তাকফির অর্থ, কোনো মুসলিমের ব্যাপারে কাফির ও মুরতাদ হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দেওয়া। কোনো মুসলিমকে তাকফির করার অর্থ, তার ব্যাপারে এ সিদ্ধান্ত দেওয়া যে, সে ইসলাম থেকে বের হয়ে গেছে। এখন দুনিয়া ও আখিরাতে তার ওপর কাফির ও মুরতাদের বিধান প্রয়োগ হবে। যেমন : তার বিয়ে ভেঙে যাবে, পূর্বের সকল নেক আমল নষ্ট হয়ে যাবে, তাওবা করে পুনরায় ইসলামে ফিরে না এলে হত্যা করে ফেলা হবে, সে শাসক হলে তাকে অবশ্যই অপসারণ করতে হবে, সংঘবদ্ধ দল হলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। এ অবস্থায় মারা গেলে তাদের জানাজা পড়া যাবে না, মুসলমানদের কবরস্থানে দাফন করা যাবে না, পরকালে চিরস্থায়ী জাহান্নামি হবে ইত্যাদি।
কাউকে তাকফির করার বিষয়টি যেহেতু খুবই স্পর্শকাতর, তাই শরিয়ত এ ব্যাপারে আমাদের সাবধানতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছে। সুস্পষ্ট ও অকাট্য দলিল-প্রমাণ ছাড়া কাউকে তাকফির করা যাবে না।
উম্মতে মুসলিমার মধ্যে প্রথম যে ফিতনা দেখা দিয়েছে তা হলো এই খারেজি ফেতনা বা তাকফিরি ফিতনা। এ ফিতনার দ্বারাই উম্মতের মধ্যে ফিতনার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। খলিফায়ে রাশিদ উসমান রা.-কে তাকফির ও হত্যার মাধ্যমে এ ফিতনার সূত্রপাত হয়েছে। সেই যে ফিতনা শুরু হয়েছে, এরপর তা আর শেষ হয়নি।
গ্রন্থটিতে আহলুস সুন্নাহর মূলনীতির আলোকে তাকফিরের বিষয়ে বস্তুনিষ্ঠ ও ভারসাম্যপূর্ণ আলোচনা করা হয়েছে। ইতিপূর্বে বাংলাভাষায় এতটা বিস্তৃত ও গঠনমূলক আলোচনাসমৃদ্ধ কোনো গ্রন্থ প্রকাশিত হয়নি। গ্রন্থটি সর্বস্তরের পাঠকের সামনে ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করবে।
জন্ম ইসায়ী ১৯৯৫ সালের ২২ আগস্ট ৩৬০ আউিলয়ার স্মৃতিধন্য, দুটি পাতা ও একটি কুঁড়ির দেশ সিলেটে। লেখাপড়া করেছেন রাজধানীর নামকরা দুটো প্রতিষ্ঠানে। অনন্যসাধারণ মেধাবী এ তরুণ আলিম ছাত্রজীবেন তার মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন বাংলােদশ কওিম মাদরাসা শিক্ষাক্ষােবার্ড বেফাকের কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় হিফজ বিভােগ ১ম, ফজিলতে ১২তম এবং তাকিমল ফিল হাদিসে ৬ষ্ঠ স্থান অধিকার করে। এরপর দু-বছর সময় ব্যয় করেছেন ফাতওয়া বিভাগে। শিক্ষা সমাপনের পর ২০১৭ সালে প্রবেশ করেন কর্মজীবনে বর্তমানে তিনি এক স্বনামধন্য মাদরাসায় সিনিয়র মুহাদ্দিস পদে কর্মরত রয়েছেন। পাশাপাশি ফাতওয়া বিভাগের সহযোগী মুফতি হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছন। শিক্ষকতা ছাড়াও লেখক, অনুবাদক, সম্পাদক, আলোচক ও খতিব হিসাবেও নিয়িমত কাজ করেছন। বিশুদ্ধ তাওহিদ ও মিল্লাতে ইবরাহিমের দিকে আহ্বানকারী বক্তাদের মধ্যে তার নাম অন্যতম। আলী হাসান উসামা সমেয়র প্রতিশ্রুতিশীল তরুণেদর অন্যতম। ঈর্ষণীয় ইলমি যোগ্যতার পাশাপািশ তার মধ্যে একত্র হয়েছে সহজ-সরল অসাধারণ রচনা ও অনুবাদ-দক্ষতা। তার স্বরচিত ফিতনার বজ্রধ্বনি এবং সুরা ফাতিহার আলােকে ইসলামি আকিদা ও মানহাজ ও মুক্ত প্রাণের হে সন্ধানী বইগুলো ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। অনূদিত বইেয়র মধ্যে রয়েছে তাওহিদের মর্মকথা, মিল্লাতে ইবরাহিমের জাগরণ, দাসত্বের মহিমা, আল-আকিদাতুল হাসানাহসহ আরও গোটা দশেক বই। সম্পাদনার অঙ্গনেও তার রয়েছে যথেষ্ট সুনাম। স্বল্পসময়ে বেশ কয়েকটি বেস্টসেলার বইেয়র জন্য গুণীজনের প্রশংসা কুড়িয়েছেন।