আমরা জানতাম, সমাজমনস্কতার গল্প লেখেন ইমতিয়ার শামীম। আর্থ-সামাজিক বাস্তবতা থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ে যা ইচ্ছা হাতাপাতা লেখেন না তিনি। যেনতেন গল্প লেখার তাড়না ভারসাম্যহীন করে তোলে না তাঁকে। সেই তিনি কী করে আত্মহত্যার সপক্ষে দাঁড়িয়ে আমাদের গল্প শোনান?
প্রকৃতার্থে আত্মহত্যার সপক্ষে শব্দিত ইমতিয়ার শামীম আবার বাস্তবতাকে বিভিন্ন কৌণিক অবস্থান থেকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখলেন। আমাদেরও দেখালেন। বাস্তবতাকে ধরার জন্যে, বাস্তবতা ছাপিয়ে ওঠা অধরা আকাঙ্ক্ষাকে ধরার জন্যে স্মার্ট আঙ্গিক এবং ভাষ্য তৈরির কাজটাকে তিনি ভুললেন না মোটেও।
ইমতিয়ার শামীমের সঙ্গে তাই আমরাও অভিযাত্রা করি সেইখানে যেখানে গ্রামগুলো বিষণ্ন থেকে বিষণ্নতর, শহরগুলি আর কিছুই নয়—বিবিধ গ্রাম্যতা, আর অসঙ্গতি নিয়ে মস্ত বড় একেকটি গ্রাম; কিংবা গ্রাম ও শহর কোনটাই নয়, আমরা যাত্রা করি মনজ গ্রাম্যতায়, মনজ নাগরিকতায়—যে মনকে প্রতিনিয়ত হত্যা করতে অক্ষম হলে শেষ পর্যন্ত ব্যক্তি উদ্যত হয় নিজের শরীরী বাস্তবতা হননের জন্যে।
এই উন্মোচন তাই জটিল। একরৈখিক নয়। গল্পগুলির বিশাল পটভূমিতে ঢুকে পড়ে ব্যক্তির সংঘাত, ব্যর্থতা, রাজনৈতিক আলোড়ন, বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা, স্মৃতি-বিস্মৃতি, আবেগ—আরও কত কি। বাংলাদেশের মানুষের জীবন অনেক লেখকের মতো চালশেতে অথবা অবহেলায় মোটেই নীরব হয়ে থাকে না সেইখানে।
* স্মৃতিঘরে শেষ রাত * কিছু মনে কর না * ধান্যেশ্বরী জীবনাবধি * নয়ানজুলি * চন্দ্রশালার সংসার * পাপপুণ্যের কথোপকথন
ইমতিয়ার শামীমের জন্ম ১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৫ সালে, সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। আজকের কাগজে সাংবাদিকতার মাধ্যমে কর্মজীবনের শুরু নব্বই দশকের গোড়াতে। তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘ডানাকাটা হিমের ভেতর’ (১৯৯৬)-এর পান্ডুলিপি পড়ে আহমদ ছফা দৈনিক বাংলাবাজারে তাঁর নিয়মিত কলামে লিখেছিলেন, ‘একদম আলাদা, নতুন। আমাদের মতো বুড়োহাবড়া লেখকদের মধ্যে যা কস্মিনকালেও ছিল না।’
ইমতিয়ার শামীম ‘শীতের জ্যোৎস্নাজ্বলা বৃষ্টিরাতে’ গল্পগ্রন্থের জন্য প্রথম আলো বর্ষসেরা বইয়ের পুরস্কার (২০১৪), সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য ২০২০ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ দেশের প্রায় সকল প্রধান সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন।
বইয়ের নামটা বিভ্রান্তিকর। আত্মহত্যা নিয়ে যে গল্পগুলো আছে সেখানে আত্মহত্যার সপক্ষে কিছু নেই। আছে আত্মহত্যাকারী ব্যক্তির মনস্তাত্ত্বিক অবস্থার উন্মোচন। কী তাদের চালিত করছে আত্মহত্যার দিকে; ব্যক্তিগত ব্যর্থতা, পারিবারিক ব্যর্থতা, ঈর্ষা, ডিপ্রেশন এ ভোগা মানুষের মনের অন্দরে ঢুকে তাদের দৃষ্টিতে গল্প বলেছেন লেখক।তাদের বিচার করার কোনো মনোভাব গ্রহণ করেন নি। কিছু ক্ষেত্রে আত্মহত্যাকারীর মনোভাব স্পষ্ট হয়নি; অতিনাটকীয় মনে হয়েছে। আর এই আত্মহত্যাসমূহ কখনো আক্ষরিক, কখনো রূপকভাবে এসেছে। "স্মৃতিঘরে শেষ রাত" আর "চন্দ্রশালার সংসার" গল্প দুটোর কথা আলাদাভাবে মনে থাকবে।
দূষিত ঢাকার বাতাস। দূষিত কি শুধু ধুলোবালিতেই, নাকি হতাশার দীর্ঘনিঃশ্বাসেও? অনেক কিছুর মতো এটাও আমি ঠাহর করে উঠতে পারিনা। আমার প্রিয় একজন লেখক আত্মহত্যার সপক্ষে কলম ধরেছেন। যেই লেখকের কলমের জোরে আমি জানতে পেরেছি এই দেশে বাঁচতে হলে হাজার ঝড়েও মেরুদণ্ড সোজা রাখতে হয়। সেই লোক এবার আমাকে বললেন, ঘাড় গুঁজে বসে থেকেও পাখি হয়ে ওড়া যায়। সরাসরি আত্মহননের সপক্ষে যুক্তি দাঁড় না করেও কেনো পরাজিত হতে হয় সেই গল্প শোনালেন এবার। পড়তে পড়তে বোবা বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে নিতে আমি সরব হই।
ছয়টি ছোটগল্প আছে এখানটায়। নাম...স্মৃতিঘরে শেষরাত, কিছু মনে কোরো না, ধান্যেশ্বরী জীবনাবধি, নয়ানজুলী, চন্দ্রশালার সংসার, পাপপুণ্যের কথোপকথন। প্রশ্ন তোলার মতো কথা ছিল অনেক। সেসব বাদ। ইমতিয়ার শামীমের আরও অনেক ভালো লেখা পড়েছি আমি। অত ভালোও বলতে পারছিনা, ফেলেও দিতে পারছিনা এই বইটিকে। তবে 'চন্দ্রশালার সংসার' গল্পটি আমাকে ছুঁয়ে গেছে গোড়ালি অবধি। গল্পটা, প্রেমিকাকে একতাল মাংসপিন্ড না ভেবে অসাধারণ কিছু ভেবে, সেই অসাধারণের লোভে নিজেকে সংযত রাখতে রাখতে সাধারণ হয়ে ওঠা এক যুবকের গল্প। যুবকের মায়ের জন্য নির্বিরোধ অদৃশ্য প্রতিহিংসা নিয়ে মনের ভেতর থেকে প্যাভিলিয়নে ফিরে যাবার প্রতিবাদ এটি।
খুব ভাবছিলাম আর পড়ছিলাম। দরজায় কড়া নেড়ে একজন ডাক দিলেন, 'ভাই এতো রাত হইলো, খাবেন না?' বাস্তবতায় শামিল হবো, নাকি তাকে আত্মহত্যার সপক্ষে কয়েকটি উত্তপ্ত বাক্য শুনিয়ে দিব ভাবতে ভাবতে দেখি আমার হাতের কড়াইয়ে উত্তপ্ত তেলে ভাজা হচ্ছে একটি ডিম!
ইমতিয়ার শামীম এক জাদুকরের নাম৷ গদ্যের জাদুশিল্পী তিনি। অপূর্ব তাঁর ক্ষমতা। 'আত্মহত্যার সপক্ষে' নামক গল্পগ্রন্থ পড়ে এই বিশ্বাস আরো দৃঢ় হলো।
বিভিন্ন স্বাদের কাহিনি নিয়ে এই বই। মুক্তিযুদ্ধত্তোর বাংলাদেশের হত্যা, প্রতিহত্যার রাজনীতি, মুজিব হত্যা পরবর্তী কালো সময়ের কথন সবসময়ই প্রাধান্য পায় ইমতিয়ার শামীমের কলমে। এবারো ব্যতিক্রম হয়নি। বিষয়বস্তু বদলায়নি। কিন্তু চমৎকার লেখনীর ধাঁচ মুগ্ধ করেছে। নিকষ কালো অধ্যায়ের স্মৃতিকে ধারণ করে দৈনন্দিন জীবনের সাথে এর সাযুজ্য ঘটিয়েছেন গল্পগুলোর মাধ্যমে।
দলীয় স্বার্থে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি, পাকিস্তানমুখিনতার গল্প বলার ছলে ইমতিয়ার শামীম শুনিয়েছেন, প্রেমকথন কিংবা বিশ্বাসঘাতকতার বাস্তব চালচিত্র অথবা নিছকই পারস্পর্যহীন কিছু ঘটনা।
বইতে ছয়টা ছোটগল্প আছে। গল্পগুলো ১৯৯০-১৯৯৯ সালের মধ্যে লেখা; গল্পগুলো বিভিন্ন জায়গায়(পেপার-ম্যাগাজিনে) প্রকাশিত হয়েছিল সেসময়ে।
ইমতিয়ার শামীমের যেকোনো লেখা আমার ভাল্লাগে। তার বইয়ের প্রশংসা করার মতো কিছু নেই। যা আছে তা হল একরাশ মুগ্ধতা আর কৃতজ্ঞতা।
বইয়ের প্রথম পৃষ্ঠায় একটা সুন্দর লেখা ছিল। শেয়ার করলাম:
‘জন্ম মানে ঘুমিয়ে পড়া; তারপর এই জীবন জুড়ে যা কিছু ঘটে তা সব স্বপ্ন। মৃত্যু মানে ঘুম থেকে জাগা। কেউ যদি অল্প বয়সে মারা যায় তাহলে বুঝতে হবে যথেষ্ট ঘুম হবার আগেই তাকে উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। যে বৃদ্ধ হয়ে মারা গেছে, তার মানে তার ঘুম সম্পূর্ণ হয়েছিল এবং বারবার তার ঘুম ভেঙে যাচ্ছিল, শেষে সে নিজেই ঘুম থেকে উঠে বসেছে। যে আত্মহত্যা করেছে সে দুঃস্বপ্ন দেখছিল যার সমাপ্তি সে টেনেছে; কারণ সে জেনেছে যে সে ঘুমাচ্ছিল এবং সচেতনভাবে সে তার ঘুম ভাঙিয়েছে।
The author is one of my favourites. I rave about his books whenever I get the chance. The cover of this one has the lyrics of Norwegian Wood. So, I really wanted to love it. I did not. In fact, this is the only book by him that I have read and didn't like.
There are a few ideas that intensely bothered me. One of them is that a character thinks to himself that all women hate politics. Haha what.
I finished reading it and then put it aside for two days. Then I kept thinking about the things that I did like. Initially, I didn't want to write anything about it but it will keep bugging me if I don't.
It's a short story collection about su!cidal people. They are written without judgement. We get a glimpse of the inner workings of these characters' minds. We see what brought them to the end of their ropes. Their past trauma, the betrayals and the pain that compelled them to think of ending things. Sometimes, they don't realize the reasons themselves.
There is a lot of stigma surrounding this. It scares us, we don't understand it. So, it's easier to call these people weak and leave it at that. What's hard is to look at their sufferings in the eye. It's a painful topic to think about and to write about.
I liked these two stories: ধান্যেশ্বরী জীবনাবধি and চন্দ্রশালার সংসার।
Would recommend reading আমাদের চিঠিযুগ কুউউ ঝিকঝিক, আমরা হেঁটেছি যারা, যারা স্বপ্ন দেখেছিল।
স্টাইল কিংবা গল্পে নতুনত্ব বা নিরীক্ষা তাঁর লেখায় পাই না। তিনি বরং রাষ্ট্র সমাজ আর সমকালীন বাস্তবতা এবং এসবের সাথে ব্যক্তির সম্পর্ক কনফ্লিক্ট ইত্যাদি নিয়ে লেখেন। নিজেকে প্রচুর রিপিট করেন। মাঝে মাঝে পড়তে পড়তে মনে হয় এ লেখাগুলোকে আলাদা আলাদা শিরোনামের গল্পে ভাগ করাটা যেন স্রেফ করতে হয় তাই করা। নইলে তিনি যেন নিরবচ্ছিন্ন বলে যাচ্ছেন যা তাঁর বলার আছে। এ বইয়ের নাম কি হতে পারত না “ডানাকাটা হিমের ভিতর” কিংবা “শাদা আগুনের চিতা” অথবা অন্যকিছু?
পেন্ডুলামের যে এডিশন পড়েছি তার সম্পাদনার মান খুব ভালো ছিল বলতে পারব না। “পরা” বনাম “পড়া” - এই ভুল সহ্য হয় না।
"মানুষ কিন্তু বেঁচেই থাকে আত্মহত্যা করে। প্রতি মুহূর্তে জীবনের ঘাতপ্রতিঘাত তার মনকে আস্তে আস্তে হত্যা করে, মনটা বেঁচে থাকার উপযোগী হয়ে ওঠে নিজেকে হত্যা করার মধ্য দিয়েই। মানুষ যখন নিজের মনকে হত্যা করার ক্ষমতা হারায়, তখন সে তার শরীরকে হত্যা করে, নিজেই নিজেকে ধ্বংস করে।.."
সত্যি কথা বলতে আমি খুব চেষ্টা করেছি গল্পগুলো পছন্দ করতে কিন্ত জানিনা কেন আমার জন্য খাটেনি। শুধুমাত্র 'চন্দ্রশালার সংসার' এই গল্পটি জমেছে বেশ। লেখকের 'আমাদের চিঠিযুগ কুউ ঝিক ঝিক' আর 'অন্ধপ্রদীপ শূন্যপানে' পড়েছিলাম। দুটোই বেশ ভালো লেগেছিল।
উনার একটা খাসিয়াত যেটা ভালো লাগে বেশি সেটা হলো নামকরণ। তা হোক বইয়ের কিংবা গল্পের।
ক্লাসে জৈনক প্রফেসর এসে সাদা জমিনের বোর্ডে কালো মার্কারের আঁচড় বসিয়ে কঠিন কঠিন অঙ্কের প্রশ্নগুলোর সমীকরণ মিলিয়ে যেভাবে সমাধান করে ফেলেন সেরকম করে লাইফের সমীকরণ মেলানো একটু কঠিনই বটে। লাইফের সমীকরণে উভয় পাশ সমান চিহ্ন বসিয়ে মেলানো যায় না। নানারকম জটিলতায় এই সমীকরণে অসমতার চিহ্ন চলে আসে। কেউ কেউ হয়তো জীবনের মারপ্যাঁচে পড়ে গিয়ে এক পাশে শূন্য বসিয়ে সমীকরণ মেলানোর চেষ্টা করে। বেঁচে থাকার বাইনারি মান যদি হয় এক তাহলে মৃত্যুর বাইনারি মান হয় শূন্য। শূন্য বসালেই কি সমীকরণের সমাধান হয়ে যায়? মানুষ কেন জীবনের সমীকরণে এক পাশে শূন্য বসিয়ে মেলাতে চায় তার কিছুটা প্রতিপাদন হয়তো ইমতিয়ার শামীমের লেখা ‘আত্মহত্যার সপক্ষে’ বইয়ে পাওয়া যাবে। অনেকেই বইয়ের নাম দেখে হয়তো বিভ্রান্তিতে পড়তে পারেন বইটা আত্মহত্যাকে প্রোমোট করে লেখা। এরকম কিছুই না। বরং আত্মহত্যার পেছনের মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপারটা প্রাধান্য পেয়েছে লেখাগুলোতে। ছয়টি ছোটগল্প ধরনের লেখা আছে বইটার মধ্যে। সবগুলো লেখাই নব্বইয়ের দশকের সময়ে লেখা। একটু মনোযোগ দিলে প্রতিটা লেখায় সেসময়ের রাজনৈতিক চিত্রের একটা আবাশ পাবেন। লেখকের বাক্য বিন্যাস আমাকে মুগ্ধ করেছে। এতো চমৎকার লেখনশৈলী একেকটা বাক্যের! আমি সত্যি বলতে ইমতিয়ার শামীমের লেখার প্রেমে পড়ে গেছি!
বইটা পড়ার আগে অনেকগুলো রিভিউ চেক করেছি আমি। এইসব পাঠ প্রতিক্রিয়ায় কমন দিক হচ্ছে চন্দ্রশালার সংসার শিরোনামের গল্পটা সবার মনে ধরার ব্যাপারটা। আমার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এছাড়াও স্মৃতিঘরে শেষ রাত আর নয়নাজুলি লেখা দুটো আমার কাছে ভালো লেগেছে। কিছু কিছু জায়গায় পড়ে বুঝতে একটু কষ্ট হচ্ছিল আমার জন্য। এটা হয়তো একান্তই আমার সমস্যা! যাইহোক... বইটা কিন্তু সব বয়সী পাঠকদের জন্য নয়। একটু ম্যাচিউর পাঠকরা বইটা পড়ে দেখতে পারেন। ভালো না লাগলেও হতাশ হবেন না আশা করি!
অবশেষে গভীর রাতে বইটা পড়ে শেষ করার পর আমার ক্লান্ত চোখের নিউরন ভাবুক মস্তিষ্কে সংকেত পাঠায়, ওতো ভাবনা চিন্তা বাদ দিয়ে এবার তাহলে শান্তির একটা ঘুম দেয়া যাক! আগামীকাল আবার অক্সিজেন সমৃদ্ধ বাতাস ফুসফুসে চালান করে দিয়ে দীর্ঘশ্বাস মিশ্রিত কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন করে ছুটে চলতে হবে... ছুটে শেষমেষ কোন পর্যন্ত যাবো সেটা হয়তো আমরা কেউ ই জানি না!
* স্মৃতিঘরে শেষ রাত * কিছু মনে কর না * ধান্যেশ্বরী জীবনাবধি * নয়ানজুলি * চন্দ্রশালার সংসার * পাপপুণ্যের কথোপকথন
এই ছয়টা গল্প নিয়ে হচ্ছে এই বইটা। প্রথম দুটো গল্প এবং চন্দ্রশালার সংসার আমার খুবই ভালো লেগেছে। এখন এই বইয়ের সবাই তাদের স্বেচ্ছামৃত্যুর পক্ষে কথা বলেছেন, কেন কেউ কেউ ব্যাটিং করতে করতে আউট হয়ে গেলেও প্যাভিলিয়নে ফিরে যেতে পারে না।
বইটা পড়ার সময় বারবার মাথায় ঘুরছিল SOAD-এর Chop Suey: “I don’t think you trust in my self-righteous su!cide”
বইটা মূলত আত্মহনন, ব্যর্থতা, রাজনৈতিক হিপোক্রেসি, জীবনের fragility আর society’s moral rigidity নিয়ে ফোকাস করেছে।
now i have a question — does a character’s problematic view reflect the author, or only the character?
কারণ এই বইয়ের কিছু চরিত্র সত্যিই Problematic,তাই ভাবছিলাম—পাঠকরা এটা নিয়ে কী ভাবে? আমার মনে হয়, কোনো চরিত্রের problematic বা নৈতিকভাবে ভুল চিন্তা, আচরণ, বা দৃষ্টিভঙ্গি সাধারণত লেখকের ব্যক্তিগত মত নয়। বরং সেটা গল্পের ভেতর মানুষের প্রকৃতি, দ্বন্দ্ব, বা নৈতিক জটিলতা বোঝানোর একটা মাধ্যম। এমনকি যদি তাদের চিন্তা পাঠকের কাছে অস্বস্তিকরও হয়।
বইটির সব গল্প ভিন্ন একটু দুর্বোধ্য হয়ে একটা বড় গল্প স্বাভাবিকতায় এসে এমন এতো করুণ ভাবে ধরা দিলো যে, অন্তর চিড়তে চিড়তে যেন চেড়ার অবস্থান থেকে বের হয়ে এলো। গল্পের নামটা বলবো না। তবে গল্পের মূল চরিত্রের বিপরীতে ছিল আভা, কিছুটা প্রভাও।
বইটি আমার ছিল না, ছিল অন্যের। বইটি বহুদিন আমার কাছে রেখেছিলাম জাস্ট এই একটা গল্প পড়ার জন্য। পরে ফেরত দেবার সময় লম্বা গল্প খানা ভিডিও করে রেখেছিলাম পৃষ্ঠা উল্টিয়ে উল্টিয়ে। পরবর্তীতে যেন পড়ার ইচ্ছে জাগলে পড়ে নিতে পারি।
বইটি কিনে সংগ্রহে রাখতে চেয়েছিলাম কেবলমাত্র ওই একটা গল্পের জন্যই। এমন কিছুর জন্যই হয়তোবা হাজার হাজার পৃষ্ঠা উল্টোই , করি বইয়ের সঙ্গে দিনাতিপাত।
স্মৃতিঘরে শেষ রাত কিছু মনে কোরো না ধান্যেশ্বরী জীবনাবধি নয়ানজুলি চন্দ্রশালার সংসার পাপপুণ্যের কথোপকথন
উপরোক্ত শিরোনামের ৬টি ছোটগল্পের সংকলন নিয়ে ইমতিয়ার শামীমের 'আত্নহত্যার সপক্ষে' বইটি। প্রতিটি গল্পের সাথেই জড়িয়ে আছে আত্নহত্যা। আত্নহত্যার মতো বিতর্কিত একটি বিষয়ের সপক্ষে গিয়ে লেখক যে গল্পগুলো শোনালেন তা আমাদের দ্বিতীয়বার ভাবায়, সৃষ্টি হয় সংশয়। এর পাশাপাশি ৯০ এর দশকের গল্পগুলোর বেশিরভাগেই ফুটে উঠেছে তখনকার রাজনৈতিক অবস্থা। মুক্তিযুদ্ধের কিছু কঠিন বাস্তবতা লেখক খুব স্বল্প শব্দে যেভাবে তুলে ধরেছে তা নাড়িয়ে দেয়ার মতো। ৫ম গল্পটি স্পর্শ করেছে।