Goodreads helps you follow your favorite authors. Be the first to learn about new releases!
Start by following Humayun Azad.
Showing 1-30 of 49
“ছেলেটি তার বিছানা গুছিয়ে না রাখলে মা খুশি হয়, দেখতে পায় একটি পুরুষের জন্ম হচ্ছে; কিন্তু মেয়েটি বিছানা না গোছালে একটি নারীর মৃত্যু দেখে মা আতংকিত হয়ে পড়ে।”
― নারী
― নারী
“আমাদের গাঁয়ের অধিকাংশ লোক গোলাপ দেখে নি, ঘ্রাণ চায় নি গোলাপের। তারা দেখে নি কোনো চোখ-ঝলসানো নাচ, কোনো দিন দেখার স্বপ্নও দেখে নি। কবিতা পড়ে নি তারা, কোনোদিন পড়ার কথা ভাবে নি। কখনো তাদের বুক থেকে চোখের জলের মতো দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে নি এ-কথা ভেবে যে এ-জীবনে তাদেরও একটি কবিতা পড়া হলো না। কেউ রাজা হ'তে চায় নি তারা। জরির পোশাক প'রে গোঁফ রেখে ধারালো তলোয়ার হাতে ক'রে ফিরতে চায় নি কেউ তারা। তারা চেয়েছে ভাত। স্বপ্ন দেখেছে মধুর মতো, তারার মতো, চাঁদের মতো, কড়িফুলের মতো ভাতের আর ভাতের আর ভাতের। জেগে উঠে দেখেছে সামনে প'ড়ে আছে শূন্য মাটির বাসন।”
― ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না
― ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না
“সবাই চ'লে গেছে, ঘোলা হয়ে আছে আমাদের পুবপুকুরের টলটলে জল। ভীষণ বিষণ্ন দেখায় পুকুরটিকে। ঘন ঘোলা পানি শব্দ করে না, কলকল করে না, নিথরভাবে প'ড়ে থাকে। তাতে ভাসতে থাকে ছিঁড়েফাড়া কচুরিপানা - এদিকে ভাসে ওদিকে ভাসে। মনে হয় কাঁদে। ঘোলা জলে কচুরিপানার ছবি গেঁথে আছে আমার চোখে। যখন আমি এ-শহরে, শহরকে আমার অনেক সময় ঘোলাজলের পুকুর ব'লেই মনে হয়, কাউকে ঘুরতে দেখি একা একা - বিষন্ন, মলিন উস্কোখুস্কো, তখনি মনে পড়ে মানুষ নামার পরে পুবপুকুরের ঘোলাজলে ভাসমান জীর্ণ কচুরিপানাগুলোকে। এমন কচুরিপানা-মানুষ দেখেছিলাম আমি একাত্তুরের সাতাশে মার্চে। পঁচিশে মার্চের আক্রমণ ও ছাব্বিশে মার্চের সান্ধ্য আইনের পরে সাতাশে মার্চে ঢাকা শহরের মানুষেরা বেরিয়ে পড়েছিলো রাস্তায় - হাঁটছিলো, ভয় পাচ্ছিলো, নিরুদ্দেশ পথ চলছিলো, ঠিক যেনো আমাদের পুকুরে মানুষ নামার পরে ঘোলা জলে এলোমেলো ভাসমান ছিন্নভিন্ন কচুরিপানার দল।”
― ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না
― ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না
“বাঙালির জাতিগত আলস্য ধরা পড়ে ভাষায়। বাঙালি ‘দেরি করে’, ‘চুরি করে’, 'আশা করে', এমনকি ‘বিশ্রাম করে’। বিশ্রামও বাঙালির কাছে কাজ।”
―
―
“নিজের নিকৃষ্ট কালে চিরশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদের সঙ্গ পাওয়ার জন্যে রয়েছে বই; আর সমকালের নিকৃষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গ পাওয়ার জন্যে রয়েছে টেলিভিশন ও সংবাদপত্র।”
―
―
“তুমি জানো না, কোনোদিন জানবে না, কেমন লাগে একটি নড়োবড়ো বাঁশের পুলের ওপর দাঁড়িয়ে কালো জলের দিকে তাকিয়ে থাকতে। তুমি শিশির দেখো নি, কুয়াশা দেখো নি, কচুরি ফুল দেখো নি। তুমি ধানের শীষ দেখেছো টেলিভিশনে, চিল দেখেছো ছবির বইতে। নালি বেয়ে ফোঁটাফোঁটা খেজুরের রস ঝরতে দেখো নি, পুকুরে দেখো নি মাছের লাফের দৃশ্য। তুমি জানো না কেমন লাগে উথাল-পাতাল ঢেউয়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে, আর কেমন লাগে একটি পাখির পেছনে ছুটে ছুটে সকালকে দুপুরের দিকে গড়িয়ে দিতে। আমি জানি; - না আমি জানতাম।”
― ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না
― ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না
“বারোটার সময় দাঁড়ালাম পেতলের ঘণ্টাটার পাশে। ওই ঘণ্টার শব্দ গুণে আমি ইস্কুলে যাই। কতো মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে শুনেছি ওই ঘণ্টার দিগন্তের রহস্যবিভোর ধ্বনি। একজন দারোয়ান একটা বড় মুগুর দিয়ে দুটো-দুটো ক'রে ঘা দিলো। পৃথিবীতে বারোটা বাজলো, দুপুর হলো। সময়কে সেদিন আমরা বাজতে দেখলাম।”
― ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না
― ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না
“পালাতে পারলেই তো শুধু পারা যায় বেঁচে থাকতে।”
― ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না
― ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না
“এক-বইয়ের-পাঠক সম্পর্কে সাবধান।”
―
―
“বাঙালী জীবিত প্রতিভাকে লাশে পরিণত করে, আর মৃত প্রতিভার কবরে আগরবাতি জ্বালে।”
―
―
“কতোদিন দুপুরে ঘুমিয়ে পড়েছি, গ'লে গেছি আমাদের গ্রামের আঠালো মাটির মতো। নকশি কাঁথাটি যাদু-চাদরের মতো জড়িয়ে রেখেছে আমাকে। সন্ধ্যায় জেগে উঠে মনে হয়েছে এইমাত্র ভোর হলো। মুখ ধুতে হবে, ইস্কুলে যেতে হবে। মা বলতো, 'এখন বিআইন নারে, এখন সাঁইজের বেলা।' তখন মনে হতো ঘুম ভাঙলেই তো ভোর বেলা, ঘুম যখনি ভাঙুক। অমন ভোর আর কি ফিরে পাবো কোনো দিন!”
― ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না
― ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না
“আমাদের শহরগুলো কোনোদিন শহর হবে না। হবে বস্তি। আমাদের গ্রামগুলো আর গ্রাম থাকবে না। হয়ে উঠবে বস্তি।”
― ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না
― ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না
“ব্যর্থরাই প্রকৃত মানুষ, সফলেরা শয়তান।”
― হুমায়ুন আজাদের প্রবচনগুচ্ছ
― হুমায়ুন আজাদের প্রবচনগুচ্ছ
“মানুষের ওপর বিশ্বাস হারানো পাপ, তবে বাঙালির ওপর বিশ্বাস রাখা বিপজ্জনক।”
―
―
“প্রাক্তন দ্রোহীরা যখন অর্ঘ্য পায়, তাদের কবরে যখন স্মৃতিস্তম্ভ মাথা তোলে, নতুন বিদ্রোহীরা কারাগারে ঢোকে,আর ফাঁসিকাঠে ঝোলে”
―
―
“আধুনিকতা কাকে বলে? মানুষ যখন যুক্তিতে আস্থা আনে, যখন সে আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে, যখন সে মানুষকে মানুষ বলে মূল্য দেয়, তখন সে হয়ে উঠে আধুনিক।”
― লাল নীল দীপাবলি বা বাঙলা সাহিত্যের জীবনী
― লাল নীল দীপাবলি বা বাঙলা সাহিত্যের জীবনী
“সবচেয়ে হাস্যকর কথা হচ্ছে একদিন আমরা কেউ থাকবো না।”
―
―
“শিল্পকলা হচ্ছে নিরর্থক জীবনকে অর্থপূর্ণ করার ব্যর্থ প্রয়াস।”
―
―
“পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে আসে, তখনও।”
―
―
“পুঁজিবাদের আল্লার নাম টাকা, মসজিদের নাম ব্যাংক।”
― হুমায়ুন আজাদের প্রবচনগুচ্ছ
― হুমায়ুন আজাদের প্রবচনগুচ্ছ
“প্রতিটি দগ্ধ গ্রন্থ সভ্যতাকে নতুন আলো দেয়।”
―
―
“রবীন্দ্রনাথের নোবেল পুরস্কার পাওয়ার দরকার ছিলো না, কিন্তু দরকার ছিলো বাঙলা সাহিত্যের। পুরস্কার না পেলে হিন্দুরা বুঝতো না যে রবীন্দ্রনাথ বড়ো কবি; আর মুসলমানেরা রহিম, করিমকে দাবি করতো বাঙলার শ্রেষ্ঠ কবি হিশেবে।”
―
―
“আমরা জানি মাকে রূপসী হ'তে হয় না। রুপসী হ'তে হয় অভিনেত্রীকে। আমার মা রূপসী নয়, কিন্তু সে আমার মা। এই তো তাঁর অতুলনীয় রূপ।”
―
―
“জন্মাতরবাদ ভারতীয় উপমহাদেশের অবধারিত দর্শন। এ- অঞ্চলে এক জন্মে পরীক্ষা দিতে হয়, আরেক জন্মে ফল বেরোয়, দু-জন্ম বেকার থাকতে হয়, এবং ভাগ্য প্রসন্ন হ’লে কোন এক জন্মে চাকুরি মিলতেও পারে।”
―
―
“বায়ান্নোর একুশে ফেব্রুয়ারি, আটই ফাল্গুন, যেনো আমাদের প্রথম স্বাধীনতা দিবস। আমাদের জীবনে অনেক পবিত্র দিন রয়েছে, কিন্তু শহীদ দিবস আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ দিন। এদিন যে-আবেগ জাগে, তা জাগে না অন্য কোনো দিন। কারণ এদিনেই প্রথম বাঙলাদেশের বুকের ভেতর থেকে এসে চোখের পাতায় জমেছিল দু:খের ফোঁটা। জন্ম নিয়েছিলো শহীদ মিনার।”
―
―
“ক্ষুধা ও সৌন্দর্যবোধের মধ্যে গভীরসম্পর্ক রয়েছে। যে-সব দেশে অধিকাংশ মানুষঅনাহারী, সেখানে মাংসল হওয়া রূপসীর লক্ষণ; যে-সব
দেশে প্রচুর খাদ্য আছে,সেখানে মেদহীন হওয়া রূপসীর লক্ষণ। এজন্যেই হিন্দি আর বাঙলা ফিল্মের নায়িকাদের দেহ থেকে মাংস চর্বি উপচে পড়ে। ক্ষুধার্ত দর্শকেরা সিনামা দেখে না, মাংস ও চর্বি খেয়ে ক্ষুধা নিবৃত্ত করে।”
―
দেশে প্রচুর খাদ্য আছে,সেখানে মেদহীন হওয়া রূপসীর লক্ষণ। এজন্যেই হিন্দি আর বাঙলা ফিল্মের নায়িকাদের দেহ থেকে মাংস চর্বি উপচে পড়ে। ক্ষুধার্ত দর্শকেরা সিনামা দেখে না, মাংস ও চর্বি খেয়ে ক্ষুধা নিবৃত্ত করে।”
―
“ভালো থেকো ফুল, মিষ্টি বকুল, ভালো থেকো।
ভালো থেকো ধান, ভাটিয়ালি গান, ভালো থেকো।
ভালো থেকো মেঘ, মিটিমিটি তারা।
ভালো থেকো পাখি, সবুজ পাতারা।
ভালো থেকো।”
― শ্রেষ্ঠ কবিতা
ভালো থেকো ধান, ভাটিয়ালি গান, ভালো থেকো।
ভালো থেকো মেঘ, মিটিমিটি তারা।
ভালো থেকো পাখি, সবুজ পাতারা।
ভালো থেকো।”
― শ্রেষ্ঠ কবিতা
“বাঙলা, এবং যে-কোনো, ভাষার শুদ্ধ বানান লেখার সহজতম উপায় শুদ্ধ বানানটি শিখে নেয়া।”
―
―
“আমাদের অঞ্চলে সৌন্দর্য অশ্লীল, অসৌন্দর্য শ্লীল। রুপসীর একটু নগ্নবাহু দেখে ওরা হৈ চৈ করে, কিন্তু পথে পথে ভিখিরিনির উলঙ্গ দেহ দেখে ওরা একটুও বিচলিত হয় না।”
―
―
“কে যেনো বলেছেন ভীরুরািই মৃত্যুর আগে বারবার মরে?‘
‘তিনি ভুল বলেছেন, প্রেমিকেরাই মৃত্যুর আগে বারবার মরে।”
― একটি খুনের স্বপ্ন
‘তিনি ভুল বলেছেন, প্রেমিকেরাই মৃত্যুর আগে বারবার মরে।”
― একটি খুনের স্বপ্ন





