Jump to ratings and reviews
Rate this book

শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবিতা

Rate this book
প্রচ্ছদ এঁকেছেন পূর্ণেন্দু পত্রী।

176 pages, Hardcover

First published May 1, 1986

2 people are currently reading
9 people want to read

About the author

Sarat Kumar Mukhopadhyay

5 books6 followers
শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৫ আগস্ট, ১৯৩১। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। বিজনেস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে স্নাতকোত্তর শংসাপত্র পেয়েছেন যুক্তরাজ্য থেকে। বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত। শরৎকুমারের প্রথম গল্প ও কবিতা প্রকাশিত হয়েছিল কুড়ি বছর বয়সে। প্রবাদপ্রতিম 'কৃত্তিবাস' পত্রিকার সঙ্গে শুরু থেকে যুক্ত ছিলেন। এ যাবৎ প্রকাশিত গ্রন্থ প্রায় তিরিশটি। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, অনুবাদ, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনী প্রভৃতি সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তিনি কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের এই সম্মানিত স্রষ্টা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথিরূপে আমন্ত্রিত হয়েছেন একাধিকবার। কথা পুরস্কারে (১৯৯১) ভূষিত শরৎকুমার মুখোপাধ্যায় বিশ্বসভ্যতা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আগ্রহী ও অনুসন্ধিৎসু ছিলেন। 'ঘুমের বড়ির মতো চাঁদ' কাব্যগ্রন্থের জন্য ২০০৯-এ সাহিত্য অকাদেমি সম্মানে ভূষিত।

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
1 (20%)
4 stars
2 (40%)
3 stars
2 (40%)
2 stars
0 (0%)
1 star
0 (0%)
Displaying 1 - 2 of 2 reviews
Profile Image for Harun Ahmed.
1,662 reviews421 followers
May 16, 2023
৩.৫/৫

"দাড়ি কামানোর মতো প্রতিদিন পাপ মুছে ফেলি"

শরৎকুমারের কবিতার সাথে প্রথম পরিচয় "বেহুলার প্রতি অর্ফিয়ুস" কবিতার মাধ্যমে। বেহুলাকে মহান করা পুরাণকে আঘাত করেছিলেন কবি। এক কবিতাতেই চমকে দিলেও পরে তার কবিতা আর সেভাবে পড়া হয়নি। তার সতীর্থ শক্তি, সুনীল, শঙ্খরা পাদপ্রদীপের পুরো আলো নিজেদের দিকে টেনে নিয়েছিলেন। এতোদিন পর কবির "শ্রেষ্ঠ কবিতা" পড়তে যেয়ে মনে হচ্ছে আরো আগেই পড়া উচিত ছিলো। শরৎকুমারের কবিতা সহজ। অকপটে মনের ভাব প্রকাশ করেন তিনি।যেমন-

"যা প্রাপ্য,
পেলেই ভারী হয়ে ওঠে মন
যেমন দুঃখ অপমান, যেমন নিঃসঙ্গতা"


তার ভালোবাসা, রাগ, ক্ষোভ, আসক্তি, বিরক্তি -সবকিছুর প্রকাশই সরাসরি। কোনো রাখঢাক নেই। এটা শরৎকুমার এর কবিতার শক্তি, আবার তার দুর্বলতাও। প্রথমদিকের অদ্ভুত সারল্যমাখা,
"ভালোবাসা, একদিন তোমাকেও আবার দ্বারস্থ হতে হবে /আমি ঘর অন্ধকার করে বসে আছি ;/এবার এসো না যেন ভিক্ষুকের মতো, তুমি রাজার দুলাল/ করাঘাত কোরো বন্ধ দরোজায়—একবার দুবার তিনবার ।" এর অবস্থান থেকে সরে গেছেন তিনি। না গেলে হয়তো স্বতন্ত্র কণ্ঠস্বরও গড়ে উঠতো না।
তার কবিতায় অনুসিদ্ধান্ত প্রচুর,বেশিরভাগ সময়ই কোথাও পৌঁছাতে চাচ্ছে পঙক্তিগুলো, নিজেকে ব্যক্ত করতে চাইছে প্রবলভাবে। এ কারণে বইয়ের বেশিরভাগ কবিতা পঠনে সরল হলেও ভাবনার সারল্য কম। গদ্য কবিতাগুলো কিছু কিছু ক্ষেত্রে গদ্যই মনে হয়। শরৎকুমারের সমসাময়িক কবিদের কবিতা যেভাবে আক্রান্ত ও মোহিত করে, তার কবিতা সেভাবে স্পর্শ করতে পারে না। তিনি মননের কবি, হৃদয়ের নন ততোটা। কিন্তু এই কবির কাছে ফেরত আসতে হবে। মনে রাখার মতো বহু পঙক্তি আছে বইতে, আছে শাণিত ও স্বচ্ছ চেতনার দীপ্তি।

(১৩ ডিসেম্বর, ২০২২)
Profile Image for Arupratan.
235 reviews385 followers
November 5, 2022
পা থেকে মাথা পর্যন্ত টলমল করে, দেয়ালে দেয়াল,
কার্নিশে কার্নিশ,
ফুটপাত বদল হয় মধ্যরাতে।

(শক্তি চট্টোপাধ্যায়)

মধ্যরাতে কলকাতা শহর শাসন করতেন যে-চারজন যুবক, কিংবদন্তি সেই অশ্বারোহী চতুষ্টয়ের একজন ছিলেন শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়। পেশা ছিলো চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টগিরি। কিন্তু বাংলা কবিতার বিশিষ্ট মাইলফলক "কৃত্তিবাস" কবিতাপত্রিকার প্রত্যক্ষ উদ্যোগীদের একজন ছিলেন। পঞ্চাশের দশকের মুখ্য কবিদের মধ্যেও তিনি একজন। তাঁর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কিংবা শক্তি চট্টোপাধ্যায়। অথচ শরৎকুমারের কবিতায় তিলপরিমাণ নেই তাঁর সেইসব শালপ্রাংশু বন্ধুকবিদের প্রভাব। নির্ভার নিজস্বতার এ এক আশ্চর্য উদাহরণ।

বিখ্যাত বন্ধুদের সঙ্গে তুলনা করলে তাঁর কবিতার সংখ্যা যৎসামান্য। তাঁর কাব্যভাষাতেও নেই সুনীল কিংবা শক্তির কবিতার মতো শব্দ কিংবা উপমা কিংবা বর্ণনার বর্ণময় সমারোহ। কিন্তু তাঁর বক্তব্যে একটা নিবিষ্ট বার্তা আছে, যেটা আমার ভালো লেগেছে। অনুচ্চস্বরে প্রায় মন্ত্রের মতো তিনি লিখেছেন একটি পাখি এবং একটি ছাতিমগাছের কথা।

একটি পাখি
সারা সকাল উড়ে বেরিয়েছে
কাড়াকাড়ি, মারামারি, চুরি, ছিনতাই
ছোটোখাটো লুঠতরাজ সেরে, দ্যাখো
নির্জন দুপুরে ছাতিমডালে ঠোঁট ঘষছে,
আপন মনে গুমরোচ্ছে অনুশোচনায়।
আর ছাতিম গাছ
তার সহজ বাহু তুলে, দুলে দুলে, দ্যাখো
ফিশফিশ করে বলছে
ক্ষমা, ক্ষমা। ক্ষমা।


চিরাচরিত বিষয়ের বাইরে এসে টিকটিকির উদ্দেশ্যে কবিতা লিখেছেন শরৎকুমার।

তোমার প্রপিতামহ, শাকাহারী, জাদুঘরে আমি তার কংকাল দেখেছি,
তিনঘর জোড়া এক সরীসৃপ।
বহুকাল অবলুপ্ত। দলত্যাগী তুমি
ছোট হতে-হতে টিকে গেলে। ধূর্ত
তুমি, গৃহস্থ বাড়িতে ঢুকে আত্মরক্ষা করো, যেন কিছুই ঘটেনি। ...


খসে পড়া মাথার চুলকে নিয়ে কবিতা লিখেছেন।

যে মুহূর্তে পরিত্যক্ত দেহ থেকে, তুমি আবর্জনা—
কেন লিপ্ত হতে আসো, কেবল উত্যক্ত করতে আসো?


কাক-শাবকের উদ্দেশ্যে লিখেছেন।

স্বনির্ভর হতে হবে। ওপরে আকাশ
স্নিগ্ধ প্লাইকাঠে মোড়া, অন্নময়
আবদ্ধ জীবন নিচে, মাঝখানে
কাকধর্মে নিয়তই সংগ্রাম রয়েছে।


দার্জিলিঙে বেড়াতে গিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার উদ্দেশ্যে—

ধুৎ! এই সূর্যোদয়!
এর জন্যে এতো কষ্ট এতো হুটোপাটি
ছেঁদো প্লাস্টিকের বলের মতো ঠান্ডা বিবর্ণ একটা জিনিশ
ময়লা মেঘের স্তূপ থেকে কষ্টেসৃষ্টে উঠে এলো...


যাকে উদ্দেশ্য করে সবাই কবিতা লেখে, তাকে লিখেছেন—

আমারও গোপন কথা কিছু ছিল, তুমি জেনে যাও।
দেখা হলে যে-কথা লজ্জায়
বলিনি, চিঠিতে লিখতে পারিনি যে-কথা
আমাকে দেখেই তুমি বুঝে নাও।


তাঁর প্রথমজীবনে লেখা কিছু কবিতা আমার কাছে বিষয়বিহীন খাপছাড়া মনে হয়েছে। অথচ তাঁর সেই প্রথমজীবনেরই একটা কবিতা, হারুন সেদিন রাতে না পাঠালে, এতো তাড়াহুড়ো করে শরৎকুমারের কবিতার বইটা কিনে আনতে দৌড়োতাম না। সেই কবিতার শুরুর কয়েকটা লাইন—

ভালোবাসা, একদিন তোমাকেও আবার দ্বারস্থ হতে হবে
আমি ঘর অন্ধকার করে বসে আছি।
এবার এসো না যেন ভিক্ষুকের মতো, তুমি রাজার দুলাল
করাঘাত কোরো বন্ধ দরজায়— একবার দুবার তিনবার।

আমি সাড়া দেবো না প্রথমে হয়তো, হয়তো অভিমান
কণ্ঠরোধ করে থাকবে, দেহমন উচাটন, তুমি
জানো না বন্ধুরা ফেলে পালিয়েছে। আমি
সঙ্গহীন লোকেদের ভিড়ে
বসে আছি, ভাবছি—



কী ভাবছি?
Displaying 1 - 2 of 2 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.