এটা প্রথম আমার মাথায় আসে ছোটবেলায়। আমাদের বাথরুমে একটা পিঁপড়ার বাসা ছিল। আমি একদিন মনের খেয়ালে সেখানে বদনা দিয়ে পানি ঢেলে দিছিলাম। ওদের বাসা ভেঙে একেবারে ভেসে গেছিল।
তার দুই-চার দিন পরেই সুনামি হলো জাপানে। সবাই বলল, সমুদ্রের নিচে ভূমিকম্প হলে সুনামি হয়। আমার মনে হইল পিঁপড়ারাও ভাবে আমার বদনার পানিগুলা সুনামি বা জলোচ্ছ্বাস বা আরও কিছু।
পিঁপড়া যেমন আমাদের দেখতে পায় না, দেখতে পারে না হাতি কে, জানে না মুরগি কীভাবে রোস্ট করে কিংবা স্যুপ খেতে কেমন, ঠিক তেমনি মানুষ কি আসলে তার চোখ দিয়ে সব প্রাণী দেখতে পায়? পায় না।
কিন্তু সে প্রাণী বা জীব বা অন্য কিছু আমাদের ওপরের ফ্ল্যাটে ঠকঠক করবে কেন?
ছুটি শেষ, চলে যাবার আগে ভাবলাম ছোট একটা বই খুঁজি, যদি পড়ে রেখে যাওয়া যায়। এই বইটা পেলাম ছোট বইয়ের দলে, লাইট বই হিসেবে তুলেও নিলাম। এর আগেও বইটা পড়ার চেষ্টা করেছি, খুব একটা সুবিধা করতে পারিনি। এবার এক ঘন্টাতেই শেষ।
বইটি মূলত রম্যরচনা গোত্রীয় স্মৃতিচারণ মূলক বই। লেখাটা পড়ে মনে হলো এই গল্পগুলো আড্ডায় শুনতে বেশ মজা হবে পড়ার চাইতে। বেশ জমবে। আমার ছেলেবেলা অত্যন্ত দুরন্ত ছিল। আমি এখন যতটা শান্ত, ছোটবেলায় ততটাই বদ ছিলাম বিধায় যে কারো ছেলেবেলার যেকোনো স্মৃতিচারণ আমি কোনো না কোনো ভাবে মিলাতে পারি নিজের সাথে। কত জায়গায় লেখিকার বলার ঢঙে বেশ হেসেছি। বেশ মজার মানুষ লেখিকা বোঝা যায়। আমার রম্যরচনা কেনার শখ কিছুটা পূরণ হলেও আরেকটু মজা হলে মজা হতো!
আসলে পারমিতা হিমের লেখায় যে কোন রকমের ভণিতা ছাড়াই গল্প বলে যাওয়ার উপস্থাপনা, এটা আমার বেশ ভালো লাগে। উনি উনার জীবনের স্মৃতিগুলো লিখেছেন, সঙ্গে বর্ণনা করেছেন অবিশ্বাস্য সব দৃশ্যের। এমনিতে পারমিতা হিমের মুখে গল্প কথা শোনাও অনেক দারুণ অভিজ্ঞতা। কিন্তু লেখার মধ্যে যে সরলতা আছে তা পাঠক হিসেবে বেশ আনন্দ দেয়। ছোট্টবেলার ঘুম থেকে ওঠা বালিকা যখন দেখে উঠোনজুড়ে পানি টুপটুপ, কেউ পাশে বসে গাইছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত, সেই দৃশ্য এই যুগে পারমিতা যেভাবে বর্ণনা করেন, তার জন্য হলেও বইটা পড়া উচিত।
একবার পড়ার মত খুব সুন্দর একটা বই।
*** *** ***
I like Parmita Heem's presentation of storytelling without any fuss. She wrote the memoirs of her life, describing all the incredible scenes. Listening to the story in the face of Parmita Heem is also a great experience. But the simplicity of the writing is quite pleasing to the reader. The book should be read at least for the way Parmita describes the scene when a girl wakes up as a child and sees water splashing around the yard, someone sitting next to her singing loud music.
অনেকটা সময় ধরে বই পড়ি না। বই পড়িনা বলতে ননএকাডেমিক পড়া হয় না। সেই মার্চের পর ঠিকঠাক একটা বই শেষ করেছি কিনা মনে পড়ে না। তো এই সপ্তাহে বন্ধে ভাবলাম, ছোট্ট একটা বই ধরি, পড়া শুরু করি, দেখি ব্লক কাটানোতে হেল্প করে কিনা! যেই ভাবা সেই কাজ!
পারমিতা হিম'এর লেখা "বর্ষার বিয়ে" ১৫ টি ছোট্ট ছোট্ট গল্প নিয়ে ১০২ পৃষ্টার ক্রাউন সাইজের একটা বই। গুল্পগুলো পারমিতা হিমের স্মৃতিচারণ এর সাথে তার সামান্য কল্পনা মিলিয়ে লেখা গল্প! উনার লেখা উপস্থাপনা, গল্পের বর্ণনা বেশ দারুণ। আপনার পড়তে ভালো লাগবে আশা করছি!
ছোট্ট একটা মেয়ে যদি মোহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যারকে বলে আপনি তো আপনার সাক্ষরের কতগুলো ফটোকপি করে আনলেই পারেন, অযথা এত ভিড় জমতো না। এমন কথা শুনলে পড়তে ইচ্ছে করবে না বলুন? কিংবা ভরা বর্ষায়, প্যাচপ্যাচে কাদায় কারো বিয়ের গল্প , ক্লাসে সুন্দর ম্যামকে দেখে চক্ষু চড়কগাছ কিংবা ধরুন আপনার স্টুডেন্ট কে জিজ্ঞেস করলেন, I am a student এটা কোন টেন্স — যেহেতু অ্যাম আছে তাই এটা কন্টিনিউয়াস টেন্স। আরেক ছাত্র যদি বলে — আমরা স্কুলে ভর্তি হইয়াছি, স্টুডেন্ট হইয়াছি আগেই যার ফল এখনো বর্তমান তাই এটি পারফেক্ট টেন্স!
এসব সব মজার গল্প পেলে কার না ভালো লাগবে বলুন! কারো কারো হয়তো ছোটবেলার স্মৃতিচারণ হবে। ১০২ পৃষ্ঠার জর্নিটা আপনার ভালোই কাটবে আশা করি!