Jump to ratings and reviews
Rate this book

মৃত্যুফাঁদ

Rate this book
পার্বত্য অঞ্চলে বেড়াতে এসেছিল ওরা পাঁচজন। গাইডের সাথে চলে আসে এমন এক জায়গার খোঁজে, যেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষেধ। পাহাড়ের গুহায় আটকে থাকা প্রাচীন কোনো এক শক্তির মুখোমুখি হয় ওরা। অন্ধকারে ওদের তাড়া করে বেড়ায় কে?

বাঁচার লড়াইয়ে নেমে দেখতে পায় এই লড়াই শুভ-অশুভর লড়াই-ই শুধু নয়, এই লড়াই আরও অন্য কিছুর। আদ্রিতা, কঙ্কা, ফারহান, রবি আর সৌমিক কী এই লড়াইয়ে জিততে পারবে? মৃত্যুফাঁদ! শরীফুল হাসানের লেখায় এই অদ্ভুত রোমাঞ্চের জগতে আপনাদের স্বাগতম!

206 pages, Hardcover

First published January 28, 2023

1 person is currently reading
119 people want to read

About the author

Shariful Hasan

42 books1,005 followers
Shariful Hasan hails from Mymensingh, Bangladesh. He has spent his childhood by the banks of Brahmaputra river. He completed his Masters in Sociology from University of Dhaka and is currently working in a renowned private organization.

Shariful's first novel was published on 2012 titled Sambhala. With two other books, this captivating fantasy trilogy has received widespread acclimation both within and beyond the borders of Bangladesh. The Sambhala Trilogy was translated in English and published from India.

Although his inception consisted of fantasy and thriller, he has later worked on a variety of other genres. These works have been received fondly by the Bangladeshi reader community. Lot of his works have also been published from different publications in West Bengal.

Award- Kali O Kalam Puroshkar 2016 for 'অদ্ভুতুড়ে বইঘর'

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
13 (10%)
4 stars
50 (39%)
3 stars
52 (40%)
2 stars
11 (8%)
1 star
1 (<1%)
Displaying 1 - 30 of 40 reviews
Profile Image for Harun Ahmed.
1,646 reviews418 followers
April 7, 2023
নিঃসন্দেহে জমজমাট উপন্যাস।পড়তে ভালো লেগেছে। কিন্তু আমি কিছু বিষয় বুঝতে পারলাম না। যেমন - (স্পয়লার আছে)

১. মং সেন জানায় এই আদিবাসীদের শুধু বিশেষ লক্ষণযুক্ত একটা মেয়ে হলেই চলবে। তাহলে সবাইকে পাহাড়ের গুহায় আটকে একেকজনকে নৃশংসভাবে মারার যৌক্তিকতা কী?কোনো উপায়ে বিশেষ মেয়েটাকে পেলেই যেখানে হয়;সেখানে গুহার মুখ আটকানোর মতো কষ্টসাধ্য কাজ করা, তাদের ভয় দেখানো, একে একে সবাইকে অত্যন্ত বর্বর উপায়ে মারা হোলো কেন?এদের কি বাইরে মারা যেতো না?বা অন্যদের মারতে হবে কেন? আগেরবারও একইভাবে অন্যদের মারা হয়েছিলো। কেন? আদিবাসীদের মূল উদ্দেশ্যের সাথে গুহায় আটকানোর সুদূরতম কোনো সম্পর্কও খুঁজে পেলাম না।কিছু কি মিস করলাম? কেউ জানলে জানাবেন।

২. মং সেনের মতো ধূর্ত ও হৃদয়হীন অমানুষ হঠাৎ করে কেন এতো মহৎ হয়ে গেলো তার কোনো কারণ জানানো হয়নি।
Profile Image for Akash Saha.
156 reviews25 followers
February 1, 2023
❝মৃত্যুর ডাক কি উপেক্ষা করা যায়?❞

তেমন কিছু না, প্রিয় লেখক শরীফুল হাসানের ❝মৃত্যুফাঁদ❞ পড়তে গিয়ে ঠিক এমনটাই মনে হলো। ঢাকা থেকে বান্দরবানে ঘুরতে যাওয়া পাঁচ তরুন-তরুণী, যাদের চোখে ছিল দুনিয়া জয় করার স্বপ্ন - বান্দরবানে ঘুরতে যেয়ে জড়িয়ে পড়ে এক অতিলৌকিক(?) ঘটনার সাথে। যে প্রাচীন গুহায় গেলে কেউ আর ফেরত আসে না, হারিয়ে যায় কোনো এক গোলকধাঁধায়,লোকগাথায় শোনা যায় যার গহীনে ঘুমিয়ে আছে এক ভয়ানক পাহাড়ী দেবতা- ঘটনাক্রমে তারা ঢুকে পড়ে সে প্রাচীন গুহায়। শহুরে অ্যাডভেঞ্চারের রোমান্টিকতায় বিভোর এই পাঁচজনের পরিণতি কি হবে? তারা কি পালাতে পারবে মৃত্যুর হাতছানি থেকে? নাকি হারিয়ে যাবে গোলকধাঁধায়? যা ঘটছে সব কি অলৌকিক? নাকি জড়িয়ে আছে কোনো বৃহৎ ষড়যন্ত্র? - জানতে হলে শেষ করতে হবে দুইশ পাতার গা ছমছম করা বইটি।


'মৃত্যুফাঁদ'কে ঠিক কি জনরার বই বলা যায়, সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে। হরর, থ্রিলার, বন্ধুত্ব সব মিলিয়ে অসাধারণ লেগেছে ! শুরুর পৃষ্ঠা থেকে একদম শেষ পর্যন্ত একই রকম উত্তেজনা! অনেকদিন পর কোনো ভয়ের বই পড়ে গায়ে কাটা দিয়ে উঠল, অনেকটা এক নিঃশ্বাসে পড়ার মতো বই। যদিও বইটিকে হরর বা অতিলৌকিক জনরা বললে ভুল হবে। তবে যে জনরাই হোক না কেন, শরীফুল হাসানের এই বইটি পাঠকমনে যায়গা করে নিবে বলে মনে করি। পাঁচে পাঁচ দেয়ার মতো বই।

বইয়ের নাম: মৃত্যুফাঁদ
লেখক: শরীফুল হাসান
প্রকাশনী: নালন্দা
প্রকাশকাল:২০২৩
রেটিং: ৫/৫
Profile Image for Aishu Rehman.
1,093 reviews1,079 followers
February 15, 2023
বইটি পড়ার পর ভালো মন্দ মিশিয়ে এক ধরনের মিশ্র অনুভূতি কাজ করছে। আপনারা যারা বিভূতিভূষণের 'চাঁদের পাহাড়' কিংবা আর্থার কোনান ডয়েলের 'দ্যা টেরর অব ব্লু জন গ্যাপ' (এই দুটোর কথায় এ মুহূর্তে মাথায় আসছে) পড়েছেন, তারা জানেন গুহা কি মারাত্মক জিনিস। শংকরের কিংবা জেমস হার্ডকাসলের সামান্য একটু কাহিনী পড়তে গিয়েই দম বন্ধ হয়ে আসতো। সেখানে ভাবুন তো ২১০ পৃষ্ঠা বইয়ের ৭০ শতাংশই একটা গুহাকে কেন্দ্র করে যার প্রতি মূহুর্ত মৃত্যুকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে, যেখানে পাতা আছে ভয়াল মৃত্যুফাঁদ তাতে কেমন অবস্থা দাড়াতে পারে?

হ্যাঁ, লেখক বইয়ের প্রারম্ভেই এমন একটা দম বন্ধ করা পরিস্থিতির সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। যেন বুঝতে পারি, ভবিষ্যতে আমাদের গল্পের চরিত্রদের সাথে কি ঘটতে যাচ্ছে। এইটাই লেখকের মারাত্মক একটা কৌশল। আপনাকে বইয়ের পাতায় আটকে রাখবে চুম্বকের মতো। এই কৌশল কিন্তু 'বাতাসে বৃষ্টির ঘ্রাণ' টাতেও দেখেছি। যারা শরিফুল ভাইয়ের নিয়মিত পাঠক তারা ধরতে পারবেন।

গল্পের চরিত্র হাতে গোনা কয়েকজন মাত্র। পাঁচ বন্ধু ফারহান, অদ্রিতা, সৌমিক, কঙ্কা ও রবি এবং মং সেন মারমা ও পুলিশ কনস্টেবল রফিক। গল্পের প্রথমেই আমরা দেখতে পাব এই পাঁচ বন্ধু বেরিয়ে পড়েছে নিজেদের ছুটির সময়টা উপভোগ করতে। গন্তব্য সুদূর বান্দরবান। সেখানে গিয়েই পরিচিত হয় ট্যুরিস্ট গাইড মং সেন মারমার সাথে। মং সেন মারমা তাদের সন্ধান দেন এমন এক এলাকার যেখানে পা পড়েনি সাধারণ কোন মানুষের। খোঁজ জানে না কেউ। সেনাবাহিনী পর্যন্ত এড়িয়ে চলে যায়গাটা। সেখানে পৌঁছে দুর্বিপাকে পড়ে তারা আশ্রয় নেই এক গুহায়। তারপর নিশ্চয়ই আন্দাজ করতে পারছেন কি ঘটতে চলেছে। সেটুকু না বলে বরং গল্পের কয়েকটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করি।

প্রথম আসি চরিত্রগুলো নিয়ে। এখানেই আমার কিছু কমতি মনে হয়েছে। পুরো পাঁচজনের মধ্যে সবচেয়ে স্ট্রং চরিত্র অদ্রিতা। আমার অবশ্য ফোকাস ছিল রবির উপর। ছেমড়াডা আমাকে হতাশ করেছে। বাকিগুলো নিজ নিজ অবস্থান থেকে বিকশিত হলেও পুলিশ কনস্টেবল রফিক মিয়াকে ঠিক বিকশিত করে নাই লেখক। বিশাল আক্ষেপ। তাকে দিয়ে দুর্দান্ত কিছু ঝলক দেখানো যেতো। কিছু পৃষ্ঠা বাড়লেও ক্ষতি ছিল না। মং সেন মারমার ব্যাকগ্রাউন্ডে আরো একটু ফোকাসের দরকার ছিল, প্রাচীন মহিলা চরিত্রটির ঐরুপ আচরনের ব্যাখার প্রয়োজনও ছিল বোধ করি , হতে পারে প্রিকুয়েল হিসেবে সেসব পুষিয়ে দিতে পারে ( জানি না আসলেই এ নিয়ে আর কোন লেখা বেরোবে কি না)।

লেখনি নিয়ে কোন কিছু বলার হিম্মত আমার নেই। শরিফুল ভাই বাংলা সাহিত্যের নতুন ধ্রুবতাঁরা। পুরো গুহাতে যেভাবে দম বন্ধ করা পরিস্থিতি ১৫০ পৃষ্ঠা নিয়ে ধরে রেখেছেন তা সবার পক্ষে সম্ভব না। তিনি অতুলনীয়।

তবে লেখক মশাইদের বড় বদগুন কি জানেন? আমরা মনে প্রাণে যেটা না চাই, উনারা সেটা করার জন্য মুখিয়ে থাকেন। বিশেষ করে শরিফুল ভাই এটা বেশি বেশি করতেছেন। এটা ঠিক না। 'পূরবী' র বেলায় প্রচন্ড কষ্ট দিছেন আমারে । এইটা কোনদিন ভুলব না।

তো পাঠক মশাইয়েরা, বইটি নিয়ে আলোচনা করার অসংখ্য উপকরণ আছে। যেগুলো করার অর্থ স্রেফ স্পয়লার উগ্রে দেওয়া। তার চেয়ে ফ্লপের অংশটুকু পড়েই বই পড়া শুরু করে দেন। আশাহত হবেন না। আর যদি অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী হন, তাইলে আপনার জন্য অবশ্যই স্পেশাল কিছু থাকছে।
Profile Image for Farzana Raisa.
530 reviews237 followers
March 4, 2023
ভালো ছিল। গুহা নিয়ে এমনিতেই কিছুটা ভীতি কাজ করে। আর এইরকম দম আটকানো দুর্ধর্ষ অবস্থা... মনে হচ্ছিল আমি নিজেই আটকা পড়ে গেছি রবি, সৌমিক, ফারহান, কঙ্কা কিংবা আদ্রিতার সাথে।
ভয় পাইসি মাঝে দিয়ে... আসলেই।
Profile Image for Akash.
446 reviews150 followers
March 11, 2023
রোলারকোস্টার গতির টুইস্ট আর সাসপেন্সে ভরপুর সরল-সরস গদ্যের জাদুকরী একটা থ্রিলার পড়লাম। পড়ে শেষ করে মনে হইসে যেন একটা থ্রিলার মুভি দেখে শেষ করেছি। 'সাম্ভালা ট্রিলজি' 'যেখানে রোদেরা ঘুমায়' পড়েও মনে হয়েছিল যেন বই পড়িনি; মুভি দেখেছি। লেখকের লেখা যেন চিত্ররূপময়।

"ওরা কি নিজেদের মধ্যে কথা বলছে, ওরা কি বিকৃত কোনো মানুষের দল, নাকি শুধুই হিংস্র প্রাণী? মং সেনের গল্পের সেই পুরুষ? নাকি এরা হলিউডের সিনেমায় দেখানো সেই জোম্বিদের মতো কিছু? তাহলে কি ওরা সবাই জম্বিতে পরিণত হয়েছে?"

কী ঘটেছিল ঢাকা থেকে বা���্দরবানে ভ্রমণ করতে যাওয়া পাঁচ বন্ধুর সাথে? ওরা কি অবশেষে জীবন নিয়ে বান্দরবান থেকে ঢাকায় ফেরত আসতে পেরেছিল? সেই রহস্যময় গুহায় জীবন-মরণ যুদ্ধে কি পরিণতি হয়েছিল ওদের? জানতে হলে পড়তে হবে বইপোকাদের!


২০৬ পৃষ্ঠার বইটা পড়ার সময় একবারও মনে হয়নি যে কাহিনী খেই হারিয়ে ফেলেছে কিংবা ধীরগতির। পাতায় পাতায় সাসপেন্স আর টুইস্ট। একবসায় বইটা যেকোনো পাঠক পড়ে শেষ করতে পারবে। বিশেষ করে এই বইটার নতুন পাঠক তৈরি করার সামর্থ্য আছে। তবে বইয়ের কলেবর ৩০০ পৃষ্ঠার হলে জোশ হইত।

লেখকের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে পরবর্তী বইগুলো ৩০০ পৃষ্ঠার উপরে রাখতে। ২০০ পৃষ্ঠার বই পড়ে আসলে আত্মতৃপ্তির স্বাদ পাওয়া যায় না।

কিছু লেখক আছে যাদের বই আমি চোখ বন্ধ করে কিনি এবং পড়ি। শরীফুল হাসানের এ পর্যন্ত যতগুলো বই পড়েছি তারমধ্যে কোনো বই-ই আমায় হতাশ করতে পারেনি। আশা করি ভবিষ্যতেও উনার বই আমায় হতাশ করবে না। রবং নতুন আরেক শরীফুল হাসানকে আমি খুঁজে পাব। যে শরীফুল হাসান নতুন পাঠক তৈরি করবে, যেমনটা করেছিল হুমায়ূন আহমেদ।।

( ১০ মার্চ, ২০২৩)
Profile Image for Rafia Rahman.
416 reviews215 followers
May 22, 2023
বই: মৃত্যুফাঁদ
লেখক: শরীফুল হাসান
জনরা: হরর থ্রিলার
প্রচ্ছদ: তানিয়া সুলতানা
প্রকাশনী: নালন্দা
প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২০৬
মুদ্রিত মূল্য: ৫০০/-

ঘোর অন্ধকার, ঘুটঘুটে অন্ধকার, নিস্তব্ধ অন্ধকার, বিভৎস অন্ধকার, মৃত্যুপুরীর অন্ধকার...

নিত্যদিনের ব্যস্ত জীবনে পিষ্ট হয়ে পাঁচ তরুণ-তরুণী পার্বত্য অঞ্চলে বেড়াতে আসে। একটু এডভেঞ্চারের আশায় যে তাদের এতো বড় মূল্য দিতে হবে জানলে কি আর মৃত্যুফাঁদে পা দিতো?

পাহাড়ি অঞ্চল, প্রকৃতি, এডভেঞ্চার, হরর, মিস্ট্রি, থ্রিলার, একশন সবই আছে এই ২০৬ পেজের বইয়ে। প্রকৃতির সাথে পাঁচ বন্ধুর অভিযান পড়ে মনে হচ্ছিল সবুজে ঘেরা পাহাড়ে আমিও ঘুরে আসি! ঘন গাছগাছালির জন্য যখন আলো পৌঁছুতে পারে না তখন কেমন লাগে? পাখির কলকাকলি, ঝরনার মিহি শব্দে বহে যাওয়া পানির শব্দ যেন আমিও শুনতে পারছি! প্রকৃতি বর্ণনা, পাঁচ বন্ধুর বন্ডিং- খুনসুটি ও গুহার ঘটনা সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেছি। গুহায় যে বিভীষিকা লেখক দেখিয়েছেন গায়ে কাটা দিয়ে উঠেছে! কখন কার পালা আসে, মৃত্যু, লাশের বর্ণনা ভয়াবহ... গুহা থেকে বের হওয়ার পরের ঘটনাগুলো দ্রুতই ঘটেছে। বইটা শেষ করার পর কেমন জানি দমবন্ধ লাগছিল। সমাপ্তি এতো নিষ্ঠুর বিষাদময় না করলে কী হতো!!! তবে চরিত্রায়নে কিছু অস্পষ্টতা আছে। মং সেন, রফিক চরিত্রের হঠাৎ পরিবর্তন যেন জোরপূর্বক টুইস্ট দেওয়ার জন্য করা হয়েছে। মং সেনের ব্যাগ গুহার ভিতরে কীভাবে গেল? মধ্যবয়স্ক মহিলার হঠাৎ আক্রমণের কারণ, বয়স্ক লোকটার সাথেই বা কী সম্পর্ক? বিষয়গুলো খোলাসা হয়নি। সাবলীল টানটান থ্রিলের লেখনশৈলীর জন্য বই ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে করেনি। কয়েকবার মনে হয়েছিল অবশ্য কাহিনীর সমাপ্তি গুহার মধ্যে হয়ে গেলেই ভালো হতো। ভৌতিক যে আবেশ সৃষ্টি হয়েছিল ইতিও সেভাবেই হতো তাহলে।
Profile Image for Adham Alif.
334 reviews80 followers
November 25, 2023
ভালো লাগেনি। Goodreads এ সবার পজেটিভ রিভিউ এর ভেতর দুই তারা দিয়ে নিজেকে সংখ্যালঘু মনে হচ্ছে কিন্তু আমার কাছে যেমন লেগেছে তাই তো জানাব তাই না?

বই কেন ভালো লাগেনি তা জানার আগে চলেন একটা গল্প বলি। রাস্তায় অনেকদিন ধরেই চলাচল করে একটা অন্ধ। খুবই ধীরগতির সে পথচলা। একদিন এক পথচারী এসে তাকে বলল,"আরেকটু দ্রুত চললেই তো পার। তাতে তোমার জীবন আরও সহজ হবে। একটু রিস্ক না নিলে হয় নাকি? নো রিস্ক নো গেইন।" সেই পথচারীর কথা শুনে মনে হলো আসলেই তো একটু রিস্ক নেয়া উচিত। সে দ্রুত চলা শুরু করল এবং ফলাফল পেল হাতেনাতেই। এই গল্পের সারকথা হচ্ছে, "না বুঝে রিস্ক নেয়াটা আপনার জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবেনা কখনোই।"

এই গল্প এই রিভিউতে কেন বললাম? কারণ শরিফুল সাহেব এরকম কয়েকজন অন্ধদের নিয়েই উপন্যাস সাজিয়েছেন। যাদের পাহাড় সম্পর্কে নূন্যতম জ্ঞান নেই অথচ একজন গাইডের কথাতেই হই হই করে পাহাড়ের অজানা দুর্গম পথে এডভেঞ্চারে রাজি হয়ে বসে আছে। এই ব্যাপারটা উনার অন্য বইতেও দেখেছি। এরকমটা উনি কেন করেন কে জানে? যাই হোক এরকম অন্ধদের এডভেঞ্চারে বিপদ আসবে সেই স্বাভাবিক। প্রতিবারে সেই বিপদের মুখোমুখি হওয়ার পর ঘটে মিরাকল!

গল্পের প্লট পরাবাস্তবিক। এ নিয়ে আমার অভিযোগ নেই। তবে স্টোরি বিল্ডিং নিয়ে বিস্তর অভিযোগ। কিছু জায়গায় আরো সময় নিয়ে যেখানে লেখা উচিত ছিল লেখক সেখানে ঘটনা খুব দ্রুত টেনেছেন। আবার কোথাও অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা দিয়ে গল্পকে মন্থর করেছেন। আগেই বলেছি ক্যারেক্টার বিল্ডিং ভালো লাগেনি। একদম শেষ অব্দি এরা এবং এদের কাজকর্ম আমার কাছে অস্পষ্ট রয়ে গেছে। সবমিলিয়ে থ্রিলার বই হিসেবে যেভাবে এগিয়েছেন তা ভালো লাগেনি। হালের থ্রিলার পড়ায় আপাতত ইস্তফা দিতে হবে মনে হচ্ছে।
Profile Image for Saima  Taher  Shovon.
521 reviews190 followers
February 20, 2023
এই বই আদ্ধেক পড়ে ঘুমিয়ে গেছিলাম।মোটামুটি ঘুমুতে পারিনি। খুব ছোটবেলায় একটা সিনেমা দেখেছিলাম। ওই বয়সে আমার ওই সিনেমা দেখার কথা ছিলোনা, কিন্তু আম্মারা বোধহয় সিনেমার নেশায় আমাকে ভালো করে খেয়াল করেনি। অবশ্য আমরা কেউই পুরো সিনেমা দেখতে পারিনি, গ্রামে আবার ডিভিডি না হলে সিনেমা পুরোটা দেখা যেতোনা, বিদ্যুৎ বাবাজী অতো সদয় না।ওই সিনেমাটাও গুহার ভেতর ছিলো। আজ ধুম করে ওই প্রাণিগুলোর কথা মনে পড়লো। লিকলিকে হাত পা,মাথা কামানো,ভয়ানক।

দমবন্ধ করে আগে সিনেমা দেখেছি ভয়ের, তবে দমবন্ধ করে বই পড়িনি। রাতে আমার এতো ভয় লাগছিলো যে আমি লাইট জ্বালিয়ে, কাঁথা ভেতর ডুকে,মোবাইলের লাইট দিয়ে পড়ছিলাম। রাতে যেকোনো আওয়াজ বেশি, যার কারণে ঘড়ির ব্যাটারিও খুলে ফেলেছিলাম ভয়ের জন্য। আবার মনে হলো ছাদে কারা যেনো হা-ডু-ডু খেলছে৷ বলতে পারো-এতো ভয় পেলে না পড়ে ঘুমালেই পারতাম। কিন্তু @sharifulhasanbd এর লেখা পড়ে থাকলে জানবে যে সেটা করা দায়! ওনার লেখা এতোটাই সাবলীল যে পড়া শেষ না করে বই নিচে রাখা যায়না।এই বইয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টা ছিলো আঙুলের ফাঁক দিয়ে হরর সিনেমা দেখার মতোন।

কাহিনীতে আসি। এটা থ্রিলার ধরবো না হরর? দুটোই ধরি। ৫বন্ধু পার্বত্য অঞ্চলে বেড়াতে এসেছিলো। উদ্দেশ্য ঘুরাঘুরির জায়গাগুলো ঘুরবে। কিন্তু গাইডের পাল্লায় পড়ে, রোমাঞ্চের নেশায় অজানা উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো।আদ্রিতা, কঙ্কা, ফারহান, রবি আর সৌমিকের কপালে কী আছে-সেটার জন্য বই পড়তে হবে।

একটা বিষয়ে অভিযোগ আছে, বইটার শেষগুলো যেনো তাড়াহুড়ো। অল্প যা চরিত্র আছে, তাদের মধ্যে কয়েকজন ছাড়া অন্যরা ফুটে উঠেনি।বিশেষ করে রফিককে আরও কিছু করানো দরকার ছিলো।

আদ্রিতা ছাড়া অন্য বন্ধুগুলোও কেমন ম্যাড়মেড়ে। তবে আমার বান্দরবান ঘুরতে যাওয়ার আশা ফুরিয়েছে এটা বলে রাখি।
Profile Image for Susmita Sarker (বাচ্চা ভূত).
193 reviews11 followers
February 13, 2023
সাধারণ এ্যাডভেঞ্চারের উপন্যাসের মতোই লেগেছে কিছুটা! কিন্তু লেখনীর গুণে ���া ছমছমে লেগেছে!
Profile Image for Tusar Abdullah  Rezbi.
Author 11 books55 followers
February 21, 2023
শরীফুল হাসান ভাইয়ের লেখনি নিয়া কোনো কথা বলব না। কারণ, তার লেখনিতে খুঁত ধরার ক্ষমতা আমার নাই৷ গল্পটা উপভোগ করছি তার লেখনির জন্য। একটানা পড়ে শেষ করছি পুরোটা। আহা! কত সহজ-সরল আর সাবলীল। তবে, আমার অভিযোগ একজায়গায় বেশি, গল্পের শেষের দিকে তাড়াহুড়ো করছে এটাতেও। চরিত্রগুলো কয়েকটা ফুটে উঠেছে ঠিকঠাক আর সব চাপা পড়ে গেছে মনে হলো। ওগুলোর গুরুত্ব না থাকার মতোই। তবে, সব মিলিয়ে পড়ে উপভোগ করার মতোই লাগছে।
Profile Image for Muntasir Dhip.
165 reviews4 followers
March 7, 2024
পুরো বই জুড়ে উত্তেজনা থাকলেও কিছু বিষয় ধোঁয়াশা লেগেছিলো আমার কাছে। ভাসা ভাসা সেসব কিছু আরো বিশদভাবে জানলে ক্লাইম্যাক্স আরো উপভোগ করা যেতো। বিশেষ করে মং সেন আর রফিক চরিত্র দুটো নিয়ে আরেকটু কাজ করলে বোধহয় ভালো হতো।:')
Profile Image for Nurul Huda.
194 reviews5 followers
April 10, 2023
#bookreview
ফারহান, সৌমিক, রবি, আদ্রিতা, কঙ্কা
পাঁচ জনের একটা সার্কেল ট্যুরে যায় বান্দরবান। সেখানে তাদের ট্যুর গাইড মং সেন মারমা । মং সেন বলল, "বার্মা সীমান্তের ওপারে এমন একটা জায়গা আছে যেখানে আগে কেউ যায়নি৷ আপনারা যেতে চায়লে আমি আপনাদেরকে নিয়ে যাব। তবে একেকদিনের জন্য আমাকে এক হাজার টাকা দিতে হবে৷ "
এই কথা শুনে তারা ভাবল সচরাচর অন্যান্য মানুষজন যে জায়গাগুলোতে যায়, আমরা সেখানে না গিয়ে বরং মং সেনের প্রস্তাবিত জায়গটায় যায়৷ ভিন্ন ধরনের একটা এডভেঞ্চার হল৷ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে তারা সবাই যাওয়ার জন্য রাজি হল।

প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে পাঁচ জনের সার্কেল ও মং সেন যাত্রা শুরু করল। বান্দরবানের পাহাড়ি দুর্গমপথ পেরিয়ে পৌছাল এক গোলাকার জায়গায়, সিদ্ধান্ত নিল এখানে তাদের বেস ক্যাম্প গাড়বে। খাওয়াদাওয়া এখানেই করবে।
সারাদিন ঘুরে আবার ক্যাম্পে ফেরত আসবে। ক্যাম্পে একরাত যাপন করে পরদিন কাঙ্ক্ষিত স্থানের লক্ষ্যে বের হল তাঁরা, দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা কিন্তু তাঁরা বার্মার ওপারের স্থানটিতে পৌছাতে পারল না। সিদ্ধান্ত নিল ক্যাম্পে ফিরে আসবে, ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে গাইড মং সেনের পেছন পেছন যাত্রা করল তাঁরা । একটু পরে লক্ষ্য করল, গাইড মং সেন পথ হারিয়ে ফেলেছে । তখনই শুরু হল বৃষ্টি। বাধ্য হয়েই তারা আশ্রয় নিল একটি গুহায়৷
কিছুক্ষণ পরেই একটা বিকট শব্দ হল, সম্ভবতঃ পাহাড় ধস। তারা খেয়াল করে দেখল গুহার মুখটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
গুহাতে আটকা পড়ে গেছে তাঁরা। এখান থেকেই সূচনা হয় এক লোমহর্ষক কাহিনীর।...

পাঠকপ্রক্রিয়া:

অনেক দিন থ্রিলার পড়িনা। তাই শুরু করলাম এটা তাছাড়া উনার লেখা আগে পড়িনি।
থ্রিলার যেমনটা হয়, পাঠককে ধরে রাখে, কী হয় না হয়, এরপর কী হবে?
এটাও তেমন ছিল গুহার ভেতর যখন কাহিনীগুলো এগুচ্ছিল তখন মনে হচ্ছিল এরপর কী হবে? নতুন কী বিপদ আসছে?
এটা যে ভাবাতে পেরেছে, এটাই লেখকের সার্থকতা।
তবে পড়ে এ বইকে কোন জনরায় ফেলব তা নিয়ে মুশকিলে আছি থ্রিলার না হরর নাকি এডভেঞ্চার?


[ এ অংশে স্পয়লার আছে]
রফিকের চরিত্রটাকে আরও সমৃদ্ধ করা যেত, তাকে দিয়ে উপন্যাসের ফিনিংশটা অন্যভাবে দেওয়া যেত৷ পাঁচটা নামে ছিল সমস্যা কে কখন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে এগুলা মনে রাখতে পারছিলাম না।
তাছাড়া মং সেন কিভাবে বা কখন গুহা থেকে বের হল এর কোনো স্পষ্টতা নাই । প্রথমে ভীতু হিসেবে জানলাম আদ্রিতাকে কিন্তু শেষদিকে আদ্রিতায় সবকিছু!!

আমার কাছে এভারেজ লেগেছে। চাইলে আপনারাও পড়তে পারেন৷ আর পড়া হয়ে গেলে বইটি সম্পর্কে আপনাদের মতামত জানাতে পারেন।
_____

বই : মৃত্যুফাঁদ
লেখক : শরীফুল হাসান
নালন্দা প্রকাশন
একুশে বইমেলা ২০২৩
মলাট মূল্য : ৫০০৳
পৃষ্ঠা : ২০৬
পার্সোনাল রেটিং: ৭.৫/১০
Profile Image for Rehnuma.
444 reviews21 followers
Read
February 22, 2023
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনকে অনেক রঙিন মনে হয়। নতুন করে পাওয়া স্বাধীনতা আর নতুন বন্ধুদের সমাহার হয়। এরমধ্যে তৈরি হয় বন্ধুদের একটা দল। সেই দলে থাকে বিভিন্ন রকম মানুষ। কেউ উচ্ছল-চঞ্চল, তো কেউ নরম, সহজ-সরল। কেউবা আড্ডাবাজ, আবার কেউ গম্ভীর। তবে সকলেই বন্ধুত্বের একটা সুন্দর বন্ধনে আবদ্ধ।
ছুটি পেলে বন্ধু নিয়ে দলবেঁধে এদিক সেদিক ঘুরতে যাওয়া তো খুবই স্বাভাবিক বিষয়। সেই দলে ছেলে মেয়ে উভয়েই থাকে। অ্যাডভেঞ্চার, আড্ডা, খাওয়া-দাওয়া আর স্মৃতি তৈরি হয়। তবে সাধারণ একটা ট্যুর কখনও জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। কেই বা বলতে পারে আগামীতে কী অপেক্ষা করছে?
সৌমিক, আদ্রিতা, কঙ্কা, রবি আর ফারহান মিলে পাঁচজনের একটা দারুণ বন্ধুদল। ধূসর ঢাকার কোলাহল ফেলে বান্দরবনে ঘুরতে যাবে পাঁচজন মিলে। কয়েকটা দিন প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকা যাবে, উপভোগ করা যাবে জীবনকে অন্যভাবে। পাহাড়ি এলাকায় বেশ একটা অ্যাডভেঞ্চার টাইপ হবে। ভাবলেই তাদের আনন্দ হচ্ছে।
বান্দরবানে কয়েকদিন আগে তিনজন তরুণ-তরুণী হারিয়ে যাওয়ার খবর হয়েছে। তারা কোথায় হারিয়ে গিয়েছে কেউ বলতে পারে না। পুলিশের কন্সটেবল হিসেবে চাকরি শুরু করে এখনও তাই থাকা রফিক এবার নেমেছে নিখোঁজ তিনজনকে খুঁজে বের করার মিশনে। তবে ভাগ্যের পরিহাসে খু নের মিথ্যা আ সা মী হয়ে নিজেকেই নিখোঁজ করে ফেলতে হচ্ছে তার। পালিয়ে বেড়ানো অবস্থায় কেসের সুরাহা করতে পারবে সে?
বান্দরবান পৌঁছে নিজেদের পরবর্তী পরিকল্পনা সাজিয়ে গুছিয়ে নিচ্ছিল পঞ্চবন্ধুর দল। এসব পরিকল্পনা সাধারণত সৌমিক-ই করে। অন্যদের তুলনায় বেশ হিসেবী এবং দায়িত্বসম্পন্ন সে। তবে ঘুরতে গিয়ে কবেই কিছু প্ল্যান মতো হয়েছে?
মং সেন নাম্নী ভ্রমণ গাইড আদ্রিতাদের খবর দিয়েছে এমন এক জায়গার, যেখানে কেউ যায় না। ভ্রমণ আর নতুন জায়গা আবিষ্কারের নেশায় আগের পরিকল্পনা সব ভুলে তারা তাই রওনা হয়েছে বান্দরবনের সেই জনমানবের পা না পড়া স্থান দর্শনে।
আমাদের এই মানব সভ্যতা যুগে যুগে এই পর্যন্ত এসেছে অনেক অতীত ইতিহাসের উপর বহন করে। যা লোকমুখে পরবর্তী যুগে জানিয়ে আসছে। তেমন-ই আছে কিছু মিথ, কিছু গল্প। এরমধ্যে রাজা-রানী, জিন-পরী, গুপ্তধনের গল্প-ই বেশি প্রচলিত। এগুলো গল্প বা রূপকথা আকারে শুনতেই ভালো লাগে। লোভের বশবর্তী হয়ে তার পিছে ছুটতে যাওয়ার পরিণতি কি সবসময় ভালো?
পাঁচজনের এই দলে সবথেকে সহজ-সরল আর নরম হলো আদ্রিতা। তিন ছেলে বন্ধু থেকেও আদ্রিতার উপর কঙ্কার নির্ভরতা অনেক। আদ্রিতার মনে কিছু একটা খচখচ করছে। মং সেনকে ভরসা হচ্ছে না। তার চোখের দৃষ্টিতে কিছু খারাপ একটা আছে। কিন্তু বাকীদের মংয়ের প্রতি বিশ্বাসের কারণে নিজে থেকে কিছু বলতে পারছে না।
মায়ানমার সীমান্তের কাছে সেই অজানা জায়গা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বেরিয়েছে তারা। তাঁবু খাটিয়ে সেখানে বিশ্রাম আর খাওয়ার জোগাড়যন্ত্র হয়েছে। একটু পরেই বেরিয়ে পড়লো তারা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে।
পথে এগোতে এগোতে হঠাৎ-ই যেন ভুল হলো। পথের সঠিক দিশা পাচ্ছিল না পাহাড়ী এলাকায় বাস করা মং সেনও। এদিকে সন্ধ্যা নেমে এসেছে পাহাড়ে। ক্লান্তি নেমে এসেছে পাঁচজনের দেহে। এরমধ্যেই শুরু ঝুম বৃষ্টি। বৃষ্টির শীতলতা থেকে মুক্তি পেতে তারা একটা গুহার ভেতর আশ্রয় নিলো। দিনের আলোয় পথ খুঁজে পৌঁছানো যতটা সোজা এবং সাহসে করা যায় রাতের নিকষ কালো অন্ধকারে সেটা ততোটা সোজা নয়। তাই রাতটা এই গুহাতেই পার করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো তারা।
এরপরই হুট করে মাটি কাঁপানো শব্দ। কী হলো! গুহার ভেতর ভূমিধ্বস না কি হলো ঠাওর করতে পারলো না। কিন্তু ভয়ের চিকন স্রোত খেলে গেলো পাঁচজনের মাঝেই। গুহার মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। আটকা পড়ে গেছে পাঁচজনেই। শুধু মং সেন ছাড়া। সে কীভাবে বেরিয়ে গেলো? উত্তর নেই।
অন্ধকার, প্রতিকূল এই গুহা থেকে মুক্তি কী করে মিলবে তাদের? জনমানবহীন এই এলাকায় তারা আছে সে কথা পৃথিবীর কেউ জানে না। ঢাকার চার দেয়ালের মাঝে ওয়াই-ফাই, ফেসবুক, নেটফ্লিক্স ছেড়ে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে আশা এই পাঁচজন তরুণ-তরুণীর জীবন কি অন্ধকার গুহাতেই শেষ হয়ে যাবে? গুহার ঐপাড়ের পৃথিবীর আলো-বাতাস কি আর দেখতে পাবে তারা? জীবন এত ক্ষুদ্র? একটু ধ্বসেই সেই জীবন প্রদীপ নিভু হয়ে যায়?
বেঁচে থাকার তাগিদে কী করবে এই পাঁচজন? চারদিকে যে মৃ ত্যু ফাঁদ পেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
পাঠ প্রতিক্রিয়া:
হরর, অতিপ্রাকৃত, থ্রিলার, অ্যাডভেঞ্চার কিংবা বন্ধুত্বের গল্প কি বলা যায় এটাকে? আমার মতে সব-ই। তবে অ্যাডভেঞ্চারের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি।
লেখক শরীফুল হাসানের লেখার ভক্ত আমি। লেখকের সামাজিক বা সমসাময়িক লেখা যে কয়টা পড়েছি সবগুলোর অনুভূতি-ই দারুণ। সে অনুযায়ী ❛মৃ ত্যুফাঁদ❜ অনেক ভিন্ন লেখা লেখকের। বন্ধুদলের ভ্রমণে গিয়ে অযাচিত ঘটনা ঘটার বই আছে। সে ক্ষেত্রে এই বইটিও এক। তবে লেখকের মজবুত বর্ণনায় সেই একই ঘটনা ভিন্ন মাত্রা পায়। ভালো লাগা তৈরি করে।
উপন্যাসের বেশীরভাগ সময় কেটেছে এক গুহাতে। সেখানে পাঁচবন্ধুর কাটানো সময়, ল ড়াই করে বেঁচে থাকার তাগিদ, একে অন্যের প্রতি দায়-দায়িত্ববোধ আবার কখনও প্রয়োজনে স্বার্থপর হয়ে যাওয়ার গল্প-ই বলেছেন লেখক।
কঠিন বিপদে নিজের মনের তাড়নায় নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া, ধৈর্য্য আর একাগ্রতা দিয়ে বিপদের মোকাবিলা করার দারুণ এক মেলবন্ধন করেছেন লেখক।
সমাজে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী কঠিন সময়ে ভরসার জায়গা কিংবা হাল ধরার জন্য আমরা পুরুষকেই ভাবি। তবে জীবনের খুব প্রয়োজন, বিপদে হাল ধরার জন্য নারীরা রুদ্রমূর্তি ধারন করতে পারে তার ক্লিয়ার পিকচার লেখক দেখিয়েছেন আর তা যথেষ্ঠ দক্ষতার সাথেই দেখিয়েছেন।
আবার, চাচা আপন প্রাণ বাঁচানোর জন্য হুট করে স্বার্থপর চিন্তা, বা একটু স্বার্থপর হয়ে যাওয়ার যে মানসিকতা সেটাও ❛মৃ ত্যুফাঁদ❜ উপন্যাসে উঠে এসেছে।
আগেই বলছি লেখকের সুন্দর গতির গল্প বলার দক্ষতার ভক্ত আমি। এই বইতেও লেখক পাহাড়ী অঞ্চলের প্রকৃতির দারুণ বর্ণার পাশাপাশি সেখানের দুর্গম অবস্থারও সুন্দর চিত্র তুলে ধরেছেন। সুন্দর মোলায়েম বর্ণনা, দুর্গম পথের কথার পাশাপাশি এখানে লেখক বীভৎ স কিছু দৃশ্যের অবতারণা করেছেন যেগুলো আসলেই পড়তে গিয়ে একটু গা ছমছম করেছে।
বইয়ের নাম যেহেতু ❛মৃ ত্যুফাঁদ❜ তাই বলাই বাহুল্য এখানে মৃ ত্যু আছে। আর এটা স্পয়লার নাকি জানি না, তবে লেখকের প্রিয় চরিত্রকে সরিয়ে দেয়ার যে ব্রত আছে এই বইতেও সেটা অব্যাহত রেখেছেন। বইটা শুরু করে যতই এগিয়েছি আর যাকে আমার পছন্দ হয়েছে বেশি, আমি তখন-ই মানসিকভাবে তাকে ইন্নালিল্লাহ জানানোর প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে শেষে গিয়ে দুঃখবোধ হয়েছে না ভালো লেগেছে সেটা বলতে পারছি না।
বইটা পড়তে গিয়ে একটা জিনিস একটু খটকা লেগেছে। এক জায়গায় বর্ণনা ছিল, যে কঙ্কা সিগারেটে একটা টান দিয়ে ফেলে দিলো। এর আরো কয়েক পৃষ্ঠা বাদেই লেখা, কঙ্কার সিগারেটের গন্ধ একেবারেই সহ্য হয় না। আশেপাশে এই জিনিস সে সহ্য করতে পারে না এমন। তবে আগে সে সিগারেটে টান দিলো কী করে? চরিত্রের নাম ওলটপালট জাতীয় কিছু কি ছিল এটা?
এছাড়াও, বইতে চরিত্রের ব্যপ্তি যেহেতু বিশেষ ছিল না সেহেতু কিছু চরিত্রকে আরেকটু জায়গা দিলে মন্দ হতো না। কন্সটেবল রফিককে নিয়ে আমি আরো কিছু আশা করেছিলাম। রফিকের আনাগোনা বইতে একটু বেশি হবে ভেবেছিলাম।
পোকামাকড়, সাপখোপ জাতীয় জিনিসে আমার মা রাত্মক ফোবিয়া আছে। বইটা শুরুর দিকেই লেখক যে রি রি করা বর্ণনা দিয়েছেন সেটা আমাকে আরো রি রি করতে বেশ ইন্ধন জুগিয়েছে। বইটা শুরু করার সময় নুডুলস খাচ্ছিলাম। আর শুরুতেই চেলা বা কোন এক জাতীয় পোকার বর্ণনা পড়ে আমার খাওয়া সাঙ্গ হয়ে গেছে।
প্রচ্ছদ, প্রোডাকশন:
নালন্দার বইয়ের সম্পাদনা, বাঁধাই যাবতীয় বিষয় আমার বরাবরই ভালোলাগে। এই বইতেও তাদের ধারা অব্যাহত আছে। তবে তাদের বইতে একটা ফিতার অভাব সবসময় বোধ করি। এই বইতেও তাই।
Profile Image for Sakib A. Jami.
334 reviews36 followers
February 12, 2023
স্কুল, কলেজ পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়ে বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে ঘুরে বেড়ানোর হিড়িক পড়ে। এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরে বেড়ানোতেই ওদের সুখ। যেখানে সবাই মুক্ত, স্বাধীন। কোনো চিন্তা নেই সেখানে। পড়াশোনা, পরীক্ষার প্যারা ভুলে নির্ভেজাল সময় পার করা যায়। নিজেদের মতো সময় কাটানো যায়। ছেলেদের জন্য এভাবে ঘুরে বেড়ানো সহজ হলেও মেয়েদের জন্য কিছুটা কঠিন। আমাদের সমাজ ছেলেমেয়েদের এখনো একসাথে কোথাও যাওয়া ঠিক মেনে নিতে পারে না। তবুও কেউ কেউ সমাজের নিয়মকানুনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেড়িয়ে পড়ে।

তেমনই পাঁচ বন্ধু - ফারহান, অদ্রিতা, সৌমিক, কঙ্কা, রবি বেরিয়ে পড়েছে নিজেদের ছুটির সময়টা উপভোগ করতে। গন্তব্য বান্দরবান। জীবনের সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত উপভোগ করার লক্ষ্য তাদের চোখে মুখে। কে জানত? এই স্বপ্নের যাত্রা তাদের জীবনে বিভীষিকা নিয়ে আসবে।

কিছুদিন আগের খবর, বান্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরতে নিয়ে নি খোঁ জ হয়েছে তিন তরুণ তরুণী। কিন্তু কীভাবে? কী হয়েছিল ওদের? কেউ জানে না। এমনকি লা শ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে ওরা। ওদের অস্তিত্ব কোনোকালে ছিল না এই পৃথিবীর বুকে।

পুলিশ কনস্টেবল রফিকের জীবনে বড়ো ধরনের কেস সলভ করার কোনো ইতিহাস নেই। তার চাওয়া, সে যেন সেই হারিয়ে যাওয়া তিনজনকে খুঁজে বের করতে পারে। তাহলে অবসরের আগে অন্তত মনে রাখার মতো কিছু করে যাবে। কিন্তু তারই জীবন জীবন বদলে গেল হুট করে। খু নে র দায়ে তাকেই পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। সেই সাথে খুঁজে বেড়াতে হচ্ছে তার জীবন বিভীষিকাময় করে তোলা সেই ব্যক্তিটিকে।

প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেক গল্প, মিথ প্রচলিত থাকে। সেই গল্পে গুপ্তধনের কেচ্ছা কাহিনিও ঠাঁই নেয়। যা অস্বীকার করার উপায় নেই। সেই গুপ্তধনের লোভ অস্বীকার করার উপায় নেই। যদি চোখের সামনে তিনটি স্বর্ণমুদ্রা দেখা দেয়, তাহলে লোভের মাত্রাও বেড়ে যায়। কথায় আছে, লোভে পাপ পাপে মৃ ত্যু। লোভ করলে এর ফল ভালো হয় না। জীবনে শনির দশা নেমে আসতে পারে।

মং সেনকে ভালো লাগেনি অদ্রিতার। কেমন যেন অদ্ভুত দৃষ্টি। সেই দৃষ্টিতে ভয়ংকর কিছু খেলা করছে। তবুও কেউ কিছু বুঝতে পারছে না কেন? না কি সেই বেশি বেশি ভাবছে? মং সেন তাদের এই বান্দরবান সফরের পথ প্রদর্শক। তার নির্দেশিত পথেই ঘুরে বেড়ানোর প্ল্যান তাদের। তারপরও মং সেনকে বিশ্বাস করতে পারছে না অদ্রিতা। বারবার মনে হচ্ছে লোকটার অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে।

মং সেনের দেখানো পথে ঘুরতে গিয়ে ঘটল বিপত্তি। প্রত্যন্ত এক এলাকার লোভ দেখিয়েছে সে। যেখানে পা পড়েনি সাধারণ মানুষের। খোঁজ জানে না কেউ। সেনাবাহিনী পর্যন্ত এড়িয়ে চলে যায়গাটা। এমন এক জায়গা খুঁজতে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলা সাধারণ কোনো বিষয় নয়। আতঙ্কিত, ভীত পাঁচ তরুণ তরুণী আশ্রয় নিলো একটি গুহায়। বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি। রাত নেমেছে হুট করেই। বৃষ্টির তেজেই হোক বা অন্য কারণে, ধস নেমেছে গুহার মধ্যে। বেরোনোর পথ বন্ধ। কী করবে ওরা পাঁচজন? এদিকে মং সেনেরও দেখা নেই। সে কি তাদের উদ্ধার করতে এগিয়ে আসবে? বদ্ধ গুহায় ওঁত পেতে আছে বিপদ। হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগিয়ে আসছে মৃ ত্যু। ফাঁদ পেতে অপেক্ষা করছে ওদের। ওরা কি পারবে এই জাল ছাড়িয়ে নিজেদের মুক্ত করতে? আবার কি আলোর ��ুখ দেখতে পারবে? না কি এই অন্ধকার গুহাতেই নিভে যাবে তাদের জীবনের সমস্ত আলো? এভাবে হাল ছেড়ে দেওয়া যায় না। বেঁচে থাকার সব চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে জয়ী হবে, এমন সাধ্য আছে কার?

▪️পাঠ প্রতিক্রিয়া :

লেখক শরীফুল হাসান ভাইয়ের "মৃত্যুফাঁদ" আর দশটা সাধারণ অ্যাডভেঞ্চার গল্পের মতোই। পাঁচ বন্ধুর ঘুরতে যাওয়া, সেখানে গিয়ে বিপদে পড়া, জীবন মৃ ত্যু র সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে বেঁচে থাকার সব চেষ্টা করা। গল্পটা এগিয়ে গিয়েছে এভাবেই। যতটা এগিয়েছে, ততটাই অসাধারণ হয়ে উঠছে। এখানেই লেখকের মুন্সিয়ানা। খুব ছোট্ট পরিসরে লেখক তার লেখনীর প্রসার ঘটিয়েছেন অন্যভাবে।

"মৃত্যুফাঁদ" উপন্যাসের মূল কাহিনি একটি গুহার ভেতর। ছোট্ট পরিসরে। এমন ছোটখাট অংশকে বড়ো করে দেখিয়ে বর্ণনায় ফুটিয়ে তোলা খুব একটা সহজ বিষয় নয়। আমি লেখকের বর্ণনার অনেক বড়ো ভক্ত। তার বর্ণনায় গোটা অঞ্চল যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। সেই জীবন্ত প্রকৃতিতে হারিয়ে যেতে কষ্ট হয় না। শরীফুল হাসান ভাই খুব সহজ ভাষায় সবকিছু লেখেন। যেখানে কোনো জটিলতা নেই, শব্দের ভারিক্কি নেই। আর সে কারণেই হয়তো তিনি পাঠকের সাথে খুব সহজে সংযোগ স্থাপন করতে পারেন।

"মৃত্যুফাঁদ" শুরু থেকে এগিয়েছে একই ধারায়। এক গতিতে। অতিপ্রাকৃত, অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দিশেহারা কিছু জীবিত প্রাণ। যাদের জীবন প্রদীপ নিভু নিভু করছে। গল্প যত এগিয়েছে, ততটাই ভিন্নতা এসেছে কাহিনিতে। পুরোপুরি ভিন্ন ধারায় গড়িয়েছে গল্পটা। যদিও কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছিলাম।

বিপদ মানুষকে সাহসী করে তোলে। কিছু ক্ষেত্রে মানুষ হয়ে ওঠে ভীত সতন্ত্র। পরবর্তী কর্মপন্থা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা মাঝেমাঝেই দেখা দেয়। কী করতে হবে, বা কী করে উচিত বুঝতে পারা যায় না। কেউ কেউ আবার নিজের জীবন বাঁচানোর তাগিদে স্বার্থপর হয়ে ওঠে। আবার বন্ধুর জীবন রক্ষায় রুদ্রমূর্তি হতেও অনেকে পিছপা হয় না। প্রতিটি মানুষ ভিন্ন, তাদের চিন্তাধারা ভিন্ন। "মৃত্যুফাঁদ" বইটি মানব মনস্তত্ত্বের এক অসাধারণ নিদর্শন হয়ে থাকবে। অল্প কিছু মানুষের মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে উঠেছে।

গল্পের শেষটা নিয়ে আমার আক্ষেপ আছে। টিপিক্যাল শরীফুল হাসান সমাপ্তি। জীবনমৃত্যুর এ খেলায় মৃ ত্যু র গল্প থাকবে। তবুও বেঁচে থাকার পূর্ণ প্রচেষ্টায় এমন পরিণতি নাও হতে পারত। পুরো বইয়ে বিষাদের ছায়া স্পষ্ট। সেই ছায়া আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে শেষে এসে। কিংবা এক তৃপ্তিদায়ক সমাপ্তি। অথবা মনের কোণে জমে থাকা আক্ষেপ... কে জানে?

▪️চরিত্রায়ন :

"মৃত্যুফাঁদ" উপন্যাসে খুব বেশি চরিত্রের বহর ছিল না। সামান্য কিছু চরিত্র নিয়েই লেখক তার মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। নারী, পুরুষের অসমতা থাকলেও বিপদের সময় নারী জাতিই যে রুদ্রমূর্তি হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, তা-ই যেন ধ্রুব সত্য।

সমাজে কেউ কেউ থাকে, অর্থের লোভে অন্যদের মৃ ত্যু র মুখে ঠেলে দিতেও দ্বিধা করে না। এর জন্য তাদের মধ্যে কোনো অনুতাপও থাকে না। এর মধ্যে কেউ আবার নিজের ভুল বুঝতে পারে। সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করে নিজের জীবন দিয়ে। তাতেও কি পাপ নির্মূল হয়?

"মৃত্যুফাঁদ" উপন্যাসে রফিক চরিত্রটার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। বইয়ে তার ভূমিকা ছিল সীমিত। আরেকটু ব্যাপ্তি আশা করেছিলাম। শুরুর কিছু অংশ আর শেষের দিক ছাড়া তাকে তেমন পাওয়া যায়নি। অথচ পুরো বইয়ে তাকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যেত।

▪️বানান, সম্পাদনা ও অন্যান্য :

কিছু ছাপার ভুল থাকলেও বানান ভুল তেমন চোখে পড়েনি। কি/কী এর ভুল ব্যবহার লক্ষ্য করেছি। কিছু ক্ষেত্রে সম্পাদনার ঘাটতি ছিল। যদিও সেগুলো বইয়ের গতিতে বাঁধা হতে পারেনি। বইয়ের মূল্য নিয়ে কিছু অভিযোগ করার জায়গা থাকলেও করছি না। নালন্দা প্রকাশনীর সব বইয়ের দাম এবার বাড়তি। কিছুটা পরিস্থিতির জন্য, বাকিটা হয়তো অন্য কারণে।

▪️পরিশেষে, মানুষের হাসিখুশি জীবনের গল্প খুব ছোটো। ঠিক পরক্ষণেই সেখানে নেমে আসতে পারে ঘোর বিষাদ। যেই সময়টা প্রত্যাশা করা হয় না, তা-ই সামনে এসে দেয়াল হয়ে দাঁড়ায়। মৃ ত্যুও হয়তো এভাবে হুট করে এসে সামনে দাঁড়িয়ে থাকে কোনো এক অসময়ে। তখন আর ফেরা যায় না...

▪️বই : মৃত্যুফাঁদ
▪️লেখক : শরীফুল হাসান
▪️প্রকাশনী : নালন্দা
▪️পৃষ্ঠা সংখ্যা : ২০৬
▪️মুদ্রিত মূল্য : ৫০০ টাকা
▪️ব্যক্তিগত রেটিং : ৪.২/৫
Profile Image for Masfia Karim.
31 reviews
September 1, 2023
বইটা পড়ার পর আমার কাছে অনেক কিছু অস্পষ্ট ঠেকছে।কেন জানি খুব বেশি ভালো লাগে নি।আরও অনেক কিছু এক্সপেক্ট করেছিলাম বিশেষ করে কাহিনির শেষ মুহুর্তে। সম্ভবত বৃষ্টির দিনে খুব রাত করে এই বইটা পড়েছিলাম বলে অনেক উপভোগ্য ছিল।
৩.৫
Profile Image for Mashuk Rahman.
95 reviews9 followers
February 20, 2023
শরীফুল হাসান ভাই দারুন লিখেছেন ❤️

পার্বত্য অঞ্চলে বেড়াতে এসেছিল ওরা পাঁচজন। গাইডের সাথে চলে আসে এমন এক জায়গার খোঁজে, যেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষেধ। পাহাড়ের গুহায় আটকে থাকা প্রাচীন কোনো এক শক্তির মুখোমুখি হয় ওরা।
Profile Image for Fårzâñã Täzrē.
274 reviews19 followers
July 29, 2025
ফারহান, অদ্রিতা, সৌমিক, কঙ্কা, রবি পাঁচটা নাম কিন্তু পাঁচজন ঠিক পাঁচ রকমের। ফারহান খুব চঞ্চল, হাসিতামাশা করতে পছন্দ করে বন্ধুদের সাথে। সৌমিক মিতব্যয়ী হিসাবী ছেলে। রবি ভবঘুরে বাউন্ডুলে জীবনের অধিকারী। অদ্রিতা আর কঙ্কার মধ্যে শুরুতে অদ্রিতাকে যত শান্তশিষ্ট স্বভাবের মনে হবে কিন্তু গল্পের স্রোতে ভেসে আমরা যত সামনে এগিয়ে যাবো ততই অদ্রিতা আমাদের কাছে অচেনা মানুষ হয়ে উঠবে বাকিদের থেকে। আর রইলো বাকি কঙ্কা? মেয়েটিকে যতটা সাহসী মনে হবে অদ্রিতাকে তবুও সে হারিয়ে দিতে পারবে না।

এই গল্পটা শুরুতে যতটা সুন্দর শেষটা ততই নির্মম। ততটাই লোমহর্ষক। "মৃ*ত্যুফাঁদ" দেখেছেন কখনও? যেখানে আপনাকে শুধু ফাঁদে আটকে পড়ে গোলক ধাঁধায় ঘুরতে হবে। প্রতি পদক্ষেপ ভেবে চিন্তে ফেলতে হবে। আজকে এই গল্পটা তো হতে পারতো অন্যরকম তাই না? বান্দরবানে যাবার জন্য পাঁচ বন্ধু কত খুশি ছিল। কিন্তু জীবনের চক্রটা এতটাই জটিল আপনি বারবার ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন ধাঁধায় পড়ে যাবেন। চোখের সামনে যেটা সাধারণ সেটা হয়ে উঠতে পারে ফাঁদ। এবং সেটা আস্তে আস্তে গ্ৰাস করবে আপনাকে। হয়ে উঠবে "মৃ*ত্যুফাঁদ"।

আরেকটু রহস্য দিয়ে দেই চলুন। খবরে এসেছিল বান্দরবানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরতে নিয়ে নি*খোঁজ হয়েছে তিন তরুণ তরুণী। নিশা সেই দলেই ছিল। মেয়েটার কোনো খোঁজ নেই সাথে ওর দুই বন্ধুর তারাও হারিয়ে গেছে। কিন্তু কীভাবে? শেষবার ঠিক কী হয়েছিল ওদের সাথে কে বলতে পারে! তিনটি জলজ্যান্ত মানুষকে কী কেড়ে নিলো ওই পাহাড়!

বান্দরবানের পু*লিশ কনস্টেবল রফিকের জীবনে বড়ো ধরনের কেস সলভ করার কোনো ইতিহাস নেই। বড় পানসে লাগে জীবন, আছে শুধু বই। তার মনের ইচ্ছা, সে যেন সেই হারিয়ে যাওয়া তিনজনকে খুঁজে বের করতে পারে। তাহলে অবসরের আগে অন্তত মনে রাখার মতো কিছু করে যাবে। কিন্তু তারই জীবন জীবন বদলে গেল হুট করে। খু*নের দায়ে তাকেই পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। সেই সাথে খুঁজে বেড়াতে হচ্ছে তার ��ীবন বিভীষিকাময় করে তোলা সেই ব্যক্তিটিকে। কী অদ্ভুত তাই না!

"কোথায় কে অপেক্ষায়,
পদে পদে হাতছানি দেয় ভয়।
মৃ ত্যুফাঁদ পেতেছে গহিন অরণ্য,
না জানি কী হয়! কী হয়!"

বলছিলাম পাঁচ বন্ধুর কথা। বান্দরবানের ট্রিপ আয়োজন করেছিল ফারহান। তারা বান্দরবানে এসে মং সেন নামের এক আদিবাসী ছেলেকে গাইড নিয়ে নেয়। স্থানীয়রা থাকলে আসলে রাস্তাঘাট চিনতে সুবিধা, বিপদ কম। দলের সবচেয়ে শান্ত মেয়েটির কিন্তু ভালো লাগছে না মং কে। মেয়েটি অদ্রিতা। কেমন যেন অদ্ভুত দৃষ্টি এই মং সেনের। সেই দৃষ্টিতে ভয়ংকর কিছু খেলা করছে। তবুও কেউ কিছু বুঝতে পারছে না কেন? না কি সেই বেশি বেশি ভাবছে? মং সেনকে বিশ্বাস করতে পারছে না অদ্রিতা। বারবার মনে হচ্ছে লোকটার অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে।

মং সেনের সঙ্গে ছেলেদের খুব খাতির। মং সেনের কথা বিশ্বাস করে ওরা পাঁচজন চললো নতুন এক জায়গা দেখতে। জায়গাটা প্রায় মিয়ানমার সীমান্তের কাছেই। কিন্তু এই জায়গাটায় তেমন কেউ যায় না। সে*নাবাহিনী পর্যন্ত এই জায়গা এড়িয়ে চলতে চায় কিন্তু মং সেনকে সাথে নিয়ে ওরা কেন এই জায়গায় এসেছে ওরা নিজেরাও জানে না বোধহয়। মং সেন কিন্তু ওদের আরও উস্কানি দিচ্ছে ওখানে যেতে।

কিন্তু ওদের ওখানে পৌঁছাতে গিয়ে হঠাৎ করেই নামলো মুষলধারে বৃষ্টি। এই বৃষ্টিতে ভিজলে নির্ঘাত জ্বর। সবাই মিলে আশ্রয় নিলো একটি গু���ায়। বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি ভেতরে ওরা সবাই বসে গল্প করছে। একটা সময় ক্লান্তিতে সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। এবং ঘুম ভাঙার পর যেটা আবিষ্কার করে তা হলো গুহার মুখ আটকে গেছে পাহাড় ধসে হোক বা যেভাবেই হোক। মং সেনকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। ওরা আটকে পড়েছে পাঁচজন গুহায়।

কিন্তু এই গুহার মধ্যে আটকে পড়ে এরা যে নিরাপদে আছে তাও নয়। বের হতে না পারা যেমন বিপদ এর থেকেও বড় বিপদ যেন ঘাপটি মে*রে আছে গুহার মধ্যেই। অন্ধকারের বুক চিরে বেরিয়ে আসতে চাইছে ওরা! টেনে নিয়ে যেতে চাইছে মৃ*ত্যুর দুয়ারে। লুকিয়ে আছে আশেপাশেই ওরা। পাঁচ বন্ধু এবার কীভাবে বাঁচবে? ওরা কী পারবে এই অন্ধকারের শক্তিকে হারিয়ে গুহা থেকে বের হতে নাকি ওই গুহাতেই হবে ওদের সলীল সমাধি? সাবধান! এই মৃ*ত্যুফাঁদ সহজ নয়।

🍒 পাঠ প্রতিক্রিয়া :

ভার্সিটি লাইফ, বন্ধু, আড্ডাবাজি, ট্রিপে যাওয়া, অ্যাডভেঞ্চারের নেশা। লেখক যে পাঁচ বন্ধুর কথা তুলে এনেছেন তাদের সাথে এই বিষয়গুলোর সামঞ্জস্য রেখেছেন। এই গল্পটা আসলে আমার কাছে খুব একটা অবাস্তব মনে হয়নি। এমন অ্যাডভেঞ্চার করা বেপরোয়া জীবন অনেক ভার্সিটি পড়ুয়াদেরই শখ থাকে। তবে আমার কাছে এই বই থেকে সবচেয়ে বেশি যেটা শিক্ষনীয় মনে হয়েছে সেটা হলো কোনো কিছু নিয়ে অতিরিক্ত কৌতুহল, ডোন্ট কেয়ার ভাব ভালো না। সেটার ফলাফল সবসময় ভালো হয় না।

"মৃ*ত্যুফাঁদ" উপন্যাসের মূল সম্পদ বর্ণনা। গল্পের আসল শুরু হয়েছে সেই গুহায় যেখানে একসাথে পাঁচ বন্ধু আটকে পড়ে। এবং এই গুহায় কিন্তু অনেকটা সময় কেটে যায়। ছোট ছোট মূহুর্তের বর্ণনাগুলো শরীফুল ভাই সুন্দর ভাবে গুছিয়ে লিখেছেন। তার বর্ণনায় গোটা অঞ্চল যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। সেই জীবন্ত প্রকৃতিতে হারিয়ে যেতে কষ্ট হয় না। এবং সত্যি বলতে পড়তে পড়তে একটা সময় মনে হয়েছে আমিও ওই গুহায় দাঁড়িয়ে। শরীফুল ভাইয়ের বইয়ের ক্ষেত্রে দেখেছি তিনি খুব সহজ ভাষায় সবকিছু লেখেন। যেখানে কোনো জটিলতা নেই, শব্দের ভারিক্কি নেই। আর সে কারণেই হয়তো তিনি পাঠকের সাথে খুব সহজে সংযোগ স্থাপন করতে পারেন।

"মৃ*ত্যুফাঁদ" গল্পে লেখক চরিত্রগুলোর মনস্তাত্ত্বিক দিকগুলো তুলে ধরেছেন সুক্ষ্মভাবে। এটাও ভালো লেগেছে। একটা অন্ধকার গুহা, বাইরে বৃষ্টি এমন একটা পরিস্থিতিতে পাঁচ বন্ধুর কার মনে কী চলছিল জানা তো উচিত। বিপদ এমনি একটা জিনিস যেখানে মানুষ বোধহয় নিজের কথা সবার আগে ভাবে। সেখানে বন্ধুত্ব, মানবতার দোহাই দেয়া ঠুনকো আসলেই। এবং ওই গুহায় আটকে পড়ার সময়টুকু লেখক ধাপে ধাপে অনেককিছুই দেখিয়েছেন। এবং বলা যায় শেষ পরিণতিরও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

চরিত্রগুলো একে অন্যের বিপরীত আচরণ করছিল যেন। ছেলেদের থেকে হঠাৎ মেয়েরা সাহসী হয়ে উঠলো। আসলে বিপদ বোধহয় মানুষকে কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় ফেলে। তবুও এরা পাঁচজন বন্ধু কিন্তু বন্ধুত্বের খাতিরে শেষ পর্যন্ত সবাই একসাথে থাকার চেষ্টা করেছে। তবে ওই যে বললাম অতিরিক্ত কৌতুহল আসলে কখনো ভালো কিছু দিতে পারে না।


গল্পের শেষটা নিয়ে কী বলি। শরীফুল ভাইয়ের বেশিরভাগ বইয়ের মতো সমাপ্তি। তখন আসলে আক্ষেপ হয় আহা! শেষটা যদি এমন না হতো। ভালো গল্প বা চরিত্রের জন্য যখন একটা সহমর্মিতা কাজ করে তখন আসলে গল্পটার সাথে পাঠক ইমোশনালি জড়িয়ে যায়। তখন শেষের সমাপ্তি তারা অবশ্যই তাদের মতো করে ভাবে। তবে লেখকের যা ইচ্ছা। হয়তো শেষটা এরকম বলেই বইটার কথা মনে থাকবে।


কত স্বপ্ন দেখে জীবন। অথচ জীবনের মূল্য বুঝতে পারি আমরা যখন বিপদে পড়ি। তখন মনে হয় জীবন এত ছোট কেন! মৃ*ত্যুফাঁদে ওই পাঁচ বন্ধুর কথা ভাবুন তো, জীবন নিয়ে কত স্বপ্ন ওরাও নিশ্চয়ই দেখেছিল তাই না?

🍒বইয়ের নাম : "মৃ*ত্যুফাঁদ"
🍒লেখক : শরীফুল হাসান
🍒প্রকাশনী : নালন্দা
🍒পৃষ্ঠা সংখ্যা : ২০৬
🍒মুদ্রিত মূল্য : ৫০০ টাকা
24 reviews
November 25, 2023
গুহার ভিতরে পর্যন্ত ঠিকঠাক ছিল। বাইরে বের হয়েই খেই হারিয়ে ফেলেছে। আর চরিত্র গুলোর আচরণ শেষ দিকে খাপছাড়া আর ব্যখ্যা হীন লেগেছে। মং এর হুট করে ভাল মানুষি, রফিক এর পুলিশ হয়েও কাপুরুষের মত আচরন আবার শেষে বীরত্ব। মহিলার আচরন ইত্যাদির ব্যখ্যা থাকলে ভাল হত। আর প্রাচীন এই গ্রুপ টির ব্যকগ্রাউন্ড আরেকটু ডিটেইলস থাকলে ভাল হত। সম্ভবত শেষ দিকে তাড়াহুরা করেছেন লেখক। সবমিলিয়ে বলা যায়, কাহিনি, চরিত্রায়ন, ইত্যাদি তে ভাল রকমের সমস্যা থাকলেও শরিফুল হাসান এর লেখনির গুনে বইটি উতরে গেছে।
Profile Image for Tasmin Nisha.
163 reviews9 followers
April 6, 2023
দানব অপেক্ষা করছে নিশাকে শিকার করার জন্য। পাহাড়ে দুই বন্ধুর সাথে ঘুরতে এসে চিরতরে বিদায় নিতে হলো পৃথিবী থেকে। কেউ হয়তো জানবেও না তাদের কথা। দানবগুলো পুরোপুরি তৈরি তাদের পরবর্তী শিকারের অপেক্ষায়।আরেকদিকে বান্দরবানের স্থানীয় কনস্টেবল মোহাম্মদ রফিক তিনজনের গুম হয়ে যাওয়ার কেইসের দায়িত্ব নেয় তবে আজকাল সে নিজেই পলাতক খুনের দায়ে। যদিও সে নির্দোষ কিন্তু তার নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে যেতে হবে এক বিশেষ জায়গায়। সেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছে অনেককিছু।


একই ভার্সিটিতে পড়ে আদ্রিতা, কঙ্কা, ফারহান, রবি ও সৌমিক। সাতদিনের জন্য তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত ট্যুর দেওয়ার জন্য তৈরি, গন্তব্য বান্দরবান। ভ্রমণ যাত্রায় তাদের ট্যুর গাইড মং সেন তাদের নতুন জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিল। জায়গাটা বার্মা সীমান্তের ওপারে, কোনো জন সমাগম সেখানে নেই বললেই চলে। অনেক দ্বিধা দ্বন্দ্ব নিয়ে শেষমেশ তারা রাজি হয় সেখানে যেতে। তবে মং সেন তাদের সচেতন করে দিয়েছেন সেখানে এমন কোনো কাজ না করতে যাতে বন দেবতা অসন্তুষ্ট হন। সেখানকার জায়গা নিয়ে নানা মিথ শুনতে পাওয়া যায়।


অজানাতে যাত্রা শুরু হলো পাঁচ বন্ধুর। তবে আদ্রিজার শুরু থেকেই মন সায় দিচ্ছে না। যাত্রাপথে বিভিন্ন জায়গায় ঘু��ে তারা গুহায় আশ্রয় নিলো রাত কাটানোর জন্য কিন্তু আকস্মিক এক দুর্ঘটনায় তারা সেখানে আটকা পড়ে গেল। তারা লক্ষ্য করলো তাদের সাথে মং সেন নেই। তারা বুঝতে পারলো না এই লোক কি তাদের ইচ্ছে করে এখানে বন্দি করে রেখে চলে গিয়েছে নাকি সে আসবে সাহায্য করতে। হার না মেনে যখন তারা উপায় খুঁজতে লাগলো তখন তারা গুহার ভিতরে পেল আরেক গুহা। বেঁচে থাকার তাগিদে তারা সেখানে পা বাড়ালেও তারা ঘুনাক্ষরেও বুঝতে পারেনি তাদের জন্য যমদূত অপেক্ষা করছে। দানব গ্ৰাস করতে থাকে একের পর এক কে। তাদের উদ্দেশ্য একজন বিশেষ কাউকে খুঁজে বের করার। বছরের পর বছর তারা অপেক্ষা করছে এই মানুষটার জন্য।


গুহার মধ্যে হঠাৎ করে আক্রমণ হওয়ার পর গল্পের তেজ বাড়তে থাকে,একদম গল্পে ঢুকে যাওয়ার মতো অবস্থা। বিষাদ মাখা সমাপ্তি হলেও আমি আরো থ্রিলিং কিছু আশা করেছিলাম। তবে গল্পে একই জিনিস বারবার পুনরাবৃত্তি করাটা খুব বিরক্ত লাগে ঠিক যেমন ফারহানের ছবি তোলার ব্যাপারটা বারবার উল্লেখ করা। মোটে উপভোগ্য ছিল।
Profile Image for Ghumraj Tanvir.
253 reviews10 followers
Read
February 18, 2023
কন্সেপ্ট হিলস হ্যাভ আইস' মুভির সাথে মিলে যায়।হাফ বই পড়ার পরেই বুঝা গেছে।বেশি ভালো লাগে নাই।
শরীফ ভাইয়ের লেখনি নি:সন্দেহে চমৎকার।কিন্তু প্লট ভালো লাগে নাই।
This entire review has been hidden because of spoilers.
Profile Image for Mesratul Jannat.
33 reviews
December 22, 2024
#বই_রিভিউ
#মৃত্যুফাঁদ
লেখক: Shariful Hasan
প্রকাশনী: নালন্দা
মুদ্রিত মূল্য: ৫০০
পৃষ্ঠা: ২০৬
জনরা: হরর থ্রিলার/ এডভেঞ্চার
রিভিউয়ার: জান্নাত
⛔স্পয়লার এলার্ট

#ফ্ল্যাপ:
পার্বত্য অঞ্চলে বেড়াতে এসেছিল ওরা পাঁচজন। গাইডের সাথে চলে আসে এমন এক জায়গার খোঁজে, যেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষেধ। পাহাড়ের গুহায় আটকে থাকা প্রাচীন কোনো এক শক্তির মুখোমুখি হয় ওরা। অন্ধকারে ওদের তাড়া করে বেড়ায় কে? বাঁচার লড়াইয়ে নেমে দেখতে পায় এই লড়াই শুভ-অশুভর লড়াই-ই শুধু নয়, এই লড়াই আরও অন্য কিছুর। আদ্রিতা, কঙ্কা, ফারহান, রবি আর সৌমিক কী এই লড়াইয়ে জিততে পারবে? মৃত্যুফাঁদ! শরীফুল হাসানের লেখায় এই অদ্ভুত রোমাঞ্চের জগতে আপনাদের স্বাগতম!

#কাহিনী_সংক্ষেপ:

মৃত্যুফাঁদ বইটার পাতায় পাতায় ভয়ানক বর্বর মৃত্যুর গন্ধ। গল্পের শুরু হয় নিশা রাকিব আরশাদের ঘটনা দিয়ে। ততক্ষণে রাকিব, আরশাদ শিকারে পরিণত হয়েছে এই ভয়ানক শিকারীর যারা মানুষ না প্রাণী নাকি অতিপ্রাকৃত কিছু বোঝা দায়। এই অংশ টুকু দিয়ে লেখক পাঠকদের সামনে কি হবে তার সামান্য ধারণা দিয়েছেন।
তারপর আসে সেই ৫ জন দল যে দলে আছে আদ্রিতা, রবি, ফারহান, সৌমিক আর কঙ্কা। একদিন ফারহান ঠিক করে ট্যুর দিবে। যেই ভাবনা সেই কাজ। সৌমিক সব প্লান করে। ওরা সবাই পরিবারকে জানিয়ে চলে আসে ৭ দিনের ভ্রমণে। পাহাড়ে। এখানে এসে পরিচয় হয় ট্যুর গাইড মং সেন এর সাথে।
এর মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল রফিক এর সাথে আলাপ চলাকালে অজ্ঞাত খুনির হাতে খুন হয় গুল্টু মিয়া।
তারপর... মং সেন এর মাধ্যমে খোঁজ পায় এমন একজায়গার যেখানে বাঙ্গালি সেটেলাররা কোনোদিন যায় নি৷ নতুন জায়গা ভ্রমণের আবেশে রাজী হয়ে যায় সবাই। পরদিন সবাই বেরিয়ে পরে সেই অজানাকে জানায় উদ্দেশ্য। তারপর থেকেই হয় অদ্ভুত ঘটনার শুরু। বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প করে ওরা যেতে থাকে সেই অজানাকে আবিষ্কারের উদ্দেশ্য।
মং সেন এর সাথে ঘটনাক্রমে আটকে পরে একটা গুহায়। তারপর থেকেই শুরু হয় এক রুদ্ধশ্বাস এডভেঞ্চার এর। শুরু হয় নৃশংসতার। হাড় হিম করা ঘটনার৷ কে বা কারা চোখের পলকে শিকার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। গায়ে তাদের অসীম শক্তি, দ্রুততায় সর্বসেরা। হাত পা মাথা টেনে ছিঁড়ে ফেলছে নিমিষেই।
৫ জনের দলটার শেষ অবধি কয়জন পারে বেঁচে ফিরতে? শহুরে অ্যাডভেঞ্চারের রোমান্টিকতায় বিভোর এই পাঁচজনের পরিণতি কি হবে? তারা কি পালাতে পারবে মৃত্যুর হাতছানি থেকে? নাকি হারিয়ে যাবে গোলকধাঁধায়? যা ঘটছে সব কি অলৌকিক? নাকি জড়িয়ে আছে কোনো বৃহৎ ষড়যন্ত্র? কারা ছিলো সেই গুপ্ত শিকারী সেসব জানতেই পড়তে হবে টান টান এই এডভেঞ্চার বই মৃত্যুফাঁদ।

#পাঠ_প্রতিক্রিয়া:

বইটার প্রত্যেকটা লাইন পরের লাইন পড়ার জন্য আগ্রহ জোগায়। প্রায় পুরো বই জুড়েই ছিলো উত্তজনা ধরে রাখার মতো কাহিনী। সাসপেন্স এ ভরপুর বই। এই বই নিয়ে কিচ্ছু বলার নাই। পড়ার সময় মনে হচ্ছিলো এতো দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে বইটা। আরো বড় হওয়া উচিত ছিলো বইটা। মাঝে একবার মনে হলো আর না পড়ি, পড়লেই শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু বইটা আঠার মতো আটকে রাখে পাঠক কে নিজের সাথে। এক বসায় পড়ে শেষ করে ফেলার মতো বই। তবে কিছু জায়গায় আমি বুঝি নাই। এটা লেখকের ক্লিয়ার করা উচিত ছিলো।

১। শিকারের যদি এক বিশেষ বৈশিষ্ট্যের নারীই লাগে তবে কেনো ৫ জনের দলটাকে এতো ঘুরিয়ে সেই গোলকধাঁধায় নিয়ে যেতে হলো। কেনো কৃত্রিম ভূমিধস ঘটিয়ে তারপর গুহায় আটকে দিলো। ওরা তো দ্রুতগতির হিংস্র শিকারী। বৃষ্টিতে বাইরের প্রতিকূল অবস্থায়ই তো শহুরে ৫ জনকে আটকে ফেলা যেতো। ভয় দেখিয়ে বর্বর নৃশংস ভাবে হত্যার পিছনের কারণ কি?

২। মং সেন কেনো পরবর্তীতে দল পাল্টে ফেললো? স্বর্ণমুদ্রার লোভে যে লোক এতঁ নৃশংস নির্দয় হতে পারে তার শেষবেলা এমন দল পালরটে নিজেকে বিসর্জন দেবার কারণ কি ছিলো?

৩। কঙ্কার মধ্যে কি এমন বিশেষ গুণ ছিলো যে তাকে বেছে নিলো শিকারীরা?

লেখক সমস্ত চরিত্রকে তার স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য মতো এগিয়ে নিলেও রফিক চরিত্রটাকে তার স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য দেয় নি। সে পারতো কাপুরুষের মতো আড়ালে না থেকে প্রথমেই সাহায্য করতে। তার মাঝে পুলিশের স্বভাব জাত কোনো বৈশিষ্ট্যই ছিলো না। শেষ বেলা যদিও সে তার লোভে, কাপুরুষতার শাস্তি পেয়েছে। ভেবেছিলাম রবি আর আদ্রিতা সবথেকে সাহসী, বুদ্ধিমান। তারা অন্তত চিকে থাকবে। কিন্তু রবি পুরাই হতাশ করে দিলো। আর আদ্রিতা 🙂
পাঠক যা মনে প্রাণে চাইবে না হতে, লেখক কলমের কালিতে সেটাই করে ফেলবে💔
টুইস্ট আর সাসপেন্সে ভরপুর সুপার সনিক গতির এই বই। দম আটকানো দুর্ধর্ষ অবস্থায় পাঠক নিজেকেই সেই ভয় মেশানো বর্বর পরিস্থিতিতে কল্পনা করতে বাধ্য। নিঃসন্দেহে জমজমাট একটা উপন্যাস। আমার দারুণ লেগেছে।
প্রশ্ন গুলো লেখক আরো কয়েক পৃষ্ঠা লিখে পরিষ্কার করে দিলে ৫/৫ পাইতো।

#রেটিং: ৪.৭/৫ 🔥
ছবি কালেক্টেড
Profile Image for Masum Ahmed.
Author 2 books44 followers
February 9, 2023
বান্দরবানে ঘুরতে গিয়ে পাঁচ বন্ধুর ভয়ঙ্কর এবং বিপজ্জনক অ্যাডভেঞ্চার এরকম গল্প আমরা অনেক পড়েছি। বলতে গেলে শিশুতোষ অ্যাডভেঞ্চার বইগুলোর মধ্যে খুঁজলে হয়তো হাজার খানেক গল্প পাওয়া যাবে এরকম। ছুটিতে বেড়াতে গিয়ে ভয়ঙ্কর কোনো জায়গায় আটকে যাওয়া, কিংবা ভয়ঙ্কর কোনো রহস্যের সম্মুখীন হওয়া এগুলো সেইসব গল্পের মূল বিষয়বস্তু। তবে এখন যে গল্পটা বলতে যাচ্ছি সেটা সম্পূর্ণই আলাদা একটা গল্প।

শুরুটা অন্যসব অ্যাডভেঞ্চার গল্পের মতই। আদ্রিতা, কঙ্কা, ফারহান, রবি ও সৌমিক, পাঁচ বন্ধু এবার ছুটি কাটাতে যাচ্ছে বান্দরবানে। ইচ্ছে, আগামী কিছুদিন প্রকৃতির সান্নিধ্যে সময় কাটানো। তারপর তাদের গাইডের সাথে এমন একটা জায়গার খোঁজে যায় যেখানে কোন মানুষ যেতে চায় না। পাহাড়ি জঙ্গলের ভেতর দিয়ে মায়ানমার সীমান্তের ঐ পাড়ে জায়গাটা। খোদ মায়ানমার আর্মিই জায়গাটাকে এড়িয়ে চলে। কারণ, কথিত আছে ওখানে যে যায় সে ফিরে আসে না। মায়ানমার আর্মির বেশ কয়েকজন জওয়ান হারিয়েছে ওখানে গিয়ে। পরে দলবল নিয়ে পুরো এলাকা তন্নতন্ন করে খুঁজেও কিছু পাওয়া যায়নি। না লাশ না অন্যকিছু। তাই জায়গাটাকে অশুভ ধরে নিয়ে এড়িয়ে চলাটাই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করে ওরা।

এরকম পাণ্ডববর্জিত এলাকায় পদে পদে বিপদ ওঁত পেতে থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। তবে যতক্ষণে ওরা বুঝতে পারবে ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ওখান থেকে বেঁচে ফেরার আশা খুবই কম।

কিছুদিন আগে বান্দরবান ঘুরতে এসে তিন তরুন তরুণী নিখোঁজ হয়েছে, সেই খবর প্রত্যেকটা লোকাল নিউজপেপারে এখনো ছাপাচ্ছে। বান্দরবান থানা থেকে কিছুদিন খোঁজাখুঁজি করে ওরাও ক্ষান্ত দিয়েছে। তবে কনস্টেবল রফিক চাচ্ছিল যেভাবেই হোক ওদেরকে খুঁজে বের করবে। অবসরে যাওয়ার আগে কন্সটেবল হিশেবে অন্তত একটা কেস সলভ করতে পারলে, জীবনটাই বদলে যাবে। কিন্তু সে ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেনি যে নিজেকেই খুনি হিশেবে পালিয়ে বেড়াতে হবে।

আবার এদিকে প্রাচীন আমলের তিনটা স্বর্ণমুদ্রার খবর ভেসে বেড়াচ্ছে পার্বত্য অঞ্চলে। যে-ই মুদ্রাগুলো হস্তগত করতে চাচ্ছে খুন হয়ে যাচ্ছে!

শরীফুল হাসানের প্রথম বই পড়ার পর থেকেই তার ফ্যান হয়ে গেছি। তাই তার মোটামুটি সব বইই আমার পড়া হয়ে গেছে। সুতরাং তার নতুন বই বেরুবে আর আমি পড়ব না, হতেই পারে না।

এই বইটা শুরু থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত আর দশটা সাধারণ অ্যাডভেঞ্চার গল্প হিশেবেই এগিয়েছে। তবে এরপর থেকেই ধীরে ধীরে অসাধারণ হয়ে উঠতে থাকে। তবে শরীফ ভাইয়ের প্রায় সব লেখা পড়ে ফেলার জন্য নাকি ভাইয়ের সাথে আড্ডা দেয়ার জন্য, গল্পের শেষটা আমার কাছে অনুমেয় মনে হয়েছে৷ একসাথে আড্ডাতে অনেক কিছু নিয়েই আমাদের আড্ডা-আলোচনা হয়। হতে পারে এমন কোনো আড্ডায় গল্পটার হিন্টস দিয়েছিলেন উনি। গল্পে চরিত্রগুলোর মানসিক মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপারগুলো খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। বিপদের মুহূর্তে আমরা যেমন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগী সেটাও ফুটে উঠেছে। নিজের সাথে নিজের মানসিক দ্বন্দ্ব, নিজের ইচ্ছা বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হওয়া এসব আমাদের জীবনে হর হামেশাই ঘটে। আর এই সাধারণ বিষয়গুলোই অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক।

অ্যাডভেঞ্চার, হরর এবং থ্রিলার এই তিনটার যেকোনো জনরায় ফেলা যাবে বইটাকে। আবার চাইলে তিনটাতেই ফেলা যায়।

নালন্দার বইয়ের কোয়ালিটি বরাবরই ভালো। তবে ২০০+ পৃষ্ঠার বইয়ে বুকমার্ক ফিতা দেয়াটা জরুরি। ২০০+ পৃষ্ঠার বই সবাই এক বসায় পড়তে পারবে না। সেজন্যে ফিতাটা জরুরি ছিল৷ কাগজের দামের কারণে ২০৬ পৃষ্ঠার বইয়ের দাম রাখতে হয়েছে ৫০০ টাকা। এতে করে সবার জন্য বইটা কেনা কঠিন হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি। এবারের মেলায় নতুন অনেক বইয়ের দাম আমি দেখেছি, সেই তুলনায় এই বইটার দাম কিঞ্চিৎ বেশিই মনে হয়েছে। তবে দিনশেষে বইটা পড়ার পর তৃপ্তি পেলে মূল্য নিয়ে আর অভিযোগ থাকবে না।


চলে আসুন বান্দরবানে,
মৃত্যুর স্বাদ পেতে,
বসে আছে কেউ হেথায়,
মৃত্যুর ফাঁদ পেতে।
Profile Image for Farzana Tisa.
44 reviews7 followers
June 29, 2023
#পাঠ_অনুভূতি_০৯_২০২৩
বই : মৃত্যুফাঁদ
লেখক : শরীফুল হাসান
জনরা : হরর থ্রিলার
প্রকাশনা : নালন্দা
পৃষ্ঠা : ২০৬

এবারের ঈদ বৃষ্টি ভেজা, কেমন যেনো মন খারাপের।
কোনো কাজেই মন বসছিলো না। বই টা সাথে করে নিয়ে এসেছিলাম প্রায় অর্ধেকের ও বেশি বাকি ছিলো। ভেবে ছিলাম আমার সাথেই আবার ফিরে যাবে। কিন্তু আজ সকাল থেকে টানা পড়ে শেষ করলাম। এ সময়ের লেখকদের মধ্যে আমার খুব পছন্দের একজন লেখক তিনি। কিন্তু বড়াবড় ই ওনার বই গুলো সামাজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে লেখা থাকে। এই প্রথম আমি তার হরর থ্রিলার পড়লাম।
৫ বন্ধু বান্দরবনের গহীনে যেখানে লোকালয় নেই সেখানে ঘুরতে যায়। তারপর একটা গুহায় আটকে পরে। তারপর ই তাদের উপর আক্রমণ চালায় কারা এরা মানুষ না দানব না ভিনগ্রহের কেউ। আদ্রিতা আর কংকা হারায় তাদের তিন বন্ধু কে।
কিন্তু মৃত্যু যে অবধারিত মরে তো যেতেই হবে। কিন্তু শেষে কি ওরা দুজন ও বেঁচে যায় নাকি সবাই মরে যায়।জানতে হলে বই টি পড়তে হবে।
এই বইটা দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে মানুষ কিভাবে ঘুরে দাঁড়ায় তা চোখে আংগুল দিয়ে দেখায়।
ভয়ের ভিতর দিয়ে যেতে যেতে ভয়হীন হয়ে যাওয়া কে অনুভব করায়।
ববন্ধুত্ব এর আসল মানে টাও এখানে দেখা যায়।
সবশেষে প্রতিবারের মতোই লেখকের বই পড়ে আপনি একটু ভাববেন। মন বিষাদে আক্রান্ত হবে।

বই পড়ুন, সময়কে কাজে লাগান।
Profile Image for Muhammad Asif.
12 reviews
February 27, 2023
লেখার শুরুতেই একটা বিষয় বলতে হয়, ব্লাব ও প্রারম্ভিক অধ্যায় পড়ে আমি অনেকটাই নিশ্চিত যে কী হতে যাচ্ছে, গল্পটা কোনদিকে গড়াবে জানি তাও পড়তে ভাল লাগছে, অশুভ কিছুর জন্য অপেক্ষা করতে ভাল লাগাটাই গল্পের সার্থকতা ও গল্পকারের সার্থকতা।

মাঝে দীর্ঘ বিরতির পর অবশেষে পড়া শেষ করলাম মৃত্যুফাঁদ। নৃশংস হত্যাকাণ্ডে ভরপুর প্রতিটি পেজের পাতা তবে এই হত্যাকাণ্ডের বিবরণটা বেশি ছিল। মানি শুরুতে গল্পটার আখ্যানভাগ দাড় করিয়ে একের পর এক হত্যাকাণ্ডের বিবরণ শুরু হয়। কাহিনী প্রেক্ষাপট বা ভিত্তিটা নিশ্চিতভাবেই ভাল কিন্তু আমি বুঝাতে চাচ্ছি পাতায় পাতায় হত্যাকাণ্ড পড়লেও সেখানে টুইস্ট, পটভূমির একটা মোড় থাকে৷ সেটা কেমন থাকে তা হয়তো বুঝাতে পারবো না। পাঠক হিশেবেই খানিকটা অভাববোধ হয়েছে অথবা বলা যায় একটা সময়ে এত বেশি হত্যার বিবরণ পড়ে গল্প পড়ার কিছুটা অভাব অনুভব করেছি। তাও শেষ করে বলবো পরিপূর্ণ ছিল বইটা, তাতে সন্দেহ নেই। শেষটায় হতাশা আনন্দ যন্ত্রণা মিলে যে একাকার অনুভূতি লেখক দিয়েছেন তা সার্থকভাবে উপলব্ধি করতে পারছি। এটাই বইটা শেষ করার আনন্দ দিচ্ছে আমাকে।

~ ২৮.০২.২৩, রাত ১.২৬
Profile Image for Parvez Alam.
306 reviews12 followers
February 9, 2023
আপনার কাজে আপনার মুনশিয়ানা কেমন যেটা বুঝা যাবে আপনার কাজটা যখন আপনি ছোট স্থানে করে দেখাতে পারবেন তাঁর উপরে। মৃত্যুফাঁদ বইটিতে লেখক উনার মুনশিয়ানা ১০০% দেখতে পেরেছেন, সেটা কি ভাবে? সেটা হচ্ছে এই বইয়ের নাম সহ চরিত্র হাতে গোনা কয়কটা, আর মূল কাহিনী আগায় গেছে অন্ধকার একটা গুহাতে কিন্তু কাহিনী একটু তাঁর লাইন থেকে সরে যায়নি এমন কি রহস্য, ভয়-ভয় ভাবটা আরো জাপটে ধরে রেখেছে। বইটা পড়ার সময় মনে হয়েছে আমি নিজে গুহাতে আটকা আমি নিজে চিন্তা করতেছিলাম কি ভাবে বের হইতে পারবো। কিন্তু শেষটা ইচ্ছা ছিলো যেভাবে হবার কথা ছিলো সেই ভাবে হলে ভালো লাগত। পুলিশ কনস্টেবলের ফোকাসটা একটু কম হয়েছে আমার মতে তাঁর পরেও যটুকু ছিলো ভালো ছিলো। বইটার ২য় পর্ব আসার মত কাহিনী নেই কিন্তু আমার মনে হয় একটা প্রিকুয়েল লেখা যেতে পারে শুধু সেই সোনার কয়েন আর গুনার রহস্য যাদের নিয়ে তাদের কে নিয়ে। এইখানে কিছু প্রশ্ন রয়ে গেছে যার উত্তর যানার জন্য মনটা অনেক উতালা।
Profile Image for Zahidul.
450 reviews93 followers
July 3, 2023
ফারহান, রবি, সৌমিক, আদ্রিতা এবং কঙ্কা- ৫ জন ভার্সিটি পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী। নিতান্তই শখের বসে বান্দরবানে গিয়ে তারা আটকা পড়ে যায় এক ভয়াবহ ফাঁদে। এখন কী সেই ফাঁদ এবং সেখান থেকে তারা রক্ষা পায় নাকী তা নিয়েই লেখা হয়েছে লেখক শরীফুল হাসান এর সারভাইভাল থ্রিলার ধরণের গল্প ‘মৃত্যুফাঁদ’।

‘মৃত্যুফাঁদ’ বইটা মোটাদাগে সারভাইভাল থ্রিলার ঘরানার। তাই গল্পে এ সংক্রান্ত বেশ ভালো পরিমাণের টেনশন ছিলো। বরাবরের মতোই লেখকের লেখনশৈলী এই বইতেও বেশ ভালো। তবে বইয়ের কিছু চরিত্রের কার্যকলাপ আমার কাছে তেমন বাস্তবসম্মত মনে হয়নি। বইটা শেষ করার পরে কয়েকটা প্লট সম্পর্কে প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে, যেগুলো সম্পর্কে আরো ভালোভাবে উল্লেখ করা যেত গল্পে। দামের হিসেবে বাহ্যিকভাবে খুবই সাদামাটা লেগেছে বইটা, প্রচ্ছদের ব্যপারেও একই মতামত আমার। যাই হোক, বাংলা ভাষায় সারভাইভাল হরর/থ্রিলার টাইপ বই পড়তে যারা নিয়মিত পড়েন তারা এই বইটাও পড়ে দেখতে পারেন।
Profile Image for Subarno Rahman.
16 reviews
April 9, 2023
বইটা শেষ করলাম মাত্র। আমি শরীফুল হাসানের ভক্ত,বরাবরের মতোই এই বইটিও উপভোগ করেছি সত্য কিন্তু আমার অভিযোগ হচ্ছে শেষের দিকে এতো অযত্ন নিয়ে কেন লেখা হলো? এরকম জনরায় লজিক খোঁজা উচিত না,আমি সেটা নিয়ে বলছিও না। কিন্তু চরিত্রগুলো শেষে এসে কেমন একটা ছন্নছাড়া হয়ে গেলো,কে কখন কী করতেছে,কেন করতেছে সেগুলোর মানে খুঁজে পেলাম না। প্রথমদিকে হাতের ট্যাটু নিয়ে যেই রহস্য বিল্ড আপ করার চেষ্টা করা হয়েছে সেটা শেষের দিকে অকারণ মনে হলো। মং সেনের সহকর্মী দুজনকে প্লটে এনে পরে মনে হলো সময়ের অভাবে বের করে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া শেষের দিকে অনর্থক স্টোরি বড় করা হয়েছে।
এইগুলো আমার কাছে এই বইয়ের নেগেটিভ দিক লেগেছে। তা বাদে বইটি আসলে উপভোগ করেছি অনেক। লেখা বরাবরের মতই সাবলীল। বর্ণনাগুলো প্রকৃত অর্থেই থৃলিং ছিলো। আর এই ধরনের প্লটে দেশীয় গল্প পেয়ে সত্যি বলতে ভালো লেগেছে।
Profile Image for Shafiqul Bari Mobin.
10 reviews
March 10, 2023
লেখক হিসেবে শরিফুল হাসানের তুলনা তিনি নিজেই। এজন্য আগেপাছে না ভেবে বইমেলা থেকে বইটা সংগ্রহ করা। গতকাল রাতে শুরু করে আজকে শেষ করলাম। এখন বইটাকে একেবারে খারাপও বলতে পারতেছি না, ভালোও বলতে পারতেছি না।

লেখক পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে গল্পের ইন্টেন্সিটি প্রকাশ করতে চেয়েছেন বলে মনে হলো। গুহার ভেতরে "ঐ পিচাশ" দের আচরণ যতটা হিংস্র আর বর্বর মনে হয়েছিলো বাহিরে তাদেরকে নিতান্তই গোবেচারা টাইপ লেগেছে। কঙ্কাকে এক মুহুর্তে ধরে নিয়ে হাটতে হয়, পর মুহুর্তেই সে এত স্পিডে দৌড় দেয় যে একটা ছেলে তার সাথে দৌড়ে পারেনা! আরো কিছু বিষয় খুব একটা ভালো লাগে নি।

লেখকের কাছে এর চেয়ে অনেক বেশী কিছুর প্রত্যাশা ছিলো।
Profile Image for Shahriyer Ruhan.
Author 2 books26 followers
September 12, 2023
পুরনো শরীফুল হাসানের লেখনী খুঁজে পাইনি। শেষের দিকে ভালো লাগলেও প্রথম দিকের লেখনী পড়ে খুব একটা মজা পাইনি। গল্পের প্লট সুন্দর ছিলো, কিন্তু গল্পকে দ্রুত টেনে নিয়ে বই শেষ করেছেন লেখক। আমার যতদূর মনে হয়, বইটা খুব দ্রুত শেষ করার প্রবণতা ছিলো লেখকের মধ্যে, যেমনটা থ্রিলারের ক্ষেত্রে অনেকগুলো শর্ট-কামিংস তৈরি করে। কিছু কিছু জায়গায় অসঙ্গতি লক্ষ্য করেছি, যেমন- ৩৯ পৃষ্ঠায় আদৃতার পরনে ট্রাউজার থাকলেও ৪০ পৃষ্ঠায় বলা হয় আদৃতা নেইল কাটার তার জিন্সের পকেটে রাখলো। এমন বেশকিছু অসঙ্গতি আছে। তাছাড়া, ক্যারেক্টার বিল্ডআপ ভালো হয়নি।
এক্সপেকটেশন অনুযায়ী আমি হতাশ।
Profile Image for ASM Samiur Rahman.
23 reviews
February 26, 2023
কিছু বই থাকে না প্রিয় লেখকের যেই বই তার একনিষ্ঠ ভক্ত হওয়া স্বত্বেও ভালো লাগে না, এটা হচ্ছে শরীফুল ভাইয়ের লেখা সেই বই। বইটা যদি কেউ এক টানে শেষ করতে পারে তার শতভাগ কৃতিত্ব লেখকের লেখার। কাহিনী বেশ সরলরৈখিক, কাহিনীর বাঁকগুলোও সহজবোধ্য। দুই নারী চরিত্র ব্যতীত আর সকলের চরিত্রই আবছা, সমাপ্তি দ্রুত ও সাদাসিধা।
Displaying 1 - 30 of 40 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.