Masud Shorif's Blog

April 7, 2021

যে ১০টি কাজ করলে আপনার ইমান থাকবে না | শাইখ মুহাম্মাদ বিন আবদুল-ওয়াহ্‌হাব

বিসমিল্লাহির রাহমানির-রাহিম—দয়ার সাগর করুণার আধার আল্লাহর নামে।

পাঠক, ১০ টি কারণে আপনার ইসলাম বাতিল হবে।

১. প্রথমটা হলো আপনি যদি আল্লাহর সাথে আনুগত্যে কাউকে শরিক করেন। সুমহান আল্লাহ বলেছেন, ﴾আল্লাহ তাঁর সাথে কাউকে শরিক করলে কক্ষনো ক্ষমা করেন না। তবে এরচে কম কিছু হলে তিনি যাকে ইচ্ছে ক্ষমা করেন।﴿ [৪:১১৬] তিনি অন্য জায়গায় বলেছেন, ﴾যে আল্লাহর সাথে কাউকে সঙ্গী জুড়বে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করবেন। তার বাস হবে নরকে। দুরাচারীদের কোনো মদদগার নেই।﴿ [৫:৭২] এই ধরনের যে-কাজগুলো করলে আপনার ইমান থাকবে না তার মধ্যে আছে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও উদ্দেশ্যে পশুপাখি জবাই। যেমন যদি কোনো জিন বা কবরের উদ্দেশ্যে করেন।

Read more »
 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on April 07, 2021 08:40

October 12, 2018

সালাতে কুমন্ত্রণা: যেভাবে তাড়াবেন

প্রশ্ন: সালাত পড়ার সময় বা ভালো কাজ করার সময় প্রায়ই আমার মনে আজেবাজে চিন্তা আসে। সালাতে মনোযোগ দেওয়ার জন্য যখন শব্দের অর্থের দিকে মন দিই, মনের মধ্যে খারাপ খারাপ চিন্তা আসে। সবকিছু নিয়ে আজেবাজে সব কুমন্ত্রণা আসে; এমনকি আল্লাহকে নিয়েও। এটা নিয়ে আমি খুবই হতাশ। নিজের উপর নিজেরই রাগ হয়। জানি, আল্লাহ ছাড়া আর কেউ অপরাধ মাফ করেন না। কিন্তু আমার এসব চিন্তাভাবনার কারণে মনে হয়, আল্লাহর ব্যাপারে আজেবাজে চিন্তার চেয়ে খারাপ কিছু বুঝি আর নেই। সালাত শেষে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই। কিন্তু এসব চিন্তা থামাতে পারি না বলে খুব খারাপ লাগে। এগুলোর কারণে আমার সালাতের আনন্দ নষ্ট হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে আমি বরবাদ হয়ে যাচ্ছি। আমাকে একটু পরামর্শ দিন, শাইখ।

Read more »
 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on October 12, 2018 02:49

March 23, 2018

বই পড়ে কীভাবে সিক্স প্যাক বানাবেন

বইয়ের পর বই পড়ছেন, অথচ কী পড়ছেন তা পরেরদিনই আরেকজনকে বলতে পারছেন না। ‘ভাই, অমুক বইটা খুব ভালো’, এভাবে বলা শুরু করলেন, ‘অনেক কিছু জানতে পারবেন, খুব ভালো লাগবে। পড়ে দেখেন।’ কিন্তু বইটা কেন ভালো, ভেতরে কী বলা আছে তা আর স্পষ্ট করে মনে করতে পারছেন না। দুতিন সপ্তাহ পর শুধু মনে আছে যে ‘অমুক’ নামে একটা বই পড়েছিলেন; কিন্তু ভেতরের বিষয়বস্তু এক বিন্দুবিসর্গ মনে নেই—নিজের জীবনে প্রয়োগ করা তো পরের কথা।যা হোক, নিজেকে এলিয়েন মনে করে কষ্ট পাওয়ার কোনো কারণ নেই। জ্বরের মতো এই অসুখ আমাদের বইপড়ুয়াদের অতি সাধারণ অসুখ।ঘরে ব্যায়ামের যাবতীয় রসদ কিনে ফেলে রেখে দিলে ৬ মাস পর কেন, ৬ বছর পরও আয়নার সামনে দাঁড়ালেও যেই কে সেই—কোনো পরিবর্তন খুঁজে পাবেন না। হাতিয়ার ব্যবহার করতে না জানলে বা ব্যবহার না করলে মিসাইল নিয়ে বসে থাকলেও বোমা হামলার শিকার হবেন। যদি আসলেই আয়নায় দাঁড়িয়ে সিক্স প্যাক দেখতে চান, নিজেকে নিয়ে গর্ব করতে চান, জ্ঞানকে আপনার সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কাজে লাগাতে চান তা হলে আগে বাড়ুন।Read more »
1 like ·   •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on March 23, 2018 07:06

February 24, 2018

তাফসীর নোটস » ৪৯:৪–৫

কুরআনের একটা ভালো লাগার জিনিস কি—এখানে আল্লাহ শুধু সমস্যাগুলো তুলে ধরেন না; সমাধানও বলে দেন। আজকাল যেমন ‘হাউ টু ডু অমুক’ বা ‘তমুক করবেন কীভাবে’—এ ধরনের যেসব বই পাওয়া যায় ঠিক তেমন। মার্টিমার অ্যাডলার ও চার্লস ভ্যান ডরেন তাদের ‘হাউ টু রিড আ বুক’-এ দু ধরনের বইয়ের কথা বলেছিলেন: তাত্ত্বিক, ব্যবহারিক। আমার মতে কুরআন একদিকে যেমন তাত্ত্বিক, তেমনি ব্যবহারিক। এবং ব্যবহারিক বইগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সেরা।৪ নং আয়াতটিতে আল্লাহ বলছেন,  إِنَّ ٱلَّذِينَ يُنَادُونَكَ مِن وَرَآءِ ٱلْحُجُرَ‌ٰتِ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ। আয়াতটিকে ভাবানুবাদ করলে দাঁড়ায়: ﴾প্রাচীরের আড়াল থেকে যারা তারস্বরে চিৎকার করে ডাকে, তাদের বেশিরভাগই অবুঝ।﴿এক বেদুইন এসে নবিজিকে মাসজিদে না পেয়ে তারস্বরে চিৎকার করে ডাকতে লাগল, “মুহাম্মাদ, মুহাম্মাদ। আল্লাহর রাসূল।”নবিজি ﷺ সে লোকের কথার কোনো জবাব দেননি তখন। শিষ্টাচার বহির্ভূত এমন আচরণের প্রসঙ্গে আল্লাহ উপরের আয়াতটি অবতীর্ণ করেন।সুমহান আল্লাহ শুধু সমস্যাটার দিকে ইঙ্গিত করেই থেমে যাননি। তিনি এর সুন্দর একটি সমাধান দিয়েছেন পরের আয়াতে, وَلَوْ أَنَّهُمْ صَبَرُوا۟ حَتَّىٰ تَخْرُجَ إِلَيْهِمْ لَكَانَ خَيْرًا لَّهُمْ ۚ وَٱللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ । মানে ﴾তুমি বের হয়ে আসা পর্যন্ত তারা যদি সবুর করত, তা হলে সেটাই ভালো হতো তাদের জন্য। আল্লাহ বারবার ক্ষমা করেন। তিনি দয়াময়।﴿সহজ ও সুন্দর সমাধান।আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে আয়াতের শেষে আল্লাহ তাঁর ক্ষমা ও দয়ার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন আমাদের। কেন বলুন তো?এই যে কিছুক্ষণ আগে তারা নবিজিকে এভাবে জোরে জোরে ডেকে এত বড় একটা বেয়াদবি করে ফেলল, এখন কী হবে তাদের? দয়াময় প্রভু তাদেরকে করুণার পরশ বুলিয়ে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অন্যায় যত বড় হোক, আন্তরিকভাবে অনুশোচনা করলে তিনি মাফ করে দেন।তাফসীর নোটস— একে অপরকে আমরা যেভাবে ডাকাডাকি করি গুরুজন, সম্মানিতজনদের সেভাবে ডাকা যাবে না— ভুল হয়ে গেলে মাফ চেয়ে নেবতাফসীর সূত্রইসমাঈল ইবনে কাছীর, তাফসীর ইবনে কাছীর। অনুবাদ: আখতার ফারূক। খণ্ড ১০। ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ২০১৪।

1 like ·   •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on February 24, 2018 05:40

February 17, 2018

তাফসীর নোটস » ৪৯:১–৩

কুরআনের যে কয়টি সূরা আমার খুব খুব ভালো লাগে তার মধ্যে সূরা হুজুরাত অন্যতম। এ সূরার মোট আয়াত তেমন বেশি না; মাত্র ১৮ টা। কিন্তু প্রতিটা আয়াতই এক একটা অমূল্য উপদেশের খনি। এমনিতেই গোটা কুরআন আল্লাহর কথা। আর এ সূরার আয়াত এবং তার অর্থগুলো পড়লে আরও বেশি করে আল্লাহর কথার উপস্থিতি টের হয়। সত্যি সত্যি মনে হয় তিনি সবগুলো কথা যেন আমাকে সরাসরি উদ্দেশ্য করে বলছেন।শুরুতে প্রথম ৩টি আয়াত পড়ে নিই সুন্দর করে।أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِيَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لَا تُقَدِّمُوا۟ بَيْنَ يَدَىِ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ۖ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ ﴿١﴾ يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لَا تَرْفَعُوٓا۟ أَصْوَ‌ٰتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ ٱلنَّبِىِّ وَلَا تَجْهَرُوا۟ لَهُۥ بِٱلْقَوْلِ كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ أَن تَحْبَطَ أَعْمَـٰلُكُمْ وَأَنتُمْ لَا تَشْعُرُونَ ﴿٢﴾ إِنَّ ٱلَّذِينَ يَغُضُّونَ أَصْوَ‌ٰتَهُمْ عِندَ رَسُولِ ٱللَّهِ أُو۟لَـٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ ٱمْتَحَنَ ٱللَّهُ قُلُوبَهُمْ لِلتَّقْوَىٰ ۚ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ عَظِيمٌ ﴿٣﴾এর ভাবানুবাদ হচ্ছে:﴾এই যে বিশ্বাসীরা, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আগে বেড়ে যেয়ো না। আল্লাহকে ভয় করো। তিনি কিন্তু সব শোনেন। সব কিছু জানেন। নবির গলার উপরে তোমাদের গলা উঁচু করবে না। একে অপরের সঙ্গে যেভাবে গলা চড়িয়ে কথা বলো তাঁর সঙ্গে সেভাবে কথা বলবে না। তাতে তোমাদের অগোচরে তোমাদের ভালো ভালো কাজগুলো বরবাদ হয়ে যাবে। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সামনে গলা নামিয়ে রাখে, আল্লাহ তাদের মনগুলোকে তাক্বওয়া দিয়ে পরিশোধিত করে দেন। এদের জন্যই তো আছে ক্ষমা আর অসামান্য পুরস্কার।﴿যারা আরবি বোঝেন তারা তো বোঝেনই, আর যারা বোঝেন না এই ভাবানুবাদ পড়ে তাদের কি মনে হচ্ছে না যে আল্লাহ সরাসরি কথা বলছেন আমাদের সঙ্গে?তাফসীর নোটসে আসি এবার। নিচে আমি যে ব্যাখ্যাগুলো বলব তা শুধু তাফসীর ইবনু কাসীর থেকে আমার উপলব্ধি ও সারসংক্ষেপ। এখানে যা কিছু ভালো তা আল্লাহর তরফ থেকে। যা কিছু খারাপ তা আমার ও শয়তানের তরফ থেকে।ইবনু কাসীর কে তা হয়তো অনেককেই নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই; বিশেষত যারা ইসলাম অনুরাগী। তবে যারা তাকে চেনেন না তারা একটু উইকিপিডিয়াতে তাফসীর ইবনু কাসীর লিখে তালাশ করলেই অনেক তথ্য পেয়ে যাবেন। এক কথায় বলতে হলে বলব কালোত্তীর্ণ কুরআন ব্যাখ্যাবইগুলোর মধ্যে ইমাম ইবনু কাসীর (রাহ়িমাহুল্লাহ)-এর এই বইটি সবদিক দিয়ে সেরা। এর সবচেয়ে মজার দিক হচ্ছে ইবনু কাসীর কুরআনকে ব্যাখ্যা করেছেন প্রথমে কুরআন, তারপর হাদীস, তারপর সাহাবিদের উক্তি, তারপর সাহাবিদের শিক্ষার্থীদের উক্তি দিয়ে। এজন্য এখানে কুরআনকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে সবচে বিশুদ্ধ ও আদি অর্থে। ভুলভ্রান্তির অবকাশ সবচে কম এখানে।অনেক কথা হয়ে গেল। আসল কথায় আসি।পুরো সূরাটিতেই আল্লাহ আমাদেরকে বিভিন্ন আদব শিখিয়েছেন। একজন বাবা কিংবা মা যেভাবে তার সন্তানকে হাতে ধরে ধরে সবকিছু শেখান কুরআনে মহান আল্লাহ তাঁর সেরা সৃষ্টিকে এভাবেই চলার পথের সবকিছু শিখিয়েছেন।আয়াতের প্রথম অংশে আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহ আগ বাড়িয়ে যেতে না করেছেন। এর মানে কী? মু‘আয বিন জাবালকে আল্লাহর রাসূল ﷺ ইয়েমেনে প্রশাসক করে পাঠিয়েছিলেন। যাওয়ার আগে তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন সেখানে গিয়ে সে কোন আইন অনুসারে শাসন করবে। সাহাবি মু‘আয অত্যন্ত চমৎকার এক জবাব দিয়েছিলেন। সে জবাব শুনে আল্লাহর রাসূল তার বুক চাপড়ে দিয়ে বলেছিলেন, “সেই সত্ত্বার জন্য সব প্রশংসা যিনি তাঁর রাসূলের দূতকে এমন কথা বলার সামর্থ্য দিয়েছেন। তার সঙ্গে তাঁর রাসূল একমত।”মু‘আয বলেছিলেন প্রথমে তিনি কুরআনের আইনে শাসন করবেন। কুরআনে না পেলে রাসূলুল্লাহর সুন্নাহ দিয়ে। সুন্নাতে না পেলে নিজের মত দিয়ে বা ইজতিহাদ করে।খেয়াল করে দেখুন শুরুতেই উনি নিজের মত দিয়ে শাসন করবেন বলেননি। আগে কুরআন, তারপর সুন্নাহ। এরপর নিজের মত বা ইজতিহাদ। বর্তমান বিশ্বের যেসকল মুসলিম নেতৃবৃন্দ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে বিশ্বাস করেন তারা কি এই আয়াতটা খেয়াল করবেন একটু?নবিজি তাঁর চাচাত ভাই ইবনু ‘আব্বাসকে কুরআনের বুঝ দেওয়ার জন্য বিশেষ দু‘আ করেছিলেন। আয়াতের ব্যাখ্যায় তিনি বলছেন এখানে কুরআন-সুন্নার পরিপন্থী যেকোনো কথা বলতে মানা করা হয়েছে। আল্লাহর রাসূলের আগে কোনো কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে।আর তাবি‘গণদের কথার সারমর্ম হচ্ছে:    - নবিজির মুখে আল্লাহর সিদ্ধান্ত শোনার আগে কেউ যেন কোনো রায় না দেয়    - শারী‘আর বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ডিঙিয়ে কেউ যেন কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়।    - আচার-আচরণ এবং কথাবার্তায় তাঁদের আগ বেড়ে কেউ  না যায় যেন    - ইমামের আগে দু‘আ না করে।আয়াতের শেষে আল্লাহ আমাদেরকে বলছেন আমরা যেন সশ্রদ্ধ ভয় করি তাকে। তিনি হুঁশিয়ার করে দিচ্ছেন তিনি কিন্তু আমাদের সব কথা শোনেন। মনের গহীন নিয়তও জানেন।আসলে আল্লাহকে যিনি সত্যি সত্যি ভয় করেন, যার মন আল্লাহর ভাবনায় সদামশগুল কেবল তার পক্ষেই সম্ভব এ নির্দেশ মানা। আমরা যখন হৃদয় দিয়ে বুঝব তিনি আমাদের সব কথা শোনেন, মনের সব খবর রাখেন তখন কোনোভাবেই তাঁর হুকুমের পরিপন্থী কিছু করা সম্ভব না।পরের আয়াতে আল্লাহ বলছেন পরস্পরের সঙ্গে কখনো কখনো আমরা যেভাবে গলা চড়িয়ে কথা বলি তাঁর রাসূলের সাথে যেন সেভাবে কথা না বলি।ইবনু কাসীর বলেছেন আয়াতটা আবু বাক্‌র ও ‘উমারের মধ্যে একটি বিষয় নিয়ে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের জের ধরে অবতীর্ণ হয়েছে। আল্লাহ তাদের দুজনের উপর সন্তুষ্ট থাকুন। একবার কোনো একটি বিষয়ে তাদের দুজনের মাঝে বাদানুবাদ হয়। তখন এ আয়াতের মাধ্যমে তাদের সাবধান করে দেওয়া হয়।বলাবাহুল্য এ সাবধানবাণী আমাদের সবার জন্য প্রযোজ্য। এজন্যই সাবিত বিন কাইস আয়াতটি শুনে ঘরের কোণে বসে কাঁদছিলেন নিজের সর্বনাশের কথা চিন্তা করে।তার গলার স্বর কিছুটা উঁচু ছিল। এ আয়াত শোনার পর তার আশঙ্কা হলো যেহেতু তিনি কথা বলার সময় তার গলার স্বর নবিজির গলার স্বরের চেয়ে উঁচু হয়, কাজেই তিনি বোধ হয় জাহান্নামে এক পা দিয়েই ফেলেছেন।তার এই অবস্থা জেনে নবিজি ﷺ জানালেন তিনি জাহান্নামি নন। তিনি বরং জান্নাতি। নবিজির বাণীকে সত্য প্রমাণিত করে ইয়ামামার লড়াইয়ে শহিদ হন সাবিত বিন কাইস। আল্লাহর রাসূলের উপর কথা না বলার পুরস্কার যে কত বড় তা কি বুঝতে পারছি আমরা?আরেকটি মজার বিষয় হচ্ছে সাহাবিরা সবসময় মনে করতেন আয়াতগুলো বুঝি তাকে উদ্দেশ্য করেই বলা হচ্ছে। অথচ আমাদের বেলায় বিষয়টি যেন পুরো উল্টো। বিশেষ করে কোনো আয়াতে যদি কোনো কাজের নিন্দা করা হয়, কোনো বিষয়ে হুঁশিয়ার করা হয় আমরা ভাবি কথাটা যেন আমাকে না, গতকাল রাতে ফেইসবুকে যার সঙ্গে এক চোট বাদানুবাদ হলো, তাকে নিয়ে বলা।এই তো একটু পড়েই আল্লাহ আমাদের বলবেন আমরা যেন কোনো খবর যাচাই না করে প্রচার না করি। এটা পড়েই মনে হবে আরে ঐ লোকটা যে সৌদি-সরকার বিরোধী নানা খবর প্রচার করছে সে কি আসলেই যাচাই করে প্রচার করছে? অথচ এটা আমার নিছক অনুমান। আর অল্প কিছু আয়াত পর আমরা দেখব আল্লাহ আমাদেরকে অনুমান করতেও মানা করছেন। বুঝলেন তো আমরা কীভাবে প্রতিটা আয়াতকে অন্যের উপর প্রয়োগ করি? এই যেমন আমাকে নিয়ে হয়তো এই মুহূর্তে কারও কারও মনে সন্দেহ জাগতে পারে লোকটা সৌদি-সরকার সমর্থক কি না। না হলে সৌদি-সরকার বিরোধী খবরের উদাহরণ দিতে গেল কেন!যাক সে কথা। আগে বাড়ি আমরা।আমাদের নবিজি যে কত সম্মানিত, শুধু তাঁর সামনে কেন, তাঁর মাসজিদ এমনকি তার কবরের সামনেও যে জোরে কথা বলা আপত্তিকর সে দিকটাও তুলে এনেছেন ইবনু কাসীর।তাইফের দুজন লোক একবার মাসজিদুন-নাবাউইতে জোরে জোরে কথা বলছিলেন। তখন ‘উমার ইবনুল-খাত্তাব মুসলিম বিশ্বের খলীফা। তারা কোথাকার লোক সেটা জানার পর তিনি জানালেন, “তাইফের না হয়ে তোমরা যদি মাদীনার হতে তাহলে পিটিয়ে ছাল তুলে ফেলতাম।”আমাদের নবিজি জীবিত ও মৃত—সব অবস্থায় সম্মানিত। ‘আলিমগণ তাঁর কবরের আশেপাশেও তাই জোরে জোরে কথা বলাকে ঘৃণিত কাজ বলেছেন।কথাবার্তায় আদব বজায় রাখা, সাবধান থাকা খুব জরুরি এজন্য। আল্লাহর রাসূল জানিয়েছেন অনেক সময় আমরা আল্লাহর সন্তোষজনক একটা কথা হয়তো অত গুরুত্ব না দিয়েই বলে ফেলি। অথচ সেটা আমাদের জান্নাতের কারণ হয়ে যায়। আবার হালকা মনে করে অসন্তোষজনক অনেক কথা বলে ফেলি। যেটা আমাদের জাহান্নামের কারণ হয়।তো বুঝতেই পারছেন কুরআন-সুন্নাহ বা ইসলাম নিয়ে কিছু একটা বলে ফেলার আগে কত সতর্ক থাকা উচিত আমাদের।এই আয়াত ত্রয়ের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর অংশটা বুঝি এখানে: ﴾যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সামনে গলা নামিয়ে রাখে, আল্লাহ তাদের মনগুলোকে তাক্বওয়া দিয়ে পরিশোধিত করে দেন।﴿তাক্বওয়া কী সেটা নিয়ে আরেক দিন কথা বলা যাবে। সূরা বাক্বারার দ্বিতীয় আয়াত নিয়ে যখন নোটস লিখব সেদিন বিস্তারিত বলব, ইনশা আল্লাহ। এখানে শুধু সংক্ষেপে জানিয়ে রাখি তাক্বওয়া মানে সবসময় আল্লাহর স্মরণ রাখা। আল্লাহকে ভয় করে বাছবিচার করে চলা।ইবনু কাসীর বলছেন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কথার উপর কথা বলে না তাদের  মনটাকে তাক্বওয়ার সোনায় মুড়ে দিতে খাঁটি করে নিয়েছেন আল্লাহ। এদের জন্যই আছে ক্ষমা। অসামান্য পুরস্কার।ইমাম আহমাদের কিতাবুয-যুহ্‌দ থেকে চমৎকার একটি বর্ণনা উল্লেখ করে শেষ করব আজকের নোটস। ইবনু কাসীরই উল্লেখ করেছেন এটি।একবার খলীফা ‘উমারের কাছে চিঠিতে একজন লোক জানতে চাইলেন, “যার মনে পাপের কোনো স্পৃহা জাগে না সে বেশি ভালো, নাকি যার মনে পাপ করতে উসখুস করে, কিন্তু তারপরও পাপ কাজটা করে না সে বেশি ভালো?”খলীফা জবাবে লিখলেন: “যার মনে পাপের স্পৃহা জাগে কিন্তু করে না ﴾তাদের মনগুলোকে আল্লাহ তাক্বওয়া দিয়ে পরিশোধিত করেছেন। তাদের জন্যই আছে ক্ষমা আর অসামান্য পুরস্কার।﴿”শেষ করার আগে দুটা কুইজ:যুবক বয়সে দৃষ্টি হেফাজত করলে পুরস্কার বেশি না বুড়ো বয়সে?নারীরা কোন বয়সে পর্দাবতী হলে বেশি পূণ্যবতী হবেন বলে মনে হয়?
তাফসীর নোটস    - কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কিছু বলা বা করা যাবে না    - আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কথার উপর কোনো কথা নেই    - ইসলাম নিয়ে কথা বলার আগে অনেক হুঁশিয়ার থাকতে হবে
তাফসীর সূত্রইসমাঈল ইবনে কাছীর, তাফসীর ইবনে কাছীর। অনুবাদ: আখতার ফারূক। খণ্ড ১০। ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ২০১৪।
 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on February 17, 2018 08:19

September 7, 2016

ফলপ্রসূ (প্রোডাকটিভ) দিন কাটানোর কিছু সহজ উপায়

অফিসে বসে কোডিঙের কাজ করছিল রাজন। বেশ ভালোভাবেই এগোচ্ছিল। হঠাৎ করে টেবিলের উপর রাখা স্মার্টফোনের পর্দাটা জ্বলে উঠল। ক্ষণিকের জন্য নজর সরে গেল ওদিকে। স্মার্টফোন যদিও সাইলেন্ট করা ছিল, কিন্তু তারপরও আলো জ্বলে ওঠায় বাধ্য হয়ে নজর সরে গেল।আপাত দৃষ্টিতে এমন মনোযোগব্যাঘাতকারী জিনিসগুলো মামুলি মনে হলেও, যারা জ্ঞানসংক্রান্ত (কগনিটিভ) কাজ করেন, তাদের জন্য এগুলো যন্ত্রণাদায়ক। ফোকাসেও সমস্যা করে এগুলো।সামান্য সময়ের জন্যও আমরা যদি কোনো কাজ থেকে ফোকাস সরাই, তাহলেও সেকাজে ব্যাঘাত ঘটে। মনোযোগ কিছুটা সময়ের জন্য হলেও সরে যায়। একবার কাজ শুরু করে যে-গতি এসেছিল, সেটা আবার ফিরে পেতে কিছুটা সময় খরচ করতে হয়।

আরও পড়ুন »
1 like ·   •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on September 07, 2016 08:34

April 25, 2016

বায়োমেট্রিকস পদ্ধতিতে আত্মা (সিম) নিবন্ধন

অবশেষে আজকে দুটো সিম বায়োমেট্রিকস পদ্ধতিতে নিবন্ধন করে এলাম। কেউ কেউ দাবি করছেন এতে ব্যক্তিগত তথ্যের অপব্যবহার হতে পারে। সরকারপক্ষের দাবি এতে জননিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। অবৈধ কাজে সিম ব্যবহার করলে অবৈধ ব্যবহারকারীকে শনাক্ত করা সহজ হবে।

নিবন্ধন করতে যেয়ে বায়োমেট্রিকস পদ্ধতি নিয়ে জানার একটু আগ্রহ জাগল। নেট ঘেঁটে বুঝতে পারলাম, এটা হচ্ছে মানুষের দেহের বিভিন্ন স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য যেমন: ডিএনএ, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, চোখের রেটিনা ও আইরিস, কণ্ঠস্বর, চেহারা ও হাতের মাপ এগুলো মেপে ও বিশ্লেষণ করে ব্যক্তিগত তথ্য জমা করা ও শনাক্ত করার পদ্ধতি।  তবে অন্যান্য পদ্ধতিগুলোর তুলনায় কোনো ব্যক্তি বা অপরাধী শনাক্তকরণে ফিঙ্গার প্রিন্ট বা আঙুলের ছাপ বেশি ব্যবহৃত হয়।আরও পড়ুন »
 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on April 25, 2016 04:32

March 30, 2016

মতভেদ করছেন নাকি ক্যাচাল?


ফেসবুক, ব্লগ, ওয়েবসাইট—অনলাইনে ক্যাচাল করার সবচেয়ে জনপ্রিয় তিন মাধ্যম। কারও কোনো কথা পছন্দ হলো না, অমনি শুরু হয়ে গেল। কারও কোনো যুক্তি নিজের আবেগ-বিশ্বাসে হানা দিল, শুরু হলো পাল্টা হামলা। কারও প্রমাণ নিজের পূর্বধারণার পরিপন্থী, ব্যাস শুরু হলো ক্যাচাল।

অনলাইনে নিজের মত প্রকাশের সহজতার কারণে আজকাল চায়ের দোকান থেকে ক্যাচাল জায়গা করে নিয়েছে কিবোর্ডে। অথচ একটু সতর্ক হলে, মাথাটা ঠান্ডা রাখলে, যৌক্তিক উপায়ে আগালে এই ক্যাচালই উন্নীত হতে পারে পারস্পরিক শ্রদ্ধাপূর্ণ মতপার্থক্যে। মানুষ সাধারণত কীভাবে ক্যাচাল করে সে ব্যাপারে প্রোগ্রামার, লেখক পল গ্রাহাম (পিএইচডি) তাঁর ওয়েবসাইটে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। সেখানে তিনি মতপার্থক্যের সাতটি ধরন উল্লেখ করেছেন। এগুলোর প্রথম তিনটি ধরন নির্ঘাত ক্যাচালের আওতায় পড়বে। পরের দুটোকে “ভিন্নমত” হিসেবে ধরা যায়। আর বাকি দুটোকে আমার মতে শ্রদ্ধাপূর্ণ মতপার্থক্যের মধ্যে ফেলা যায়।
আরও পড়ুন »
 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on March 30, 2016 07:55

March 21, 2016

কীভাবে নিজের অনুবাদকে সাবলীল করবেন

আজকে সকালের দিকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। সেখানে জিজ্ঞেস করেছিলাম অনুবাদ করতে যেয়ে আমরা কেন আড়ষ্ট হয়ে যাই, কেন আমাদের মৌলিক লেখা সাবলীল ও সহজবোধ্য হলেও, অনুবাদে গুগল ট্রান্সলেটরের ভূত ভর করে?


যে-মন্তব্যগুলো পেলাম, সেগুলোর মূল সুর হচ্ছে: মূলকে ধরে রাখার চেষ্টা। মূল লেখার সঙ্গে প্রতারণা না-করা। নিজের কোনো মন্তব্য না-ঢোকানো। আর এগুলোর ফলাফল প্রায় রোবটিক অনুবাদ বা গুগল ট্রান্সলেশন।
এই পোস্টে আমি চেষ্টা করব, অনুবাদকদের কিছু মিথ ভাঙার। এবং কীভাবে সাবলীল অনুবাদ করা যায় সে ব্যাপারে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং অধ্যয়ন ভাগাভাগি করার।

আরও পড়ুন »
 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on March 21, 2016 06:13

March 17, 2016

আমি তো নবি না, আমাকে দিয়ে ওসব হবে না

আমরা যখন অনেক মুসলিমদের ইসলামের বিভিন্ন বিধির কথা বলি, তারা বলে বসেন, "আরেহ, তিনি তো ছিলেন নবি, আমরা তো আর নবি না, আমাদের দিয়ে কী ওসব হবে।”

এ ধরর জবাবের সমস্যা দুটো।
১. হীনমন্যতা। এটা শুধু ইসলামি বিধির ক্ষেত্রে না, অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রেও হতে পারে। যেমন কারও সামনে যদি আইনস্টাইনের উদাহরণ তুলে ধরা হয়, তাহলে হয়তো তিনি বলবেন, "আমি কি আর আইনস্টাইন?"

উঠতি কোনো খেলোয়াড়কে যদি সাকিব আল-হাসানের উদাহরণ দেওয়া হয়, তিনি হয়তো বলবেন, "আমি কি আর সাকিব?"
আরও পড়ুন »
 •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on March 17, 2016 01:39