নাইনা গ্রহের জাতীয় সমাধিক্ষেত্রে- যে সমাধিটিতে ফুল দেবার জন্যে দূর-দূরান্ত থেকে এখনো মানুষ এবং নীলমানবেরা নিয়মিতভাবে উপস্থিত হয়, সেই সমাধিটি মহিয়সী রিরার। জনশ্রুতি আছে তার একক প্রচেষ্টায় চতুর্থ সহস্রাব্দের গোড়ার দিকে মানুষ এবং নীলমানবের বিরোধের সমাপ্তি ঘটে। মানুষ এবং নীল মানবেরা এখনো গভীর আগ্রহ এবং ভালোবাসা নিয়ে এই মহিয়সী মহিলার কথা স্মরণ করে।
Muhammed Zafar Iqbal (Bengali: মুহম্মদ জাফর ইকবাল) is one of the most famous Bangladeshi author of Science-Fiction and Children's Literature ever to grace the Bengali literary community since the country's independence in 1971. He is a professor of Computer Science & Engineering at Shahjalal University of Science and Technology (SUST). Before that, Iqbal worked as a research scientist in Bell Communication Research for six years until 1994.
Birth and Family Background: Iqbal was born on 23 December 1952 in Sylhet. His father, Foyzur Rahman Ahmed, was a police officer. In his childhood, he traveled various part of Bangladesh, because of his father's transferring job. Zafar Iqbal was encouraged by his father for writing at an early life. He wrote his first science fiction work at the age of seven. On 5 May 1971, during the liberation war of Bangladesh, the Pakistan's invading army captured his father and killed him brutally in the bank of a river.
Education: Iqbal passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1968 and HSC exam from Dhaka College in 1970. He earned his BSc in Physics from Dhaka University in 1976. In the same year Iqbal went to University of Washington to obtain his PhD and earned the degree in 1982.
Personal Life: Iqbal married Dr. Yasmeen Haque in 1978. Yasmeen is the Dean of the Life Science Department, Head of the Physics Department, Provost of the Shohid Janoni Jahanara Imam Hall and a researcher at SUST. They have two children - son Nabil and daughter Yeshim. Yeshim translated the book Amar Bondhu Rashed (Rashed, My Friend) written by her father. Iqbal's elder brother, Humayun Ahmed, was the most popular author and film-maker of Bangladesh since its independence. Humayun died after a nine-month struggle against colorectal cancer on the 19 July 2012. His younger brother, Ahsan Habib, is the editor of the satirical magazine, Unmad and one of the most reknowned cartoonist of Bangladesh.
Academic Career: After obtaining PhD degree, Iqbal worked as a post-doctoral researcher at California Institute of Technology (CalTech) from 1983 to 1988. He then joined Bell Communications Research (Bellcore), a separate corporation from the Bell Labs (now Telcordia Technologies), as a Research Scientist. He left the institute in 1994 and joined the faculty of the Department of CSE of SUST.
Literary career: Iqbal started writing stories from a very early age. Iqbal wrote his first short story at the age of seven. While studying in the Dhaka University Iqbal's story Copotronic Bhalobasa was published in a local magazine. But, a number of readers at that time felt that the story was based on a foreign story. To answer this allegation, he later rewrote the story and published the story in collection of stories named Copotronic Sukh Dukkho. Since then he is the most popular writer both in Bengali Science-Fiction and in Juvenile Leterature of the country.
Other Activities and Awards: Zafar Iqbal won the Bangla Academy Award, the highest award in literature in Bangladesh, in 2004. Iqbal also played a leading role in founding Bangladesh Mathematical Olympiad. In 2011 he won Rotary SEED Award for his contribution in field of education.
এটি এমন সময়ের গল্প, যেখানে মানুষ আর নীলমানব দুটি সম্প্রদায় একে অপরের রক্তের জন্য ক্ষুধার্ত। নীলমানবেরা দেখতে অবিকল মানুষের মতো হলেও তাদেরকে ঠিক মানুষের মর্যাদা দেওয়া হয়নি। বরং তাদেরকে আলাদা প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
অসম্ভব সাহসী, ভয়ঙ্কর, দুর্ধর্ষ, একরোখা এবং বুদ্ধিমান হিসেবে পরিচিত নীলমানবেরা মানবজাতিরই ছোট্ট এক অংশ। যারা স্বেচ্ছায় নিজেদের মাঝে বিবর্তন এনেছে। দৃষ্টি ক্ষমতা এমনভাবে বাড়িয়েছে যেন অন্ধকারেও দেখতে পায়। ফুসফুসকে বড় এবং শক্তিশালী করেছে যেন জরুরি পরিস্থিতিতে অতিমাত্রায় অক্সিজেন জমাতে পারে। তাদের রক্ত কপারভিত্তিক, ফলে এদের রক্ত এবং গায়ের রঙ নীল।
নীলমানবদের এসকল গুণ-বৈশিষ্ট্যের কারণে তাদের নিয়ে মানুষের আগ্রহের সীমা নেই। তারা এই প্রজাতির উপর গবেষণা করতে চায় এবং পরবর্তীতে সেই সুযোগ তৈরিও হয়। ক্লড যুদ্ধে মানুষ মোট ১৭ জন নীলমানবকে আটক করে। এরপর ক্যাপ্টেন বর্কেনের নির্দেশে একটি মহাকাশযান এদেরকে নিয়ে বিজ্ঞান একাডেমীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
যাত্রাপথে মহাকাশচারী ও নীলমানবদের মাঝে ভয়াবহ যুদ্ধ লাগে। মুহূর্তেই লাল ও নীল রক্তের বন্যা বয়ে যায়। রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া মহাকাশযানে মাত্র দুজন প্রাণে বেঁচে যায়। রিরা নামের একজন কিশোরী শিক্ষানবিশ কর্মকর্তা এবং কুশান নামের একজন নীলমানব।
যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে প্রায় ধ্বংশ হয়ে যাওয়া মহাকাশযান নিয়ে অচেনা এক গ্রহে অবতরণ করে রিরা। সেই গ্রহের মধ্যাকর্ষণজনিত ত্বরণ জি-এর কাছাকাছি এবং মোটামুটি পর্যায়ের বায়ুমণ্ডল ও আলো রয়েছে। মহাকাশযানের মূল প্রসেসর কর্তৃক জানা যায়, প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে এই গ্রহে কলোনী করেছিল মানুষেরা। কিন্তু কোনো এক অজ্ঞাত কারণে সবাই মারা যায়। শুধু তাই নয়, আরও একটি ভয়াবহ তথ্য উঠে আসে। এই গ্রহে রয়েছে বুদ্ধিহীন, ভয়ঙ্কর এবং নৃশংস একদল প্রাণী। সংখ্যায় এরা লাখের উর্ধ্বে এবং আপাতদৃষ্টিতে এটাই সবচাইতে বড় বিপদ।
অচেনা গ্রহে লাখো শত্রুদের ভিড়ে কীভাবে টিকে থাকবে রিরা? প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া মহাকাশযানেই-বা কতদিন বেঁচে থাকবে? তাদেরকে কেউ উদ্ধার করতে আসবে কি? বেঁচে যাওয়া সেই নীলমানবটিরই-বা কী হলো? এসকল প্রশ্নের উত্তর মিলবে এই উপন্যাসে।
অবনীল যতটা সায়েন্স ফিকশন, ঠিক ততটাই সার্ভাইবাল কাহিনি। শুরুর দিকটা ধীর গতিসম্পন্ন হলেও খুব দ্রুততার সঙ্গে গল্পের বাক পরিবর্তন ঘটে। সেইসাথে আস্তে ধীরে স্নায়ুর উপর চাপও বাড়তে থাকে। একটা সময় মহাকাশযানের কক্ষপথে বিচ্যুতি দেখা দিলেও পাঠকের মনোযোগে বিচ্যুতি ঘটার কোনো সম্ভাবনা নেই। কঠিন বিপর্যয়কে মোকাবিলা করতে প্রধান চরিত্রগুলো যে ধরনের প্রতিবন্ধকতার মাঝ দিয়ে যায়, যেসকল প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়, তা পাঠকও অনুভব করতে পারবেন। নিজেকে আবিষ্কার করবেন কোণঠাসা অবস্থায়। তাছাড়া লেখক যখন মুহম্মদ জাফর ইকবাল আর জনরা যখন সায়েন্স ফিকশন, তখন খুব বেশি কিছুর ব্যাখ্যা দরকারও পড়ে না।
তবে যদি প্রশ্ন করা হয়- এটা কি শুধুই বিজ্ঞান নির্ভর কল্পকাহিনি? উত্তরটা হবে- না। সময়ের ব্যবধান যদি গায়েব করে দেওয়া যায়, তাহলে কল্পনা আর বাস্তবতার মাঝে খুব বেশি পার্থক্য থাকে না। মহাকাশ, মহাযান, অত্যাধুনিক কম্পিউটার প্রযুক্তির বিষয়গুলো বাদ দিলে, মানব সন্তান রিরা এবং ভিন্ন প্রজাতির নীলমানব কুশানের ভাষা, সংস্কৃতি, আচরণগত পরিবর্তনকে খুব সহজেই বাস্তব জীবনের সঙ্গে মেলানো যায়। আমরা নিজেদের সমাজ, সংস্কৃতি, ধর্ম, গোষ্ঠীর বাইরে আলাদা কাউকে বা কোনোকিছুকে সহজভাবে নিতে পারি না। বরং বিরূপ মনোভাব পোষণ করি। অথচ আমাদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম এক। বুক ভরে শ্বাস নিতে, শান্তিতে বেঁচে থাকার যে বাসনা, সেটাও অভিন্ন। লেখক যেন এই চরিত্রগুলোর মাধ্যমে বর্তমান সমাজ, গোষ্ঠীর মধ্যে থাকা অমূলক ভেদাভেদকেই তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
উপন্যাসের ঘটনাগুলোকে অনুসরণ করলে দেখা যায়, একে অপরের রক্তের জন্য মরিয়া দুটি ভিন্ন সম্প্রদায়-গোষ্ঠী শেষ পর্যন্ত বেঁচে থাকার জন্য একে অন্যের সাহায্য নিয়ে যে লড়াইটা চালিয়ে যায়, সেটা যেন বর্তমান যুগের জীবন সংগ্রামেরই প্রতিচ্ছবি। যা এই বিজ্ঞান নির্ভর কল্পকাহিনিকে আরও বেশি বাস্তবিক করে তোলে। সবমিলিয়ে উপন্যাসটি ভীষণ উপভোগ্য ছিল। যারা সায়েন্স ফিকশন, থ্রিলার পছন্দ করেন, তাদের জন্য ‘অবনীল’ বইটি সাজেস্ট করব। হ্যাপি রিডিং। .
একদল নীলমানবকে নিয়ে ক্যাপ্টেন বার্কের মহাকাশযান যাত্রা শুরু করেছেন। মহাকাশযান এর দলপতি ক্যাপ্টেন বার্ক একদল নীলমানব কে নিয়ে পৃথিবী তে আসছেন যাদের ক্লড যুদ্ধে ধরা হয় কিন্তু বিজ্ঞান একাডেমি তাদের ঘুম পাড়িয়ে শীতল কক্ষে আনতে দেয়নি। এভাবেই শুরু হয় যাত্রা, কিন্তু হঠাৎ করেই শুরু হয় এক গোলমাল। নীল মানব রা মুক্ত হয়ে যায়, লেগে যায় এক তুমুল যুদ্ধ মহাকাশচারী দের সাথে। লাল নীল রক্তে ভেসে যায় সব। কিন্তু ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় কিশোরী এক মহাকাশচারী রিবা ও নীলমানব কুশান। তারা আবিষ্কার করে এই ক্ষতিগ্রস্ত মহাকাশযানে তারা একা, আর কেও জীবিত নেই। শুরু হয় তাদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম এবং এক চিলতে ভালোবাসা। কিন্তু তাদের এই জীবন সংগ্রাম শেষ হয় ঠিক ই কিন্তু এক আশ্চর্য রকম কষ্টে ভরা তার সমাপ্তি।
মাত্র ৯৬ পৃষ্ঠার এই সাইন্স ফিকশন টি শুরুতে সাধারণ ভাবে গেলেও টুইস্ট একেবারে শেষের দিকে। আমার পড়া জাফর ইকবালের সাইন্স ফিকশন গুলোর মধ্যে এটি ভালো লেগেছে বেশি। ভিন্নধর্মী এক পরিবেশ হয়তো এর মূলে রয়েছে। বই টি কি সংগ্রহে রাখার মত? সাইন্স ফিকশন প্রেমীদের জন্য পড়ার মত একটি বই।
অনেক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দুর্বল লেগেছে, মনে হয়েছে লেখক ফাঁকি দিয়েছেন। কাহিনীর মাঝে ফাঁকি ছিলো। বাচ্চাদের জন্য হয়তো ঠিক আছে। তবে কঠিন বিজ্ঞানকে বাচ্চাদের উপযোগী করে লিখতে পারাটাও একটা সফলতা।
প্রথম যখন বইটা পড়েছিলাম, আমি তখন চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। সবচেয়ে বেশি খারাপ লেগেছিল কুশানের জন্য। আমার মনে হয় ওকে ভালো লাগা শুরু হয়েছিল। যখন ওরা কুশানকে মেরে ফেলে তখন নিজের অজান্তেই আমার চোখ দিয়ে পানির বন্যা বয়ে যাচ্ছিল। একটা মানুষের ভেতর আরেকটা মানুষের জন্য কতটা ভালোবাসা থাকতে পারে তা অনুভব করতে পারছিলাম। এই ভালোবাসার কাছে বাহ্যিক সৌন্দর্য কিছুই না। এ ভালোবাসা শুধুই অনুভব করা যায়। আল্লাহ মানুষকে এতটা ভালোবাসা দিয়ে পৃথিবীতে কেন পাঠিয়েছেন!! মনে হচ্ছিল আমি শুধু কুশান না, সব মানুষকে ভালোবাসি। সব নীলমানবদের ভালোবাসি। বুকের ভেতর চাপা কষ্ট অনুভব করছ��লাম। আমি যে বই পড়ছি সে খেয়ালই ছিল না। মনে হচ্ছিল সবকিছু বাস্তবে হচ্ছে। আমি চোখের সামনে সব দেখছি। সব রাগ গিয়ে পড়ছিল রিবার ওপর। ও কিভাবে এমন একটা গর্ধবের মত কাজ করতে পারল? ও কি বুঝতে পারেনি উদ্ধারকারী দলটি কুশানকে সহজভাবে মেনে নিতে পারবে না? দেখার সাথে সাথেই মেরে ফেলবে? ও কি কুশানের গোপন দীর্ঘশ্বাসটুকুও বুঝতে পারেনি??
আজ এতদিন পরে বইটা পড়ে আমার কান্না পায়নি ঠিকই। কিন্তু বুকের ভেতর সেই চাপা কষ্টটা আবারও অনুভব করতে পারলাম। যার পরিমাণ আগের চেয়ে একটুও কম না। ☺
মানুষ আর নীলমানব দুই দলে বিভক্ত। নীলমানব মানুষের মর্যাদা পায় নাই। তাদেরকে একটা আলাদা প্রানী হিসেবে বিবেচনা করে মানুষ। বিজ্ঞান একাডেমী নীলমানবদের নিয়ে গবেষণা করতে চায়। ১৭ জন নীলমানব বন্দী করা সম্ভব হয়েছে। মহাকাশযানে করে তাদেরকে পৌঁছে দেওয়া হবে বিজ্ঞান একাডেমীর কাছে। নীলমানবেরা অসম্ভব সাহসী, অসম্ভব একরোখা। তারা সবাই একসাথে কাজ করে। অথচ তাদেরকে শীতল ঘরে না রেখে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শুধুই বন্দী করে। তারা তাদের অসম্ভব বুদ্ধি দিয়ে মহাকাশযানে একটা যুদ্ধক্ষেত্র বানিয়ে ফেলে।
মানুষ 'রিরা' আর নীলমানব 'কুশান' বেঁচে থাকে। মহাকাশযানের কন্ট্রোল কখনো মানুষের হাতে আবার কখনো নীলমানবের হাতে। আস্তে আস্তে মহাকাশযানের মূল প্রসেসর কিংবা আপনার ধারণাকে সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণিত করে শুরু হয় অবনীলের নতুন অধ্যায়। এক অচেনা অজানা গ্রহে হিংস্র প্রাণীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হয় জীবন টিকিয়ে রাখার জন্য। নতুন এ্যাডভেঞ্চার শুরু হয় সেখানে। ফিরে আসতে হবে মানব সভ্যতার মাঝে । কী হয় শেষ পর্যন্ত? জানতে হলে পড়তে হবে মুহম্মদ জাফর ইকবালের "অবনীল"।
মুহম্মদ জাফর ইকবালের বেশীরভাগ বইই শেষ হয় ভাল লাগা দিয়ে। কিন্তু আপনি এই বইটা শেষ পৃষ্ঠার আগের পৃষ্ঠা পড়ে হাহাকার করে উঠবেন। হয়তোবা চোখের কোণে অশ্রু চলে আসবে। শেষ পৃষ্ঠা পড়ে হয়তোবা সেই কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে। কিংবা হবে না।
৯৬ পৃষ্ঠার এই বইটি আপনি একবার পড়তে শুরু করলে আর ছাড়তে পারবেন না। পরবর্তীতে কি ঘটছে এটা জানার জন্যই আপনি একটানা বইটি পড়তে বাধ্য হবেন।
I swear to god, calling this book just a science fiction is actually misleading, this book is literally one of the greatest love story ever written. I am devastated. I am emotionally destroyed. this book is peak romance. rira and kushan invented love.
and I need Muhammed Zafar Iqbal to pay for my therapy for causing me so much misery by writing this incredible book!
২০০৫ সালে সপ্তম শ্রেণীতে উঠে সাপ্তাহিক বই পড়া ক্লাসে, পড়ার লিস্টে সেদিন পেয়েছিলাম বইটা। উল্লেখ্য, ‘ট্রাইটন একটি গ্রহের নাম’ পেয়েছিলাম প্রথম সপ্তাহে যেটা তখন কিছুই বুঝিনি। তাই বলবো ‘ঠাকুরমার ঝুলি’ কিংবা ‘ঈশপের গল্প সমগ্রের’ পর প্রথম পুর্নাঙ্গ উপন্যাস/ গল্পের বই ছিল আমার ক্ষেত্রে এই ‘অবনীল’। পুরোপুরি কিশোরী দিনের অনুভূতি নিয়ে লিখছি রিভিউ।
স্পয়লার বাদ দিয়ে মূলকথাঃ কিছু মানুষ জোর করে নিজেদের মাঝে বিবর্তন এনেছে নিজেদের আরো শক্তিশালী অর প্রখর বুদ্ধিমান করে তোলার জন্য; যারা ‘নীল মানব’ নামেই পরিচিত সাধারণ মানব জাতির কাছে। মানুষের নিজেদের মধ্যেই কত জাতি-উপজাতি নিয়ে দ্বন্দ্ব আর ‘নীল মানব’ তো মোটামুটি রাক্ষস-খোক্কসের পর্যায়ের উপাধি পেলো সাধারণ মানুষের কাছে। তাদেরই একদল বন্দীকে নিয়ে মহাকাশ-যাত্রায় এক মিশনে যাচ্ছিল রিরা নামের এক মেয়ে আর তার গবেষক দল, যারা কিনা সাধারণ মানুষ।
ঘটনাক্রমে, নানা দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির শিকার হয়ে রিরা এক নীলমানবকে কাছ থেকে দেখার এবং জানার সুযোগ পেলো। আর কি সুন্দর কাকতালীয় ব্যাপার! এই নীলমানব ছিল একজন পুরুষ; যাকে নাকি সুদর্শন বলা যেত যদি গায়ের রঙ কিছুটা নিলাভ না হতো। নাহ! এই সুদর্শন পুরুষ যার নাম পরে জানা গেলো কুশান, সেও অবশ্য এক জায়গায় বলেছিল রিরাকে সুন্দরী বলে চালিয়ে দেয়া যেত যদি তার গায়ের রঙ পঁচা আঙ্গুরের মতো না হতো। তা বেশ যাচ্ছিল প্লট আর কেমিস্ট্রি।
যাইহোক, ভালোই রেসিসমের মাঝখানে দুই ভিন্ন রকমের মানুষ যখন একইসাথে দুর্ভাগ্যের মধ্য দিয়ে যায় তখন হয়তো একটা পরিচয়ই কাজ করে তাদের মাঝে - ‘মানুষ’ পরিচয়, আর কিছু না। এবং বেশ চেনাজানা হয়ে যাবার পর যখন অপরজনকে নিজেদের কাছে আর রাক্ষস কিংবা ডাইনি মনে হলো না, তখন তারা নতুন করে ভাবতে শিখলো; কারা ঢোকাচ্ছে এসব ভেদাভেদ? এবং কেন?
কিন্তু, কিচ্ছু আসে যায় না, কারা ঢোকাচ্ছে সেসব জেনে। কারণ, জীবনের শেষ প্রান্তে হয়তো তারা। আর শেষ মুহূর্তে যতটুকু পারে তারা জীবনকে উপভোগ করে নিতে চায়। (উপভোগের ঘটনায় অবশ্যই লেখকের প্রিয় তিতির পাখির ঝলসানো কাবাব আর অঙ্গুরের রস ছিল। :p )
আমার মতামতঃ ১। কিশোরী দিনগুলোতে আসলেই কোন সমালোচনা ছিল না এই গল্পের। এই লেখক আর সমরেশ আমার চিন্তাভাবনার জগতের জাল বিস্তারের সহায়ক। ২। এখন পিডিএফে চোখ বুলিয়ে নিয়েছিলাম একটু, সেই সুদর্শন নীলমানবের নাম মনে করতে পারছিলাম না বলে। (কিভাবে আমার প্রথম ক্রাশের নাম ভুলে গেলাম বুঝলাম না যদিও। ) ৩। লেখকের এখনকার লেখাগুলোর তুলনায় ডায়ালগ বেশ ভালো। যদিও আমার প্রায় জায়গায় আগেও মনে হতো সরাসরি ইংরেজি ডাবিং করা হচ্ছে ডায়ালগগুলোকে। মানে, ‘দিস’, ‘দ্যাট’কে বাংলায় সাধারণত উহ্য রাখলেই আমার কাছে ভালো লাগে। কিন্তু লেখকের সব সাই-ফাইএ, সর্বনামের ব্যবহার আমার কাছে অড লাগতো। এবং বাক্যগুলোকে ইংরেজিতে চিন্তা করে বাংলায় অনুবাদ করে লিখেছেন মনে হতো। কিশোর উপন্যাসগুলোতে আবার এমনটা লাগেনি। কিন্তু, এই অড লাগাটাও সয়ে গিয়েছিলো লেখকের অন্য অনেক বই পড়তে পড়তে। ৪। যারা লেখকের অন্য অনেক সাই-ফাই পড়েছেন, তাদের কাছে একই গোছের লাগতে পারে। ৫। ট্র্যাজেডি এলার্ট! যাদের ফিকশন ভালো লাগে তাদের পড়তে ভালো লাগবে।
আমার রেটিংঃ যখন প্রথম পড়ছি তখন ৫/৫ এখন পড়লেঃ ৩.৫/৫ (শুধু মাত্র, এখন আর তেমন ছোট ফিকশন পড়িনা বলে)
অবনীল জাফর ইকবালের একটি চমৎকার সায়েন্স ফিকশন। যার প্রেক্ষাপটে উঠে এসেছে ��ুটো গ্রহের মধ্যে হওয়া যুদ্ধের পরবর্তী এক হৃদয়স্পর্শী গল্পের কথা। পৃথিবী ও ক্লড উপগ্রহের মধ্যে দ্বন্দ্বের শুরু হয়েছিল নীলমানব দের দিনের পর দিন শক্তির ক্রমবর্ধমান বহিঃপ্রকাশের ফলে।
মানুষ বরাবরই নিজের শক্তি মত্তা সবকিছুর উর্ধে রাখতে চায়। তার ই ফলস্বরূপ - এক ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হয় দুই গ্রহের মধ্যে। যুদ্ধ শেষে ১৭ জন নীল মানব নিয়ে পৃথিবীর দিকে রওনা হয় ক্যাপ্টেন বার্ক ও তার দল। কিন্তু হুট করেই গোলমাল লেগে যায় নীল মানব ও মহাকাশচারীদের মধ্যে। এক অভিনব কৌশলে নিজেদের মুক্ত করে একের পর এক হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে নীল মানবেরা। লাল ও নীল রঙের বিভৎস কালিমায় ছেয়ে যায় চারপাশ।
অবশিষ্ট থাকে মহাকাশচারী রীরা ও নীলমানব কুশান। শুরু হয় দুজনের মধ্যকার বেঁচে থাকার লড়াই। সহিংসতা ভুলে এক অনন্য গল্পের রচয়ন করে তারা। অন্ধকার এই প্রেতপুরী সম মহাকাশে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে শেষ অব্দি কি ঘটে ওদের সাথে?
মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা অনন্য এক চমৎকার সায়েন্স ফিকশন অবনীল। যেখানে যুদ্ধ, হিংসা, ভালোবাসা ও আত্মত্যাগ এর অপার মহিমার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যত পৃথিবীকে তুলে ধরেছেন লেখক।
This book had two types of creatures - মানুষ and নীলমানব. They were mortal enemies. রিরা was a human and কুশান was a নীলমানব. A war broke out between রিরা's crews and কুশান's people with রিরা and কুশান as the only survivors. However, they needed to land on an unknown planet where some kind of dangerous animal lives if they don't wanna die. The goal was survival at any cost. Can these enemies work together? Or will they kill each other first?
The plot was okay. I wish the author had described how রিরা ended such a long rivalry between মানুষ and নীলমানব. I liked the characters. An okay read. Could've been better.
একদল নীলমানবকে নিয়ে ক্যাপ্টেন বার্কের মহাকাশযান যাত্রা শুরু করেছেন কিন্তু হঠাৎ করেই শুরু হয় গোলমাল। নীল মানবরা মুক্ত হয়ে যায়,লেগে যায় এক তুমুল যুদ্ধ মহাকাশচারী দের সাথে।কিন্তু ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় কিশোরী এক মহাকাশচারী রিবা ও নীলমানব কুশান।তারা এমন গ্রহে এসে পৌছায় যেখানে বিচিত্র এক প্রাণীর বাস।শুরু হয় তাদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম এবং এক চিলতে ভালোবাসা।কিন্তু রিবার পাঠানো সংকেতে তাদের উদ্ধার করতে এসে উদ্ধারকারীরা খুন করে নীলমানব কুশানকে।নাইনা গ্রহের জাতীয় সমাধিক্ষেত্রে সমাধি হয় মহিয়সী রিরার। জনশ্রুতি আছে তার একক প্রচেষ্টায় চতুর্থ সহস্রাব্দের গোড়ার দিকে মানুষ এবং নীলমানবের বিরোধের সমাপ্তি ঘটে।
Much did not happen in the book. SPOILER: A Spaceship flew with some captives, there was a deadly fight with the captives, two from each side survived, and they get saved from the wreck ending lifetime of clash between the sides. That's kind of it. Nothing much to like or dislike.
মানুষে মানুষে বিভেদ বন্ধ হোক। ঘৃণার চর্চা বন্ধ হোক। শেষ হোক হানাহানি। 'অবনীল' এর মূল মেসেজ এটাই। মুহাম্মদ জাফর ইকবাল মানুষ ও নীলমানবের দ্বন্দ্ব ও শেষে শান্তিস্থাপনকে দেখিয়েছেন মেটাফোর হিসেবে।
পৃথিবীর মানুষ ও ক্লড দ্বীপপুঞ্জের নীলমানবের মাঝে যুদ্ধ চলছে বহুবছর ধরে। নীলমানবের রক্ত কপারপ্রধান- নীল, ফুসফুসের আকার বড়, কম অক্সিজেনেও চলতে সক্ষম। চোখের পরিবর্তন ঘটিয়ে অবলোহিত, অতিবেগুনী রশ্মি দেখার ক্ষমতা অর্জন করেছে তারা। সবই মানুষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সুবিধালাভের জন্য। একইভাবে নীলমানবদের দমন করতে মানুষরাও একজোট। শতাব্দীর পর শতাব্দী পরস্পরের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ পোষণ করে আসছে তারা।
'অবনীল' শুরু হয় মহাকাশযানের শিক্ষানবিশী ক্রু রিরাকে দিয়ে। এমন এক মহাকাশযানে ডিউটিতে আছে সে, যে যানটি এইমুহুর্তে বহন করে নিয়ে সতেরোটি বন্দী নীলমানব। খুব কড়া পাহারায় রাখা হলেও বুদ্ধি খাটিয়ে নীলমানবেরা বেরিয়ে আসে, সাথে নিরাপত্তারক্ষীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া অস্ত্র। মুহুর্তেই রক্তাক্ত হয়ে ওঠে সমগ্র মহাকাশযান। একপর্যায়ে রীরা অবাক হয়ে লক্ষ্য করে সে আর আহত এক নীলমানব কুশান ছাড়া মহাকাশযানটিতে আর কেউই বেঁচে নেই। সময় কিংবা পরিস্থিতির প্রয়োজনেই রীরা ও কুশান পরস্পরের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। এবং একপর্যায়ে বুঝতে পারে যে পরস্পরের প্রতি চাষ করা এই ঘৃণা অমূলক। দুই ভিন্ন জাতির স্পেসিমেন হয়েও বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে একাকী রীরা ও কুশান।
সবকিছু যখন বেশ গুছিয়ে আসছে তখনই গল্পে আবির্ভাব এন্টাগোনিস্টের। রীরা বাঁচার তাগিদে এক পরিত্যক্ত গ্রহে আশ্রয় নিয়েছিলো। আপাতদৃষ্টিতে বন্ধুর ধূলিধূসর গ্রহটিকে নিরীহ মনে হলেও মাটির নীচে সে লালন করে চলছে অজস্র হিংস্র ক্লেদাক্ত সরীসৃপ জাতীয় জীব। তারা গ্রহটিতে ইতোপূর্বে বসতি স্থাপন করা মানুষের কলোনিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। প্রসেসরের ভাষায় যারা 'বুদ্ধিহীন, ভয়ঙ্কর এবং নৃশংস প্রাণী।'
উদ্ধারের বার্তা পাঠানোর আশায় ট্রান্সমিটার সংগ্রহ করতে গিয়ে এই বিভীষিকার মুখোমুখি হয় রীরা ও কুশান। এবং কুশান নিজের ভাগ্যটুকু রীরাকে দিয়ে, নিজেকে ক্ষতবিক্ষত প্রায়মৃত করে রীরাকে বাঁচায়। এই ঘটনায় দুজন পরস্পরের আরো কাছে আসে। তারা স্বপ্ন দেখে সুন্দর এক ভবিষ্যতের। হানাহানি লড়াই দ্বেষমুক্ত এক ভবিষ্যৎ।
যদিও নভেলাটিতে হ্যাপি এন্ডিং হয়নি। হয়তো হলে সেটি আমাদের মনে এতো দাগ কাটতোওনা। উদ্ধারকারী টিমের (মানুষ) আক্রমণে প্রাণ হারায় কুশান। তার মাথাটি কোলে ধরে চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে থাকে রীরা।
নভেলার শেষটি তিন লাইনের। মহীয়সী রীরা। যার একক প্রচেষ্টায় মানুষ ও নীলমানবের বিরোধের সমাপ্তি ঘটেছিলো। নাইনা গ্রহের জাতীয় সমাধিক্ষেত্রে তার সমাধিতে ফুল দেবার জন্য এখনো দূর দূরান্ত থেকে মানুষ ও নীলমানবরা উপস্থিত হয়।
মানুষ আর নীলমানবের মাঝে কল্পিত সেই যুদ্ধ আজ বিগত। কিন্তু সারা পৃথিবীব্যাপি ধর্ম, রাজনীতি, জাতীয়তা, বর্ণের ভিত্তিতে যে বিভেদ, যুদ্ধ, দ্বেষ - তা কি আদৌ কখনো গত হবে?
"নাইনা গ্রহের জাতীয় সমাধিক্ষেত্রে- যে সমাধিটিতে ফুল দেবার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে এখনো মানুষ এবং নীলমানবেরা নিয়মিতভাবে উপস্থিত হয় সেই সমাধিটি মহীয়সী রিরার।"