ডক্টর অতুল সুর প্রখ্যাত নৃতত্ত্ববিদ, ইতিহাস বিদ ও সমাজ-বিজ্ঞানী বিদ্বৎ সমাজে ‘দুধর্ষ’ পণ্ডিত রূপে আখ্যাত। বয়স ৯২ বৎসর। রচিত গ্রন্থ সংখ্যা ১৫৪।কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র ও অধ্যাপক। ‘প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি ও নৃতত্ত্ব’ বিষয়ে এম.এ. পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করে সুবর্ণ পদক ও পুরস্কার পেয়েছিলেন। অর্থনীতিতে সপ্রশংশ ডি.এস.সি উপাধি পেয়েছেন। দশ বৎসর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপনা করেছেন।লেখক পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘রবীন্দ্রপুরস্কার’ পেয়েছেন। মধুসূদন ও রামমোহন পুরস্কার পেয়েছেন। নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন থেকে সুশীলা দেবী বিড়লা পুরস্কার পেয়েছেন।
সুমুদ্রিত এই বইয়ে নিম্নলিখিত ক'টি প্রবন্ধ আছে~ ১. প্রাগৈতিহাসিক প্রেক্ষাপট; ২. ভারতের আবয়বিক নৃতত্ত্ব; ৩. ভাষার যাদুঘর; ৪. কৃষ্টির বৈষম্য ও বৈচিত্র্য; ৫. পরিবার গঠন ও বিবাহ প্রথা; ৬. বিবাহের আচার-অনুষ্ঠান; ৭. জ্ঞাতিত্বমূলক সম্বোধন, আচরণ ও অধিকার; ৮. সমাজ ও জাতিভেদ; ৯. বাঙলার জাতি ও উপজাতি; ১০. আদিম মানবের ধর্ম; ১১. হিন্দুধর্মের স্বরূপ; ১২. লৌকিক ধর্ম ও জীবনচর্যা; ১৩. লোকায়ত দেবদেবীর উপাখ্যান; ১৪. পাল-পার্বণ ও উৎসব; ১৫. বিলীয়মান ব্যবহারিক জীবন। পরিশিষ্ট অংশে রয়েছে~ ক) জাতি ও পদবি; খ) খনার বচন; গ) গ্রন্থপঞ্জি; ঘ) নির্ঘণ্ট। ডক্টর সুরের পাণ্ডিত্য নিয়ে কোনো সংশয় না থাকলেও এই লেখাগুলোর উপর নির্ভর করা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে মূলত দু'টি কারণে~ প্রথমত, স্থানাভাবের কারণে লেখক নিজের বক্তব্যকে স্রেফ আপ্তবাক্যের মতো করে পরিবেশন করেছেন। তাদের স্বপক্ষে তিনি উপযুক্ত সাংখ্যিকীয় বা অন্য প্রমাণ দিতে পারেননি। দ্বিতীয়ত, এই বইয়ের মূল উপজীব্য নৃতাত্ত্বিক ধারণাগুলোর অধিকাংশই এখন বাতিল হয়ে গেছে। বইটি এক বঙ্গমনীষার প্রকাশের নিদর্শন হিসেবেই বিবেচ্য। ভারতের নৃতাত্ত্বিক পরিচয় সম্বন্ধে স্বচ্ছ ও আধুনিক ধারণা তৈরি করতে চাইলে বরং নাদিম হাসনাইনের 'ইন্ডিয়ান অ্যানথ্রপলজি' বইটা পড়ে দেখা উচিত।