দীর্ঘদিন পর ফিনিক্স পাখির মতো ভষ্ম থেকে পুণরুত্থিত হয়েছে ব্ল্যাক রঞ্জু। আবারো সৃষ্টি করেছে ত্রাসের রাজত্ব। এবার অনেক বেশি শক্তিশালি এবং ভয়ঙ্কর। আর অপ্রতিরোধ্য তার সন্ত্রাসী চক্র। আইন শৃঙ্খলা বাহিনির সাধ্য নেই তার নাগাল পায়। ওদিকে ঢাকার এক আবাসিক এলাকা ঘটে গেল তিনটি হত্যাকাণ্ড। তদন্তে নেমেই অপ্রত্যাশিত কিছুর হদিস পেয়ে গেল হোমিসাইডের ইনভেস্টিগেটর জেফরি বেগ। হয়তো ব্ল্যাক রঞ্জুর নাগাল পেয়ে যাবে সে। কিন্তু পর্দার অন্তরালে আছে আরেকজন, তাকে ধরা প্রায় অসম্ভব। সে কী চায়? কে সে? বাস্টার্ডই বা কেন আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে হন্যে হয়ে খুঁজছে সেই লোককে? নাকি তাকেই খুঁজছে রহস্যময় লোকটা! বাস্টার্ডের জন্য পাঠকের অপেক্ষার প্রহর শেষ, সেই সাথে সব প্রশ্নেরও জবাব পাওয়া যাবে ‘বেগ-বাস্টার্ড’ সিরিজের ষষ্ঠ বই ‘নেক্সট’-এ।
MOHAMMAD NAZIM UDDIN (Bengali: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন) is a writer and Translator of more than 26 novels..His original works are NEMESIS, CONTRACT, NEXUS, CONFESSION,JAAL, 1952: nichok kono number noy, KARACHI, RABINDRANATH EKHANE KOKHONO KHETE ASENNI and KEU KEU KATHA RAKHE. These six Thriller novels are highly acclaimed by the readers.
লেখালিখি করতে গেলে আগে পড়াশোনা করতে হয় - এমন একটা কথা একসময় প্রচলিত ছিল। সেইসব দিন এখন বিগত। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের লেখায় বরাবরই টানটান উত্তেজনা থাকে। 'নেক্সট' বইতেও ব্যত্যয় হয়নি। টানা বসে পড়েছি। কিন্তু, লেখার কিছু জায়গা মোটেও যৌক্তিক মনে হয়নি। যেমন: ব্যাংকের গ্রাহকদের তথ্যদাতা কর্মকর্তাকে এভাবে দীর্ঘক্ষণ ম্যানেজারের সামনে জিজ্ঞাসাবাদ করা। পুরোটাই হাস্যকর ও অবাস্তব মনে হয়েছে।
একটা তথ্যগত ত্রুটির কথা বলি। অমূল্যবাবুর মেন্টর পাকিস্তান আমলে আইসিএস পরীক্ষা দেয়নি - এমন একটা কথা আছে। এই লাইনটা পড়ে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম। দেশভাগ হওয়ার সাথে সাথে আইসিএস পরীক্ষা বিলুপ্ত হয়। পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস অফ পাকিস্তান তথা সিএসপি পরীক্ষা চালু হয়। এমন তথ্যগত ত্রুটি লেখকের পড়াশোনার সীমাবদ্ধতাকে চরমভাবে চিহ্নিত করে। যা এত জনপ্রিয় রচয়িতার কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
আর, নাজিম সাহেবের 'বাতিঘর' বাতি দিয়ে সবসময় নিজস্ব বানানরীতি খুঁজে বের করে। ফলে বইয়ের পাতায় পাতায় বাতিঘর প্রণীত বানানরীতি দেখে বাংলা বানান যেটুকু শিখেছিলাম সে-ও বিস্মরণ হওয়ার দশা!
পুরো বইটা একেবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এঞ্জয় করেছি। অনেক ভালো বইও মাঝখানে কাহিনী ঝুলে যায়, এই বইয়ে সেই সুযোগটা ছিল না। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সাসপেন্স, প্রত্যেক অধ্যায়ে ক্লিফহ্যাংগার, স্পষ্ট আগের ও পরের ঘটনার ব্যাখ্যা। বাস্টার্ডের ক্ষুরধার পরিকল্পনা, জেফরি বেগের নিখুঁত তদন্ত প্রক্রিয়া ও অমূল্য বাবুর স্থিরবুদ্ধি সবথেকে উপভোগ্য ছিল। অমূল্য বাবু এই বইয়ে আনসাং হিরো। পুরানো চরিত্রগুলো নস্টালজিক করে দিচ্ছিল, সেইসাথে বুলেট ট্রেন গতির কাহিনী। কন্ট্রাক্টের পর আমার কাছে নেক্সট বেশি ভালো লাগল। আশা করছি আবারও বেগ-বাস্টার্ড দ্বৈরথ দেখতে পাবো।
পাঁচ তারাই দিলাম। দীর্ঘ একটা রিডিং ব্লক কাটাতে সাহায্য করেছে যে বইটা, তার পাঁচ তারকাই প্রাপ্য। শুরু থেকেই রোলার কোস্টার রাইড, অ্যাকশন, বুদ্ধির মারপ্যাচ, বেগ/বাস্টার্ড/অমূল্য বাবুর ইঁদুর-বেড়াল খেলা৷ অমূল্য বাবুকেও বেগ বাস্টার্ডের মতন ফোকাস পেতে দেখে ভালো লেগেছে। দীর্ঘ সময় নিয়ে লেখা "নেক্সট" আমার মতে সফল। আগামী বইয়ের জন্যে অপেক্ষা এবারে।
অবশেষে পড়া হল দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বেগ-বাস্টার্ড সিরিজের ষষ্ঠ বই নেক্সট। বইটা কবে প্রকাশিত হবে এটা নিয়েও যেমন আগ্রহ ছিল তেমন এই বইটা নিয়েও এক্সপেকটেশন অনেক বেশি ছিল। যদিও প্রকাশ হওয়ার বেশ অনেকদিন পর বইটা পড়ার সুযোগ হল। সবমিলিয়ে বইটা ভালো লেগেছে। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ভাইয়ের বইগুলোতে যে জিনিসটা সবথেকে ভালো লাগে পড়ার সময় তা হল বইগুলোর দুর্দান্ত গতি, এই বইটাও তার ব্যতিক্রম নয়। এজন্যই শত ব্যস্ততার মধ্যেও অনেক দ্রুত বইটা পড়া হয়ে গেল। সিরিজের প্রধান দুই চরিত্রকে দীর্ঘদিন পর দেখে ভালো লাগলো। ব্যক্তিগতভাবে এন্ডিংটা নিয়ে কিঞ্চিৎ আক্ষেপ হয়েছে মনমতো লাগেনি কিন্তু সবকিছু বিবেচনা করলে বেগ-বাস্টার্ড দীর্ঘদিন পর ফিরলো নিজেদের মত করেই।
এই বছরে পড়া আরেকটা বই এর পাঠ প্রতিক্রিয়ায় লিখেছিলাম ❝ Do not mess with Special Investigators ❞ আজ বেগ বাস্টার্ড সিরিজের ৬ষ্ঠ এবং আমার কাছে ২য় সেরা বই পড়ার পর অমূল্যবাবুর কোটেশন টা দারুন লেগেছে সত্যি বলতে! ❝ তোমাকে বলেছিলাম, বাবলুর পিছে লেগো না ❞ নেক্সট হতে পারতো ফিনিক্স পাখির মত ছাই থেকে উঠে আসা রঞ্জুর কিংবা মানবিক ভাবে লড়ে যাওয়া যোদ্ধা বাবলুর যুদ্ধ অথবা জেফরি বেগ এর গ্লোরিয়াস কোনো আখ্যান। তবে গল্পটা এবার তাদের নয়৷ লেখক " করাচি" বই এর ভয়ানক পরিনতির কথা মাথায় রেখেই হয়তো এবার লিখেছেন অন্য আঙ্গিকে, আরো পরিনত ভাবে।
❝কিছু কিছু সম্পর্ক যতো গাঢ়ই হোক, অদৃশ্য একটি দেয়াল থাকে, সারা জনমেও সেই দেয়াল ভাঙা যায় না!❞
এবারের গল্পটা মানবিকতার। গল্পটা ফোক্কান, জায়ান, অমূল্য বাবুর আর পার্থিব রায় চৌধুরীর!
সবার যেমন আকাশচুম্বী এক্সপেক্টেশন ছিল বইটা নিয়ে...ভয়ে ছিলাম হয়ত বইটা হতাশ করবে। কিন্তু করেনি। অনেক অনেক দিন বাদে এই পছন্দের চরিত্র গুলোর জগত থেকে ঘুরে এসে দারুণ লাগছে।
লেখক সামনে সিরিজের আরো পার্ট আনার স্কোপ রেখেই গল্প শেষ করেছেন। কিন্তু আমি এই সিরিজে আরো বই চাই কিনা বুঝতে পারছি নাহ। বেগ এর গল্প এবং বাস্টার্ড এর গল্প যেখানে শেষ হয়েছে, সেখানে আমি স্যাটিসফাইড। কিন্তু বাস্টার্ড আর বেগের নিজেদের গল্প যেখানে শেষ হয়েছে তাতে আমি সন্তুষ্ট না, সেক্ষেত্রে আরো বই চাই। নেক্সট বইটা আমি এই সিরিজের কন্ট্রাক্ট এবং নেক্সাসের পড়েই রাখব।
দেশে আবারও ব্ল্যাকরঞ্জুর খবর শোনা যাচ্ছে। বড়বড় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে হোমড়াচোমড়াদের কাছে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে রঞ্জুর নাম করে। তবে বেশিরভাগ লোকজনই মনে করে আগুনে পুড়ে মারা গেছে রঞ্জু , কেউ তার নাম ভাঙিয়ে এসব করাচ্ছে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমন সব ঘটনা ঘটছে যে, রঞ্জু যে ফিরে এসেছে সেটা বিশ্বাস না করে পারা যাচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবেই বাবলুর আগমন ঘটে ফের! আর সাথে তো মিস্টার বেগ থাকছেই।
গতিময় থ্রিলার। সাথে সাথে হিস্ট্রি বুকও বটে। ঠিক কিভাবে ব্ল্যাক রঞ্জুর আবির্ভাব- এই প্রশ্ন থেকে শুরু করে অনেক প্রশ্নেরই উত্তর পাওয়া যায় "নেক্সট" বইতে। অনেক সময়ের ব্যবধানে নেক্সট পাঠকের হাতে, কাজেই বয়স বেড়েছে বইয়ের সব চরিত্রেরই, তাই অনেক পরিণত তারা :) বইটা পড়তে গিয়ে মনে হলো অনেক বছর আগের পরিচিত মানুষদের সাথে দেখা হচ্ছে, ভালো লাগলো ^_^
হ্যামলেটকে ছাড়া হ্যামলেট মঞ্চায়িত অসম্ভব হলেও, শেক্সপিয়রকে ছাড়া হ্যামলেট মঞ্চায়ন সম্ভব।
বেগ-বাস্টার্ড সিরিজের ষষ্ঠ বই নেক্সট। অনেকদিন যাবত প্রকাশিত হবে হবে বলে পাঠকের উত্তেজনা বাড়িয়ে অবশেষে প্রকাশিত হল। বইটির মাধ্যমে বলা যায় কাহিনীর একটা পরিপক্কতা আসছে। যতগুলো থ্রিলার পড়েছি শুধু নাজিম উদ্দিনের লেখাতেই একটা প্রচ্ছন্ন রাজনৈতিক দর্শনের উপস্থিতি টের পেয়েছি। পুলি���ের হোমিসাইড বিভাগের জেফরি বেগ এবং তৌফিক আহমেদ বাবলু ওরফে বাস্টার্ডের ইঁদুর-বিড়াল খেলার গল্পে ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে সিরিজট��।
দীর্ঘদিন পর ঢাকার অবস্থা আবার গরম। গুজব শোনা যাচ্ছে সন্ত্রাসী ব্ল্যাক রঞ্জু আবার ফিরে এসেছে। কিন্তু ব্ল্যাক রঞ্জুকে ত ভারতে পুড়িয়ে মেরেছিল বাস্টার্ড। এমনটাই জানে সবাই। তাহলে ব্ল্যাক রঞ্জু বেঁচে গেল কীভাবে? কই মাছের প্রাণ নাকি? আরেকটা সম্ভাবনা উঁকি দেয়। ব্ল্যাক রঞ্জুর নাম ভাঙিয়ে তারই দলের কেউ হয়তো এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে টাকা কামিয়ে নিচ্ছে দু'হাতে। এদিকে ব্ল্যাক রঞ্জুর প্রতিদ্বন্দ্বী বাস্টার্ডের খোঁজও জানা নেই কারো। পুলিশের গুলি লাগার পর তার লাশ আর পাওয়া যায়নি, ভেসে গিয়েছিল নদীতে।
ব্ল্যাক রঞ্জুর পুনরুত্থান যেন আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দল আগের থেকে সংগঠিত এবং শক্তিশালী। নামিদামি ধনীদের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করে এবং চাঁদা না দিলে লোক পাঠিয়ে তাদের হত্যা করে। এমনই এক ভি আই পি ক্ষমতাসীন দলের এমপি পুত্র মুনেম চৌধুরীকে তারই বাসার সামনে গুলি করে হত্যা করে ব্ল্যাক রঞ্জুর লোক। ক্ষমতাসীন দলের এমপির সন্তান হত্যার কারণে পুলিশের উপর চাপ আসে দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার। এই খুনের তদন্তভার পড়ে হোমিসাইডের জেফরি বেগের উপর, তাও কিনা এক সপ্তাহের মধ্যে কেস সমাধান করতে হবে। জেফরি বেগ কি পারবে সফল হতে নাকি ব্ল্যাক রঞ্জুর কর্মকাণ্ড আরো বেগবান হবে?
ক্ষমতা জিনিসটা মানুষকে অমানুষে পরিণত করে। আবার এই ক্ষমতাই পারে আমাদের সমাজকে সুন্দর করতে। তবে ভুল লোকের হাতে ক্ষমতা গেলে সেটি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। বইটার সুন্দর একটা দিক হলো গল্পের মাঝে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের এক তিক্ত সত্যের উপস্থাপন করেছেন লেখক। যুদ্ধের সময় বামপন্থী হওয়ার কারণে অনেক যুবকই যুদ্ধে অংশ নিতে পারেন নি, এমনকি তাদের হুমকি-ধামকিও কম দেয়া হয়নি। এইসব কাজে লিপ্ত ছিলেন যুদ্ধ থেকে দূরে থাকা একদল ক্ষমতালিপ্সু মানুষেরা। যারা লাভের গুড় খেতে ওস্তাদ। মতের অমিল হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম নেতা তাজউদ্দীন আহমদকে হত্যার পরিকল্পনা করতেও বাধ সাধেনি তাদের। যুদ্ধের পর যেখানে ক্ষমতাসীন দলের অনেকেই যুদ্ধ না করেই মুক্তিযোদ্ধা বনে গেছেন, সেখানে কেউ কেউ যুদ্ধ করেও স্বীকৃতি পান নি ভিন্নমতাবলম্বী হওয়ার কারণে।
বইটিতে প্রধান চরিত্রের পাশাপাশি একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র অমূল্যবাবু। এতটা ধীর-স্থির ব্যক্তিত্ব চরিত্রটির, অবাক হতেই হয়। গিয়েছিলেন যুদ্ধে। দেশ স্বাধীনের পর পালিয়ে বেড়িয়েছিলেন। একসময় ক্ষমতার শীর্ষে বসে থাকা ব্যক্তিদের সাথে সু-সম্পর্ক তৈরি করেন, শেষ বয়সে এসে তারই সুফল ভোগ করছেন। অমূল্যবাবু এবং ব্ল্যাক রঞ্জুর অতীতের কাহিনি এবং তাদের উত্থান সম্পর্কে জানা যায় বইটি থেকে।
বাতিঘরের বইতে বানান ভুল থাকবেই, তবে আগের থেকে থেকে পরিমাণ কমেছে। কিন্তু তাজউদ্দীন আহমদের নামটা ভুল আছে, এটা ভালো লাগেনি। আরও কিছু কিছু বানান দেখলাম নতুন, বাতিঘরের বইতেই সম্ভবত এই বানানগুলো ব্যবহৃত হয়। বইতে এক জায়গায় ইংরেজি ভাষাকে গোলামের ভাষা বলা হয়েছে। অথচ সহজ বাংলা থাকা সত্ত্বেও লেখক সেখানে ইংরেজি ভাষার ব্যবহার করেছেন। অবশ্য বইটার নামই ইংরেজিতে।
খুব দ্রুত বইটা শেষ হয়ে গিয়েছে। কারণ পরবর্তী ঘটনা জানার জন্য উত্তেজনা ছিল, যা গল্পকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। তবে বইটা পড়তে হলে সিরিজের আগের বইগুলো পড়তে হবে। নইলে গল্প বোঝা যাবেনা। বেগ-বাস্টার্ড সিরিজের নতুন গল্পে আপনাকে স্বাগত। হ্যাপি রিডিং।
যেকোনো নতুন পাঠক, যিনি থ্রিলার পড়তে চান, তাকে আমি প্রথম যে সিরিজটি দিয়ে শুরু করতে বলি সেটি হলো এই বেগ-বাস্টার্ড সিরিজ। সাকসেস রেট প্রায় শতভাগ। পরতে পরতে উত্তেজনা, দারুণ ওয়ার্ল্ড বিল্ডিং, ক্যারেক্টার বিল্ডিং, সব মিলে দেশের থ্রিলারের ফার্স্টবয় হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে চলেছে 'বেগ-বাস্টার্ড' সিরিজ সে অনেকদিন। বাংলাদেশের আন্ডারগ্রাউন্ড, নোংরা রাজনীতি, আর সন্ত্রাসের গাঁথুনি নিয়ে এর চাইতে চমৎকার থ্রিলার আসলেই বিরল। থেকে যায় প্লট হোল কিছু হয়তো, কিন্তু ভালোর ভাগ অনেক বেশিই বিধায় আপনি দ্বিধা করবেন না আসলে একটি বই পড়ে পরের বইটি হাতে নিতে। যাহোক, এই পাঠপ্রতিক্রিয়াটি পুরো সিরিজ নিয়ে নয়, বরং বহুল প্রতিক্ষার পর ২০২২ এ বের হওয়া এই সিরিজের সর্বশেষ বই 'নেক্সট' নিয়ে। সরাসরি বইটাকে নিয়ে যদি আমার কাঁচের নীচে একটু আনাড়ি ময়নাতদন্ত চালাই,
গল্পটার বিল্ডাপ সহজসাপ্টা। আগের বইগুলোর মতো অত (a+b)^2 সূত্র মিলানো লিখা নয়। কাঁটায় কাঁটায় অর্ধেক বই গল্পের স্টোরি ব্যাকগ্রাউন্ড সেট করতে গিয়েছে, বাকি অর্ধেক পুরোটা প্রায় এক রাতের কাহিনী। এই বইটিকে ঠিক আগের বইগুলোর সাথে তুলনা করা যাচ্ছেনা কারণ এটা পুরোটাই প্রায় একশন সিকোয়েন্স কে প্রাধান্য দিয়েই লেখা। বরং বলা যায়, একশন কিভাবে লেখতে হয় সেটার একটি উদাহরণ সহ ব্যাখ্যা এটি। এরপরেও এটাও লেখক স্বভাবসুলভ ছাঁচে ফেলেই লিখেছেন। খুন হলো, চাঞ্চল্যকর অবস্থা সৃষ্টি হলো, জেফরি বেগ কেচো খুড়তে গিয়ে পেলো এনাকো...আইমিন বাস্টার্ড, তারপর বরফ পানি খেলা, তারপর একটি পোয়েটিক জাস্টিস, শেষমেষ অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি উপসংহার। খুবই পেজ টার্নার বইটি নিঃসন্দেহে। অনেকদিনের ব্লক কাটাতে এ ধরণের বইগুলো খুব কাজে দিতে পারে। একটানা নিশ্বাস না ফেলে ডুব দিয়ে উঠে পড়লাম যেন। অথচ পৃষ্ঠা সং্খ্যা ৪২০+!
ব্লাক রঞ্জুকে নিয়ে টানাটানিটা আসলে এঞ্জয়েবল হলেও পুরোনো ভিলেনকে নিস্তার দিয়ে আরও বড় ভিলেন এর পরিচয় সামনে এলেই বরং বেশি ভালো লাগতো। রঞ্জুর হালকা ব্যাকগ্রাউন্ড স্টোরিও পাওয়া গেছে বৈকি। তবে, প্রেডিক্টেবলই ছিলো সব, কারণ লেখক চেয়েছেনও সেরকম। লেখক কি/কে থেকে কিভাবের উত্তর দিতে পছন্দ করেন, যেটা ভালো লাগে। এবার সংলাপগুলোতে কিছু অসামাঞ্জস্যতা লক্ষ্য করা গেছে। মানে তা ডায়লগের ওজনের কথা হোক আর দেয়া যুক্তি তথ্যে অসংগতি হোক। সাথে বাস্টার্ড বা অমূল্যবাবুকে যেমন গডলাইক স্কিল দিয়ে প্রেজেন্ট করতে দেখেছি, ততটা দূর্বল লেগেছে জেফরি বেগকে। একজন দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা এমন ঘুরপথে গিয়ে খাবেন কেন? শুধু আইনের জন্য?! বেশ ড্রামাটিক কিন্তু।
বানান ভুল নিয়ে একটি পুস্তক প্রকাশনীর এতবার ভুল আসলে খুবই দুঃখজনক ও দৃষ্টিকটু। একটি দুইটি বানান ভুল নয়, প্রায় সকল বইতে বানান ভুল, প্রায় সকল প্রোডাকশনে পাতা খোয়া যায়। এটা ঠিক কেমন ধরণের সিস্টেম, আদৌ ঠিক করার প্রয়াস কতটুকু ঠিক জানা নাই।
যাহোক ভালো লেগেছে নিঃসন্দেহে। অনেকদিন পর থ্রিলার পড়েছি, তৃপ্তি পেয়েছি। অসংগতি থাকবেই একটি বইতে, তবে সেগুলো উত্তরোত্তর হ্রাস পাক সেটাই কামনা। পড়ে ফেলুন বেগ বাস্টার্ড সিরিজের ষষ্ঠ বই নেক্সট। তবে এক্সপেকটেশন কমিয়ে একটু হালকা হয়ে নিন, বইয়ের সাথে ছুটতে সুবিধা হবে। সবশেষে, আরিয়ানা গ্রান্ডের মতো এক্স-কে বলতে না পারলেও এই বইটিকে উদ্দেশ্য করে বলতে পারবেন... Thank you, next.
বেগ বাস্টার্ড সিরিজের সব বই-ই আগুন! নেক্সট নিয়ে কিচ্ছু বলার নেই।এক বসায় পড়া শেষ। চমৎকার একটা বই। পাতায় পাতায় থ্রিল! পরীক্ষার জন্য অনেকদিন ভালোমতো বই পড়তে পারিনি,এখন জমিয়ে রাখা বইগুলো রসিয়ে রসিয়ে শেষ করছি। "বেগ বাস্টার্ড" এমন একটা সিরিজ, বারবার পড়লেও বিরক্তি আসে না! হাতের কাছে অন্য বই না পেয়ে পুরো সিরিজটা দু তিনবার করে পড়া হয়েছে।
পুরাই ধামাকা!! এতোদিন অপেক্ষার পর যদি পাঠক হিসেবে এমন ধামাকা পাই, তাহলে অপেক্ষা করেও কোন আফসোস নাই। সবাই এক্কেবারে ফুল ফর্মে 😍🔥 বাবলুটা দেখি আরও বেশি মানবিক হয়ে গেলো! চরিত্রগুলো আগের থেকে আরও বেশি পরিণত। ভাল্লাগসে খুব! কিন্তু একটা ব্যাপারে যথেষ্ট আপত্তি আছে। মানলাম বেগ-বাস্টার্ড সিরিজের বই বা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের বই হটকেকের মত বিক্রি হয় তাই বলে যেমন তেমনভাবে বই ছাপায় ফেলবে?? প্রথমে প্রি-অর্ডার করা হয়েছিল যেই কপিটা, বহু ধানাই পানাই আর নাটকের পর হাতে আসে। পড়তে যেয়ে দেখি আরেক সমস্যা। সেইরকম ধুন্ধুমার কান্ড চলতেসে হুট করে চারটা পেজ নাই.. একেবারে সাদা। চেক দিয়ে দেখি ভিতরে আরও কিছু এমন সাদা পাতা। যেই পেজ থেকে বই আনা আবার ওদের ইনফর্ম করে নতুন বই আনালাম। ওরা জানিয়েছিল আমাদের হাতে থাকা কপিটা যেন ওদের পাঠিয়ে দেই, বিভিন্ন ঝামেলায় পাঠানো হয়নি। ভাগ্যিস পাঠাইনি!! কারণ নতুন যেই কপিটি পেলাম, এই বইয়েরও কয়েক জায়গায় কোন লেখা নেই। সাদা পাতা -_- এই যে হ্যারাস হইলাম... এই অভিযোগগুলা কাকে করব?? আছে কেউ শোনার মতন?
সম্ভবত আমি একমাত্র বান্দা যে এই সিরিজের একটি বই ও না পড়ে, এক লাফে সরাসরি ৬ নাম্বারে চলে এসেছি । জানতাম , কিছুটা ভিন্নরকম অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা আসবে । এবং তা এসেছেও। প্রথমদিকে কিছুটা আনইজি ফিল করেছি তবুও ধীরে ধীরে যখন গল্পের মধ্যে ঢুকে পড়লাম, তখন আর আমাকে ঠেকাই কে। এক রাতে দফারফা।
বাকি বইগুলো এবার একটু রসিয়ে রসিয়ে পড়তে হবে। বেগ - বাস্টার্ড কে ভালো লেগে গেল যে!
শুধু এটুকুই বলবো দীর্ঘ অপেক্ষার পর হতাশ করেননি লেখক। আগের সবগুলো পাজল সুন্দর করে মিলিয়ে দিয়েছেন এই বইটিতে। বইটা শেষ করে সিরিজ শেষ হয়ে যাওয়ার একটা অনুভূতি হচ্ছে। যদিও এখানে শেষ হয়ে গেলেও খুব একটা খারাপ হবে না। কারণ চমৎকার একটা ওপেন এন্ডিং রেখেছেন লেখক। যেনো পাঠকের যেমনটা ইচ্ছে ভেবে নিতে পারেন।
"বুদ্ধির খেলাই সব নয়। এই জগত অনেক বেশি জটিল, অনেক বেশি অনিশ্চিত। কারণ, বেশিরভাগ মানুষ যুক্তি বুদ্ধি দিয়ে পরিচালিত হয় না। কে কখন যুক্তি দিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে, আবেগের তাড়নায় নেবে কিংবা ভুল করে বসবে জানার উপায় থাকেনা। তার উপরে আছে অসংখ্য কাকতাল আর ঘটনাচক্র। তাই দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান মানুষটিও তার চারপাশের খুব কম জিনিসই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। যত নির্ভুল হিসেবই করা হোক না কেন, তাতে ভুল থাকবেই।"
অনেক অপেক্ষার পর এই বই পেলাম। আমি তো অনেক বর্ণনাই ভুলে বসেছি! তবুও উপভোগের মাত্রা বিন্দুমাত্র কমেনি। আলোচনা করা যায় অনেক কিছুই। কিন্তু সবসময় ইচ্ছে করে না। কিছু কথা শুধু নিজের সাথে বলতে ইচ্ছে করে।
দিনকাল যা পড়তেসে, একটা বই তরতরিয়ে পড়তে পারলেই মনে হয় ভালো বই। সেইটা আবার থৃলার জাতগোষ্ঠীর হলে গল্পে নিয়ে ভাবনাটা অনেকাংশেই কমিয়ে দেই। তখন গল্পের আমেজটা রসিয়ে উপভোগ করার ইচ্ছাটাই মুখ্য থাকে। কারণ আগের মত অঢেল সময় বা সুযোগের দুর্ভিক্ষ দশায় গল্পের প্লট/চরিত্র/ভালোমন্দ নিয়ে হিসাবনিকাশ মেলানো থেকে একশ গজ নিরাপদে থাকি। থৃলারের রাশটা শিরায় ইনজেক্ট করে রিলাক্স করতে স্বাচ্ছন্দ্যে। তাই তিনদিনের বন্ধে বহুকাল লিস্টে ঝুলন্ত বই ''নেক্সট" শুরু করার পর ভাবলাম কয়েক সিটিঙে খতম দিতে পারব। এখন সেটা তিন বসাতেই হয়ে গেলো। নিজেও রিডিং ফ্লো দেখে অবাক হলাম। যাক, ভালো সময় কাটলো৷ আরেকটা বই ধরা যাবে সেটা ভেবেই শান্তি পাচ্ছি। অই, নেক্সট.....
''নেক্সট!!!! শুরুর শেষ, নাকি শেষের শুরু?'' যে বইটির জন্য অপেক্ষা ছিল প্রায় দুই বছরের। ভালো লেগেছে সব মিলিয়ে, সাসপেন্স ছিল অনেক। আগের গল্পগুলো না মিলানো পাজলগুলো সলভ হয়েছে সম্ভবত বেগ-বাস্টার্ড সিরিজের শেষ বইটিতে, হয়ত বলার কারন বইটির লাস্ট দুই লাইন 'নতুন নাম, নতুন পরিচয় -কিন্তু নতুন জীবন কি?'। পরে হয়ত গুছিয়ে রিভিউ লিখব।
ব্ল্যাক রঞ্জু ফিরে এসেছে! বেগ-বাস্টার্ড সিরিজের প্রতিটি পাঠকের কাছে এই একটি বাক্য ধাক্কা খাওয়ার মতো। ব্ল্যাক রঞ্জু কি সত্যিই ফিরে এসেছে? তা কী করে হয়? তাহলে যে রঞ্জুকে ফিনিক্স পাখি হতে হয়। সেই ফিনিক্স পাখি, যা ছাই ভস্ম থেকে আমার ফিরে আসে। নতুন জীবন ফিরে পায়। কিন্তু রঞ্জু তো মানুষ। তার পক্ষে তো আর ফিনিক্স পাখি হওয়া সম্ভব না! তাহলে?
• কাহিনি সংক্ষেপ :
ব্ল্যাক রঞ্জু মারা গেছে। বাস্টার্ডও মৃত। ঝামেলা নেই। জেফরি বেগ তাই ঝামেলামুক্ত সময় পার করছে। নিজের স্বাভাবিক কাজ করেই দিন পার করছে। প্রতিদ্বন্দ্বীরা নেই, উত্তেজনাও নেই। তাই বলে কি সমস্যা থেমে থাকে? জাদুর শহর ঢাকার হাজারটা সমস্যা। এ ওকে মারছে, সে তাকে মারছে। ছিনতাই, হত্যা, চাঁদাবাজি লেগেই আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনি এসব বন্ধে কিছুই করতে পারছে না। কেউ কেউ আবার ব্ল্যাক রঞ্জুর নাম ভাঙিয়ে এসব করছে। এসব শুনে অবাক হয় জেফরি বেগ। মৃত মানুষ আবার কী করে চাঁদাবাজি করতে পারে?
এরই মাঝে খুন হলো দেশের এক বড়ো শিল্পপতি। তার বাসার সামনেই গুলি করে মারা হলো তাকে। তদন্তের ভার পড়ল হোমিসাইড ডিপার্টমেন্টের জেফরি বেগের ওপর। জানা গেল ব্ল্যাক রঞ্জুর নাম করে তার কাছে বিশাল অংকের চাঁদা চাওয়া হয়েছে। চাঁদা দিয়ে অপারগতার কারণেই এই হত্যাকাণ্ড। বিশ্বাস করেনি জেফরি বেগ। তার দৃঢ় বিশ্বাস, রঞ্জুর নাম ভাঙিয়েই একদল এসব করছে। তদন্ত শুরু হলো। উপরমহল থেকে চাপ আসছে। মৃতের বাবা এমপি থাকার কারণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী অস্থির হয়ে উঠেছেন। যে করেই হোক খুনিকে ধরতেই হবে। এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সাত দিনে এই রহস্য উদঘাটন সম্ভব? আর যদি ব্ল্যাক রঞ্জু সত্যিই এর পেছনে থাকে, তাহলে তো অসম্ভব!
বাস্টার্ড মৃত। পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে নদীতে পড়ে গিয়েছিল ভয়ংকর সেই পেশাদার খুনি। এরপর আর তাকে পাওয়া যায়নি। পুলিশের ধারণা, ম��ঘনার স্রোতে ভেসে গিয়েছে বাস্টার্ড। কিন্তু অমূল্যবাবু তা বিশ্বাস করেন না। তার দৃঢ় বিশ্বাস বাস্টার্ড বেঁচে আছে। লাশ যেহেতু পাওয়া যায়নি, কোথাও গা ঢাকা দিয়ে আছে নিশ্চয়ই। অমূল্যবাবু খোঁজ করছেন বাস্টার্ডের। পাওয়া যাবে বাস্টার্ডকে? খুনিকে খুঁজতে গিয়ে নিজেই পড়লেন বিপদে। জীবন নিয়ে টানাটানি লেগে গিয়েছে। এবার বাঁচবেন কীভাবে? কীভাবেই বা খুঁজবেন বাস্টার্ডকে?
বাস্টার্ডকে খুঁজছে আরও অনেক মানুষ। প্রতিশোধের নেশায় পাগল হয়ে যাওয়া ব্ল্যাক রঞ্জুর বাস্টার্ডকে চাই-ই চাই। ব্ল্যাক রঞ্জুর মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা কিছুতেই কাটছে না। তার লোকেরা বলছে রঞ্জু বেঁচে আছে। কিন্তু কেউ স্বচক্ষে দেখেনি। এর পেছনে কলকাঠি নাড়ছে অন্য কেউ। ক্ষমতাধর সেই ব্যক্তির ইশারায় হচ্ছে সব কিছু। তার নাগাল কি পাওয়া যাবে?
ঢাকার এক প্রান্তে নিরিবিলি জায়গায় গড়ে উঠেছে আবাসিক এলাকা - সোয়ান লেক সিটি। ইদের ছুটিতে সেখানে ঘটে গেছে তিন তিনটি খুনের ঘটনা। ছুটি না শেষ হতেই জেফরি বেগের তলব পড়ল সে জায়গায়। রহস্যময় এ হত্যাকাণ্ডের মোটিভ কিছুতেই বুঝতে পারছে না। ছুটির এ সময়টাতে নিজেকে ঢাল তলোয়ারবিহীন নিধিরাম সর্দারের মতো লাগছে। তবুও শেষ চেষ্টা চলছে। তদন্ত করতে করতে জেফরি বেগের এক পর্যায়ে মনে হচ্ছে, এই বুঝি ব্ল্যাক রঞ্জুর নাগাল পেয়ে গেল। সত্যিই কি ব্ল্যাক রঞ্জু বেঁচে আছে? থাকলে এবার বোঝাপড়া হবে। কিন্তু চমক তখনও অনেক বাকি!
আরও আছে পার্থিব রায় চৌধুরী। কে সে? নতুন পরিচয়, নতুন জীবন নিয়ে তার পথচলা। কিন্তু চাইলেই কি অতীত ভুলে যাওয়া যায়? অতীতের টানে আবারও ছুটে চলা পুরনো সেই গন্তব্যে। পুরনো পরিচয় নিয়েই লড়াই শুরু। হেরে যাওয়ার জন্য তো তার জন্ম হয়নি।
• পাঠ প্রতিক্রিয়া :
বেগ বাস্টার্ড সিরিজের শেষ বই করাচি বের হয়েছিল ২০১৫ সালে। এটি যেহেতু প্রিকুয়াল, তাই হিসেবের বাইরে রাখা যায়। এর আগের বই কনফেশন প্রকাশ পায় ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। দীর্ঘ নয় বছর পর বেগ বাস্টার্ড সিরিজের ধারাবাহিক কাহিনির দৃশ্যপট পাঠকের সামনে এসেছে। এত লম্বা সময়ে বাস্টার্ডের কী হলো, জেফরি বেগ কেমন আছে; তা জানতেই পাঠকের যত আগ্রহ, অপেক্ষা। অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়ে অবশেষে নেক্সট সামনে এসেছে। হাইপ ওঠা অনেক কিছুই শেষ পর্যন্ত সুখকর হয় না। তাই বইটি নিয়ে একটু শঙ্কা ছিল। বইটি প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে তো? সেই শঙ্কা এক লহমায় উড়ে গেছে। লেখক যখন মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, তখন এমন শঙ্কা প্রকাশ করা অমূলক।
কী দুর্দান্ত! কী সাবলীল! কিছু কিছু বই শেষ হলে আক্ষেপ হয়, কেন যে শেষ হলো! বিশাল কলেবরের এই বইটি শেষ করে তেমন লাগছে। আরেকটু যদি থাকত! এত সাসপেন্স, এত থ্রিল, এত টুইস্ট! অসাধারণ বললেও কম বলা হবে। বইটি মুগ্ধ করেছে। আরও মুগ্ধ করেছে লেখকের লেখা, বর্ণনা। লেখকের লেখা নিয়ে অবশ্য বলার কিছু নেই। তিনি সবসময় ভালো লেখেন। যেন চোখের সামনে সব ঘটছে, এমনভাবেই কাহিনি বর্ণনা করেন। আরও বেশি ভালো লেগেছে লেখকের পরিমিতবোধের ভাবনা। যেখানে যতটুকু বর্ণনা দেওয়া প্রয়োজন, সেখানে ঠিক ততটুকুই বর্ণনা আছে। আবার যেখানে ব্যাখ্যার প্রয়োজন, সেখানে যথাযথ ব্যাখ্যা করেছেন। বইটি যেহেতু সিরিজের অংশ, অনেক কিছু ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন হয় যা আগের বইগুলোতে ছিল না। সেগুলো যথাযথভাবে করেছেন। অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলেছে অবশেষে।
• গল্পবুনন ও চরিত্রায়ন :
এই বই একটি মাস্টারপিস। সিরিজের অন্যান্য বইয়ের চেয়েও সেরা হতে পারে। লেখকের দুর্দান্ত লেখা আর গল্প বলার ধরণ ছাড়া তা সম্ভব ছিল না। সিরিজের আগের বইগুলোতে অনেক কিছুই মিসিং ছিল, অনেক প্রশ্নের আবির্ভাব হয়েছিল। তার উত্তর বইটিতে দেওয়া হয়েছে। অনেকের চরিত্রের বিশ্লেষণ করা হয়েছে। আগের বইগুলোতে একটি বিশেষ চরিত্র ছিল অমূল্যবাবু। তিনি বরাবরই আড়ালে থেকে গেছেন, ছিলেন রহস্যময়। তার জীবনের গল্প এখানে বলা হয়েছে। কিছু ব্যাক স্টোরি এসেছে, যা গল্পের খাতিরে প্রয়োজন ছিল। এছাড়া লেখকের লেখা নিয়ে তো বলার কিছু নেই। তাঁর বর্ণনা পড়লে মনে হয় যেন, চোখের সামনে সব দেখতে পাচ্ছি। অ্যাকশন দৃশ্যের বর্ণনা এতটা নিখুঁত ছিল। নিখুঁত ছিল পুলিশের তদন্তের ধরণও।
বিশাল কলেবরের বই। নানান জায়গায় গল্প এগিয়েছে। নানান মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে। দৃশ্য শেষে আবার হারিয়েও গেছে। প্রতিটি চরিত্র মনে গেঁথে যাওয়ার মতো। প্রত্যেকেই আলাদা, স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারি। খুব অল্প সময়ের জন্য গল্পে স্থান পেলেও লেখক তাদের চরিত্র খুব সুক্ষভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। যা বইটিকে আরও অনবদ্য করে তুলেছে।
• বানান, প্রচ্ছদ ও প্রোডাকশন :
বেগ বাস্টার্ড সিরিজের সবচেয়ে যেটা ভালো লাগে তা হলো প্রচ্ছদ। স্বতন্ত্র এক প্রচ্ছদ দেখেলেই সিরিজের বইগুলো চেনা যায় খুব ভালোভাবে। এই বইটির প্রচ্ছদও বেশ লেগেছে আমার। কিছুটা রহস্য, কিছুটা ধোঁয়াশা। যা বইয়ের মূল কাহিনিকেই চিত্রিত করে।
বানানের ক্ষেত্রে বলতে হয়, সামান্য কিছু বানান ভুল চোখে পড়েছে। মুদ্রণ প্রমাদও ছিল কিছু। বাতিঘর প্রকাশনীর এই একটিই সাধারণ সমস্যা। তবে এখনকার বইগুলোতে বানান ভুল, মুদ্রণ প্রমাদ অনেকটা কমে এসেছে।
প্রোডাকশন ভালো ছিল। হাতে ধরার পর প্রথম দুই তিন ফর্মা হাতে খুলে আসবে মনে হচ্ছিল, কিন্তু এরপর আর কোনো অসুবিধে হয়নি।
পরিশেষে, এরপর কী হবে? সিরিজের আরও বই কি আসবে? এই রহস্য পাঠকদের কাছে তোলা থাক। শেষ দৃশ্য না আসা পর্যন্ত গল্প শেষ হয় না। পাঠকদের টুইস্ট, থ্রিল, সাসপেন্স ও অ্যাকশনের গল্পে স্বাগতম। এখানেও শেষ হবে না। শেষের গল্পটা জানতে হবে, কী হলো এরপর?
বই : নেক্সট লেখক ; মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রকাশনী ; বাতিঘর প্রকাশনী প্রচ্ছদ : সিরাজুল ইসলাম নিউটন পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৪৩০ মুদ্রিত মূল্য : ৫০০৳ প্রকাশকাল : ফেব্রুয়ারি ২০২২ ব্যক্তিগত রেটিং : ৫/৫
দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হলো ....অবশেষে পড়া হলো বইটি।
স্লো ধরনের থ্রীলার ভালো পাই না। রোলার কোস্টার গতির থ্রীলার পড়ার মজাই আলাদা। সেই মজা এই বইতে পেয়েছি। তবে আমার কাছে এই সিরিজের এখনো পর্যন্ত বেস্ট বই হচ্ছে কন্ট্রাক্ট। নেক্সট সেটাকে বিট করতে পারে নাই।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের বেগ-বাস্টার্ড সিরিজের শেষ বইটি প্রকাশিত হয়েছিলো সাত বছর আগে। এত বছর পর নতুন বই প্রকাশিত হবার কারণে স্বাভাবিক ভাবেই আগ্রহ ছিলো পাঠকদের, অন্তত যারা এই সিরিজ আগে থেকেই পড়ছে। এই সিরিজের সর্বশেষ প্রকাশিত বই ‘নেক্সট’ কলেবরের দিক দিয়ে সিরিজের পূর্বের সব বইকে ছাড়িয়ে গেছে।
এই বইটিতে লেখার গঠনে একটা দারুণ জিনিস চোখে পড়লো। খানিকটা ত্রিমাত্রিক বলা চলে। ধরা যাক একটি খুন হবে। লেখক এটাকে প্রায় তিনটি ভাগে বা তিনটি অধ্যায়ে পর পর ঘটনাটিক সাজাচ্ছেন। প্রথমভাগে, খুনের একটি প্রেক্ষাপট তৈরি করছেন। তখন কী অবস্থা আশেপাশে এসব বর্ণনা সহ একটি ঘটনা যে ঘটতে চলেছে, তার একটি আগাম আভাস দিচ্ছেন। দ্বিতীয় ভাগে এসে, ঘটনাটি ঘটে গেছে সেটি দেখানো হচ্ছে। হয়তোবা গুলির আওয়াজ শোনা গেলো। এবং পুলিশ এসে লাশও দেখতে পেলো। আর তৃতীয় ভাগে এসে, ঘটনাটা কীভাবে সংঘ���িত হলো, তা পুঙ্খানুপুঙ্খু ভাবে দেখানো হয়। তিন ভাগে ঘটনাটি প্রকাশ করার এই বিষয়টি পুরো বইতে দফায় দফায় লক্ষ্য করা যায়।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের এই সিরিজের গল্প ফাঁদার একটি বিশেষ সূত্র এখানেও লক্ষ্য করা যায়। সেটি হলো, শুরুতে একটি চাঞ্চল্যকর খুন হতে দেখা যায়। এবং খুন হওয়া ভুক্তভোগীর পারিবারিক কিংবা সামাজিক অবস্থানের কারণে কোন না কোন ভাবে হোমিসাইড ডিপার্টমেন্টের কাছে খুনগুলোর তদন্ত হস্তান্তর করা হয়। যখনে এই তদন্তে নেমে পূর্বের কোন সূত্র পুলিশ খুঁজে পায় (যেমন এই সিরিজের আইকনিক খুনী চরিত্র বাস্টার্ড, অথবা ব্ল্যাক রঞ্জু কিংবা তাদের সঙ্গে কাজ করা কেউ), তখন গল্পে এমন একটি মোড় নেয় যেখানে একের পর এক শুরু হয় খুন। বাড়তে থাকে ভয়াবহতা। তবে একদম শেষ দিকে প্রথমে ঘটা চাঞ্চল্যকর খুনের সমাধান হয় খুব সহজে। কারণ এর মধ্যেই অতীতের বিভিন্ন জালে আটকে যায় তদন্ত। এক্ষেত্রেও গল্প ফাঁদার এই সুত্রটি দেখা গেছে। তবে এখানে সিরিজের অন্যান্য বই থেকে এই বইয়ের প্রথম খুন (যেখান থেকে ঘটনার সূত্রপাত) ছিলো বেশ আলাদা ও রহস্যময়। যেখানে একটি ফগার মেশিন দিয়ে মশা মারার আয়োজন করার মধ্যে আক্ষরিক অর্থেই ধোয়াশায় একটি খুন হয়।
বড় কলেবর হওয়ায় গল্পের গতি কিছু জায়গায় শ্লথ হয়েছে প্রথমদিকে। এই সিরিজের গল্প বলার গতি অবিশ্বাস্য ভাবে এগোয়। বইটির দ্বিতীয়ভাগে এমনটিই দেখা যায়। প্রচন্ড গতিতে গল্প শেষ দিকে এমন ভাবে কিছু মোড় নেয়, তা অনেকটাই অবিশ্বাস্য হয়ে পরে। তবে একদম শেষ মুহুর্তে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ব্ল্যাক রঞ্জু বিষয়ক যেই সত্য বেরিয়ে আসে, তা পুরো গল্পকে নিয়ে যায় অন্য এক মাত্রায়।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের অন্যান্য বইগুলো থেকে এই সিরিজ অনেকটা আলাদা এই অর্থে, কারণ এই সিরিজের প্রায় প্রত্যেকটি চরিত্র এমনভাবে নির্মান করা হয়েছে, যার কারণে পুরো জগতটিই ফাকঁফোকরহীন ভাবে গড়ে উঠেছে। আর এই বইতে এসে খানিকটা আড়ালে থাকা চরিত্রগুলো ডালপালা খুলে বসেছে। যার কারণে বেরিয়ে এসেছে জেফরি বেগ আর বাস্টার্ডের জগতের অনেক না জানা কথা।
স্বাভাবিক ভাবেই কিছুদূর এগোলে বইটির ক্ষীপ্র গতি আপনাকে নিয়ে যাবে অপরাধ জগতের এক অন্ধকার ও শ্বাস রুদ্ধকর দুনিয়ায়। বহুদিন পর, মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের লেখা আদ্রহীন এক ভয়ঙ্কর দুনিয়ায়।
*** **** ***
A three-dimensional thriller
The last book in Mohammad Nazim Uddin's Beg-Bastard series was published seven years ago. After so many years of new books being published, readers were naturally interested, at least those who have already read the series. The latest book in the series, Next, has surpassed all previous books in size.
There is something wonderful about the structure of writing in this book. It can be called a little three-dimensional. Suppose there would be murder. The author arranges it chronologically in about three parts or three chapters in a row. The first part creates a context of murder. What is happening then is a foretaste of what is going to happen with these descriptions. Coming to the second part, the incident is shown to have happened. Maybe shots were heard. And the police came and found the body. And in the third part, how the incident happened is shown in detail. This fact of publishing the incident in three parts can be noticed in the whole book.
A special source of the story trap of this series by Mohammad Nazim Uddin can also be noticed here. That is, in the beginning, it was seen to be a shocking murder. And because of the family or social status of the murdered victim, the investigation of the murders is somehow handed over to the Homicide Department. When the police find a clue to the investigation (such as the bastard, the iconic killer character in the series, Black Ranju, or anyone who works with them), That's when the incident took another turn. Gruesomeness continues to grow. However, the solution to the shocking murder that took place at the very end is very easy. Because the investigation is stuck in various traps of the past. In this case, too, this formula of story trapping has been seen. However, the first murder in this book (from which the incident started) was quite different and mysterious from other books in the series. Where arranging to kill a mosquito with a fogger machine is literally murder in the fog.
Due to its large size, the pace of the story has slowed down in some places in the beginning. The pace of storytelling in this series is incredible. This is what is seen in the second part of the book. The story takes a turn at such a fast pace towards the end, it becomes much more unbelievable later. But the fact that the important character Black Ranju comes out at the very last moment takes the whole story to another level.
This series is very different from other books of Mohammad Nazim Uddin in this sense because almost every character in this series has been constructed in such a way that the whole world has been formed in a flawless way. And in this book, the characters that are a bit hidden are sitting on the stalks. This is why Jeffrey Begg and Bastard's world is so unknown.
The fast pace of the book will take you to a dark and suffocating world of crime in a normal way. After a long time, the writings of Mohammad Nazim Uddin were in a terrible world without moisture.
“If we are true to ourselves, we can not be false to anyone.”― William Shakespeare, Hamlet - ❛নেক্সট❜ - জেফরি বেগ, হোমিসাইডের চিফ ইনভেস্টিগেটর। এক হাই প্রোফাইল কেসের তদন্ত করতে গিয়ে তিনি সেই কেসে ব্ল্যাক রঞ্জুর দলের কানেকশন খুঁজে পান। আগের পর্বের ঘটনাবলীর পরে প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া এই দলের পুনরুত্থানে বেশ অবাকই হন তিনি। সেই ঘটনা তদন্ত করা শুরু করলে তিনি জানতে পারেন আরো অনেক নতুন তথ্য। - এদিকে ঢাকার এক শুনশান রেসিডেন্সিয়াল এলাকার এক অ্যাপার্টমেন্টে পাওয়া যায় তিনটি লাশ। জেফরি বেগ এই ঘটনার ইনভেস্টিগেশন করতে গিয়ে হাই প্রোফাইল সেই কেসের সাথে এই তিনটি খুনের যোগসূত্র খুঁজে পান। এখন ব্ল্যাক রঞ্জুর দল আবার কিভাবে সংগঠিত হয়ে নাশকতা চালাচ্ছে? বাস্টার্ডের নতুন কোন খবর কী পাওয়া যায় এই বইতে? এ সব কিছুর পেছনে কলকাঠি নাড়ছে করা? জেফরি বেগ কি পারবে এই রহস্যগুলোর সমাধান করতে তা জানার জন্য পড়তে হবে লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এর 'বেগ-বাস্টার্ড' সিরিজের ষষ্ঠ উপন্যাস ❛নেক্সট❜। - ❛নেক্সট❜ বইটি তুমুল জনপ্রিয় 'বেগ-বাস্টার্ড' সিরিজের ষষ্ঠ বই, যা কিনা সিরিজের 'কনফেশন' পর্বের ঘটনাবলীর কয়েক বছর পরে শুরু হয় এবং সিরিজটিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। সিরিজের এ পর্বের কাহিনি শুরু থেকেই টানটান উত্তেজনার সাথে আগাতে থাকে। গল্পের সাথে সাথে এর অনবদ্য লেখনশৈলী বইটি দ্রুত পড়ায় সাহায্য করেছে।টানটান শুরুর পরে মাঝে গল্প কিছুটা ব্রিদিং স্পেস পেলেও শেষদিকে তা আবারো শ্বাসরুদ্ধকর গতিতে মোড় নেয়। গল্পের ভেতরে দেশের আন্ডারওয়ার্ল্ডের নানা দিক, পলিটিক্যাল অ্যাঙ্গেল, পুলিশ ইনভেস্টিগেশন সবকিছুই কাহিনি অনুসারে ঠিকঠাক লেগেছে। - ❛নেক্সট❜ বইয়ের আরেকটি দুর্দান্ত দিক এর রিয়েলিস্টিক চরিত্রায়ণ। জেফরি বেগ, অমূল্য বাবু সহ আরো কিছু সারপ্রাইজিং চরিত্র খুবই রিয়েলিস্টিক ভাবে লেখা হয়েছে, সংলাপও তাই চরিত্রগুলোর সাথে খাপ খেয়ে গিয়েছে বলা যায়। ছোট ছোট টুইস্টের মাধ্যমে যেভাবে অধ্যায়গুলো শেষ করা হয়েছে সে ধরণের বর্ণনাভঙ্গিও দুর্দান্ত লেগেছে। এই পর্বে বিভিন্ন চরিত্রের ব্যাকস্টোরিগুলোও ভালো ছিলো, কয়েক জায়গায় মনে হয়েছে সেগুলো আরেকটু বিস্তারিত জানতে পারলে আরো ভালো লাগতো। - ❛নেক্সট❜ বইয়ের টেকনিক্যাল দিকে তাকালে সিরিজের বাকি বইগুলোর মতো এতেও বেশ ইউনিক ধাঁচের প্রচ্ছদ ছিলো, যা ভালো লেগেছে। বইতে বানান ভুল অবশ্য কিছু ছিলো, আশা করি সামনের সংস্করণে সেগুলোর বেশিরভাগ শুধরে যাবে। দামের তুলনায় বইয়ের বাকি সব কোয়ালিটি ঠিকঠাকি লেগেছে। - এক কথায়, সিরিজের ষষ্ঠ বই হিসেবে এই সিরিজে একজন পাঠক যেরকম গল্প আশা করেন ঠিক সেধরনের একটি গল্পই হচ্ছে ❛নেক্সট❜। তাই এই সিরিজের বাকি পর্বগুলো যাদের পড়া হয়েছে এবং সেগুলো ভালো লেগেছে তাদের এই পর্বটি কোনভাবেই মিস করা উচিত হবে না।
২০ মিনিট! ৩০ মিনিট! ৪০ মিনিট! বই থেকে এক মুহূর্তও দৃষ্টি বিচ্যুত হচ্ছে না। ইদ স্পেশাল বইয়ে এতোই বিভোর। এ যেনো এক অনবদ্য থ্রিলার। শ্বাসরুদ্ধকর!
ইদের ভ্যাকেশন পুরোপুরি জমে ঘি। ৩ দিনে বই শ্যাষ! অসাধারণ একটা বই ছিলো,নেক্সট। এত্তো টুইস্ট কেম্মে হয়! আমার মনে হয়েছে, সিরিজটার নাম বেগ-বাস্টার্ড না হয়ে যদি ব্লাক-বাস্টার্ড হতো, তাইলে মানানসই হতো। কারণ আমার কাছে বাস্টার্ড নামটাই অধিক রোমাঞ্চ দেয়। আর যদি হয় ব্লাক রঞ্জুর দলের সাথে মোকাবেলা হয় বাস্টার্ডের.. হাতে সাইলেন্সার সহ বন্দুক , তাইলে তো কথাই নাই! দুর্ধর্ষ খুনি বাস্টার্ড! রঞ্জুর মাথা নষ্টের কারণ....সাথে আমারও🙂 'কন্ট্রাক্টের' পর 'নেক্সট' এই সিরিজের সেরা বই আমার কাছে। 'নেক্সাস' তেমন জমে নাই🥱
এই সিরিজ এতদিন আগে পড়েছি যে এইবই পড়ার আগে বাকিগুলোও পড়ে দেখতে হয়েছে, তাও আশাহত হইনি। ভালোই ছিল জেফরি বেগ-বাস্টার্ডের নতুন উপ্যাখান। এই সিরিজ কী আপাতত শেষ? এইটাই মাথায় ঘুরছে।
লেখকের অনেক পুরনো পাঠক আমি। বাতিঘর প্রকাশনীর বই পড়া শুরু আমার লেখকের নেমেসিস দিয়েই। সেই সিরিজেই ৬ষ্ঠ নম্বর বই পড়া শুরুর আগেই অসম্ভব আগ্রহ কাজ করছিল আমার। এদিকে আমার দীর্ঘদিনের রিডার্স ব্লক তো রয়েছেই!
বইটাকে কয়েকটা ভাগে ভাগ করা যায়, ১. অমূল্য বাবুর পূর্ব ইতিহাস ২. রঞ্জুর 'ব্ল্যাক রঞ্জু' হয়ে উঠার গল্প ৩. ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতার ব্যবহার (!)
গল্পের শুরুটা দারুন ছিল, শুরু করেই পাঠককে আটকে ফেলার মত। এতদিন বাদে এই সিরিজের নতুন বই, তাই সভাবতই পুরনো চরিত্রদের খুঁজে ফিরবো। কিন্তু বাস্টার্ড কে গল্প আনার পেছনে অনেক নাটক থাকলেও কমন যেন জমেনি। লেখক চেয়েছিলেন বাস্টার্ড-এর পরিচয়ের সাথেই ক্লাইম্যাক্স কিছু ঘটানোর। সেটাই ঘটেছে তবুও কেমন যেনো হয়ে উঠে নি।
লেখার বিষয় যদি বলি, কোনো ঘটনা ঘটে যাবার পর, পরবর্তী প্রায় ২/৩ অধ্যায় ধরে সেটা কিভবে ঘটলো ব্যাখ্যা করা। এতে গল্পের পরিধি যেমন বড়ো হয়েছে তেমনি মাঝে মাঝে কিছুটা বিরক্তিবোধ ও হয়েছে!
এবার আসি মূল প্লটে, শুরুটা ভালো হলেও, টানটান উত্তেজনা, রেসের ঘোড়ার মতো। কিন্তু হঠাৎ করেই দুই মাসের বিরতি। মনে হচ্ছে ঘোড়াটা হটাত করেই ট্র্যাকে পরে গিয়েছে। তখন মাথা চাপড়ে বলছি, একি! আসলেই তাই হয়েছে, লেখকের হুট করেই এই বিরতি দেয়াটা আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়েছে, লেখার স্বাভাবিক গতিময়তাও ক্ষুণ্ন হয়েছে বৈকি। কিন্তু পড়া থামাইনি সেখানেই, পরে গিয়েছিলাম আবার। একটানা। এরপরের একের পর এক ঘটে যাওয়া সবকিছু, আটকে রেখেছিল বইয়ের সাথে।
বাস্টার্ড-এর ঠান্ডা মাথার পরিকল্পনা, জেফরি বেগের অপরাধীর পিছনে ধাওয়া। সবই ঠিক ছিল। তবুও কেন যেনো মনে হচ্ছিল সব চরিত্রই ম্লান। নিজের সবটা প্রকাশ করতে চেয়েও পারছে না। একারণে মনে হচ্ছিল, পড়েও তৃপ্তি পাচ্ছি না!
ব্যবচ্ছেদ অধ্যায়, বরাবরের মতই ভালো ছিল, যদিও অনেক আগেই বুঝতে পেরেছিলাম, নতুন ভাইজান চরিত্রের সাথে মিলটাও লেখক ভালই ঘটিয়েছেন, এজন্যে অবশ্যই লেখকের প্রসংশা প্রাপ্য। তবে গল্পের শেষটা লেখক গুছানোর চেষ্টা করলেও আবেগ, প্রাপ্তি নিয়েও অসম্পূর্ণ মনে হয়েছে!
অনেকদিন পর এই সিরিজের বই পড়ায়, নাকি আসলেই ভালো ছিল, কেননা সবমিলিয়ে পড়ার সময়টা খারাপ কাটেনি। বইয়ের পাতায় আটকে রাখার মতই একটি থ্রিলার। অনেক ঘটনা আরো খোলাসা করেছেন লেখক। আশা করছি সিরিজের পরের বইয়ে আরো জমজমাট কিছুই পাবো।
"নেক্সট" পড়ার মাধ্যমে বেগ-বাস্টার্ড সিরিজ সমাপ্ত করলাম। একক লেখক হিসেবে সবথেকে বেশি পড়েছি নাজিম ভাইয়ের। বেগ-বাস্টার্ড সিরিজ সহ মোট আটটি বই। উইশলিস্টে আছে লেখকের আরও দুটি বই।
নেক্সট বইটা সম্পর্কে আলাদা করে জানানোর কিছু নেই। গত বইমেলায় প্রকাশিত হবার পরে অসংখ্য মানুষ পড়েছেন তুমুল আরাধ্য এই বইটি। আমার এই পোস্ট শুধুমাত্র অনুভূতি জানানোর জন্য।
টিপিক্যাল নাজিমীয় লেখনির বই এটি। মাঝে কিছু পৃষ্ঠা স্লো মনে হলেও প্রায় পুরো বইটাই বেশ দ্রুতগতির, নাজিম ভাইয়ের লেখনি যেমন হয় আরকি।
সিরিজের অন্য বইগুলোর মতো এখানে বেগ-বাস্টার্ড জুটিকে বেশ উপভোগ করেছি। শেষের দিকে বাস্টার্ডের সহযোগিতার ফলেই অসাধ্য সাধন করে ফেলে জেফরি বেগ।
বইটার শুরুতে ব্লাক রঞ্জু বেচে আছে কি না সেটা নিয়ে কাহিনি এগিয়ে যায়।
এদিকে কনফেশনে দেখা যায় মরে গেছে পেশাদার খুনি বাস্টার্ড। সে কি জীবিত আছে? এটা নিয়েও ধোয়াশা তৈরি হয় বইয়ে।
শীর্ষ সন্ত্রাসী ব্লাক রঞ্জু ফিরে এসেছে। আগের থেকেও শক্তিশালী তার দল। আপনার কি নিশ্চিত যে দিল্লিতে রঞ্জু আসলেই মরেনি?
বইয়ের প্রায় প্রতিটা অধ্যায়েই ছিল ক্লিফহ্যাঙ্গার। সেগুলো বেশ উপভোগ করেছি। বইটিকে এগিয়ে নিয়েছে চমকপ্রদ ক্লিফহ্যাঙ্গারগুলোই।
বিদেশী থ্রিলার খুব বেশি পড়া হয়নি। তবে যতটুকু পড়েছি তাতে বলতে পারি নাজিম ভাই তাদের থেকে ভালো লেখেন😁 এ বিষয়ে আপনাদের মন্তব্য কী?
অন্তত পাতায় পাতায় থ্রিল বিষয়টি নাজিম ভাইয়ের প্রতিটি বইয়েই উপস্থিত।
যাইহোক, বইটি না পড়ে থাকলে পড়তে পারেন৷ রেকমেন্ডেড। আমার কাছে নেক্সাস, কন্ট্রাক্টের পর এটাই সিরিজের সেরা বই।
꧁༺ ফিরে আসে সময় বারংবার বাতাসে প্রতিশোধের আগুন বারবার ফিরে আসে সে। ༻꧂
কে ফিরে এসেছে? ব্ল্যাক রঞ্জু? কিন্তু তাকে তো নিজ হাতে পুড়িয়ে মে*রেছে বাবলু! জ্বলন্ত অগ্নিচিতায় ছটফট করে পুড়তে দেখেছে রঞ্জুকে। শুধু বাবলু নয়, এই ঘটনার সাক্ষী ছিল হোমিসাইড ইনভেস্টিগেটর জেফরি বেগ নিজেও। তবে এসব হচ্ছেটা কী! ঢাকা শহরে আবারো এমন চাঁ*দাবাজি কারা শুরু করলো। এক টিভি চ্যাঝনেলের মালিকের কাছে ফোন করে চাঁ*দা দাবি করে ঘটনার সূত্রপাত। এবং ফোনে জানানো হয় তারা ব্ল্যাক রঞ্জুর লোক। রঞ্জু বেঁচে আছে! বহাল তবিয়তে দলের হাল ধরেছে আবার!
বিষয়টি আসলে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে তখনই যখন আরেকজন সাবেক এমপি পুত্র গু*লিবিদ্ধ হন। মুনেম চৌধুরী নিজেও বড় এক আমেরিকান ভিত্তিক কোম্পানির সিইও। নিজের অ্যাপার্টমেন্টের সামনেই গাড়ি নিয়ে যাবার সময় গু*লিবিদ্ধ হন তিনি। দারোয়ান দেখেছিল খুব অল্প বয়সী এক ছোকড়া মশার ওষুধ দিচ্ছে। জায়গাটা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। সেই সুযোগে কাজ সারা হয়। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় এরা নকল সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মী সেজে এসেছিল। মুনেম চৌধুরীর কেসটা নিয়ে উপর থেকে চাপ আসতে শুরু করে হোমিসাইডের কাছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী চিন্তিত এই কেস নিয়ে!
আল্টিমেটাম নিয়ে জেফরি কাজ করা পছন্দ করে না। খানিকটা বিরক্ত বোধ করে সে। খুঁজতে বেরিয়ে আসে রহস্য একের পর এক। জেফরির নিজেরও বিশ্বাস হয় না রঞ্জু বেঁচে আছে। কিন্তু ওরা এমন দুইজনকে ধরে আনে যারা দাবি করছে রঞ্জুর সাথে তারা কথা বলেছে। চেহারা দেখেনি তবে শুনেছে আগুনে পুড়ে খুবই বাজে অবস্থা। জেফরি অবাক হয়। আরো তদন্ত চলতে থাকে। এই কেসের সাথে জড়িয়ে পড়ে প্রভাবশালী এক ব্যাংকও। সেখানে রাহিদ হাসান বলে এক কর্মকর্তা রঞ্জুর দলের হয়ে কাজ করে! ব্যাংক ম্যানেজার, জেফরি, সহকারী জামান সবার চক্ষু চড়কগাছ! এই রাহিদ হাসান মুনেম চৌধুরীর সব তথ্য রঞ্জুর দলকে দিয়েছে। মুনেম চৌধুরী এই ব্যাংকের গ্ৰাহক।
জেফরি বুঝতে পারে ঘটনা আরো রোমাঞ্চকর। এখানে আরো অনেকেই জড়িত। রঞ্জুর কাছাকাছি পৌঁছাতে হলে বর্তমানে রঞ্জুর দলের হাল ধরেছে যারা তাদের ধরতে হবে।
আচ্ছা ব্ল্যাক রঞ্জু যদি ফিরে আসে তাহলে বাস্টার্ড কোথায়? নাহ সে বাবলু। লেকের পাড়ে যে ঘটনাটা ঘটেছিল তারপর বাবলু কী সত্যিই হারিয়ে গেছে চিরতরে! কই তার দেহটাও তো ভেসে উঠলো না। নাকি ভেসে গেল শান্ত মেঘনা নদীর স্রোতে! আহা! বাবলু! অমূল্য বাবু বিদেশ থেকে দেশে ফিরেছেন। ফ্লাইট বাংলাদেশে ল্যান্ড করতেই তিনি সোজা উঠলেন নিজের কক্সবাজারের হোটেলে। সেখানে ম্যানেজারকে বলাই আছে তিনি সাধারণ মানুষের মতো থাকবেন। কোনো ভিআইপি খাতির নয়। সর্বদা আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারা মানুষটি নিজের অতীতের কথা ভাবেন, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভাবেন। বাবলু প্রতিবার আবেগে যে কাজই করেছে তাতেই ওর বিপদ হয়েছে।
অমূল্য বাবুর উদ্দেশ্য কিছু বোঝা যাচ্ছে না। তিনি মহাকাল পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি কে রুমে ডেকে পাঠালেন। তার সাথে চললো গোপন আলোচনা। আবার নতুন তৈরি হওয়া হাসপাতালে তিনি নাকি ভর্তি আছেন গুরুতরভাবে আহ*ত হয়ে। এসব হচ্ছেটা কী! অমূল্য বাবু কীসের জন্য এসব করছেন? কাকে খুঁজছেন তিনি?
জেফরির জীবনে রঞ্জু বোধহয় তোলপাড় শুরু করেছে। মুনেম চৌধুরীর কেস তদন্ত চলছে আবার হঠাৎ করেই আবাসিক এলাকা সোয়ান লেকে সাত নাম্বার ভবন থেকে পাওয়া গেল তিনটি লা*শ। ঢাকার মধ্যেই একটু দূরে নিরিবিলি এই এলাকা কেঁপে উঠলো গু*লির আওয়াজে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো যাদের লা*শ পাওয়া গেছে তারা ডিবি পু*লিশের পোশাক পরা। গেটের দারোয়ানেরও একই কথা কালো মাইক্রোবাসে করে ওরা আসে আ*সামি ধরতে। এই ভবনের সামনে এসে খোঁজ করে প্রথমে নওরীন খান নামের এক মহিলাকে। কিন্তু নওরীন খানের ফ্ল্যাটে গিয়ে একটা লা*শ পাওয়া গেলেও ফ্ল্যাটে নওরীন, তার ছেলে জায়ান কিংবা কাজের লোক কাউকে পাওয়া যায়নি। পাশের ফ্ল্যাটে পাওয়া গেল আরো দুটো লা*শ। সেখানেও কেউ নেই!
জেফরি বেগ রহস্যের জট ছাড়াতে গিয়ে আরো যেন পাকিয়ে ফেলছে। একের পর এক ঘটনা ঘটছে। আচ্ছা এগুলো কী সবই রঞ্জু করাচ্ছে? আবার জেফরির মনে সন্দেহ হচ্ছে রঞ্জু কী বেঁচে আছে? প্রতিশোধ নিতে আবার ফিরে এসেছে? অমূল্য বাবুর কাজকর্ম ও রহস্যময়। সোয়ান লেকে যারা মা*রা গেছে আদৌও এরা ডিবির লোক? ওই ফ্ল্যাটের মহিলা ও বাচ্চাটা কোথায়? পাশের ফ্ল্যাটেই বা কে থাকতো? আর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন রঞ্জুর বড় শত্রু বাবলু ওরফে বাস্টার্ড কোনোক্রমে কী সেও বেঁচে আছে? রহস্য, সন্দেহ, রাজনীতি, ত্রাসের রাজত্ব কিংবা র*ক্তের স্রোতে এই গল্প কী লিখবে নতুন করে আবার প্রতিশোধের গল্প?
🧼পাঠ প্রতিক্রিয়া:
"বেগ বাস্টার্ড" সিরিজ পড়তে পড়তে চলে এলাম সিরিজের ষষ্ঠ বই "নেক্সট" এ। কনফেশন কে অনেকেই কন্ট্রাক্ট এবং নেক্সাসের বর্ধিত অংশ বলেছেন। অনেকেই নাজিম ভাইকে কঠোর সমালোচনা করেছেন। এরপর আছে করাচি। অবশ্য হাসবেন্ড বললো করাচি পরে পড়লেও চলবে। তাই ষষ্ঠ বইয়ে চলে এলাম করাচি স্কিপ করে।
শুরুতেই ভালো লাগার বিষয়গুলো বলি যেভাবে আগের গুলোতে বলেছিলাম। এখানে বেশ ভালো টুইস্ট দিয়েছেন নাজিম ভাই। যেভাবে শুরুতে গল্প এগোচ্ছিল বেশ বোরিং ছিল। কিন্তু মাঝপথে গতি বাড়িয়ে একের পর এক টুইস্ট সাথে টানটান উত্তেজনা। বরাবরের মতো সাবলীলভাবে উপস্থাপন করেছেন নাজিম ভাই। আশেপাশের পরিবেশ, ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর চরিত্রকেও বেশ সুন্দর বর্ণনা করেছেন।
এই বইয়ের সবচেয়ে বড় রহস্য আসলেই কী ব্ল্যাক রঞ্জু বেঁচে আছে? এই প্রশ্নের উত্তরে নাজিম ভাই অতীত ও বর্তমানের একটা দারুন মিশেল দিলেন। ফ্ল্যাশব্যাকে অতীতের ব্যাখা ছিল যাতে করে বোঝা যায় কেন কী কারণে ঘটনাগুলো ঘটেছিল।
এই বইয়ে অমূল্য বাবুর অতীত জীবনের কথা আছে। এই অংশটি বেশ আবেগতাড়িত। ভদ্রলোককে ঠান্ডা মাথার মানুষ হিসেবে বেশ লাগে। যেকোনো পরিস্থিতিতে ঠান্ডা মাথায় উপায় বের করে ফেলেন।
জেফরিকে আবারো অমূল্য বাবু ঘোল খাওয়ালেন। বেশ হাসি পাচ্ছিল তবে জেফরি সবসময় নিজের রোলে ভালো করছে। আমি জানি না সিরিজের লেটেস্ট বইয়ে জেফরির ভূমিকা কী। তবে এখানে জেফরির বুদ্ধিমত্তা ভালোই দেখা গেছে।
খারাপ তেমন কিছু নেই বলার মতো। সবমিলিয়ে ভালো লেগেছে। হোমিসাইডে আবার পুরোনো লোক ফিরিয়ে এনেছেন লেখক। আবারো বলি এই সিরিজ পড়তে হলে আপনাকে কাহিনীর প্লট বুঝতে হবে। তাই চরিত্রদের মুখে গালাগালি নিয়ে অভিযোগ করবেন না। এটা সবখানে থাকবে। তবে ১৮+ ছিলো পরিমিতিবোধে এটা আমাকে দারুন স্বস্তি দিয়েছে।
🧼বইয়ের নাম: "নেক্সট" 🧼 লেখক: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন 🧼প্রকাশনী: বাতিঘর প্রকাশনী 🧼প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২০২২ 🧼 মুদ্রিত মূল্য: ৫০০ টাকা