লেখালেখি # কড়চা ০৩

লেখালেখিতে আত্মবিশ্বাসী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মানে আপনি যদি আগে একশোটা গল্প লিখে থাকেন, পঞ্চাশটা উপন্যাস লিখে থাকেন এবং সবগুলো গল্প/ উপন্যাস প্রশংসিত হয়েও থাকে, তবু.. আত্মবিশ্বাসী হওয়া যাবে না।

প্রতিটা নতুন লেখা লেখকের সর্বোচ্চ মনোযোগ দাবি করে। প্রতিটা অক্ষর, প্রতিটা বাক্য চায় তাকে ভেবে লেখা হোক। অমনোযোগে, অবহেলায় বা হেলাফেলায় যে লেখা হয়, তা পাঠক টের পায়। কিভাবে টের পায় কে জানে! কিন্তু টের পায়। টের পায় বলেই সে আর ওই গল্পের সাথে সংযুক্ত হতে পারে না।

আমার এই জ্ঞান সদ্য প্রাপ্ত জ্ঞান নয়। অনেক জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিই বলে নানাভাবে গেছেন। "যা করবা মনোযোগ দিয়া করবা।"

লেখালেখিটাও তাই। একটু খ্যাতি পেলে অনেকে ভেসে যান অহংকারে, কপট বিনয় ধরে ভাবের অবতার হয়ে বসে থাকেন। কিন্তু সেই খ্যাতি অল্পতেই ভেসে যায়, এমন উদাহরণ অনেক আছে।

লেখালেখির তেরোতম বছরে পা দিয়ে টের পেলাম কোনো লেখাই খুব অমনোযোগে লিখিনি। গল্প ভালো হয়েছে বা মন্দ, সে ভিন্ন আলোচনা। কিন্তু চেষ্টায় কোনো কমতি ছিল না।

কিছু লেখা শেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে হয়। লেখাগুলো এমন জড়িয়ে পেঁচিয়ে থাকে, যে সেই লেখা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য কিছু নিয়ে ভাবা যায় না। দুই হাজার চব্বিশে এক "আশ্চর্যময়ী, তোমাকে" লিখতে গিয়ে অন্য কোনো কিছু লিখতে পারিনি। লেখায় যদিও খুব বেশি সময় লাগেনি, কিন্তু গল্পটা ভাবনায় ছিল অনেক বছর ধরে। দীর্ঘ একটা কাজ শেষ করার পর অবসরে যেতে ইচ্ছে করে। মনে হয় কিছুদিন আরাম-আয়েশ করি। মানে গল্প-উপন্যাসের একটা বাক্য না লেখাই আমার কাছে আরাম-আয়েশের পর্যায়ে পড়ে।

কিন্তু সেই আরাম-আয়েশের আয়ু খুব কম।

নতুন কোনো উপন্যাস শুরু হবে কিংবা গল্প, এখনও জানি না। কিন্তু এটা জানি আবার শুরু করতে হবে, শুরু থেকে, একদম নতুন করে।
5 likes ·   •  0 comments  •  flag
Share on Twitter
Published on March 06, 2025 12:51
No comments have been added yet.