এইচ. পি. লাভক্র্যাফট এক মহাজাগতিক রহস্যের নাম। অনেকেই তাঁকে কসমিক হররের জনক হিসাবে বিবেচনা করেন। যদিও তাঁর অনেক আগেই অ্যালজারনন ব্ল্যাকউড এবং রবার্ট ডব্লিউ, চেম্বার্স এই ধারাটি নিয়ে কাজ করেছিলেন। তবে হ্যাঁ, লাভক্র্যাফট ধারাটিকে পূর্ণতা দিয়েছেন। ল্যাভক্রাফটকে বুঝতে হলে পড়তে হবে উনার লেখা। গম্ভীরতায় ভরা এক মহাজাগতিক ভয় মিশে আছে উনার গল্পে, সেই ভয় থেকে কোনো মুক্তি নেই! সেই ভয়কে অনুভব করতে ডুব দেন প্রজেক্ট লাভক্র্যাফট এর প্রথম খন্ডে।
Howard Phillips Lovecraft, of Providence, Rhode Island, was an American author of horror, fantasy and science fiction.
Lovecraft's major inspiration and invention was cosmic horror: life is incomprehensible to human minds and the universe is fundamentally alien. Those who genuinely reason, like his protagonists, gamble with sanity. Lovecraft has developed a cult following for his Cthulhu Mythos, a series of loosely interconnected fictions featuring a pantheon of human-nullifying entities, as well as the Necronomicon, a fictional grimoire of magical rites and forbidden lore. His works were deeply pessimistic and cynical, challenging the values of the Enlightenment, Romanticism and Christianity. Lovecraft's protagonists usually achieve the mirror-opposite of traditional gnosis and mysticism by momentarily glimpsing the horror of ultimate reality.
Although Lovecraft's readership was limited during his life, his reputation has grown over the decades. He is now commonly regarded as one of the most influential horror writers of the 20th Century, exerting widespread and indirect influence, and frequently compared to Edgar Allan Poe. See also Howard Phillips Lovecraft.
ফিলিপ হাওয়ার্ড লাভক্র্যাফট যাকে আমরা সবাই এইচ.পি লাভক্র্যাফট নামে চিনি এক অদ্ভুত লোক। ওরকম অদ্ভুত কিম্ভুত কিন্তু অস্তিত্ব নাড়িয়ে দেওয়া সব উদ্ভট উদ্ভট চিন্তার গল্প একটা মানুষ কিভাবে কল্পনা করতে পারলো তা লেখককের রচনার মতোই অতি বিস্ময়কর ও বিহ্বল করে দিবার মতো জিনিস। লাভক্র্যাফটের গল্পের দুনিয়া আমাদের পরিচিত পৃথিবীকে অচেনা ও রহস্যময় প্রতিমান করে। মহাজগতের বিশালত্বের কাছে মানুষ কত তুচ্ছ তা আমাদের অনুভূত করিয়ে দেয়। নিজেদের অস্তিত্ব যে এতো ঠুনকো তা আবিষ্কার করার পর ভয় নিজে নিজেই আমাদের ঘিরে ধরে। আমরা মুখোমুখি হই প্রকৃতির অপ্রাকৃতিক রূপের। নিজেদের জ্ঞান-সভ্যতার গৌরব সম্পর্কে পুনর্বিবেচনা করতে বসি আমরা। লাভক্র্যাফটের গল্পের জগতে ভয় আসে অপ্রত্যাশিত ও অভাবনীয় উপায়ে। সাধারণত ' হরর ' জনরা আমার খুব একটা পছন্দের না। কিন্তু লাভক্র্যাফটের গল্পগুলো কি শুধুই ভয় দেখানো গল্প? মোটেইনা, লাভক্র্যাফটের গল্প আমাদের প্রতিনিয়ত ভুলে থাকা সত্যের মুখোমুখি দাড় করায় কিংবা সত্য এমনটা হলেও হতে পারে এরকম একটা অস্বস্তিকর ভাবনার সম্মুখে ফেলে। লাভক্র্যাফটের বিচিত্র জগত উপভোগ করেছি, দেখেছি ভয়াবহ সব দুঃস্বপ্ন!
অনুবাদক লুৎফুর কায়সার চমৎকার কাজ করেছেন। লাভক্র্যাফটের জটিল মারপ্যাঁচে ইংরেজি গদ্যকে ভেঙে ওমন সাবলীল বাংলায় রূপান্তর করার জন্য প্রশংসার দাবীদার তিনি। তাছাড়া লাভক্র্যাফট কে নিয়ে লেখা প্রবন্ধটি এবং প্রতিটি গল্পের ব্যাকস্টোরি দেওয়ার ফলে পড়তে সহজ হয়েছে। প্রজেক্ট লাভক্র্যাফটের পরবর্তী খন্ডের অপেক্ষায় রইলাম। কবে আসবে কে জানে!
ভয়, এক আদিমতম রহস্যময় অনূভুতি যা প্রতিটি মানুষকে তার আত্মা পর্যন্ত নাড়িয়ে দিতে সক্ষম। তবু মানুষ এই অনূভুতিকে খুজে পেতে চায় নিজের অবসরে, যতই রক্ত হীম করা হোক না কেন।
এইচ পি লাভক্র্যাফট এর নাম তার সবথেকে বিখ্যাত কুথুলহু মিথোস থেকেই পরিচিত হয়। কিন্তু তার দুর্বোধ্য ইংরেজি তার সাহিত্যের সাথে পরিচয়ে এক বিরাট বাধা হয়ে এলো। তার সম্পর্কে শুনে আসা বিরাট বিরাট কথা আর প্রশংসা আমার মত ভৌতিক প্রেমির জন্য লোভনীয় ছিলো। আর এই বাধাকে অতিক্রম করতে সাহায্য করলেন আমাদের লুৎফুল কায়সার দাদা। বের হলো বহু প্রতিক্ষিত প্রজেক্ট লাভক্র্যাফট।
এইচ পি লাভক্র্যাফট কে নিয়ে বলতে গেলে এই রিভিউটা দৈর্ঘে আর প্রস্থে বিরাট হবে যা বই রিভিউতে কাম্য নয়। তবে বইটি শেষ করবার পর এমন এক অনূভুতি জন্মাবে যা হয়ত কোনো হরর বই পড়ে জন্মাবে না। নিজের কল্পনার আদিমতম স্তর থেকে বের করে এনেছেন আজাথথ, ইথিয়ান, শুব নিগুরাথ, ড্যাগন, নিয়ারলাথোটেপ, কুথুলহু এর মত ভয়ংকর কিছু সৃষ্টি। মানব সভ্যতা যাদের সামনে অসহায় হয়ে থাকে, যারা কিনা ঈশ্বর বা এল্ডার গড। তবে এক্ষেত্রেও শ্রেনিভেদ রয়েছে যার দীর্ঘ আলোচোনা অনুবাদক তার বিশেষ প্রবন্ধে করেছেন।
গতানুগতিক ধারাকে ছিন্ন করে এই লেখার স্রষ্টা কাটিয়েছেন এক দুঃখময় জীবন। আর তার জীবনের নিসঙ্গতা আর চরম দুঃসময় যেনো প্রতিফলিত হয়েছে তার প্রতিটি গল্পের তাৎপর্যে। মানব জাতির প্রতি তার আক্রোষ আর ক্ষোভ যেনো ফুটে উঠেছে তার কলমের আচড়ে।
প্রতিটি গল্প নিয়ে পৃথক আলোচোনায় যাবো না তবে লেখকের লেখনি সম্পর্কে কিছু কথা না বললেই নয়। তার লেখনির ঢং বেশ এবড়োথেবড়ো। লেখনির দিকে তিনি মনোযোগ দেননি আর গল্প বলার ভঙ্গিতেও ছিলোনা বিশেষ শৈল্পিকতা। শুধু তার কল্পনার সেই আদিমতা রূপকে যখন পাঠক নিজের মধ্যে নিতে সক্ষম হবেন তখন সেই স্থানে তিনি টের পাবেন এই বিরাট মহাবিশ্বের সামনে মানুষের ক্ষুদ্রতা আর অসহায়ত্ব।
অনুবাদকের কথায় আসা যাক। সত্যি বলতে এটা আমার তার পড়া সর্বপ্রথম অনুবাদ। তিনি প্রতিটি গল্পকে এতটা স্বাবলীল ভাবে অনুবাদ করেছেন তা প্রশংসা না করলে অন্যায় হবে। এছাড়া তিনি প্রতিটি গল্পে টীকাগুলো পড়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়তা করে এবং পড়াটা আরো সহজ করেছেন। এই বইটি নিঃসন্দেহে তার বেস্ট কাজের মধ্যে একটা।
বইয়ের প্রোডাকশন নিয়ে তেমন অভিযোগ নেই তবে যেখানে আছে সেটি হচ্ছে ইলাস্ট্রেশন আর প্রচ্ছদের স্পষ্টতায়। বেশ কিছু ইলাস্ট্রেশন বেশ ঘোলাটে ধরনের যা কিছুটা নিরাশ করে। আর প্রচ্ছদ টাও কেমন ঝাপসা আর ড্যাগনের আকার টাও খুব বোঝা যায় না। আশা করছি প্রকাশনী এই ব্যাপার গুলোর ক্ষেত্রে আরেকটু সতর্কতা অবলম্বন করবে।
সবশেষে এটাই বলা হয়, লাভক্র্যাফট হরর জনরা তে এমন এক অবদান রেখেছেন যার প্রভাব তার মৃত্যুর এতগুলো বছরেও রয়ে গেছে। আর লুৎফুল দাদা এই কাজকে আমাদের সামনে ফুটিয়ে তুলেছেন এমনভাবে যেনো স্বয়ং লাভক্র্যাফট ই বলছেন বাংলা ভাষায়। এই উল্ল্যেখযোগ্য কাজ বাংলা সাহিত্যে খুব কমই দেখা মেলে। পরবর্তী খন্ডের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
এক কথা ব্যাপক। টপ লেভেল এর অনুবাদ। গল্প গুলা এত জোস আর ভয়ের যে কি বলব। এক কথায় অনবদ্য। গল্প নিয়ে তো আসলে কিছু বলার নেই। LC এর ওয়ার্ল্ড সম্পর্কে সবারই আইডিয়া আছে যারা হরর পড়ে। এখানে মূল প্রশংসার দাবিদার হচ্ছে লুতফুল ভাইয়ের অনুবাদ। কী অনুবাদ ভাই; কী অনুবাদ!!! মনে হয় নাই যে অনুবাদ পড়ছি। এতটাই সাবলীল। ভাই তাড়াতাড়ি পরের পার্টটাও আনেন!