Jump to ratings and reviews
Rate this book

সূর্য তুমি সাথী

Rate this book
ছফার প্রথম উপন্যাস, ২১-২২ বছর বয়সে লেখা। ১৯৬৭ তে প্রকাশিত।

ধর্মান্তরিত বাবার বিরম্বিত ছেলে এখানে কেন্দ্রীয় চরিত্র। তার মা-মরা ছেলের জীবন বাঁচাতে স্নেহময়ী দাদী ধর্মীয় ও সামাজিক রীতির তোয়াক্কা করেন না। কমিউনিস্ট আন্দোলনে জড়িয়ে পড়া হাসিম দিশেহারা হয়ে যায়, বুঝতে পারে না ঠিক কোন সমজে আছে তার নিজের পরিচয়।

100 pages, Hardcover

First published January 1, 1967

26 people are currently reading
376 people want to read

About the author

Ahmed Sofa

71 books596 followers
Ahmed Sofa (Bangla: আহমদ ছফা) was a well-known Bangladeshi philosopher, poet, novelist, writer, critic, translator. Sofa was renowned for his intellectual righteousness as well as his holistic approach to the understanding of social dynamics and international politics. His career as a writer began in the 1960s. He never married. On 28 July 2001, Ahmed Sofa died in a hospital in Dhaka. He was buried in Martyred Intellectuals' Graveyard.

Sofa helped establishing Bangladesh Lekhak Shibir (Bangladesh Writers' Camp) in 1970 to organize liberal writers in order to further the cause of the progressive movement.

Ahmed Sofa's outspoken personality and bold self-expression brought him into the limelight. He was never seen hankering after fame in a trivial sense. His fictions were often based on his personal experience. He protested social injustice and tried to portray the hopes and dreams of common people through his writing. Sofa always handled his novels with meticulous thought and planning. The trend of telling mere stories in novels never attracted him; he was innovative in both form and content.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
117 (32%)
4 stars
174 (47%)
3 stars
60 (16%)
2 stars
10 (2%)
1 star
3 (<1%)
Displaying 1 - 30 of 52 reviews
Profile Image for শাহ্‌ পরাণ.
259 reviews74 followers
February 6, 2022
আহমদ ছফা। বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য নাম। এই মানুষটিকে আমরা সাধারণত একজন সাহসী বস্তুনিষ্ঠ প্রবন্ধকার হিসেবেই জানি। কিন্তু উপন্যাসিক আহমদ ছফার পরিচয় আমাদের কাছে খুব বেশি নেই। যতটুকুই আছে সে কেবল “ওঙ্কার”, “গাভী বিত্তান্ত” অথবা “অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী” এ কয়েকটি উপন্যাসের জন্যই উনাকে আমরা জানি। আমি নিজেও এই কয়টি উপন্যাস পড়েছি। অনেক আগেই। এ উপন্যাসগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যক্তি অথবা ঘটনাকেন্দ্রিক কিন্তু আজ আমি আহমদ ছফার যে উপন্যাস এর কথা বলব তা শুধু ব্যক্তিকেন্দ্রিকই নয় তা সমাজকেন্দ্রিক এবং জীবনকেন্দ্রিক। আমার এযাবতকাল পর্যন্ত আহমদ ছফার যতগুলো উপন্যাস পড়া হয়েছে তার মধ্যে যদি সবচেয়ে সার্থক উপন্যাস আমাকে নির্ধারণ করতে বলা হয় তাহলে কোন মুহূর্তের অপচয় না করে আমি “সূর্য তুমি সাথী” উপন্যাসটিকে বেছে নিব। এ উপন্যাসটি আহমদ ছফার প্রথম উপন্যাস এবং লিখেছিলেন তার ২১-২২ বছর বয়সে এবং আহমদ ছফা নিজে মনে করতেন এটিই তার সেরা উপন্যাস। এ উপন্যাস সম্পর্কে আবুল ফজল বলেন, “এতো অল্প বয়সে এতোটা শৈল্পিক পরিপক্কতা আমার কল্পনারও অতীত।” তাছাড়া নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সূর্য তুমি সাথী এই উপন্যাসটিতে সমাজের বাস্তব ছবি আশ্চর্য গতিশীলতায় বাঁধা পড়েছে।” তাছাড়া রণেশ দাশগুপ্ত এই উপন্যাস সম্পর্কে বলেছেন, “সাম্প্রদায়িকতার গোবর গাদা থেকে চেতনার মুক্তি সাধনে এ উপন্যাস একটা বড়ো ভূমিকা পালন করবে। ছফা একটা দুঃসাহসী কাজ করেছেন, এ কথা মানতেই হবে।”

উপন্যাসটি চট্টগ্রামের পাহাড়ঘেষা একটি গ্রামকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছে হাসিম। যে সমাজে আর্থিক ক্ষেত্রে গরিবের থেকেও গরিব এবং সামাজিক ক্ষেত্রে নিচু থেকেও অনেক বেশি নিচে। হাসিমের বাবা ছিল নিচু শ্রেণির হিন্দু কিন্তু ভালবাসার টানে মুসলমান হয়ে কাজের মেয়েকে বিয়ে করে পায়নি মুসলমান সমাজেও কোন উঁচু স্থান এবং হারিয়েছিল হিন্দু সমাজে তার অবস্থান। তার ছেলে হয়ে হাসিমও সমাজের সবচেয়ে নিচু স্তরে থেকে যায় বটে কিন্তু হাসিমের ভিতর অনেকগুলো প্রশ্ন থেকে যায়; মেনে নিতে পারে না হাসিম; কেন তার এই অবস্থান! কেন মানুষ হয়ে মানুষ মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখে না, বিচার করে না! কেন সমাজের মানুষ তাকে সহজে গ্রহণ করতে পারে না! জন্ম পরিচয় কেন মানুষের আসল পরিচয় হিসেবে গণ্য হয়! কেন সমাজের অন্য সকলের সাথে সে ওঠাবসা করতে পারে না! কেন সমাজের মানুষ তাকে অপমান ও অসম্মান করে বেড়ায়! মানুষের আসলে পৃথিবীতে আসার উদ্দেশ্য কী? এরকম আরও নানা প্রশ্নের এবং চিন্তার মধ্যে হাসিম প্রায়ই ডুবে যায়। হাসিমের চিন্তার মধ্যে দিয়ে যেন লেখক তার নিজস্ব চিন্তার সুনিপুন শিল্পের ধারা বুনন করেছেন।

হাসিম খেটে খাওয়া মানুষ, কিন্তু চরম ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘঠিয়েছেন লেখক এই চরিত্রের মাঝে। হাসিম অধিক পরিশ্রমে পাহাড়ের বাঁশ কেটে কম টাকা উপার্জনকে মেনে নিতে পারলেও কম পরিশ্রমে অন্য কাজে আগ্রহী নয় যেখানে তার সম্মান নেই। নিজের আত্মসম্মানকে বজায় রাখার জন্য সে নিজের শরীরকে বিসর্জন দিতে পারে, কিন্তু নিজের সম্মানকে খাটো করার অধিকার সে কাউকে দেয় না। সে ভালোবাসে তার স্ত্রীকে, কিন্তু সেই ভালবাসা লুকিয়ে থাকে দারিদ্র্যর মাঝে লুকিয়ে থাকা জমাটবাধা রক্তপিণ্ডের মধ্যে; যে রক্তপিণ্ডের অস্তিত্ব হাসিমের বুকের খুব গভীরে- যেখানে তার স্ত্রী সুফিয়া হয়তো কোনোকোনোদিন কোমল আদরে হাসিমকে সান্ত্বনা দেয়; সেই সান্ত্বনায় চোখের পানি থাকে, বুকের জমানো কথা থাকে কিন্তু মুখে কোন শব্দ থাকে না। এছাড়াও হাসিমের আছে আরেক পরিচয়, সে কবি এবং গায়ক। গ্রামের গানের আসরে কম টাকায় তাকে দিয়ে গান গাইয়ে নিতে পারে গ্রামের পুঁজিপতিরা, এতে তার কষ্ট হয় কিন্তু তার কোন অভিযোগ নেই। কারন সে গাইতে ভালোবাসে। সেই গানের এক গোপন শ্রোতা জোহরা। জোহরা গ্রামের এবং সমাজের চোখে পতিত নারী কিন্তু হাসিম এবং জোহরা উভয়েই বোঝে দুজনের মনের মধ্যে আলাদা একটি ঘর আছে যে ঘরে দুজনেই থাকে, স্বপ্নে। এ স্বপ্নের বাস্তব রূপ তারা কেউই দেখতে চায় না কিন্তু দুজনই এ স্বপ্নের রাজ্যে হারাতে কৃপণতা করে না।

খলু মাতব্বর এবং চেয়ারম্যান গ্রামের অন্যতম ধনী এবং শোষক শ্রেণির প্রতীক হিসেবে লেখক প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে হাসিম হলো শোষিত শ্রেণির প্রতীক যে একসময় পুনর্জাগরিত হয়ে ওঠে ঐ গ্রামের সমিতির সদস্যদের দ্বারা। সেই সমিতির সভাপতি কেরামত ভাই। কেরামত ভাই উপন্যাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং ঝাপসা একটি চরিত্র। কেরামত ভাই উপন্যাসের একটি গৌণ চরিত্র হিসেবে থেকে উপন্যাসের সার্বিক গুরুত্ত্বের বাহক হয়ে আছেন। এ চরিত্রটি “পদ্মা নদীর মাঝি” উপন্যাসের হোসেন মিয়ার চরিত্রের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। তবে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ময়না দ্বীপে একটি আলাদা সমাজতান্ত্রিক সমাজ গঠনের চিন্তার প্রকাশ ঘটিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু হোসেন মিয়ার মধ্যে পদ্মা নদীর পাড়ের সেই জেলে পাড়ার সমাজকে নতুনভাবে গড়ে তোলার, একটি পুনর্জাগরণের মাধ্যমে সমাজের শোষিত মানুষকে নিয়ে লড়াই করার চিন্তাকে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় হোসেন মিয়ার মাঝে দিতে পারেন নি। যেখানে আহমদ ছফা কেরামত ভাই এর মাঝে একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে সেই সমাজকে নতুনভাবে গড়ে তুলার একটি প্রয়াস দেখিয়েছেন। বাস্তবিক দিক বিবেচনা করতে গেলে আমি ব্যক্তিগতভাবে কেরামত ভাইকে হোসেন মিয়া থেকে এগিয়ে রাখব এজন্য যে কেরামত ভাই এবং হোসেন মিয়া উভয়েই নতুন সূচনা চাইলেও কেরামত ভাই পুরো সমাজকে পরিবর্তিত করে সবাইকে নিয়ে এ পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছিল, হোসেন মিয়ার মত দূরে ময়না দ্বীপ তৈরি করে নয়।

খলু মাতব্বর এবং এরকম চরিত্ররা আমাদের সমাজের সবকিছুকে কীভাবে নিয়ন্ত্রন করে এবং তাঁদের সুবিধের জন্য সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের আবেগ এবং দরিদ্রতাকে কীভাবে ব্যবহার করে তাঁদের নিজেদের চাওয়া পাওয়াগুলোকে পূর্ণ করে নেয় তা লেখক তার এ গল্পে এক অভাবনীয় শৈল্পিক ভাষায় ব্যাখ্যা করেছেন। আর্থিক স্বচ্ছলতায় থাকা একটি মানুষ তার চারপাশে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল পরিবার অথবা মানুষগুলোকে কীভাবে শুধু অর্থের প্রয়াসে তাঁদের চাওয়া পাওয়া, ইচ্ছে অনিচ্ছে, জীবন মরণের ঈশ্বর হয়ে উঠতে পারে এ গল্পে তারই প্রতিচ্ছবি লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন তার শব্দের রঙ্গিন বর্ণে। একটি সমাজের মানুষের মান-সম্মান যে কেবলমাত্র আর্থিক স্বচ্ছলতার উপর নির্ভর করে তা লেখক দেখিয়েছেন হাসিমের আর্থিক অস্বচ্ছলতায় সমাজে তার অসম্মান এবং লাঞ্ছনার মধ্য দিয়ে এবং তার দাদীর তার কাছে প্রত্যাবর্তনের পর ভবিষ্যতে তার আর্থিক স্বচ্ছলতার আগাম পূর্বাভাষে সমাজে তার অবস্থানের উন্নয়নের মধ্য দিয়ে। একটি সমাজে মানুষ যে মানুষ হিসেবে সম্মানিত নয়, অর্থের পরিমাণের সাথে মানুষের সম্মান যে সমানুপাতিকভাবে পরিবর্তিত হয় এই উপন্যাসে লেখক তা পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ করেছেন।

এ উপন্যাসে আমার প্রিয় কিছু লাইনঃ

“গান দুঃখের রাজ্য থেকে, অভাবের রাজ্য থেকে এক বিচিত্র রাজ্যে নিয়ে যায়। সে এক বিচিত্র অনুভূতির রূপ-রাঙা জগৎ।”

“দেশ মরি গেল দুর্ভিক্ষের আগুনে
তবু দেশের মানুষ জাগিল না কেনে”

“জীবন অমূল্য সম্পদ, অসম্ভবকে সম্ভব, অসুন্দরকে সুন্দর করার নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম করার নামই জীবন। ক্ষয়ে ক্ষয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরার জন্য মানুষ পৃথিবীতে আসেনি। সমস্ত পরিশ্রম, সমস্ত আকাঙ্ক্ষা, সমস্ত স্নেহ ঢেলে দিয়ে জীবনকে মাটির পৃথিবীতে দাঁড় ক��াতে হবে সুন্দর করে।”

“একা থাকার মধ্যে তৃপ্তি নেই। কেননা একা থাকলে অতি সহজে নেতিয়ে পড়ে। সংগ্রাম করার অনুপ্রেরণা থাকে না। জীবনের সুখ মানেই তো জীবনের সংগ্রামসামনের উজ্জ্বল আশা আর পেছনের উদ্দীপনা না। থাকলে মানুষ পারে না সংগ্রাম চালিয়ে যেত।”

“স্নেহ, প্রেম আর ভালোবাসার ভাষা দুনিয়ার সবদেশে এক। আরেকটা তেমন ভাষা আছে, তাও এক- সে সংগ্রামের ভাষা।”

“পূর্ণিমায় চোরেরা যত ঝগড়া, যত মারামারি করুক না কেন, অমাবস্যার রাতে সকলে একজাত। মহিষের শিং হানতে সোজা। তেমনি দুনিয়ার অত্যাচারীরা একজাত।”

“আদর্শের আগুন রক্তের ভেতর, বুকের ভেতর না থাকলে মানুষ মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলতে পারে না, মৃত্যু, আমি তোমার চেয়ে অনেক অনেক বড়!”

একটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক বা একটি পরিবারকেন্দ্রিক গল্প সাজানো খুব বেশি কঠিন কাজ নয় কিন্তু একটি সমাজের সার্বিক দিককে একটি গল্পে বা উপন্যাসে ফুটিয়ে তোলা অনেক কঠিন কাজ এবং এ উপন্যাসে লেখক হাসিমের চরিত্রের মধ্য দিয়ে, হাসিমের দৃষ্টির মধ্যে দিয়ে, হাসিমের চিন্তার মধ্যে দিয়ে পুরো সমাজকে পাঠকদের কাছে প্রকাশ করছেন পরিচ্ছন্নতম আবেগ নিয়ে, নিষ্ঠুরতম দরিদ্রতার প্রাপ্তি নিয়ে, ভালবাসার গভীরতার আবেগের জয় নিয়ে। গ্রাম সম্পর্কে যেসকল মানুষের একেবারেই ধারণা নেই, তাঁরা এ গল্প হয়তো বুঝতে পারবে কিন্তু অনুধাবন করতে পারবে না। এ গল্প গ্রামের, এ গল্পের জীবনটা গ্রামের, এ গল্পের চরিত্রগুলো গ্রামের; গ্রামের গন্ধ যে কখনও নেয় নি, গ্রামের স্নিগ্ধতা যে কখনও দেখে নি, গ্রামের নিষ্ঠুরতার সাক্ষী যে কখনও হয় নি, এ উপন্যাস তার জন্য নয়।
Profile Image for Hanif.
154 reviews5 followers
June 15, 2023
গ্রামীণ উপন্যাস বললে, সাধারণত মানিক দা'র কথায় প্রথম মনে পড়ে। তাঁর লেখা পদ্মানদীর মাঝি, পুতুল নাচের ইতিকথা, জননী, দিবারাত্রির কাব্য ইত্যাদি বেশ কয়েকটা উপন্যাস পড়া হয়েছে, এবং সবগুলোই গ্রামকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।

আহমদ ছফার রচিত প্রথম উপন্যাসই হল 'সূর্য তুমি সাথী'। ধর্মান্তরিত বাবার ছেলে হাসিমকে কেন্দ্র করে, সমাজের বিত্তবান শ্রেণির অন্যায়-অত্যাচার কিংবা শোষণ, জীবনসংগ্রাম, হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে পরষ্পর বিদ্বেষ-কুসংস্কার, এবং ভূমি আত্মসাৎ ও আধিপত্য বিস্তারের জন্য দাঙ্গা, সমাজেরর উঁচু-নিম্ন শ্রেণির প্রভেদ, ধর্ষণ ইত্যাদি দিকগুলো ভালোভাবেই ফুটিয়ে তুলেছে।
সেই সাথে দাদী-নাতীর ভালোবাসাটা গ্রামীণ সমাজের প্রত্যেকজনেরই জানার কথা, যেটি এখানে বিশেষভানে লক্ষ করা যায়, সেই সাথে কিছু সংগঠন যেগুলো সমাজের দারিদ্র বিমোচনের জন্য প্রতিবাদের সুরে দাঁড়িয়েছে।
অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে, উপন্যাসটি গ্রামীণ সমাজকে, সত্যিকার অর্থে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছে।
Profile Image for Nabila Tabassum Chowdhury.
373 reviews274 followers
March 30, 2020
আমি সব সময় ভুল সময়ে ভুল বই পড়ি... কয়েকদিন ধরে নানামুখী চাপে মন-মেজাজ বেশ ভাল রকমের বিক্ষিপ্ত এবং চড়া। এই সময় দরকার ছিল সুদিং কোনো বই। তা না, পড়ে বসলাম 'সূর্য তুমি সাথী'। 'সূর্য তুমি সাথী' উপন্যাসটি লেখা সেই মানুষগুলোর গল্প নিয়ে যাদের ভিতরটা জ্বলছে আগুনের মত। যন্ত্রণা যাদের ভেতরটা পুড়িয়ে দিয়ে নিঃশ্বাসের সাথে বের করে দেয় আগুনের স্ফুলিঙ্গ। বইটা পড়বার সময় মনে হচ্ছিল আমার নিঃশ্বাসও মনে হয় আগুনের মত গরম। জানি না নিজের পারিপার্শ্বিকতার ফলাফল ছিল সেটা নাকি লেখকের বর্ণনার কৃতিত্ব। জানি না, জানতে ইচ্ছা হচ্ছে না। তবে এটুকু না বললেই নয়। এই বইটি সাথে কিছুদিন আগে পড়া ইস্পাতের সাথে বেশ খানিকটা সাদৃশ্য বিদ্যমান। আসলে প্লট একই, কিন্তু একটির দৃশ্যপটে রয়েছে ইউক্রেন আর আরেকটিতে বাংলাদেশ, একটিতে পাভেলের সমস্ত জীবন, অন্যটিতে হাসিমের জীবনের কয়েকটি মাস, পাভেল নায়কোচিত, হাসিম খানিকটা ভিতু... কিন্তু দুটোতেই আছে শ্রেণী বৈষম্যের হাতে নিপীড়িত মানুষের দুঃখ গাঁথা, এক হবার বাসনা। তবে বিস্তারে অনেক পার্থক্য রয়েছে, ইস্পাতের পরিসর ছিল ব্যাপক, পটভূমিতে ছিল ঐতিহাসিক উত্থান, এতে তা নেই। কিন্ত এই বইটি পেয়েছে আহমেদ সফার বর্ণনার ঋদ্ধতা, যা ইস্পাতে ছিল না। যাই হোক, তুলনা কেন করছি!! তুলনা বাদ থাকুক। আগুন জ্বলা বইটির শেষ পর্যায়ে হাসন রাজার গান একটি গানের খানিকটা উদ্ধৃত করেছেন আহমেদ সফা, সেটিই না হয় মনে মনে গাইতে গাইতে ঘুমিয়ে পড়ি...

“মাটির পিঞ্জরের মাঝে বন্দি হৈয়া রে
কান্দে হাসন রাজার মন মনিয়ারে।
পিঞ্জরের ভিতরে ময়না ছটফট ছটফট করে
মজবুত পিঞ্জর ময়না ভাঙ্গিতে না পারে।”


ব্যাড টাইমিং! [দীর্ঘশ্বাস]
Profile Image for Sumaîya Afrôze Puspîta.
220 reviews288 followers
August 7, 2024
“মেডি আর বেডি তার, জোর আছে যার।”


ছোটলোকরা যেন সমাজে অভিশপ্ত এক গোত্র হিসেবে বাস করে। ছোটলোক হয়ে জন্মানোটাই তাদের পাপ হয়ে দাঁড়ায়। তাদের প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়, আবার ইচ্ছেমতো দমন‌ও করা যায়। তাদের পাশে কেউই থাকে না.. সৃষ্টিকর্তা‌ও কি থাকেন না? ন‌ইলে অত অত্যাচারের পরেও ওই বড় মানুষদের চাক্ষুষ পতন ঘটে না কেন?‌

সময়ের পালাবদলের সাথে মানুষের পাপ-পুণ্যের যাত্রার এক অনির্দিষ্ট গল্প– যেখানে বিভাজনটা শ্রেণি-ধর্মের চেয়েও বড় হয়ে রূপ নেয় শাসক ও শোষিতে। এই শোষণের আগুনে পুড়ে শোষিতের মনে আবহমানকাল যে দহন চলছে, তার‌ই চিরসাক্ষী সূর্য।

🔸🔸🔸

এই উপন্যাসের সংলাপগুলো বৃহত্তর চট্টগ্রামের গাছবাড়িয়া উপজেলার। আমি নিজেও চট্টগ্রামের, তবু এই আঞ্চলিক ভাষার সামান্য রূপভেদটা আমার অপরিচিত ছিল। এজন্য পড়তে আরো বেশি ভালো লেগেছে।
Profile Image for Mosharaf Hossain.
128 reviews99 followers
May 11, 2017
পূর্বদিক সূর্যটা সবেমাত্র দেখা দিয়েছে, লালা আভাটা এখণো কাটেনি। সকালের ভ্যাপসা গরমে আমার শরীরের লোমকূপের ভেতর থেকে ঘাম গুলো ফিনকির মত বের হচ্ছিলো। "সূর্যটা লাফিয়ে পশ্চিমে চলেছে যেন যুগ-যুগান্তরের সাথী"- এই বলে, আহমদ ছফার "সূর্য তুমি সাথী" তখন দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেল।

স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রথম বই সূর্য তুমি সাথী। এই বইয়ে একটি চরিত্র নেই, এই বইয়ে অনেকগুলো চরিত্র। প্রতিটা চরিত্র যেখানেই মহান হয়ে উঠেছে নিজ নিজ গুনে।

মূল প্লটে আমরা দেখতে পাই শ্রেনী বৈষম্যের এক ভয়াবহ চিত্র। এমন একটা সমাজকে যেখানে মানুষের মানুষ পরিচয় থেকে বড় হয়ে উঠে তাঁর ধর্মীয় পরিচয়। যেখানে সন্তান আকুতি করে মায়ের কাছে, "মা, হিন্দু হই, মুসলমান হই, আমি তো তোরই সন্তান, কোলে তুলে নে।" কিন্তু মায়ের মন গলে না, মায়ের মন আটকে যায় সমাজ সংস্কারের কাছে। আবার ছেলে প্রশ্ন করে, সব মানুষ এক মানুষ নয় কেন মা? আমি যে আবদুলের সঙ্গে মার্বেল খেলতাম, সেজন্য কিছু দোষ হবে?" মায়ের মুখে কোন উত্তর থাকে না। মায়ের রক্ত অনুশাসনের বিরুদ্ধে করতে চায়, কিন্ত থেমে যায়।

গল্পের মূল চরিত্র হাসিম। যার বাবা হিন্দু থেকে মুসলমান হয়। কিন্তু একসময় সে না পারে হিন্দু সমাজে টিকে থাকতে, না পারে মুসলমান সমাজে গ্রহনযোগ্য হ���ে। বাপ মরে যায় একসময়, কিন্তু সব যন্ত্রনা রেখে যায় হাসিমের জন্য। হাসিম হয়ে উঠে ছোটলোকের চাইতেও ছোটলোক। একসময় হাসিম "হাজার মানুষের দুঃখ বেদনার সঙ্গে সে যখন নিজের দুঃখও মিলিয়ে দেখল, অনুভূতির আয়নাতে সুন্দর ধারণা ফুটে উঠল- সেও মানুষ।"

হাসিমের স্ত্রী যখন সন্তান জন্ম দেয়। হাসিম তখন পাগলপ্রায় হয়ে উঠে কষ্ট দেখে। সে ভাবে, "একটা প্রাণকে পৃথিবীতে আনার জন্য আরেকটা প্রানের সেকী আকুলি-বিকুলি! সেকী বুকভাঙ্গা বেদনা! সৃষ্টি, হায় রে সৃষ্টি! এতই বেদনা সৃষ্টির। ... কী কঠিন পরীক্ষার ভেতর দিয়ে মানুষ পৃথিবীতে আসে! ভয় করে তার। ভয় করে তা��।" হাসিম আবার ভাবে, "এ সেই মহাপরীক্ষা, যাতে উত্তীর্ণ হয়ে নারীজন্ম সার্থক করতে হয়। এর জন্য দশটি অতন্দ্র প্রহর গুনতে হয়।"

স্ত্রী প্রসবের বর্ণনা হাসিম দেয় এভাবে, "ঘরের ভেতর চলছে যমে আর মানুষের টানাটানি। সুফিয়ার জরায়ু ফেটে চিরচির করে টাটকা তাজা রক্ত নির্গত হচ্ছে। এ রক্ত ছদুর রক্তের মতো নয়, আরো লাল, আরো গাড়ো, আরো তাজা।"

আমি প্রথম ধাক্কায় ভাবিনি উপন্যাসটি এতটা ধাক্কা দিবে আমাকে। কথার জাদুকর আহমদ ছফা এত্ত গভীর ভাবে শব্দ দিয়ে শব্দ সাজিয়েছেন রীতিমত মুগ্ধ হয়েছি। এত্ত সুন্দর বর্ণনা, আমার মত আধমরা পাঠককেও চুম্বুকের মত আটকে রাখে বই শেষ না করা পর্যন্ত।

আর শেষ করার পর কী হয়? আহমদ ছফা বলেন, "তারপর...বুকে হাতুড়ি পেটার শব্দ হয়। বুকের ভেতর জলোচ্ছ্বাস হয় জাগে, বুকের তলায় আগুন জ্বলে। ছোট ছোট কোটরাগত চোখ দুটোর চারপাশে বিন্দু বিন্দু শিশির জমে... জমতে থাকে। জমাট শিশির আকাশ পৃথিবী ছেয়ে যায়।"
Profile Image for Shahriar Rahman.
84 reviews13 followers
April 21, 2020
একুশ বছর বয়সে আমি কী করতাম? সবে মাত্র কলেজ শেষ করেছি হয়ত। প্রতিদিন ২৭ নাম্বার কিংবা সূচনা বাসে করে উত্তরা - আসাদগেট করতে হবে না, এই আনন্দে ইন্টারে করা অতীব লজ্জাস্কর রেজাল্টকে প্রায় চাপা দিয়ে ফেলেছি। বাসা থেকে ঘোষণা এসেছে, যদি কোন পাবলিকে চান্স পাও তো ভাল, নতুবা বাকি জীবন “ইন্টার পাশ” উপমা নিয়েই চলতে হবে ক্ষণ। অত শত না থোড়াই কেয়ার করি! মনের আনন্দে যশোর, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম, ঢাকা...সারা বাংলাদেশের সব পাবলিক ভার্সিটির ফরম তুলে চলেছি, গুলি মারতে থাকি কোন একটায় না একটায় তো লাগবেই, এই আশায়।

আর ২১ বছর বয়সে আহমদ ছফা কী করলেন? উপন্যাস লিখে ফেললেন “সূর্য তুমি সাথী। সে উপন্যাস আমাকে এতটাই মুগ্ধ করল যে তার রিভিউ লেখার সাহস করা উঠা ঠিক হবে কী না বুঝে উঠতে পারছি না গত চারদিন হল। (যেখানে রিভিউ লেখার সাহস নাই সেখানে ঠিক কোন আক্কেলে প্রথমেই নিজেকে ২১ বছর বয়সী ছফার সাথে তুলনা করে ফেললাম জানি না। তবে কম জানা, কম বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের এই এক সুবিধা, সব কিছু করার আগে চিন্তা ভাবনা করতে হয় না।)

কী আছে এই সূর্য তুমি সাথীতে? প্লট হিসেবে তেমন কিছুই নেই, খুবই সহজ সাধারণ প্লট। ৬০ এর দশকে সারা দেশজুড়ে থাকা হাজার হাজার গ্রামের মত চট্টগ্রামের কোন এক গ্রাম। সেই গ্রামে থাকা হাসিম, সুফিয়া,জহুরার মত শোষিত আর খলু মাতব্বর, গ্রামের চেয়ারম্যান কিংবা কানা আফজলের মত ধূর্ত, শাসক চরিত্রের মানুষও দুষ্প্রাপ্য নয়, ও আরো লাখে লাখে আছে দেশ কিংবা পৃথিবীজুড়ে। সাম্প্রদায়িকতা, হিন্দু মুসলমানের নির্লজ্জ পর্যায়ের দ্বন্দ্ব, মানুষ পরিচয়ের চাইতে ধর্মের পরিচয় বড় হয়ে ওঠার কাহিনী… খুঁজলে এসবের উদাহরণও মিলবে ভুরিভুরি। যা মিলবে না তা হল, এই সামান্য, সহজ প্লটকে কেন্দ্র করে অসামান্য উপন্যাস ফেঁদে বসার উদাহরণ, রবীন্দ্রনাথ তো বলেই গিয়েছেন - সহজ কথা যায় না বলে সহজে!
এই উপন্যাসের ইন্টারেস্টিং বিষয় হল, প্রতিটা চরিত্রই চট্টগ্রামের স্থানীয় ভাষায় কথা বলে। সন্দেহ নেই চট্টগ্রামের ভাষা শুনতে দুর্বোধ্য, তবে পড়তে গিয়ে তেমনটা লাগেনি। তা আহমেদ ছফার লেখার মুন্সীয়ানায় হোক কিংবা আমার নিজের অতিরিক্ত ভাল লাগা থেকেই আসুক, পড়াতে গিয়ে খুব কম সময়ই ব্র্যাকেটের মধ্যে থাকা শুদ্ধ ভাষার সংলাপগুলো পড়তে হয়েছে।
তাছাড়া সেই অর্থে সংলাপও বেশি নেই, যা আছে তা হল প্রত্যেকটা দৃশ্য শুরু হবার আগে বিস্তারিতভাবে সব ধরণের ডিটেইলের মাথায় রেখে পরিবেশটা তৈরি করে নেয়া। হয়ত একারণেই চাটগাঁর ভাষা না বুঝলেও কে কী বলছে তা বুঝতে সমস্যা হয় নি একটুও…...

এ পর্যন্ত লিখে মনে হল, আর যাই হোক, এটা সূর্য তুমি সাথীর রিভিউ হচ্ছে না। যে পরিমাণ ধর্মীয় কুসংস্কার, গোঁড়া মুসলমান এবং হিন্দু সমাজ আর তাদের একে অপরের প্রতি ঘৃণা, ধর্মান্ধতা এবং এসব থেকে উদ্ভূত দুঃখ কষ্ট, চাপা ক্ষোভ, মানুষের অসহায়ত্ব তুলে ধরা হয়েছে এ উপন্যাসে, তাঁর ছিটেফোঁটাও উপরের লেখায় নেই। পড়ার সময় যে পরিমাণ রাগ, ক্ষোভ, অসহায় লাগে, যে পরিমাণ আগুন জ্বলে বুকে মধ্যে, সে কথা নাহয় বাদই দিলাম! তবুও লিখছি, নিজের মুগ্ধতা থেকে লিখছি, আহমদ ছফার প্রতি মুগ্ধতা থেকে লিখছি। কে জানে, সেই ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত অর্ধশতাব্দী পুরাতন একটি উপন্যাসের কথাগুলো কীভাবে আজও আমাদের দেশ, সমাজ বা পৃথিবীর জন্য সমান সত্য, তা ভেবেও হয়তবা লিখছি!

সূর্য তুমি সাথী পছন্দ হবার আরেকটা ব্যক্তিগত কারণ আছে। এতদিন কোন বই পছন্দ হয়ে গেলেই তা কেমন সুড়সুড়ি দিতে থাকত শেষ হবার আগ পর্যন্ত। বেশিরভাগ সময় এমন কিছু পড়া হত, যা শেষ করার আগ পর্যন্ত ঠিক শান্তি করে বসা যায় না। কিন্তু সূর্য তুমি সাথী (কিংবা এখন পর্যন্ত আমার পড়া আহমেদ ছফার অন্য সব লেখা) মোটেও কাছে অমন লাগে নি। যতক্ষণ পড়ব, মুগ্ধ হয়ে থাকব, বন্ধ করে পাশে রাখলে সে আমাকে আর জ্বালাতন করবে না! হাসিম এসেছিল “আগুনের জোয়ার ফোলা সাগর সাঁতরে” , “সিগন্যালের লাল আলোটা বাঘের চোখের মত জ্বলতে থাকা” স্টেশনের কোন এক ট্রেনে চেপে সে চলে গেল। মাঝখান থেকে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে গেল আহমদ ছফা নামের এক জাদুকরের সাথে……...

(আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টে আছে কিন্তু কখনো দেখা হয় নি, এমন মানুষদের মধ্যে ফয়সাল আকরাম ইথার ভাইকে আমি খুব পছন্দ করি। তাঁর লেখার বিশেষ স্টাইলটা আমার অনবদ্য লাগে। গুডরিডসে তাঁর লেখা অসাধারণ রিভিউ পড়েই না আহমদ ছফা নামের গুপ্তধনের সাথে আমার প্রথম পরিচয়! তাই তাঁর একটা আলাদা ধন্যবাদ প্রাপ্য)
Profile Image for Daina Chakma.
440 reviews772 followers
August 4, 2018
হা ঈশ্বর!!
এই ভূবনে এতো বৈষম্য কেন??

ধনী-দরিদ্রের ব্যাবধান।
শোষক-শোষিতের ব্যাবধান।
ধর্মের ব্যাবধান।

এতো বৈচিত্র্য না থাকলে পৃথিবীটা কি আরেকটু সুন্দর হতো না??
Profile Image for দীপান্বিতা দোলা.
2 reviews11 followers
April 7, 2021
এই উপন্যাসটা আমার সবচেয়ে প্রিয় উপন্যাসগুলোর মধ্যে একটা হয়ে থাকবে । ♥
Profile Image for Mohammed Minhazz.
279 reviews13 followers
September 23, 2024
[সূর্য তুমি সাথী
- আহমদ ছফা]




“রক্তের লাল বসনে আবৃত শরীর। আঁধার কেটে গেছে। পুবে ঢোল পহর দেখা দিয়েছে। সিঁদুররেখার মতো বিনম্র আলোর একটা ঈষৎ রেখা জাগল। তারপরে লাল হয়ে উঠল আকাশ। নবজাতকের রক্তাক্ত বসনের মতো লাল।”




যুবক ছফার ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ বয়সে রচিত প্রথম উপন্যাস অথবা প্রথম সন্তান। সূর্যকে সঙ্গী করে পথ চলার দৃঢ় সংকল্পের উত্তাপে মোমের ন্যায় গলে যায় সকল জড়তা আর স্থবিরতা। হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গার কুৎসিত চেহারা আজ‌ও রয়েছে চিরঅম্লান, সজীব হয়ে উঠে কালের প্রতিটি বাঁকে। ধর্মান্তরিত পিতা আর দাসী মায়ের গর্ভে জন্মলাভ করা হাশিম, যার আরেক নাম বেনিয়ারপুত, আমাদের এক গল্প শোনায়। গল্পটা পুরাতন আর ধূলিময়, ধূলোর আস্তরণ ভেদ করেও তার কুটিল রূপ স্বমহিমায় প্রকাশ করে। শেকল ভাঙা-গড়ার ঝনঝনে আওয়াজে বিপ্লবী সংগীত ম্লান হয়ে আসে। হাশিমের পোয়াতি ব‌উ ব‌উয়ের আর্তচিৎকার, ধর্ষিতা জোহরার গোপন বেদনা আর সদ্য সন্তান হারানো বৃদ্ধ পিতার আরেক বোবা সন্তান, তার ফসলি জমি, বেদখল হওয়ার করুণ দৃশ্য সজোরে ধাক্কা দেয় আমাদের বিবেক দ্বারে। মানুষের বিরুদ্ধে মানুষ, পশুত্ব পরাজিত করে মানবিকতাকে। বিশালাকার তেজেনদার ঝুলন্ত লাশটা আরো বিশাল মনে হয়। পুবের আকাশে জলন্ত অগ্নিশিখা আনবে কি বিপ্লব?



২৩/০৯/২৪
— মিনহাজ জোস্টার
Profile Image for Faisal Ether.
22 reviews14 followers
September 29, 2015
আহমেদ ছফার “সূর্য তুমি সাথী” শেষ করলাম আজকে। অফিস থেইকা ফিরসি তাড়াতাড়ি। তখনো বাইরে বিকেলের আলো ছিল। আমার বই পড়া হচ্ছে না এই গিলটি ফিলিং থেকে মুক্তি পাবার জন্য ভাবলাম মাত্র তিন চ্যাপ্টার পড়সি, আজকে যখন সময় আছে হাতে, ডুব দেয়া যাক। সুর্য যতক্ষণ সাথি ছিল সুর্যের আলোয় পড়লাম। কমতে কমতে যখন কম আলো তে আর চোখ ছোট ছোট করা যাচ্ছিল না তখন লাইট জ্বালিয়ে বাকিটা শেষ করলাম। একটা ভাল উপন্যাস শেষ করার অনুভূতি টা ঘাম দিয়ে জর ছাড়ার মত। জর টাতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলাম। এখন কেমন কি যান নেই নেই লাগছে।

“সূর্য তুমি সাথী” উপন্যাস টা লেখা হয় ১৯৬৭ সালে। আহমেদ ছফার প্রথম উপন্যাস। আমি পড়া শুরু করি কোরবানি ঈদ এর দিন আর শেষ করলাম আজকে। মানে পাঁচ দিন লাগলো শেষ করতে। অনেক গুলা অনুভূতি এক সাথে হচ্ছে। সব চেয়ে বেশি যেটা হচ্ছে তা হচ্ছে, আরেকবার পড়লে হয়তো আরও অনেক ডিটেইল চোখে পড়বে।

প্লট হিসাবে “সূর্য তুমি সাথী” তুমি উপন্যাস এ নতুন কিছু নেই। শ্রেণী বৈষম্যের হাতে নিপীড়িত মানুষের দুঃখ গাঁথা, এক হবার বাসনা। ১৯৩৬ সালে প্রকাশিত হওয়া মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এর পদ্মা নদীর মাঝি তেও একই রকম পটভূমি আমরা দেখতে পাই। কিন্তু সাধারণ জিনিশের মধ্য থেকেও অদেখা অসাধারণ কে বের করে আনা একজন জাদুকর এর দায়িত্ব এবং আহমেদ ছফা একজন জাদুকর।

উপন্যাসের প্রত্যেকটা দৃশ্য শুরু হবার আগে লেখক যেভাবে বিস্তারিত ভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ডিটেইল এর প্রতি লক্ষ রেখে তার পরিবেশটা তৈরি করেছেন তা খুব কম লেখকের মধ্যেই পেয়েছি আমি। এখানে সংলাপ এর চেয়ে সংস্পর্শ বা পাঠকের সাথে চরিত্র গুলার যে কানেকশন তৈরির প্রতি নজর ছিল লেখকের তা খুব ভাল ভাবেই বোঝা যায়।

কিছু কিছু দৃশ্যে রক্ত এমন গরম হয়ে ওঠে যে মনে হয় এখনো ড্রাগনের মত আগুন বের হবে নাক দিয়ে। সেই ১৯৬৭ সালে বসে যিনি রেসিজম এর বিপক্ষে লিখতে পারেন, তিনি কি রকম আধুনিক ছিলেন কল্পনা করা যায়?
Profile Image for Shotabdi.
818 reviews194 followers
January 3, 2019
মাত্র ২১ বছর বয়সে এমন লেখা? অনবদ্য। বইটি পড়তে পড়তে আরো তিনটি কালজয়ী উপন্যাসের কথা মনে পড়ে যায়। হাজার বছর ধরে, পদ্মা নদীর মাঝি এবং কবি। কিন্তু তবুও আহমদ ছফা অনন্য৷ এত অল্প বয়সে এমন অসামান্য দক্ষতায় সমাজের চূড়ান্ত বাস্তবতাগুলো এঁকেছেন যে পড়তে পড়তে চমকে উঠতে হয়েছে বারবার। শোষক-শোষিতের চিরন্তন দুঃখগাথা, সাম্প্রদায়িকতার বিশ্রী আঘাত, মানবমনের অসীম ভালোবাসা এবং শক্তি, নতুন করে বাঁচার আকাঙ্ক্ষা অসম্ভব দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন ছফা। অসাধারণ এক আখ্যান।
Profile Image for তানজুম ফেরদৌস.
56 reviews5 followers
December 12, 2024
আহমেদ ছফার প্রথম উপন্যাস .....

সংগ্রহে থাকা বাকিগুলোর মধ্যে সবার শেষে পড়া হলো🤦🏻‍♀️
Profile Image for Sanowar Hossain.
281 reviews25 followers
February 9, 2022
গ্রাম বাংলার পটভূমিতে আহমদ ছফার এক রত্ন।
Profile Image for Shihab Uddin.
289 reviews1 follower
August 23, 2022
গ্রামীণ সমাজের এমন কথন সুশীল সমাজের সুখাদ্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে! ছফা প্রেমীক হিসেবে আমার কাছে ছিলো অমৃত!
Profile Image for Hasibul Ahsan.
32 reviews3 followers
March 10, 2019
খুব কম কিছু বই পড়েছি, যা পড়ার সময় ভেতরে একধরণের অস্থিরতা কাজ করেছে। এত অসাধারণ ভাবে ধর্মীয় গোড়ামীর কাছে মনুষ্যের পরাজয় এবং চিরাচরিত গ্রাম বাংলার শোষণ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যাকে অনবদ্য না বলে উপায় নেই। বই পড়া শেষ, তবে রেশ টা রয়ে গেছে। বেচে থাকুক এমন লেখনী।
Profile Image for মুনাম কবির.
69 reviews7 followers
March 29, 2025
লেখকের প্রথম উপন্যাস এটি। পড়েই বোঝা যাচ্ছে, একাধিক বই পড়ে, লেখার ভাঁজ খাঁজগুলি নকল করে ওই অনুকরণে ঢেলে দিয়েছে লেখক। আহমদ ছফা থেকে এটা আশা করিনি। আমি তার সাবলীল গদ্যশৈলীর ভক্ত। এমনকি যদ্যপি আমার গুরু বইটি স্মৃতিচারণ হলেও লেখনী জুতসই ছিল। এটা কেমন কাঠখোট্টা হয়ে গেল। যাকগে।
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for Kaniz Fatema.
103 reviews17 followers
September 2, 2023
এতো সুন্দর আর মায়া দিয়ে কিভাবে লিখে একটা মানুষ!?
I gave it 4★ but actually I don’t how to rate it. I don’t know how to articulate the myriad of emotions I'm feeling right now!
Profile Image for Farhanur Rahman.
47 reviews11 followers
August 19, 2020
বইটির কাহিনি অনেকাংশে মিল রয়েছে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের "পদ্মা নদীর মাঝি" র সাথে, মিল রয়েছে সেলিনা হোসেনের "পোকামাকড়ের ঘরবসতি"র সাথে। তারপরেও অনেক দিক থেকেই " সূর্য তুমি সাথী" উপন্যাসটিকে স্বাতন্ত্র্য করে তুলেছেন আহমদ ছফা তার স্বভাবসুলভ লেখনিতে। উপন্যাসটি স্বাতন্ত্র্য হাসিমের অসাম্প্রদায়িক চেতনায়; হাসিমের মনের উদারতায়; খলু, কানা আফজলের সাম্প্রদায়িকতার ও তাদের মনের সংকীর্ণতার বহিঃপ্রকাশে।
Profile Image for Ferdous Hriday.
17 reviews2 followers
March 2, 2019

‘সূর্য তুমি সাথী’ বইটির লেখকের নাম না জেনে যদি পড়তাম, তা’হলে আমি বলতাম তারাশঙ্কর বাবুর লেখা।
একজন পাঠকের পত্ৰ।

I can't agree more.
Profile Image for Tokib Towfiq.
15 reviews3 followers
November 16, 2023
কালের দলিল; সূর্য তুমি সাথী - মানুষের জীবন ও জীবনের জন্য সৃষ্ট সমাজ; এই দু’য়ের মাঝে জড়িয়ে আছে মানুষের সকল প্রচেষ্টার নানান স্তরগুলো। মানুষ এবং মানুষের প্রয়োজনে সৃষ্ট সমাজকে কেন্দ্রীভূত করেই নানান কর্ম, উদ্যোগ, পরিকল্পনা এবং তা বাস্তবায়নের কৌশল সৃষ্টি ও তার প্রভাব বিস্তার ঘটে। সে থেকে সৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা এবং তা মোকাবেলা করবার নানান কৌশল ও পন্থা অনুসরণ করে ফলাফল উপভোগ করা এবং উদ্দেশ্য সাধিত করে সফলকাম হবার লক্ষ্যই মানুষের।

মনস্তত্ত্ব, ভাববাদ, অস্তিত্ববাদ দ্বান্দ্বিকতা ইত্যাদি চিন্তা জাগানোর কারণ কিন্তু মানুষ আর মানুষের সমাজ।
এইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করলে অনেক লেখা উপস্থাপন করবার পরও যেনো অনেক ফাঁকফোকর থেকে যায়। কারণ মানুষ ও মানুষের সমাজ নিয়ে আলোচনা করতে গেলে সমাজ ও মানুষের সাথে জড়িয়ে থাকা প্রতিটি শব্দ অথবা বাক্যের ব্যাখ্যা হতে পারে বিশদ। তাই আমি উপজীব্য প্রসঙ্গ নিয়ে সরাসরি আলোচনায় যেতে চাই।

আলোচনার বিষয়টি মূলত আহমদ ছফার প্রকাশিত আট (৮) উপন্যাসের একটি। অর্থাৎ তাঁর প্রকাশিত আট উপন্যাসের প্রথম উপন্যাস ‘সূর্য তুমি সাথী’-ই হল আজকের পাঠ-পর্যালোচনার প্রেক্ষাপট।

আহমদ ছফা সম্বন্ধে প্রকাশিত নানান লেখায় আমরা পেয়ে থাকি তিনি নিছক খেয়ালে, বন্ধুদের সাথে বাজি রেখে ‘সূর্য তুমি সাথী’ উপন্যাসটি রচনা করেন এবং এই উপন্যাসটি তার প্রথম উপন্যাস। উপন্যাসটি যখন প্রকাশিত হয় তখন আহমদ ছফার বয়স ছিল একুশ (২১) ।
কিন্তু তার প্রথম এই উপন্যাস পড়ে বুঝবার অবকাশ নেই যে এটিই তার প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস। অর্থাৎ, মানতেই হবে তিনি তার আগেই নিজেকে সমৃদ্ধ করেই সাহিত্য মহলে কদম ফেলেছেন। যে কদমের ওজনটার ভার ভালোই যা তাকে পাকাপোক্ত করেছে।
তবে আরো নানান আলোচনায় জানা যায় যে লেখক আহমদ ছফা’র ‘সূর্য তুমি সাথী’ উপন্যাস প্রকাশিত হবার আগে আরও একটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছিল যার নাম ‘বরুমতির আঁকে বাঁকে’। কিন্তু এই বই নিয়ে খুব একটা তথ্য সংগ্রহ নেই এবং বইটি পাওয়া যায়নি বলে ‘বরুমতির আঁকে বাঁকে’ লেখকের প্রথম উপন্যাস বলে নিশ্চিত করা কঠিন। কিন্তু আমার কৌতূহল এই উপন্যাসের কোনো অস্তিত্ব যদি কোথাও পাওয়া’ই না যায় তাহলে ‘বরুমতির আঁকে বাঁকে’ নামটির উৎপত্তি কোথা থেকে! এই কৌতূহল নিয়ে ছুটবার আগে প্রসঙ্গে থাকা ‘সূর্য তুমি সাথী’ উপন্যাসের আলোচনায় ফেরা যাক।

‘সূর্য তুমি সাথী’ উপন্যাস পাকিস্তান রাষ্ট্রের বহুমাত্রিক জীবন প্রবাহেরই আকর। প্রথম উপন্যাস হলেও পাকাপোক্ত হাতের লেখায় তিনি এই উপন্যাসের লেখালিপি দিয়ে আমাদের বাঙালি জাতি ও রাষ্ট্র পতনের সূচনা পর্ব দেখিয়েছেন। অর্থাৎ পাকিস্তান রাষ্ট্রের নানান অত্যাচার আর বাঙালির সূচনালগ্নের হার এই উপন্যাসে অন্যতম আলোচ্য বিষয়।

ধর্মকর্ম নামে অর্থাৎ ধর্মের গোড়ামি দেখিয়ে নানান ধর্মের মাঝে শোষণ ভেদাভেদ, অভ্যস্ততার জীবনকে ত্যাগ করে নতুনত্বকে আগলে নতুন জীবন বরণ করবার দারুণ এক আকাঙ্খা ‘সূর্য তুমি সাথী’ উপন্যাস দিয়ে লেখক বুঝিয়েছেন। এই উপন্যাসের গল্প সমাজের এক দারুণ চিত্র। সময়কালের দলিলও বটে।
শক্তিমানদের ভূমির প্রতি যে লালসা, প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের শোষণ ও অত্যাচারের কারণে তাদের নিজেদের অবসান, সেইসময় হিন্দুমধ্যবিত্তের দাপট আর অহংকারের চূর্ণ হওয়ার চিত্র, সেইকালে অনুন্নত মুসলমান সমাজ অধিক সম্পদ কিংবা সম্মানের জায়গা করে নিতে না পেরেও সেই জায়গা দখল ইত্যাদি প্রেক্ষাপট।

অনিয়মের সমাজ, অসামঞ্জস্যতার মধ্যে দিয়ে সমাজের বিকাশ, মানুষের কটু আচারণ ইত্যাদি কারণে অতিষ্ঠ হয়ে ‘সূর্য তুমি সাথী’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘হাসিম’ ছেড়ে যায় নিজের প্রিয় গ্রাম। ‘হাসিম’র বাবা ছিলেন নিন্মবিত্তের একজন হিন্দু। কিন্তু হাসিম ভালোবাসে মুসলমান ঘরের এক মেয়েকে। তাকে ভালোবেসে বিয়ে করবার প্রত্যয় নিয়ে হাসিম মুসলিম হয়। কিন্তু তারপরও সে ভালোবাসার সংসার গড়তে পারেনি। কেন পারেনি? কি হয়েছিল হাসিমের সাথে? তা খোলাসা করে জানাতে পারে ‘সূর্য তুমি সাথী’ উপন্যাস।

লেখক আহমদ ছফা তার উপন্যাস ‘সূর্য তুমি সাথী’ তে দেখান ধর্মীয় দ্বন্দ্ব, সমাজ নিয়ন্ত্রণের হিংসাত্মক খেলা, শোষণের প্রতি কে কতটা তৎপর হতে পারে এবং তার জন্য কতটা সহিংস হতে পারে তার নমুনা। আর এইসব কারণের শিকার হন হাসিমের বাবা ‘হরিমন’। এ থেকে নিস্তার পায়নি হাসিম নিজেও।
কী করে দু’জন অত্যাচারিত হয়? হ্যাঁ প্রত্যুত্তরে বলা যেতে পারে, হাসিমের বাবা ‘হরিমন’ শিকার হন ধর্মীয় ভেদাভেদ থেকে সৃষ্ট শোষণে আর ‘হাসিম’ শিকার হয় পাকিস্তান আমলে সেকেলে সমাজ ব্যবস্থার শোষণে।

শুরুর দিকে উপন্যাসের গল্পটা হার মেনে নেয়া দেখালেও হারতে হারতে জিতে যাওয়ার প্রতিচ্ছবিও লেখক দেখিয়েছেন ‘সূর্য তুমি সাথী’ উপন্যাসে। হাসিমের গৃহ-গ্রাম ত্যাগ তারপর কারখানার উদ্দেশ্য নিয়ে গমন করা এবং সে থেকে বাংলাদেশের উজ্জ্বল সফলতার এক বার্তা হাওয়ায় ভেসে আসা।

গল্পের প্রয়োজনে আলোচনা দীর্ঘ হতেই আছে। কিন্তু আমি এটুকুই জানান দিবো। এর বেশি কি আলোচনা করবো? শেষ করবার আগে আরও একটু বলি। আহমদ ছফা ‘সূর্য তুমি সাথী’ উপন্যাসে রাজনৈতিক প্রভাবের এমন এক চিত্র তুলে ধরেছেন যার প্রভাব কিংবা প্রভাবিত অঞ্চল মূলত গ্রাম। গ্রামীন হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর সাথে জোতদারি দাফট দেখানোর মধ্যে দিয়ে ভূমি অধিকার দেখাবার একটি চিত্র। তার নিদর্শনে গল্পে ‘কৃষক সমিতি’ রাজনৈতিক সংগঠন দেখানো হয়।

আরও নানান চরিত্র নানান ভূমিকায় দৃশ্যমান হয়েছে এই। ফুটে তুলেছে গুরুত্বপূর্ণ বহু বিষয়। কিন্তু বইয়ের প্রতিটি ব্যাপার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে গেলে তা দীর্ঘ হয়ে যায়। তাই মূল প্রেক্ষাপটের অন্তর্ভুক্ত ক’টি কথা’ই জানান দিয়েছি শুধু।

আহমদ ছফা ইতিহাস থেকে উঠে আসা মানুষ। তিনি ইতিহাসের নানান চিত্র দেখে বেড়ে উঠেছেন। আর সেই চিত্রগুলোকে তার গল্প বয়ানের দুর্দান্ত যোগ্যতা আর কলমি আচরণের যে শৈল্পিকতা দ্বারা লিপিবদ্ধ করেছেন। তাই তার একেকটা সৃষ্টি যেন সমাজ চিত্রের বহিঃপ্রকাশ। তিনি অনবদ্য ও এক অনন্য।
তার লেখার ভাষাশৈলী, প্রাঞ্জলতা এবং গল্প বলার সাহসিকতা পাঠককে আশাজাগানিয়া অনুপ্রেরণা দান করে। এবং সেখানেই গুপ্ত আচরণে উচ্ছ্বসিত হয়ে ঘুরপাক করে ছন্দময় মুগ্ধতা।

49 reviews
July 12, 2025
৪.৩/৫.০
এটি যে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু যখন দেখি, বইটির লেখক যখন এটি লিখছিলেন, তখন তার বয়স আমার চেয়ে এক বছর বেশি ছিল তখন রিভিউ লিখতে গেলে খানিকটা সংকোচ হয়। মনে হয়, আসলেই কি লেখার যোগ্য আমি? কেমন লাগছে নাহয় বললাম, কিন্তু এরকম সাহস আমি কিভাবে পেতাম!? এই সাহস, মেধা ও প্রগতিশীল চিন্তাকে রেটিং দিই কি করে?!
' সূর্য তুমি সাথী ' আহমদ ছফার প্রথম উপন্যাস। সম্ভবত, তিনি এটিকে নিজের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস বলে মনে করতেন। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র হাশেম সমাজের সম্মান ও অর্থ উভয় দিক থেকেই সবচেয়ে নিচে। এ যেন দুনিয়ার সকল লাঞ্ছিতদের প্রতিচ্ছবি।
উপন্যাসটি পড়বার সময় ' পদ্মানদীর মাঝি ' ও ' হাজার বছর ধরে ' উপন্যাস দুটির কথা বারবার মনে পড়ছিল। অনেক মিল আছে উপন্যাসের কাঠামো ও সূচনা - শেষে। তবে তার মধ্যেও এই উপন্যাসটি অনেক বেশি সত্য বলে মনে হয় । মানিক পদ্মানদীর মাঝি, হলুদ নদী সবুজ বন সহ বেশ কিছু উপন্যাসে সাম্প্রদায়িকতাকে কেবল শ্রেনী দ্বন্দ্ব ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দ্বারা sugercoat করে দিয়েছেন। কিন্তু ছফা এই ক্ষেত্রে সমরেশ বসুর মত সবসময় দেখাতে পছন্দ করেন। তিনি দেখিয়েছেন, সাম্প্রদায়িকতায় কেবল ধর্ম নয় অর্থ, ক্ষমতা, ব্যক্তি ও সমাজ কিভাবে ভূমিকা রাখে। আর শুধু সাম্প্রদায়িকতার সামনে মানুষের পরাজয়ই না; দেখিয়েছেন হাসিম, দাদী, জোহরা, কৃষক পার্টির সদস্যদের ভেতরকার বৈপ্লবিক আশার অগ্নিশিখা। উপন্যাস এভাবেই শেষ হয়। আশা দিয়ে নয় বা কেবল নেতিবাচকতা দিয়েও নয়। একটি প্রশ্ন দিয়ে, সেই অগ্নিশিখা কি আদৌ জ্বলতে থাকবে? কিছু জায়গায় যেমন আপনার হাশিম - জোহরার জন্য অনেক খারাপ লাগবে, তেমনি অনেক জায়গায় আপনার বিপ্লবী উদ্যম জেগে উঠবে! ২১ বছরের যুবকটি যেভাবে অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলেছেন, তাতে সরকারের জুতো চাঁটা নামি-দামী অনেক বুদ্ধিজীবীদেরও হয়তো মুখ কালো হয়ে যেতো।
গাভী বিত্তন্তের শেষটি খানিকটা খাপছাড়া মনে হলেও ৫ দিয়েছিলাম। কেনো জানিনা। কিন্তু এটিতে কোনো কমতি না থাকার পরও ৫ দিলাম না। হয়ত আমার enjoyability কম বা হয়তো পরপর বেশ কয়েকটি গ্রামীণ ও সামাজিক উপন্যাস পড়বার পর কিছু জায়গায় সাদৃশ্য মনে হবার কারণে। তবে নিঃসন্দেহে, পুনঃপাঠ প্রয়োজন। এক কথায়, দারুন একটি বই।

(সুদিন কাছে এসো.....)
Profile Image for Salauddin Rony.
34 reviews1 follower
September 23, 2024
জাতিসত্ত্বা শব্দটির সঠিক অর্থ কি? অভিধান অনুযায়ী জাতীয় বৈশিষ্ট্যের অস্তিত্ব; জাতির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সচেতনতা। তবে জাতি কি- একটি প্রকার বা শ্রেণী যার মধ্যে জন���মভূমি ধর্ম বর্ণ ইতিহাস অন্তর্ভূক্ত। আহমদ ছফা তার রচনায় বাঙালী জাতিসত্ত্বাকে তুলে ধরেছেন জাগ্রত চিত্তে। সাতান্ন বছরের প্রৌঢ় রচনা আজও তা প্রমান করে। ইতিহাস শুধু ইতিহাসকে বহন করে না সমকালিন জীবিত, নির্মিত, আবিস্কৃত সকল পদার্থ ইতিহাসের জীবন্ত প্রতিরূপ। রচয়িতারা বৃত্তগুলো ভরাট করে পরবর্তী প্রজন্ম তা সংযুক্ত করে।
সময়টা ১৯৬৭ সাল। ভারতীয় উপমহাদেশ খন্ড-বিখন্ড, ভিনদেশী অস্থিচর্মসার সাম্রাজ্ঞী মাতা পিতা সম্পত্তির অধিকার ছেড়েছেন। যুগান্তর পূর্বে স্বদেশী পিতারা সৃষ্টিকর্তা নির্বাচন করে তাদের পরিশ্রমার্জিত সন্তান বুঝে নিয়েছেন। কিন্তু সুজলা সুফলা ছোট্ট সন্তানটি পিতামহরা দিয়ে গেলেন পরদেশির হাতে। পরদেশি পিতা জারজ সন্তানের মতো লালন-পালন করছেন। সৃষ্টিকর্তা নির্বাচন করে দিয়েছেন, জন্মভাষা নির্বাচনের চেষ্টা চলছে এবং ঠিকাদার রেখে দিয়েছেন অর্থ দিয়ে। পিতৃ পরিচয়হীন সন্তান ঠিকাদারি অত্যাচারের বেদনা আড়ালে বসে আপন সৃষ্টিকর্তার নিকট জানায়। সেই সময়রের ওপর ভিত্তি করে চট্টগ্রামের পাহাড় বেষ্টিত ছোট অঞ্চলকে কেন্দ্র করে যুবক ছফা এই উপন্যাস রচনা করেন। শব্দ ও রচনাশৈলি এতোটা স্বচ্ছ ও গতিশীল যেন সূর্যের মতো আমি দূরচাহনি দিয়ে দেখছি। কতো বেদনাসিক্ত, ব্যথাদীর্ণ দীর্ঘশ্বাস লুকিয়ে আছে সন্তানটির বুকে। এলোমেলো জড়ানো ছড়ানো পক্ষাঘাত জর্জর স্বপ্নরেখা মনের অবচেতনে সমুদ্রের কাঁকড়ার মতো হেঁটে চলেছে।
শেষ পাতায় এই রচনা সমাপ্ত হয়নি। সমাপ্তি ঘটবে আরও দুই বছর পরে। হৃদয়ে যে ব্যথা গুমড়ে ওঠে, অন্তরে যে শোক মাথা কুটে মরে শরীরের কোষে কোষে যে ক্রন্দন মর্মরিত হয়- তার নেই কোন নির্গমন পথ। দত্তকপিতা ও ঠিকাদারী অত্যাচারের বিরুদ্ধে, আত্মপরিচয় প্রাপ্তির লক্ষ্যে সন্তান রাজপথে নেমে আসবে। আত্মঘাতক তেজীপাড়ার তেজেন-এর জ্বলমান দুইচোখের উদ্ভত জিজ্ঞাসার উত্তর খুঁজবে। সমস্ত জীবনের তিক্ততা ক্ষোভ বঞ্চনা শোক এবং হাহাকার মিশে আশ্চর্যভাবে ব্যঞ্জিত হয়ে রুখে দাঁড়াবে খলু, বকসু বা অধরবাবুদের বিরুদ্ধে। তখন হবে এই গল্পে পরিসমাপ্তি। ইতিহাসের কঠিন ইচ্ছা কার সাধ্য রোধ করে।
Profile Image for Nodi Akter.
17 reviews
April 28, 2025
'সূর্য তুমি সাথী'
-আহমদ ছফা

আহমদ ছফার সামাজিক উপন্যাস পড়লাম অনেক দিন পর। এই উপন্যাসটি সমাজের বাস্তব প্রতিচ্ছবি। সমাজের নিম্নশ্রেণির উপর প্রভাবশালী মানুষের ক্ষমতা দেখানো, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি, কষ্ট, বৈষম্য, গ্রাম্য শত্রুতা সব কিছু মিলিয়ে শক্তিশালী একটি উপন্যাস।

'সূর্য তুমি সাথী' বাঙালির হাজার বছরের বৈষম্য তুলে ধরে। মানুষ নিজেকে 'মানুষ' বলে মনে করতেও ভুলে যায় সমাজের এই নিয়মে। বারবার সমাজ দেখায় 'পাপ সব ছোটলোকদের'। তারা উঁচু গলায় প্রতিবাদ করতে পারবেনা, তাদের উপর অত্যাচারের ছুরি ঘুরানোর অধিকার শুধু সমাজের ভন্ড , শোষক ধনীদের।

আহমদ ছফা'র সেরা উপন্যাসের মধ্যে এইটি অন্যতম। চট্টগ্রামের ভাষা, সংস্কৃতির সুন্দর ব্যবহার এই উপন্যাসে দেখা যায়। পরপর বিভিন্ন চরিত্র ,তাদের সংলাপ, ভাষা কিংবা শব্দ চয়নের এত গভীরতা আছে যে এই পাঠক মাত্র ই প্রেমে পড়বে, কষ্ট পাবে, প্রতিবাদ জেগে উঠবে।

উপন্যাসের মূল চরিত্র হাসিম। তার পিতা নারীর ভালোবাসায় ধর্ম ত্যাগ করে উদাস হলো, সমাজ ,অর্থ সব ই গেলো। অথচ ওই নারীকে না পেয়ে ওই বাড়ির দাসীর সাথে বিয়ে হয়। পিতার ভুল যেন পুত্রের কপালে উত্তরাধিকারসূত্রে সমাজে অপমানিত হিসেবে পায়।হাসিম জন্মের পর থেকেই সমাজের অবহেলা, অপমান পেতে থাকে। সম্পর্কের মানুষগুলোর সাথেও যোগাযোগ করতে পারেনা। নিজেকে মানুষ হিসেবেই মানতে পারেনা। কেনো পারে না? সমাজের এত বাঁধা কেন?

যুগ যুগ ধরে সমাজের চিত্র নিয়েই ' সূর্য তুমি সাথী'। সূর্য যেমন পুড়ছে চিরকাল ধরে তেমনি মানুষ ও সমাজের তৈরি পাপ পূণ্যের গল্পে পুড়াচ্ছে নিজেদের মানব জীবন।

#betweentheriverinebooks
43 reviews
April 22, 2025
এই বইটা মনে হয় আমি সেই ২০১৮/২০১৯ সাল থেকে নিয়ে ঘুরতেসি। বেসিকালি বইটা ভাইয়ার। এর আগে দুইবার পড়া শুরু করসিলা। কিন্তু শেষ করতে পারিনাই। তারপর ঢাকা আনসি আজ থেকে কয়েক বছর আগে আই গেস। ফাইনালি শেষ করলাম।

খুবই সুন্দর। এতো অল্প বয়সে লেখক এতো চমৎকার লিখেছিলেন - ফ্যসিনেটিং! অনেক গুলো চরিত্র ছিলো। মনে হচ্ছিলো, অনেকদিন পর 'হাজার বছর ধরে'-টাইপের কিছু পড়তেসি। বাক্যগঠন খুবই চমৎকার ছিলো। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো বেশ কঠিনও লাগসে। আবার পড়া লাগসে লাইনটা।

তবে কিছু এডিটিং দরকার এই বই এর। বিশেষ করে ফন্ট সাইজ এতো ছোট - আমার মতো যারা বড় ফন্ট আর গ্যাপ পছন্দ করে - তাদের জন্য একটু কষ্টই হবে। প্যারাগ্রাফের মাঝখানেও গ্যাপ নাই একদম। তাই ট্রাঞ্জিশনগুলো বুঝতে একটু প্যারা হচ্ছিলো। তাছাড়া অনেকগুলো চরিত্র থাকার কারণে, বারবার একটু ডিরেইল্ড হয়ে যাচ্ছিলাম - কোন কাজটা কে করতেসে, কি বলতেসে - এটা ভুলে যাচ্ছিলাম, এই আরকি। রেকমেন্ডেশনে থাকলো এই বই বাকিদের জন্যে।

হ্যাপি রিডিং 🍁
3 reviews7 followers
April 16, 2021
উপন্যাসে ক্ষুরধার, তীক্ষ্ণ কলমের খোচায় জীবন সংগ্রামের এক ছবি অাঁকা যেন। যে সংগ্রামে অসহায় মানুষগুলো শোষন, দখল, অন্যায়-অত্যাচার, সাম্প্রদায়িকতা, দরিদ্রতার ভারে দিনদিন অসহায় থেকে অসহায়তর হয়ে পরছে।
রক্তে অাগুন জ্বলে কিন্তু সে অাগুনে তেজ নেই যেন, সেই অাগুন অন্যায় ও অত্যাচারী জালীমদের পুড়িয়ে ছাই করে দিতে পারেনা। মুক্তি মিলেনা। সবকিছুর সাক্ষী যেন ঐ সূর্য।

শোষন ও শোষকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও ঘৃনা নিয়ে বইটা শেষ করতে হলো।

অাহমদ ছফার তেজী, দক্ষ ও শৈল্পিক লেখায় মুগ্ধ হতে অামি বাধ্য ছিলাম।
Profile Image for Sabbir Rahman.
23 reviews1 follower
February 17, 2025
সূর্য তুমি সাথী পড়ার সময় আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম, কারণ ২১ বছর বয়সে একজন তরুণ কীভাবে এমন গভীর ও প্রভাবশালী একটি উপন্যাস রচনা করতে পারেন। আহমদ ছফার লেখা অত্যন্ত প্রাঞ্জল, অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ এবং সমাজের নানা সংকটকে চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। তার চিন্তার গভীরতা, ভাষার দক্ষতা ও চরিত্রদের মানসিক অবস্থা এতটা প্রভাবিত করেছে যে, মনে হয়েছে এই বয়সে এমন উপন্যাস লিখতে সত্যিই এক বিরল মেধা এবং পরিপক্বতা দরকার।
Profile Image for Rokib Hossen.
16 reviews
December 14, 2024
নীরেট গ্রামীণ জীবনের একটি গল্প।

গ্রামের কুসংস্কার, মাতাব্বরি সিস্টেম, চেয়ারম্যানের প্রভাব, সুদ ব্যবসায়ীদের হাতে চাষাদের জিম্মি, কলেরার প্রকপে গ্রাম উজাড় হওয়া, জমি দখলের জন্য দুই গ্রামে দাঙ্গা হওয়া— কী নেই এখানে। তৎকালীন পুরনো বাংলার অজপাড়াগাঁয়ের প্রতিটি উপাদান বিদ্যমান।

আহমদ ছফা তার চিরাচরিত লেখনশৈলী দিয়ে পুরো গল্পটাকে উপভোগ্য করে তুলেছেন।
Profile Image for শুভ.
109 reviews4 followers
December 15, 2021
রেটিংটা আসলে সাড়ে তিন।
আহমদ ছফা মাত্র ২১ বছর বয়সে এত সুন্দর একটা উপন্যাস লিখেছেন। পড়ে ভালো লাগলো তবে শেষটা কিছুটা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের "পদ্মা নদীর মাঝি" এর শেষের মত লেগেছে এবং শেষ টা কিছুটা অনুমেয় ছিল।
আহমদ ছফার প্রথম দিকের লেখা হিসেবে দুর্দান্ত একটি উপন্যাস।
Profile Image for Mutahir Sujon.
1 review5 followers
Read
November 13, 2019
বেদনাবিধুর জীবনালেখ্য।
#গ্রামবাংলা
Displaying 1 - 30 of 52 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.