আবদুল হাই মিনার
Born
Sylhet, Bangladesh
Genre
“তোর মনে আছে বুড়ি, একদিন আমি অমিয়ার জলে ভেসে গিয়েছিলাম।' 'আর আব্বার সাথে একদিন তুই আর আমি গড়ের ভেতর বেড়াতে গিয়েছিলাম।' ‘লাল এক চিলতে পথ বনের ভেতর হারিয়ে গেছে। সারা দিনমান সেখানে কেমন শোঁ শোঁ হাওয়া বইতো।'
‘আম্মা একদিন জুঁই ফুলের মালা গেঁথে গলায় পরেছিলেন। কী মিষ্টি যে দেখাচ্ছিলো তাঁকে!'
একদিন পলাশগড়ের নীল আকাশের অনেক ওপর দিয়ে একঝাক বালিহাঁস উড়ে গিয়েছিল, আর আব্বা বলেছিলেন এরা অতিথি পাখির দল।'
—হ্যাঁ, তখন আব্বা দেখতে এতো সুন্দর ছিলেন। গড়ের সবাই তাকে খুব সম্মানও করতো।'
'ওখানে আমাদের কোন অভাব ছিল না ভাইয়া, আমরা সবদিন পেট ভরে ভাত খেতে পেয়েছি।'
‘মনে আছে তোর, একবার আব্বা সত্তর টাকা দিয়ে খুব বড়ো একটা রুই মাছ কিনেছিলেন?'
তারপর হঠাৎ শাফি ভাইয়া হা হা করে হেসে ওঠে। তার চোখে তখন সাত সাগরের জল। আর একটু পরেই হয়তো ও' ঝর্ ঝর্ করে কেঁদে ফেলবে। খুকুর কাঁধে হাত রেখে বলল, ‘একদিন আবার আমরা ফিরে যাব বুড়ি।'
খুকু আপা ম্লান হেসে জানালার কাছে সরে আসে।
এইভাবে আবার আমরা ফিরে আসি। কেউ জানি না কখন প্রজাপতির পাখায় ভর করে নিঃসীম আকাশে তারাদের গান হয়ে ফুল হয়ে পাখি হয়ে এভাবে আবার আমরা অবুঝ বাল্যে ফিরে আসি। ঝড়ের রাতের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে বাদলের হু হু ধারায় সিক্ত আমরা শাল-মঞ্জরির মাদকতায় কাঁটাবনের গিরগিটির রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তেপান্তরের পাথার পেরিয়ে সাগরপুরীর লক্ষ দত্যির পাহারা ভেঙ্গে নিশুত রাতের দোরে কড়া নেড়ে দিই। দোর খুলে যায় দূরন্ত কৈশোরের। এ ভাবে আবার আমরা ফিরে আসি নিজেদের কাছে। আদতে এক আমরা পথিক হয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম পথে। দিন মাস বরষ শেষে কে যেন বুকের ভেতর বাঁশি বাজিয়ে দেয়, ফিরে এসো, ফিরে এসো। ঠিক তখনই আমরা নিজেদের দিকে তাকাই। আমরা জানিনা কেমন করে ভিন্ন ভিন্ন বাঁশি থেকে একই সুর বাজে। আমাদের ফিরে আসা গান হয়ে যায়, পাখি ফুল আর নদী হয়ে যায়। ধূসর স্মৃতিতে তখন অনতিস্পষ্ট এক ছবি ফুলের কাছে ছুটে যাওয়া পাখি, দূরে জলভরা মেঘ....”
― খুকু, তোমার বসত
‘আম্মা একদিন জুঁই ফুলের মালা গেঁথে গলায় পরেছিলেন। কী মিষ্টি যে দেখাচ্ছিলো তাঁকে!'
একদিন পলাশগড়ের নীল আকাশের অনেক ওপর দিয়ে একঝাক বালিহাঁস উড়ে গিয়েছিল, আর আব্বা বলেছিলেন এরা অতিথি পাখির দল।'
—হ্যাঁ, তখন আব্বা দেখতে এতো সুন্দর ছিলেন। গড়ের সবাই তাকে খুব সম্মানও করতো।'
'ওখানে আমাদের কোন অভাব ছিল না ভাইয়া, আমরা সবদিন পেট ভরে ভাত খেতে পেয়েছি।'
‘মনে আছে তোর, একবার আব্বা সত্তর টাকা দিয়ে খুব বড়ো একটা রুই মাছ কিনেছিলেন?'
তারপর হঠাৎ শাফি ভাইয়া হা হা করে হেসে ওঠে। তার চোখে তখন সাত সাগরের জল। আর একটু পরেই হয়তো ও' ঝর্ ঝর্ করে কেঁদে ফেলবে। খুকুর কাঁধে হাত রেখে বলল, ‘একদিন আবার আমরা ফিরে যাব বুড়ি।'
খুকু আপা ম্লান হেসে জানালার কাছে সরে আসে।
এইভাবে আবার আমরা ফিরে আসি। কেউ জানি না কখন প্রজাপতির পাখায় ভর করে নিঃসীম আকাশে তারাদের গান হয়ে ফুল হয়ে পাখি হয়ে এভাবে আবার আমরা অবুঝ বাল্যে ফিরে আসি। ঝড়ের রাতের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে বাদলের হু হু ধারায় সিক্ত আমরা শাল-মঞ্জরির মাদকতায় কাঁটাবনের গিরগিটির রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তেপান্তরের পাথার পেরিয়ে সাগরপুরীর লক্ষ দত্যির পাহারা ভেঙ্গে নিশুত রাতের দোরে কড়া নেড়ে দিই। দোর খুলে যায় দূরন্ত কৈশোরের। এ ভাবে আবার আমরা ফিরে আসি নিজেদের কাছে। আদতে এক আমরা পথিক হয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম পথে। দিন মাস বরষ শেষে কে যেন বুকের ভেতর বাঁশি বাজিয়ে দেয়, ফিরে এসো, ফিরে এসো। ঠিক তখনই আমরা নিজেদের দিকে তাকাই। আমরা জানিনা কেমন করে ভিন্ন ভিন্ন বাঁশি থেকে একই সুর বাজে। আমাদের ফিরে আসা গান হয়ে যায়, পাখি ফুল আর নদী হয়ে যায়। ধূসর স্মৃতিতে তখন অনতিস্পষ্ট এক ছবি ফুলের কাছে ছুটে যাওয়া পাখি, দূরে জলভরা মেঘ....”
― খুকু, তোমার বসত
Is this you? Let us know. If not, help out and invite আবদুল to Goodreads.