‘জাদুঘর' নামে এক নতুন জঙ্গিবাদ ছড়িয়ে গেছিল চার বছর আগে। ঠেকানো যায়নি তার বিস্তার, প্রধানমন্ত্রীর প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা করছে দেশটির সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা। কাজেই ডাক পড়লো মূর্তজার। কাঁটা দিয়েই তো কাঁটা তুলতে হয়। ভয়ঙ্কর এক খুনিকে জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতার পেছনে লেলিয়ে দিলো সে।
গণভবন পর্যন্ত গড়ালো জল। ওদিকে দিনদিন তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ধর্মপ্রচারক নিশান মাহমুদ। বাংলাদেশের রাজনীতির পটপরিবর্তনের জন্য মোক্ষম এক পরিবেশ, এর মধ্যে চলছে শেকড়ের খোঁজ। ভয়ঙ্কর অ্যাকশন, বুদ্ধির খেলা, আর রাজনৈতিক চাল-তিনের সমন্বয়ে ঘটনা গড়াচ্ছে তো বটেই, কিন্তু এই সমস্যার সমাধান লুকিয়ে আছে একটি মাত্র প্রশ্নের মধ্যে। নির্মম এই জঙ্গি কেন বেছে নিয়েছিল বিখ্যাত সে দু'লাইন?
জাদুঘর পাতা আছে এই এখানে রক্তের ঝিকিমিকি আঁকা যেখানে
ভালো পরিবার ও ভালো সমাজে বেড়ে ওঠা ভদ্র সন্তান কীভাবে নিষ্ঠুর এক জঙ্গিতে পরিণত হতে পারে তা-ই জানতে হবে মূর্তজাকে। প্রতিটি পাতায় অ্যাকশন, তবে স্রেফ থৃলার হিসেবে নয়! প্রতিটি বাবা-মা, কিংবা সন্তান গ্রহণে ইচ্ছুক তরুণ-তরুণীর জন্য এই বইটি অবশ্য পাঠ্য।
Kishor Pasha Imon is a famous Bangladeshi crime writer.
Musa Ibne Mannan, known by the pen name KP Imon, is an accomplished writer who initially gained recognition through his short stories on social media. Over the course of his career, he has written over 220 short stories, captivating his online audience with his vivid imagination and storytelling skills. Building on his success in the digital realm, Imon went on to establish himself as a prominent novelist, with his works being published in both Bangladesh and India.
His regular publishers are Batighar publications, Abosar Prokashona Songstha, and Nalonda in Bangladesh. Abhijan Publishers solely publish his books in India. He is the author of 13 novels and translated 9 books to Bengali till date (5/10/23).
He graduated from the Department of Mechanical Engineering at Rajshahi University of Engineering & Technology. Presently, he resides in Dallas, TX, focusing on his PhD studies in Mechanical Engineering at UT Dallas after completing his MS at Texas State University.
His other addictions are PC gaming, watching cricket, and trekking.
নিঃসন্দেহে শ্রেষ্ঠ থ্রিলারের কাতারে ফেলা যায়। ইদানিং বড্ড অলস হয়ে গেছি। তাই রিভিউ লেখার মতো এতো ধৈর্য শক্তি নেই। বিশেষ করে এসব বৃহৎ পরিসরের সুলেখনী নিয়ে রিভিউ লেখাটাও ঝকমারি কাজ। তবে একটা ব্যাপার জানার খুব ইচ্ছে, শওকত আল বাশার কে নিয়ে আর কি কোন লেখা পাব?
জাতীয় নির্বাচন সামনে। মাইকেল চাকমার নেতৃত্বে "সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ" গড়ে উঠেছে। আগের দিনের বাম রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর মত কঠোর নিয়মতান্ত্রিকতায় মোড়ানো এই দল ক্ষমতায় যেতে চায়। তবে কোন রোমান্টিসিজমে ভুগে নয়।
"জাদুঘর পাতা আছে এই এখানে" এর ঘটনার চার বছর পার হয়ে গেছে। উগ্রপন্থি সংগঠন "জাদুঘর" যা বাংলাদেশের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ভবন থেকে দূর্গম পার্বত্য চট্টগ্রাম কাপিয়ে দিয়েছিল তা অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। সত্যি কি তাই?
জাদুঘরের অনুপস্থিতিতে গড়ে উঠেছে "অক্ষরাস্ত্র" এর মত জঙ্গী সংগঠন। তবে জাদুঘরের তেমন একটা ফিলসফি ছিল না। নতুন এই উগ্রপন্থি গ্রুপের আছে।
নিশান মাহমুদ। অক্ষরাস্ত্রের দার্শনিক গুরু। অল্প বয়স থেকেই চমৎকার লেখনীর কারণে প্রধানমন্ত্রী আয়ান আব্বাসের নাম্বার ওয়ান অ্যানেমি শওকত আল বাশারের জায়গা নিয়ে ফেলেছেন এই তরুন লেখক। ভাষা উপর অসাধারণ দখল এবং গবেষণার ফলশ্রুতিতে এই ক্ষ্যাপাটে নিশান ফেসবুকে পরিণত হয়েছেন সবচেয়ে বড় ইনফ্লুয়্যান্সারে।
একদিকে নিশান মাহমুদের বাণী অনেকে বিশ্বাস করছেন ধর্মগ্রন্থের মত আবার অন্যদিকে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে বিভিন্ন ভয়ানক জঙ্গী সংগঠন। হাকিকত - ই- বাংলা সেসবের মধ্যে অন্যতম। সরকারের পাশাপাশি অন্যান্য সব আন্ডারগ্রাউন্ড গ্রুপের টার্গেটে পরিণত হয়েছেন দেশে সাড়া ফেলে দেয়া এই ধর্মপ্রচারক। এত শত্রুর বিরুদ্ধে কতক্ষণ টিকবেন তিনি?
মূর্তজা "জাদুঘর পাতা আছে এই এখানে" আখ্যানে তাঁর অসাধারণ প্যাশন বা অবসেশনে জাদুঘরের প্রধান ফ্রি-উইলার রেডের প্রকৃত পরিচয় উদঘাটন করতে পেরেছিলেন। কিন্তু শওকত চলে যায় ধরাছোয়ার বাইরে। একদম গায়েব হয়ে যায় ফ্রি-উইলার রেড।
চার বছর আগের ঘটনা কিছু ভুলেনি মূর্তজা। তখনো ছিল এবং বর্তমানেও প্রধানমন্ত্রীর উপর হিট হওয়ার তীব্র সম্ভাবনা আছে। ক্যারিজম্যাটিক লিডার আয়ান আব্বাস অবশ্য কোন উগ্রপন্থির হুমকিতে গর্তে ঢুকার পক্ষপাতি নন।
বাংলায় বলে "কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলা" আবার ইংলিশে "টু প্লে ফায়ার উইথ ফায়ার" কিন্তু অর্থ একই। দানবকে দমাতে দানবের দরকার। মূর্তজা বাংলাদেশের সবচেয়ে ভয়ানক ট্র্যাকার লাগিয়ে দেন শওকত আল বাশারের পিছনে। এই এক্স-আর্মি পার্সন ট্র্যাকিং এর কাজে সবচেয়ে দক্ষ। পূর্ণদমে জাদুঘরের প্রাক্তন ফ্রি-উইলার রেডের সন্ধানে নেমে পড়েন দুর্দান্ত এই খুনি।
এদিকে দেশে চলছে সরকার এবং বিভিন্ন উগ্রপন্থি সংগঠনের ত্রিমুখি, চতুর্মুখি লড়াই। দেশজুড়ে ক্যাওস চলছে। একদিকে নিশান মাহমুদের অক্ষরাস্ত্র অন্যদিকে হাকিকত-ই-বাংলা দিনকে দিন শক্তি সঞ্চয় করছে এবং নিচ্ছে বিভিন্ন হিট। বাজারে জোর গুজব শওকত আর জাদুঘরের প্রধান নেই। তাঁর জায়গা নিয়েছে শাহেদ। কিন্তু তারপরও মূর্তজার প্রধান লক্ষ্য শওকত কেন?
ঘটনাচক্রে পার্বত্য চট্টগ্রামের গহীন জায়গায় চলে যায় ঐ ট্র্যাকার। অদম্য এই খুনি জাদুঘরের এক্স-ফ্রি-উইলার রেডকে শেষ করেই ছাড়বেন। চার বছর আগে ঐ ভয়ানক উগ্রপন্থীর বিভিন্ন কুকর্মের সঙ্গিনী অভয়া চাকমাই বা কোথায়?
ঢাকা শহরে মারাত্মক পাওয়ার স্ট্রাগল শুরু হয়ে যায়। ফিল্ডে নামেন শওকত স্বয়ং। কিন্তু এইবার প্রতিপক্ষ অনেক বেশি। সবার প্রতিপক্ষই বেশি। কে পারবেন শেষ পর্যন্ত টিকে যেতে? একটার পর একটা লাশ পড়ছে। নির্বাচন তো সামনে।
প্রচন্ড সাসপেন্স, একশন, অ্যাডভেঞ্চারের পাশাপাশি টানটান উত্তেজনার এই বইয়ে খুব সুন্দর করে উঠে এসেছে আমাদের সমাজে বিদ্যমান প্রজন্মের বিভিন্ন সাইকোলজিক্যাল ডিজঅর্ডার। ব্যর্থ প্যারেন্টিং, ব্যর্থ স্কুলিং, ছেলেমেয়েদের উপর ক্যারিয়ার বিল্ড আপের প্রচন্ড চাপ এবং এরপর তাদের ব্যক্তিগত জীবনের কোন প্রেশার পয়েন্ট বা দূর্বল স্থানে আঘাত পাওয়ায় চরম সাইকো অথবা জঙ্গীতে রূপান্তরিত হওয়ার যে মেন্টাল জার্নি তা এই গ্রন্থে যত বিশদভাবে উঠে এসেছে, আমার মনে হয় বাংলা সাহিত্যের খুব কম বইয়ে এরকম ঘটেছে।
লেখক কিশোর পাশা ইমন শুধুমাত্র থ্রিলার নয়, রচনা করেছেন এক সামাজিক আখ্যানের। তাই আমি জনরাতে সামাজিক উপন্যাস লিখেছি। লেখকের রচিত আমার পড়া দ্বিতীয় বই এটি। অসাধারণ স্টোরিটেলিং, এটেনশন টু ডিটেইলস এবং পুরো আখ্যানে ক্যাওটিক ইন্টারভ্যালে মারাত্মক সব টুইস্ট দিয়ে মাতিয়ে রেখেছেন লেখক এই বইটি। পাতায় পাতায় একশন সিনগুলো পড়ার সময় সচেতন পাঠকের মাথার ভিতর যে ফিল্ম চলে সেটার দৃশ্যগুলো বেশ পরিষ্কার মনে হয়।
বাংলাদেশের সবচেয়ে জেদি এবং পরিশ্রমী তরুন লেখক মনে হয় কেপি। এত অল্প বয়সে মান ঠিক রেখে তাঁর এতগুলো বই প্রকাশ সেই কথাই বলে। লেখক প্রতিদিন যেভাবে হাজার হাজার শব্দ লিখার প্র্যাক্টিস করে চলেছেন মনে হয় একযুগের উপর সময় ধরে, তিনি রাইটিং ক্রাফ্টসের কোন বই না পড়েই সব ট্যাকনিকগুলো ভালোভাবে আয়ত্বে এনে ফেলেছেন। হয়তো অনেক টার্ম লেখকের অজানা তবে উদাহরণ দিলে তিনি সেই ক্রাফ্ট ব্যবহার করতে পারবেন এবং প্রয়োজন হলে ব্রেক করতে পারবেন এসব রুলজ।
লেখক বিভিন্ন সাইকোলজিক্যাল কেইস স্টাডির রেফারেন্স দিয়েছেন বইয়ের শেষে তাই সমাজে যে আগ্লিনেস আছে সেটা লুকিয়ে রাখা বা না জানার কোন স্কোপ নেই। আজগুবি কোন কিছু তিনি লিখেননি। আমি যদ্দুর সম্ভব স্পয়লার ফ্রি থাকার চেষ্টা করেছি তবে এই বইয়ের একটি চেইস সিন একদম ওয়ান্ডারফুল ছিল। একশন সিনগুলো লেখক মনে হয় কোন একটা বা দু'টো চ্যাপ্টারে থ্রিডি এমনকি ফোরডিতে লিখেছেন। জাদুঘরের পার্ট টু বললেও এই বই স্ট্যান্ড এলোন হিসেবেও পড়া যাবে। তবে "জাদুঘর পাতা আছে এই এখানে" পড়ার পর এই বইয়ের মধ্য দিয়ে গেলে অন্যরকম মজা পাবেন পাঠক।
এইখানে জাদুঘর পাতা আমাদের একটা মাস্টারপিস। কেপি ইমন একসময় দেশে-বিদেশে লিজেন্ডারি রাইটার হিসেবে পরিচিত হবেন এটা আমার প্রেডিকশান। সমাজে মানুষের ব্যক্তিগত জীবনের বিভিন্ন অসহায়ত্ব লেখক এমনভাবে পোট্রে করেছেন যে সংবেদনশীল মানুষের চোখে পানি চলে আসতে পারে। পাঠক নিজেকে মনে করতে পারেন বিপন্ন।
শেষ করলাম এইখানে জাদুঘর পাতা আমাদের। এই বছরের অন্যতম আকাঙ্খিত ছিল এই সুবিশাল পরিসরের বইটা। অনেক সময় লাগল শেষ করতে, স্বাভাবিকভাবে যতদিন লাগে তারচে বেশি। সিরিজের প্রথম বইটা অন্যতম প্রিয় ছিল, ফলে এটাতেও এক্সপেক্টেশন ছিল বেশি। এক্সপেক্টেশন পুরোপুরি পূরণ না হলেও খারাপ লাগেনি। অ্যান্টি হিরো শওকত, মাইকেল চাকমা, ফরেনসিক এক্সপার্ট মর্তুজাকে আবারও দেখতে পেয়ে ভালো লেগেছে। সাথে যুক্ত হয়েছে ট্র্যাকার সামাদ ও নিশান মাহমুদ। জাদুঘরের সাথে এসেছে আরেকটি গুপ্তসঙ্ঘও। অধ্যায়গুলো চরিত্রভিত্তিক ভাবে ভাগ করা। প্রত্যেকটা চরিত্রই একেকটা মিশনে ছিল। সবমিলিয়ে বইটার সত্তুর ভাগ-ই উপভোগ করেছি।
যা উপভোগ করিনি সেগুলো হল, অনেকগুলো সিকোয়েন্স অতিরিক্ত দীর্ঘ। ডিটেইলিং ভালো লাগে, কিন্তু সিকোয়েন্সগুলো দীর্ঘায়িত হয়েছে। সাইকোলজিক্যাল সেশনগুলো গুরুত্বপূর্ণ, উপভোগ করেছি কিন্তু মাঝেমধ্যে ক্লিশে লেগেছে। সামাদের ব্যাকস্টোরির যুদ্ধের পার্টটা ভালো লাগেনি, পড়ার গতি কমিয়ে দিয়েছিল।
পুরো বইয়ে সাসপেন্স, টার্ন এর অভাব ছিল না। তবে দর্শন, কাহিনী বাস্তবের সাথে রিলেট করা সম্ভব হলেও সেটা না করে ফিকশনাল ইউনিভার্স হিসেবে নিলেই বেশি উপভোগ্য হবে।
অবশেষে শেষ হল জাদুঘর সিরিজের বিশালায়তনের দ্বিতীয় বই "এইখানে জাদুঘর পাতা আমাদের"। লেখকের প্রথম বই "মিথস্ক্রিয়া" বইটিতে যতটুকু দূর্বলতা ছিল একটু একটু করে প্রতিটি বইয়ে লেখক কাটিয়ে উঠেছেন। জাদুঘর সিরিজের দুর্দান্ত লেখনী তার ই ফল। "জাদুঘর পাতা আছে এই এখানে" বইটা মতাদর্শের কারণেই হোক অথবা লেখনীর জোরেই হোক আমার অনেক ভাল লেগেছিল তাই "এইখানে জাদুঘর পাতা আমাদের" নিয়ে আশাবাদী ছিলাম। বইটি নিয়ে আমার ব্যক্তিগত কিছু মতামত আছে।ভাল দিকগুলো তুলে ধরি শুরুতে।
প্রথমত, Capernaum নামে লেবানিজ একটা মুভি বিদ্যমান। এত বিষণ্ন মুভি আমি খুব কম ই দেখেছি। ব্যাড প্যারেন্টিং এর ট্র্যাজিক সাইড নিয়ে মুভিটার গল্প। প্যারেন্টিং বিষয়ে যখন মতগুলো উঠে আসছিল তখন মুভিটার কথা বার বার আমার মাথায় আসছিল। লেখকের কিছু পয়েন্ট ভাল লেগেছে যেমন বাবা মা এর আনকন্ডিশনাল ভালবাসার ব্যাপারটা। সব বাবা মা নিজের সন্তান কে অনেক ভালবাসেন কিন্তু সেটা যে কন্ডিশনাল না সেটা অনেক ক্ষেত্রেই প্রকাশ করতে পারেন না। ব্রাউন প্যারেন্টিং নিয়ে এজন্য এখনকার জেনারেশনের মধ্যে এতটা ক্ষোভ এবং বেশিরভাগ বাবা মা ই প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে এই ভুলটি করে বসেন। এই সমস্যাগুলো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হলে ব্রাউন প্যারেন্টিং এর অনেক সীমাবদ্ধতাই কাটিয়ে উঠা সম্ভব।
দ্বিতীয়ত, লেখকের বাকস্বাধীনতার বিষয়টি। লেখকের সবচেয়ে বড় অ্যাসেট হচ্ছে তার লেখার স্বাধীনতা। এই বিষয়ে লেখক সে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তা আমার কাছে যথার্থ মনে হয়েছে। বিগত কয়েক দশকের অনেক সাহসী লেখক এই যুগে তা লিখতে পারতেন কিনা তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।
তৃতীয়ত, ফাইটিং সিন বা চেজ সিনগুলোর বিবরণ। বাংলাদেশের থ্রিলার লেখাগুলোয় এখনো এই বিষয়গুলোতে দূর্বলতা আছে। কেপির লেখায় আমার কাছে তা যথেষ্ট সাবলীল মনে হয়েছে।
যেসব বিষয় দূর্বল লেগেছে তা হচ্ছেঃ
পিন্টুর চরিত্রের যেসকল বিষয় দেখানো হয়েছে তা মানলাম ব্যাড প্যারেন্টিং এর খাতিরে দেখানো হয়েছে কিন্তু গল্পের শুরুতে সেসকলের অতি বিবরণ লেখাটার শুরুর দিকে কিছুটা দূর্বল করেছে।
প্যারেন্টিং নিয়ে ভাল পয়েন্ট যেমন কেপি তুলেছেন তেমনি কিছু অভিমানের ভিত্তিতে দূর্বল পয়েন্ট ও তুলে ধরেছেন। আমার মনে হয় না বেশিরভাগ বাবা মা ই চান তার সন্তান মানসিকভাবে অশান্তিতে ভুগুক। অনুন্নত দেশে মেন্টাল হেলথ এখনো অতটা জনপ্রিয়তা পায় নি দেখেই বাবা মা দের ভুলের সংখ্যা টা বেশি। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে যারা নিজেদের হতাশা ব্যর্থতাকে সন্তানের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন কিন্তু একচেটিয়া সকলকে দোষারোপ করার যৌক্তিকতা আমি দেখি না অন্তত।
প্রতিটি লেখক ই নিজের মতাদর্শ লেখার মাধ্যমে সকলকে ছড়িয়ে দিতে চান। থ্রিলার লেখায় সমাজের বিরূপতার যে চিত্র কেপি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এ ধরণের লেখার প্রয়োজন অত্যধিক। জাদুঘর সিরিজ এদিক থেকে সফল।
চমৎকার থ্রিলার! পরীক্ষার এই প্রেশারের মধ্যেও পড়ে ফেললাম দুই খন্ড মিলিয়ে প্রায় এক হাজার পৃষ্ঠার উপন্যাসটি। দ্বিতীয় খন্ডটি আরও সুলিখিত মনে হয়েছে৷ পরে একসময় রিভিউ লিখব। চিন্তার খোরাক আছে বইটির মধ্যে।
কিছুদিন আগে মাউস নামের একটা কোরিয়ান ড্রামা দেখেছিলাম। কিছুদিন আগে না,গতবছর আসলে। এই থ্রিলার দেখার সময় যে অনুভূতি হয়েছিলো এই বই পড়েও সে অনুভূতি হচ্ছে।
নাম : এইখানে জাদুঘর পাতা আমাদের লেখক : কিশোর পাশা ইমন প্রকাশনি : বাতিঘর জনরা : মৌলিক উপন্যাস পৃষ্ঠা : ৫৫৯ সময়কাল : মার্চ ২০২২
জাদুঘর সিরিজের ২য় বই "এইখানে জাদুঘর পাতা আমাদের "। আমি আগেই ক্ষমা প্রার্থনা করছি লেখকের কাছে এই বই এর রিভিউ লেখা আমার জন্য সম্ভব নয় অন্তত একবার পড়ায়।এইখানে যা লিখছি সব আমার একান্ত অনুভূতি। জাদুঘর বই এর প্রথম টা পড়ার আগে বা পড়ার সময়েও আমি জানতাম না কাহিনী টা কতোটা বিস্তৃত। প্রথম বই টা শেষ করেই আমি ২য় বই টা শুরু করেছি মাঝে আর কোনো বই পড়িনি। জাদুঘর এর প্রথম বইটি কারো পড়া থাকতেই হবে এমন না। কিন্তু পড়া থাকলে এই সিরিজের এর শক্তি টা ঠিক কোথায় তা খুঁজে পাওয়া সহজ হবে। এই বই টি পড়ার সময় আমাকে অনেক কিছু ভাবিয়েছে, নতুন করে শিখিয়েছে।
আমার নিজের পড়াশোনা, জব অলমোস্ট মেডিকেল লাইন এর সাথে। তবুও আমি জানতাম না একটা বাচ্চা ৭ মাস বয়সে ভালো খারাপের অনুভূতি ধরা শিখে।
আমরা এমন একটা সময় পার করছি যখন বাবা মায়েরা বাচ্চাদের একদম পারফেক্ট বানাতে চায়। তাতে হারিয়ে যায় বাচ্চাটার নিজস্বতা। আমরা বড়োরা বাচ্চাদের উপর আমাদের ইচ্ছা অনিচ্ছা চাপিয়ে দেই। আসলে কি এটা হওয়া উচিৎ। আর যদি সেই বাচ্চা টা অন্যরকম হয় তখন ই সৃষ্টি হয় শওকত এর মতো মানুষদের,যারা সিস্টেম কে নতুন করে তৈরী করতে চায়। বিয়ে করে সংসার পেতে বাচ্চা জন্ম দিয়েই কাজ শেষ নয়। সেই সন্তানকে নিজের জা��়গাটা আপন করে চিনে নেওয়ানোটাই তো বাবা মার প্রথম কাজ হওয়া উচিৎ। এই বই টা প্রতিটি বাবা-মা, সন্তান নিতে ইচ্ছুক তরুণ-তরুণীর অবশ্যই পড়া উচিৎ।
রাজনীতি এর সম্পর্কে আপনার যদি কোনো জ্ঞান না থেকে এই বই ২ টি পড়লেও আপনি অনেক কিছুই অনুধাবন করতে পারবেন।
আছে সাইকোলজির চমৎকার কিছু ক্যারেক্টর।
প্রতিটি পাতায় পাতায় একশন, থ্রিলার, সাসপেন্স, কি হবে কি হবে এর পর কোনো চমক প্রেডিক্ট করতে করতেই আপনি দেখবেন লেখক আপনার প্রেডিকশনকে নিয়ে কি দারুণ ভাবে খেলেছেন।
এই জাদুঘর আমাদেরই তৈরী, সময়ের প্রোয়জনে আমরাই একে নিষ্ক্রিয় করি। সিস্টেম লসের যে দারুণ একটা সমাধান দেওয়া হয়েছে এই বই এ এইটা ভবিষ্যত রাজনীতিবিদরেও পড়া উচিৎ। এটলিস্ট গড়পড়তা চিন্তা ভাবনা থেকে একটু হলেও অন্যভাবে নিজের মস্তিষ্ককে চালাতে পারবেন তারা।
এই পুরো সিরিজ টা কি হেরে যাওয়া না জিতে যাওয়ার, এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে বই ২ টো পড়তে হবে বার বার। একবার পড়ে একটা ধোঁয়াশার মধ্যে পড়বেন আমার মতো। প্রতিটা চরিত্রকে আপনি অনুভব করতে পারবেন।তাদের দুঃখ, হেরে যাওয়া, পরিপূর্ণতাকে আপনি ছুঁতে পারবেন। আর সেই পাহাড় আর সমতলের নিয়ম আলাদা, আবার সমতলেও যে প্রতি স্তরে স্তরে বেঁচে থাকার নিয়ম আলাদা।
লেখকের জন্য দোয়া থাকলো সমস্ত বিপদ থেকে উনি দূরে থাকুন। এমন বই আমাদের আরো দরকার যে।
Bangla Bazar Books কে ধন্যবাদ বইটি আমার হাতে দ্রুত সময়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্য।
তবে উনি বাকস্বাধীনতার কথা বলে আবার সলিমুল্লাহ খান কে কটাক্ষ করলেন তার নিজস্ব মতবাদের জন্য। এটা কেমন যেন হিপোক্রেসি মনে হল।। বাক স্বাধীনতা সবার ই থাকবে - আস্তিক বা নাস্তিক সবার।।
কেও একজন তার নিজের মতবাদ রাখলে তাকে ছোট করা ত অনুচিত।
যাইহোক বই টা ভীষণ স্লো লেগেছে। অনেক অপ্রিয় সত্য আগের বই এ ও ছিল,এই বই এ ও আছে। সামনের টাতেও থাকবে। তবে বেশ স্লো ছিল এবার এর পার্ট টা।।
4.5/5 বইটা নিয়ে প্রচুর প্রচুর আলোচনা করা যায়। কারণ প্রচুর আলোচনার জায়গা আছে। প্রথমত এই বইটা প্রথম বইটা থেকে কিছুটা ভিন্নতর। প্রথম বইটা ছিল টানটান থ্রিলার। তবে এই বইটা স্লো বার্ন থ্রিলার পর্যায়ে রাখা যায়। তো সেই কারনে থ্রিল কিছুটা কম। আবার অনেকাংশের সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারও বলা যেতে পারে। কারণ সাইকোলজিকাল থ্রিলারে কিছু হওয়ার থেকে কি হয় কি হয় ভাব বেশি থাকে। তারপরে আসে হচ্ছে চরিত্র। এবং এই উপন্যাসের চরিত্র গুলোই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটা কি একটা থ্রিলার উপন্যাস বলার পাশাপাশি ক্যারেক্টার স্টাডি উপন্যাসে বলা যেতে পারে। কারণ এখানে ধরে ধরে প্রতিটি চরিত্রর সুন্দর করে ক্যারেক্টার স্টাডি করা হয়েছে। তাদের আচার-আচরণ চালচলন তারা কি ভাবছে, তাদের মাইন্ড স্পেসটা খুব গভীরে আলোচনা করা হয়েছে। সেই কারণে অনেকের জিনিসটা বোরিং লাগতে পারে। কিন্তু আমি এটাকে নেগেটিভ পয়েন্ট রাখবো না কারণ চরিত্র বিল্ড আপের জন্য এই জিনিসগুলো দরকার আছে। কারণ এখানে লেখক এর উদ্দেশ্য শুধুমাত্র একটা গল্প বলা না। তার উদ্দেশ্য গল্পের সাথে সাথে গুলোকে চরিত্রগুলোকেও বিল্ড আপ করা। শুধুমাত্র গল্পের খাতিরে চরিত্র নিয়ে আসলাম এবং নিয়ে যখন এসেছি তাইলে কিছু কাজ করাতে হবে এদের দিয়ে তাই কাজ করালাম ব্যাপারটা এরকম না। অনেক ভাবনাচিন্তা করে চরিত্রগুলোকে লেখক সাজিয়েছেন সেটা পুরোপুরি স্পষ্ট। এবং সবশেষে আছে লেখক এর কিছু নিজস্ব বক্তব্য ও ফিলোসফি। তবে এতগুলো জিনিস একটা বইয়ের মধ্যে ব্লেন্ড করানো কিন্তু চাট্টিখানি কথা না। এবং এটা কোন সিম্পল স্টোরি লাইন বা সিম্পল কিছু ক্যারেক্টার নিয়ে লেখা থ্রিলার না। বইটা যথেষ্ট কমপ্লেক্স একটা বই। সে অনুসারে এতকিছু ঠিকঠাক ভাবে ল্যান্ড করানো বড় মাপের সাহিত্যিক না হলে করা যায় না।
তবে বইয়ের পরিসরটা একটু ছোট হলে ভালো হতো। বর্ননা যদি প্রাঞ্জল ঝরঝরে হয় তাহলে পড়তে আরাম হয়। যত বড় বই-ই হোক না কেন গায়ে লাগে না। ভাল লাগে। কিন্তু বর্ননা প্রাঞ্জল না হলে এক সময় বিরক্তি আসে। কিছু জিনিস অতিরিক্ত মনে হয়। তাই বইটা কিছু জায়গায় একটু বোরিং হয়ে যায়।
জাদুঘরের কথা কী মনে আছে? আমার মনে হয় না কেউ প্রথম বইটা পড়লে হুট করে ভুলে যেতে পারে। এর মাঝে পেরিয়ে গেছে চার বছর, জাদুঘর কী একেবারেই হারিয়ে গেল, নাকি সামনে আছে আরো বড় কোন পরিকল্পনা?
My curious mind wants to know, who might be the inspiration behind Shawkat Al Bashar.
জীবনে সাইকো লোকজন নিয়ে কম পড়ি নাই, তবে এমন চরিত্র চোখে কম পড়েছে। বাংলাদেশের নতুন থ্রিলারগুলি পড়তে গেলে ঘুরেফিরে এক কাতারের নায়কগুলোই আসে, জাদুঘর সিরিজে এই ব্যাপারটা এখন পর্যন্ত ঘটেনি বলে আমি খুশি।
তবে তার চেয়েও বেশি পুরো বইটা উপভোগ্য হয়েছে কারণ, শওকত প্রধান চরিত্র হলেও গল্প তার আশায় থেমে থাকেনি। এগিয়েছে আপনগতিতে - কখনো মাইকেল, কখনো নোরা অথবা সামাদের আপন ভঙিতে...তাল হারিয়ে ফেলেনি। আরেকটা বোনাস ব্যাপার হচ্ছে, সামিনার চেয়ে নোরাকে বেশি ভালো লেগেছে!
বেশি বলবো না, বলতে ইচ্ছাও হচ্ছে না কিন্তু বাংলায় সাড়ে পাঁচশো পৃষ্ঠার বই টেনে নিয়ে যাওয়া আমার মতে অবশ্যই প্রশংসার দাবীদার। অনেক পড়াশোনা করেও তা গল্পে কাজে লাগানোর ব্যাপারটা কষ্টকরই বটে। একটুও হতাশ হইনি।
Good ending to the series. Again, I have some obligation to the writer regarding his projected theory of unethical relationships. But the construction of plot, application of twists and charismatic storytelling must be applauded.
এনাদার ক্লাসি স্টোরি ফ্রম কিশোর পাশা ইমন। অসাধারণ! একমাত্র কেপি ইমনের পক্ষেই এমন রিয়েলিস্টিক স্টোরির মাধ্যমে চলতি সময়ের অনেক ট্যাবুতেই চপেটাঘাত করা সম্ভব।
"Out of the box thinking....good story telling...a good end of an extraordinary journey...."
জাদুঘর সিরিজের এটা দ্বিতীয় কিস্তি ছিল। এখানে মূলত গল্পের প্রোটাগনিস্ট শওকত এর সাইকোলজিক্যাল দিককে, অর্থাৎ শওকত এর জাদুকর(!) হয়ে উঠবার ব্যাকস্টোরি কে এক্সপ্লোর করার পাশাপাশি শওকত তার আল্টিমেট গোলকে কিভাবে ফুলফিল করে সেটা বলার চেষ্টা করা হয়েছে।
বই এর পজিটিভ দিক কি কি ছিল?
-সুন্দর প্লট, গল্প বলার ঢং ভালো ছিল। আপনি এখানে La casa da papel, Fight club, Batman, V for Vendetta etc মুভি গুলোর সব ভাইব ই পাবেন। মাঝে মাঝে মনে হবে এগুলোর ই ���য়ত কোনো কোনো পার্ট আপনি দেখছেন কিন্তু দেশীয় পটভূমিতে। নিঃসন্দেহে ভালো উপভোগ্য ছিল। - বেশ কিছু mind boggling quote and idea ছিল। কোনো সন্দেহ নেই আপনার চিন্তাজগতে আলোড়ন তুলবে সেগুলো। (কিছু গার্বেজ ও আছে। আপনি যদি থ্রিলার জগতে যথেষ্ট পুরাতন পাঠক হন খুব সহজেই সেগুলোকে আলাদা করে ফেলতে পারবেন) - লেখকের সব দর্শন হয়ত আপনার মন মত হবেনা কিন্তু কিছু দর্শন আপনি ফেলতেও পারবেন না! Who knows it will lead you to explore some extraordinary things!
বই এর নেগেটিভ দিক কি কি ছিল?
-বাতিঘর এর অন্যান্য বই এর মত এই বই ও সেই এক ই দোষে দুষ্ট। ১-৪৫০ পৃষ্ঠা যে গতিতে কাহিনী এগুবে এর পর থেকে এত দ্রুত পেছনের ডট গুলো জোড়া দেওয়া হবে যে পাঠক হিসেবে আপনি খেই হারিয়ে ফেলবেন। যদি সম গতিতে চলত ধারাবিবরণী, এই বই নিঃসন্দেহে ৭০০+ পৃষ্ঠা হত এবং পাঠক হিসেবে আমি মোটেও অভিযোগ জানাতাম না। - প্যারেন্টিং, জীবন দর্শন অনেকটা ই আপেক্ষিক ব্যপার। চিরন্তন দর্শন বলে কিছু নাই। কিন্তু লেখক এর সৃষ্ট চরিত্র গুলো প্রায় একই রকম, একই ধরনের পারিপার্শ্বিক জগতে তাদের বসবাস। এরা হিংস্র, এরা অবাধ মেলামেশাতে অভ্যস্ত, সেক্যুলার দৃষ্টিভঙ্গি সবার, সমাজের এক বিশেষ শ্রেনীর সদস্য এবং উন্মুক্ত সমাজ ব্যবস্থার অংশ। এগুলা ত বাস্তবিক না। আমাদের সোসাইটি এভাবে এক্সিস্ট করে না। পাঠক হিসেবে আমার ভিন্ন ভাবে পোট্রেড করা সমাজ ব্যবস্থা নিয়ে বিন্দু মাত্র অভিযোগ নেই কিন্তু গোল টা বাধে তখন যখন আপনি চেষ্টা করেন বাস্তবিক জগত থেকে উপকরন ঢোকান এবং পাঠককে বিশ্বাস করাতে চান আমাদের সমাজ এভাবেই এক্সিস্ট করে। যেখানে এই পুরো গল্পকে আরো জীবন্ত করে তোলা যেত সেখানে লেখক অনেকাংশে ব্যর্থ। - অপ্রাসঙ্গিক অনেক বর্ননা ছিল। যা পড়ার গতিকে ধীর করে দিচ্ছিল। হুটহাট ঘটনার অবতীর্ন হচ্ছিল যা মূল ঘটনার সাথে ঠিক কানেক্ট করা যাচ্ছিল না।
শেষকথা, কেপি এর বই পড়ি-ই সাধারণত তার Out of the box thinking এবং লেখার সাবলীলতা এর জন্য। আমার পুরো সময় জুড়ে মনে হচ্ছিল কেপি নিজেই শওকত আল বাশার হয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন চোখের সামনে। ভিন্ন রকম প্লট আর বেশ ভালো গল্প বলার ঢঙের কারনেই বই টা খারাপ লাগেনি আমার।
*** বইটাতে যথেষ্ট ম্যাচুউরড কনটেন্ট এবং ডিস্টার্বিং দর্শন আছে যেগুলো আপনার ভালো নাও লাগতে পারে। বইটা ধরার আগে আশা করি এগুলো বিবেচনায় রাখবেন।
P.R: 4.75/5 Wow and wow! Loved it. A worthy sequel indeed. The national anti-hero is back with a bang!!!
প্রথম বইয়ের তুলনায় এটা বেশ গতিশীল এবং সুবৃহৎ। Human psychology এর উপর এবার সময় নিয়ে ফোকাস দেয়া হয়েছে। Proper parenting এর ব্যাপারটা যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে তা বেশ প্রশংসনীয়। গল্পের এখানে সেখানে ছড়ানো ছিল একশন। কেবল একটি কোনও জনরায় ফেলা যায় না বইটিকে। এটি একাধারে একটি action-thriller, psychological thriller, political fiction যার ভিত্তিতে রয়েছে একটি ভালোবাসার গল্প। ভালো লেগেছে যে প্রথম বইয়ের মূলমন্ত্রের সাথে এর যোগসুত্র হারিয়ে যায়নি যেটা অনেক সিকুয়েলের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। Cheers to K.P.
ব্যক্তিগত জীবনে কেপি আমার দেখা সবথেকে আত্মবিশ্বাসী মানুষ, সহজে যে বিচলিত হয় না। সব পরিস্থিতিতেই যার চিন্তাভাবনা থাকে বেশ যৌক্তিক ও ঠাণ্ডা মাথার। সমস্যা হচ্ছে জাদুঘর সিরিজে তার গড়া প্রতিটা চরিত্রই সেরকম। গুটিকয়েক ব্যতিক্রম বাদে এরা সবাই কঠিন মনোবলের, কোনো কিছুই এদেরকে সহজে স্পর্শ করে না। টানা একই ধরনের চরিত্র নিয়ে পড়তে একঘেঁয়ে লাগছিল। কোনোটার সাথেই একাত্ম হতে পারছিলাম না। থ্রিলার আমি এড়িয়ে চলতাম কারণ সেখানে সব গল্প একইরকম লাগতো। কেপির গল্প সেই আক্ষেপ গুছিয়ে দিয়েছে। মাঝে কিছু দৃশ্য পড়ার সময় বিরক্ত লাগলেও সমাগ্রিকভাবে যদি বলি, এতো চমৎকার পরিকল্পনা করে লেখা কেপির দ্বারাই সম্ভব। সব মিলিয়ে সপ্তাহখানেকের মতো লেগেছে দুটো বই পড়তে। দীর্ঘ বিরতি দিয়ে পড়ার মতো বই নয় এগুলো।
কেপি ভাইয়ের লেখা আমাকে কখনোই হতাশ করেনি। এবারেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি।
"এইখানে জাদুঘর পাতা আমাদের" এক কথায় মাস্টারপিস! কি ছিলনা এতে! একটি পরিপূর্ণ থ্রিলার উপভোগের সবকটি উপদানই এতে বিদ্যমান! আর সাথে স্টোরি টেলিং টা সবসময়ের মতই আপনার রক্তচাপ বাড়িয়ে তুলতে বাধ্য!
তবে হতাশার জায়গা ছিল একটা। সেটা বইয়ের বাইন্ডিংয়ে। এত বিশাল কলরবের বই ঠিকমত খুলে পড়া যাচ্ছিল না,পুরোপুরি খুলে পড়তে গেলেই পেইজ খুলে আসছিলো😥। একদম ফাটাফাটি না হোক তবে নূন্যতম একটা ভালো বাইন্ডিং হলে ভালো লাগতো।
অনেক বড় কলেবরের কাহিনি। একসাথে অনেকগুলো চরিত্র এবং তাদের ভুমিকাগুলো শুরু থেকে অনেক ছড়িয়ে থাকায় একসময় একঘেয়ে লেগে গিয়েছিলো। শেষের দিকে এসে কাহিনির কিছু টুইস্ট ও ক্লাইমেক্স মন কেড়েছে। তবে সত্য বলতে আগের বই ‘জাদুঘর পাতা আছে এই এখানে’ কে ছাড়িয়ে যেতে পাড়েনি ‘এইখানে জাদুঘর পাতা আমাদের’ বইটি।
'এইখানে জাদুঘর পাতা আমাদের' বইটা 'জাদুঘর পাতা আছে এই এখানে' এর সরাসরি সিক্যুয়াল, যা কিনা আগের বইয়ের ঘটনাবলীর চার বছর পরে শুরু হয়। এখানে আগের বইয়ের শওকত, মুর্তজা, মাইকেল আর অভয়া চাকমা এর সাথে নতুন করে নিশান মাহমুদ, জাকারিয়া, নোরা, সামাদ ইত্যাদি চরিত্র এসেছে; যার ভেতরে জীবনবাদ এর প্রবর্তক নিশান মাহমুদকে সবথেকে ইন্টারেস্টিং লাগলো। তাছাড়াও মুর্তজা এবং শওকতও যার যার জায়গায় সেরা।
'এইখানে জাদুঘর পাতা আমাদের' গল্পের কাহিনিতে এবারে জাদুঘরের সাথে অক্ষরাস্ত্র নামক গুপ্তসংঘও এসেছে। গল্পের বিস্তার এবং বইয়ের কলেবর বেশ বড় হওয়ার পরেও লেখনশৈলী টানটান ধাঁচের হওয়ায় দ্রুতই পড়া গিয়েছে। যদিও প্লটপয়েন্টের কিছু জায়গা অস্বাভাবিক এবং অবিশ্বাসযোগ্য মনে হলো, যার সাথে পার্সোনালি একমত হতে পারিনি। যাই হোক, বইতে কাহিনির প্রয়োজনে আসা সাইকোলজিক্যাল সেশন, পুলিশ প্রসিডিওরাল এবং অ্যাকশন দৃশ্যগুলো ভালোই ছিলো বেশিরভাগ। সংলাপ কিছু জায়গায় ঠিকঠাক থাকলেও প্লটের অস্বাভাবিক জায়গায় সংলাপগুলোও তেমনভাবেই অবাস্তব লাগছিলো। পুরো বইয়ে কাহিনি যেভাবে এগিয়েছে তাতে বইয়ের ফিনিশিংটাও আমাকে হালকা লেটডাউন করেছে। - এক কথায়, 'জাদুঘর পাতা আছে এই এখানে' এর সিক্যুয়াল হিসেবে মোটামুটি স্বার্থক বলা যায় 'এইখানে জাদুঘর পাতা আমাদের' বইটিকে। বইয়ের কিছু অস্বাভাবিক প্লটপয়েন্টের সাথে একমত না হলেও বইটা উপভোগ করেছি বেশিরভাগ সময়েই। তাই যারা 'জাদুঘর পাতা আছে এই এখানে' বইটা পড়েছেন এবং ভালো লেগেছে তারা এই বইটাও পড়ে দেখতে পারেন।