ মিয়ার মনে আশার আলো জন্মালো। তিনি মারা গেলেন আর রহমত যেনো এ গ্রাম ছাড়া হয়ে গেলো৷ এখন হয়ত তার ছাত্রই পারবে পুনরায় এই গ্রামে রহমত ফিরিয়ে আনতে।

এভাবেই আস্তে আস্তে সবার জীবন পতিত হতে থাকে এক অদ্ভুত সংকটে। তারিনের জীবনে আস্তে আস্তে উঠতে থাকে কালো ঝড়, যে ঝড়ে আস্তে আস্তে আক্রান্ত হতে থাকে পুরো পরিবার। কে পারবে এই আধার ঝড় থেকে তাদের রক্ষা করতে? একমাত্র আলো, রহমত, জ্ঞান আর তাকওয়া। এই ঝড় কিভাবে থামবে? এই ঝড়ে কার কতটুকু ক্ষতি হবে? এরকম অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর পাঠকের কাছে পৌছে দিয়েছে জীন বইটি।

আলোচোনা - সমালোচনাঃ

এবার আসা যাক বইয়ের আলোচনা সমালোচনায়। অনেকেই ইতিমধ্যে অনেক রিভিউ লিখেছেন আর ভুলত্রুটি তুলে ধরেছেন। আমিও নিজের ক্ষুদ্র পরিসরের মধ্যে আমার পক্ষ থেকে সেগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করবো।

বইটি সবার জানামতে দুটি ভাগে বিভক্ত। ফিকশন ও নন ফিকশন৷ নন ফিকশনের আলাপ করতে গেলে পাঠককে লেখক সন্তুষ্ট করতে পেরেছে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আমি ফিকশনের চেয়ে আকৃষ্ট ছিলাম বইয়ের এই অংশটিতে। কারন জীন সম্পর্কে একটা নূন্যতম ধারনা নেবার ইচ্ছা ছিলো যা বরাবর ই লেখক তুলে ধরতে পেরেছেন। আর লেখক খুটিনাটি তথ্য অসংখ্য রেফারেন্স ঘেটে বার করেছেন যা তার প্রতি আমার সম্মান আরো বাড়িয়ে তুলেছে।

ফিকশনের আলাপ করতে গেলে দেখা যাবে লেখক যথেষ্ট এফোর্ট দিয়েই গল্পটা তৈরি করে লিখেছেন যা আমার বেশ ভালো লেগেছে। তবে মানুষ ভুলত্রুটির উর্ধ্বে নয় তাই কয়েকটি ভুল চোখে পড়েছে৷ গল্পটার শুরুটা ধীর গতি ছিলো আর সেটা কিছুটা কষ্টকর। তবে যখন লেখক গল্পতে গতি এনেছেন তখন সেটার ফ্লো বেশ দ্রুত টেনেছেন। অনেকটা পালতোলা নৌকার মত। পাল ধরে যখন বাতাস বয়ে গেলো তখন তার গতিতে নিজেকে ধরে রাখা দায় ছিলো।

লেখকের লেখনশৈলীকে বিচার করার যোগ্যতা আমার নেই কিন্তু পাঠকের দৃষ্টিকোন থেকে আমি কিছু জিনিস খেয়াল করেছি। লেখকের লেখন পদ্ধতি বেশ ঝরঝরে তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বর্ননা দিলে আমার মনে হয় পড়ার আবহ টা আরো জমে উঠতো। কারন হরর বা অকাল্ট যাই বলি না কেন একটা আবহ জমে উঠলে বেশ হয়। আর মুচকি হাসির ব্যাপারটা আমি বলবো লেখকের মুদ্রাদোষের মত তবে আমি বলবো এটা থাকুক। এটাকে আমি তার অনন্যতা হিসেবে রাখলাম যদিও দৃষ্টিকটু মনে হয়েছে।

লেখক বইয়ের মধ্যে শেষে সূরাগুলো দিয়ে দিয়েছেন যা বেশ ভালো তবে তাও অনুরোধ রইলো পরবর্তীতে সেগুলো সরিয়ে ফেলার। এগুলো পাওয়া কোনো দূরহ বিষয় নয়।

লেখকের সকল ভুল ত্রুটিকে পাশে রেখে এবার আমি এম জে বাবুর একটু প্রশংসা করি৷ বইটি আমি তিন -চার দিনের মধ্যে শেষ করেছি এবং বেশ ঘোরে কেটেছে। ইসলামিক বই খুব কমই পড়েছি কিন্তু এটার মত ইউনিক বই পাওয়া কঠিন। কারন আর যাই হোক, লেখক পাচ বছর পরিশ্রমের যে ফল দেখছি তা ফেলে দেবার মত নয়। ইসলামকে একরকম থ্রিলারে রুপান্তর করা আর ভালোর জয় আর খারাপের হার দেখিয়েছেন। ইসলাম কোনোকালেই খারাপ কে প��রশ্রয় দেয়নি। যা লেখক আবারো পাঠক দের মনে করিয়ে দেয়। জীন সম্বলিত তথ্য, একটা পুরো রুকাইয়ার বর্ননা সব মিলিয়ে এমন ইউনিক বই আজো বের হয়েছে কিনা আমার সন্দেহ।

গ্রন্থরাজ্যের প্রডাকশন সম্পর্কে নতুন করে আর বলার মত কিছুই নেই। খুবই চমৎকার ছিলো৷ হাতে নেবার পর ই মনে হয়েছে যে না, একটা বই হাতে নিয়েছি। পেজগুলোর কোয়ালিটিও সব মিলিয়ে পার্ফেক্ট।


অক্টারিন Vs জীনঃ


এবার শেষ প্রসঙ্গ। আমি কোনো তুলনা করবো না তবে জীন পজেসন নিয়ে আমরা আরেকটি বই পেয়েছিলাম যার নাম অক্টারিন। আমার নিজের মনে হয়েছিলো যে দুটো বইয়ে হয়ত কিছু মিল পেতে পারি কিন্তু তা পুরোপুরি ভুল প্রমান করিয়েছে লেখক। শুধুমাত্র নন ফিকশন পার্ট আর রিয়েল্যাস্টিকতা সে বইয়ের থেকে জীন বইকে আলাদা মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে।
অক্টারিন ও একটি চমৎকার বই নিঃসন্দেহে।

বলতে বলতে অনেক কথাই বলা হলো, শেষ করবো একটা কথাই বলে, এই বইটি পড়া শুধু একটি গল্প পড়াই না, নিজের বিবেক কে পুনরায় জাগ্রত করা, ভালোকে যেনো নিজের মাঝে বাচিয়ে রাখা, খারাপের সাথে বিদ্যমান ভালোর সর্বকালের যুদ্ধ। আর জ্ঞানের ভান্ডার এই বইটি, যা আমাদের পরবর্তী জীবন চলতেও নানাভাবে সাহায্য করতে পারে।

আশা করি এম জে বাবুর আরো বই পড়বো আর সিরিজের পরবর্তী বইয়ের অপেক্ষায় রইলাম আগ্রহ ভরে।

বইয়ের তথ্যঃ

বইয়ের নামঃ জীন
লেখকঃ এম জে বাবু
প্রকাশকঃ গ্রন্থরাজ্য
মুল্যঃ ৫৮০ টাকা মাত্র।

গুডরিডস রেটিংঃ ৪.৫৪/৫
পার্সোনাল রেটিংঃ ৪.৯৫/৫ (মুচকি হাসির জন্য)

রিভিউটি নিতান্তই ব্যাক্তিগত মতামত ও দৃষ্টিকোনে লিখিত। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
Profile Image for শোয়েব হোসেন.
193 reviews13 followers
March 25, 2022
Sorry, really sorry. I'm sorry for the writer and sorry to the readers who absolutely loved this book and raved about it.
One of my new year resolution was to learn to quit things that I don't enjoy, and the first thing I'm quitting this year is this book. I'm DNFing this book at 200 pages.
I can not take this god-awful writing style anymore. Please someone tell him to use some pronouns.

Or
This could be entirely a 'me' thing. May be I don't have the taste for this supposedly Masterpiece.

I really need to stop buying books just because it has a beautiful cover.
Profile Image for Mueed Mahtab.
344 reviews
January 28, 2022
অনেকদিন পর নতুন বই হাতে পেয়েছি প্লাস্টিকে মোড়ানো ছিলো,বইটা খুলতেই নতুন বইয়ের যে ঘ্রান থাকে সেটায় হারিয়ে গেলাম।চোখ বন্ধ করে বইটার ঘ্রান নিচ্ছিলাম আম্মু হঠাৎ রুমে এসে বলে "জিন সাধন করব নাকি?"

বইটা পড়া শেষ হয়ে গেলো।আবারও প্লাস্টিকে মুড়িয়ে রেখে দিব এখন,লেখকের আগের বইগুলার ভরসায় রেখেই চাপে থেকেও বইটা শুরু করেছি জানতাম বইটা নিজ দ্বায়িত্বে আমাকে টেনে নিয়ে যাবে।
৩৫০ পেজের বইটা শেষ করলাম ১২৬ পেজ পর্যন্ত টানা পড়েছি রাত্রে তারপর হয়তো ভয় পেয়েই বা ঘুমের কারনে বইটা রেখে দিয়েছিলাম।তারপর আবার পরের দিন সেখান থেকে শুরু করলাম, একটানে শেষ!

বইটা হরর না,হরর বই এর সাথে মানিয়ে নিয়েছি নিজেকে,হাজার গুন ভয় দেখানোর চেষ্টা করলেও হরর বই পড়ে ভয় পাই না,মনে হয় লেখক তো লেখেছেই আমাকে ভয় দেখানোর জন্য এসব ভেবে ভয় লাগে না যদিও যখন পড়ি তখন লেখক যেভাবে যা বলেন সেভাবেই চিন্তা করে এগোই।তাছাড়া হরর-থ্রীলার আরও ভয় লাগে না কারণ সেখানে তো দিনশেষে মানুষেরই হাত থাকে!হাহ!ব্যতিক্রম বই জিন।

বইয়ের চরিত্রগুলা খুবই জীবন্ত।একবার মনে হচ্ছিলো যেন আমিই আসলান রূপে বইয়ের অন্য চরিত্রগুলোর মতো ঢুকে গেছি আমি আসলান না হলেও তার মতো করেই গল্পে ঢুকে গেছিলাম।ঢুব!গল্পের সবগুলো চরিত্রকেই সমান গুরুত্বপূর্ণ লেগেছে,সাজেদ,রফিক,আসলান,তারিন,শহিদ,অতসী,ইমাম সকলেই।সবাই সবার প্রয়োজনীয়তার প্রমাণ দিয়েছে বইয়ে,তবে ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় আসলানের চরিত্রটা না থাকলে বইয়ে অন্তত আমি ঢুব দিতে পারতাম না।
তারিনের অবস্থা দেখে হঠাৎ হঠাৎ ভয় পেয়ে উঠেছি,আবার সাজেদ-তারিনের ভালোবাসায় ভাটা পরার দিকটাও মন খারাপ করেছে,বয়স্ক মানুষ শহিদের উপর দিয়ে এত ঝড় বয়ে যাওয়ার কারনেও একসময় শহিদের জন্য খারাপ লেগেছে।তবে রফিক মাত্র ৪-৫ পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে ছোট্ট একটা লাইনে পেয়েছি,ব্যক্তিগত মনে হয়েছে গল্পে যেহেতু রফিক সব কাজই সামলাচ্ছে তাকে আরও শিক্ষিত দেখতে পারলে ভালো হতো।সাজেদ আর ইমাম সম্পর্কে এমনেই লিখলাম না।

বইটায় অনেক অনেক ইনফো দেওয়া,জিন বিষয়ক,কালো জাদু বিষয়ক,পবিত্র কোরান-হাদিসের বাণী খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরা।বইটা শেষ করে জিন নিয়ে আরও অনেক কিছুই জানার ইচ্ছা হয়তো মনে উকি দিতো কিন্তু বইটাই সেটা পূরন করে দিয়েছে।৩০০ পেজের পর খারাপ লেগেছে যে বইটা শেষ হয়ে যাচ্ছে।তারপর দ্রুতই শেষ। বইটা শেষ করে প্লাস্টিকে মুড়িয়ে রেখে দিব তার আগে এই লিখাটা লিখলাম যেন বইটার কথা মনে পড়লে এই লিখাটা পড়ে স্মৃতিচারণ করতে পারি!বানান ভুল-টুল নাই বললেই চলে।

ভিন্নধর্মী বইটা সকলের জন্য একটা গিফট।

৪.৮/৫

(ঠোটের কোনায় হাসি ফুটে উঠলে আমার মনে অক্ষয়ের ছবি ভাসে তখন ক্ষানিকের জন্য বই পড়া অফ করি ৫ মিনিটের বিরতি কারণ এই জিনিসটা আমার বিরক্ত লাগে তাছাড়া ঢোক গিলে কথা বলা শুরু করলো এই জিনিসটা চিন্তা করতে একটু কেমন যেন লাগে তাছাড়া বইয়ের সবকিছুই একশো একশো)

ভুল-ক্রুটি মাফ করিবেন।
Profile Image for فَرَح.
188 reviews2 followers
September 2, 2023
একটা সময় পর্যন্ত আমি মানতে চাইতাম না যে জিন আছে। আল্লাহ মাফ করুক। জিনকেও ভুত, প্রেত আর আত্নার দলে ফেলে দিয়েছিলাম আরকি। ক্লাস সিক্স থেকেই ছিলাম জাফর ইকবালের বইয়ের ভীষণ ভক্ত । বলাই বাহুল্য, সেই সাথে ভীষণভাবে "বিজ্ঞানমনস্ক" ও হয়ে উঠেছিলাম বইকি। ছোটোবেলায় নিজের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোকে তাই স্রেফ 'স্লিপ ওয়াকিং', ' হ্যালুসিনেশন', ' শিশুমনের কল্পনা' ইত্যাদি বলে উড়িয়ে দিতাম৷ পরবর্তীতে জানলাম ভুত বলতে কিছু না থাকলেও জিনকে অস্বীকার করা যাবে না৷ আল্লাহ তায়ালা কোরআনে স্পষ্ট বলে দিয়েছেন। আব্বু বলতো, তাদের গ্রামের এক কবিরাজ মানুষের মুখ দেখেই নাকি তার অতীতের সব কিছু গড়গড় করে বলে দিতেন। যেকোনো কিছুর(!) সমাধান নাকি পাওয়া যেতো তার কাছে। আমি ভাবতাম ভন্ড হলেও ব্যাটা শার্লক হোমস বটে।
আস্তে আস্তে জানলাম কত কিছু। কত রহস্যময় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার সৃষ্টি। নতুন করে স্মৃতিচারণ হয়ে গেল।

কিছু ব্যপার আমার কাছে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক মনে হয়েছে। আমি নাদান মানুষ তবুও বলেই ফেলি। সত্যিকারের ইমানদার কোনো রাক্বি গায়রে মাহরাম কোনো মহিলার গায়ে হাত দিয়ে রুকইয়া করে না। সাথে মাহরাম মহিলা উপস্হিত থাকতে হয়। রুকইয়া নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে গিয়ে অনেক রাকিকেই এই ব্যপারটা নিয়ে কড়াকড়ি আরোপ করতে দেখেছি।

দিনশেষে এটি নিছকই একটি থ্রিলার ইসলামি জীবনাচারটা উঠে এসেছে।

লেখকের বর্ণনাভঙ্গি খাপছাড়া। প্রত্যেকটা বাক্য আলাদা করে চোখে পরে। তাত্বিক আর ইসলামিক আলোচনা বাদে বাকি অংশগুলা একটু বেশিই খাপছাড়া।
Profile Image for Nafisa Tarannum.
77 reviews24 followers
March 11, 2023
না হইসে হরর উপন্যাস, না হইসে জ্বীনদের নিয়ে প্রবন্ধ না হইসে কিছু! যা হইসে তা হলো Utter Bullshit! সময়, অর্থ ও শ্রম তিনটাই জলে!
মোটামুটি ১৬০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পড়া গেছে। তারপর মনে হইলো কাজী ম্যাকের বই পড়া স্টার্ট করসি। খালি ইনফো ডামপিং! ৩৩৩ পৃষ্ঠার এই বই অসীম ধৈর্য্য ও বিরক্তি নিয়ে শেষ করার জন্য আমাকে সাধুবাদ!
পৃথিবীতে সবচেয়ে আদিম, কম বিনিয়োগের ও সর্বাধিক লাভজনক ব্যবসা হলো ধর্মব্যবসা। লেখক সাহেব ও তাই করেছেন। ইসলাম বেচে বই বেচছেন। তরিকা চমৎকার, বইটা ভালো হলেই হতো! আফসোস!
Profile Image for Md Omar Faruk.
36 reviews3 followers
January 31, 2022
হাইপ তোলা বই অনেক ক্ষেত্রেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে না। কিন্তু বাবু ভাইয়ের প্রতিটি বই ই হাইপ তুলেছে এবং প্রত্যাশার চেয়ে বেশিই পেয়েছি। শেষ পাতা পর্যন্ত টেনে রাখে পাঠককে এবং সবশেষে মাথা ঘুরানো টুইষ্ট (একাধিক টুইস্টও থাকে)

লেখকের আগের বইগুলো থেকে এই বইটিকে আমি আলাদা রাখতে চাই। কেন তা নিচে বলছি।

এই বইয়ে প্রথম ১০০ পৃষ্ঠা ক্যারেক্টার বিল্ড-আপ, গল্প বিন্যাস ও গল্পের চাহিদা অনুসারে ধীর গতিতে এগিয়েছে। ১৩০ পৃষ্ঠার পর রোলার কোষ্টার রাইড এর মতো। ৩ দিনে প্রথম ১৩০ পৃষ্টা পড়েছি। বাকি ২০০ পৃষ্টা এক বসায় শেষ করেছি। চুম্বকের মতো টেনে রেখেছিলো। বইয়ের দুই তৃতীয়াংশ পড়ার পর কয়েকটা টুইষ্টের একটা মনে উঁকি দিয়েছিলো এবং শেষে মিলেছেও। তবে এই বই আপনাকে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাবে।

জাফর, জনু কবিরাজ, ভূঁইয়া সাহেব চরিত্রগুলোর অতীতের গল্প জানা যায়নি। হঠাৎ করেই গল্পে আগমন, বিশেষ করে জাফর। তবে বইয়ের যেহেতু সিক্যুয়েল আসবে আশা করি পরের বইগুলোতে বিস্তারিত জানা যাবে।

বইয়ের অন্যতম ভালো দিকটি হলো- রেফারেন্স। প্রতিটি আয়াত/হাদিসের রেফারেন্স সরাসরি দেয়া। এবং কিছুক্ষেত্রে সরাসরি রুকইয়া (ঝাড়ফুক)ও দেয়া আছে। বইয়ের কিছু টার্ম ব্যাখ্যার জন্যে অনেক রেসারেন্স টানতে হয়েছে যা আমাকে বিরক্ত করেনি। তবে অন্য ধর্মাবলম্বী পাঠকদের (পাঠকদের বিভক্ত করছিনা) জন্যে এই বিষয়টা কিছুটা বিরক্তির কারন হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে এর কারন লেখক বইয়ের প্রথমেই বলে দিয়েছেন।

খ্রিষ্টান ও হিন্দু ধর্মের উপাদানগুলো দিয়ে শয়তান-কালো জাদু-ঝাড়ফুক নিয়ে অনেক ফিকশন বই আছে। ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে এইরকম বই হয়তো কমই আছে। আমি পড়িনি, এটাই প্রথম। লেখকের উদ্দেশ্য ছিলো ইসলামি দুনিয়ার এই দিকটা তুলে ধরা এবং তিনি সফল হয়েছেন।

বইটি হরর, অকাল্ট থ্রিলার জনরা’র হলেও যাদের ধর্ম বা নামাজের সাথে কিছুটা দূরত্ব বেড়েছে, বইটি পড়ার পর তাদের ভিতরটা কিছুটা হলেও নাড়া দিবে। আমার ক্ষেত্রে এমনটি যে হয়নি তা আমি মানা করতে পারবোনা। তাই লেখকের অন্যান্য বইগুলো থেকে এই বইটাকে আলাদা রাখবো।

বাবু ভাইয়ের বই সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই, এক কথায় অসাধারণ। আগের চারটি বইয়ের তিনটিই পড়া ছিলো (ভ্রম ছাড়া)। লেখক কোনোটিতেই হতাশ করেননি। ঐ বিশ্বাস থেকেই এই বইয়ের প্রমোশনাল কোনো লেখা না পড়েই প্রি-অর্ডার করেছিলাম। এবং এইবারও হতাশ করেননি।

সম্পাদক উম্মে কুলসুম সাদিয়া আপু তার কাজের জন্যে বড় একটা ধন্যবাদ পাওনা। বানান ভুল প্রায় নেই বললেই চলে। ৩/৪ টা অসঙ্গতি চোখে পড়েছে মাত্র।
বই হাতে নিয়ে একটা প্রিমিয়াম ফিল হয়। প্রকাশক রাজিব দত্ত’দা ভালো প্রডাকশন দিয়েছেন।

এক কথায় বলতে গেলে- বইটি অসাধারণ থ্রিলার এবং পুরো পয়সা উসুল।
Profile Image for Parvez Alam.
306 reviews12 followers
March 13, 2022
রেটিংঃ ২.৫/৫
শেষ করলাম তুমুল হাইপ তোলা বই জিন। এই লেখকের সব বই আমার পড়া দিমেন্তিয়া আর পিনবল সব থেকে বেশি ভালো ছিলো আমার মতে। জিন বইটার নিয়ে আমার অনুভুতি মিশ্র। গল্পটা শুরু দিকে খুব ভালো ছিলো মাঝে দিয়ে ঝিমাই গেছে শেষ দিকে কিছুটা গতি ছিলো। আমি হরর বই তেমন পড়িনা সেই আমার কাছে হরর তেমন একটা লাগে নাই। এইটা বলতেই হবে লেখক অনেক বই, হাদিস, কুরআনের অনেক কিছু খুব ভালো করে পড়েছেন এমন কি বই তুলেও দিয়েছেন।
কিন্তু বইয়ের কিছু জিনিস আমার কাছে বেশ অসামাঞ্জস্য লেগেছে যেগুলা থেকে আমার মনে হয়েছে লেখকের হাত আরো পাকা হবে পরের বইগুলাতে।

অসামাঞ্জস্য কি কিঃ
* অনেকে গল্পের টাইম ফ্রেম কে এরশাদের শাসনামলের পরের সময়ের বলেছে (ফেসবুকে দেখে যা বুঝলাম) কিন্তু বইয়ে কোন টাইম ফ্রেম দেওয়া ছিলো না সে হিসেবে আমি ধরে নিলাম এইটা ২০-২৫ বছর আগের সময়ের কাহিনি। কিন্তু আমার ৩৬ বছর বয়সে আমি ১টাকা দিয়ে ২টা মোমবাতি কিনি নাই।
* যেহেতু বইয়ের তথ্য হাদিস, কুরআনের থেকে নেওয়া তাই সব তথ্য যতটুকু পারা যায় ঠিক দেওয়াটা ভালো লেখক বলেছেন টিকাটুলি থেকে কেরানিগঞ্জের বাসে ওঠে জাফর কিন্তু ঐখানে থেকে কোন বাস যায় না, এইটা গুলিস্তান থেকে হইলে মানা যেত।
* বইয়ে ২টা স্থানের কাহিনি একটা ঢাকা আরেকটা মুক্তারপুরের কিন্তু লেখক হুটকরে মুক্তারপুর কে ভুলে গেলেন অনেক পরে এসে আবার মুক্তারপুরের কাহিনি নিয়ে আসলেন, মাঝের এই গ্যাপটা কেমন জানি লেগেছে।
* একটা বোবা মেয়ে কে ঢাকা ভার্সিটির পরিসংখ্যান বিভাগের ছেলে কেন প্রাইভেট পড়াচ্ছে এইটা বুঝা গেলো না, এমন মানুষের জন্য আলাদা স্কুল রয়েছে। যারা সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ শিক্ষা দেয়।
* এই ব্যাপারটা সব থেকে অবাক হয়েছি একটা মসজিদের ইমাম সেই মসজিদের মুয়াজ্জিন কে প্রশ্ন করে আপনি কি সূরা ইখলাস পারেন? আপনি কি আয়াতুল কুরসি পারেন। সেই মুয়াজ্জিন আবার উত্তর দিলেন সে আয়াতুল কুরসি পারে না। আমি বুজলাম না লেখক কেনো এই কাজটা করলো? উনার মুয়াজ্জিন নিয়ে বা মুয়াজ্জিন নিয়োগ নিয়ে আরেকটু গবেষণা করা দরকার ছিলো।
* হাসপাতালে রুকাইয়া করা, রুগী দেওয়াল কাঁপানো চিৎকার করতেছে কিন্তু বাইরে থেকে আর কেউ আসলো না, জিনিসটা কেমন হয়ে গেলো না?
যাক আরো কিছু ছিল মাথায় নেই সেগুলা।
জিন সিরিজের প্রথম বই, এর পরে লেখক বলেছে আরো কিছু পার্ট আসবে, আশা করি সেগুলা আরো ভালো হবে। শেষ করা আমি সামান্য পাঠক আমার কথা সিরিয়াসলি নেওয়ার দরকার নেই, বইটা পড়েন ভালো লাগতে পারে আপনার কাছেন।
Profile Image for Sayef Mahmud.
3 reviews1 follower
January 22, 2022
জিন বই নিয়া আমার খুচরো আলাপ। স্পয়লার ⚠️ দিয়ে শুরু এবং শেষ থাকবে।
.
ক্যারেক্টার গুলারে মুচকি হাসাইতে হাসাইতে আস্ত একটা হরর বই শেষ করে ফেললেন লেখক। হাসিকে যে নানাভাবে বিশেষায়িত করা যায় সেটা হয়ত লেখকের অজানা না৷ অজানা থাকলে কিছু ক্লাসিক বাংলা সাহিত্য পড়ার সিরিয়াস অনুরোধ থাকবে লেখকের জন্য।
...বলছিলাম সদ্য প্রকাশিত "জিন" নিয়ে। লেখকের নাম এম জে বাবু। অর্ডার করসিলাম একটু ইউনিক হরর পড়ব বলে৷ কতটুকু ইউনিক ছিল সেই কথা আস্তে ধীরে বলব।
প্লটে আসা যাকঃ কাহিনি ভাই সিম্পল, সন্তানাদি হয় না এমন একটা দম্পতি এতিমখানা থেকে একটি মেয়ে সন্তান দত্তক নেয়। ঘটনাক্রমে মেয়েটি ছিল বোবা, মেয়েকে আনার পর সুখে সংসারে দিন পার করতে থাকে তারা এবং তারপর শুরু হয় কাণ্ড! এরই মধ্যে কিছু প্যারানরমাল অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে তারা যান এবং আল্টিমেটলি জিনিসটা আর প্যারানরমাল থাকে না। জিন ভূতের কাতারে পড়ে আর এরই জের ধরে বইয়ের নাম রাখা হইসে জিন।
ভাল এবং খারাপের মধ্যে সংঘাত, প্রতিশোধ আর হিংসা। এই বেইজ স্ট্রাকচারের উপর লেখা জিন কমন প্লট লেগেছে আমার কাছে। এবং এটি আসলেই একটা কমন প্লট, অন্তত আমার কাছ��� তাই মনে হয়েছে। এই থিমের উপর বেশ কিছু হরর মুভি দেখা হইসে আমার। সব গুলার নাম মনে না থাকলেও লাস্ট দেখা অরফান মুভিটার নাম মাথায় আসছে।

যাহোক, লেখক যেহেতু গল্প বলতে চাইসিলেন উনি সেটাই করে গেছেন। এইখানে তাই ক্যারেক্টার গুলা এতটাও ফ্যাক্টর না যে ভালভাবে বিল্ড আপ করতে হবে। প্রয়োজনে তাগিদে যতটুকু দরকার ঠিক ততটুকুই এসেছে। এই ধরনের উপন্যাস পড়তে আরাম এবং মেদহীন হয়৷ এইটা আমি এক বসায় শেষ করছি। শীত ভাল পড়েছে ভাবছিলাম যম্পেশ হরর ফিল পাবো কিন্তু তেমন কিছু হয়নি তবে গল্প ইন্টারেস্টিং ছিল। হরর না জমার আরো একটি কারণ হইল ইসলামিক থিমের উপর হরর কাহিনি আমার কাছে নতুন না। ২০১৭-১৮ সাল পুরোটা টার্কিশ হররসহ একই থিমের অন্যান্য দেশের হরর সিনেমা যা ছিল সব দেখে কাটাইসি। ওইগুলা ভিজ্যুয়ালি আরো ভয়াবহ। ডাব্বে-৪ দেখে তো এক সপ্তাহ ঘুমাতে পারিনি৷ সেই তুলনায় বইয়ে লেখা হরর কম ভয়াবহ। এজন্যেই হয়ত ভয়টা সেরকম পেয়ে বসেনি। আপনাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে অবশ্য।
চরিত্রগুলো সীমিত, হালের থ্রিলার ট্রেন্ড রাখতে অযথা যেখানে সেখানে নতুন চরিত্র ঢুকিয়ে দেন নি লেখক। তবে গল্পের আশে পাশের এনভায়রনমেন্ট নিয়ে লেখকের কাজ করার দরকার ছিল। তিনশো পৃষ্টার উপন্যাসের হ্যাভিওয়েট মন্ত্রি মিনিস্টার ঢুকিয়ে দিছেন্নার এদের ঘীরে স্বাভাবিক যে পাবলিক গ্যাদারিং থাকে সেটা রীতিমতো ছিলোই না। একজন প্রতি মন্ত্রী, আরেকজন এমপি। এদের পেশার সাথে প্লটের কিঞ্চিত কানেকশন চোখে পড়ছে, আদারওয়াইজ লেখক চাইলে সাধারণ চরিত্র দিলেও গল্পে খুব একটা চেঞ্জ আসত বলে মনে হয় না।
দুইটা দুই মেরুর গল্প প্যারালালি চলেছে যদিও একটি কম অন্যটি বেশি ছিল। আর গল্পের মধ্যখানে এসে যেকোনো সচেতন পাঠকের কাছে বাকী টুইস্ট খুলে যাবে বলে আমি মনে করি।

⚠️
.
.
.

যেমন একটা জায়গায় জাফর রুকইয়া করে জিনের মাধ্যমে কিছু একটা জানার চেষ্টা করে। তখন তারিন একটা শব্দ উচ্চারণ করে, অতসী।
ব্যাস, আরো কিছু পৃষ্টা পড়লে বুঝতে পারবেন গল্পের অর্ধেক টুইস্ট লেখক এখানেই মেরে দিছেন। অবশ্য উনার গল্প যেভাবে এগিয়ে গিয়েছে তাতে উনার এত বড় একটা টুইস্ট এভাবে নষ্ট না করেও উপায় ছিল না।
আমার কল্পনায় এখন ভাসছে, আমি হলে এই গল্পকে আরো কয়েকগুণ উত্তেজনা, প্রতিশোধ, হিংসা, সন্দেহের একটা ফ্যান্টাস্টিক রাইড বানাতে পারতাম।
.
.
.
⚠️

লেখক বলেছেন এটি উনার অনেক বছরের ফল এবং প্রথম বইও সম্ভবত। এ জন্যেই প্রথমে আমার রচনাশৈলির সাথে অভ্যস্ত হতে সময় লেগেছিল। একজন সম্পাদকও ছিলেন দেখলাম। সম্পাদক ঠিক কি কাজটা করেছেন আমি আসলে বুঝতেছি না৷ যে বর্ণনা এক লাইনে লেখা যায় সেটা লেখক তিন/চার লাইনে লেখসেন। এটা খুবই বিরক্তিকর ছিল, বারবার হোঁচট খাচ্ছিলাম। সম্পাদক এসব জায়গায় কাঁচি চালিয়ে মসৃণ করতে পারতেন। আমি জানি অনেক লেখকই এই কাঁচি পছন্দ করেন না, কিন্তু আল্টিমেটলি আপনি পাঠকে একটা এন্টারটেইনমেন্ট কন্টেন্ট উপহার দিচ্ছেন কোন কালজয়ী সাহিত্য না যে এবস্ট্রাকট আর্টপিসে ছুড়ি পড়লেই সব শেষ! এসব লেখায় সম্পাদনা অনেক জরুরি! এই জায়গাটাতে কাজীদার কথা মনে পড়ছে খুব! যাহোক, কেউ আমার এই কথায় অফেন্ড হবেন না। সম্পাদকের কাজই অনেকটা এরকম। আর ভাই চরিত্রগুলা মুচকি হাসি ছাড়া কিছুই জানে না! হাসি ত কতভাবে হয়, মিষ্টি হাসি, অল্প হাসি, রহস্যময় হাসি, ঠোঁটের কোণে মিলিয়ে যাওয়া হাসি। এসব উপমা না এনে যেখানে পেরেছেন মুচকি হাসি ঢুকিয়ে দিয়েছেন৷ ইরিটেট লেগেছে।
বানান ভুল চোখে পড়ছে তিনটা এবং ভুল জায়গায় কয়েকবার ভুল যতিচিহ্ন পড়েছে। আরেকটা প্রুফ রিড দিলেই হয়ত ঠিক হয়ে যেত।

গল্প ওয়ান্টাইম উপভোগ্য ছিল, আমি এক বসায় শেষ করেছি সুতরাং বুঝতেই পারছেন।
ইতি টানি আরো কিছু কথা বলে। রেফারেন্স হিসাবে গল্পের শেষে পবিত্র কোরানের আয়াত হুবুহু তুলে দেয়া হইসে। এইটা না করে কোন সুরার কত নাম্বার আয়াত ছিল সেটা উল্লেখ করলেই ভাল হত৷ নাহলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আয়াতওয়ালা বই যেখানে সেখানে ফেলেও রাখা যায় না। এম্নেই বাসায় জায়গা নেই বই রাখার, তার উপর এরকম জিনিস! আর কোরানের আয়াত থাকায় বইটা ওজু ছাড়া হাত দিতেও ইচ্ছে করছিল না। সাবধানতা অবলম্বন করে পড়তে হইছে। বইটা অনেক অমুসলিম পাঠকের কাছেও হয়ত যাবে। সুতরাং এসব ভেবে আপনাদের উচিত ছিল এভাবে সরাসরি আয়াত না দেয়া। আশা রাখি পরের সংস্করণে এটা চেঞ্জ করবেন।

লেখকের প্রতি রইল শুভকামনা।
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for Shakirul Khan.
53 reviews9 followers
May 24, 2022
অনেকদিন রিডার্স ব্লক এ আটকে ছিলাম। প্রায় ২ মাস ভালোমতো পড়া হয় নি।
M.J. Babu এর লেখা প্রথমবার পড়লাম। ভালো লেগেছে। তবে একটু বেশিই আননেসেসারি ইনফরমেশন দেওয়া বইয়ে।
Profile Image for সাদমান হুসাইন.
155 reviews36 followers
January 29, 2022
অতিপ্রাকৃতে একটু ভয় পেলেও তা নিয়ে পড়তে আমার আগ্রহ কম না কোনকালেই। রিসেন্টলি দেখছি রেগুলার ঘোস্ট, ডিমন, এগুলোর পাশাপাশি জিন বা শয়তান, আই মিন একেবারেই ইসলামিক থিমের অতিপ্রাকৃত ইলেমেন্টস নিয়ে বেশ চর্চা হচ্ছে সাহিত্যে - এই কয়দিন আগেই পড়লাম খুবই ভালো আরেকটা বই - "অ্যা মাস্টার অফ জিন"। যাই হোক, কয়েক সপ্তাহ ধরে সোশ্যাল মিডিয়াতে এই বইটার নাম বারবার দেখে আগ্রহী হয়েই কেনা।

এক বাক্যে রিভিউ সংক্ষিপ্ত করে আনি - বইটা পড়ে ভালো লেগেছে। সিরিজ হিসেবে লেখা, আমি এর পরের বইগুলোও কিনবো। আশা করাই যায় এর মাঝে লেখকের কলমের জোর বেড়ে যাবে, কাহিনী আরো সহজপাঠ্য হবে, উত্তেজনা থাকবে টান টান।

এই বইয়ের কাহিনী এক পলিটিশিয়ানের পরিবারকে নিয়ে। কালোজাদু আর জিনের অভিশাপে জর্জরিত তারা, নানা অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে দিনের পর দিন। এই রহস্যের সমাধান করতে এগিয়ে আসে আরো রহস্যময় কিছু ক্যারেক্টার। নানা দুর্যোগ, দুর্বিপাকের মাঝ দিয়ে আগায় কাহিনী, বেশ দ্রুতই শেষ হয়ে যায় বইটা। বই এর শেষ পাতা উল্টানোর পর মনে হয়েছিলো, "ধুরো, শেষ হইলো না তো কাহিনী!"

হরর হিসেবে, বইটা ভালো। হরর ইলেমেন্টস দুই চারটা হরর মুভি দেখা থাকলে সবারই পরিচিত লাগবে। দেশীয় প্রেক্ষাপটের কারণে আরেকটু বেশি রিলেটেবল লাগবে, গ্রামের বাড়িতে আসা যাওয়া থাকলে মনে হবে "আরে এরকম ঝোপের পাশ দিয়ে তো আমিও হেটে যাই, কি বিপদই না হইতে পারতো!"

থ্রিলার হিসেবে, আরো ভালো হতে পারতো। থ্রিলের কমতি আছে, কমতি আছে পেসিং এ। বহু বছর ধরে পড়তে পড়তে আজকাল কাহিনীর অনেক টুইস্ট এক-দেড়শো পেজ আগেই দেখতে পাই, তবে এই বইয়ের টুইস্ট যে ভালো ছিলো তা স্বীকার করতেই হয়। তবু, কেন জানি বই এর মাঝ বরাবর যাওয়ার পর মনে হচ্ছিলো গদ্যে দাঁত বসানো যাচ্ছে না, মনোযোগ প্যারার পর প্যারা স্লাইড করে এগিয়ে যাচ্ছে। আর বইটা একটা ইউনিক টোনে লেখা, ইসলামিক নানা মিথ উঠে আসার কারণে লেখক রেফারেন্সের পর রেফারেন্স দিয়ে বই লিখেছেন, তথ্যের শুদ্ধতা এনসিওর করার জন্যে। আর এই লেংদি এক্সপোজিশন, ইনফো ডাম্প, ক্যারেক্টার ব্রিফিং, আর একটু পর পর রেফারেন্স বইয়ের বিশুদ্ধতা বাড়ালেও নষ্ট করেছে গল্পের গতি। মজার জিনিস হলো, লেখক নিজেও সচেতন এটা নিয়ে, ফোর্থ ওয়াল ব্রেকিং এর মত করে একটা ক্যারেক্টার নিজেই একবার রেফারেন্স বেশি হয়ে যাওয়ার কথা মেনশন করে। আরেকটা জিনিস, গল্পের খাতিরেই রুকইয়াহ দেখানোর সময় সূরা বা আয়াত এসেছে বইএর মাঝে, সেটা নিয়ে একটু ডিসকম্ফোর্ট আছে। কারো না কারো বাসায় যদি এই বই মাটিতে পড়ে থাকে বেখেয়ালের ভুলে? আয়াতের অবমাননা হয়ে যায় যদি? কেও যদি অপরিস্কার অবস্থাতেই পড়তে বসে এই বই?

বেশ কয়েকটা সাইড স্টোরিলাইন আসছে গল্পের মাঝে, সিক্যুয়েলের আশায় সেই স্টোরিলাইনগুলোকে যাস্ট টাচ করেই রেখে দেয়া হয়েছে - ব্যাপার ডিসএপয়েন্টিং। কয়েকটা ক্যারেক্টার তো আসলো গেলো টাইপ অবস্থা, আরেকটু ফ্লেশ আউট করলে খারাপ হতো না। কিছু জায়গায় মনে হচ্ছিলো, এইবার কাহিনী জমবে - আরে কিসের কি, দেড় পেজে লেখক মুভ করে গেলেন অন্য টপিকে।

সব কথার শেষ কথা - বইটা ভালো লেগেছে, দুই বসায় পড়ে শেষ করেছি। সিক্যুয়েলের অপেক্ষায় থাকলাম।
Profile Image for Zahidul  Tamim.
113 reviews3 followers
April 26, 2022
লিটারেচারের ভাষায় বইটা অকাল্ট থ্রিলার জনরায় পড়ে। তবে অকাল্টের ব্যাপার স্যাপার আমরা ফ্যাক্ট হিসেবে মানি না। কিন্তু জিন বইয়ে ইসলামের উপর ভিত্তি করে যে কাহিনী দাঁড় করানো হয়েছে সেটা মুসলিমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে। অর্থাৎ জিন একটা ফ্যাক্ট বেইজড ফিকশন।
এমপি সাজেদ ও তার স্ত্রী তারিন তাদের মেয়ে মাহাকে এডপ্ট করার পর কিছু অদ্ভুত ঘটনার সূত্রপাত হয়। সোজাভাষায় জিনের আসর। তারিন এ কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে। কে কালোজাদু করলো এবং পেছনে কার হাত সেটা বের করতে প্রেক্ষাপটে কিছু ইন্টারেস্টিং চরিত্রের আগমন ঘটে। ডাক্তার জাফর, যে কিনা আবার রাকি(যে ঝারফুঁক করে) । আরেকজন আসলান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। মূলত এদের নিয়েই কাহিনী এগোয়।
বইয়ের কাহিনী সোজাসাপ্টা। ব্ল্যাকম্যাজিক নিয়ে সাধারণ জানাশোনা থাকলেও কাহিনী আঁচ করা সম্ভব। তবে বইয়ের মূল আকর্ষণ অন্য জায়গায়। কাহিনীর মাধ্যমে রুকইয়া এবং কালোজাদুর সলিড ফ্যাক্টগুলো উপস্থাপন করা। যা আমি এর আগে কোন ফিকশন বইয়ে দেখিনি।
কাহিনীর এক্সিকিউশান টপ নচ। কালোজাদু নিয়ে বই লিখতে গেলে কাহিনীতে অনেক রঙ চড়ানো হয় আজগুবি জিনিস ঢুকিয়ে কিন্তু জিন একদম বাই দ্য বুক চলেছে৷ ফ্যাক্টের বাইরে অন্য কিছুর আশ্রয় নেয়া হয় নি৷
বইয়ের খারাপ দিক আছে কিছু। প্রথমত এম যে বাবুর লেখনীতে কিছুটা দূর্বলতা লক্ষণীয়। কাহিনী গড়াতে তার হাত চমৎকার কিন্তু বাক্য গঠন ও লেখনী কিছুটা শান দিতে হবে। বইয়ের শেষে একটা টুইস্ট দেয়া হয়েছে যেটা কাহিনীতে তেমন তফাত তো আনেই নি বরং এই তথ্যটা লুকিয়ে রাখা অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছে।
যে ধরনের বইই হোক না কেন, লেখকেরা একটা মোরাল প্যারাডাইমে থেকে কিছু একটা প্রিচ করেন তাদের বইয়ের মাধ্যমে। আমাদের দেশে বিশেষ করে তরুনদের মাঝে ধর্ম কিছুটা ট্যাবু। ঠিকমতো সালাম দেওয়াও তাদের কাছে খ্যাত। আল্লাহ শব্দটা তারা উচ্চারণ করতে চায় না। গড, সৃষ্টিকর্তার মতো কাইন্ড অফ সেক্যুলার শব্দ দিয়ে কাজ চালানোর চেষ্টা করা হয়। বাংলা ফিকশনেও একই ঘটনা ঘটে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। মানুষ স্পিরিচুয়াল প্রাণি, তারা আধ্যাত্মিকতা ক্রেভ করে। আর আমাদের স্পিরিচুয়ালিটি আর আল্লাহর সাথে সম্পর্ক গাড়ির পেট্রলের সাথে তুলনা করা যায়। গাড়ির যেমন চলার জন্য পেট্রল রিফিল করা লাগে তেমনই মানুষেরও আধ্যাত্মিকতাও বুটস্ট্র‍্যাপ হয় না বারেবারে পুশ করা লাগে। জিন কিছুটা হলেও আমাদের সেই আধ্যাত্মিকতা রিনিউ করবে।
January 8, 2023
লেখক কে প্রথমেই ধন্যবাদ ভালো কিছু তথ্য তুলে ধরার জন্য যেটা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।

কিন্তু পুরো বইয়ের গল্পের কলেবর একটু বেশিই মনে হয়েছে আমার কাছে। ৩৪৮ পৃষ্ঠা বইয়ের শেষের ৫০ পৃষ্ঠায় যেভাবে কাহিনী এগিয়েছে আগের পৃষ্ঠাগুলোতে সেভাবে কাহিনী আগায়নি।

বইতে কিছু কিছু বিষয় খটকা লেগেছে আশা করি লেখক পরবর্তী সিরিজে সেগুলো সুনিপুন কায়দায় সংশোধন করে নিবেন।

১. একজন বোবা মেয়েকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কিভাবে পড়ায়, যেখানে বিশেষ শিশুদের জন্য আলাদা শিক্ষক এবং আলাদা স্কুল আছে।

২. "সাজেদ" এবং "শহীদ" চরিত্র দুটির জন্য লেখক "রাজনীতি" পেশা না নিলেও পারতেন। কারণ দুইজনের জীবনধারার যে বিবরণ তিনি দিয়েছেন সেটা স্বাধীনতা পরবর্তী কেন কোনো সময়েরই রাজনীতিকদের জীবনধারার সাথে মিলে না।

৩. বন্ধু বান্ধব ছাড়া মানুষ হয় না, হ্যাঁ হয় সেটা খুবই খুবই কম। কিন্তু গল্পে "সাজেদ" এবং "তারিন" দুই চরিত্রের কোনো বন্ধু বান্ধব নেই। বেছে বেছে সেই কম থেকেই দুই চরিত্র গল্পে হাজির হয়েছে।

৪. " খারাপ সংবাদ বাতাসের আগে ছোটে " - - - এই বইতে আমরা দেখি তারিনের অসামঞ্জস্যতা গুলো প্রথমে বাড়ির ভিতরেই ছিল। তারপর হাসপাতালের ছাদে সাজেদের সাথে হাসপাতালের ও কিছু লোক অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় কিন্তু সেই লোকগুলোর কাছ থেকে সেরকম কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ব্যাপারটা এরকম যেন তারা সবসময়ই এসব দেখে অভ্যস্ত। কিন্তু বাস্তবে এসব ভয়ঙ্কর অস্বাভাবিক খবর সত্যিকারভাবেই বাতাসের আগে ছোটে।

এসব আরো কিছু বিষয় বাদ দিলে বইটি উপভোগ্য।
Profile Image for শুভাগত দীপ.
274 reviews47 followers
January 13, 2023
|| রিভিউ ||

বইঃ জিন
লেখকঃ এম. জে. বাবু
প্রকাশকঃ গ্রন্থরাজ্য
প্রকাশকালঃ জানুয়ারি, ২০২২
ঘরানাঃ হরর/অকাল্ট/সুপারন্যাচারাল থ্রিলার
প্রচ্ছদঃ সজল চৌধুরী
পৃষ্ঠাঃ ৩৪৯
মুদ্রিত মূল্যঃ ৫৮০ টাকা
ফরম্যাটঃ হার্ডকভার

কাহিনি সংক্ষেপঃ স্ত্রী তারিন ও মেয়ে মাহাকে নিয়ে সাজেদের সংসার। সাজেদ ক্ষমতাসীন দলের একজন এমপি। তার শ্বশুর, মানে তারিনের বাবা শহিদ সাহেব একজন প্রতিমন্ত্রী। বেশ ক্ষমতাবান একজন মানুষ সাজেদ৷ সবকিছু বেশ ভালোই চলছিলো৷ কিন্তু হঠাৎ করেই এই পরিবারটার ওপর নেমে আসলো বিপদের খড়্গ। অস্বাভাবিক আচরণ করা শুরু করলো তারিন। নিজের আশেপাশে ভয়াবহ অশুভ কোন কিছুর অস্তিত্ব অনুভব করতে শুরু করলো সে৷ দিনে দিনে পরিস্থিতি আরো খারাপই হতে লাগলো৷ আর এসবের ফলশ্রুতিতে সাজেদের পুরো পরিবারটাই যেন এলোমেলো হয়ে গেলো।

গ্রাম হিসেবে মুক্তারপুর ছোটখাটো। এই গ্রামের একমাত্র মসজিদের মুয়াজ্জিন হাফেজ মিয়া। তাঁর মনে বেশ কষ্ট৷ গ্রামের মানুষজন মসজিদে আসে না৷ নামাজবিমুখ হয়ে পড়েছে সবাই। এই হাফেজ মিয়া এক ভোরে মুখোমুখি হলেন ইমরান নামের এক সুদর্শন যুবকের সাথে৷ নিজেকে সে মুক্তারপুর মসজিদের নবনিযুক্ত ইমাম হিসেবে পরিচয় দিলো। ধীরে ধীরে মুয়াজ্জিন সাহেবের ইসলামিক জ্ঞান বাড়তে লাগলো ইমরানের সংস্পর্শে এসে। তাঁর নিজের চিরচেনা জগৎ সম্পর্কেও ধারণা বদলাতে শুরু করলো।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণ আসলান খুব একটা ধর্ম মানে না। এমপি সাজেদের মেয়ে মাহার গৃহশিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর সেই বাড়িতে অদ্ভুত কিছু অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয় সে। তারিনের সাথে ঘটে যাওয়া অদ্ভুত ঘটনাগুলো আসলানের বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের জগতের মাঝে দারুণ এক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এই ব্যাপারটা আরো প্রভাবিত হয় আসলানের জীবনে রহস্যময় জাফর সাহেবের আগমনের পর থেকে। ধীরে ধীরে এই তরুণের সামনে খুলতে লাগলো আশ্চর্য এক দুনিয়ার দরজা।

শুভ আর অশুভের দ্বন্দ্ব সেই সৃষ্টিতত্ত্বের শুরু থেকেই। যুগে যুগে নানা রূপে, নানা আকারে এই লড়াই চলমান থেকেছে। সাজেদ, তারিন, মাহা, রফিক, শহিদ, জাফর, হাফেজ মিয়া, ইমরান আর আসলান নিজেদের অজান্তেই জড়িয়ে গেলো এমন এক যুদ্ধে। শুভ আর অশুভের যুদ্ধ। আলো আর অন্ধকারের যুদ্ধ।

পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ এম. জে. বাবু বর্তমান সময়ের পাঠকপ্রিয় লেখকদের একজন। 'দিমেন্তিয়া', 'ইনসেন্টিয়া' ও 'ভ্রম' খ্যাত এই লেখকের মোটামুটি বেশ বড় পরিসরের কাজ 'জিন'। এই প্রথম আমি তাঁর বই পড়লাম। হরর-অকাল্ট ঘরানার এই বইয়ে তিনি এমন একটা কাহিনির অবতারণা ঘটিয়েছেন, যা সরাসরি জিন ও জিন দ্বারা সংঘটিত পজেশনের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। তাই এক হিসেবে এটাকে পজেশন থ্রিলারও বলা যায়। পবিত্র কোরআন ও হাদিস থেকে লেখক প্রচুর রেফারেন্স ব্যবহার করেছেন কাহিনির স্বার্থে। বিভিন্ন সূরার তাফসির রেফারেন্স সহ ব্যবহার করার কারণে 'জিন'-এর মূল কাহিনির গুরুত্ব বেড়েছে, কমেনি। শুরুতে আমি ভেবেছিলাম, বইটা পড়তে গিয়ে রেফারেন্সের আধিক্যে হয়তো আমি কিছুটা হলেও বিরক্ত হবো। কিন্তু বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছে আমার কাছে ব্যাপারগুলো।

ইসলামের অনেক অজানা বিষয় সম্পর্কে জেনেছি আমি বইটা পড়তে গিয়ে। রুকইয়া, সাহির (যে কালোজাদু করে), সিহর (কালোজাদু), ফেরেশতা, মালাইকা, মারিদ, ইফ্রিত সহ নানা ব্যাপারে নিজের জানার পরিধিটা বেশ অনেকটা বেড়েছে 'জিন' পড়তে গিয়ে। জিন জাতি সম্পর্কে বরাবরই আমার আগ্রহ ছিলো। এই বইটা আমার সেই আগ্রহ মেটানোর পাশাপাশি বাড়তি হিসেবে মিটিয়েছে কুফরি তথা কালোজাদু ও এর পরিণাম সম্পর্কিত ব্যাপারে আগ্রহও।

এবার 'জিন'-এর স্টোরিলাইন নিয়ে কিছু কথা বলি। চমৎকার একটা প্লট। শুরুতে বেশ সাদামাটা পজেশন স্টোরি মনে হললেও কাহিনির ভেতরে পাওয়া গেছে বেশ কিছু লেয়ার, যেগুলো পুরো বইটাকে বেশ উপভোগ্য করে তুলেছিলো আমার কাছে। এম. জে. বাবু'র গল্প বলার ধরণটা সুন্দর। কোথাও বিরক্ত হইনি পড়ার সময়। ধীরেসুস্থে তিনি কাহিনিটাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। ডিটেইলিং ছিলো চমৎকার। বইটা লিখতে গিয়ে যে তাঁকে প্রচুর স্টাডি করতে হয়েছে, তা এটা পড়ার পর যেকোন পাঠক বুঝতে পারবেন। আমি ইদানীং এক বসায় বেশিদূর পড়তে পারি না৷ কিন্তু 'জিন' আমি যতোবার ধরেছি, ৫০/৬০ পেজ কিভাবে পড়ে ফেলেছি নিজেও জানি না। ওভারঅল আমার কাছে দারুণ উপভোগ্য লেগেছে পুরো উপন্যাসটাই। ইনফরমেটিভ অ্যান্ড এনজয়েবল।

'জিন'-এর শেষদিকে এসে লেখকের ওপর সামান্য বিরক্ত হয়েছি বেশ কিছু রহস্যকে রহস্য হিসেবে রেখে দেয়ার জন্য। এটা আসলে একটা সিরিজের প্রথম বই। তাই এর পরবর্তী পর্বগুলোতে কাহিনিটাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা তাঁর। ইচ্ছা পূর্ণ হোক। অবধারিতভাবেই 'জিন' সিরিজের দ্বিতীয় বই পড়ার আশায় আছি আমি। আরবি পড়তে পারি না বলে শেষদিকের কয়েক পৃষ্ঠা পড়তে পারিনি। এই জন্যে অবশ্য ক্লাইম্যাক্স বুঝতে কোন সমস্যা হয়নি আমার। বইয়ের শেষের বিবলিওগ্রাফি অংশে লেখক রেফারেন্স বুকগুলোর নাম উল্লেখ করে দিয়েছেন। ব্যাপারটা ভালো লেগেছে।

সজল চৌধুরীর করা প্রচ্ছদটা অসাধারণ লেগেছে আমার। বইটার প্রোডাকশনও ছিলো টপ নচ। আগ্রহীরা চাইলে পড়ে ফেলতে পারেন 'জিন'।

ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৪/৫
গুডরিডস রেটিংঃ ৪.৩/৫

#Review_of_2023_02

~ শুভাগত দীপ ~

(১৩ জানুয়ারি, ২০২৩, শুক্রবার, বিকাল ৪ টা ৮ মিনিট; আরএসটি ইউনিভার্সিটি, নাটোর)
Profile Image for Ahmed Aziz.
381 reviews69 followers
August 24, 2022
বেশ ভালো। কালো জাদু কিভাবে করে, এর প্রভাব, ক্ষতিকর দিক, জিন, জাদুকর, কিভাবে জাদু কাটায় এগুলো নিয়ে যথেষ্ট বিস্তারিত আলোচনা আছে। কাহিনির সবগুলো চরিত্র ঠিকঠাক দাঁড়াতে পারেনি, সেরা চরিত্র জাফর। কাহিনি টানটান, পরের খন্ডের অপেক্ষায় রইলাম।
Profile Image for Susmita Sarker (বাচ্চা ভূত).
193 reviews11 followers
December 19, 2022
প্রথমবার এই ধরণের বই পড়লাম! কালো জাদু নিয়ে কম বই ই পড়া হয়েছে: কি অসাধারণ,মাইন্ড ব্লোয়িং! ভয় অবশ্যই পেয়েছি, কিন্তু তেমন না: কিন্তু এখন বইয়ের কভার দেখলেই ভয় লাগছে:'
Profile Image for Yeamin Rahman.
1 review1 follower
July 7, 2023
জিন

লেখক : এম জে বাবু

প্রচ্ছদ : সজল চৌধুরী 

জনরা : হরর

প্রকাশনী : গ্রন্থরাজ্য

প্রকাশকাল : জানুয়ারী ২০২২

পৃষ্ঠাসংখ্যা : ৩৩৬

মুদ্রিত মূল্য : ৫৮০৳ 


ফ্ল্যাপ থেকে :-


স্ত্রী তারিন এবং মেয়ে মাহাকে নিয়ে এমপি সাজেদের পরিবার। বেইলি রোডে বসবাসরত এই পরিবারটির দিন সুখেই কাটছিল। কিন্তু হঠাৎ করে তারিন অদ্ভুত সব আচরণ শুরু করল। পরিস্থিতি ক্রমে খারাপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রাণভ্রমর স্ত্রীকে বাঁচাতে সাজেদ মরিয়া। তারিনের এমন অবস্থার কারণ কি? অসুখ না ষড়যন্ত্র?


মুয়াজ্জিন হাফেজ মিয়ার জীবন বেশ নির্বিঘ্নেই কাটছিল। তবে, নিতান্তই সহজ সরল এই মানুষটির জীবন পাল্টে যেতে আরম্ভ করে, যখন তার সাথে এক সৌম্যদর্শন হুজুরের সাক্ষাত হয়। তিনি বুঝতে পারেন জগত সম্পর্কে তিনি কতটা অজ্ঞ, কত রহস্যই তার অজানা। কিন্তু, এই অজানাকে জানার আকাঙ্খা যেন আবার তাঁর কাল না হয়ে দাঁড়ায়।


ভার্সিটি পড়ুয়া আসলান কস্মিনকালেও ধারণা করেনি এমন ঘটনার মুখোমুখি হতে হবে। তিলে তিলে গড়ে তোলা বিশ্বাসের ভিত্তিটা দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সে এর শেষ দেখেই ছাড়বে। তবে, নতুন জীবনের এই যাত্রার শেষটা যে কতটা অবিশ্বাস্য ও ভয়ংকর তা খোদ আসলানও জানেনা।


তিনজন ভিন্ন শ্রেণির মানুষ, ভিন্ন ভিন্ন তাদের জীবনধারা। কিন্তু তারা যেন একই সূত্রে গাঁথা। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দ্বন্দ্ব নিয়ে তিনজন জীবন শংকা পার করে কি পারবে তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে? নাকি তারাও হবে অন্ধকারের অধিপতির শিকার? ভালো মন্দের দ্বন্দ্ব জগতের আদিম নিয়ম। আরো একবার হচ্ছে ভালো ও মন্দের লড়াই। শেষমেষ কে বিজয়ী হবে? নাকি এর কোনো শেষই নেই?


জানতে হলে অবশ্যই আপনাকে পড়তে হবে কুরআন-হাদীস ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে সমৃদ্ধ হরর আর অকাল্ট থ্রিলার 'জিন'। সুতরাং পাঠক, প্রস্তুতি নিন জিন, কালো জাদু, অকাল্টিসিজমের অদ্ভুত দুনিয়ার সাক্ষী হতে।


পাঠ্য প্রতিক্রিয়া :-


আমার পড়া এম জে বাবু'র ৪র্থ বই হলো জিন।পজিটিভ রিভিউ দেখে বইটা শুরু করলেও আসলে বইটা পড়ে আমি হতাশই হয়েছি বলা যায়।

বইটা নিয়ে আমি অনেক পজিটিভ রিভিউ দেখেছি।অনেকের মতে এটা তাদের পড়া বেস্ট হরর বই এবং তারা বইটি পড়ে বেশ ভয় পেয়েছেন।কিন্তু সত্যি কথা বলতে এই বইটা পড়ে আমি একটুও ভয় পাইনি।অনেক হরর বই আছে যেগুলো পড়ে ভয় না পাওয়া গেলেও থ্রিল বেশ অনুভব করা যায়,এই বইটা আসলে সেদিকেও যায় নি।

বইটা পড়ার সময় বারবার মনে হয়েছে লেখক একটা নন-ফিকশন বইয়ে কতগুলো চরিত্র এনে ফিকশনে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করে গেছেন।

লেখক বলেছিলেন এই বইটা তার ৫ বছরের পরিশ্রমের ফসল।বইটা পড়লে সেটা বোঝা যায়।কারণ বইয়ে লেখক প্রচুর পরিমাণে তথ্য,সূরার আয়াত,বিভিন্ন ঐতিহাসিক সত্য তুলে ধরেছেন।কিন্তু আমি বলব বইটা নিয়ে লেখকের গোল/টার্গেট ঠিক কি ছিল সেটা লেখক প্রথমে ঠিক করতে পারেন নাই।এই কারণে না বইটা নন-ফিকশন হিসেবে পড়ে ভালো লেগেছে,না হরর হিসেবে পড়ে ভালো লেগেছে।

লেখক কাহিনীর লাস্টে একটা ক্লিফহ্যাংগার রেখে গেছেন এর সিক্যুয়েল আনবেন বলে,এই কারণে এই বইয়ে কাহিনী���া অসম্পূর্ণ রেখে গিয়েছেন,শেষের দিকে এসে বইতা মোটামুটি ভালো লাগলেও মাঝখানের কাহিনীর জন্য বইটা এককথায় ঝুলে গেছে বলা যায়।

লেখক বইয়ে হাসির ক্ষেত্রে বারবার মুচকি হাসি শব্দটা ব্যবহার করেছেন যেইটা বেশ বিরক্তিকর লেগেছে আমার কাছে।

বইটার আরেকটা কথা বলা যায় বইটাতে বেশ পেসিং ইস্যু আছে।বইয়ে তথ্য সাজানোটা আসলে ভালো লাগে নাই আমার।বইটার তথ্যগুলো ভালো করে না সাজানোর কারণে কাহিনী বেশ স্লো এগিয়েছে এবং বইয়ে থ্রিল বা হরর এলিমেন্ট সেভাবে কাজ করে নাই।

সবমিলিয়ে লেখকের অ্যাবসেন্টিয়া,পিনবল এর মতো ভালো বই পড়ার পর জিন বইটার এতো পজিটিব রিভিউ দেখে পড়ে আমি বেশ হতাশ হয়েছি।


চরিত্রায়ন :- 

 

বইয়ের চরিত্রগুলোর মধ্যে জাফর চরিত্রটাই মনে ধরার মতো ছিল।বাকি চরিত্র যেমন তারিন,এমপি সাজেদ কিংবা হাফেজ মিয়া;এই চরিত্রগুলো তেমন ইমপ্যাক্টফুল লাগে নাই আমার কাছে।লেখকের লেখনশৈলীর দুর্বলতা বা নন-ফিকশন বইকে ফিকশনে রূপান্তরের কারণে আসলে বইয়ের ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্টের সুযোগ তেমন পায় নাই আসলে।


সমাপ্তি :-


বইয়ের কাহিনী সমাপ্তির দিকে এসে একটু গতি পেলেও লেখক ক্লিফহ্যাংগার রেখে গেছেন সিক্যুয়েল এর জন্য।তবে বইয়ের সমাপ্তি মোটামুটি লেগেছে আমার।পুরো বইয়ের স্ট্রং দিক ছিল এর সমাপ্তিটাই।


প্রচ্ছদ :-


সজল চৌধুরীর করা প্রচ্ছদটা বেশ ভালো লেগেছে আমার কাছে।বইয়ের টপিকগুলোকে বেশ সুন্দরভাবে কভারবন্দী করেচেন তিনি সেটা বলা যায়।


প্রোডাকশন :-


গ্রন্থরাজ্য প্রকাশনী থেকে বের হওয়া বইটির প্রোডাকশন বেশ ভালো ছিল।প্রচ্ছদ এর কথা তো বললামই,সাথে বইয়ের ভেতরে বানান ভুল তেমন পাইনি।পেজ,বাইন্ডিং কোয়ালিটি সব ভালোই লেগেছে আমার।


রেটিং :- 


গুডরিডস রেটিং : ৪.২৬/৫.০০

পার্সোনাল রেটিং : ২.৫০/৫.০০


রেকমেন্ডেশন :-


আমি এই বইটা নিয়ে সত্যিই কনফিউজড আসলে।কারণ এই বইটা নিয়ে পজিটিভ রিভিউ একটু বেশিই বেশি।আমি তুলনার দিকে যাচ্ছি না বাট আর্কন,অক্টারিন,পাপপিঞ্জর,তমিস্রা সিরিজ,অন্ধকার ট্রিলজি,আসছে অন্ধকার এইধরণের বইগুলো যতটা ভালো সে হিসেবে তেমন কোন রিভিউ চোখেই পড়ে না,কিন্তু জিন বইটা নিয়ে বেশি মাতামাতি দেখলাম,কিন্তু পড়ার পরে আমি অনেকটাই হতাশ হলাম।পার্সোনালি পিওর হরর পড়তে চাইলে আমি এই বইটা রেকমেন্ড করবো না,তবে যারা নন-ফিকশন পড়তে চান,জিন নিয়ে জানতে চান,তারা ট্রাই করে দেখতে পারেন।


সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Displaying 1 - 30 of 127 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.