নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যে এ লড়াই নয়; মৃত্যুর সাথে এই প্রহসন আড়ালে থাকার জন্য! সবার মাঝে থেকেও তাকে জানবে না কেউ, ভিউ-ফাইন্ডারে তার চোখ খুঁজে নেয় টার্গেট, টার্গেটকে বিদ্ধ করা একেকটা বুলেট নিশ্চিত করে তার অন্তরাল। সে থেকে যায় অগোচরে, অগোচরা হয়ে...
MOHAMMAD NAZIM UDDIN (Bengali: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন) is a writer and Translator of more than 26 novels..His original works are NEMESIS, CONTRACT, NEXUS, CONFESSION,JAAL, 1952: nichok kono number noy, KARACHI, RABINDRANATH EKHANE KOKHONO KHETE ASENNI and KEU KEU KATHA RAKHE. These six Thriller novels are highly acclaimed by the readers.
দেশ সেরা শুটার তারপরও বাদ পড়ে যায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া থেকে। তারপর? জীবন এলোমেলো হয়ে যায় জড়িয়ে পড়ে অন্ধকার জগতে! খ্যাতি পাওয়া যার স্বপ্ন ছিল সে কিনা আজ অগোচরে...
রাজনীতি, ষড়যন্ত্র, খুন, ক্ষমতা, টাকা, প্রতিশোধ প্রতিটি শব্দ জুড়ে বইয়ের প্লটকে বিস্তৃতি দিয়েছে। যদিও গল্পটা একজন শুটারের কিন্তু ব্যার্থতার সাথে বাকি শব্দগুলোও যুক্ত হয়েছে। অন্ধকার জগতে প্রবেশ তারপর সেখানে টিকে থাকার সংগ্রাম। বইটা নিয়ে একটু বেশিই আশা ছিল, অবশ্য কারণ ❝দরিয়া-ই-নূর❞। দারুণ একটা বই পড়ার পড়ে ধারণা করে ছিলাম অগোচরা আরও বেশি ভালো লাগবে। কিন্তু অনেক বেশিই হতাশ হয়েছি। প্রায় ৫০+ পৃষ্ঠা পড়ার পর ইচ্ছে চলে গেছিলো পড়ার। কয়েকদিন ব্রেক নিয়ে বাকিটা শেষ করলাম।
পড়ার সময় যেটা সবসময়ই মনে হচ্ছিল সেটা হলো ডিটেলিং অনেক কম। একের পর এক টার্গেট ফিক্সড হচ্ছে আর শুট করা হচ্ছে। তারপর আগের খুনকে ঢাকতে আরেক খুন। জীবনের প্রথম শুটেই তিন তিনবার একই জায়গায় নিশানা করা, একটুও হেরফের না!!! ঐশ্বরিক ক্ষমতাসম্পন্ন শুটার মনে হয়েছে। তারপরের কয়েক মাসের শুটিং প্রাকটিসের অভিজ্ঞতাগুলো থাকলে ভালো হতো। কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসেবে অগোচরাকে দুর্বল লেগেছে। একবার ব্যার্থ হয়েই যেনো বুদ্ধি হারিয়ে ফেলেছে। পুরো বইয়ে শুধু তার দ্বিধা- দ্বন্দ্ব, অবিশ্বাস ও মানসিক টানাপোড়েন। বইয়ে বেশ কিছু চরিত্র আছে এবং সবগুলোই মোটামুটি ডার্ক বলা যায়। কে কেমন শেষ পর্যন্ত সন্দেহ থেকেই যায়। একটা শুটিং এর আগে প্রস্তুতি- প্রস্থান নিয়ে তেমন ডিটেইলসে কিছুই বলা হয়নি। এডাল্ট কন্টেন্ট বেশ ভালো পরিমাণেই আছে। প্রাপ্তবয়স্ক না হলে বইটা না পড়াই ভালো। প্লটটা ভালো ছিল কিন্তু কাহিনী জমলো না। ওপেন এন্ডিং, পাঠক নিজের মতো বাকিটা কল্পনা করে নিতে পারবে।
অগোচরা টার্গেটেড অডিয়েন্স বেসড। আপনি যদি অনেক থ্রিলার পড়ে থাকেন এই বই আপনার জন্য না। আপনি যদি নতুন পাঠক হয়ে থাকেন তবে হ্যা, তুলে নিতে পারেন বইটা হাতে৷
থ্রিল দিতে গিয়ে অনেকাংশেই বিরক্তিকর হয়ে গেছে। গল্পের প্রয়োজনে, চরিত্রের প্রয়োজনে বিল্ডাপ এর মাধম্যে গল্প স্লো ও বড় করা এক জিনিস। আর আম পাতা জাম পাতা লিখে পেজ ভরানো আরেক জিনিস।
দরিয়া ই নুরে যে এক্সপেক্টেশন তৈরী হয়েছিল, অগোচরায় সেই এক্সপেক্টেশন আবার ও ভূপতিত হলো। তবে ২৩ সালের মাঝামাঝি তে থ্রিলার সম্রাট এর কাছে এমন এমেচার লেভেলের লিখন সত্যিই বড্ড হতাশ করেছে।
প্রথমে ভেবেছিলাম রেট ও করব না, ২ লাইন লেখা তো দূরের কথা। কিন্তু নিজের রিমাইন্ডারের জন্য হলেও রিএকশন টা লেখা।
তবে অবশ্যই সময় ও টাকা বাচানোর জন্য অনুরোধ থাকলো। আর যারা থ্রিলারে নতুন তাদের জন্য হয়তো সুপাঠ্য হতে পারে৷
লেখকের "ঢাবাকা" পড়ে মনে হয়েছিলো, রবারের মতো টেনে গল্প লম্বা করা হচ্ছে। "অগোচরা"য় আবার বড় কাহিনি কেটেছেটে সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে এমন বোধ হোলো। নব্বইয়ের দশকের পুরনো ঢাকা আর কেরানীগঞ্জের আন্ডারওয়ার্ল্ড কীভাবে চলতো তার একটা রূপরেখা পেয়ে ভালো লাগলো। মূল চরিত্রের অন্তর্দ্বন্দ্ব ও দোটানা স্পষ্ট হোলো না। অথচ হওয়ার সুযোগ ছিলো। একদম শেষ অংশটা ভালো লেগেছে।
নাজিম ভাইয়ার দুয়েকটা বাদে সবগুলো বই-ই পড়া হয়েছে। তাই বুঝেশুনেই বলছি। অগোচরা হতে পারে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের ক্রাইম ফিকশন ইউনিভার্সে আপনার আদর্শ হাতেখড়ি। নাজিম ভাই যেসকল বিষয়ে সিদ্ধহস্ত, তার সবকিছুই আছে বইটায়, সুষম পরিমাণে। খুব বেশি বড় না হওয়ায় কয়েক ঘন্টাতেই পড়ে ফেলতে পারবেন। আবার চাইলে রিডার্স ব্লক কাটানোর টোটকা হিসেবেও কাজ করবে বইটা। শুরু থেকে শেষ অবধি, পুরো গল্পে টেনশনটা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন লেখক। ট্রেডমার্ক ছোট ছোট চ্যাপ্টার, স্বাদু বর্ণনা, উত্তম পুরুষের দৃষ্টিকোণ থেকে কাহিনী। সাথে পুরান ঢাকার গলি-ঘুপচি, আন্ডার ওয়ার্ল্ড আর এক শ্যুটার। ভালো লেগেছে।
মুসকান জুবেরীর হাতের রান্না খেয়ে, অনেকদিন মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন মুখো হইনি। ওই সিরিজ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছিল, প্রথমটা ভালো লাগলেও, দ্বিতীয়খানি লাগেনি। তবুও, 'অগোচরা' আমায় হতাশ করলো না। চেনা মোড়কে অপরাধ জগতের পরিচিত প্রতিচ্ছবি। জানা ছিল, এই জিনিস আমায় আশ্চর্য করবে না। এই বই থেকে হয়তো নতুন কিছুই পাবো না। এবং যথারীতি, পেলামও না। তবে সেটা নিয়ে আক্ষেপ নেই। মাঝেমধ্যে এমন কিছু গল্প পেলে মন্দ কি? দ্রুতগতির ন্যারেটিভে, সিনেমাটিক সব কান্ডকারখানা। কোনো মারকাটারি দক্ষিণ ভারতীয় ছবি দেখে উঠলাম যেন।
স্নাইপার নিয়ে গপ্পো লিখতে গিয়ে, লেখক চাইলেই পাশ্চাত্য থ্রিলারের আদলে গড়তে পারতেন সবটা। সেই পন্থায় হাঁটেননি তিনি। বরং বাংলাদেশ ও পুরানো ঢাকার আন্ডারগ্রাউন্ডের পাঁকে স্বেচ্ছায় নামিয়েছেন তার চরিত্রদের। এবং এখানেই 'অগোচরা'র সুপ্ত গ্রহণযোগ্যতা। ক্লেদাক্ত নাগপাশে বন্দী হয়ে খুনোখুনির এই চিরাচরিত আখ্যান, সবটাই হয়তো নিয়মমাফিক, তবুও সবটাই চিত্তাকর্ষক। লোকাল ফ্লেভারে লেখক লেখেনও ভালো। গ্যাং-ওয়ার, ফেম্ ফ্যাটাল, লাশের পাহাড়। পাল্প ফিকশনের সমস্ত গুণাবলী দিয়েই সাজিয়েছেন ছোট্ট বইটিকে।
তবে আক্ষেপ, প্রথম পুরুষে বর্ণিত, স্বগতোক্তি রূপে লেখা হলেও, মূল চরিত্রের মানসিক অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে ধোঁয়াশা থেকে যায়। অপরাধ ও মুক্তি। মৃত্যু ও বেচেঁ থাকার উদগ্র বাসনার মাঝে মনের এই জটিল উচাটন, সবটাই আরো বিশদে লেখা যেত। তবে সেই ক্ষেত্রে বুঝি এই ঝটিকা সফরে ব্যাঘাত ঘটতো। ছোট-ছোট অধ্যায়ে এক বসায় শেষ করে দেওয়ার মতন বই 'অগোচরা'। অহেতুক অতিকথন নেই, বাজে ফ্যানানো নেই, গোঁজামিল থাকলেও সেটা মাত্রাতিরিক্ত নয়। এই জিনিস সব্বার ভালো লাগবে না, সেটা স্বাভাবিক। তবে, ক্কচিৎ কদাচিৎ ভায়োলেন্সের সুরে মজতে চাইলে, একটিবার পড়ে ফেলাই যায়।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন অপরাধ জগতের মেজাজ বুঝেন— অথবা বলা ভালো, মেজাজ তৈরী করেন। তাঁর পুরান ঢাকা, আর ঢাকাইয়া গ্যাংস্টারদের জগৎ গল্প তৈরীর দারুণ এক প্রেক্ষাপট। যেখানে দরিয়া-ই-নুর সৃষ্টি হয়েছে, সেই পুরান ঢাকার এক আনকোড়া তরুণের অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়ার গল্প এই অগোচরা।
অগোচরা। স্নাইপার। যে দৃষ্ট��র অগোচরে সংহার করে।
শ্যুটিং স্পোর্টসে নাম করা এক তরুণ কপালের ফেরে জড়িয়ে পড়ে গ্যাং-ওয়ারে। একবার এই জগতে পা রেখেছো তো আর নিস্তার নে���, নিজের নিয়তি ফসকে যাবে নিজের হাত থেকে। তারপর একদিকে জান বাঁচানো, আর অন্যদিকে মুক্তির খোঁজ। পাকেচক্রে চলতে থাকে অগোচরা'র টানাপড়েন। শেষ অব্দি কি সে পারবে মুক্ত হতে? কাহিনীর মূল গতিপথ এই-ই, এবং কমবেশি গল্প পড়ে আমরা জেনে গেছি, না, সহজে মুক্তি মিলবে না। এই সার-গল্পের মাঝে, ঘটনার একেক মোড় আগ্রহ জুগিয়েছে গল্পে। পাঠককে ধরে রেখেছে ১৭৬ পৃষ্টার শেষ অব্দি।
১০ আগস্ট ২০২৩ এই উপন্যাসিকার ওপর নির্মিত ওয়েব সিরিজ আসছে। বইটা প্রকাশ পাওয়া, আমার পড়ে নেওয়া, এই সবই ওয়েব সিরিজটা সামনে রেখে, তাই বইটা পড়ার সময় চাইলেও মুক্তি পাওয়া ট্রেলার আর কাস্ট করা শিল্পীদের চেহারা মাথা থেকে সরিয়ে রাখা যায়নি। এবং সেই প্রেক্ষিতে যেসব আশাবাদ মনে উঁকি দিয়েছে তা-ই জানাই :
কাস্টিং জমজমাট! ফজলুর রহমান বাবু-র বিধুদা, মম-র মনিকা, অথবা অগোচরা আলী ওয়াহাব সৌহার্দ্য, এঁদেরকে ভাবতে গেলে একেকটা ঘটনার ওজন-ই বেড়ে যায়।
লেখকের ঘটনা-নির্মাণ দেখতে গেলে একটু ভিন্নধর্মী। কাহিনীর গতিপথ এবং ঘটনাগুলোর মাঝে ভালো উপাদান আছে পাঠক/দর্শক তথা ভোক্তাকে আনন্দ দেওয়ার জন্য, এবং নির্মাতাদের জন্যও সেটা গল্পটা ভালো করে বলার একটা সুযোগ। কিন্তু লেখক নাজিম উদ্দিন সে কাজটুকু যথেষ্ট ভালোভাবে করেননি অগোচরা-তে। এখানে সংলাপের মাঝে প্রাণ নাই, ন্যারেটিভ-ও আকর্ষণীয় না। ক্ষেত্রবিশেষে ধারা বর্ণনা শুধু পড়ার জন্য পড়ে যেতে হয়েছে। অথচ উপাদানগুলো লেখক তৈরী করেছিলেন ভালোই।
এখন শুধু 'অগোচরা' পর্দায় দেখার অপেক্ষা। গল্পকার চিত্রনাট্যকার পরিচালক অভিনেতা সবাই থ্রিলার লেখক, এমন এক টিমের কাছ থেকে ভালো কাজ আশা করছি। এবং আবার মনে করিয়ে দিই, অগোচরা-র গল্পে মালমশলা আছে দারুণ। এখন শুধু একটা ঠিকঠাক নির্মাণের প্রত্যাশা।
বইঘরে প্রথম পার্ট পড়া শেষে ভালই লেগেছিল কিন্তু ২য় পার্ট তথা পূর্ণাংগ টা পড়ে একদম হতাশ হলাম।মনে হল জগাখিচুড়ি বানিয়ে ফেলছে।শেষ দিকে কে কাকে মারছে বা কীভাবে মারছে তালগোল পাকিয়ে ফেলছেন লেখক মনে হল। সর্বোপরি হতাশ হলাম
গল্পটার শুরু থেকেই একেবারে আটকে রাখবে পাঠককে। একজন শ্যুটারের গল্প অগোচরা। আন্ডারওয়ার্ল্ডে তার জার্নি নিয়েই কাহিনী এগিয়েছে। এক বসাতেই শেষ করার মত গল্প। সাসপেন্স শুরু থেকেই ছিল। শেষে ছোটখাটো একটা টুইস্টও আছে।
একশন চলচ্চিত্রে তাদের আমরা অনেকবার দেখেছি। আধুনিক রাইফেলের সাথে টেলেস্কোপের মতো টুল যেটি স্কোপ নামে পরিচিত, তা ফিট করে, বাতাসের গতিবেগ, টার্গেট থেকে দূরত্ব, সঠিক অবস্থান ঠিকঠাক করে শীতল মস্তিস্কের কোন দুর্দান্ত লক্ষ্যভেদী তাঁর টার্গেট করা ব্যক্তিকে বেশ খানিকটা দূর থেকেই বধ করছেন।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এই স্নাইপারের সার্থক নামকরণ করেছেন 'অগোচরা'। "সবই হবে অগোচরে জানবে না কেহ।" আইয়ুব বাচ্চুর সেই গানের কথার মতো একজন স্নাইপার বা অগোচরার কাজ।
গল্পের প্রথম অংশে রাজনৈতিক কারণে আন্তর্জাতিক শ্যুটিং প্রতিযোগিতা থেকে অন্যায্যভাবে বাদ পড়া আমাদের অগোচরা কীভাবে অন্ধকার জগতে নিজের অগোচরেই জড়িয়ে পড়েন তা দেখা যায়। পুরান ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড থেকে পুরান কোলকাতা পর্যন্ত তাঁর কর্মকান্ডের বিস্তৃতি ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
আন্ডারগ্রাউন্ড জগতের বিভিন্ন বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচল, একজন স্নাইপারের প্রয়োজনীয়তা, বিভিন্ন পাকেচক্রে গল্পের মূল চরিত্রের নৈরাজ্যকর যাপনের গতিময় চিত্রণ করেছেন লেখক।
বইয়ের অপেক্ষাকৃত কম ভালো অংশও আছে। গল্পের প্রথমার্ধে যেভাবে 'অগোচরা' প্রমিজিং মনে হয়েছিলো, পরবর্তিতে বিভিন্ন ডাবল ক্রশ, থ্রিপল ক্রশ ঘটনা পরম্পরা এবং খুনোখুনির উপর এত মনোযোগ দেয়া হয়েছে যে আমার মতে একটা বড় সুযোগ মিস হয়ে গেছে।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের 'রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেন নি" কেন এত ভালো লেগেছিলো? নুরে ছফা, মুসকান জুবেরী, ক্যানিবালিজম, সাসপেন্স এসব কারণের পাশাপাশি ঐ রেস্টুরেন্টের খাওয়া-দাওয়া এবং ডেকোরেশনের যে চমৎকার বর্ণনা ছিলো তা ঐ নভেলের বেশ ভালো করার অন্যতম প্রধান কারণ।
একইরকমভাবে অগোচরায় একজন স্নাইপারের কিল শট নেয়ার আগে বিভিন্ন প্রস্তুতিসমূহ বা প্রিপারেশন আরো অনেক সুন্দর এবং সুচারুভাবে বর্ণনা করার সুযোগ ছিলো মনে হয়। এ জায়গাটায় একটা বড় মিস হয়ে গেছে।
অগোচরা পড়ার সময় 'স্বাপদ সনে' এর জামশেদের কথা মনে পড়ে গিয়েছিলো। আমাদের গল্পের অগোচরার মতো সেও শ্যুটিং এ বেশ প্যাশনেট ছিলো।
একটা বিষয় আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। বাতিঘর প্রকাশনীর বইয়ের কোন প্রোটাগনিস্ট শ্যুটিং স্পোর্টসের দিকে ঝুঁকে গেলে তাঁর কপালে খারাপি থাকে।
বই রিভিউ
নাম : অগোচরা লেখক : মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রথম প্রকাশ : জুন ২০২৩ প্রকাশনায় : বাতিঘর প্রকাশনী প্রচ্ছদ : জাহিদ জামিল জনরা : থ্রিলার গল্প ( প্রায় নভেলার মতোই ) রিভিউয়ার : ওয়াসিম হাসান মাহমুদ
ভালোই ছিলো, এক বসায় শেষ করে ফেলার মতো। সাদামাটা এক যুবক যার স্বপ্ন ছিলো দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনবে, সে কী না পথ ভুলে অন্য পথে... স্নাইপারের এতো সুন্দর একটা প্রতিশব্দের জন্য মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের অবশ্যই ধন্যবাদ প্রাপ্য। নভেলাটাও ভালো ছিলো।
মানুষের কত না স্বপ্ন থাকে। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য কত ত্যাগ, কত লড়াই! তবুও সে স্বপ্ন পূরণ হয় না। স্বপ্নের খুব কাছ থেকে ফিরে আসার দুঃখটা বিশাল। যে একবার এই বিষয় অনুধাবন করতে পেরেছে, তার মতো দুঃখী আর কেউ নেই। কিছু স্বপ্ন থমকে যায় পরিবেশ, পরিস্থিতির কারণে। কিছু স্বপ্ন আবার জোর করে থামিয়ে দেওয়া হয়। কেউ কেউ পেছন থেকে টেনে ধরে। তখন চাইলেও এগিয়ে যাওয়া যায় না।
এই সমাজে তারাই সফলতার মুখ দেখে, যাদের মামা-চাচা-খালু স��াজের বড়ো বড়ো অবস্থানে জায়গা করে নিয়েছে। শীর্ষস্থানে যেতে এমন একটি হাতের আশীর্বাদ থাকলে আর কী লাগে? অযোগ্য হয়েও সফলতার চূড়া দেখা যায়। আর যোগ্যরা? তারা হয় নিম্নগামী। যেই অবস্থানে একদিন তার যাওয়ার কথা ছিল, সেই অবস্থানে এক এমন একজন যে যোগ্যতার চেয়ে সুবিধা পেয়েই এগিয়ে গেছে। এভাবেই স্বপ্ন ভেঙে যায়, মিথ্যে হাহাকারে বুক ভাসে। তারপর জীবনের সবটুকু রং হারিয়ে ধূসর বিবর্ণ হয়ে ও���ে স্বপ্নগুলো। আর বিবর্ণ স্বপ্ন আর রঙিন হয়ে ওঠে না। এভাবেও কালো হতে হতে একসময় হারিয়ে যেতে হয় ঘনকালো অন্ধকারে।
"অগোচরা" এমনই এক মানুষের গল্প। যার স্বপ্ন ছিল নামকরা শুটার হবে। দেশে বিদেশে নাম কামাবে। কিন্তু সে স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। তার পরিবর্তে যখন মন্ত্রীর ভাগ্নে জায়গা করে নিলো, সেখান থেকে জীবনের গল্প অন্য দিকে মোড় নিয়েছে। কক্ষচ্যুত হয়ে ওঠা কাউকে আপন কক্ষপথে ফেরানো খুব একটা সহজ নয়। আর যদি সে না চায়। বদলে যাওয়া এই জীবন নিয়ে সে কী করবে জানে না। তখনই এক প্রস্তাব আসে, যার জন্য জীবন এভাবে পথ হারিয়েছে; তাকে সরিয়ে দিলেই হলো! কিন্তু সে একজন শুটার, সে তার হাতের যাদু মানুষ খুনের জন্য ব্যবহার করবে? দ্বিধা লাগে। তবুও তীব্র ক্ষোভ হোক বা অন্য কিছু সে কাজটি করতে রাজি হয়। আর এখান থেকে জীবনের গতিপ্রকৃতি বদলে যেতে থাকে।
মাফিয়া জগতে একবার প্রবেশ করলে সেখান থেকে নিস্তার পাওয়া যায় না। মুক্তি মেলে না কিছুতেই। মুক্তির খোঁজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যেতে হয়। কিন্তু কিছুতেই সে ধরা দিবে না। প্রথমদিন যেই লক্ষ্যে রাইফেল তুলে নেওয়া হয়েছিল, সেই লক্ষ্য এভাবে অন্যদিকে চলে যাবে সে ঘুণাক্ষরেও জানত না। সেই থেকে শুরু। চুপিসারে বসে থাকা। রাইফেলের টেলিস্কোপে চোখ রেখে একের পর মানুষকে খুঁজে বেড়ানো, তারপর নিশানা ঠিক করে ট্রিগার টেনে দেওয়া। গল্পগুলোর পার্থক্য হয় না। কখনো শত্রুপক্ষের দিকে নিশানা রাখতে হয়। কখনো মিত্রের দিকে। এই খেলায় কেউ কারো বন্ধু নয়। কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না। সঠিক স্থানে সঠিক সময় ট্রিগার টানতে না পারলে নিজেরই ছবি হয়ে যাওয়া লাগতে পারে।
দেশ পেরিয়ে ভারতেও একই লক্ষ্য। আর নিজেকে আড়াল করে করা। কারণ এই খেলায় একজনই আছে, যে অগোচরে নিশানা ঠিক রাখতে পারে। মৃত্যুর এই খেলায় মুখোমুখি হলে বিপদ। কখন যে মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে হাজির হবে কে জানে!
"অগোচরা" বইটির প্রথম অংশ পড়েছিলাম ইবুকে। খুবই দারুণ লেগেছিল সেই অংশটি। জানতাম না, এর যে দ্বিতীয় অংশ রয়েছে! প্রথম অংশে যেই সমাপ্তি টানা হয়েছে, তৃপ্তি পেয়েও পরবর্তী কাহিনি জানার তীব্র আকাঙ্ক্ষা চেপে বসেছিল। দ্বিতীয় অংশ আছে জেনে স্বস্তিই পেয়েছিলাম। দ্বিতীয় অংশ আরও বিস্তৃতি, আরও দারুণ।
আমাদের গল্পকথক নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পেরে যখন হতাশায় নিমজ্জিত তখনই কাজের সুযোগ আসে। যে কাজে সে পারদর্শী। সেখান থেকেই আন্ডারওয়ার্ল্ডের এই খেলায় সেও একজন খেলোয়াড়। সবার অগোচরে থেকে শুধু লক্ষ্য নির্ধারণ যার কাজ। যাকে মারতে গিয়ে প্রথম কাজ, পরবর্তীতে তারই হয়ে কাজ করা। এই খেলায় কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না। সবাই সবাইকে মারতে প্রস্তুত। শত্রুকে ক্ষমা করে দিলে বা বাঁচিয়ে রাখলে নিজের মৃত্যু ডেকে আনা হয়। এমনকি মায়ের পেটের ভাইও লোভে পড়ে শত্রু হয়ে ওঠে।
এই গল্প একজন নারীরও। হয়তো পরিস্থিতির চাপে একজন মাফিয়া ডনের সাথে বিবাহ বন্ধনে বাঁধা পড়তে হয়েছিল। কিন্তু সেখানে ভালোবাসা ছিল না। এমন একজন মানুষ যেকোনো জায়গায় যেকোনো পরিস্থিতিতে লাশ হয়ে থাকতে পারে। তাই সে ভালোবাসা খুঁজছিল। ভালোবাসার মধ্য দিয়ে মুক্তির পথ খুঁজছিল। মুক্তি পেয়েছিল কি? মৃত্যুর এ খেলায় কে তার জন্য ভালোবাসার নীড় বানিয়ে দেবে? কিন্তু একসময় সত্যিকারের ভালোবাসা হয়তো আসে। তাকে আকড়ে ধরে টিকে থাকা যায় কি না, এটাও এক প্রশ্ন।
লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের লেখনী নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই। অত্যন্ত সাবলীল। শব্দচয়ন পরিপাটি। ইংরেজি শব্দের আধিক্য নেই, বাংলা শব্দের ভারিক্কি নেই। গল্প বলার ধরন আমার বেশ ভালো লেগেছে। এক অন্যরকম নাজিম ভাইয়ের দেখা পেয়েছি যেন। অতীতের গল্পগুলো দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। সংলাপের উপর জোর না দিয়ে গল্প বলার উপর জোর দিয়েছেন। কিছুক্ষেত্রে সংলাপ বিহীন সংলাপ মনে ধরেছে। সংলাপ নেই, অথচ সংলাপের মতোই যেন বর্ণনা করেছেন।
পরিশেষে, সবকিছুর কই শেষ হয়? মুক্তির পথ খুঁজলেই কি সবসময় পাওয়া যায়? কখনো শেষ থেকেই নতুনের শুরু। মুক্তির পথ খুঁজতে গিয়ে আবারও কোনো বাঁধার সম্মুখীন। তাই কিছু গল্প হয়তো শেষ হয় না। এভাবেই চলতে থাকে। এই অন্ধকার জগতে একবার প্রবেশ করলে সেখান থেকে নিষ্কৃতি মেলে না। কখনোই মেলে না...
▪️বই : অগোচরা ▪️লেখক : মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ▪️প্রকাশনী : বাতিঘর প্রকাশনী ▪️পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১৭৬ (ক্রাউন সাইজ) ▪️মুদ্রিত মূল্য : ২৭০ টাকা ▪️ ব্যক্তিগত রেটিং : ৪.৫/৫
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের ছোট্ট এক নভেলা 'অগোচরা'। বইয়ের কাহিনী আবর্তিত হয় একজন শুটারকে ঘিরে। যার স্বপ্ন ছিলো আন্তর্জাতিক লেভেলের একজন শুটার হওয়ার। কিন্তু নোংরা রাজনীতির শিকার হয়ে তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয় না। জীবনে হতাশ হয়ে ছেড়ে দেয় পড়াশোনা। হতাশায় জর্জরিত হয়ে ডুব দেয় নেশার জগতে। ঢুকে পড়ে অপরাধ জগতেও। কিন্তু এক সময় সে বের হতে চায় অপরাধ জগত থেকে। মুক্তি পেতে চায় এই অন্ধকার জীবন থেকে। আসলেই কি মুক্তি পায় সে? সে কাহিনী আর বলছিনা; জানতে পড়তে হবে অগোচরা বইটি।
পাঠ অনুভূতির কথা বললে বলবো লেখকের অন্যান্য বইয়ের তুলনায় এই বইয়ে থ্রিল কম ছিলো তুলনামূলক ভাবে। তবে এমনিতেই আমার হালকা ধাঁচের থ্রিলার পড়তে ইচ্ছে হচ্ছিলো। তাই বইখানা বেশ উপভোগ করেছি। বরাবরের মতো লেখকের লেখনীশৈলী ছিলো অসাধারণ। কাহিনীর গতি ছিলো বলে পড়ে আরাম লেগেছে। কাহিনীতে অল্পস্বল্প টুইস্ট বেশ উপভোগ্য ছিলো পুরো বই জুড়ে।
এক নজরে: বইয়ের নাম: অগোচরা লেখক: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রচ্ছদ: জাহিদ জামিল মূদ্রিত মূল্য: ২৬০ টাকা পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৭৬ প্রথম প্রকাশ: জুন, ২০২৩ প্রকাশনী: বাতিঘর
অগোচরা - যে সবার অগোচরে আঘাত হেনে যাচ্ছে। শুধু মুক্তির জন্য। কিন্তু মুক্তি কি ধরা দেয়?
একজন স্নাইপার এশিয়ান গেমসে বাদ পরে যায় অন্য এক রাজনৈতিক নেতার ভাতিজার জন্য। এরপর তার মনোবল ভেঙে যায় আর কুপথে বাড়ায়। এই হলো কাহিনী।
এই কাহিনীতে ভাবনাতীত টুইস্ট আছে। কখন কাহিনী কোন দিকে যায় তার কোনো ঠিকঠিকানা নাই। কে যে ভালো কে যে খারাপ বোঝা মুশকিল। এরকম থ্রিলার পড়লে অন্য জনরার বই একেবারেই পড়তে ইচ্ছা হয় না।
ছোট পরিসরে লেখা বই মনে হলেও আসলে বেশ অনেকগুলা চরিত্র আছে বইটিতে। লেখক নিজেই শুরুতে বলেছেন যে ছোট গল্প লিখেতে গিয়ে বড় বানিয়ে ফেলেছেন, তবে যা হয়েছে ভালই হয়েছে। স্নাইপারের জীবন নিয়ে আমি বাংলা কোন গল্প পড়ি নাই, আছে কিনা জানিও নাহ। সে হিসেবে বইটি নতুন। লেখক পুরান ঢাকার, সেই হিসাবে উনার থেকে ভাল আর কেউ মনে হয়না এলাকাটাকে এনগেইজ করতে পারবেন এবং করেছেনও। গল্প আলোচনা করব না। পড়েন বইটা, ভাল লাগবে খুব। স্নাইপারের বাংলা নাম দিয়েছেন আগোচরা। এইটা আমার কাছে বেশ ভাল লাগল।
অসাধারণ। প্রায় এক বসাতে ঘন্টাখানেকের মধ্যে শেষ করে ফেললাম ছোট গল্পটি।গল্পটা আন্ডারওয়ার্ল্ড এর।অন্ধকার জগতের বিভিন্ন দিক তো লেখক তুলে ধরেছেই কিন্তু সবচেয়ে মুগ্ধ করেছে স্টোরি টেলিং টা।নাজীমউদ্দীন ভাই যে পাকা ওস্তাদ গল্প বলার জন্য সেটা তো সবাই জানেই বাট এই ছোট গল্পে এত সুন্দর করে সবকিছু বর্ণনা করেছে যা সত্যি চমকে দিছে।শেষ দিকের চমকপ্রদ টুইস্ট টা পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত ছিল।রিয়েল এঞ্জয়বল একটা বই
-এই বই নিয়ে দুটো লাইন লেখার ইচ্ছাও আমার ছিল না।কিন্তু মনের খচখচানি থেকে লিখতে বসেছি। -গল্পটা আন্ডারওয়ার্ল্ড জগতের। যে জগতে একবার ঢুকে পড়লে জগতের বাঁধ ভেঙে মুক্তি পাওয়া কঠিন। কাহিনিটা একজন শুটারকে নিয়ে। যার কত সপ্ন ছিল একজন শুটার হয়ে দেশে-বিদেশে নাম কামাবে।এশিয়ান গেমসে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। এসময় তার জীবনের সব স্বপ্ন টুকরো টুকরো হয়ে যায়। প্রভাবশালী মন্ত্রীর ক্ষমতা ব্যবহার করে তার ভাগ্নে তার স্বপ্ন ধুলিসাৎ করে দেয়।হতাশা ও আক্ষেপ থেকে তলিয়ে যায় নেশার জগতে।কিন্তু এর পরপরই তার জীবনের মোড় ঘুরে যায়।শুরু হয়ে যায় জীবন রক্ষার লড়াই। একের পর এক ভিকটিমকে টার্গেট করে খুঁজে নেয় তার জীবনের মুক্তি, অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।
- মাঝ পৃষ্ঠার আগ পর্যন্ত টানটান উত্তেজনা নিয়ে পড়ছিলাম।কিন্তু যেতে না যেতেই আমার সব ইচ্ছা- আকাঙ্ক্ষা দূরীভূত হয়ে গেল। লেখনশৈলী বরাবরের মতোই প্রশংসনীয়। কিন্তু আমার এন্ডিং একেবারে ভালো লাগেনি। যারা একেবারেই এ ধরনের বই পড়েননি তাদের কাছে ভালো লাগবে। - গল্পের ভালো দিক গুলোর মধ্যে এটা বলবো যে লেখকের বরাবরই নব্বই দশকের সময় পুরান ঢাকার মাফিয়া বা আন্ডারওয়ার্ল্ড জগত নিয়ে খুব ভালই ধারণা ছিল। যেহেতু কাহিনীটা শুরু হয় ওই রকম দৃশ্যপট থেকে, তা পড়তে বেশ আগ্রহী হয়েছিলাম। কিন্তু ওই যে কিছু জায়গায় পড়তে এসে আমার বিরক্ত লাগা শুরু হয়। কিন্তু মোটামুটি ভালো ছিল।
অগোচরা পড়ে শেষ করলাম। বইটা অনেকটা দরিয়া ই নূর এর মতোই! তবে এটায় খুনোখুনিটা বড্ড বেশি। একটার পর একটা চক্রাকারে খুন হয়েই চলেছে। গল্পের কথক ই মেইন ক্যারেক্টার,সে একজন শ্যুটার। তবে তার নাম বইয়ের কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। সকলের অগোচরে থেকে একের পর এক টার্গেটের উপর অব্যর্থ নিশানা চালিয়ে গিয়েছে। অবশ্য সবকিছু নিজের মুক্তির জন্যই করতে বাধ্য হয়েছিলো সে! পুরান ঢাকা টু কলকাতা! এভাবেই এগোচ্ছিলো গল্প। আচ্ছা শেষ পর্যন্ত সে কি মুক্তি পেয়েছিলো?
নাজিমউদ্দীনের লেখায় আর যাই হোক আপনি পড়তে পড়তে কখনো বোরড হবেননা। ওনার লেখাই আপনাকে দ্রুত টেনে নিয়ে যাবে। এবারেও তাই হয়েছে।
তবে বইটা আমার খুব বেশি ভালো লাগেনি। এতো খুনোখুনি আমার ভালো লাগেনা। ক্রাইম ফিকশন ধাঁচের বই যাদের পছন্দের তারা খুব উপভোগ করবে মনে হয়।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের মোটামুটি সব বই ই আমার কালেকশনে আছে যার মধ্যে বেশ কয়েকটিই আমার পড়া। ওনার সব বই আমার ভালো লেগেছে এক কথায় বেস্ট। ওনার থ্রিলার কাহিনী লেখার ক্ষমতা অনবদ্য। সেই জন্যই ভেবেছিলাম এই বইটি ভালো লেগে যাবে। কিন্তু প্রথম বারের জন্য আশাহত হলাম। বইয়ের মূল কাহিনী একজন শুটারের জীবন নিয়ে, যে কিছু কারণে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সাথে জড়িয়ে যায়।প্রথম থেকেই বইটা বেগ বাস্টার্ড সিরিজের vibe দিচ্ছিলো। পুরো বইটা পড়ার পর মনে হয়েছে শুধু শুধু একটা নরমাল ঘটনাকে টেনে বড়ো করা হয়েছে। শেষের দিকে তো একদম বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। যাই হোক, বইটাকে শুধু শুধু একটা টাইম ওয়েস্ট ছাড়া আর কিছুই বলবো না। এটা নিয়ে নাকি একটা সিরিজ ও বের হবে। খোদাই জানে কে দেখবে সে সিরিজ।
কোনো ধরণের এক্সপেকটেশন ছাড়া পড়ার পরেও মোটামুটি লাগল। এই বছরে নাজিম উদ্দিনের দরিয়া-ই নূর টাই ভালো। অগোচরা পড়ার আগ্রহ ছিলো না একদম তাও বন্ধু দেওয়ায় পড়লাম এয়ারপোর্ট নভেলাটা। নতুন যারা থ্রিলার পড়া শুরু করেছে তাদের ক্ষেত্রে সুখপাঠ্য অনেক হবে। আর যাদের সম্পর্ক শুধু থ্রিলার নিয়েই তাদের কাছে মিশ্র হবে অনুভূতি। নভেলা হওয়ায় ডিটেলিং একদম নেই। গ্যাংস্টারদের মারপেঁচ আবার ভালোই লেগেছে।
দুমদাম টার্গেট করছে অগোচরা আর মেরে যাচ্ছে একেকজনকে। বেশি প্যাচাতে গিয়ে বিরক্তি এনে ফেলেছেন লেখক। শেষ মেষে এসে অই বাংলা ছবির প্রেমের জন্য আর প্রতিশোধের জন্য কাহিনী এসব আরকি। দরিয়া-ই নূরের মির্জা আশেক যেমন ছাপ ফেলে যেতে পেরেছে ছোট বই হলেও অগোচরার গল্প তা করতে পারেনি।
কি পাঠপ্রতিক্রিয়ার জানাবো বুঝতে পারছি না, শুরু টা ভালোই লাগছিলো তবে শেষে গিয়ে লেজেগোবরে পরিস্থিতি হয়ে গেলো, আর শেষ টা তো পুরাই হতাশাজনক, লেখার ধরন গল্প বলার স্টাইল দুইটাই ভালো লেগেছে, তবে একটা বইয়ের মূল যে গল্প সেটাই ছিলো না, তাই অ্যালেন স্বপ্নের মতো আমিও হতাশ ফুরা হতাশ,
পরম নিশ্চিন্তে যে মেয়েটা আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে, সে জানেই না আমি কী ভাবছি।
আমি ভাবছি, আদৌ মুক্তি পেয়েছি কি? তবে মুক্তি আছে আমার হাতের নাগালে আর পাশের ঘরে!
আমি একজন শুটার। ছিলাম আর কি। সত���যি বলতে, হতে হতেও হয়ে উঠিনি! যদি হতাম, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি পদক থাকতো আমার ঝুলিতে। কিন্তু সে সুযোগ আর পাইনি। বলা ভালো, আমাকে সুযোগই দেওয়া হয়নি। অন্যায়ভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে, আর সেই ঘটনাটাই আমূল পাল্টে দিয়েছিলো আমার জীবন।
আমার সফলতার ফসলটা যখন রাজনৈতিক প্রভাবে নষ্ট হয়ে গেলো, ডুবে গিয়েছিলাম পতিত হয়েছিলাম অন্ধকারে। যে অন্ধকারের সঙ্গী ছিলো সজল, যার হাত ধরে এগিয়েছি অন্ধকারের আরো গভীরে, যেখানে পরিচয় হয় সজলের নেতা বাবু বিধানকৃষ্ণ সরকারের সাথে, যাকে সবাই চিনে বিধুদা নামে। তারপরই জীবনটা আমার বদলে যেতে শুরু করে, সবার অগোচরে আমি হয়ে উঠি এক ভিন্ন মানুষ।
পলিটিক্স, আন্ডারওয়ার্ল্ড এবং জীবনের উত্থান পতনের গল্প অগোচরা। যেখানে লেখক একজন শুটারের জীবনের কিছু মূহুর্তের আত্মজীবনী লিখেছেন উত্তমপুরুষে। গল্পটা একটা ছোটোখাটো উপন্যাসিকা বলা যায়, যা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত একই ছন্দে এগিয়েছে। গল্পের মূল আকর্ষণটা হচ্ছে এর গল্প উপস্থাপন ভঙ্গি, শেষদিকে অবশ্য অল্প পরিমাণ থ্রিলও পাওয়া যাবে। সবমিলিয়ে গল্পটা দারুন।
বহুদিন মানুষটার কোনো লেখা পড়িনি। কিছুদিন আগে বইঘর অ্যাপটা নামিয়ে দেখলাম বইঘর এক্সক্লুসিভে বইটা আছে। সাথে সাথে কিনে নিলাম। স্বভাবতই আমি চারদিক নিশ্চুপ না থাকলে পড়তে পারিনা। তবে এই একজনের মানুষের লেখার ভেতরে ঢুকে যেতে আমার তার লেখা শুধুমাত্র কয়েকটা লাইন পড়তে হয়। তো গতকাল জ্যামে বসা অবস্থাতেই শুরু করে দিলাম গল্পটা। চারপাশ থেকে বাস, গাড়ির হর্নের আওয়াজগুলো আস্তে আস্তে মিইয়ে যেতে লাগলো। আর আমি ঢুকে গেলাম ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে।
বইটার শুরুটা খুব দারুনভাবে করেছেন লেখক। শুরুর প্যারাটা বুঝতে একদম শেষ অধ্যায় পর্যন্ত যেতে হবে। গল্পটা যেভাবে বিল্ড করা হয়েছে, সে হিসেবে একেবারের ভাবনা একেকরকম হয়ে যাচ্ছিলো। 'সে নাকি অন্য কেউ?' এই প্রশ্নটা কয়েকবারই এসেছে মনে। সবশেষে যখন পুরোটা ধরে ফেলতে যাবেন আপনি, ঠিক সেই সময়ে 'থপ' করে একটা আওয়াজ হবে, আর আপনার বুকে এসে লাগবে লেখকের সর্বশেষ টুইস্ট। আপনার সব তিল তিল করে গড়ে তোলা ধারণা বদলে দেবে লেখক।
গল্পটা সুখপাঠ্য। এক বসাতেই পড়ে ফেলা যায়। গল্পের বিল্ডআপ, ছোট্ট পরিসরের গল্পে ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট, স্টোরিলাইন, আর কয়েকবার ধারণা বদলে দিয়ে, শেষে এসে মূল টুইস্ট সব মিলিয়ে একদম সলিড ৫/৫ স্টার ❤️
খুব একটা ভাল লাগল না। অনেক আশা নিয়ে পড়তে শুরু করেছিলাম। পড়তে গিয়ে কিন্তু আশাহত হলাম। তবে তা সত্বেও যাঁরা থ্রিলার খুঁজে খুঁজে পড়েন তাঁরা একবার পড়ে দেখতেই পারেন।
কিছু লেখকের নামে দেখেই বই পড়ে ফেলি। নাজিম উদ্দিন তার মধ্যে অন্যতম। পাঠককে আকৃষ্ট করার এক সহজাত গুণ তার মাঝে আছে। সাধারণ গল্প বৈঠকি ভংগিতে বলে যান। এক শুটারের গল্প বললেন, এই অগোচরা বড় গল্পে। পড়তে গিয়ে পুরান ঢাকার অলিগলিতে হারিয়ে যাবেন। সাধারণ এক ছেলের আন্ডারওয়ার্ল্ড এ জড়িত হবার গল্প- অগোচরা।
গল্পের আরও ডিটেলিং প্রয়োজন ছিলো। চরিত্র নির্মাণ কেন যেন খাপছাড়া লেগেছে। কোন প্রশিক্ষন ছাড়া শুধু লেখক মস্তিষ্কের জোরে এর বড় আন্ডারওয়ার্লেডের শুটার চরিত্র সৃষ্টি করা অতি সাহসের ব্যাপার।