জন্ম: ১ ডিসেম্বর, ১৯৩২ | কলকাতায় | একটি শিক্ষক পরিবারে ছোট থেকেই অজানার দিকে দুর্নিবার আকর্ষণ | অ্যাডভেঞ্চারের টান জীবনে, চাকরিতে, ব্যবসায়, সাহিত্যে | চোদ্দবার চাকরি বদল | নামী একটি প্রতিষ্ঠানের পারচেস-ম্যানেজার পদে ইস্তফা দিয়ে পুরোপুরি চলে আসেন লেখার জগতে | গোয়েন্দাকাহিনী দিয়ে লেখালেখির শুরু | ' রচনারীতি র দিক থেকে শরদিন্দু বন্দোপাধ্যায় এর উত্তরসুরী ' - অভিনন্দন জানিয়েছে একটি নামী সাপ্তাহিক | সেরা বিদেশী গোয়েন্দাকাহিনীকে পরিবেশন করেন বাংলায় | বিজ্ঞান, কল্পবিজ্ঞান, অতীন্দ্রিয় জগৎ, অতিপ্রাকৃত, অনুবাদ - প্রায় সব ক্ষেত্রেই পেয়েছেন স্বীকৃতি | ভারতের প্রথম কল্পবিজ্ঞান পত্রিকা 'আশ্চর্য'র ছদ্দনামী সম্পাদক | এবং সম্পাদনা করেন 'ফ্যান্টাস্টিক' | সত্যজিত রায়ের সভাপতিত্বে প্রথম 'সায়ান্স ফিকশন সিনে ক্লাব' এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক | পত্রিকা, রেডিও, ফিল্মক্লাবের মাধুঅমে কল্পবিজ্ঞানকে আন্দোলন-আকারে সংগঠিত করেন | একাধিক পুরস্কার | কিশোর জ্ঞানবিজ্ঞান ও পরপর দু-বছর 'দক্ষিণীবার্তা'র শ্রেষ্ঠগল্প পুরস্কার | অনুবাদের ক্ষেত্রে 'সুধীন্দ্রনাথ রাহা'-পুরস্কার | ভালবাসেন: বই | গানবাজনা | দেশভ্রমণ
সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারকে সেলুলয়েডে তুলে ধরার ব্যাপারটাকে হিচকক একটা অন্যরকম স্তরে নিয়ে গেছিলেন। তাঁর দ্বারা চলচ্চিত্রায়িত অন্যতম সেরা চারটি কাহিনি অদ্রীশের অতুলনীয় লেখনীতে বঙ্গীকৃত হয়েছিল। সেই চারটি কাহিনিকে রুচিশীল প্রচ্ছদ, সিনেমার পোস্টার এবং শুদ্ধ মুদ্রণে শোভিত আকারে পেশ করা হয়েছে এই বইয়ে। সেই কাহিনিরা হল~ ১. প্রেত-প্রেয়সী (ভার্টিগো); ২. বিষকন্যা (সাইকো); ৩. লীলাবতী (মার্নি); ৪. বিহঙ্গ বিভীষিকা (দ্য বার্ডস্)। চারটি লেখাই পড়তে শুরু করলে থামা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তার চেয়েও বড়ো কথা, অনেকদিন পরে এগুলো পড়তে গিয়ে আবারও প্রথম পড়ার রোমাঞ্চ ফিরে এল। এই দুর্দমনীয় বইটির জন্য কল্পবিশ্ব পাবলিকেশন আমাদের কৃতজ্ঞতাভাজন হলেন। ইতোমধ্যে, বইটা এখনও না পড়ে থাকলে অবিলম্বে ত্রুটি সংশোধন করুন।
স্যার আলফ্রেড হিচককের চারটি সিনেমার গল্প অবলম্বনে রচিত অদ্রীশ বর্ধনের 'হিচককের চার প্রহর'। যদিও সিনেমাগুলি বিদেশি বিভিন্ন গল্প অবলম্বনে ও অনুপ্রেরণায় তৈরি। মূল কাহিনি এক রেখে আমূল বঙ্গীয় পটভূমিতে লেখক গল্পগুলির পুনর্বিন্যাস করেছেন। গল্পচারটি সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার এবং হরর থ্রিলার গোত্রের। বহুদিন পর রোমাঞ্চধর্মী লেখা পড়ে আসলেই রোমাঞ্চিত হলাম। সাথে উপহার পেলাম অদ্রীশ বাবুর লেখনী ও দুর্দান্ত কল্পনাবিন্যাস। প্রতিটা গল্প অসাধারণ। এককথায় বলা যায় 'পাতায় পাতায় শিহরণ'। থ্রিলারপ্রেমী মানুষ হলে এই রস থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবেন না।
চারটি গল্প যথাক্রমে-
১. প্রেত প্রেয়সী- স্ত্রীর মধ্যে অশরীরী বিভিন্ন পরিবর্তন দেখে স্কুল সহপাঠী গোয়েন্দা উকিলের কাছে আসে মহেন্দ্র। রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে বন্ধুর স্ত্রীর প্রেমে ও রহস্যের জালে জড়িয়ে পরেন দূর্লভ। গোয়েন্দা নিজেও অতিউচ্চতায় ভয় পাওয়া ও মাথা ঘোরার সমস্যায় মানসিকভাবে ব্যর্থ হয়ে পুলিশ সার্ভিস থেকে অবসর নিয়েছেন, আছে তারও ব্যক্তিগত সমস্যা। শেষ পর্যন্ত কিভাবে তিনি পারবেন সত্যের মুখোমুখি আসতে?
২. বিষকন্যা - বাবার সাথে অদ্ভূত সম্পর্ক বয়ে চলা বছর তিরিশের চন্দনা একটি লজ চালায়। বছর পয়ত্রিশের ভাগ্যবিতাড়িত পুরুষ অফিসের টাকা চুরি করে লজে একরাতের জন্য আশ্রয় নেয় ও খুন হয় চন্দনার বাবার হাতে। তারপর থেকে এগিয়ে চলে মাথা ঘোরানো এই সাইকোলজিক্যাল হরর থ্রিলার গল্প।
৩. লীলাবতী - গল্প শুরুতেই লীলাবতী সহজ স্বীকারোক্তি করে " আমি চোর। মেয়ে-চোর"। দারিদ্র্য লঞ্ছিত লীলাবতী ছোট থেকে বিভিন্ন লোকের চোখে ধুলো দিয়ে সংগ্রহ করেছে অমূল্য সব সম্পদ। সে কাউকে ভালোবাসতে পারেনা, পুরুষের ছোঁয়া তার কাছে ঘৃণ্য। কিন্তু জীবন অন্য বাঁক নিল। এটিও একটি সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার।
৪. বিহঙ্গ বিভীষিকা- স্বপ্নের মতো সুন্দর পাহাড় ঘেরা ছোট্ট উপদ্বীপে শীতের শুরুতেই শুরু হয় পাখিদের হামলা। তারা মানুষদের মেরে গোটা পৃথিবীর দখল নিতে চায়। পরাস্ত করে সমর বাহিনী, দখল নেয় গোটা দেশের বেতারকেন্দ্র। চলতে থাকে চরম বিভীষিকাময় এক একটি দিন।