এই সংকলনের কল্পবিজ্ঞান গল্পগুলি বিভিন্ন সময়ে 'দেশ', রবিবাসরীয় 'আনন্দবাজার পত্রিকা, বিস্ময়। সায়েন্স ফিকশন, 'আশ্চর্যা', 'কিশোর জ্ঞান বিজ্ঞান', 'এ যুগের কিশোর বিজ্ঞী' ইত্যাি মাসিকপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল। বিজ্ঞান ঘেঁষা এই গল্পগুলির কয়েকটিতে বিদেশি কাহিনির ছায়া আছে।
মানুষ এখনও মাঝেসাঝে হেসে থাকে। সেইটুকু বন্ধ হবার সময়ও কি ঘনিয়ে এসেছে? সভ্য বলে যাদের বড়াই, সেইসব দেশ যখন দু-হাজার তেইশ খ্রিস্টাব্দে ধ্বংস হল, তখন কেনই বা এশিয়ার সমস্ত দেশ মাটির নীচে আশ্রয় নিল? না হয় নিই, কিন্তু তার ফলে কি মানবচরিত্রের পরিবর্তন হল কিছু? বন্ধুকে চতুর্মাত্রিক বাড়ি করে দিতে গিয়ে কী বিভ্রাটে পড়েছিল যাদবপুরের পাস-করা আর্কিটেক্ট প্রিয়তোষ তা-ও নিশ্চয় শোনেননি? বাংলায় পড়বার মতো সায়েন্স ফিকশন পাচ্ছেন না বলে যদি আক্ষেপ থাকে তাহলে এই বইটি পড়ে দেখুন।
পার্টনার এক ছিলেন বসন্তকুমার বন্দোপাধ্যায়ের ১৯৫৪ সালে। - পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ইংরেজি সাহিত্যে বিবাহসূত্রে ১৯৫৩ সাল থেকে কলকাতাবাসী, মধ্যে তিন বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। কলকাতার দুটি কলেজে অল্পদিন পড়াবার পর চাকরি ছেড়ে পুরোপুরি ছিলেন লেখার জগতে। নানা বিষয়ে, ইংরেজি ও বাংলায়, বড়দের ও ছোটদের জন্য লিখেছেন- রম্যরচনা, প্রবন্ধ, জীবনী, কল্পবিজ্ঞান, ছড়া, সমালোচনা। অনুবাদক রূপেও সুখ্যাত। আরোগ্যনিকেতন, প্রতিদ্বন্দ্বী, পূর্ব-পশ্চিম, পিঁপড়ে পুরাণ, মনুদ্বাদশ, খারিজ ইত্যাদি ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন। বাংলায় অনুবাদ করেছেন ‘আ সুইটেবল বয়'। স্বামী পরমাণুবিজ্ঞানী শান্তিময়ের সঙ্গে যুগ্মভাবে ‘পরমাণু জিজ্ঞাসা’ গ্রন্থের জন্য পেয়েছেন রবীন্দ্র পুরস্কার, ১৯৭৪-এ। শখ ছিল বাগানচর্চা, সেতার, মুদ্রা সংগ্রহ ও পারিবারিক ইতিহাসের উৎস সন্ধান। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ২৫ মে, ২০২১ সালে ৮৬ বছর বয়সে তাঁর জীবনাবসান হয়।
গত শতাব্দীর সাতের দশকে 'বিস্ময়' ও 'আশ্চর্য!' পত্রিকার মাধ্যমে বাঙালির সামনে প্রাপ্তবয়স্ক পাঠকের উপযোগী কল্পবিজ্ঞান যাঁরা রচনা করতেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন এণাক্ষী চট্টোপাধ্যায়। পরে, আট ও নয়ের দশকে বিভিন্ন শিশু-কিশোর পত্রিকায় জিনতত্ত্ব থেকে মহাকাশবিজ্ঞান, পরিবেশ-চর্চা থেকে স্মৃতির স্বরূপ— এমন নানা বিষয় নিয়ে সরস অথচ যৌক্তিক গল্প পরিবেশন করেছেন তিনি। এবিপুল সংখ্যক ছোটো ও বড়ো গল্প এই চমৎকার হার্ডকভারে সংকলিত হয়েছে। গল্পগুলোর মধ্যে একটি বড়ো অংশই বিদেশি কাহিনির ভাবানুবাদ বা তাদের ছায়ায় রচিত। কিন্তু লেখনীর সরসতা ও নির্মেদ ভাবের জন্য না পড়ে ছেড়েও দেওয়া যায় না। বইটির সঙ্গে একটিই মোটিফ (হরিপদ!) ব্যবহৃত হয়েছে। আরও কয়েকটা ছবি থাকলে খাসা হত। বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের অনুরাগী হলে এই বইটিকে মোটেও উপেক্ষা করবেন না।