"খোলা সম্পর্ক" উপন্যাস নিয়ে কিছু কথা

ঢাকা শহরের বারান্দার গ্রিল ধরে মনের বিষাদগুলো দূরে নিক্ষেপ করতে গেলে পাশের বাড়ির বারান্দা পর্যন্তই চোখ যায়। তবুও দূরে সরে যাওয়া সম্পর্ক যখন আরও দূরে সরে যায় তখন খুব কাছের বারান্দাটিও অনেক দূরের মনে হতে থাকে রাইমির । হৃদয় কেঁপে ওঠে ঝরের মাতম হাওয়ায়। তবে বৃষ্টি ভেজা শহরের এক চিলতে বারান্দায় লতিয়ে ওঠা কুঞ্জ লতায় ঝুলে থাকা পানি আর বৃষ্টির ছিটা কোথা থেকে যেন বিন্দু বিন্দু স্বস্তি নিয়ে আসে রাইমির মনে । তারপর এক ভরা পূর্ণিমার রাতে জ্যোৎস্নায় ভেজা বাতাস ঢেলে নিয়ে আসছে যাদুকরী সূর। কে গাইছে এ গান? যে গান রাইমিকে আঁধার করা ঘরের দরজা খুলে মুক্ত করে দিতে চায়!

ওদিকে যূথিকা যে কিনা কড়কড়ে নোট দিয়ে চকচকে সুখ কেনে। ঠোঁট জুড়ে তখন প্রশস্থ হাসি ঝলমল করে । আনন্দের দ্যুতি বেরিয়ে আসে। আত্মবিশ্বাসে এক্কা দোক্কা খেলে মন। কি করে দূরে ঢেলে দেবে সেই টাকার স্রোতকে! তাইতো সুখের পায়রা হয়ে উড়াল দেয় পঞ্চাসঊর্ধ্ব একজনের স্ত্রী হয়ে । কিন্তু রাতের আঁধারে রমণী হতে হয় যূথিকাকে, যাকে রমণ করে তৃপ্ত হয় বেপরোয়া অথবা অসুখী পুরুষেরা। যূথিকা কে? কি করে এলো এই আঁধার করা বারবণিতার জগতে?

স্বাধীনচেতা সাংবাদিক এবং ব্যরিস্টার অনন্যা, যার বিয়ের জটিল শর্তগুলো পালন করার মত মানসিক শক্তি নেই। সে স্বাধীন খোলা সম্পর্কেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। নির্ঝঞ্ঝাট কর্তব্যহীন মুক্ত সম্পর্কে থাকতে চায়। কিন্তু মানুষ চাইলেই কি স্বাধীন খোলা সম্পর্কে থাকতে পারে ? একজনের ভালোবাসার বন্ধনে বাঁধা পড়াই কি মানুষের পরম চাওয়া নয়?

রাইমি, যূথিকা এবং অনন্যা এই তিনটি চরিত্র নিয়েই খোলা সম্পর্ক উপন্যাস। এরা কি অসম্পর্কের বাহুর ভুজঙ্গকে আটকে আছে, নাকি মুক্ত খোলা সম্পর্কে আছে সেটা পাঠকই বিচার করুক। চাইলে বিচারকের ভূমিকায় থাকতে পারেন আমার উপন্যাসের পাঠক হয়ে।
1 like ·   •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on September 30, 2022 13:12
No comments have been added yet.