Shariful Hasan's Blog
May 21, 2025
লেখালেখি # কড়চা ০৪
লেখক হিসেবে সবারই সম্ভবত এমন একটা স্বপ্ন বা আশা থাকে মনে। যা লিখেছি বা যা লিখবো তা যেন মহাকালের স্রোতে হারিয়ে না যায়।
পৃথিবীর ইতিহাসে কতো গল্প, কতো উপন্যাস লেখা হয়েছে, তার কি কোনো হিসেব পাওয়া সম্ভব? সম্ভব না। হয়তো এমন সব লেখা আমরা হারিয়ে ফেলেছি, যা টিকে থাকার দাবিদার ছিল। হয়তো আমরা সেসব লেখার নামই কোনোদিন শুনিনি।
এই দায় কি তাহলে সেই লেখকের? নিজেকে আবিষ্কৃত হতে না দেবার জন্য দায়ী তো লেখকই, নাকি পাঠক? নাকি সময়?
আমার এই বিশ্বাস ছিল, ভালো লেখা তা যখনই হোক, যেভাবেই হোক ফুরিয়ে যাবে না। কোনো না কোনোভাবে পাঠকের কাছে হাজির হবে।
তবে ইদানীং মনে হচ্ছে, আসলে আমার এই বিশ্বাসে ত্রুটি আছে। কোন লেখা কিভাবে পাঠকপ্রিয় হবে, টিকে যাবে, তা বলা মুশকিল। খুব ভালো লেখা হলেই যে সেটা মানুষের চোখে পড়বে তা নয়। আর একটা লেখা যদি তার প্রকাশকালের একশ বছর পর তার প্রাপ্য সম্মান পায়, তাহলে সে পাওয়া দিয়ে লেখক কী করবেন?
এইসব ভাবতে ভাবতেই পরবর্তী লেখার কাজ শুরু করতে যাচ্ছি। অবশ্য আমার পরবর্তী লেখা বলে কিছু নেই। এতো লেখা জমে আছে, কবে কোনটা শেষ করবো, আদৌ করতে পারবো কিনা আমি নিজেও জানি না।
শরীফুল হাসান
২২ মে, ২০২৫
রাত ৩ টা
খন্দকার গলি, সিদ্দ্বেশ্বরী
ঢাকা
পৃথিবীর ইতিহাসে কতো গল্প, কতো উপন্যাস লেখা হয়েছে, তার কি কোনো হিসেব পাওয়া সম্ভব? সম্ভব না। হয়তো এমন সব লেখা আমরা হারিয়ে ফেলেছি, যা টিকে থাকার দাবিদার ছিল। হয়তো আমরা সেসব লেখার নামই কোনোদিন শুনিনি।
এই দায় কি তাহলে সেই লেখকের? নিজেকে আবিষ্কৃত হতে না দেবার জন্য দায়ী তো লেখকই, নাকি পাঠক? নাকি সময়?
আমার এই বিশ্বাস ছিল, ভালো লেখা তা যখনই হোক, যেভাবেই হোক ফুরিয়ে যাবে না। কোনো না কোনোভাবে পাঠকের কাছে হাজির হবে।
তবে ইদানীং মনে হচ্ছে, আসলে আমার এই বিশ্বাসে ত্রুটি আছে। কোন লেখা কিভাবে পাঠকপ্রিয় হবে, টিকে যাবে, তা বলা মুশকিল। খুব ভালো লেখা হলেই যে সেটা মানুষের চোখে পড়বে তা নয়। আর একটা লেখা যদি তার প্রকাশকালের একশ বছর পর তার প্রাপ্য সম্মান পায়, তাহলে সে পাওয়া দিয়ে লেখক কী করবেন?
এইসব ভাবতে ভাবতেই পরবর্তী লেখার কাজ শুরু করতে যাচ্ছি। অবশ্য আমার পরবর্তী লেখা বলে কিছু নেই। এতো লেখা জমে আছে, কবে কোনটা শেষ করবো, আদৌ করতে পারবো কিনা আমি নিজেও জানি না।
শরীফুল হাসান
২২ মে, ২০২৫
রাত ৩ টা
খন্দকার গলি, সিদ্দ্বেশ্বরী
ঢাকা
Published on May 21, 2025 13:58
March 6, 2025
লেখালেখি # কড়চা ০৩
লেখালেখিতে আত্মবিশ্বাসী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মানে আপনি যদি আগে একশোটা গল্প লিখে থাকেন, পঞ্চাশটা উপন্যাস লিখে থাকেন এবং সবগুলো গল্প/ উপন্যাস প্রশংসিত হয়েও থাকে, তবু.. আত্মবিশ্বাসী হওয়া যাবে না।
প্রতিটা নতুন লেখা লেখকের সর্বোচ্চ মনোযোগ দাবি করে। প্রতিটা অক্ষর, প্রতিটা বাক্য চায় তাকে ভেবে লেখা হোক। অমনোযোগে, অবহেলায় বা হেলাফেলায় যে লেখা হয়, তা পাঠক টের পায়। কিভাবে টের পায় কে জানে! কিন্তু টের পায়। টের পায় বলেই সে আর ওই গল্পের সাথে সংযুক্ত হতে পারে না।
আমার এই জ্ঞান সদ্য প্রাপ্ত জ্ঞান নয়। অনেক জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিই বলে নানাভাবে গেছেন। "যা করবা মনোযোগ দিয়া করবা।"
লেখালেখিটাও তাই। একটু খ্যাতি পেলে অনেকে ভেসে যান অহংকারে, কপট বিনয় ধরে ভাবের অবতার হয়ে বসে থাকেন। কিন্তু সেই খ্যাতি অল্পতেই ভেসে যায়, এমন উদাহরণ অনেক আছে।
লেখালেখির তেরোতম বছরে পা দিয়ে টের পেলাম কোনো লেখাই খুব অমনোযোগে লিখিনি। গল্প ভালো হয়েছে বা মন্দ, সে ভিন্ন আলোচনা। কিন্তু চেষ্টায় কোনো কমতি ছিল না।
কিছু লেখা শেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে হয়। লেখাগুলো এমন জড়িয়ে পেঁচিয়ে থাকে, যে সেই লেখা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য কিছু নিয়ে ভাবা যায় না। দুই হাজার চব্বিশে এক "আশ্চর্যময়ী, তোমাকে" লিখতে গিয়ে অন্য কোনো কিছু লিখতে পারিনি। লেখায় যদিও খুব বেশি সময় লাগেনি, কিন্তু গল্পটা ভাবনায় ছিল অনেক বছর ধরে। দীর্ঘ একটা কাজ শেষ করার পর অবসরে যেতে ইচ্ছে করে। মনে হয় কিছুদিন আরাম-আয়েশ করি। মানে গল্প-উপন্যাসের একটা বাক্য না লেখাই আমার কাছে আরাম-আয়েশের পর্যায়ে পড়ে।
কিন্তু সেই আরাম-আয়েশের আয়ু খুব কম।
নতুন কোনো উপন্যাস শুরু হবে কিংবা গল্প, এখনও জানি না। কিন্তু এটা জানি আবার শুরু করতে হবে, শুরু থেকে, একদম নতুন করে।
প্রতিটা নতুন লেখা লেখকের সর্বোচ্চ মনোযোগ দাবি করে। প্রতিটা অক্ষর, প্রতিটা বাক্য চায় তাকে ভেবে লেখা হোক। অমনোযোগে, অবহেলায় বা হেলাফেলায় যে লেখা হয়, তা পাঠক টের পায়। কিভাবে টের পায় কে জানে! কিন্তু টের পায়। টের পায় বলেই সে আর ওই গল্পের সাথে সংযুক্ত হতে পারে না।
আমার এই জ্ঞান সদ্য প্রাপ্ত জ্ঞান নয়। অনেক জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিই বলে নানাভাবে গেছেন। "যা করবা মনোযোগ দিয়া করবা।"
লেখালেখিটাও তাই। একটু খ্যাতি পেলে অনেকে ভেসে যান অহংকারে, কপট বিনয় ধরে ভাবের অবতার হয়ে বসে থাকেন। কিন্তু সেই খ্যাতি অল্পতেই ভেসে যায়, এমন উদাহরণ অনেক আছে।
লেখালেখির তেরোতম বছরে পা দিয়ে টের পেলাম কোনো লেখাই খুব অমনোযোগে লিখিনি। গল্প ভালো হয়েছে বা মন্দ, সে ভিন্ন আলোচনা। কিন্তু চেষ্টায় কোনো কমতি ছিল না।
কিছু লেখা শেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে হয়। লেখাগুলো এমন জড়িয়ে পেঁচিয়ে থাকে, যে সেই লেখা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য কিছু নিয়ে ভাবা যায় না। দুই হাজার চব্বিশে এক "আশ্চর্যময়ী, তোমাকে" লিখতে গিয়ে অন্য কোনো কিছু লিখতে পারিনি। লেখায় যদিও খুব বেশি সময় লাগেনি, কিন্তু গল্পটা ভাবনায় ছিল অনেক বছর ধরে। দীর্ঘ একটা কাজ শেষ করার পর অবসরে যেতে ইচ্ছে করে। মনে হয় কিছুদিন আরাম-আয়েশ করি। মানে গল্প-উপন্যাসের একটা বাক্য না লেখাই আমার কাছে আরাম-আয়েশের পর্যায়ে পড়ে।
কিন্তু সেই আরাম-আয়েশের আয়ু খুব কম।
নতুন কোনো উপন্যাস শুরু হবে কিংবা গল্প, এখনও জানি না। কিন্তু এটা জানি আবার শুরু করতে হবে, শুরু থেকে, একদম নতুন করে।
Published on March 06, 2025 12:51
March 2, 2025
লেখালেখি # কড়চা ০২
নানা রকম গল্পের ভিড়ে একজন গল্পকারকে লিখে যেতে হয় কেবল। কোন গল্পটা পাঠকের পছন্দ হবে তা নিয়ে বিস্তর চিন্তা করে তেমন লাভ হয় না আদতে। পাঠকের নানা ধরণ আছে, তাদের নানা মত আছে। সে তার নিজের পাল্লায় আপনার গল্পকে মাপবে। পরিমাণ আর দ্রব্যের উৎকৃষ্টতা সম্পর্কে যতই আপনি তাকে বোঝান, সে বুঝবে নিজের মতো করে।
সেদিন এক পাঠক আমার দুটো বই নিয়ে জিজ্ঞেস করল, কোনটা তার ভালো লাগবে? একটা হচ্ছে সাম্ভালা ট্রিলোজি আরেকটা আশ্চর্যময়ী, তোমাকে। দুটো দুই মেরুর গল্প। অচেনা একজন পাঠকের কোন লেখাটা ভালো লাগবে সেটা জানার মতো জ্ঞান আমার হয়নি। কাজেই সেই চেষ্টাতেও যাইনি। শুধু বলেছি আপনার যেটা ভালো লাগে সেটাই পড়তে পারেন। হয়তো তার দুটোই ভালো লাগবে, হয়তো একটা কিংবা কোনোটাই না। পছন্দটা মানে বেছে নেয়ার কাজটা তাকেই করতে হবে। লেখকের চাপিয়ে দেয়া পছন্দটা, ভালোটা যে তার ভালো লাগবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
আমরা সচরাচর যাদের লেখা বইগুলো সামনে দেখি, বারবার স্ক্রল করতে গেলে সামনে চলে আসে, সেগুলোকেই ভালো লেখা মনে করি। হাজার হাজার রেটিং পাওয়া বইটা যে আপনার সত্যিই ভালো লাগবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
একটা সহজ উপায় হতে পারে দু'এক পাতা পড়ে বইটা কেনা। এছাড়া আর কোনো উপায় তো দেখি না।
সেদিন এক পাঠক আমার দুটো বই নিয়ে জিজ্ঞেস করল, কোনটা তার ভালো লাগবে? একটা হচ্ছে সাম্ভালা ট্রিলোজি আরেকটা আশ্চর্যময়ী, তোমাকে। দুটো দুই মেরুর গল্প। অচেনা একজন পাঠকের কোন লেখাটা ভালো লাগবে সেটা জানার মতো জ্ঞান আমার হয়নি। কাজেই সেই চেষ্টাতেও যাইনি। শুধু বলেছি আপনার যেটা ভালো লাগে সেটাই পড়তে পারেন। হয়তো তার দুটোই ভালো লাগবে, হয়তো একটা কিংবা কোনোটাই না। পছন্দটা মানে বেছে নেয়ার কাজটা তাকেই করতে হবে। লেখকের চাপিয়ে দেয়া পছন্দটা, ভালোটা যে তার ভালো লাগবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
আমরা সচরাচর যাদের লেখা বইগুলো সামনে দেখি, বারবার স্ক্রল করতে গেলে সামনে চলে আসে, সেগুলোকেই ভালো লেখা মনে করি। হাজার হাজার রেটিং পাওয়া বইটা যে আপনার সত্যিই ভালো লাগবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
একটা সহজ উপায় হতে পারে দু'এক পাতা পড়ে বইটা কেনা। এছাড়া আর কোনো উপায় তো দেখি না।
Published on March 02, 2025 11:09
February 27, 2025
লেখালেখি # কড়চা ০১
ঠিক কেন লিখতে হয় সেটাই আমার জানা নেই। কিন্তু লিখি, মনের আনন্দে না বিষাদে বা অন্য কোনো শোকে/ সুখে, সেটা জানা বেশ মুশকিলের ব্যাপার। এগুলো বেশ ভাবের কথা। লেখক মাত্রই একটু ভাবের কথা বলবে, এটাই স্বাভাবিক। আমিও একটু বললাম, এই আর কী!
একজন ন'টা ছ'টা অফিস করা মানুষ, যার কাজই হবে নানা রকম সংযোগ তৈরি করা, আর নানা রকম ফন্দি ফিকির করে এই টাকা ওড়ার শহরে কিছু টাকা ধরার বন্দোবস্ত করা। তা না করে মনের সুখে কিংবা অসুখে, কিংবা দুঃখে-আনন্দে লেখালেখি করে যাই কেন, জানি না।
পাঠকের আনন্দ দেখার জন্যই কি লেখক লেখেন? পাঠককে জ্ঞান দেয়ার উদ্দেশ্যেই কী লেখা হয়?
হতে পারে। আনন্দ দেয়া উদ্দেশ্য হতে পারে, জ্ঞান দেয়া উদ্দেশ্য হতে পারে। তাতে কোনো সমস্যা নেই। এগুলোর কোনোটাই অবশ্য আমার উদ্দেশ্য নয়।
আমার উদ্দেশ্য তাহলে কী?
আমার থ্রিলার পড়তে ভালো লাগে। ছোটোদের বই পড়তে ভালো লাগে। সামাজিক উপন্যাস পড়তে ভালো লাগে। ভূত আছে কিনা নেই, তা গল্প পড়ে জানতে ইচ্ছে করে।
আমি অতো বিদগ্ধ পাঠকও নই যে বইটা নোবেল পাবে আগামী কয়েক বছরে, তা এখনই আমি পড়ে ফেলেছি, তা গ্যারান্টিসহ বলে দিতে পারবো এখনই।
রিডিং লিস্টি যে লম্বা, তাতে মাঝে মাঝে এতো চমৎকার সব মণিমুক্তা চলে আসে, তাতে মনে হয়, এলোমেলো পড়ার আনন্দই এখানে।
দেশে সব ভালো ফিকশন লেখা হচ্ছে। এইসব ফিকশনের অভিযাত্রা বহুমুখি এবং যা দেখছি তাতে মনে হচ্ছে সবাই সবাইকে বাতিল করে দেয়ার চেষ্টায় রত। আর না হলে দলবদ্ধভাবে/ একজোট হয়ে নিজেদের আত্মরক্ষার চেষ্টায় ব্যস্ত। অনেকটা নির্বাচনে যেমন রাজনৈতিক জোট হয়, তেমনটা।
আমি কোনো জাদুবাস্তবতা/ থ্রিলারগোষ্ঠি/ সমকালীন সাহিত্যগোষ্ঠি/ লিটল ম্যাগ- কারো সাথেই পায়ে পা, হাতে হাত রেখে চলি না। তবে লিখতে লিখতে কাছের কিছু মানুষ তৈরি হয়েছে, যারা পাশে থাকলে মনে হয় দীর্ঘ এই যাত্রায় আমি একা নই।
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ বইমেলার সমাপ্তি ঘটবে। পাঠক যারা আমার নতুন উপন্যাস 'আশ্চর্যময়ী, তোমাকে' পড়ছেন বা পড়বেন, তাদেরকে আমার তরফ থেকে ধন্যবাদ থাকবে। যারা পড়বেন না, তারা ভবিষ্যতে কোনো এক সময় সময়-সুযোগ বা ইচ্ছে থাকলে পড়বেন, এই আশা রাখি।
একজন ন'টা ছ'টা অফিস করা মানুষ, যার কাজই হবে নানা রকম সংযোগ তৈরি করা, আর নানা রকম ফন্দি ফিকির করে এই টাকা ওড়ার শহরে কিছু টাকা ধরার বন্দোবস্ত করা। তা না করে মনের সুখে কিংবা অসুখে, কিংবা দুঃখে-আনন্দে লেখালেখি করে যাই কেন, জানি না।
পাঠকের আনন্দ দেখার জন্যই কি লেখক লেখেন? পাঠককে জ্ঞান দেয়ার উদ্দেশ্যেই কী লেখা হয়?
হতে পারে। আনন্দ দেয়া উদ্দেশ্য হতে পারে, জ্ঞান দেয়া উদ্দেশ্য হতে পারে। তাতে কোনো সমস্যা নেই। এগুলোর কোনোটাই অবশ্য আমার উদ্দেশ্য নয়।
আমার উদ্দেশ্য তাহলে কী?
আমার থ্রিলার পড়তে ভালো লাগে। ছোটোদের বই পড়তে ভালো লাগে। সামাজিক উপন্যাস পড়তে ভালো লাগে। ভূত আছে কিনা নেই, তা গল্প পড়ে জানতে ইচ্ছে করে।
আমি অতো বিদগ্ধ পাঠকও নই যে বইটা নোবেল পাবে আগামী কয়েক বছরে, তা এখনই আমি পড়ে ফেলেছি, তা গ্যারান্টিসহ বলে দিতে পারবো এখনই।
রিডিং লিস্টি যে লম্বা, তাতে মাঝে মাঝে এতো চমৎকার সব মণিমুক্তা চলে আসে, তাতে মনে হয়, এলোমেলো পড়ার আনন্দই এখানে।
দেশে সব ভালো ফিকশন লেখা হচ্ছে। এইসব ফিকশনের অভিযাত্রা বহুমুখি এবং যা দেখছি তাতে মনে হচ্ছে সবাই সবাইকে বাতিল করে দেয়ার চেষ্টায় রত। আর না হলে দলবদ্ধভাবে/ একজোট হয়ে নিজেদের আত্মরক্ষার চেষ্টায় ব্যস্ত। অনেকটা নির্বাচনে যেমন রাজনৈতিক জোট হয়, তেমনটা।
আমি কোনো জাদুবাস্তবতা/ থ্রিলারগোষ্ঠি/ সমকালীন সাহিত্যগোষ্ঠি/ লিটল ম্যাগ- কারো সাথেই পায়ে পা, হাতে হাত রেখে চলি না। তবে লিখতে লিখতে কাছের কিছু মানুষ তৈরি হয়েছে, যারা পাশে থাকলে মনে হয় দীর্ঘ এই যাত্রায় আমি একা নই।
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ বইমেলার সমাপ্তি ঘটবে। পাঠক যারা আমার নতুন উপন্যাস 'আশ্চর্যময়ী, তোমাকে' পড়ছেন বা পড়বেন, তাদেরকে আমার তরফ থেকে ধন্যবাদ থাকবে। যারা পড়বেন না, তারা ভবিষ্যতে কোনো এক সময় সময়-সুযোগ বা ইচ্ছে থাকলে পড়বেন, এই আশা রাখি।
Published on February 27, 2025 12:27
February 16, 2025
আশ্চর্যময়ী, তোমাকে
আশ্চর্যময়ী, তোমাকেগল্প বলা খুব কঠিন একটা আর্ট ফর্ম। কতোভাবে কতো রকমে যে গল্প বলা যায়!
আমাকে অনেকে বলেন কয়েক লাইনে গল্পের সারাংশ বলে দিতে। আমি পারি না। আমার গল্পগুলো কয়েক লাইনে সারাংশ বলে দেয়া কঠিন। কারণ আমি আসলে সেভাবে গল্প হিসেবে গল্প লিখি না। আমি যা ঘটেছে, ঘটছে এবং ঘটতে পারে, তার একটা নমুনা তুলে আনার চেষ্টা করি মাত্র। আমার লেখায় কোনো জাদু বাস্তবতা থাকে না। দর্শন থাকলেও, কোনো বিখ্যাত দার্শনিকের তত্ত্বকথা থাকে না। কোনো রাজনৈতিক বা ধর্মীয় বিতর্ক থাকে না। সেই সাথে থাকে না আমাদের জৈবিক কার্যক্রমের অপ্রাসঙ্গিক বিবরণ। আমি এসব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। একদমই কি সফল হই? সবসময় হই না সম্ভবত।
'আশ্চর্যময়ী, তোমাকে' যেমন প্রেমের গল্প, তেমন আঁধারের গল্প। আমাদের বেড়ে উঠা, প্রেমে পড়া, জেগে উঠা আর কামনা-বাসনায় জর্জরিত জীবনকে
সহজভাবে তুলে আনার চেষ্টা ছিল এই উপন্যাসে।
রোদ্রময়ী সেন রুনুকে আমি দেখেছি, দূর থেকে। শাহেদকে সম্ভবত আমি চিনি। সোমা চক্রবর্তী কিংবা লাবনী, ওরাও আমার পরিচিত। আর জয়ন্ত, ফরিদ, বাদল, অনুপম এসব চরিত্ররা? কে জানে চিনি কিনা। নিশ্চয়ই চিনি। না হলে ওদের মনের আলো অন্ধকারের খেলাকে কিভাবে চিনলাম?
'আশ্চর্যময়ী, তোমাকে' আমার কাছে দীর্ঘ এক যাত্রার মতো ছিল। যদিও সেই দীর্ঘ যাত্রায় সমাপ্তি টেনেছি। কিন্তু লেখা শেষ হলেও রেশ রয়ে গেছে। এই রেশ না কাটা পর্যন্ত আবার কখন লেখায় হাত দিতে পারবো বলতে পারছি না।
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
আমাকে অনেকে বলেন কয়েক লাইনে গল্পের সারাংশ বলে দিতে। আমি পারি না। আমার গল্পগুলো কয়েক লাইনে সারাংশ বলে দেয়া কঠিন। কারণ আমি আসলে সেভাবে গল্প হিসেবে গল্প লিখি না। আমি যা ঘটেছে, ঘটছে এবং ঘটতে পারে, তার একটা নমুনা তুলে আনার চেষ্টা করি মাত্র। আমার লেখায় কোনো জাদু বাস্তবতা থাকে না। দর্শন থাকলেও, কোনো বিখ্যাত দার্শনিকের তত্ত্বকথা থাকে না। কোনো রাজনৈতিক বা ধর্মীয় বিতর্ক থাকে না। সেই সাথে থাকে না আমাদের জৈবিক কার্যক্রমের অপ্রাসঙ্গিক বিবরণ। আমি এসব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। একদমই কি সফল হই? সবসময় হই না সম্ভবত।
'আশ্চর্যময়ী, তোমাকে' যেমন প্রেমের গল্প, তেমন আঁধারের গল্প। আমাদের বেড়ে উঠা, প্রেমে পড়া, জেগে উঠা আর কামনা-বাসনায় জর্জরিত জীবনকে
সহজভাবে তুলে আনার চেষ্টা ছিল এই উপন্যাসে।
রোদ্রময়ী সেন রুনুকে আমি দেখেছি, দূর থেকে। শাহেদকে সম্ভবত আমি চিনি। সোমা চক্রবর্তী কিংবা লাবনী, ওরাও আমার পরিচিত। আর জয়ন্ত, ফরিদ, বাদল, অনুপম এসব চরিত্ররা? কে জানে চিনি কিনা। নিশ্চয়ই চিনি। না হলে ওদের মনের আলো অন্ধকারের খেলাকে কিভাবে চিনলাম?
'আশ্চর্যময়ী, তোমাকে' আমার কাছে দীর্ঘ এক যাত্রার মতো ছিল। যদিও সেই দীর্ঘ যাত্রায় সমাপ্তি টেনেছি। কিন্তু লেখা শেষ হলেও রেশ রয়ে গেছে। এই রেশ না কাটা পর্যন্ত আবার কখন লেখায় হাত দিতে পারবো বলতে পারছি না।
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Published on February 16, 2025 12:39
November 20, 2021
বাতাসে বৃষ্টির ঘ্রাণ
‘মা, বাবা কার সাথে গল্প করতেছিল এতক্ষণ?’ বেশ স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন করল পূরবী। খুব বেশি কৌতূহল যেন প্রকাশ না পায় সেই চেষ্টা করল।
‘ঢাকা থেকে আসছে,’ পূরবীর মা চামেলি সাহা বলল।
‘এইখানে কি?’
‘কি জানি,’ চামেলি সাহা বলল, ‘তোর বাবা বলছিল হাতের কাজ নাকি খুব ভালো। নতুন সব ডিজাইন করে। আর কি কি জানি ব্যবসা আছে ওর কাছে।’
‘লোকটাকে তো দেখে কেমন ধুরন্ধর লাগল আমার কাছে।’
‘চেহারা দেইখা কি মানুষ বুঝা যায় পাগলি,’ চামেলি বলল, ‘তোর বাবাকে দেখলে মনে হয় ভাঁজা মাছ উল্টাইয়া খাইতে জানে না। অথচ দেখ, কতো চালাক তোর বাবা।’
‘বাবা আবার কি চালাকি করল!’ ঠোঁট ফুলিয়ে বলল পূরবী। যজ্ঞেশ্বর সাহাকে নিয়ে সে কোন বাজে কথা শুনতে রাজি নয়।
‘ফুসলাইয়া ফাসলাইয়া আমারে বিয়ে করলো, আমার চেহারা দ্যাখ, গায়ের রঙ দ্যাখ, তোর বাপের লগে যায়!’
পূরবী হাসল। এটা ঠিক তার বাবা যজ্ঞেশ্বর যমদূতের মতো কালো আর অন্যদিকে মা, মা-দূর্গার মতো টুকটুকে ফর্সা। মা’র বয়স এখন চল্লিশের দিকে, কিন্তু এখনো চাইলে সিনেমার নায়িকা হতে পারবে। সে মায়ের মতো দেখতে হয়েছে এটা সবাই বলে। বাবার মতো দেখতে হলে যে কী হতে কে জানে!
‘কিন্তু বাবার মতো ভালো মনের মানুষ কই পেতে?’
‘এইটা ঠিক কথা,’ চামেলি টিভিটা রিমোট চেপে বন্ধ করল, পূরবীর দিকে ঘুরে বসল, ‘আমার এই কথাটা মন দিয়ে শোন। কোনদিন চেহারা দিয়া কাউরে বিবেচনা করবি না। মন দেখবি, মনটা পরিষ্কার কিনা, বুকে সাহস আছে কিনা, ভালোবাসা আছে কিনা। চেহারা, টাকা-পয়সা এইগুলা হইলো পরের জিনিস। বুকভরা সাহস আর ভালোবাসা থাকলে পুরুষ মানুষ হয় দেবতার মতো। বুঝলি? চেহারা কিছু না।’
পূরবী মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল অপলক। তার বুকের মধ্যে একটা আলোড়ন হচ্ছিল। একটা মানুষ ভালো কী মন্দ, এটা বুঝবে সে কিভাবে? সে তো অন্য কিছু চায় না। পড়াশোনা শেষে বুদ্ধিমান, হৃদয়বান একটা মানুষকে পাশে চায়, যাকে নিয়ে সারাজীবন কাটিয়ে দিতে পারবে। এরকম একটা মানুষ সে কই পাবে? গৌরহরি সাহা কি এরকম কেউ?
#বাতাসেবৃষ্টিরঘ্রাণ (অংশবিশেষ)
‘ঢাকা থেকে আসছে,’ পূরবীর মা চামেলি সাহা বলল।
‘এইখানে কি?’
‘কি জানি,’ চামেলি সাহা বলল, ‘তোর বাবা বলছিল হাতের কাজ নাকি খুব ভালো। নতুন সব ডিজাইন করে। আর কি কি জানি ব্যবসা আছে ওর কাছে।’
‘লোকটাকে তো দেখে কেমন ধুরন্ধর লাগল আমার কাছে।’
‘চেহারা দেইখা কি মানুষ বুঝা যায় পাগলি,’ চামেলি বলল, ‘তোর বাবাকে দেখলে মনে হয় ভাঁজা মাছ উল্টাইয়া খাইতে জানে না। অথচ দেখ, কতো চালাক তোর বাবা।’
‘বাবা আবার কি চালাকি করল!’ ঠোঁট ফুলিয়ে বলল পূরবী। যজ্ঞেশ্বর সাহাকে নিয়ে সে কোন বাজে কথা শুনতে রাজি নয়।
‘ফুসলাইয়া ফাসলাইয়া আমারে বিয়ে করলো, আমার চেহারা দ্যাখ, গায়ের রঙ দ্যাখ, তোর বাপের লগে যায়!’
পূরবী হাসল। এটা ঠিক তার বাবা যজ্ঞেশ্বর যমদূতের মতো কালো আর অন্যদিকে মা, মা-দূর্গার মতো টুকটুকে ফর্সা। মা’র বয়স এখন চল্লিশের দিকে, কিন্তু এখনো চাইলে সিনেমার নায়িকা হতে পারবে। সে মায়ের মতো দেখতে হয়েছে এটা সবাই বলে। বাবার মতো দেখতে হলে যে কী হতে কে জানে!
‘কিন্তু বাবার মতো ভালো মনের মানুষ কই পেতে?’
‘এইটা ঠিক কথা,’ চামেলি টিভিটা রিমোট চেপে বন্ধ করল, পূরবীর দিকে ঘুরে বসল, ‘আমার এই কথাটা মন দিয়ে শোন। কোনদিন চেহারা দিয়া কাউরে বিবেচনা করবি না। মন দেখবি, মনটা পরিষ্কার কিনা, বুকে সাহস আছে কিনা, ভালোবাসা আছে কিনা। চেহারা, টাকা-পয়সা এইগুলা হইলো পরের জিনিস। বুকভরা সাহস আর ভালোবাসা থাকলে পুরুষ মানুষ হয় দেবতার মতো। বুঝলি? চেহারা কিছু না।’
পূরবী মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল অপলক। তার বুকের মধ্যে একটা আলোড়ন হচ্ছিল। একটা মানুষ ভালো কী মন্দ, এটা বুঝবে সে কিভাবে? সে তো অন্য কিছু চায় না। পড়াশোনা শেষে বুদ্ধিমান, হৃদয়বান একটা মানুষকে পাশে চায়, যাকে নিয়ে সারাজীবন কাটিয়ে দিতে পারবে। এরকম একটা মানুষ সে কই পাবে? গৌরহরি সাহা কি এরকম কেউ?
#বাতাসেবৃষ্টিরঘ্রাণ (অংশবিশেষ)
Published on November 20, 2021 08:48
•
Tags:
ব-ত-স-ব-ষ-ট-রঘ-র-ণ