Goodreads helps you follow your favorite authors. Be the first to learn about new releases!
Start by following Obayed Haq.
Showing 1-20 of 20
“আমি বুঝলাম মা মেয়ের একটাই শাড়ি । দুজনে একসাথে বের হতে পারেনা। জন্মের সময় দাঁই নাড়ির বন্ধন কেটেছে, কিন্তু শাড়ির বন্ধন কাটতে পারেনি।”
― জলেশ্বরী
― জলেশ্বরী
“নদী সন্ন্যাসী ভিক্ষুকের মত মানুষের উঠানে গিয়ে উঠেছে, চাইলেও কেউ এই আপদ বিদায় করতে পারছেনা। কিছু না নিয়ে সে ক্ষান্ত হবেনা। সন্ন্যাসীকে এক মুঠো চাল দিয়ে বিদায় করা যায়, কিন্তু নদী কী চায়? প্রাণ? ছানি পড়া বৃদ্ধের চোখের মত ঘোলা পানি, কোথাকার মাটি যেন খেয়ে এসেছে।”
― জলেশ্বরী
― জলেশ্বরী
“পাহাড়ের সেই বালকের মতো তার পেট পুরে। মাচাং ঘরের পাশে ছোট পাহাড়টির জন্য, কাজচাই-এর জন্য, উথাই খায়াচিং-এর জন্য, ক্রাসিমার জন্য। সব ছেড়ে আবার ফিরতে ইচ্ছা করে পাহাড়ে, সে শুধু অপেক্ষা করে একটা আহ্বানের।”
― নীল পাহাড়
― নীল পাহাড়
“পেটে যখন জ্বালা শুরু হয়, তখন আর কবরের আজাবের কথা মনে থাকে না। ছেঁড়া কাপড়ে পর্দা করা যায় না। ভাঙা ঘরে শুয়ে পুণ্যের চিন্তা আসে না।”
― তেইল্যা চোরা
― তেইল্যা চোরা
“এখানে বিদ্যুৎ নেই, রাস্তা নেই, আধুনিক সভ্যতা এখনো আসতে পারেনি কিন্তু আধুনিক অসভ্যতা ঠিকই রাস্তা বের করে চলে এসেছে।”
― একটি শাড়ি এবং কামরাঙা বোমা ও অন্যান্য
― একটি শাড়ি এবং কামরাঙা বোমা ও অন্যান্য
“বুড়োমানুষ মারা গেলে যে কান্না মঞ্চস্থ হয় তা কেবল আনুষ্ঠানিকতা, তাতে স্বস্তি থাকে। হাসপাতালের এই দৌড়াদৌড়ি, তোষামুদি, দুর্গন্ধময় জীবন থেকে মুক্তির স্বস্তি। মৃত্যুতে তারা যে স্বস্তি অনুভব করে, তা যাতে নিষ্ঠুর না দেখায় সেজন্য বিভিন্ন সান্ত্বনা দেয় নিজেদের-‘আল্লায় তারে কষ্ট থেইকা বাঁচাইছে’, ‘কেমন দিনটা পাইছে দেখছেন, একদিন পরে শুক্রবার, জুম্মার পর জানাজা পাইবো’, ‘মহরমের চান্দটা পাইছে মাশাল্লাহ’ ইত্যাদি। কর্মক্ষম কেউ বা কোন শিশু মারা গেলে পবিত্র দিন কিংবা মহররমের চাঁদের আর কোন মাহাত্ম্য তাদের মনে পড়ে না।”
― জল নেই, পাথর
― জল নেই, পাথর
“পরিশ্রম সৌভাগ্যের জননী, এইটা একটা ফালতু কথা, শ্রম দিয়া শুধু টিইকা থাকা যায়, সৌভাগ্য আসে না, পরিশ্রম ক্লান্তি ছাড়া আর কিছু জন্ম দিতে পারে না। অর্থ সম্পদের প্রজনন ছাড়া ভাগ্য ডিম পাড়ে না, বিত্তের উত্তাপ দিয়া সৌভাগ্যের ছানা ফোটে।”
― কাঙালসংঘ
― কাঙালসংঘ
“যে মেয়েটি মারা গেল, একটু পরে যে লাশের ব্যাগে করে মর্গে যাবে, সে হয়ে যাবে গল্প, চায়ের সাথে বিস্কুটের বিকল্প। তারপর গল্পটা পানসে হয়ে যাবে, পৃথিবীর আকাশে বাতাসে কিংবা মানুষের মনে অথবা কোনো দীর্ঘশ্বাসে টোকাই মেয়েটার কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।”
― কাঙালসংঘ
― কাঙালসংঘ
“পুরাতন স্টেশনে প্রবেশ করতেই সে দেখে, দূরে প্ল্যাটফর্মের ছায়া পেরিয়ে রোদের মধ্যে একটা অর্ধনগ্ন ছেলে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। প্রথম যেদিন একটা সাদা তোয়ালেতে জড়িয়ে ছেলেকে কোলে তুলে দিয়েছিল একজন নার্স, সেদিনের কথা মনে পড়ে তার। সেদিনও এমন নগ্ন ছিল তার ছেলে। আরেকবার বাবা হওয়ার অনুভূতি হয় তার।”
― কাঙালসংঘ
― কাঙালসংঘ
“কারো মাথা গজাইলে তারা মাথা কাইট্যা ফালায়, তাগো শুধু হাত দরকার। কিন্তু ভাইবা দেখ, মাথা ছাড়া জীবনের কি দাম আছে?”
― কাঙালসংঘ
― কাঙালসংঘ
“গোমাংসে যাদের জাত যায়, অভাবে পড়লে তারা নরমাংসও খেতে পারে, খাদ্য আর বেশ্যার কোনো জাত হয়না।”
― আড়কাঠি
― আড়কাঠি
“দীনেশ বিনা প্রয়োজনে কিছুক্ষণ পরপর তার কিশোরী বধুর স্মৃতিচিহ্ন রুমালখানা বের করে নাকে মুখে চেপে ধরে আবার রেখে দিচ্ছে। তার ছেলেমানুষি কারো কাছে ধরা পড়ে গেল নাকি সেটাও লক্ষ রাখছে। বউর প্রতি ভালোবাসা কোনোরকমে না প্রকাশ হয়ে যায়, এই নিয়ে সে সর্বদা তটস্থ, এই বাংলায় বউকে ভালোবাসার চেয়ে কাপুরুষতা আর নেই।”
― আড়কাঠি
― আড়কাঠি
“যে ছিল উন্মুক্ত পথে, আবদ্ধ ঘরে থাকতে তার দম বন্ধ হয়ে আসতো, তবুও সে মুক্তি খুঁজেছিল নারীর বুকে। সেই নারীর বুক ভরিয়ে দিয়েছিল স্বপ্নে, কিন্তু পেট ভরাতে পারেনি। সঙ্গমে, আলিঙ্গনে তার ক্ষুধা মেটেনি। একদিন সে চারশো টাকার চৌকি শূন্য রেখে চলে গেছে ভরা পেটের নিশ্চয়তা পেয়ে। এই চৌকিতে জলিলের চোখে ঘুম আনতে পারেনা মাদকও। কিছুক্ষণ ছটফট করে বেরিয়ে যায়, যে তাকে কখনো ফেলে যায়নি, অভিমান করে ত্যাগ করেনি, সেই পথের কাছেই ফিরে যায়, পথের চেয়ে আপন তার আর কেউ নেই।”
― কাঙালসংঘ
― কাঙালসংঘ
“আরেকটি ভূমিহীন প্রাণীর আগমন হলো পৃথিবীতে।এই বিশাল জগতের এক কণা মাটির উপর যার কোনো অধিকার নেই, যার দেহ আছে, শিকড় নেই।”
― কাঙালসংঘ
― কাঙালসংঘ
“তার একটা 'পাশের' কারণে সে কৃষক হতে পারে না, আবার একটিমাত্র 'পাশ' দিয়ে ভালো চাকরি জোটানোও সম্ভব হয় না।”
― কাঙালসংঘ
― কাঙালসংঘ
“অনাথদের বাবা-মা ভূতের মত তাদের ঘাড়ে চেপে বসে, তাদের কোন অস্তিত্ব নেই কিন্তু অস্বীকারও করা যায় না। তারা নেই কিন্তু তাদের নাম লেগে যায় আঠার মত। স্কুলে নিজের নাম লিখতে শেখানোর পরই বাবা-মায়ের নাম লেখা শেখানো হয়। মানিক খুব যত্ন করে রুল টানা খাতায় নিজের মাকে ফুটিয়ে তুললো, বাবাকেও অক্ষর দিয়ে এঁকে দিল খাতায়। বেশ কিছুক্ষণ স্পর্শ করলো আঙুল দিয়ে। রুল টানা খাতা থেকে কৃষ্ণ কুমার মিত্র এবং লক্ষীরাণী মিত্র যেন তার দিকে মায়া ভরা দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আছে। মানিকের নিজের কিছুই ছিলো না, কোন এক ধনীর নাদুসনুদুস পুত্রের ঢিলেঢালা জামা আর দড়ি দিয়ে বেঁধে হাফ প্যান্ট পড়ত, তার সবকিছুই ছিলো অন্য কারো উচ্ছিষ্ট। এই প্রথম তার নিজের কিছু হলো, তার বাবা-মা হলো।”
― নীল পাহাড়
― নীল পাহাড়
“এই লোকটাকে সে ভালোবাসে, তার বউ যখন চলে গিয়েছিল, সবাই হেসেছিল। তার জীবনের সবচেয়ে বড়ো দুঃখটা মানুষের কৌতুকের উপাদান হয়ে গিয়েছিল। গুরুজি একমাত্র লোক, যে হাসেনি, মাথায় স্নেহ এবং সান্ত্বনার হাত বুলিয়েছিল। অল্প একটু স্নেহের বিনিময়ে জলিল সারাজীবনের জন্য গুরুজির প্রতি কৃতজ্ঞ হয়ে গিয়েছিল।”
― কাঙালসংঘ
― কাঙালসংঘ




