Jump to ratings and reviews
Rate this book

প্রাণনাথ হৈও তুমি

Rate this book
করতালতলীর ধুলটে নীলমাধবের মন্দিরের ভিতর ভক্তিতে গাইতে গাইতে নীলমাধবে বিলীন হয়ে গেল প্রাণনাথ গোঁসাই। বাইরে ওকে গ্রেফতারের জন্য ছদ্মবেশে অপেক্ষারত ইংরেজ পুলিশ হতবাক। হতবাক ধুলটে উপস্থিত তিন হাজার ভক্ত। জলজ্যান্ত মানুষটা মন্দিরের ভিতর থেকে ভোজবাজির মত হাওয়ায় মিলিয়ে গেল? এও কি সম্ভব?

বাঙালির হারিয়ে যাওয়া গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে খুঁজে খুঁজে বের করে আনে প্রীতম বসুর বুদ্ধিদীপ্ত গবেষণা। তারপর লেখক বাংলার সেই বিস্মৃতপ্রায় মহান অতীতের সঙ্গে পাঠকের পরিচয় করিয়ে দেন এক কল্পকাহিনীর মাধ্যমে। এভাবে একের পর এক সৃষ্টি করে চলেন “ছিরিছাঁদ”, “পাঁচমুড়োর পঞ্চাননমঙ্গল”, “চৌথুপীর চর্যাপদ”, “কপিলাবস্তুর কলস” এর মত জনপ্রিয় উপন্যাস যা বিদগ্ধ পাঠকসমাজে আলোড়ন জাগিয়ে হয়েছে বহুল সমাদৃত।

সেরকমই এক গভীর গবেষণাজাত কল্পকাহিনী “প্রাণনাথ হৈও তুমি”। এ এমন এক উপন্যাস যা বাঙালিকে নিজের গৌরবপূর্ণ ঐতিহ্যের সম্বন্ধে পরিচিত হওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করে। বাঙালি পাঠক পাঠিকাদের করে মাতৃভাষার জন্য গর্বিত ।

415 pages, Unknown Binding

Published January 1, 2022

11 people are currently reading
209 people want to read

About the author

Pritam Basu

11 books75 followers

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
82 (67%)
4 stars
30 (24%)
3 stars
9 (7%)
2 stars
1 (<1%)
1 star
0 (0%)
Displaying 1 - 30 of 32 reviews
Profile Image for Shuk Pakhi.
512 reviews305 followers
May 13, 2022
‘জীবনে মরণে জনমে জনমে প্রাণনাথ হৈও তুমি’

আহা না জানি সম্পর্কের কতটা গভীরতা থাকলে এমন ব্যাকুলতা নিয়ে একজন মানুষ আরেকজনের জন্য এভাবে বলতে পারে। প্রেম, থ্রিলার, মিস্ট্রি, ইতিহাস, বাঙালি ঐতিহ্য সব মিলে মিশে গেছে বইটাতে।

বৈষ্ণব পদাবলী সব সময়ই আমার প্রিয়। এইবারে এই বই পড়ে জানালাম কীর্তন সম্পর্কে।
আরো জানার বুঝার আগ্রহ তৈরি হলো।
চমৎকার একখানা বই!
Profile Image for Amin Choudhury.
63 reviews
January 10, 2023
মূল রিভিউ পড়ার আগে কিংবা এই বইটি পড়বেন কিনা ডিসাইড করার আগে প্রথম অধ্যায়ের প্রথম অনুচ্ছেদটি একবার পড়ে নিন।


"প্রাণনাথ কীর্তনীয়া যে সনাতন-কীর্তন আত্মস্থ করে ফেলেছিলো একথা করতালতলীর ঘোর নাস্তিকও সেদিন মানতে বাধ্য হয়েছিল। আর মধুর রসের ভক্তদের তো কথাই নেই, তারা তো যেন অষ্টসাত্ত্বিকভাবে আচ্ছন্ন। মরমীয়া মনোহরসাই কীর্তনে ধুলটডাঙায় উপস্থিত আউল-বাউল-বোষ্টম-বোষ্টমি-সহজিয়া-নেড়ানেড়ি সকল আড়ংদের ভাব-বিহ্বল করে চৈতন্য মহাপ্রভুর মত উদ্দণ্ড নর্তনে বিভোর হয়ে নীলমাধবের মন্দিরের পাথরের পইঠা দিয়ে দালানে উঠে গেল প্রাণনাথ। আর তার পিছনে পিছনে মৃদঙ্গখানা হাওয়ায় দুলিয়ে সঙ্গত দিতে দিতে ঊর্ধ্বপুণ্ড্র ললাটে ছোকরা খুলি ছিদাম বায়েন। ভক্তদের মুহুর্মুহু হরিধ্বনির মধ্যে চিরাচরিত প্রথায় একান্তে হরিনামের জন্য মন্দিরে ঢুকে মন্দিরের কবাট ভেজিয়ে দিল প্রাণনাথ, আর দোরগোরায় দাঁড়িয়ে দাসপ্যারীর দ্রুতচলনে চঞ্চুপুটে একনাগাড়ে মৃদঙ্গে ঝা-দাঘি-নেদা-গেদা-ঝা-দাঘি-নেতা-খি বাজিয়েই চলল ছিদাম। অল্পক্ষণ পরে মন্দিরের ভিতরে ঘন্টা ঢং ঢং করে বাজল, আর তারপর ঘটল সেই ঐশী ঘটনা।"


এই এক অনুচ্ছেদ পড়ে আমি মোটামোটি সিওর ছিলাম ৪০০+ পেজের বইয়ের আগামাথা কিছুই বুঝবোনা আমি। তবুও কিজন্য জানি পড়তে শুরু করলাম। আর বাকিটা আমি আমার জীবনে ভুলবোনা।


গল্পের শুরু হয় এক প্রফেসরের বাংলা ক্লাসে লেকচার দেয়ার মাধ্যমে। পড়াশুনার ফাঁকে প্রফেসর সাহেব স্টুডেন্টদের প্রাণনাথ কীর্তনীয়ার ঐশী ঘটনা বর্ণনা করছিলেন।


"ঘন্টাধ্বনি শুনে ছিদাম বায়েন দ্রুত মূর্ছনের বোলে সমাপ্তি দিয়ে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকল এবং তৎক্ষণাৎ ছিটকে বেরিয়ে গেল। ছিদামের বিস্ফারিত নেত্র।

ছিদাম চেঁচিয়ে বলল,'প্রাণনাথ গোঁসাই ভিতরে নেই।'

'নেই মানে?' চৈতন্যপুখুরীর পাড়ের বিশিষ্ট মানুষদের সামিয়ানার নিচ থেকে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে ড্যানিয়েল সাহেব চেঁচিয়ে উঠেছিল। 'হোয়াট ননসেন্স!'

দু'হাত তুলে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিদাম আবিষ্ট কন্ঠে বলল,'প্রাণনাথ কীর্তনীয়া নীলমাধবের মূর্তিতে বিলীন হয়ে গেছে।"


আজকের দিনের কলেজপড়ুয়া একজন ছাত্রকে এই কথা বিশ্বাস করানো কি সম্ভব যে একজন মানুষ কীর্তন করতে করতে মাধবের বিগ্রহে মিশে গিয়েছেন? স্বাভাবিকভাবেই কেউ বিশ্বাস করেনি এই গল্প। একজন ছাড়া। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার এমএ ক্লাসের পদাবলী বোস। ক্লাসের পরদিনই সে প্রফেসরের বাসায় হাজির হয়। হাতে একটা নোটবুক যাতে আছে একটি বহু পুরাতন ছবি আর সনাতন কীর্তনের প্রথম দুটি লাইন। মাথায় অসংখ্য প্রশ্ন। শুরু হয় এক অসম্ভব অনুসন্ধান। কিভাবে একজন মানুষের পক্ষে সনাতন কীর্তন আত্মস্থ করে নীলমাধবে বিলীন হয়ে যাওয়া সম্ভব?


এই বইয়ের রিভিউ করার ধৃষ্টতা আমার নেই, করতেও চাচ্ছিওনা। শুধু বইটা পড়ার পর আমার অনুভূতিগুলো জানিয়ে রাখছি। প্রথমেই গল্পের মূল বিষয়বস্তুর দিকে আলোকপাত করি। কীর্তন বলতে এখন আমরা কি বুঝি? আমার কাছে অন্তত কীর্তন বলতে কলি মিলিয়ে ছড়ার মতন গান যেখানে হয়তো উচ্চস্বরে বলা হরিবোল হরিবোল শব্দগুলোই কানে ঢুকবে। অথচ কি গৌবরময় ইতিহাস ছিলো বাংলার কীর্তনের। স্বয়ং রবিঠাকুর পর্যন্ত আপ্যায়ন করে কীর্তনিয়াদের কীর্তন শুনতে মুখিয়ে থাকতেন। ভাবা যায়! এই কীর্তন নিয়ে কত কত মিথ আর লোককথা বাঙলার প্রতিটি আনাচেকানাচে লুকিয়ে যে আছে! বইয়ে প্রতিটি পাতায় বা অধ্যায়ে নয়, প্রতিটি বাক্যেই বাঙলার কীর্তনের গৌরবান্বিত ইতিহাসকে যেনো নতুন করে জানা যায়।


কীর্তন বইয়ের মূল উপজীব্য হলেও বাঙালির আত্মবিস্মৃতি বেশ ভালোভাবেই এসেছে পুরো বইজুড়ে। আমাদের নিজেদের জিনিস নিয়ে কোনো আগ্রহ না থাকলেও পরদেশী বিশেষ করে পশ্চিমাদের নিয়ে, তাদের সংস্কৃতি নিয়ে মাতামাতি দেখতে অবশ্য গভীর চিন্তাভাবনার দরকার হয়না। খালি চোখেই দেখা যায়। অথচ ওরা কি নিজেরদের ইতিহাস ভুলে গেছে? আমরাই কেনো একটু সেকেলে কিছু হলেই সেটা বাতিল মালে ফেলে দিই? উদাহরণস্বরূপ লেখক টেনে এনেছেন শেক্সপিয়ারের রোমিও-জুলিয়েটকে। মর্ডান যুগেও যখন পশ্চিমাদের কাছে সমান গ্রহণযোগ্য রোমিও-জুলিয়েট তখন সমসাময়িক গোবিন্দদাস আমাদের কাছে মান্ধাতার কবি। ভক্তি আন্দোলনের প্রাণপুরুষ শ্রীচৈতন্যমহাপ্রভুর ভক্তিভাবে বিভোর হয়ে যাবার রূপকে কটাক্ষ করে বলি আমরা ন্যাকা চৈতন্য। আচ্ছা আপনি জানেন কি রাধেকৃষ্ণ জপে রাধার নাম কেনো আগে আসে? কিংবা বহুল চর্চিত চলতি কথা 'ঢপের কেত্তন' কোত্থেকে এসেছে? এরকম বহু চিন্তার উদ্রেগকারী প্রশ্ন উঠে এসেছে বইটিতে।


তাহলে কি শুধুই ইতিহাস চর্চা? একদমই না। ইতিহাস এসেছে মূল গল্প সাপোর্ট করতে। সেই হিসেবে ইতিহাস আশ্রিত থ্রিলার বলা যেতে পারে যেখানে রোমান্টিসিজমে ভরপুর কিছু অংশও ছিলো। গ্রাম্য মন্দিরাদেবীর পার্সোনালিটি এতো স্ট্রং! আধুনিকা যেকোন বধূর চেয়েও ঢের ভালো লেগেছে আমার কাছে। কোমড়ে শাড়ি বেঁধে উঠোন ঝাড় দেয়া গ্রাম্যবধূর সৌন্দর্যের বর্ণনা কিংবা সদ্য স্নান করা ভেজা চুলে মাধবের ভক্তিশ্লোক গাওয়া মন্দিরা শুধু প্রাণনাথ না, ঝড় তুলতে পারে অনেকের মনেই।


এবার আসা যাক বইয়ের মূল জনরায়। পশ্চিমবঙ্গের থ্রিলার বই নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি তেমন ইতিবাচক কিছুনা। কিছুটা ভালো লেগেছিলো দেবতোষ বাবুর "বিন্দুবিসর্গ"। কিন্তু অতোটুকুই। তবে এই বইটা ডিফ্রেন্ট। লেখক এতো সুন্দর করে গল্প সাজিয়েছেন যে ভাষা তুলনামূলক কঠিন হলেও সাংঘাতিক রকমের পেজ টার্নার পুরো বইটা। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো এন্ডিং। কিভাবে প্রাণনাথ কীর্তনিয়া নীলমাধবের বিগ্রহে লীন হলো? এতো স্যাটিসফাইং এন্ডিং অনেকদিন পড়িনি/দেখিওনি। বইয়ের পাতায় পাতায় হয়তো টুইস্ট বা থ্রিল নেই কিন্তু কি যেনো একটা আছে যা পরবর্তী অধ্যায় পড়তে বাধ্য করে।


বই তো কতই পড়ি। সামনেও পড়বো। কিন্তু কিছু কিছু বই মনে গেঁথে যায়। কিছু কিছু বইয়ে এমন কিছু চরিত্র থাকে যেগুলো কখনোই ভুলা যায়না। দ্য সানবার্ড পড়ার পর হুই বেন আমন ছিলেন ফিকশনে আমার সবচেয়ে পছন্দের চরিত্র। প্রাণনাথ হৈও তুমি পড়ার পর মন্দিরাদেবী সেই জায়গায়। এতো স্নিগ্ধ সুন্দর মানুষ হয় সত্যিই? আহা যদি হতো!


প্রাণনাথ হৈও তুমি

প্রীতম বসু

৪০০ রূপি
Profile Image for Agnibha Kundu.
Author 1 book2 followers
March 5, 2022
বই���়ের নাম: প্রাণনাথ হৈও তুমি
লেখক ও প্রকাশক​: প্রীতম বসু
দাম​: ৪০০ টাকা
পৃষ্ঠাসংখ্যা: কমবেশি ৪১৫


বাজারে বেশ গুজব রটেছে যে এই বইটা নাকি শ্রীচৈতন্যমহাপ্রভুর জীবন অবলম্বনে লেখা। ওসব বাজে গুজব দূরে হঠিয়ে বইটা হাতে তুলে নিন। বাংলা সাহিত্যের প্রাণপ্রতিষ্ঠায় কিভাবে কীর্তন ও বৈষ্ণব পদাবলী রচয়িতারা তাঁদের অন্তরের সকল সুধা মানুষের জীবনে ঢেলে দিয়েছেন তারই প্রকাশ ঘটেছে লেখকের অসা��ারণ লেখনীতে দুর্ধর্ষ একটা থ্রিলারের মধ্য দিয়ে। সেখানে মাপা ছকে মিলেমিশে গিয়েছে একাল ও সেকালের সকল ঘটনাপ্রবাহ।
স্বাধীনতার কিছু বছর আগে করতালতলী গ্রামে আয়োজিত ধুলট উৎসবে নীলমাধবের মন্দিরে সনাতন কীর্তন গেয়ে হাওয়ায় বিলীন হ​য়ে যান প্রাণনাথ কীর্তনীয়া ওরফে বিপ্লবী প্রাণনাথ বসু। কিভাবে?
তারও কিছু বছর আগে সনাতন কীর্তন রচ​য়িতা সনাতন চোরও একইভাবে অদৃশ্য হ​য়ে গিয়েছিলেন। প্রাণনাথের পর অদৃশ্য হ​য়ে যান রায়বাহাদুর-অভিলাষী জমিদার অখিলরঞ্জনও। ব্রিটিশ পুলিশ তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কোন কূল-কিনারা পেতে অসমর্থ হ​য়।

কলেজের প্রফেসর নাইট্রোজেনের লেকচারে প্রাণনাথের অন্তর্ধানসহ বাংলা সাহিত্যে কীর্তনের প্রভাবের কথা জেনে উৎসাহী ছাত্র পদাবলী আগুয়ান হ​য় এই রহস্যের সমাধানে। এরপর পুরোনো এবং নতুন- দু'টি টাইমলাইনের অনেকগুলি চরিত্রের বুদ্ধিদীপ্ত বুননের পাশাপাশি রহস্যের জাল একটু একটু করে খুলতে থাকে বৈষ্ণব পদাবলী ও কীর্তনের ইতিহাসচর্চার মধ্য দিয়ে। কতশত কবিতা ও ব্রতকথার যে পুনঃপ্রাণপ্রতিষ্ঠা লেখক এই বইতে করেছেন তা মুগ্ধ করে দেবে সবাইকে। শেষ পর্যন্ত এই অন্তর্ধান রহস্যের সমাধান কি প্রেমরস ও ভক্তিরসের মধ্যে দিয়ে সম্ভব হল​? অহিংস ও সহিংস বিপ্লবী আন্দোলনের মধ্যে কোন সমন্ব​য় কি গ​ড়ে দিয়ে যেতে পেরেছিল প্রাণনাথ কীর্তনীয়া?

প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে হলে তো একটাই রাস্তা!

লেখকের গবেষণার কতটা বিচ্ছুরণ এই লেখায় ফুটে উঠেছে তা এই বিলো-মিডিওকার পাঠকের পক্ষে ক​য়েক লাইনে লেখা কার্যত অসম্ভব! লেখা যত শেষের দিকে এগিয়েছে, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চুম্বকীয় আকর্ষণ। তখন বইটা শেষ না করে হ​য়তো অনেক পাঠকই উঠতে পারবেন না। কবিতাপ্রেমী, ইতিহাসপ্রেমী, থ্রিলারপ্রেমী, গুপ্তধন কিংবা প্রেমের গল্পপ্রেমীদের জন্য এই বই অবশ্যপাঠ্য।

৪১৫ পাতার বইতে একটাও বানান ভুল নজরে প​ড়েছে বলে মনে হয় না। বইয়ের বাঁধাই, পৃষ্ঠার মান, প্রচ্ছদ এবং লেখনীর প্রেক্ষিতে দাম এক্কেবারে যথাযথ। ভবিষ্যতে যদি কোনদিন বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস নিয়ে একটু-আধটু প​ড়ার ইচ্ছে জাগে, তাহলে লেখক প্রীতম বসুর অনেকটা কৃতিত্ব প্রাপ্য আমার তরফ থেকে। লেখককে অনেক শ্রদ্ধা।
Profile Image for DEHAN.
275 reviews86 followers
July 25, 2024
জায়গাটার নাম সুন্দর । করতালতলী । করতালতলীর রাধা কৃষ্ণের মন্দিরটা ধুলট (সংকীর্তনের সময় ভাবাবেশে ধুলায় গড়াগড়ি) এর জন্য বিখ্যাত । দুনিয়ার নানা জায়গা থেকে কীর্তনীয়রা এখানে ধুলটের সময় কীর্তনে অংশগ্রহন করতে জমায়েত হয় কিংবা হতো । কালের পরিক্রমায় এখন আস্তে আস্তে সেসব অতীত হয়ে গেছে । করতালতলীর বাসিন্দারা বর্তমানে আর কীর্তনে ইন্টারেস্টেড নয় । যেকোন ধরনের অনুষ্ঠানে নামসংকীর্তনের চাইতে হিন্দি গান বেশি এঞ্জয়েবল এবং ড্যান্সায়েবল ; অন্তত করতালতলীর ইয়ং জেনারেশনের তাই দাবী। তাদের যুক্তি - এই পুরানো মন্দির টন্দির কোন কাজের না । মন্দির ফেলাইয়া এই বিশাল জায়গায় রিসর্ট বানানো হোক । তাতে অঞ্চল আরো আধুনিক হবে, খ্যাতিসম্পন্ন হবে , পশ পিপোল রা আমোদ করতে আসবে সেই আমোদ এর প্রসাদ গ্রামের ইয়ং লোকজন ও পাবে ।
তা রিসর্ট হয়েই যেত কিন্তু বাগড়া দিলেন ওল্ড জেনারেশন ।
স্থানীয় কীর্তন কোম্পানির লিড ভোকালিস্ট এবং মন্দিরের জমির দলিল এর মালিক গোবিন্দ অধিকারী প্রস্তাব মানতে নরাজ।
এখানে রিসর্ট করলে কীর্তনের কি হবে ? এতদিনের সংস্কৃতি ঐতিহ্য ধুলট কি চিরতরে ধুলাচাপা পড়ে যাবে ?
কিন্তু তা তো হতে দেওয়া যায় না । একটা কিছু করতেই হবে ।যাই হোক জমি সে বেঁচবে না। মন্দির কোনমতেই ভাঙতে দেওয়া যাবে না ।
এরই মধ্যে কীর্তন নিয়ে আগ্রহী কলকাতার এক ছাত্র এই করতালতলীতে এসেছিলো সেইসময়ের অনেক নামকরা খোলবাদক ‘’ছিদামের’’ কাছ থেকে জানতে এই বিশেষ মন্দির সম্পর্কে । সে কলকাতা থেকে শুনে এসেছে প্রাণনাথ নামে এক ওয়ান্টেড স্বদেশী যুবক নাকি কীর্তন করতে করতে এই মন্দিরে ঢুকে পড়ে এবং গন উইথ দ্য উইন্ড হয়ে যায় । ইংরেজ রা গোরু খোঁজা খুঁজেও তাকে পায় নাই ।
এখন প্রশ্ন হলো কলকাতার ছাত্রের মন্দিরের রহস্য জানতে এই অজপাড়াগায়ে এসে এখানকার ‘’বাঙালীর ঐতিহ্য বাঁচাও , হিন্দি গানে নাচা ইয়ং শালাদের বুঝাও’’ ঝামেলাতে জড়িয়ে পড়াটা নিতান্তই কাকতালীয় নাকি পূর্ব পরিকল্পিত ?
Profile Image for Bratik Bandyopadhyay.
20 reviews
October 13, 2022
করতালতলী নামক এক গ্রামের ধুলটে (সংকীর্তনের পর ভাবাবেশে ধুলায় গড়াগড়ি) নীলমাধবের মন্দিরের ভিতর সনাতন কীর্তন ভক্তিতে গাইতে গাইতে নীলমাধবে বিলীন হয়ে গেলেন প্রাণনাথ গোঁসাই। বাইরে তাঁকে গ্রেফতারের জন্য ছদ্মবেশে অপেক্ষারত ইংরেজ পুলিশ এবং ধুলটে উপস্থিত তিন হাজার ভক্ত হতবাক এই ঘটনা এবং তার আকস্মিকতায়। মন্দিরের ভেতরে এবং বাইরে বিস্তর খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর কোনো হদিস পাওয়া গেল না। একজন জলজ্যান্ত মানুষ মন্দিরের ভিতর থেকে কোন ম্যাজিকের মাধ্যমে হাওয়ায় মিলিয়ে গেল? এ কি করে সম্ভব? কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙলার এম.এ ক্লাসের গেস্ট লেকচারার এবং প্রবীণ ঐতিহাসিক ডঃ নীতিশ নাগ (নাইট্রোজেন স্যার নামেই তিনি বিখ্যাত) এই গল্পটি প্রতি বছরই তাঁর ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের শোনান। এই উপন্যাসের সূত্রপাত এই গল্পের মধ্য দিয়েই।

নাইট্রোজেন স্যারের এই গল্পের সূত্র ধরে আগ্রহী হয়ে ওঠে ক্লাসের এক ছাত্র - পদাবলী বোস, তার কারণ এই সনাতন কীর্তনের কথা সে তার ঠাম্মার নোটবইতে দেখেছে, সেখানে পাতার কিছু অংশ ছেঁড়া এবং সাথে এক সুদর্শন পুরুষের ছবিও সে দেখেছে। অথচ নাইট্রোজেন স্যার বলছেন সেই সনাতন কীর্তন হারিয়ে গেছে, তা কি করে সম্ভব? সেই জিজ্ঞাসা নিয়েই সে ছুটে যায় নাইট্রোজেন স্যারের বাড়িতে, তারপর সেখান থেকে শুরু হয় তার অনুসন্ধান, প্রাণনাথের অন্তর্ধান রহস্যের এবং একইসাথে হারিয়ে যাওয়া সনাতন কীর্তনের।

প্রাণনাথের অন্তর্ধান রহস্য এবং হারিয়ে যাওয়া সনাতন কীর্তনের খোঁজে করতালতলী গ্রামে এসে হাজির হয় পদাবলী। পদাবলীর এই রহস্য সমাধানের যাত্রাপথে বেশ কিছু নতুন চরিত্রের আগমন ঘটে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য চরিত্রগুলি হলো গোবিন্দ অধিকারী, ছিদাম বায়েন,
মৃদঙ্গম এবং মন্দিরা। গল্পের প্রয়োজনে বেশ কিছু পার্শ্ব চরিত্রের অবতরণ ঘটিয়েছেন লেখক এবং প্রতিটি চরিত্রই তাঁর অসামান্য লেখনীর মাধ্যমে প্রাসঙ্গিক এবং জীবন্ত হয়ে উঠেছে এই উপন্যাসের ছত্রে ছত্রে।
চরিত্রগুলির মধ্যে কিছু বর্তমান সময়কালের এবং কিছু অতীতের। করতালতলী গ্রাম এবং সেই গ্রামে অবস্থিত নীলমাধবের মন্দিরকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে এই উপন্যাসের কাহিনি। স্বচ্ছন্দ গতিতে এই গল্পের কাহিনি কখনো বর্তমান থেকে অতীতে এবং কখনো অতীত থেকে বর্তমানে ঘোরাফেরা করেছে। কিছু ক্ষেত্রে গল্পের প্রয়োজনে তা এসেছে শহর কলকাতায়।
পদাবলী কি শেষ পর্যন্ত এই রহস্যের সমাধানে সফল হলো? কেমন ছিলো তার যাত্রাপথ, এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বইটি অবশ্যই পড়তে হবে।

এই উপন্যাসের নানা অংশে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে উঠে
এসেছে ব্রিটিশ শাসনের বিরূদ্ধে স্বদেশী আন্দোলনের কথা, বাঙলার সশস্ত্র বিপ্লব আন্দোলনের নানা প্রসঙ্গ।
বাঙলার কীর্তন গানের গৌরবময় অধ্যায়ের অসাধারণ ইতিবৃত্ত লেখক তুলে ধরেছেন এই বইটিতে, এবং তা লেখকের সুদীর্ঘ অধ্যয়ন এবং গবেষণার ফসল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আজকের এই সর্বাত্মক লঘুতার যুগে, সাধারণের কাছে কীর্তন মানে হয়তো উচ্চৈস্বরে "হরিবোল" হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু আসলে পদাবলী কীর্তন অপরূপ ভক্তিরসের গান এবং যার আধার ভারতীয় ধ্রুপদ সঙ্গীত, সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে এই বইটিতে।
আধুনিক যুগে গোটা বিশ্বজুড়ে ব্যান্ড সঙ্গীতের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা, একটু বিশ্লেষণ করলে বা ভাবলে আমরা বুঝতে পারবো যে তৎকালীন যুগের পদাবলী কীর্তন কিন্তু এই আধুনিক ব্যান্ডেরই আদি রূপ। দুর্ভাগ্যবশত তার কোন সমাদর আমরা সেরকম ভাবে করিনা আজকের দিনে। একটা চলতি কথা শোনা যায়, "ঢপের কেত্তন", এই ঢপ আসলে পদাবলী কীর্তনেরই এক ধারা। কীর্তনের এরকম আরো অনেক ধারা আছে। তাদের উৎপত্তি এবং ইতিহাস নিয়ে মনোজ্ঞ আলোচনা রয়েছে এই বইটিতে।
অস্পৃশ্যতা-বিরোধী ভক্তি আন্দোলনের প্রাণপুরুষ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু, তাঁর সেই ভক্তিভাবে বিভোর হয়ে যাবার রূপ, তা আজকের দিনে পর্যবসিত হয়েছে চলিত কথায় এবং ব্যঙ্গ করে 'ন্যাকা চৈতন্য' নামে। সত্যিই আমরা জাতি হিসেবে কতটা আত্মবিস্মৃত! এই উপন্যাসে, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর কথাও উঠে এসেছে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ভাবে।

উপরের প্যারাগ্রাফটি পড়লে, মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে যে এই বইটি কি ইতিহাসের বই! না, প্রীতম বসু কোন ইতিহাসের বই লেখেননি। এই উপন্যাসটিকে ইতিহাস-নির্ভর বা ইতিহাস সংলগ্ন বলা যেতেই পারে। কিন্তু কখনোই তা ইতিহাস-সর্বস্ব নয়। ইতিহাস-সর্বস্ব হওয়ার চেয়ে সাহিত্যগুণান্বিত হয়ে ওঠার তাগিদ যথেষ্ট পরিমাণে বিদ্যমান।

প্রীতম বসুর দীর্ঘ গবেষণার ফসল "প্রাণনাথ হৈও তুমি"। বাঙালীর বিস্মৃতপ্রায় গৌরবোজ্জ্বল মহান অতীতের সাথে এক ইতিহাস নির্ভর কল্পকাহিনীর মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্মের পরিচয় করিয়ে দেবার এক অসামান্য বুদ্ধিদীপ্ত প্রয়াস তাঁর এই উপন্যাস "প্রাণনাথ হৈও তুমি"।

এই উপন্যাসটিকে কোনো বিশেষ পর্যায়ভুক্ত করতে আমি পারিনি। এই উপন্যাসে ষড়যন্ত্র, রহস্যের জট এবং তার সমাধান, এডভেঞ্চার সব কিছু আছে। কিন্তু এই সব কিছুকে ছাপিয়ে আমার কাছে যে বিষয়টি মূখ্য বলে মনে হয়েছে, তা হলো এই উপন্যাসের অন্তনির্হিত প্রণয় ব্যাকুলতা, প্রেম এবং ভক্তি। আমার ব্যাক্তিগত মতে এটি এক অসামান্য প্রেমের উপাখ্যান, যেখানে প্রেমাস্পদের জন্য আত্মত্যাগ, তাকে না পাওয়ার মধ্যেই তাকে জন্মজন্মান্তরের জন্য আপন করে নেওয়ার যে আকুল প্রচেষ্টা তা এক কথায় অসাধারণ। সব মিলিয়ে শাশ্বত প্রেমের এক অপূর্ব চিত্র এঁকেছেন লেখক তাঁর এই উপন্যাসটিতে । এই উপন্যাস শেষও হয়েছে এক অসামান্য উক্তির মাধ্যমে -
" জীবনে মরণে জনমে জনমে প্রাণনাথ হৈও তুমি "।
Profile Image for Dishari Sinha.
315 reviews6 followers
October 15, 2024
বিপ্লব, প্রেম, বিরহ, সাহসীকতা, দুঃখ, সুখ আর দৃঢ়তা সবকিছুর সংমিশ্রণ এই বই। তবে, পড়তে পড়তে অতিরিক্ত কীর্তনের কথায় মাঝে মাঝে একটু খেই হারিয়ে যায়। কী এবং কেন মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। লেখকের লেখনীর গুণেই বইটা শেষ করতে পেরেছি। কিন্তু প্রীতম বাবুর থেকে চাহিদা আরেকটু বেশি। সবই আছে, কিন্তু কী যেন একটা নেই।

প্রাণনাথ, মন্দিরা আর ছিদাম-এর গল্প যতটা সুখপাঠ্য ততটাই পদাবলীর কাহিনীও, যেন একই তারে দুজনে বাঁধা। সুন্দর উপাখ্যান। মাঝে মাঝে বাঙ্গালী হিসেবে নিজেকে ভাবতেই কষ্ট হচ্ছিল, আমি যে নিজের বাংলার কোন গল্পই জানি না।
Profile Image for Sakkhar  Banerjee.
107 reviews6 followers
June 25, 2023
রিভিউ না, বই পরার পরের উপলব্ধি -
ফাঁপা, অন্তঃসারশূন্য জীবন যাপন করছি...
নিজেকে বাঙালী বলি, অথচ বাংলার কিছুই জানি না, ইতিহাস জানি না, ভূগোল জানি না, বিজ্ঞান, সাহিত্য কিছুই জানি না । কাচের টুকরোকে হীরে ভেবে আমোদ করি।

লেখক মহাশয়কে প্রণাম ও ধন্যবাদ এই অধ্যায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য।
Profile Image for Sutapa Roy.
8 reviews
March 5, 2022
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের অধীনে বাংলায় স্বদেশী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে বৈষ্ণব সমাজ এবং কীর্তন এর গুরুত্ব এবং ভূমিকা নিয়ে লেখা অসাধারণ একটি উপন্যাস। এক অদ্ভুত অসাধারণ আমেজ রেখে যায় গল্পটি শেষ হওয়ার পর। অবশ্য পাঠ্য।
Profile Image for Arnab Pal.
51 reviews9 followers
February 22, 2022
এইভাবে ঝামা ঘষা থাকুক চলতে।
প্রীতম বাবু থাকুন গল্প বলতে॥
11 reviews
July 9, 2023
বইটা শেষ করলাম ১৫ মিনিট আগে, কিন্তু চোখে জল আসা থামছে না। কীসের জন্য এত কষ্ট বুঝতে পারছি না, বইটার চরিত্রদের জন্য নাকি বইতে লেখক যে কীর্তন আর ভক্তির কথা বলে গেছেন সেগুলোর জন্য। কিন্তু মনটা এক ভয়ানক বিষাদে আচ্ছন্ন। ইচ্ছে করছে বইটা আবার প্রথম থেকে শুরু করি। একথা দ্বিধাহীন ভাবে বলতে পারি যে, প্রীতম বসুর কাছে গোটা বাঙালি জাতি ঋণী হয়ে থাকবে। এই বই বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের এক মাইলফলক। আর উপন্যাস হিসেবে এটাকে আমি আমার পড়া যাবতীয় যা কিছুর একেবারে ওপরেই রাখব। রাতের বেলা এত কথা লিখতাম না, কিন্তু কাউকে এগুলো বলতে ইচ্ছে করল। তাই লিখে রাখছি এখন।
1 review
March 16, 2022
কি এ মহাসুখে
ভুলি সব দুখে
হৃদি উঠে ব্যাকুলিয়া

আকুলে পরাণে
পশিয়া মরমে
কানের ভিতর দিয়া

চোখ ভাসে জলে
তবু কোন ছলে
ঠোঁটে লেগে থাকে হাসি

মন যায় ফিরে
যমুনার তীরে
শুনিতে মোহন বাঁশি

গরবে এ মন
ভরে অনুক্ষণ
তবু জ্বালা ধরে বুকে

এমন রতনে
রাখিনি যতনে
উড়ায়ে দিয়াছি ফুঁকে

ভবের বাজারে
ভুলিয়া নিজেরে
বেচে দিছি অবহেলে

এ ঐশ্বর্যে
কিমাশ্চর্যে
দিয়েছিনু পথে ফেলে

ওহে দয়াময়
করো নিরাময়
মনের গভীরে ক্ষত

ভনে এ চারণ
করো আহরণ
পদাবলী পাও যত
Profile Image for Rihan Hossain.
109 reviews2 followers
November 21, 2022
কি চমৎকার লেখা প্রীতম বসুর!
বাঙ্গালি সংস্কৃতি, কীর্তনগানের এত সোনালী ইতিহাস, অথচ প্রীতম বসুর আগে কেউ লিখলো না!
হ্যাটস অফ!

"জীবনে মরণে জনমে জনমে প্রাণনাথ হৈও তুমি"
Profile Image for Tamalika Manna.
31 reviews3 followers
December 17, 2023
"জীবনে মরণে জনমে জনমে প্রাণনাথ হৈও তুমি " -
খুব প্রিয় একটা বই হয়ে রইবে।
Profile Image for Abhilash Pal.
5 reviews2 followers
November 6, 2024
অসাধারণ লেগেছে। রুদ্ধশ্বাসে পড়িনি, পড়লে ইনজাস্টিস করা হতো। পড়��ছি ধীরে ধীরে, আস্বাদন করে, কোনো ভালো চা অথবা ভালো সিঙ্গেল মল্টের ন্যায় ভালবেসে।
18 reviews1 follower
June 15, 2023
গ্রন্থ – প্রাণনাথ হৈও তুমি
লেখক – প্রীতম বসু
প্রকাশক – প্রীতম বসু
মুদ্রিত মূল্য- ৪০০
জীবনে মরণে জনমে জনমে প্রাণনাথ হৈ তুমি
তানসেনের নাম শুনেছেন, নরোত্তম ঠাকুরের নাম শুনেছেন, না তো, আমিও শুনিনি, এনাদের দুজনেরই সঙ্গীতের তালিম হয়েছিলো হরিদাস স্বামীর কাছে। তানসেন যেমন ধ্রপদ সঙ্গীতকে এক অন্যতম উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন, তেমনই শ্রী নরোত্তম ঠাকুর বাংলার কীর্তনে ধ্রপদ প্রভাবিত এক নতুন ঘরানার সৃষ্টি করেন, যার নাম গড়ানহাটি। কি গড়ানহাটি নামটা প্রথম শুনছেন তো, আমিও তাই, তাহলে শুনুন কীর্তনেরও নাকি ঘরানা হয়, তাও একটি দুটি নয়, পাঁচ পাঁচটি ঘরানা আছে কীর্তনের, সেগুলি হলো – গড়াণহাটি, মনোহরসাই, রেনেটি, মন্দারণী আর ঝাড়খণ্ডী। তারপর কীর্তনের মধ্য নাকি তাল থাকে সেগুলি হলো - আড়, দোজ, যতি, শশীশেখর, গঞ্জন, পঞ্চম, রূপক, সম – আটটি তাল। এগুলিও শোনেননি , আচ্ছা, অসুবিধা নেই, গীতগোবিন্দের নাম তো শুনেইছেন নিশ্চই, ওই যে জয়দেবের লেখা হ্যাঁ হ্যাঁ এবারে ঠিক ধরেছেন, আচ্ছা গীতগোবিন্দের দ্বাদশ- অধ্যায়ের নাম কি বলুন তো, জানেন না তো, জানতাম পারবেন না, শুনুন - সামোদ, দামোদর, অক্লেশ, কেশব, মুগ্ধ মধুসূদন, স্নিগ্ধ মধুসূদন, সাকাঙ্ক্ষ পুণ্ডরীকাক্ষ, ধৃষ্ট বৈকুণ্ঠ, নাগর নারায়ণ, বিলক্ষ লক্ষীপতি, মুগ্ধ মুকুন্দ....- গীতগোবিন্দের দ্বাদশ অধ্যায়।
ওপরে যে সকল নাম বললাম সেগুলো আমিও কিচ্ছু জানতাম না, কিন্তু বিশ্বাস করুন উপন্যাসটা পড়ার পর না মনে হচ্ছিল ছিঃ, এগুলো তো জানা উচিত ছিলো একজন বাঙালি হয়ে, যাই হোক আমি এই উপন্যাস পড়ে তো অভিভূত হয়ে আছি আপনিও পড়ুন আমি চাই। এর বেশি স্পষ্ট করে আমি লিখতে পারছি না আর।

বিষয়বস্তু লিখব নাকি লেখকের স্তুতি করব বুঝতে পারছিনা। এমন একটি বিষয় নিয়ে গ্রন্থ যেটা তে আমার বিন্দুমাত্র জ্ঞান নেই। অথচ এখন বইটা পড়ার পর বলতে পারি না আমি কিছুটা হলেও জেনেছি, কিছুটা হলেও শিখেছি। যারা বাংলার ঐতিহ্যকে ভালোবাসেন তারা একবার বইটা হাতে নিয়ে দেখতে পারেন। হতাশ যে হবেন না তার দায়িত্ব আমি নিলাম। যাক এবার বক্তব্যে আশি।
এই গ্রন্থ পড়ার পূর্বে প্রীতম বাবুর চৌথুপীর চর্যাপদ, পাঁচমুড়োর পঞ্চাননমঙ্গল পড়ে ছিলাম, তখন থেকেই প্রীতম বাবুর লেখার ভক্ত। প্রতিটা বইই আমি পিডিএফে পড়েছি, তবে হাতের কাছে পেলে অবশ্যই কিনে রাখব। এটিও আমি পিডিএফে পড়া শুরু করি। রবিবার শুরু করেছিলাম মঙ্গলবারে শেষ করছি, হার্ডলি চার সিটিং-এ ৪১০ পাতার পিডিএফ পড়ে শেষ করার একটা আলাদা আনন্দ কাজ করছে মনের ভিতররে। এতটাই টানটান প্লট ছিলো এই উপন্যাসে যা বাধ্য করেছে আমাকে দ্রুত শেষ করতে।
৪১০ পাতার এই নাতি-বিস্তর উপন্যাসের বিষয়বস্তু বাংলার কীর্তন। হ্যাঁ বাংলার বললাম কারণ এ সম্পদ বাংলার ও বাঙালির নিজস্ব। যারা মোটামুটি প্রীতম বাবুর লেখার সাথে পরিচিত তারা জানেন যে প্রীতম বাবু বাঙলার ঐতিহ্য নিয়ে কতটা গর্বিত, ওনার সমস্ত লেখাতেই বাঙালির ইতিহাস, বাঙালার ধর্ম, বাংলার জ্ঞান-গরিমাকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। এই উপন্যাসও তার ব্যাতিক্রম নয়। প্রাণনাথ হৈও তুমি উপন্যাসের মধ্যে দিয়ে বাংলার কীর্তনের স্বর্ণযুগের সাথে পরিচয় করালেন এবারে, এবং এই কর্মে তিনি সিদ্ধকাম।
পূর্ব উপন্যাসের ন্যায় এখানেও দুটি ভিন্নকালের ঘটনা সমান্তরাল ভাবে এগিয়েছে। একটির সময়কাল স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্নিগর্ভ বাংলা (১৯১০-১৯৩০) আরেক একটি ঘটনা ১৯৯৬ এর কোলকাতা। এখানে দেখানো হয়েছে কীভাবে বাংলার বুক থেকে তার নিজস্ব সম্পদ্ নিজস্ব আবেগ কীর্তন হারিয়ে যেতে বসেছে, এবং তাকে বাঁচানোর প্রাণপন তাগিদ কিছু মানুষের মধ্যে। এক অসম লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে কিভাবে একটি ২১-২২ বছরেরে ছেলে কীর্তনকে বাঁচাতে চাইছে। সেই কীর্তনের গল্পের মোড়কে এসেছে স্বাধীনতা আন্দোলনের এক বিপ্লবীর গল্প। সেখানে আছে প্রেম, বিরহ, সুখ দুঃখ, প্রতিশ্রুতি, অভিমান, আত্মত্যাগ। প্রাণনাথ ও মন্দিরার প্রেম এই উপন্যাসের যেন সর্বশ্রেষ্ঠ উপভোগ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। যখনই তাদের কথা বলেছেন লেখক তখন যেন আরও জীবন্ত হয়ে ধরা দিয়েছে তার লেখনী। তবে সমস্ত উপন্যাস জুড়ে শুধুই বাংলার কীর্তনের গল্প।
যখন লেখক বলছিলেন যে বর্তমানে কীর্তনের যে ধ্বংসপ্রায়তা তার জন্যা আমরা নিজেরাই কি দায়ী নয়, তখন সত্যি বলছি লজ্জিত হয়েছি। আমি অন্তত কীর্তনের বিন্দু মাত্র ভক্ত ছিলাম না, কিন্তু এই উপন্যাস পড়ে একটু হলেও কীর্তন সম্পর্কে আগ্রহ জন্মেছে। কীর্তনের মধ্যেও এত তত্ত্ব থাকতে পারে তা আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে। এত নিগুঢ় তত্ত্ব নিহিত আছে ভাবলেও অবাক লাগছে। বাংলার একান্ত যে সম্পদ কীর্তন তার সম্পর্কে এক নতুন দিক্ খুলে দিতে পারে এই গ্রন্থ।
ওনার লেখার একটা বিরাট বৈশিষ্ঠ হলো ঐতিহাসিক তথ্য, উনি পাতার পর পাতা জুড়ে ইতিহাস বলে চলেন গল্পের ছলে। যেটা অনেকের হয়তো পছন্দ নয়, কিন্ত আমি আবার এই কারণেই ওনার উপন্যাসের ভক্ত। তবে কিছু জায়গায় শুধুমাত্র ইতিহাস বলতে হবে বলেই যেন জোর করে বলানো হয়েছে বলে আমার মনে হয়েছে। সকল চরিত্ররা যেন জীবন্ত মানুষের মতো তিনদিন সাথে ছিলো আমার।
একটি ভালো উপদেশ দিতে পারি যারা পড়বেন তাদের জন্য – দয়া করে পেন খাতা নিয়ে বসবেন, কারণ এতো তথ্যবহুল উপন্যাস যে আপনি যদি তথ্য সংগ্রহ করতে যান মজা পেয়ে যাবেন।
আর একটা কথা না বললেই নয়, সেটা হলো প্রুফ সংশোধন এতটাই সাধনার সাথে করা হয়েছে যে গ্রন্থে কোনও বানানভুল চোখে পড়েনি, এর জন্যও কুর্নিশ ওনাকে।
Profile Image for   Shrabani Paul.
395 reviews24 followers
May 30, 2024
📿📜বইয়ের নাম - প্রাণনাথ হৈও তুমি📜📿
✍🏻লেখক - প্রীতম বসু
📒প্রচ্ছদ - দেবাশিস রায়
💰মূল্য - 400/-

⛳ কি ভাবছেন বইটা কেমন হবে? বইটা কি কেনা যাবে? কী আছে এই বইতে? আসুন দেখে নিই.......

📜🌿~উপন্যাস সম্পর্কে আলোচনা~🌿📜

🍀🪷উপন্যাসের মূখ্য চরিত্রে পদাবলী বোস। ক্লাসে একদিন প্রফেসর নাইট্রোজেন প্রাণনাথ কীর্তনীয়া সম্পর্কিত একটা রহস্যময় গল্প শোনায়.... এবং সনাতন কীর্তন সম্পর্কেও জানায়। সনাতন কীর্তন নাকি হারিয়ে গেছে। এই সমস্ত গল্প শুনে পদাবলী মনে মনে বেশ উত্তেজিত বোধ করে, কারণ ঠাকুমার নোটবইতে সনাতন কীর্তন সম্পর্কে লেখা সে নিজে দেখেছে। পদাবলী ভাবে প্রফেসরের এই গল্পের সাথে কি ঠাকুমার কোনোভাবে যোগাযোগ আছে?

🍀🪷যেহেতু পদাবলী ক্লাসে প্রফেসরকে কিছু বলতে পারেনি, তাই পরদিন সকালেই প্রফেসরের বাড়িতে গিয়ে হাজির হয় পদাবলী। প্রফেসর প্রথমে বিরক্ত হলেও পদাবলীর সমস্ত কথা শোনার পর বেশ কৌতুক বোধ করে। পদাবলী ঠাকুমার নোটবই প্রফেসরকে দেখায়, এবং পদাবলী জানায় যে সে কীর্তন নিয়ে পড়াশোনা করতে চায়। প্রফেসর এতে ভীষণ অবাক হয়। সেই নোটবইতে পুরানো ব্রতকথা গান লিখে রাখা রয়েছে। শেষ পাতায় এসে বিস্ময়ের শেষ থাকে না প্রফেসরের.......
সনাতন কীর্তন (অষ্টতাল) .... পাতার বাকি অংশ ছেঁড়া!
প্রশ্ন উদয় হয়, কে ওই কীর্তনের শেষটা ছিঁড়ে নিয়ে গেছে? আর এই নোটবই ঠাকুমার কাছে এলোই বা কিভাবে?

🍀🪷“প্রফেসর - এই সনাতন কীর্তন আমি বছর চল্লিশ আগে তন্নতন্ন করে খুঁজেছি। না পেয়ে সব আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। এত বছর পর তুমি একটা নতুন সূত্র নিয়ে এলে”...........
এরপর পদাবলী রহস্য উন্মোচনের উদ্দেশ্য পারি দেয় করতালতলীতে............
কিছু প্রশ্ন, একটা কীর্তন মানুষকে কিভাবে অদৃশ্য করে দেয়? এটা কি সত্যিই সম্ভব? “প্রফেসরের সঙ্গে কথা বলে মনে হল ও যে পথে হাঁটতে যাচ্ছে সে পথে প্রফেসর অলরেডি একসময় হেঁটে এসেছেন। কিছু খুলে না বললেও প্রকাশ পেয়ে গেল প্রফেসরের অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর হয় নি। কিন্তু ঠাকুমা-এর মধ্যে জড়াল কীভাবে? আর ঠাকুমা কেনই বা এই সনাতন কীর্তনের ব্যাপারটা চিরজীবন গোপন রাখল? রহস্যটা ভাঙতে হবে”............

🍀🪷করতালতলীতে গিয়ে অনেক বিষয় পদাবলীর কাছে পরিষ্কার হয়, এবং অনেক নতুন নতুন তথ্য উন্মোচিত হয়...... এই সব কথা প্রফেসর এর কাছে বলতে শুরু করলেই, প্রফেসর কেমন করে আগে থেকেই সব জেনে বসে থাকতো। অথচ প্রফেসর এতো কিছু জানা সত্ত্বেও কিছুই বলেনি পদাবলীকে। এই যে প্রফেসর পদাবলীকে এতো উৎসাহ দিচ্ছে, এর পিছনে প্রফেসরের কোনো উদ্দেশ্য লুকিয়ে নেই তো? সমস্ত প্রশ্নের উত্তর মিলবে বইয়ের পাতায়। জানতে হলে অবশ্যই উপন্যাসটি পড়তে হবে!

🍀🪷 বৈষ্ণব পদাবলীর সাহিত্য ও কৃষ্ণ কীর্তনকে লেখক এতো সুন্দর ভাবে ফুঁটিয়ে তুলেছেন যে ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এরকম একটি বই তৈরির পিছনের ইতিহাসটা না জানলে বইটিকে সম্পূর্ণ আত্মস্থ করা যায় না। কতটা কঠিন অধ্যাবসায়ের পরে এমন একটি বইয়ের জন্ম হয়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না! পুরো উপন্যাস ���ুড়ে লেখক প্রত্যেকটি চরিত্রকে সুনিপুণ হাতে বিশ্লেষণ করেছেন। যেটা আমার ভীষণ ভালো লাগেছে। অসাধারণ এই শব্দটি ও বইটির জন্য কম পড়ে যাবে। এতোটাই টানটান উত্তেজনা ভরপুর উপন্যাস যে একবার পড়া শুরু করলে শেষ না করে ওঠা যায় না! এটা তো বলতেই হয় লেখকের লেখনীশৈলী ভীষণ ভালো। সব বয়সের পাঠকই এই বই পড়তে পারে। তবে হ্যাঁ বাংলা সাহিত্যে নিয়ে যারা পড়াশোনা করতে পছন্দ করেন তাদের জন্য তো অনবদ্য একটি বই হতে চলেছে। আমি যেহেতু বাংলা সাহিত্যে নিয়েই পড়াশোনা করি, তাই এই বাংলা সাহিত্যের থ্রিলার আমার কাছে ভীষণ প্রিয়......এই 415 পেজের বইটি আমি মাত্র দুই দিনে শেষ করি!
ঠিক এই ধরনের আরও একটি বইয়ের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে “আগুন পুঁথির পাহাড়” - সিজার বাগচী, সেও একখানা অসাধারণ বই! ঠিক এই ধরনেরই.....
লেখকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার লেখার দীর্ঘায়ু কামনা করি, ভালো থাকবেন।

📌আমি তো বইতে পড়েছি যে বুদ্ধদেব নিজে অনেক পতিতাকে তাঁর ধর্মে আশ্রয় দিয়েছিলেন। পতিতা উদ্ধার বৌদ্ধধর্মে এক মহান পবিত্র কাজ বলে মানা হত!

📌বৈষ্ণব পদাবলী রচয়িতারা বলেছেন- যে প্রেমের পথে বাধা নেই সে প্রেমে তীব্রতা নেই। তাই স্বকীয়ার প্রেমে নাকি বৈচিত্র নেই, আর পরকীয়া প্রেম প্রখর তীব্র!

📥🗒️2024 Book Review ~ 55
যদি এই বইটি পূর্বেই কেউ পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাদের ব্যক্তিগত মতামত জানাবেন। এছাড়াও আমার রিভিউ কেমন লাগছে সেটাও জানাবেন নিচের কমেন্ট বক্সে। যদি কিছু ভুল ত্রুটি হয় সেটাও জানতে ভুলবেননা।
🍀 আবারো দেখা হবে পরের রিভিউতে। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন আর অনেক অনেক বই পড়ুন। 🙂
🙏🏻 !! ধন্যবাদ !! 🙏🏻

#প্রাণনাথ_হৈও_তুমি #প্রীতম_বসু #রিভিউ #গল্প #আলোচনা #পাঠক_পতিক্রিয়া #বইপোকা #উপন্যাস
@highlight
Profile Image for Debolina Chakraborty.
33 reviews16 followers
July 11, 2023
করতালতলীর ধুলটে নীলমাধবের মন্দিরের ভিতর ভক্তিতে গাইতে গাইতে নীলমাধবে বিলীন হয়ে গেল প্রাণনাথ গোঁসাই। বাইরে ওকে গ্রেফতারের জন্য ছদ্মবেশে অপেক্ষারত ইংরেজ পুলিশ হতবাক। হতবাক ধুলটে উপস্থিত তিন হাজার ভক্ত। জলজ্যান্ত মানুষটা মন্দিরের ভিতর থেকে ভোজবাজির মত হাওয়ায় মিলিয়ে গেল? এও কি সম্ভব?
স্বাধীনতার কিছু বছর আগে করতালতলী গ্রামে আয়োজিত ধুলট উৎসবে নীলমাধবের মন্দিরে সনাতন কীর্তন গেয়ে হাওয়ায় বিলীন হ​য়ে যান প্রাণনাথ কীর্তনীয়া ওরফে বিপ্লবী প্রাণনাথ বসু। কিভাবে?
তারও কিছু বছর আগে সনাতন কীর্তন রচ​য়িতা সনাতন চোরও একইভাবে অদৃশ্য হ​য়ে গিয়েছিলেন। প্রাণনাথের পর অদৃশ্য হ​য়ে যান রায়বাহাদুর-অভিলাষী জমিদার অখিলরঞ্জনও। ব্রিটিশ পুলিশ তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কোন কূল-কিনারা পেতে অসমর্থ হ​য়।
কলেজের প্রফেসর নাইট্রোজেনের লেকচারে প্রাণনাথের অন্তর্ধানসহ বাংলা সাহিত্যে কীর্তনের প্রভাবের কথা জেনে উৎসাহী ছাত্র পদাবলী আগুয়ান হ​য় এই রহস্যের সমাধানে। এরপর পুরোনো এবং নতুন- দু'টি টাইমলাইনের অনেকগুলি চরিত্রের বুদ্ধিদীপ্ত বুননের পাশাপাশি রহস্যের জাল একটু একটু করে খুলতে থাকে বৈষ্ণব পদাবলী ও কীর্তনের ইতিহাসচর্চার মধ্য দিয়ে। কতশত কবিতা ও ব্রতকথার যে পুনঃপ্রাণপ্রতিষ্ঠা লেখক এই বইতে করেছেন তা মুগ্ধ করে দেবে সবাইকে। শেষ পর্যন্ত এই অন্তর্ধান রহস্যের সমাধান কি প্রেমরস ও ভক্তিরসের মধ্যে দিয়ে সম্ভব হল​? অহিংস ও সহিংস বিপ্লবী আন্দোলনের মধ্যে কোন সমন্ব​য় কি গ​ড়ে দিয়ে যেতে পেরেছিল প্রাণনাথ কীর্তনীয়া?

প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে হলে তো একটাই রাস্তা!

বাঙালির হারিয়ে যাওয়া গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে খুঁজে খুঁজে বের করে আনে প্রীতম বসুর বুদ্ধিদীপ্ত গবেষণা। তারপর লেখক বাংলার সেই বিস্মৃতপ্রায় মহান অতীতের সঙ্গে পাঠকের পরিচয় করিয়ে দেন এক কল্পকাহিনীর মাধ্যমে। এভাবে একের পর এক সৃষ্টি করে চলেন “ছিরিছাঁদ”, “পাঁচমুড়োর পঞ্চাননমঙ্গল”, “চৌথুপীর চর্যাপদ”, “কপিলাবস্তুর কলস” এর মত জনপ্রিয় উপন্যাস যা বিদগ্ধ পাঠকসমাজে আলোড়ন জাগিয়ে হয়েছে বহুল সমাদৃত।
এই উপন্যাসটিকে কোনো বিশেষ পর্যায়ভুক্ত করতে আমি পারিনি। এই উপন্যাসে ষড়যন্ত্র, রহস্যের জট এবং তার সমাধান, এডভেঞ্চার সব কিছু আছে। কিন্তু এই সব কিছুকে ছাপিয়ে আমার কাছে যে বিষয়টি মূখ্য বলে মনে হয়েছে, তা হলো এই উপন্যাসের অন্তনির্হিত প্রণয় ব্যাকুলতা, প্রেম এবং ভক্তি। আমার ব্যাক্তিগত মতে এটি এক অসামান্য প্রেমের উপাখ্যান, যেখানে প্রেমাস্পদের জন্য আত্মত্যাগ, তাকে না পাওয়ার মধ্যেই তাকে জন্মজন্মান্তরের জন্য আপন করে নেওয়ার যে আকুল প্রচেষ্টা তা এক কথায় অসাধারণ। সব মিলিয়ে শাশ্বত প্রেমের এক অপূর্ব চিত্র এঁকেছেন লেখক তাঁর এই উপন্যাসটিতে । এই উপন্যাস শেষও হয়েছে এক অসামান্য উক্তির মাধ্যমে -
" জীবনে মরণে জনমে জনমে প্রাণনাথ হৈও তুমি "।।
Profile Image for Asif Khan Ullash.
143 reviews8 followers
November 29, 2024
থ্রিলার আমার খুব একটা পছন্দের জনরা না। বস্তুত, গল্পের চেয়ে গল্প বলার ধরণে আগ্রহ বেশি থাকায়, থ্রিলারের থ্রিল আমার পক্ষে উপভোগ করা কঠিন। তাছাড়া, বঙ্গদেশিয় থ্রিলার লেখকদের লেখায় বাংলাদেশ বিষয়টাই বেশিরভাগ সময় থাকে না। এমন কায়দায় তারা লেখেন, স্থান-কাল-পাত্রের নাম পালটে দিলেই সেগুলো যে আদতে কোন বঙ্গসন্তানের লেখা তা বোঝার আর উপায় থাকবে না, এমনই ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিটি সেগুলোর!

৪০০ পাতার একটা থ্রিলার হতে হলে যত বৈশিষ্ট্য দরকার, তার সবই এই বইয়ের আছে- অতীত, বর্তমানের সমান্তরাল টাইমলাইন এবং শেষাংশে দুই টাইমলাইনের সমাপাতন, প্রচুর এক্সপোজিশান ডাম্প, নন্দগোপাল প্রোটাগনিস্ট, শুরুতেই *টাভাঙ্গা টুইস্টের আভাস ইত্যাদি। সাধারণত, মারদাঙ্গা টুইস্টের আভাস দিয়ে শুরু হওয়া বেশিরভাগ বইই সেটা পুল অফ করতে পারে না। গুরু হিচকক তো বলেই দিয়েছেন, “A drama completely based around a twist can’t be regarded as a good drama.

প্রীতম বসু, সে রাস্তায় হাটেননি, শুধু টুইস্ট নির্ভর তাকে হতে হয়নি। পাঠককে ধরে রাখার জন্য তিনি বেছে নিয়েছেন- বাংলা সাহিত্যের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বৈষ্ণব পদাবলীকে। পাঠক যত আগাতে থাকে, মধ্যযুগের সাহিত্য একটু একটু করে নিজেকে মেলে ধরে। সম্ভবত একারণেই, ভালো না লাগার সব উপাদান উপস্থিত থাকার পরেও বইটি ভালো লাগলো। অনেক, অনেকদিন পর কোন থ্রিলার পড়া গেল আর তার চেয়েও বড় ব্যাপার, পড়ার পরে, লেখকের মুন্ডুপাত করতে হলো না!


"
 বঁধু কি আর বলিব আমি।
মরণে জীবনে জনমে জনমে
প্রাণনাথ হৈও তুমি ॥
তোমার চরণে আমার পরাণে
বাঁধিল প্রেমের ফাঁসি।
সব সমর্পিয়া এক মন হৈয়া
নিশ্চয় হইলাম দাসী ॥
ভাবিয়াছিলাম এ তিন ভুবনে
আর মোর কেহ আছে।
রাধা বলি কেহ সুধাইতে নাই
দাঁড়াব কাহার কাছে।
এ কুলে ও কুলে দুকুলে গোকুলে
আপনা বলিব কায়।
শীতল বলিয়া শরণ লইনু
ও দুটি কমল পায়।

- চণ্ডীদাস
"
Profile Image for Preetam Chatterjee.
6,741 reviews356 followers
February 19, 2025
#Binge reviewing my earlier Reads:

এই উপন্যাস আধুনিক বাংলা সাহিত্যের এক উল্লেখযোগ্য সংযোজন। এটি প্রেম, মানবিকতা, আত্ম-অনুসন্ধান এবং সম্পর্কের জটিলতাকে কেন্দ্র করে রচিত এক অনন্য উপাখ্যান। লেখক তার সংবেদনশীল গদ্যভাষা ও গভীর মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে ���াঠকদের এক অনন্য সাহিত্যিক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করেন। উপন্যাসের মূল চরিত্রদের মধ্য দিয়ে লেখক এক জটিল প্রেমকাহিনি বুনেছেন, যেখানে ভালোবাসার পরিপূর্ণতা ও অপূর্ণতা, প্রতীক্ষা ও প্রতারণা, বিশ্বাস ও সন্দেহ পরস্পরের সঙ্গে গাঁথা। মূল চরিত্রের আত্ম-অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে গল্পটি এক ধরণের দার্শনিক মাত্রা পায়। উপন্যাসের নাম থেকেই বোঝা যায়, এটি এক অন্তরের আকুতি—প্রেম ও নির্ভরতাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা সম্পর্কের গভীর অনুসন্ধান। প্রীতম বসুর লেখার অন্যতম প্রধান শক্তি হল তার চরিত্রচিত্রণ। প্রতিটি চরিত্র বাস্তবসম্মত ও প্রাণবন্ত, যাদের অন্তর্দ্বন্দ্ব, আবেগ ও মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েন উপন্যাসের মূল চালিকাশক্তি। প্রধান চরিত্রটির গভীর উপলব্ধি ও আত্মোপলব্ধির মুহূর্তগুলো পাঠককে ভাবতে বাধ্য করে। লেখকের ভাষা পরিশীলিত ও সংবেদনশীল, যা পাঠককে সহজেই আবেগের গভীরে টেনে নিয়ে যায়। সংলাপগুলোর মধ্যে বাস্তবতা ও অনুভূতির স্বতঃস্ফূর্ততা রয়েছে, যা পাঠকের মনে ছাপ ফেলে। বর্ণনার সৌন্দর্য ও কাব্যিকতা উপন্যাসের আবেদনকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

এই উপন্যাস শুধু একটি প্রেমকাহিনি নয়; বরং এটি সম্পর্কের মনস্তত্ত্ব, ব্যক্তির আত্ম-অনুসন্ধান ও মানবীয় অস্তিত্বের গভীর দোলাচলকে তুলে ধরে। বর্তমান সমাজে যেখানে সম্পর্কগুলো দ্রুত পরিবর্তনশীল, সেখানে এই উপন্যাস প্রেমের এক শাশ্বত রূপকে তুলে ধরে, যা একাধারে আধুনিক এবং চিরন্তন।

সামান্য অনুযোগ রেখে যাবো পাঠপ্রতিক্রিয়ায়। যদিও উপন্যাসটি ভাষাগত সৌন্দর্য ও গভীরতায় সমৃদ্ধ, কিছু কিছু জায়গায় প্লটের গতি ধীর মনে হতে পারে। কিছু চরিত্রের আখ্যান আরও বিস্তারিত হলে উপন্যাসটি আরও প্রাণবন্ত হতে পারত। তবে, সংবেদনশীল পাঠকদের জন্য এটি একটি চমৎকার সাহিত্যিক অভিজ্ঞতা।

পরিশেষে এটুকুই বলার, ‘প্রাণনাথ হৈও তুমি’ প্রেম ও আত্ম-অনুসন্ধানের এক অনন্য সাহিত্যকীর্তি। এটি শুধুমাত্র একটি গল্প নয়, বরং পাঠকের হৃদয়ে গভীরভাবে দাগ কেটে যাওয়ার মতো এক আবেগঘন সাহিত্যিক অভিজ্ঞতা। প্রীতম বসুর সংবেদনশীল লেখনী এই উপন্যাসকে বাংলা সাহিত্যের এক মূল্যবান সংযোজন করে তুলেছে।

যারা সম্পর্কের গভীরতা ও মানবিক অনুভূতির সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ পছন্দ করেন, তাদের জন্য এই উপন্যাস অবশ্যপাঠ্য।
Profile Image for Akash Saha.
156 reviews25 followers
October 25, 2025
বইয়ের নাম: প্রাণনাথ হৈও তুমি
লেখক: প্রীতম বসু
রেটিং: ৫/৫


'প্রাণনাথ হৈও তুমি' - প্রথম দর্শনে নাম দেখে মনে হয়েছিল প্রেমের উপন্যাস হবে হয়তো। পরে ফ্লাপের লেখা পড়ে আগ্রহ হলো। বইয়ের মূল কাহিনি কীর্তনগান নিয়ে- তবে নিছক কোনো তথ্যমূলক বা ঐতিহাসিক ঘরনার উপন্যাস না। এক হিসেবে প্রেমের উপন্যাস বললেও ভুল হবে না। ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী প্রাণনাথ থেকে প্রাণনাথ কীর্তনীয়াতে রূপান্তরের গল্প - সাথে আধুনিক সমাজের দুইজন মানুষের নিজের অতীতকে খুঁজে ফেরার চেষ্টা- এই নিয়েই উপন্যাসটি।
গল্পের শুরু হয় বাংলায় অনার্সের ছাত্র পদাবলীর ছোট্ট একটা কৌতুহল নিয়ে- তার ঠাকুমা-মধুরিমার সিন্দুকে রাখা প্রাচীন সনাতন কীর্তনের ছেড়া পাতা ও একটা সাদাকালো ছবি। সাথে যোগ হয় তার ক্লাসে স্যারের বলা প্রাণনাথ কীর্তনীয়ার অন্তর্ধান রহস্য। ধীরে ধীরে সে সন্ধান পায়, করতালির ধুলটডাঙ্গার। সেখানে পরিচয় হয় ছিদাম বায়েনের সাথে- যে ছিল প্রাণনাথের অন্তর্ধানের একমাত্র সাক্ষী। নানা ঘাত প্রতিঘাতে শেষ পর্যন্ত সমাধান হয় সনাতন কীর্তনের সে মিসিং লিংক- এভাবেই এগিয়েছে উপন্যাসের কাহিনি অতীত ও বর্তমান মিলিয়ে।

একসময়ের প্রবল নাস্তিক প্রাণনাথ, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে ফেরারি আসামি হয়ে আশ্র‍য় নেয় তার প্রিয় বন্ধু মৃদঙ্গমের বাসায়, তার শেষ ইচ্ছা পুরন করতে। মৃদঙ্গম নিজেও ব্রিটিশদের অত্যাচারে কারাগারে মৃত্যুবরন করেন। মৃত্যুর সময় সে একটা কথায় বলে, প্রাণনাথকে তার হৃদয়ে খুজতে। আপতদৃষ্টিতে এর অর্থ না থাকলেও এটা ছিল একটা সনাতন কীর্তন রহস্যের মূল চাবি- যা সমাধান করতে যেয়ে প্রাণনাথ করতালতলির ধুলটে ব্রিটিশদের নিশ্ছিদ্র পাহারার মধ্যেই অদৃশ্য হয়ে যায়- সনাতন কীর্তন করতে করতে।
কীর্তনগান বাংলার আবহমান সংস্কৃতির একটা বড় অংশ জুড়ে আছে। বলতে গেলে চৈতন্যদেবের ভক্তিবাদ সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়েছে এই কীর্তনগানের মাধ্যমেই। কীর্তনগানের থিমে যে আস্ত একটা থ্রিলার লিখে ফেলা যায়, তা প্রিতম বসুর এই উপন্যাস না পড়লে বিশ্বাস হতো না। পুরো উপন্যাস জুড়েই রয়েছে কীর্তন গানের প্রতি মায়া, কীর্তন গানের প্রতি প্রেম, তাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা। সব চরিত্রের নাম ও এসেছে কীর্তন থেকেই- মৃদঙ্গম, মন্দিরা, পদাবলী! সাথে আছে কীর্তনের প্রাচীন ইতিহাস, ভক্তিবাদ, বিভিন্ন শাখা উপশাখা- এই প্রাচীন ঐতিহ্য আমরা হারিয়ে ফেলেছি আধুনিকতার নামে।

অন্য রকম এক ভালোলাগার অনুভূতি হলো উপন্যাসটি পড়ে-

❝জীবনে মরণে জনমে জনমে প্রাণনাথ হৈও তুমি❞
Profile Image for Amrita Mukherjee.
5 reviews
March 2, 2023
প্রাণনাথ হৈও তুমি

প্রীতম বসু বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। পড়তে ভালো লেগেছে কয়েকটা ।এটা এড়িয়ে যাচ্ছিলাম ভক্তি রস বেশী ভেবে। পড়ার পর মনে হল আগে কেন পড়িনি।

দুটো কাহিনী পাশাপাশি গেছে। একটা বর্তমান সময় ও অতীতের ঘটনা একসাথে চলেছে, মিলেমিশে একাকার। কীর্তন সম্বন্ধে ধারণা একদম বদলে গেছে। বিভিন্ন পদ, রস নিয়ে মনোরম অথচ সুন্দর আলোচনা করে করে বিভিন্ন তথ্য আছে। কিন্তু info dumping মনে হয় নি কোথাও।

বইটি সামাজিক, কিছুটা রহস্য জিইয়ে রেখে টানটান ভাবে এগিয়েছে। নীলমাধব মন্দির থেকে সনাতন কীর্তন গেয়ে একজন মানুষ অদৃশ্য হয়ে গেলেন। আরো একজন তাঁকে খুঁজতে গিয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। দেবোত্তর ভূমি ও মন্দির রক্ষা, কীর্তন ও বৈষ্ণব ধর্ম সব মিলিয়ে মিশিয়ে সুখপাঠ্য।
Profile Image for Asima Pramanik.
15 reviews1 follower
March 7, 2023
" প্রাণনাথ হইও তুমি " বইটির সন্মন্ধে কি লিখবো কি বলবো বুঝে উঠতে পারছি না। " জীবনে মরণে জনমে জনমে প্রাণনাথ হইও তুমি " এই বই এর রিভিউ দেয়ার মতো ধৃষ্টতা সত্যই আমার নেই। বইটি পড়ার সময় বিভোর হয়ে ছিলাম । যেন অন্য কোনো জগতে বিচরণ করছি। এমন টাও যে লেখা যায় লেখক এমন সুন্দর একটি বই আমাদেরকে উপহার দিতে পারেন সত্যি ভাবা যায় না। লেখক কে আমি অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদেরকে এমন সুন্দর বই উপহার দেয়ার জন্য। বাংলার কীর্তনের বিষয় সত্যি তেমন ভাবে আমার কিছুই জানা ছিলো না। বইটি না পড়লে সত্যি অনেক কিছু মিস করতাম। লেখক এর আরো কয়েকটা বই পড়েছি ভালোই লেগেছে।তবে এই বইটা লেখক এর আর একটা মাস্টারপিস বলতেই হবে।
Profile Image for Ankur Sensharma.
1 review
October 4, 2022
কীর্তনের সঙ্গে ক্রাইম থ্রিলার - এমন অভাবনীয় মেলবন্ধন অবলীলায় ঘটিয়েছেন প্রীতম মিশ্র। এ লেখকের লেখা আগে পড়িনি। এই লেখাটা আমাকে সেই সময়, প্ৰথম আলো মনে করালো। তবে সেগুলো থ্রিলার ছিল না, আর ঐতিহাসিক চরিত্ররা সরাসরি উপস্থিত ছিলেন। এখানে তাঁর�� reference হিসেবে এসেছেন। অসম্ভব পড়াশুনো করে, অত্যন্ত মুন্সিয়ানার সঙ্গে লেখা অনবদ্য একটি বই। বাংলার কীর্তনের অপার ঐশ্বর্য আমরা হারিয়েই ফেলেছি। সেই ঐশ্বর্যের গুপ্ত পথের সন্ধান হয়তো এমন বইয়ের মধ্যেই পাওয়া যাবে। লেখককে অকুন্ঠ অভিনন্দন, শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা। ওঁর অন্য বইগুলো এবার অবশ্যই পড়ে ফেলবো।
Profile Image for Purba Basak.
103 reviews14 followers
August 25, 2023
সবাই এতো পুচ পুচ করে কেন?
কীর্তন আর বৈষ্ণব ধর্ম নিয়ে পূর্বপাঠ থাকায় রসমাধুরী আরো ভালো পাওয়া গেল।
সমকালীন গল্পের ধারাটি যথেষ্ট মজবুত নয়, যা লেখকের অন্যান্য গল্পে ছিল। চরিত্রগুলি খুব অল্প সময়ের জন্য একস্তরীয়তার উর্ধ্বে উঠেছে। অনেক প্রত্যাশা ছিল আমার, যা পূরণ হয়নি। কিছু কিছু জায়গায় পুনর্লিখন হয়েছে। গল্পের অধিকাংশ রহস্য আগেভাগেই আন্দাজ করা যায়। কীর্তনের প্রভাব আরো সুমধুরভাবে থাকতে পারত।
তবে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে এই বই এর জন্য রাত জাগা যায়, যা বর্তমান লেখককুলের সিংহভাগের সর্বোত্তম লেখার উদ্দেশ্যে বলা যায় না।
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for Dhiman.
177 reviews14 followers
May 21, 2025
"জীবনে মরনে জনমে জনমে প্রাণনাথ হৈও তুমি"
যদি কোনো বই পড়ে আপনার ইচ্ছে করে বইটা মাথায় তুলে পূজা করি, তাহলে সেই বইটি পড়ার পরে আপনার মনের অবস্থা কি হতে পারে সেটা বলাই বাহুল্য। আমি যদি শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলি যে একুশ শতকের বাংলা সাহিত্যের একটি শ্রেষ্ঠ বই পড়লাম তাহলে ভুল বলা হবে না। লেখককে প্রণাম। এরকম বই ওয়ান্স ইন এ লাইফটাইম হয় লেখা হয়।
Profile Image for Shoumik Debnath.
8 reviews5 followers
May 12, 2022
বেশ আগে থেকেই লেখকের লেখার ভক্ত। বই রিলিজ হবে শুনে প্রি অর্ডার করে অপেক্ষায় ছিলাম। এবং অপেক্ষা সার্থক। বাংলা কীর্তন সে এভাবে আমাদের সত্ত্বার সাথে মিশে আছে তার অনুমান ছিলোনা। থ্রিলারের মোড়কে যে নিখাদ জ্ঞানের সন্ধান লেখক দেন তা ক্রমেই লোভনীয় হয়ে উঠছে। বইটাকে থ্রিলার হিসেবে বেশ পরিনত ও মনে হয়েছে।
Profile Image for Proloy Mukherjee.
37 reviews1 follower
September 19, 2022
এই নিয়ে তিনটি উপন্যাস পড়লাম এই লেখকের। পাঁচমুড়োর পঞ্চাননমঙ্গল পড়ে পুরো ছিটকে গেছিলাম, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের সঙ্গে থ্রিলার? এও কি সম্ভব? তারপর চৌথুপীর চর্যাপদ একনিশ্বাসে শেষ করি। এতদিন পরে আবার! প্রাণনাথ হৈও তুমি। আরেকটি মাস্টারপিস। অবশ্য পাঠ্য।
Profile Image for Rimjhim Ch.
5 reviews
February 19, 2023
বাংলার কীর্তনের ইতিহাস, থ্রিলার, প্রেম সব মিলে মিশে এক অসাধারণ সৃষ্টি লেখকের। অদ্ভুত একটা অনুভূতি সৃষ্টি হয় বইটা পড়তে পড়তে, বৈষ্ণব পদাবলী, কীর্তন নিয়ে আরো জানার আগ্রহ সৃষ্টি হবেই। সংগ্রহে রাখার মতো বইটি।
Profile Image for Anubhab Barik.
161 reviews2 followers
February 6, 2024
3.5/5
ইনফো-ডাম্পিংটা খুবই ইনোরগানিক হয়ে গেছে। প্রাণনাথ ছাড়া কোনো চরিত্রেরই গভীরতা নেই। পদাবলীর পরিবর্তে যদি একটা কাঠের পাটাতনও গল্পের মূল চরিত্র হিসেবে নেওয়া হত, গল্পের কিছু এসে যেত না।
Displaying 1 - 30 of 32 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.